কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। * - অনুবাদসমূহের সূচী


অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা আস-সাফফাত   আয়াত:

সূরা আস-সাফফাত

সূরার কতক উদ্দেশ্য:
تنزيه الله عما نسبه إليه المشركون، وإبطال مزاعمهم في الملائكة والجن.
মুশরিকরা আল্লাহর প্রতি যা কিছু সম্বন্ধিত করেছে তাথেকে আল্লাহকে পরিচ্ছন্ন বলে ঘোষণা করা এবং ফিরিশতা ও জ্বিনদের ক্ষেত্রে তাদের ভুল ধারণার অসারতা প্রমাণ করা।

وَٱلصَّٰٓفَّٰتِ صَفّٗا
১. তিনি তাঁর ফিরিশতাদের নামে শপথ করলেন। যাঁরা তাঁদের এবাদতে পরস্পর মিলিতভাবে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱلزَّٰجِرَٰتِ زَجۡرٗا
২. তিনি আরো শপথ করেছেন ওই সকল ফিরিশতার নামে যাঁরা আল্লাহর কালাম পাঠ করেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱلتَّٰلِيَٰتِ ذِكۡرًا
৩. তিনি আরো শপথ করলেন ওই সব ফিরিশতাদের নামে যাঁরা মেঘমালাকে হাঁকিয়ে ওই স্থানে চালিয়ে নিয়ে যান যেখানে আল্লাহ পানি বর্ষাতে ইচ্ছা করেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ إِلَٰهَكُمۡ لَوَٰحِدٞ
৪. হে লোক সকল তোমাদের মাবূদ নিঃসন্দেহে একজনই। তাঁর কোন শরীক নেই। আর তিনি হলেন আল্লাহ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَا وَرَبُّ ٱلۡمَشَٰرِقِ
৫. তিনি আসমান, যমীন ও এতদুভয়েরসব কিছুর প্রতিপালক। তিনি বছর ব্যাপী সূর্যের উদয়াচল ও অস্তাচলের প্রতিপালক।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنۡيَا بِزِينَةٍ ٱلۡكَوَاكِبِ
৬. আমি যমীনের নিকটবর্তী আসমানকে সুন্দর অলঙ্কার তথা এমন নক্ষত্ররাজি দ্বারা সাজিয়েছি যা দেখতে চমকপ্রদ মাণিক্য স্বরূপ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَحِفۡظٗا مِّن كُلِّ شَيۡطَٰنٖ مَّارِدٖ
৭. আর আমি দুনিয়ার আসমানকে সকল আনুগত্যের সীমা লঙ্ঘনকারী অবাধ্য শয়ত্বান থেকে তারকারাজির নিক্ষেপণের মাধ্যমে হেফাজত করেছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى ٱلۡمَلَإِ ٱلۡأَعۡلَىٰ وَيُقۡذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٖ
৮. এসব শয়তানরা আসমানে ফিরিশতাদের উপর তাঁদের প্রতিপালক দ্বীন কিংবা দুনিয়াবী বিষয়ে যে সব প্রত্যাদেশ অবগত করেন তা শুনতে পায় না। বরং তাদেরকে সব দিক থেকে স্ফুলিঙ্গ দ্বারা আঘাত করা হয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
دُحُورٗاۖ وَلَهُمۡ عَذَابٞ وَاصِبٌ
৯. তাদেরকে বিতাড়িত করণ ও শ্রবণ থেকে দূরে সরানোর নিমিত্তে। আর তাদের জন্য রয়েছে পরকালের কষ্টদায়ক, অবিচ্ছিন্ন ও স্থায়ী শাস্তি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا مَنۡ خَطِفَ ٱلۡخَطۡفَةَ فَأَتۡبَعَهُۥ شِهَابٞ ثَاقِبٞ
১০. তবে যে শয়তান কেড়ে নিয়ে কিছু কথা শ্রবণ করে ফেলে তার কথা ব্যতিক্রম। আর এটি হচ্ছে সেই কথা যা যমীনবাসীর নিকট পৌঁছার পূর্বে ফিরিশতাগণ পরস্পর বলাবলি করেন এবং তখনই তাকে চমকপ্রদ তারকা আঘাত হেনে জ্বালিয়ে ফেলে। কখনও তাকে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ পোড়ানোর পূর্বে সে উক্ত কথাটি তার জ্যোতিষী বন্ধুদের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়। ফলে তারা এর সাথে শত মিথ্যা যুক্ত করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱسۡتَفۡتِهِمۡ أَهُمۡ أَشَدُّ خَلۡقًا أَم مَّنۡ خَلَقۡنَآۚ إِنَّا خَلَقۡنَٰهُم مِّن طِينٖ لَّازِبِۭ
১১. হে মুহাম্মদ! আপনি পুনরুত্থানে অবিশ্বাসী কাফিরদেরকে প্রশ্ন করুন। তারাকি আমি যে আসমান, যমীন ও ফিরিশতা সৃষ্টি করেছি এতদপেক্ষা দৃঢ়তর অবকাঠামো, শক্তিশালী শরীর ও প্রকাÐ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অধিকারী? আমি তো তাদেরকে আঠালো মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। অতএব তারা কীভাবে পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে? অথচ তারা একটি দুর্বল উপাদান তথা আঠালো মাটি থেকে সৃষ্ট।
আরবি তাফসীরসমূহ:
بَلۡ عَجِبۡتَ وَيَسۡخَرُونَ
১২. বরং হে মুহাম্মদ! আপনি আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন আপনার প্রতিপালকের সৃষ্টিগত অভিনব ক্ষমতা ও পরিচালনা দেখে যেমন আপনি আশ্চর্যান্বিত হয়েছেন মুশরিকদের পুনরুত্থানকে অস্বীকার করা দেখে। এসব মুশরিকদের কর্তৃক পুনরুত্থানকে কঠিনভাবে অবিশ্বাস করার একটি ধরন হচ্ছে এই যে, তারা এ ব্যাপারে আপনার কথা নিয়ে বিদ্রƒপ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِذَا ذُكِّرُواْ لَا يَذۡكُرُونَ
১৩. এসব মুশরিকদের অন্তর কঠিন হওয়ার দরুন তাদেরকে উপদেশের কোন কথা বলা হলে তারা এথেকে উপদেশ গ্রহণ করে না। না এদ্বারা তারা উপকৃত হয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِذَا رَأَوۡاْ ءَايَةٗ يَسۡتَسۡخِرُونَ
১৪. যখন তারা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সত্যতার উপর প্রমাণবাহী কোন নিদর্শন দেখতে পায় তখন তারা একে নিয়ে আরো বেশী বিদ্রƒপ ও আশ্চর্য প্রকাশ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَقَالُوٓاْ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّا سِحۡرٞ مُّبِينٌ
১৫. আর বলে, মুহাম্মদ যা নিয়ে এসেছেন তা সুস্পষ্ট যাদু বৈ আর কিছু নয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَءِذَا مِتۡنَا وَكُنَّا تُرَابٗا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَبۡعُوثُونَ
১৬. আমরা যখন মরে গিয়ে মাটি আর বিক্ষিপ্ত পুরানো হাড়ে পরিণত হবো এরপর কি আবার জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো? এ তো দুস্কর ব্যাপার।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَوَءَابَآؤُنَا ٱلۡأَوَّلُونَ
১৭. তবে কি আমাদের পূর্ব পুরুষরাও পুনরুত্থিত হবে যারা আমাদের পূর্বে মারা গিয়েছে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
قُلۡ نَعَمۡ وَأَنتُمۡ دَٰخِرُونَ
১৮. হে মুহাম্মদ! আপনি তাদের প্রতি উত্তরে বলুন, হ্যাঁ। তোমরা মাটি ও পুরোনো হাড়ে পরিণত হওয়ার পর আর তোমাদের পূর্ব পুরুষরা সবাই অপমান অপদস্ত হয়ে পুনরুত্থিত হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَإِنَّمَا هِيَ زَجۡرَةٞ وَٰحِدَةٞ فَإِذَا هُمۡ يَنظُرُونَ
১৯. এটি হবে সিঙ্গায় দ্বিতীয়বারের মত একটি মাত্র ফুৎকার। সহসা তারা সবাই কিয়ামত দিবসের ভয়াবহতা দেখতে থাকবে। আল্লাহ তাদের সাথে কী আচরণ করবেন তার অপেক্ষায় বিভোর।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَقَالُواْ يَٰوَيۡلَنَا هَٰذَا يَوۡمُ ٱلدِّينِ
২০. আর পুনরুত্থানকে অস্বীকারকারী মুশরিকরা বলবে, হায় আমাদের ধ্বংস! এটি তো সেই দিন যেদিন আল্লাহ স্বীয় বান্দাদেরকে দুনিয়ার জীবনের তাদের সমূহ কৃতকর্মের প্রতিদান দিবেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
هَٰذَا يَوۡمُ ٱلۡفَصۡلِ ٱلَّذِي كُنتُم بِهِۦ تُكَذِّبُونَ
২১. তখন তাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে, আজকের দিন হচ্ছে বান্দাদের মধ্যে ওই ফয়সালার দিন যাকে তোমরা দুনিয়াতে অবিশ্বাস ও অস্বীকার করতে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
۞ ٱحۡشُرُواْ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ وَأَزۡوَٰجَهُمۡ وَمَا كَانُواْ يَعۡبُدُونَ
২২-২৩. এই দিন ফিরিশতাদেরকে বলা হবে, তোমরা শিরকের মাধ্যমে জুলুমকারী মুশরিকদেরকে ও শিরকের ক্ষেত্রে তাদের মত অপরাধী এবং মিথ্যারোপের কাজে তাদেরকে উৎসাহ প্রদানকারীদেরকে সেই সাথে আল্লাহর পরিবর্তে তারা যে সব মূর্তির পূজা করত তাদের সবাইকে জাহান্নামের পথ চিনিয়ে ও দেখিয়ে দিয়ে তথায় হাঁকিয়ে নিয়ে যাও। কেননা, এটিই তাদের ঠিকানা।
আরবি তাফসীরসমূহ:
مِن دُونِ ٱللَّهِ فَٱهۡدُوهُمۡ إِلَىٰ صِرَٰطِ ٱلۡجَحِيمِ
২২-২৩. এই দিন ফিরিশতাদেরকে বলা হবে, তোমরা শিরকের মাধ্যমে জুলুমকারী মুশরিকদেরকে ও শিরকের ক্ষেত্রে তাদের মত অপরাধী এবং মিথ্যারোপের কাজে তাদেরকে উৎসাহ প্রদানকারীদেরকে সেই সাথে আল্লাহর পরিবর্তে তারা যে সব মূর্তির পূজা করত তাদের সবাইকে জাহান্নামের পথ চিনিয়ে ও দেখিয়ে দিয়ে তথায় হাঁকিয়ে নিয়ে যাও। কেননা, এটিই তাদের ঠিকানা।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَقِفُوهُمۡۖ إِنَّهُم مَّسۡـُٔولُونَ
২৪. আর তাদেরকে জাহান্নামে প্রবেশের পূর্বে হিসাবের উদ্দেশ্যে আটক করো। কেননা, তারা জিজ্ঞাসিত হবে। অতঃপর তাদেরকে জাহান্নামের দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাও।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• تزيين السماء الدنيا بالكواكب لمنافع؛ منها: تحصيل الزينة، والحفظ من الشيطان المارد.
ক. দুনিয়ার আসমানকে তারকারাজির সাধ্যমে সৌন্দরময় করার কিছু উদ্দ্যেশ্য রয়েছে যথা: সাজানো, অবাধ্য শয়তান থেকে রক্ষাকরণ।

• إثبات الصراط؛ وهو جسر ممدود على متن جهنم يعبره أهل الجنة، وتزل به أقدام أهل النار.
খ. পুলসিরাত সাব্যস্তকরণ। এটি এমন এক ব্রীজের নাম যা জাহান্নামের উপর স্থির রয়েছে। যার উপর দিয়ে জান্নাতীরা অতিক্রম করে চলে যাবে। আর জাহান্নামবাসীদের পা তথায় ফসকে যাবে।

مَا لَكُمۡ لَا تَنَاصَرُونَ
২৫. তিনি তাদেরকে ধমকের স্বরে বলবেন: তোমাদের কী হল, একজন অপরজনের কোন সাহয্য করছ না যে, যেমন দুনিয়াতে তোমরা একে অপরের সাহয্য করতে। আরো ভাবতে যে, তোমাদের দেবতারা তোমাদেরকে সাহায্য করবে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
بَلۡ هُمُ ٱلۡيَوۡمَ مُسۡتَسۡلِمُونَ
২৬. বরং তারা আজ আল্লাহর নির্দেশে অপমানিত অবস্থায় পরিচালিত। অপারগতা ও অনটনের ফলে আজ কেউ কারো সাহায্য করতে সমর্থ নয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَقۡبَلَ بَعۡضُهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ يَتَسَآءَلُونَ
২৭. আর একজন অপরজনের প্রতি দোষারোপ ও ঝগড়া নিয়ে অগ্রসর হবে। যখন দোষারোপ আর ঝগড়া কোন উপকারে আসবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالُوٓاْ إِنَّكُمۡ كُنتُمۡ تَأۡتُونَنَا عَنِ ٱلۡيَمِينِ
২৮. অনুসারীরা অনুসৃতদেরকে বলবে: হে বড়রা! তোমরা আমাদের নিকট দ্বীন ও হকের দোহাই দিয়ে আসতে। অতঃপর আমাদের সামনে আল্লাহর সাথে কুফরি, শিরক ও পাপাচারকে সুন্দরময় করে তুলতে। আর আমাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসূলগণ কর্তৃক আনিত সত্য থেকে ঘৃণাভরে দূরে সরিয়ে রাখতে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالُواْ بَل لَّمۡ تَكُونُواْ مُؤۡمِنِينَ
২৯. অনুসৃতরা অনুসারীদেরকে বলবে: বিষয়টি তোমাদের ধারণা অনুযায়ী নয়। বরং তোমরা মু’মিন ছিলে না। তোমরা মূলতঃ কাফির ও বেঈমান ছিলে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَمَا كَانَ لَنَا عَلَيۡكُم مِّن سُلۡطَٰنِۭۖ بَلۡ كُنتُمۡ قَوۡمٗا طَٰغِينَ
৩০. হে অনুসারীরা! তোমাদের উপর আমাদের এমন কোন দাপট কিংবা প্রতাপ ও প্রতিপত্তি ছিল না যে, তা খাটিয়ে আমরা তোমাদেরকে কুফরী, শিরক আর পাপাচারে বাধ্য করতাম। বরং তোমরা ছিলে কুফরি ও পথভ্রষ্টতায় সীমালঙ্ঘনকারী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَحَقَّ عَلَيۡنَا قَوۡلُ رَبِّنَآۖ إِنَّا لَذَآئِقُونَ
৩১. ফলে আমাদের ও তোমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি অবধারিত হয়েছে। যা কোরআনে এভাবে পরিবেশিত হয়েছে। যার অর্থ: “আমি অবশ্যই তোকে ও তোর অনুসারীদেরকে দিয়ে জাহান্নাম পরিপূর্ণ করবো”। (সাদ: ৮৫) অতএব আমরা আল্লাহর অঙ্গীকার অনুযায়ী শাস্তি পোহাতে বাধ্য।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَأَغۡوَيۡنَٰكُمۡ إِنَّا كُنَّا غَٰوِينَ
৩২. আমরা তোমাদেরকে পথভ্রষ্টতা ও কুফরির প্রতি আহŸান করেছি মাত্র। মূলতঃ আমরা হেদায়তের পথ থেকে ভ্রষ্ট ছিলাম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَإِنَّهُمۡ يَوۡمَئِذٖ فِي ٱلۡعَذَابِ مُشۡتَرِكُونَ
৩৩. কেননা, অনুসারী ও অনুসৃতরা কিয়ামত দিবসে শাস্তিতে শরীক থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَفۡعَلُ بِٱلۡمُجۡرِمِينَ
৩৪. আমি এদেরকে যেরূপ শাস্তি দিয়েছি এমনিভাবে অন্যান্য পাপীদেরকেও শাস্তি প্রদান করবো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُمۡ كَانُوٓاْ إِذَا قِيلَ لَهُمۡ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّهُ يَسۡتَكۡبِرُونَ
৩৫. এসব মুশরিকদেরকে দুনিয়াতে যখন বলা হত “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর দাবি অনুযায়ী আমল করতে ও তার বিপরীত কাজ থেকে বিরত থাকতে তখন তারা সত্য থেকে অহঙ্কার ও দূরে অবস্থান নিতে গিয়ে তা অমান্য ও অগ্রাহ্য করত।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَيَقُولُونَ أَئِنَّا لَتَارِكُوٓاْ ءَالِهَتِنَا لِشَاعِرٖ مَّجۡنُونِۭ
৩৬. তারা তাদের কুফরির উপর প্রমাণ পেশ করতে গিয়ে বলে: আমরা কি একজন পাগল কবির কথা মানতে গিয়ে আমাদের দেবতাদের ইবাদাত ছেড়ে দিব?! তারা তাদের উক্ত কথা দ্বারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে উদ্দেশ্য করছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
بَلۡ جَآءَ بِٱلۡحَقِّ وَصَدَّقَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ
৩৭. তারা মহা মিথ্যা অপবাদ রটিয়েছে। কেননা, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) না পাগল ছিলেন। আর না কবি ছিলেন। বরং তিনি এমন কিতাব নিয়ে এসেছেন যা আল্লাহর একত্ববাদ ও তদীয় রাসূলের অনুসরণের প্রতি আহŸান জানায়। আর তিনি রাসূলদেরকে তাঁরা যে একত্ববাদ ও পুনরুত্থানকে সাব্যস্ত করার দায়িত্ব নিয়ে এসেছেন তার সত্যায়ন করছেন। এসবের কোন কিছুতে তাঁদের বিরুদ্ধাচরণ করেননি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّكُمۡ لَذَآئِقُواْ ٱلۡعَذَابِ ٱلۡأَلِيمِ
৩৮. হে মুশরিকরা! তোমরা অবশ্যই তোমাদের কুফরি ও রাসূলদেরকে মিথ্যারোপ করার কারণে কিয়ামত দিবসে কষ্টদায়ক শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَمَا تُجۡزَوۡنَ إِلَّا مَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ
৩৯. হে মুশরিকরা! তোমাদেরকে কেবল দুনিয়ার জীবনে কৃত কুফরি ও পাপাচারের প্রতিদান দেয়া হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلۡمُخۡلَصِينَ
৪০. কিন্তু আল্লাহ যে সব মুমিন বান্দাকে তাঁর এবাদতের জন্য খাঁটিভাবে বাছাই করেছেন এবং তারা তাঁর ইবাদাতকে খাঁটি করেছে তারা তাথেকে রেহাই পাবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمۡ رِزۡقٞ مَّعۡلُومٞ
৪১. এসব খাঁটি বান্দার উদ্দেশ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রিযিকের ব্যবস্থা রয়েছে। যা উত্তম, সুন্দর ও স্থায়িত্বে সুপরিচিত।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَوَٰكِهُ وَهُم مُّكۡرَمُونَ
৪২. এসব রিযিকের মধ্যে রয়েছে তাদেরকে উত্তম প্রকৃতির যে সব ফলমূল তারা ভক্ষণ করতে চায় ও আগ্রহ রাখে তা তারেকে প্রদান করা হবে। তারা তদুপরি সম্মানিত হবে বহু মাত্রায় তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি ও তাদের সম্মানী প্রতিপালকের চেহারার দর্শন লাভের মাধ্যমে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فِي جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ
৪৩. এসব কিছু তারা লাভ করবে ভোগসামগ্রী দ্বারা ভরপুর স্থায়ী জান্নাতসমূহে। যার ফল্গুধারা কখনো বিচ্ছিন্ন হওয়ার নয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
عَلَىٰ سُرُرٖ مُّتَقَٰبِلِينَ
৪৪. তারা সামনা-সামনি পালঙ্কে হেলান দিয়ে আসন পেতে বসে পরস্পরের দিকে তাকাতে থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
يُطَافُ عَلَيۡهِم بِكَأۡسٖ مِّن مَّعِينِۭ
৪৫. তাদের সামনে মদের পেয়ালা পরিবেশন করা হবে যা প্রবাহিত পানির ন্যায় স্বচ্ছ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
بَيۡضَآءَ لَذَّةٖ لِّلشَّٰرِبِينَ
৪৬. তা শুভ্র বর্ণের। তা পানে পানকারী পূর্ণ স্বাদ আস্বাদন করবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
لَا فِيهَا غَوۡلٞ وَلَا هُمۡ عَنۡهَا يُنزَفُونَ
৪৭. এটি দুনিয়ার মদের মত নয়। কেননা, তাতে নেশার দরুন বিবেক হরণকারী কোন উপাদান থাকবে না। আর না গ্রহণকারীকে মাথা ব্যাথায় আক্রান্ত করবে। তা পানকারীর শরীর ও বিবেক নিরাপদে থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَعِندَهُمۡ قَٰصِرَٰتُ ٱلطَّرۡفِ عِينٞ
৪৮. তাদের উদ্দেশ্যে জান্নাতে থাকবে সতী-সাধ্বী নারীরা। যাদের দৃষ্টি তাদের স্বামী ব্যতীত অন্য পুরুষের দিকে প্রসারিত হয় না। তারা পদ্মপলাশলোচন চোখের অধিকারিনী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
كَأَنَّهُنَّ بَيۡضٞ مَّكۡنُونٞ
৪৯. তারা হলুদ মিশ্রিত শুভ্রতায় যেন উড্ডয়মান রক্ষিত ডিমের ন্যায়। যাকে কোন হাত স্পর্শ করেনি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَأَقۡبَلَ بَعۡضُهُمۡ عَلَىٰ بَعۡضٖ يَتَسَآءَلُونَ
৫০. তখন জান্নাতীদের একজন অপরজনের প্রতি তাদের অতীত ও দুনিয়াতে সংঘটিত বিষয়ে প্রশ্ন নিয়ে অগ্রসর হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالَ قَآئِلٞ مِّنۡهُمۡ إِنِّي كَانَ لِي قَرِينٞ
৫১. তাদের মধ্য থেকে একজন মু’মিন বলে উঠবে, পুনরুত্থান অবিশ্বাসী আমার এক সাথী ছিল।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• سبب عذاب الكافرين: العمل المنكر؛ وهو الشرك والمعاصي.
ক. কাফিরদের শাস্তির কারণ হচ্ছে অপকর্ম তথা শিরক ও পাপাচার।

• من نعيم أهل الجنة أنهم نعموا باجتماع بعضهم مع بعض، ومقابلة بعضهم مع بعض، وهذا من كمال السرور.
খ. জান্নাতীদের উপভোগ্য একটি উপকরণ হবে তাদের পারস্পরিক সমবেত হওয়া ও একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ। যা হচ্ছে পূর্ণ আনন্দেরই অন্তর্ভুক্ত।

يَقُولُ أَءِنَّكَ لَمِنَ ٱلۡمُصَدِّقِينَ
৫২. আমাকে অস্বীকার ও ঠাট্টার ছলে বলে: হে বন্ধু! তুমি কি মৃতদের পুনরুত্থানে বিশ্বাসী?
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَءِذَا مِتۡنَا وَكُنَّا تُرَابٗا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَدِينُونَ
৫৩. আমরা যখন মারা যাব এবং মাটি ও চূর্ণ বিচূর্ণ হাড়ে পরিণত হবো তখন কি আমাদেরকে পুনরুত্থান ঘটানোর মাধ্যমে দুনিয়ার কৃতকর্মের উপর প্রতিদান দেয়া হবে?
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالَ هَلۡ أَنتُم مُّطَّلِعُونَ
৫৪. তার মু’মিন সাথী স্বীয় জান্নাতী সাথীদেরকে বলবে, তোমরা আমার সাথে উঁকি দিয়ে দেখ তো, আমার পুনরুত্থানে অবিশ্বাসী সাথীর পরিণতি কী হয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱطَّلَعَ فَرَءَاهُ فِي سَوَآءِ ٱلۡجَحِيمِ
৫৫. তখন সে উঁকি মারতেই দেখবে, তার সাথী জাহান্নামের মধ্যভাগে অবস্থান করছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالَ تَٱللَّهِ إِن كِدتَّ لَتُرۡدِينِ
৫৬. সে বলে উঠবে, আল্লাহর শপথ! হে সাথী! তুমি আমাকে কুফরি ও পুনরুত্থান অস্বীকারের প্রতি আহŸান করে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে ধ্বংস করার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَوۡلَا نِعۡمَةُ رَبِّي لَكُنتُ مِنَ ٱلۡمُحۡضَرِينَ
৫৭. যদি আমার উপর ঈমান ও তাওফীকের পথ নির্দেশের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ না থাকত তবে আমিও তোমার মত শাস্তিতে নিমজ্জিত থাকতাম। যখন তার জাহান্নামী সাথীর সঙ্গে কথোপকথন শেষ করবে তখন সে তার জান্নাতী সাথীদেরকে সম্বোধন করে বলবে,
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَفَمَا نَحۡنُ بِمَيِّتِينَ
৫৮. আমরা জান্নাতীরা মরণশীল নই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا مَوۡتَتَنَا ٱلۡأُولَىٰ وَمَا نَحۡنُ بِمُعَذَّبِينَ
৫৯. আমাদের দুনিয়ার জীবনের প্রথমবারের মৃত্যু ব্যতীত। বরং আমরা জান্নাতে চিরস্থায়ী থাকব। আর আমরা কাফিরদের ন্যায় শাস্তিপ্রাপ্ত হব না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ
৬০. এই প্রতিদান যা আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে প্রতিদানস্বরূপ দিয়েছেন তথা জান্নাতে প্রবেশ ও তথায় চিরস্থায়ী থাকার ব্যবস্থা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি এগুলো হলো মহা সাফল্য। যার সাথে অন্য কোন সাফল্যের তুলনা হতে পারে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
لِمِثۡلِ هَٰذَا فَلۡيَعۡمَلِ ٱلۡعَٰمِلُونَ
৬১. এই মহা প্রতিদানের জন্য আমলকারীদের আমল করা উচিত। কেননা, এটি হলো লাভজনক বাণিজ্য।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَذَٰلِكَ خَيۡرٞ نُّزُلًا أَمۡ شَجَرَةُ ٱلزَّقُّومِ
৬২. উপরোল্লিখিত এই স্থায়ী নিয়ামত যা আল্লাহ সেসব বান্দার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করেছেন যাদেরকে তিনি তাঁর আনুগত্যের জন্য খাঁটি করেছেন তা সম্মান ও অবস্থানের ক্ষেত্রে উত্তম, না কি ‘যাক্কুম’ নামক কুরআনের অভিশপ্ত বৃক্ষ যা কাফিরদের খাদ্য। যা না পুষ্ট করে, না ক্ষুধা নিবারণ করে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا جَعَلۡنَٰهَا فِتۡنَةٗ لِّلظَّٰلِمِينَ
৬৩. আমি উক্ত বৃক্ষকে ফিতনা স্বরূপ বানিয়েছি। এর সাহায্যে কুফরি ও পাপাচারের মাধ্যমে জুলুমকারীদেরকে ফিতনায় ফেলে দেয়া হবে। যেখানে তারা বলেছে, আগুন বৃক্ষকে খেয়ে ফেলে। তাই এটি তাতে গজিয়ে উঠতে পারবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهَا شَجَرَةٞ تَخۡرُجُ فِيٓ أَصۡلِ ٱلۡجَحِيمِ
৬৪. ‘যাক্কুম’ হলো একটি নোংরা উৎসের বৃক্ষ। এটি জাহান্নামের তলদেশে জন্মায়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
طَلۡعُهَا كَأَنَّهُۥ رُءُوسُ ٱلشَّيَٰطِينِ
৬৫. তা থেকে উদ্গত ফলের দৃশ্য এমন দৃষ্টিকটু যে, তাকে শয়তানের মাথার মত দেখায়। আর কুদৃশ্য কুস্বভাবেরই পরিচায়ক। তাই এটি প্রমাণ করে যে, তার ফল হবে বিস্বাদ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَإِنَّهُمۡ لَأٓكِلُونَ مِنۡهَا فَمَالِـُٔونَ مِنۡهَا ٱلۡبُطُونَ
৬৬. কাফিররা এর তিতা ও বিস্বাদ ফল ভক্ষণ করবে এবং তা দিয়ে তাদের খালি উদর পূর্ণ করবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ثُمَّ إِنَّ لَهُمۡ عَلَيۡهَا لَشَوۡبٗا مِّنۡ حَمِيمٖ
৬৭. অতঃপর তাদের উক্ত খাবারের পর তাদের জন্য রয়েছে মিশ্রিত অপেয় উত্তপ্ত পানীয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ثُمَّ إِنَّ مَرۡجِعَهُمۡ لَإِلَى ٱلۡجَحِيمِ
৬৮. অতঃপর তাদেরকে ফেরত দেয়া হবে জাহান্নামের শাস্তির দিকে। বস্তুতঃ তারা এক শাস্তি থেকে অপর শাস্তির দিকে স্থানান্তরিত হতে থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُمۡ أَلۡفَوۡاْ ءَابَآءَهُمۡ ضَآلِّينَ
৬৯. এসব কাফির তাদের পূর্ব পুরুষদেরকে হেদায়েতের পথ থেকে ভ্রষ্ট পেয়েছে। তাই তারা প্রমাণবিহীন তাদের অন্ধ অনুসরণ করছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَهُمۡ عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِمۡ يُهۡرَعُونَ
৭০. ফলে তারা ভ্রষ্টতার কাজে দ্রæততার সাথে পূর্ব পুরুষদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ ضَلَّ قَبۡلَهُمۡ أَكۡثَرُ ٱلۡأَوَّلِينَ
৭১. তাদের পূর্বেকার অধিকাংশ লোকজন পথভ্রষ্ট হয়েছে। অতএব হে রাসূল! আপনার জাতি প্রথম পথভ্রষ্ট জাতি নয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ أَرۡسَلۡنَا فِيهِم مُّنذِرِينَ
৭২. আমি পূর্বেকার সেসব জাতির নিকট রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছি। তাঁরা তাদেরকে আল্লাহর শাস্তির ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু তারা কুফরি করেছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱنظُرۡ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلۡمُنذَرِينَ
৭৩. অতএব হে রাসূল! আপনি সেসব জাতির পরিণতির প্রতি লক্ষ্য করুন যাদরকে তাদের রাসূলগণ ভীতি প্রদর্শন করা সত্তে¡ও তারা তাঁদের ডাকে সাড়া দেয়নি। তাদের পরিণতি ছিল কুফরি এবং তাদের রাসূলদেরকে মিথ্যারোপ করার প্রতিদান হিসাবে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নাামে প্রবেশ করা।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلۡمُخۡلَصِينَ
৭৪. কেবল যাদেরকে আল্লাহ তাঁর উপর ঈমান আনয়নের উদ্দেশ্যে খাঁটি করেছেন তারা ওইসব মিথ্যারোপকারী কাফিরের পরিণতিমূলক শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ نَادَىٰنَا نُوحٞ فَلَنِعۡمَ ٱلۡمُجِيبُونَ
৭৫. আমার নিকট আমার নবী নূহ (আলাইহিস-সালাম) তাঁকে মিথ্যারোপকারী জাতির উপর বদ দু‘আ করেছিলেন। ফলে আমি কতইনা উত্তম সাড়া দানকারী ছিলাম। আমি অতিসত্বর তাদের উপর তাঁর বদ দু‘আ কবুল করেছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَنَجَّيۡنَٰهُ وَأَهۡلَهُۥ مِنَ ٱلۡكَرۡبِ ٱلۡعَظِيمِ
৭৬. আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে এবং ঈমানদারদেরকে তাঁর সম্প্রদায়ের কাফিরদের কষ্ট থেকে এবং তাদেরকে মহা প্রলয়ংকারী প্লাবন থেকে রেহাই দিয়েছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• الظفر بنعيم الجنان هو الفوز الأعظم، ولمثل هذا العطاء والفضل ينبغي أن يعمل العاملون.
ক. জান্নাতের ভোগসামগ্রী দ্বারা ধন্য হওয়াই মহা সাফল্য। বস্তুতঃ এধরনের অবদান ও অনুগ্রহ লাভের উদ্দেশ্যে সবারই আমল করা উচিত।

• إن طعام أهل النار هو الزقّوم ذو الثمر المرّ الكريه الطعم والرائحة، العسير البلع، المؤلم الأكل.
খ. জাহান্নামবাসীদের খাবার হলো ‘যাক্কুম’। যা তিতা জাতীয় ফল। তার স্বাদ ও গন্ধ উভয়টিই অপ্রিতিকর। তার গলধকরণ দুঃসাধ্য এবং ভক্ষণও কষ্টসাধ্য।

• أجاب الله تعالى دعاء نوح عليه السلام بإهلاك قومه، والله نعم المقصود المجيب.
গ. আল্লাহ নূহ (আলাইহিস-সালাম) এর জাতিকে ধ্বংস করার মাধ্যমে তাঁর দু‘আ কবুল করেন। তিনি উত্তম আশ্রয় স্থল এবং তিনিই দু‘আ কবুলকারী।

وَجَعَلۡنَا ذُرِّيَّتَهُۥ هُمُ ٱلۡبَاقِينَ
৭৭. আমি আল্লাহ শুধু তাঁর পরিবার ও অনুসারী মুমিনদেরকে উদ্ধার করেছি। পক্ষান্তরে তাঁর সম্প্রদায়ের অন্যান্য কাফিরদেরকে ধ্বংস করেছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِي ٱلۡأٓخِرِينَ
৭৮. আমি পরবর্তী উম্মতের মাঝে তাঁর সুনাম অক্ষুণœ রেখেছি। যদ্বরুন তারা তাঁর প্রশংসা করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سَلَٰمٌ عَلَىٰ نُوحٖ فِي ٱلۡعَٰلَمِينَ
৭৯. নূহের জন্য নিরাপত্তা ও শান্তি। পরবর্তী কেউ তাঁর ব্যাপারে কটূক্তি করবে না। বরং তাঁর বারংবার প্রশংসা ও সুনাম অব্যাহত থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ
৮০. আমি নূহ (আলাইহস-সালাম) কে যে প্রতিদান দিয়েছি তেমনি প্রতিদান দেবো তাদেরকেও যারা এককভাবে আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্যের মাধ্যমে উৎকৃষ্ট সাব্যস্ত হয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُۥ مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
৮১. অবশ্যই নূহ (আলাইহস-সালাম) আমার আনুগত্যের মাধ্যমে আমলকারী মু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ثُمَّ أَغۡرَقۡنَا ٱلۡأٓخَرِينَ
৮২. অতঃপর আমি তাদের উপর অবধারিত প্লাবন দ্বারা অবশিষ্টদেরকে ডুবিয়ে দিলাম। ফলে তাদের কেউই রেহাই পেল না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
۞ وَإِنَّ مِن شِيعَتِهِۦ لَإِبۡرَٰهِيمَ
৮৩. আর ইবরাহীম (আলাইহস-সালাম) ছিলেন তাঁর দ্বীনের সেসব অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত যারা ছিল একত্ববাদের দা’ওয়াতে তাঁর সাথে একমত।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِذۡ جَآءَ رَبَّهُۥ بِقَلۡبٖ سَلِيمٍ
৮৪. সেই সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন তিনি স্বীয় প্রতিপালকের সাথে শিরক করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে একান্ত আন্তরিক হয়ে এসেছিলেন আল্লাহর সৃষ্টির নিকট শুভাকাঙ্খী হিসাবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِذۡ قَالَ لِأَبِيهِ وَقَوۡمِهِۦ مَاذَا تَعۡبُدُونَ
৮৫. যখন তিনি তাঁর মুশরিক পিতা ও সম্প্রদায়কে ধমকির স্বরে বলেছিলেন: তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে কার ইবাদাত করো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَئِفۡكًا ءَالِهَةٗ دُونَ ٱللَّهِ تُرِيدُونَ
৮৬. তোমরাকি আল্লাহর পরিবর্তে মিথ্যা দেবতাদের ইবাদাত করো?
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَمَا ظَنُّكُم بِرَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
৮৭. হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা জগতসমূহের প্রতিপালকের ব্যাপারে কী ধারণা করো - যখন তোমরা অন্যের ইবাদাত করে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে যাবে তখন তিনি তোমাদের সাথে কী আচরণ করবেন?
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَنَظَرَ نَظۡرَةٗ فِي ٱلنُّجُومِ
৮৮. ইবরাহীম (আলাইহস-সালাম) তাঁর জাতির সাথে বের হওয়া থেকে বাঁচার পথ খোঁজার জন্য ফন্দি আঁটতে তারকারাজির প্রতি দৃষ্টি দিলেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَقَالَ إِنِّي سَقِيمٞ
৮৯. তাই তাঁর জাতির সাথে তাদের উৎসবে বের না হওয়ার কারণ দর্শালেন এই বলে যে, তিনি অসুস্থ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَتَوَلَّوۡاْ عَنۡهُ مُدۡبِرِينَ
৯০. ফলে তারা তাঁকে পেছনে রেখে চলে গেল।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَرَاغَ إِلَىٰٓ ءَالِهَتِهِمۡ فَقَالَ أَلَا تَأۡكُلُونَ
৯১. তখন তিনি আল্লাহর পরিবর্তে তাদের বানানো দেবতাদের দিকে ধাবিত হয়ে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিদ্রƒপের ছলে বললেন: তোমাদের কী হল? তোমাদের উদ্দেশ্যে মুশরিকরা যে খাবার প্রস্তুত করেছে তোমরা তা খাচ্ছ না কেন?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
مَا لَكُمۡ لَا تَنطِقُونَ
৯২. তোমাদের কী হল? তোমরা কথা বলছ না? আবার কেউ তোমাদেরকে প্রশ্ন করলে তার উত্তরও দিচ্ছ না?! এমন কারো কি আল্লাহর পরিবর্তে ইবাদাত করা যায়?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَرَاغَ عَلَيۡهِمۡ ضَرۡبَۢا بِٱلۡيَمِينِ
৯৩. এবার ইবরাহীম (আলাইহস-সালাম) তাদের দিকে অগ্রসর হয়ে সেগুলোকে ভাঙ্গার জন্য তাঁর ডান হাত দিয়ে আঘাত করলেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَأَقۡبَلُوٓاْ إِلَيۡهِ يَزِفُّونَ
৯৪. অতঃপর তাঁর প্রতি এসব দেবতাদের পূজারীরা তড়িত অগ্রসর হলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالَ أَتَعۡبُدُونَ مَا تَنۡحِتُونَ
৯৫. ইবরাহীম (আলাইহস-সালাম) দৃঢ়তার সাথে তাদের মুকাবিলা করলেন এবং তাদেরকে ধমকির স্বরে বললেন: তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে এমন দেবতার ইবাদাত করো যাদেরকে তোমরা নিজ হাতে তৈরী করেছ?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَٱللَّهُ خَلَقَكُمۡ وَمَا تَعۡمَلُونَ
৯৬. অথচ মহান আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের কাজকেও সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদের কাজের মধ্যে রয়েছে এসব দেবতা। তাই কেবল তিনিই এবাদতের হকদার। তাঁর সাথে অন্যকে শরীক করা যাবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَالُواْ ٱبۡنُواْ لَهُۥ بُنۡيَٰنٗا فَأَلۡقُوهُ فِي ٱلۡجَحِيمِ
৯৭. তারা যখন প্রমাণ ভিত্তিক জবাব দানে ব্যর্থ হলো তখন ক্ষমতার আশ্রয় নিলো। তারা পরস্পর পরামর্শ করলো যে, ইবরাহীমের ব্যাপারে কী করা যায়। তারা বললো: একটি চৌহদ্দি ঘেরা পরিখা খনন করো। অতঃপর তাতে কিছু কাঠ জড়ো করে সেগুলোতে আগ্নি সংযোগ করো এবং তাতে তাকে নিক্ষেপ করো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَأَرَادُواْ بِهِۦ كَيۡدٗا فَجَعَلۡنَٰهُمُ ٱلۡأَسۡفَلِينَ
৯৮. ইবরাহীমের জাতি তাঁকে কষ্ট দিয়ে ধ্বংস করে তাঁর থেকে রেহাই পেতে চাইলো। তখন আমি তাঁর উপর আগুনকে সুশীতল বানিয়ে দিয়ে তাদেরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করলাম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهۡدِينِ
৯৯. তখন ইবরাহীম (আলাইহস-সালাম) বললেন: আমি আমার জাতির দেশ ছেড়ে আমার প্রতিপালকের এবাদতের উদ্দেশ্যে তাঁর দিকেই হিজরত করছি। আমার প্রতিপালক অচিরেই আমাকে ইহ ও পরকালীন কল্যাণের পথ দেখাবেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
رَبِّ هَبۡ لِي مِنَ ٱلصَّٰلِحِينَ
১০০. হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একটি সুসন্তান দিন। যে আমার সহযোগী হবে ও আমার সম্প্রদায়ের মাঝে আমার স্থলাভিষিক্ত হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَبَشَّرۡنَٰهُ بِغُلَٰمٍ حَلِيمٖ
১০১. আমি তাঁর দু‘আ কবুল করলাম এবং তাঁকে এক আনন্দদায়ক সুসংবাদ জানালাম। তাকে এমন এক সন্তানের সুসংবাদ দিলাম যে বড় ও সহনশীল হবে। আর তিনি হলেন ইসমাঈল (আলাইহিস-সালাম)।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَلَمَّا بَلَغَ مَعَهُ ٱلسَّعۡيَ قَالَ يَٰبُنَيَّ إِنِّيٓ أَرَىٰ فِي ٱلۡمَنَامِ أَنِّيٓ أَذۡبَحُكَ فَٱنظُرۡ مَاذَا تَرَىٰۚ قَالَ يَٰٓأَبَتِ ٱفۡعَلۡ مَا تُؤۡمَرُۖ سَتَجِدُنِيٓ إِن شَآءَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلصَّٰبِرِينَ
১০২. ইসমা‘ইল (আলাইহিস-সালাম) যৌবনে পদার্পণ করলে তাঁর কর্মচাঞ্চল্য স্বীয় পিতার কর্মতৎপরতার সাথে যুক্ত হলো। পিতা ইবরাহীম একটি স্বপ্ন দেখলেন। বস্তুতঃ নবীদের স্বপ্ন হলো এক প্রকার ওহী। ইবরাহীম (আলাইহিস-সালাম) স্বীয় পুত্রকে তাঁর স্বপ্নের ইঙ্গিত সম্পর্কে অবগত করতে গিয়ে বললেন: আমি স্বপ্নে আদিষ্ট হয়েছি, আমি যেন তোমাকে কুরবানী করি। এবার তোমার মতামত কী তা বলো। তখন ইসমাঈল (আলাইহিস-সালাম) তাঁর পিতাকে এই বলে উত্তর দিলেন যে, হে আমার প্রাণপ্রিয় পিতা! আল্লাহ আমাকে কুরবানী করতে আপনার উপর যে নির্দেশ জারী করেছেন তা বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে অচিরেই তাঁর নির্দেশের উপর ধৈর্যশীল ও সন্তুষ্ট পাবেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• من مظاهر الإنعام على نوح: نجاة نوح ومن آمن معه، وجعل ذريته أصول البشر والأعراق والأجناس، وإبقاء الذكر الجميل والثناء الحسن.
ক. নূহ (আলাইহিস-সালাম) এর উপর আল্লাহর অনুগ্রহের নিদর্শনের একটি হলো মু’মিন বান্দাসহ তাঁর মুক্তি। অন্যটি হলো তাঁর সন্তানরদেরকে মানব বংশ ও জাতির মূল উৎস হিসাবে পরিগণিত করা এবং সুনাম ও বারংবার প্রশংসার ধারা চালু রাখা।

• أفعال الإنسان يخلقها الله ويفعلها العبد باختياره.
খ. মানুষের কর্মকাÐ আল্লাহ সৃষ্টি করেন। আর সেগুলোকে বান্দাহ তার ইচ্ছায় সম্পাদন করে থাকে।

• الذبيح بحسب دلالة هذه الآيات وترتيبها هو إسماعيل عليه السلام؛ لأنه هو المُبَشَّر به أولًا، وأما إسحاق عليه السلام فبُشِّر به بعد إسماعيل عليه السلام.
গ. আয়াতসমূহের প্রামাণিকতা ও শ্রেণী বিন্যাস প্রমাণ করে যে, কুরবানীর জন্য প্রস্তাবিত ব্যক্তি ছিলেন ইসমাঈল (আলাইহিস-সালাম)। কেননা, তিনিই প্রথম সুসংবাদের পাত্র। পক্ষান্তরে ইসহাক (আলাইহিস-সালাম) এর ব্যাপারে সুসংবাদ পরে পরিবেশিত হয়েছে।

• قول إسماعيل: ﴿سَتَجِدُنِي إِن شَآءَ اْللهُ مِنَ اْلصَّابِرِينَ﴾ سبب لتوفيق الله له بالصبر؛ لأنه جعل الأمر لله.
ঘ. ইসমাঈল (আলাইহিস-সালাম) এর কথা, ‘আল্লাহর ইচ্ছায় অচিরেই আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন’ আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যলাভে ধন্য হওয়ার কারণ ছিল। কেননা, তিনি বিষয়টিকে আল্লাহর প্রতি সমর্পণ করেন।

فَلَمَّآ أَسۡلَمَا وَتَلَّهُۥ لِلۡجَبِينِ
১০৩. যখন উভয়জন আল্লাহর উদ্দেশ্যে অবনমিত ও আনুগত্যশীল হলো এবং ইবরাহীম (আলাইহিস-সালাম) স্বীয় পুত্রকে যবাই করার নির্দেশ বাস্তবায়ন করার জন্য তাঁর চেহারার পার্শ্বদেশ ফিরালেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَنَٰدَيۡنَٰهُ أَن يَٰٓإِبۡرَٰهِيمُ
১০৪. তিনি তখন পুত্রকে যবাই করার ব্যাপারে আমার নির্দেশ বাস্তবায়নে ব্যস্ত ছিলেন তখনই আমি তাঁকে ডেকে বললাম: হে ইবরাহীম!
আরবি তাফসীরসমূহ:
قَدۡ صَدَّقۡتَ ٱلرُّءۡيَآۚ إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ
১০৫. অবশ্যই আপনি নিজ পুত্রকে যবাই করার চূড়ান্ত প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে স্বপ্নের নির্দেশ বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। মূলতঃ আপনাকে যেভাবে এই কঠিন পরীক্ষা থেকে রেহাই দিয়েছি এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে কঠিন পরীক্ষা থেকে উদ্ধার করার মাধ্যমে প্রতিদান দেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ ٱلۡبَلَٰٓؤُاْ ٱلۡمُبِينُ
১০৬. এটি হলো এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। যাতে ইবরাহীম (আলাইহিস-সালাম) উত্তীর্ণ হয়েছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَفَدَيۡنَٰهُ بِذِبۡحٍ عَظِيمٖ
১০৭. আমি ইসমাঈলের পরিবর্তে একটি বিরাট আকারের ভেড়া পাঠালাম। তাঁর পরিবর্তে যেটিকে যবাই করা হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِي ٱلۡأٓخِرِينَ
১০৮. আর আমি ইবরাহীমের জন্য পরবর্তী জাতিদের মধ্যে সুনাম রেখে দিলাম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِبۡرَٰهِيمَ
১০৯. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর জন্য শান্তি এবং এটি সর্বপ্রকার অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তার দু‘আ স্বরূপও।
আরবি তাফসীরসমূহ:
كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ
১১০. আমি যেভাবে ইবরাহীম (আলাইহিস-সালাম) কে তাঁর আনুগত্যের উপর প্রতিদান দিয়েছি তেমনিভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিদান দেবো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُۥ مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
১১১. ইবরাহীম (আলাইহিস-সালাম) আমার সেসব মুমিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত যারা আল্লাহর এবাদতের দাবি পূরণে সক্ষম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَبَشَّرۡنَٰهُ بِإِسۡحَٰقَ نَبِيّٗا مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ
১১২. আমি তাঁকে আরেকটি পুত্রের সুসংবাদ দিয়েছি। যিনি নবী ও আল্লাহর সৎ বান্দাহ হবেন। যিনি হলেন ইসহাক (আলাইহিস-সালাম)। এটি সেই আনুগত্যের প্রতিদান স্বরূপ আল্লাহ তাঁকে দিয়েছেন যা তিনি তাঁর একমাত্র সন্তান ইসমাঈলকে যবাই করার মাধ্যমে প্রমাণ করছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَبَٰرَكۡنَا عَلَيۡهِ وَعَلَىٰٓ إِسۡحَٰقَۚ وَمِن ذُرِّيَّتِهِمَا مُحۡسِنٞ وَظَالِمٞ لِّنَفۡسِهِۦ مُبِينٞ
১১৩. আর আমি তাঁর ও তাঁর সন্তান ইসহাকের প্রতি আমার পক্ষ থেকে বরকত অবতীর্ণ করি। ফলে তাঁদের উভয়ের উদ্দেশ্যে নিআমতের প্রাচুর্য প্রদান করি। তন্মধ্যে রয়েছে উভয়ের সন্তানদের আধিক্য। আর তাদের সন্তানদের মধ্যে রয়েছে স্বীয় প্রতিপালকের আনুগত্যের মাধ্যমে সৎকর্মশীল। আবার তাদের কেউ আপন আত্মার উপর কুফরি ও সুস্পষ্ট জুলুম এবং পাপাচারের মাধ্যমে অবিচারকারী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ مَنَنَّا عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ
১১৪. আর আমি মূসা ও হারূনের উপর নবুওয়াত দ্বারা অনুগ্রহ করি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَنَجَّيۡنَٰهُمَا وَقَوۡمَهُمَا مِنَ ٱلۡكَرۡبِ ٱلۡعَظِيمِ
১১৫. আমি তাঁদের উভয়কে ও তাঁদের জাতি বানী ইসরাইলকে ফিরাউনের দাসত্ব ও ডুবার হাত থেকে রক্ষা করি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَنَصَرۡنَٰهُمۡ فَكَانُواْ هُمُ ٱلۡغَٰلِبِينَ
১১৬. আর আমি তাঁদেরকে ফিরআউন ও তার বাহিনীর উপর বিজয় দান করি। ফলে তাঁদের শত্রæদের উপর তাঁদের বিজয় নিশ্চিত হয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَءَاتَيۡنَٰهُمَا ٱلۡكِتَٰبَ ٱلۡمُسۡتَبِينَ
১১৭. আমি মূসা ও তাঁর ভাই হারূনকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট তাওরাত কিতাব প্রদান করি। যাতে কোন অস্পষ্টতা নেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَهَدَيۡنَٰهُمَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ
১১৮. আর আমি তাঁদের উভয়কে বক্রতাহীন সরল পথ দেখাই। যা হলো ইসলাম ধর্মের সেই পথ যেটি ¯্রষ্টার সন্তুষ্টি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِمَا فِي ٱلۡأٓخِرِينَ
১১৯. আমি তাঁদের উভয়ের জন্য পরবর্তীদের মধ্যে প্রশংসা ও সুনাম রেখে দিয়েছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سَلَٰمٌ عَلَىٰ مُوسَىٰ وَهَٰرُونَ
১২০. আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁদের উভয়ের উদ্দেশ্যে উত্তম অভিবাদন ও সর্ব প্রকার অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তার আশির্বাদ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ
১২১. আমি যেভাবে মূসা ও হারূনকে এই উত্তম প্রতিদান দিয়েছি তেমনিভাবে আমি সৎকর্মশীলদেরকে স্বীয় প্রতিপালকের আনুগত্যের উপর প্রতিদান দেবো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُمَا مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
১২২. অবশ্যই মূসা ও হারূন আমার সেসব বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর কর্র্তৃক বিধিবদ্ধ বিধান অনুযায়ী নেক আমলকারী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّ إِلۡيَاسَ لَمِنَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ
১২৩. আর ইলিয়াস (আলাইহিস-সালাম) স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রেরিত ছিলেন। আল্লাহ তাঁকে নবুওয়াত ও রিসালত দ্বারা ধন্য করেছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِذۡ قَالَ لِقَوۡمِهِۦٓ أَلَا تَتَّقُونَ
১২৪. যখন তাঁর জাতি বানী ইসরাইলকে উদ্দেশ্য করে বললেন: হে আমার জাতি! তোমরা কি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করো না? তাঁর অদেশের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তাওহীদ। আর তাঁর নিষেধের মধ্যে রয়েছে শিরক?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَتَدۡعُونَ بَعۡلٗا وَتَذَرُونَ أَحۡسَنَ ٱلۡخَٰلِقِينَ
১২৫. তোমরা নিজেদের “বা’ল” নামক মূর্র্তির পূঁজা করো। আর সর্বাপেক্ষা সুন্দরতম ¯্রষ্টার ইবাদাত পরিহার করছো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱللَّهَ رَبَّكُمۡ وَرَبَّ ءَابَآئِكُمُ ٱلۡأَوَّلِينَ
১২৬. আল্লাহই হচ্ছেন তোমাদের একমাত্র প্রতিপালক। যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তাই তিনিই এবাদতের হকদার; অন্যসব মূর্তি নয়। যা না কোন উপকার করতে পারে; না অপকার।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• قوله: ﴿فَلَمَّآ أَسْلَمَا﴾ دليل على أن إبراهيم وإسماعيل عليهما السلام كانا في غاية التسليم لأمر الله تعالى.
ক. আল্লাহর বাণী “তারা উভয়ে যখন আনুগত্যশীল হল” একথার দলীল যে, ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আলাইহিমাস-সালাম) আল্লাহর নির্দেশ মান্য করার ক্ষেত্রে পূর্ণ মাত্রায় অনুগামী ছিলেন।

• من مقاصد الشرع تحرير العباد من عبودية البشر.
খ. শরীয়তের উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে বান্দাদেরকে মানুষের দাসত্ব থেকে মুক্ত করা।

• الثناء الحسن والذكر الطيب من النعيم المعجل في الدنيا.
গ. সুনাম ও সুখ্যাতি দুনিয়াতে প্রাপ্ত অগ্রিম নিআমতের অন্তর্র্ভুক্ত।

فَكَذَّبُوهُ فَإِنَّهُمۡ لَمُحۡضَرُونَ
১২৭. তাঁর জাতি এর জবাবে তাঁকে মিথ্যারোপ করলো। ফলে তারা শাস্তিতে পতিত হলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلۡمُخۡلَصِينَ
১২৮. তবে তাঁর জাতির মধ্যে যারা ঈমানদার ও আল্লাহর উপাসনায় একনিষ্ঠ ছিলো তারা শাস্তিতে পতিত হওয়া থেকে দূরে ছিল।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَتَرَكۡنَا عَلَيۡهِ فِي ٱلۡأٓخِرِينَ
১২৯. আমি পরবর্তী জাতির নিকট তাঁর সুনাম ও সুখ্যাতি অবশিষ্ট রেখে দিলাম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سَلَٰمٌ عَلَىٰٓ إِلۡ يَاسِينَ
১৩০. এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আশির্বাদ ও প্রশংসা স্বরূপ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا كَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ
১৩১. আমি যেভাবে ইলিয়াস (আলাইহিস-সালাম) কে প্রতিদান দিয়েছি ঠিক তেমনিভাবে আমি নিজ মু’মিন বান্দাদেরকে প্রতিদান দেবো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُۥ مِنۡ عِبَادِنَا ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
১৩২. অবশ্যই ইলিয়াস (আলাইহিস-সালাম) আমার সেসব প্রকৃত মুু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত যারা স্বীয় প্রতিপালকের উপর ঈমানে সত্যপরায়ণ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّ لُوطٗا لَّمِنَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ
১৩৩. অবশ্যই লুত্ব (আলাইহিস-সালাম) হলেন আল্লাহর সেসব প্রেরিত রাসূলদের অন্তর্র্ভুক্ত যাঁদেরকে তিনি স্বীয় সম্প্রদায়ের প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসাবে প্রেরণ করেছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِذۡ نَجَّيۡنَٰهُ وَأَهۡلَهُۥٓ أَجۡمَعِينَ
১৩৪. তাই আপনি সে সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন আমি তাঁর জাতিকে ধ্বংসকারী শাস্তি থেকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে রেহাই দিয়েছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا عَجُوزٗا فِي ٱلۡغَٰبِرِينَ
১৩৫. শুধুমাত্র তাঁর স্ত্রী ছাড়া। কারণ, সে তাঁর জাতির মত অবিশ্বাসী ছিলো। তাই তাঁর জাতির শাস্তি তাকেও পেয়েছিলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ثُمَّ دَمَّرۡنَا ٱلۡأٓخَرِينَ
১৩৬. এরপর আমি তাঁর জাতির অবশিষ্ট মিথ্যারোপকারী এবং তাঁর কর্র্তৃক আনিত বিষয় প্রত্যাখ্যানকারীদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّكُمۡ لَتَمُرُّونَ عَلَيۡهِم مُّصۡبِحِينَ
১৩৭. হে মক্কাবাসীরা! তোমরা সিরিয়ায় গমনের সময় সকাল বেলা তাদের আবাসের উপর দিয়ে অতিক্রম করে থাক।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَبِٱلَّيۡلِۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ
১৩৮. এমনিভাবে এসবের উপর দিয়ে রাত্রেও গমন করো। তোমরা কি অনুধাবন করো না এবং তাদের মিথ্যারোপ, কুফরি ও অশ্লীল কাজের ফলে তাদের উপর আপতিত পরিণতি থেকে উপদেশ গ্রহণ করো না?
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّ يُونُسَ لَمِنَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ
১৩৯. আমার বান্দা ইউনুস (আলাইহিস-সালাম) অবশ্যই সেসব রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত যাঁদেরকে আল্লাহ তাঁদের জাতির নিকট সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসাবে প্রেরণ করেছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِذۡ أَبَقَ إِلَى ٱلۡفُلۡكِ ٱلۡمَشۡحُونِ
১৪০. প্রতিপালকের অনুমতি ছাড়াই নিজ জাতি থেকে পালিয়ে তিনি এমন এক জাহাজে আরোহণ করেছিলেন যেটি আরোহী ও আসবাবপ্রত্রে পূর্ণ ছিলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ ٱلۡمُدۡحَضِينَ
১৪১. যখন পূর্ণ জাহাজটি ডুবার উপক্রম হলো তখন আরোহীদের আধিক্যের কারণে জাহাজটিকে ডুবার ভয় থেকে রক্ষার্থে কিছু সংখ্যক আরোহীকে পানিতে ফেলে দেয়ার জন্য তারা লটারীর ব্যবস্থা করলো। অতঃপর ইউনুস (আলাইহিস-সালাম) এর নাম তালিকায় এসে গেলে তারা তাঁকে সমুদ্রে ফেলে দিলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱلۡتَقَمَهُ ٱلۡحُوتُ وَهُوَ مُلِيمٞ
১৪২. যখন তারা তাঁকে সমুদ্রে ফেলে দিলো তখন তাঁকে একটি মাছ গিলে ফেললো। বস্তুতঃ তিনি তখন নিন্দনীয় কাজটিই করেছিলেন। কেননা, তিনি স্বীয় প্রতিপালকের অনুমতি ব্যতিরেকে পালিয়ে সমুদ্রের পথে পা বাড়িয়েছেলেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَلَوۡلَآ أَنَّهُۥ كَانَ مِنَ ٱلۡمُسَبِّحِينَ
১৪৩. যদি ইউনুস (আলাইহিস-সালাম) তৎপূর্বে স্বীয় প্রতিপালকের বেশী বেশী স্মরণকারী না হতেন। আর যদি তিনি মাছের পেটে থাকাবস্থায় তাসবীহ না পড়তেন তবে-
আরবি তাফসীরসমূহ:
لَلَبِثَ فِي بَطۡنِهِۦٓ إِلَىٰ يَوۡمِ يُبۡعَثُونَ
১৪৪. কিয়ামত পর্যন্ত মাছের পেটেই থেকে যেতেন তথা সেটি তাঁর কবরে পরিণত হয়ে যেতো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
۞ فَنَبَذۡنَٰهُ بِٱلۡعَرَآءِ وَهُوَ سَقِيمٞ
১৪৫. আমি তাঁকে মাছের পেট থেকে গাছ-পালা ও ঘর-বাড়ী-বিহীন একটি অনাবাদি যমীনে ফেলার ব্যবস্থা করলাম। বস্তুতঃ তিনি তখন মাছের পেটে থাকার ফলে রুগ্ন ও শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَنۢبَتۡنَا عَلَيۡهِ شَجَرَةٗ مِّن يَقۡطِينٖ
১৪৬. অমি তাঁর উপর উক্ত যমীনে লাউ গাছ জন্মালাম। যা থেকে তিনি ছায়া ও খাবার গ্রহণ করবেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَرۡسَلۡنَٰهُ إِلَىٰ مِاْئَةِ أَلۡفٍ أَوۡ يَزِيدُونَ
১৪৭. আর আমি তাঁকে তাঁর জাতির নিকট পাঠালাম। যাদের সংখ্যা ছিলো এক লক্ষ বা ততোধিক।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَـَٔامَنُواْ فَمَتَّعۡنَٰهُمۡ إِلَىٰ حِينٖ
১৪৮. তারা ঈমান আনয়ন করলো ও তাঁর আনিত বিষয়কে সত্যায়ন করলো। ফলে আল্লাহ তাদেরকে তাদের ইহকালীন জীবনের নির্ধারিত শেষ আয়ু পর্যন্ত উপভোগ করালেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَٱسۡتَفۡتِهِمۡ أَلِرَبِّكَ ٱلۡبَنَاتُ وَلَهُمُ ٱلۡبَنُونَ
১৪৯. হে মুহামম্মদ! আপনি মুশরিকদেরকে নেতিবাচক প্রশ্ন করতঃ তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, তোমরা কি আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান দাবি করছো যা তোমরা নিজেদের জন্য অপছন্দ করো। আর নিজেদের জন্য ছেলে সন্তান দাবি করছো যা তোমরা নিজেদের জন্য পছন্দ করো?! এটি কোন্ ধরনের বন্টন নীতি?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَمۡ خَلَقۡنَا ٱلۡمَلَٰٓئِكَةَ إِنَٰثٗا وَهُمۡ شَٰهِدُونَ
১৫০. তারা কীভাবে ধারণা করলো যে, ফিরিশতারা হলেন মহিলা। অথচ তারা তাঁদের সৃষ্টিকালে না উপস্থিত হয়েছে। আর না তারা তাতে প্রত্যক্ষদর্শী ছিলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَلَآ إِنَّهُم مِّنۡ إِفۡكِهِمۡ لَيَقُولُونَ
১৫১. জেনে রেখো, মুশরিকরা আল্লাহর উপর মিথ্যাচার ও মিথ্যা অপবাদে লিপ্ত রয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَدَ ٱللَّهُ وَإِنَّهُمۡ لَكَٰذِبُونَ
১৫২. তারা তাঁর প্রতি সন্তানকে সম্বন্ধ করে থাকে। অথচ তারা তাদের এই দাবিতে মিথ্যাবাদী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَصۡطَفَى ٱلۡبَنَاتِ عَلَى ٱلۡبَنِينَ
১৫৩. তবে কি আল্লাহ তাঁর জন্য তোমাদের নিকট পছন্দনীয় ছেলেদের পরিবর্তে ওই সব কন্যাদেরকে পছন্দ করলেন যাদেরকে তোমরা অপছন্দ করো?! কস্মিনকালেও তা হতে পারে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• سُنَّة الله التي لا تتبدل ولا تتغير: إنجاء المؤمنين وإهلاك الكافرين.
ক. আল্লাহর অপরিবর্তনীয় ও তাঁর চিরাচরিত নিয়ম হলো, মুনিদেরকে রক্ষা করা ও কাফিরদেরকে ধ্বংস করা।

• ضرورة العظة والاعتبار بمصير الذين كذبوا الرسل حتى لا يحل بهم ما حل بغيرهم.
খ. রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপকারীদের পরিণতি থেকে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণ করা অপরিহার্য। যেন তাদের মতো পরিণাম অন্যদের না হয়।

• جواز القُرْعة شرعًا لقوله تعالى: ﴿ فَسَاهَمَ فَكَانَ مِنَ اْلْمُدْحَضِينَ ﴾.
গ. লটারী মোটের উপর শরীয়তসম্মত। যেহেতু আল্লাহ বলেছেন “তখন তিনি লটারীতে অংশ নিয়ে হেরে গেলেন”।

مَا لَكُمۡ كَيۡفَ تَحۡكُمُونَ
১৫৪. হে মুশরিকরা! তোমাদের কী হলো যে, তোমরা এই অবিচার করছো। আল্লাহর জন্য কন্যা আর নিজেদের জন্য পুত্র সন্তান নির্ধারণ করছো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
১৫৫. তোমরা কি নিজেদের ভ্রান্ত বিশ্বাসের বাতুলতার কথা স্মরণ করো না?! কেননা, তোমরা এবিষয়টি স্মরণ করলে এই কথা বলতে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَمۡ لَكُمۡ سُلۡطَٰنٞ مُّبِينٞ
১৫৬. না কি এক্ষেত্রে তোমাদের নিকট কোন কিতাব কিংবা রাসূল মারফত সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ রয়েছে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَأۡتُواْ بِكِتَٰبِكُمۡ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ
১৫৭. তোমরা নিজেদের দাবিতে সত্য হলে প্রমাণবিশিষ্ট কিতাব নিয়ে আসো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَجَعَلُواْ بَيۡنَهُۥ وَبَيۡنَ ٱلۡجِنَّةِ نَسَبٗاۚ وَلَقَدۡ عَلِمَتِ ٱلۡجِنَّةُ إِنَّهُمۡ لَمُحۡضَرُونَ
১৫৮. মুশরিকরা আল্লাহ ও তাঁর অদৃশ্য ফিরিশতাদের মাঝে সম্বন্ধ সাব্যস্ত করেছে। যখন তারা ধারণা করেছে যে, ফিরিশতাগণ আল্লাহর কন্যা। অথচ ফিরিশতাগণ জানেন যে, আল্লাহ অচিরেই মুশরিকদেরকে হিসাবের উদ্দেশ্যে উপস্থিত করবেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ
১৫৯. মহান আল্লাহ মুশরিকদের দ্বারা তাঁর সাথে সন্তান কিংবা অন্য কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করা থেকে বহু উর্দ্ধে ও পবিত্র।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلۡمُخۡلَصِينَ
১৬০. তবে হ্যাঁ, আল্লাহর খাঁটি বান্দাদের ব্যাপারটি ভিন্ন। কেননা, তারা আল্লাহকে তাঁর সাথে মানানসই সম্মানজনক পুর্ণাঙ্গ গুণ ব্যতীত অন্য কিছু দ্বারা অভিহিত করে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَإِنَّكُمۡ وَمَا تَعۡبُدُونَ
১৬১. হে মুশরিকরা! তোমরা এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদাত করে থাকো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
مَآ أَنتُمۡ عَلَيۡهِ بِفَٰتِنِينَ
১৬২. তোমরা কেউই আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাউকে সত্য ধর্ম থেকে বিচ্যুত করতে সক্ষম নও।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا مَنۡ هُوَ صَالِ ٱلۡجَحِيمِ
১৬৩. তবে কেবল সে ব্যতীত যার ব্যাপারে আল্লাহ ফয়সালা করেছেন যে, সে জাহান্নামী। কেননা, আল্লাহ তার বিষয়ে স্বীয় ফয়সালা অবশ্যই বাস্তাবায়ন করবেন। ফলে সে কুফরি করবে এবং জাহান্নামে প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে তোমরা ও তোমাদের দেবতাদের এ ব্যাপারে কোনই ক্ষমতা নেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَمَا مِنَّآ إِلَّا لَهُۥ مَقَامٞ مَّعۡلُومٞ
১৬৪. ফিরিশতাগণ আল্লাহর উদ্দেশ্যে তাঁদের ইবাদাত নিবেদন করেন এবং মুশরিকদের ধারণা থেকে তাদের ইবাদাতের পবিত্রতা ঘোষণা করে বলেন, আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার জন্য আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্যে নির্ধারিত কোন স্থান রয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّا لَنَحۡنُ ٱلصَّآفُّونَ
১৬৫-১৬৬. আমরা ফিরিশতাগণ আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্যে সারিবদ্ধভাবে দÐায়মান রয়েছি। আমরা আল্লাহকে তাঁর সাথে বেমানান এমন সব বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী থেকে পবিত্র ঘোষণা করি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّا لَنَحۡنُ ٱلۡمُسَبِّحُونَ
১৬৫-১৬৬. আমরা ফিরিশতাগণ আল্লাহর ইবাদাত ও আনুগত্যে সারিবদ্ধভাবে দÐায়মান রয়েছি। আমরা আল্লাহকে তাঁর সাথে বেমানান এমন সব বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলী থেকে পবিত্র ঘোষণা করি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِن كَانُواْ لَيَقُولُونَ
১৬৭-১৭০. মক্কার মুশরিকরা বলে, যদি আমাদের নিকট পূর্বসূরীদের কোন কিতাব থাকতো যেমন: তাওরাত, তাহলে আমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদাতকে খাঁটি করতাম। অথচ তারা নিজেদের দাবিতে মিথ্যাবাদী। কেননা, তাদের নিকট মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক কুরআন আনা সত্তে¡ও তারা তাঁকে অস্বীকার করেছে। ফলে তারা অচিরেই জানতে পারবে, কিয়ামত দিবসে তাদের উদ্দেশ্যে কেমন শাস্তি অপেক্ষমাণ রয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
لَوۡ أَنَّ عِندَنَا ذِكۡرٗا مِّنَ ٱلۡأَوَّلِينَ
১৬৭-১৭০. মক্কার মুশরিকরা বলে, যদি আমাদের নিকট পূর্বসূরীদের কোন কিতাব থাকতো যেমন: তাওরাত, তাহলে আমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদাতকে খাঁটি করতাম। অথচ তারা নিজেদের দাবিতে মিথ্যাবাদী। কেননা, তাদের নিকট মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক কুরআন আনা সত্তে¡ও তারা তাঁকে অস্বীকার করেছে। ফলে তারা অচিরেই জানতে পারবে, কিয়ামত দিবসে তাদের উদ্দেশ্যে কেমন শাস্তি অপেক্ষমাণ রয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
لَكُنَّا عِبَادَ ٱللَّهِ ٱلۡمُخۡلَصِينَ
১৬৭-১৭০. মক্কার মুশরিকরা বলে, যদি আমাদের নিকট পূর্বসূরীদের কোন কিতাব থাকতো যেমন: তাওরাত, তাহলে আমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদাতকে খাঁটি করতাম। অথচ তারা নিজেদের দাবিতে মিথ্যাবাদী। কেননা, তাদের নিকট মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক কুরআন আনা সত্তে¡ও তারা তাঁকে অস্বীকার করেছে। ফলে তারা অচিরেই জানতে পারবে, কিয়ামত দিবসে তাদের উদ্দেশ্যে কেমন শাস্তি অপেক্ষমাণ রয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَكَفَرُواْ بِهِۦۖ فَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ
১৬৭-১৭০. মক্কার মুশরিকরা বলে, যদি আমাদের নিকট পূর্বসূরীদের কোন কিতাব থাকতো যেমন: তাওরাত, তাহলে আমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদাতকে খাঁটি করতাম। অথচ তারা নিজেদের দাবিতে মিথ্যাবাদী। কেননা, তাদের নিকট মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক কুরআন আনা সত্তে¡ও তারা তাঁকে অস্বীকার করেছে। ফলে তারা অচিরেই জানতে পারবে, কিয়ামত দিবসে তাদের উদ্দেশ্যে কেমন শাস্তি অপেক্ষমাণ রয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ سَبَقَتۡ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا ٱلۡمُرۡسَلِينَ
১৭১-১৭৩. আমার রাসূলদের ক্ষেত্রে আমার প্রত্যাহার ও রদবদলমুক্ত ফয়সালা ইতিপূর্বেই হয়ে গেছে যে, তাঁরাই আল্লাহ প্রদত্ত প্রমাণ ও ক্ষমতা বলে স্বীয় শত্রæদের উপর বিজয়ী হবেন। আর বিজয় আমার বাহিনীর জন্যই। যারা আল্লাহর বাণীকে উড্ডীন করার নিমিত্তে তাঁর পথে যুদ্ধ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّهُمۡ لَهُمُ ٱلۡمَنصُورُونَ
১৭১-১৭৩. আমার রাসূলদের ক্ষেত্রে আমার প্রত্যাহার ও রদবদলমুক্ত ফয়সালা ইতিপূর্বেই হয়ে গেছে যে, তাঁরাই আল্লাহ প্রদত্ত প্রমাণ ও ক্ষমতা বলে স্বীয় শত্রæদের উপর বিজয়ী হবেন। আর বিজয় আমার বাহিনীর জন্যই। যারা আল্লাহর বাণীকে উড্ডীন করার নিমিত্তে তাঁর পথে যুদ্ধ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ ٱلۡغَٰلِبُونَ
১৭১-১৭৩. আমার রাসূলদের ক্ষেত্রে আমার প্রত্যাহার ও রদবদলমুক্ত ফয়সালা ইতিপূর্বেই হয়ে গেছে যে, তাঁরাই আল্লাহ প্রদত্ত প্রমাণ ও ক্ষমতা বলে স্বীয় শত্রæদের উপর বিজয়ী হবেন। আর বিজয় আমার বাহিনীর জন্যই। যারা আল্লাহর বাণীকে উড্ডীন করার নিমিত্তে তাঁর পথে যুদ্ধ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَتَوَلَّ عَنۡهُمۡ حَتَّىٰ حِينٖ
১৭৪. অতএব হে রাসূল! এসব হঠকারী মুশরিকদের থেকে আল্লাহর জ্ঞানে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত আপনি মুখ ফিরিয়ে রাখুন। যতক্ষণ না তাদের শাস্তির সময় উপস্থিত হয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَبۡصِرۡهُمۡ فَسَوۡفَ يُبۡصِرُونَ
১৭৫. আর আপনি তাদের শাস্তি দেখার অপেক্ষায় থাকুন। অচিরেই তারাও তা দেখবে। যখন এ দেখা তাদের কোন উপকারেই আসবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَفَبِعَذَابِنَا يَسۡتَعۡجِلُونَ
১৭৬. এসব মুশরিকরা কি আল্লাহর শাস্তির জন্য তাড়াহুড়ো করছে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَإِذَا نَزَلَ بِسَاحَتِهِمۡ فَسَآءَ صَبَاحُ ٱلۡمُنذَرِينَ
১৭৭. যখন আল্লাহর শাস্তি তাদের উপর নিপতিত হবে তখন তাদের প্রভাত কতই না মন্দ প্রভাতে পরিণত হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَتَوَلَّ عَنۡهُمۡ حَتَّىٰ حِينٖ
১৭৮. আর হে রাসূল! আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখুন। যতক্ষণ না আল্লাহ তাদের শাস্তির ফয়সালা করেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَبۡصِرۡ فَسَوۡفَ يُبۡصِرُونَ
১৭৯. আর হ্যাঁ, আপনি তাদের শাস্তি দেখার অপেক্ষায় থাকুন। অচিরেই তারা তাদের উপর নিপতিত আযাব ও শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। যখন এ দেখা তাদের কোনই উপকারে আসবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سُبۡحَٰنَ رَبِّكَ رَبِّ ٱلۡعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ
১৮০. হে মুহাম্মদ! আপনার প্রতিপালক মুশরিকদের ক্রুটিপূর্ণ আখ্যা থেকে বহু উর্দ্ধে ও পবিত্র।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلۡمُرۡسَلِينَ
১৮১. আর আল্লাহর সম্মানী রাসূলদের উপর তাঁর আশির্বাদ ও বহুল প্রশংসা।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
১৮২. বস্তুতঃ সকল প্রশংসা আল্লাহর নিমিত্তে। তিনিই এর হকদার। কেননা, তিনি সকল সৃষ্টির প্রতিপালক। তিনি ব্যতীত তাদের জন্য আর কোন প্রতিপালক নেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• سُنَّة الله نصر المرسلين وورثتهم بالحجة والغلبة، وفي الآيات بشارة عظيمة؛ لمن اتصف بأنه من جند الله، أنه غالب منصور.
ক. আল্লাহর চিরাচরিত নিয়ম হলো, তাঁর রাসূল ও তাঁদের উত্তরসূরীদেরকে প্রমাণ ও বিজয় দ্বারা সাহায্য করা। আর যারা আল্লাহর বাহিনী হওয়ার গুণে আখ্যায়িত হতে পেরেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আয়াতে বিরাট সুসংবাদ রয়েছে।

• في الآيات دليل على بيان عجز المشركين وعجز آلهتهم عن إضلال أحد، وبشارة لعباد الله المخلصين بأن الله بقدرته ينجيهم من إضلال الضالين المضلين.
খ. আয়াতে কাউকে পথভ্রষ্ট করার ক্ষেত্রে মুশরিক ও তাদের দেবতাদের অপারগতার প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। যেমন: আল্লাহর খাঁটি বান্দাদের উদ্দেশ্যে এ কথার সুসংবাদ রয়েছে যে, আল্লাহ তাঁর ক্ষমতা দ্বারা তাদেরকে পথভ্রষ্টকারীদের বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করবেন।

 
অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা আস-সাফফাত
সূরাসমূহের সূচী পৃষ্ঠার নাম্বার
 
কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - অনুবাদসমূহের সূচী

বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। মারকাযু তাফসীর লিদ-দিরাসাতিল কুরআনিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত।

বন্ধ