ترجمة معاني القرآن الكريم - الترجمة البنغالية - أبو بكر زكريا * - فهرس التراجم


ترجمة معاني آية: (35) سورة: الرعد
۞ مَّثَلُ ٱلۡجَنَّةِ ٱلَّتِي وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُۖ أُكُلُهَا دَآئِمٞ وَظِلُّهَاۚ تِلۡكَ عُقۡبَى ٱلَّذِينَ ٱتَّقَواْۚ وَّعُقۡبَى ٱلۡكَٰفِرِينَ ٱلنَّارُ
মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তার উপমা এরূপ: তার পাদদেশে নদী প্রবাহিত [১], তার ফলসমূহ ও ছায়া চিরস্থায়ী [২]। যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে এটা তাদের প্রতিফল আর কাফিরদের প্রতিফল আগুন [৩]।
[১] মুত্তাকীদের জন্য কি পুরস্কার রেখেছেন এখানে তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। এ নহরসমূহের বিস্তারিত বর্ণনায় এসেছে যে, “মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত: তাতে আছে নির্মল পানির নহর, আছে দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর, আছে পরিশোধিত মধুর নহর এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে বিবিধ ফলমূল আর তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা। মুত্তাকীরা কি তাদের ন্যায় যারা জাহান্নামের স্থায়ী হবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়ীভুঁড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেবে?” [সূরা মুহাম্মাদ ১৫]

অন্যত্র বলা হয়েছে যে, “এমন একটি প্রস্রবণ যা হতে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ পান করবে, তারা এ প্রস্রবণকে যথা ইচ্ছে প্রবাহিত করবে।” [সূরা আল-ইনসান ৬]

[২] জান্নাতের নে’আমতসমূহ সর্বদা থাকবে, তাতে কোনো অভাব বা কমতি পরিলক্ষিত হবে না। একথাই এখানে বোঝানো হয়েছে। অন্যত্র বলা হয়েছে, “যা শেষ হবে না ও যা নিষিদ্ধও হবে না।” [সূরা আল-ওয়াকি’আহ ৩৩]

এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্যগ্রহণের সালাত আদায়ের সময় এগিয়ে গিয়ে কিছু একটা নিতে যাচ্ছিলেন, তারপর আবার ফিরে আসলেন। পরে সাহাবায়ে কিরাম সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আমি জান্নাত দেখেছি, তার থেকে আঙ্গুরের একটি থোকা নিতে চাচ্ছিলাম। যদি তা নিয়ে নিতাম তবে যতদিন দুনিয়া থাকত ততদিন তোমরা তা খেতে পারতে।” [বুখারী ১০৫২, মুসলিম ৯০৭]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “তাতে কোনো কমতি হতো না।” [মুসলিম ৯০৪]

অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতবাসীগণ খাবে, পান করবে অথচ তাদের কোনো কাশি, থুথু আসবে না, পায়খানা ও পেশাব করবে না। তাদের খাবারের ঢেকুর আসবে যার সুগন্ধ হবে মিসকের সুগন্ধির মতো, দুনিয়াতে যেভাবে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস নেয় তেমনি তাদেরকে সেখানে তাসবীহ ও পবিত্রতা ঘোষণার জন্য ইলহাম করা হবে।” [মুসলিম ২৮৩৫] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এক ইয়াহূদী এসে বলল, হে আবুল কাশেম! আপনি মনে করেন যে, জান্নাতবাসীগণ খানাপিনা করবে? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “অবশ্যই হ্যাঁ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ তাঁর শপথ! সেখানে জান্নাতবাসীদের প্রত্যেককে খানাপিনা ও কামবাসনার ক্ষেত্রে একশত জনের সমান ক্ষমতা দেয়া হবে। লোকটি বলল: যার খানাপিনা আছে তার তো আবার শৌচক্রিয়ারও প্রয়োজন পড়বে। অথচ জান্নাতে কোনো ময়লা-আবর্জনা বা কষ্টের কিছু নেই। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তাদের সে প্রয়োজনটুকু শুধুমাত্র একটু ঘামের মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে। যে ঘামের সুগন্ধ হবে মিসকের গন্ধের মত। আর এতেই তাদের পেট কৃশকায় হয়ে যাবে।” [মুসনাদে আহমাদ ৪/৩৬৭]

আর জান্নাতের ছায়ার ব্যাপারে আয়াতে বলা হয়েছে যে, তার ছায়াও চিরস্থায়ী। কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, “তারা এবং তাদের স্ত্রীগণ সুশীতল ছায়ায় সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসবে।” [সূরা ইয়াসীন ৫৬]

আল্লাহ্ আরো বলেছেন, “মুত্তাকীরা থাকবে ছায়ায় ও প্রস্রবণ বহুল স্থানে।” [সূরা আল-মুরসালাত ৪১]

আরো বলেন, “সন্নিহিত গাছের ছায়া তাদের উপর থাকবে এবং তার ফলমূল সম্পূর্ণরূপে তাদের আয়ত্তাধীন করা হবে।” [সূরা আল-ইনসান ১৪]

আরো বলেছেন, “যারা ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, সেখানে তাদের জন্য পবিত্র স্ত্রী থাকবে এবং তাদেরকে চিরস্নিগ্ধ ছায়ায় প্রবেশ করাব।” [সূরা আন-নিসা ৫৭]

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতে এমন গাছও আছে, যার ছায়ায় অত্যন্ত দ্রুতগামী অশ্বারোহী উন্নত ঘোড়া নিয়ে শত বছর সফর করলেও শেষ করতে পারবে না।” [বুখারী ৩২৫১, ৩২৫২, ৬৫৫৩, মুসলিম ২৮২৬, ২৮২৮]

[৩] পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এভাবেই জান্নাত ও জাহান্নামের প্রতিফলের তুলনামূলক উল্লেখ থাকে। যাতে করে অনুসন্ধিৎসু মন কোনটা ভাল এবং কোনটা মন্দ তা সহজেই বুঝতে পারে। [যেমন, সূরা আল-হাশর ২০, সূরা মুহাম্মাদ ১৫]
التفاسير العربية:
 
ترجمة معاني آية: (35) سورة: الرعد
فهرس السور رقم الصفحة
 
ترجمة معاني القرآن الكريم - الترجمة البنغالية - أبو بكر زكريا - فهرس التراجم

ترجمة معاني القرآن الكريم إلى اللغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا.

إغلاق