কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। * - অনুবাদসমূহের সূচী


অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা আল-কামার   আয়াত:

সূরা আল-কামার

সূরার কতক উদ্দেশ্য:
التذكير بنعمة تيسير القرآن، وما فيه من الآيات والنذر.
নিদর্শনাবলী ও সতর্ক-সংকেত দ্বারা উপদেশ প্রদান আর এগুলোর প্রতি মিথ্যারোপকারীদের পরিণতি বর্ণনা করা। তাই বার বার এতে নি¤েœাক্ত কথার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। যাতে রয়েছে, অর্থ: “আর আমি কুরআনকে উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করেছি তাই কেউ কি আছে তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে?”

ٱقۡتَرَبَتِ ٱلسَّاعَةُ وَٱنشَقَّ ٱلۡقَمَرُ
১. কিয়ামত নিকটবর্তী হয়েছে। আর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জীবদ্দশায় চন্দ্র দ্বিখÐিত হয়েছে। ফলে এটি ছিল নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর একটি চাক্ষুষ নিদর্শন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِن يَرَوۡاْ ءَايَةٗ يُعۡرِضُواْ وَيَقُولُواْ سِحۡرٞ مُّسۡتَمِرّٞ
২. মুশরিকরা যখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সত্যতার কোন প্রমাণ ও নিদর্শন দেখে তখন তারা তা গ্রহণ থেকে বিমুখ হয়ে বলে: আমরা তাঁর পক্ষ থেকে যতো দলীল-প্রমাণাদি প্রত্যক্ষ করেছি তা সবই যাদু।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَكَذَّبُواْ وَٱتَّبَعُوٓاْ أَهۡوَآءَهُمۡۚ وَكُلُّ أَمۡرٖ مُّسۡتَقِرّٞ
৩. তাদের নিকট যে সত্য আগমন করেছে তারা সেটির প্রতি মিথ্যারোপ করলো এবং এ মিথ্যারোপে তারা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে। বস্তুতঃ ভালো-মন্দ সবই কিয়ামত দিবসে ন্যায্যভাবে সংঘটিত হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ جَآءَهُم مِّنَ ٱلۡأَنۢبَآءِ مَا فِيهِ مُزۡدَجَرٌ
৪. অথচ যে সব জাতিকে আমি কুফরী ও জুলুমের কারণে ধ্বংস করেছি তাদের নিকট ওদের সংবাদ এসেছে। যা তাদেরকে কুফরী ও জুলুম থেকে বিরত রাখার জন্য যথেষ্ট।
আরবি তাফসীরসমূহ:
حِكۡمَةُۢ بَٰلِغَةٞۖ فَمَا تُغۡنِ ٱلنُّذُرُ
৫. তাদের নিকট পূর্ণাঙ্গ প্রজ্ঞার কথা এসেছে যাতে তাদের উপর প্রমাণ সাব্যস্ত হয়। বস্তুতঃ যে জাতি আল্লাহ ও পরকাল দিবসে বিশ্বাসী নয় সতর্ক-সঙ্কেত তাদের কোন উপকারে আসবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَتَوَلَّ عَنۡهُمۡۘ يَوۡمَ يَدۡعُ ٱلدَّاعِ إِلَىٰ شَيۡءٖ نُّكُرٍ
৬. তারা হিদায়েত গ্রহণ না করলে হে রাসূল! আপনি সেই দিনের অপেক্ষায় তাদের থেকে বিমুখ থাকুন যে দিন সিঙ্গায় ফুৎকারে নিয়োজিত ফিরিশতা এমন এক ভয়ানক বিষয়ের দিকে আহŸান জানাবে যে সম্পর্কে ইতিপূর্বে সৃষ্টিকুল অবগত ছিলো না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• عدم التأثر بالقرآن نذير شؤم.
ক. কুরআন দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া কুলক্ষণের সতর্ক-সংকেত।

• خطر اتباع الهوى على النفس في الدنيا والآخرة.
খ. নফসের জন্য ইহ ও পরকালে প্রবৃত্তির অনুসরণের ভয়ানক পরিণতি।

• عدم الاتعاظ بهلاك الأمم صفة من صفات الكفار.
গ. জাতির ধ্বংস থেকে উপদেশ গ্রহণ না করা কাফিরদের বৈশিষ্ট্য।

خُشَّعًا أَبۡصَٰرُهُمۡ يَخۡرُجُونَ مِنَ ٱلۡأَجۡدَاثِ كَأَنَّهُمۡ جَرَادٞ مُّنتَشِرٞ
৭. তাদের চক্ষুগুলো অপদস্ত থাকবে। তারা কবর থেকে উঠে হিসেবের মাঠের দিকে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের ন্যায় অগ্রসর হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
مُّهۡطِعِينَ إِلَى ٱلدَّاعِۖ يَقُولُ ٱلۡكَٰفِرُونَ هَٰذَا يَوۡمٌ عَسِرٞ
৮. অবস্থানের পানে আহŸানকারীর ডাকে ত্বরান্বিত হয়ে। তখন কাফিররা বলবে: এ দিনটি অতি কঠিন। কেননা, তাতে রয়েছে বিভীষিকা ও ভয়াবহতা।
আরবি তাফসীরসমূহ:
۞ كَذَّبَتۡ قَبۡلَهُمۡ قَوۡمُ نُوحٖ فَكَذَّبُواْ عَبۡدَنَا وَقَالُواْ مَجۡنُونٞ وَٱزۡدُجِرَ
৯. হে রাসূল! আপনার দাওয়াত অগ্রাহ্যকারী এ সব লোকের পূর্বে নূহ (আলাইহিমাস-সালাম) এর জাতি আমার বান্দা নূহ (আলাইহিমাস-সালাম) এর প্রতি মিথ্যারোপ করে যখন আমি তাঁকে তাদের প্রতি প্রেরণ করি। এমন কি তাদেরকে দাওয়াত প্রদান থেকে বিরত না হলে তারা তাঁর ব্যাপারে বলেছিলো যে, তিনি পাগল এবং তাঁকে গাল-মন্দ ও ধমক দিয়ে হুমকিও দিয়েছিলো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَدَعَا رَبَّهُۥٓ أَنِّي مَغۡلُوبٞ فَٱنتَصِرۡ
১০. তখন নূহ (আলাইহিমাস-সালাম) স্বীয় রবকে আহŸান করে বললেন, আমার জাতি আমার উপর চড়াও হয়েছে এবং আমার দাওয়াত অগ্রাহ্য করেছে তাই আপনি তাদের উপর শাস্তি অবতীর্ণ করে আমাকে শক্তিশালী করুন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَفَتَحۡنَآ أَبۡوَٰبَ ٱلسَّمَآءِ بِمَآءٖ مُّنۡهَمِرٖ
১১. তাই আমি আসমানের দ্বারসমূহ খুলে দিয়ে মুষলধারে বারি বর্ষণ করলাম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَفَجَّرۡنَا ٱلۡأَرۡضَ عُيُونٗا فَٱلۡتَقَى ٱلۡمَآءُ عَلَىٰٓ أَمۡرٖ قَدۡ قُدِرَ
১২. আমি যমীনকে ফাটিয়ে চৌচির করলাম। ফলে তা ঝর্নায় রূপান্তরিত হলো। যা থেকে পানি প্রবাহিত হলো। অতঃপর আদিকালে নির্ধারিত আল্লাহর ফয়সালা অনুযায়ী আসমান থেকে বর্ষিত পানি যমীনের পানির সাথে মিলিত হয়ে আল্লাহর হেফাজতকৃতরা ছাড়া সবাইকে ডুবিয়ে দেয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَحَمَلۡنَٰهُ عَلَىٰ ذَاتِ أَلۡوَٰحٖ وَدُسُرٖ
১৩. আর আমি নূহ (আলাইহিমাস-সালাম)কে ফলক ও পেরেক বিশিষ্ট কিশতিতে আরোহণ করিয়ে তাঁকে ও তাঁর সাথে আরোহণকারীদেরকে রেহাই দেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
تَجۡرِي بِأَعۡيُنِنَا جَزَآءٗ لِّمَن كَانَ كُفِرَ
১৪. উক্ত কিশতি আমার দৃষ্টি ও তত্ত¡াবধানে পানির উত্তাল তরঙ্গমালার উপর দিয়ে চলে। তা ছিলো নূহ (আলাইহিমাস-সালাম) এর প্রতি মিথ্যারোপকারী সম্প্রদায় এবং তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের নিকট যা নিয়ে এসেছিলেন তা অস্বীকারকারীদের উপর বিজয় প্রদানের নিমিত্তে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَد تَّرَكۡنَٰهَآ ءَايَةٗ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
১৫. বস্তুতঃ আমি এই শাস্তিকে পরবর্তীদের মাঝে উপদেশ হিসাবে রেখে দিয়েছি। অতএব, এ থেকে উপদেশ গ্রহণকারী কি কেউ আছে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَكَيۡفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ
১৬. মিথ্যারোপকারীদের জন্য আমার শাস্তি কেমন ছিল?! আর আমার শাস্তির মাধ্যমে আমার সতর্ক-সংকেতই বা কেমন ছিলো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
১৭. আমি কুরআনকে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করেছি। কেউ কি আছে তাতে নিহিত শিক্ষা ও উপদেশসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
كَذَّبَتۡ عَادٞ فَكَيۡفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ
১৮. আদ সম্প্রদায় তাদের নবী হূদ (আলাইহিস-সালাম)কে মিথ্যারোপ করেছে। ফলে হে মক্কাবাসী! তোমরা ভেবে দেখো তাদের জন্য আমার শাস্তি কেমন ছিলো?! উপরন্তু তাদের শাস্তির মাধ্যমে অন্যদের শিক্ষা কেমন ছিলো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَا عَلَيۡهِمۡ رِيحٗا صَرۡصَرٗا فِي يَوۡمِ نَحۡسٖ مُّسۡتَمِرّٖ
১৯. আমি তাদের উপর এক কালো ও অশনির দিনে প্রচÐ শৈত্য হাওয়া প্রবাহিত করি। যা তাদের উপর জাহান্নামে পতিত হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
تَنزِعُ ٱلنَّاسَ كَأَنَّهُمۡ أَعۡجَازُ نَخۡلٖ مُّنقَعِرٖ
২০. যা মানুষকে মাটি থেকে উঠিয়ে তাদেরকে নিজেদের মাথার উপর দিয়ে নিক্ষেপ করবে। ফলে সেগুলো যেন তলদেশ থেকে উপড়ানো খেজুর বৃক্ষের শেকড়ের ন্যায়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَكَيۡفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ
২১. তাই হে মক্কাবাসীরা! তোমরা চিন্তা করে দেখো তাদের জন্যে আমার শাস্তি কেমন ছিলো?! আর তাদের শাস্তির মাধ্যমে অন্যদের জন্য কেমন সতর্ক-সংকেত ছিলো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
২২. আমি কুরআনকে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করেছি। কেউ কি আছে তাতে নিহিত শিক্ষা ও উপদেশসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
كَذَّبَتۡ ثَمُودُ بِٱلنُّذُرِ
২৩. সামূদ সম্প্রদায় তাদেরকে তাদের রাসূল সালেহ (আলাইহিস-সালাম) যে বিষয়ের প্রতি আহŸান করেছিলো সেটিকে মিথ্যারোপ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَقَالُوٓاْ أَبَشَرٗا مِّنَّا وَٰحِدٗا نَّتَّبِعُهُۥٓ إِنَّآ إِذٗا لَّفِي ضَلَٰلٖ وَسُعُرٍ
২৪. তাই তারা অনিহা প্রকাশপূর্বক বলে: আমরা কি নিজেদের প্রকৃতির একজনকে অনুসরণ করবো?! এমনটি করলে তো আমরা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবো এবং চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাবো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَءُلۡقِيَ ٱلذِّكۡرُ عَلَيۡهِ مِنۢ بَيۡنِنَا بَلۡ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٞ
২৫. আমাদেরকে বাদ দিয়ে কি একাই তার উপর ওহী অবতীর্ণ করা হয়েছে?! না, বরং সে অহঙ্কারী মিথ্যাবাদী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
سَيَعۡلَمُونَ غَدٗا مَّنِ ٱلۡكَذَّابُ ٱلۡأَشِرُ
২৬. বস্তুতঃ তারা অচিরেই কিয়ামত দিবসে জানবে যে, কে মহা মিথ্যাবাদী। সালেহ, না তারা?
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا مُرۡسِلُواْ ٱلنَّاقَةِ فِتۡنَةٗ لَّهُمۡ فَٱرۡتَقِبۡهُمۡ وَٱصۡطَبِرۡ
২৭. আমি অবশ্যই তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য পাথর থেকে উষ্ট্রীকে বের করবো। তাই হে সালেহ! আপনি অপেক্ষায় থাকুন। আর তারা কী করে এবং তাদের সাথে কী আচরণ করা হয় দেখতে থাকুন। উপরন্তু তাদের দেয়া কষ্টের উপর ধৈর্য ধারণ করুন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• مشروعية الدعاء على الكافر المصرّ على كفره.
ক. কুফরীর উপর অবিচল কাফিরের উপর বদ দো‘আ করা বৈধ।

• إهلاك المكذبين وإنجاء المؤمنين سُنَّة إلهية.
খ. মিথ্যারোপকারীদেরকে ধ্বংস করা ও ঈমানদারদেরকে উদ্ধার করা আল্লাহর অমিয় নিয়ম।

• تيسير القرآن للحفظ وللتذكر والاتعاظ.
গ. মুখস্থ করা, শিক্ষা ও উপদেশের জন্য কুরআনকে অতি সহজ করা হয়েছে।

وَنَبِّئۡهُمۡ أَنَّ ٱلۡمَآءَ قِسۡمَةُۢ بَيۡنَهُمۡۖ كُلُّ شِرۡبٖ مُّحۡتَضَرٞ
২৮. তাদেরকে সংবাদ দিন যে, তাদের কূপের পানি তাদের ও উষ্ট্রীর মাঝে বন্টন করা হয়েছে। একদিন তাদের জন্য। আর এক দিন উষ্ট্রীর জন্য। প্রত্যেক অংশের জন্য তার মালিক নিজ নিজ সময়ে উপস্থিত হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَنَادَوۡاْ صَاحِبَهُمۡ فَتَعَاطَىٰ فَعَقَرَ
২৯. তারা উষ্ট্রীকে হত্যা করার জন্য তাদের সাথীকে আহŸান জানায়। ফলে সে তরবারি হাতে নিয়ে তার জাতির নির্দেশ মানতে উষ্ট্রীকে হত্যা করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَكَيۡفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ
৩০. অতএব, হে মাক্কাবাসী! তোমরা ভেবে দেখো, তাদের উদ্দেশ্যে আমার শাস্তি কেমন ছিলো?! আর তাদের শাস্তির মাধ্যমে অন্যদের জন্য আমার সতর্ক-সংকেতই বা কেমন ছিলো?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَا عَلَيۡهِمۡ صَيۡحَةٗ وَٰحِدَةٗ فَكَانُواْ كَهَشِيمِ ٱلۡمُحۡتَظِرِ
৩১. আমি তাদের উপর একটি মাত্র বজ্রপাত ঘটাই যা তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে তারা খোয়াড় তৈরীকারীর ছাগলের জন্য বেড়া বানানোর শুষ্ক বৃক্ষের ন্যায় হয়ে যায়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
৩২. আমি কুরআনকে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণের জন্য সহজ করেছি। কেউ কি আছে তাতে নিহিত শিক্ষা ও উপদেশসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
كَذَّبَتۡ قَوۡمُ لُوطِۭ بِٱلنُّذُرِ
৩৩. লুত (আলাইহিস-সালাম) এর জাতি তাদেরকে তিনি যদ্বারা সতর্ক করেন সেটির প্রতি মিথ্যারোপ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَا عَلَيۡهِمۡ حَاصِبًا إِلَّآ ءَالَ لُوطٖۖ نَّجَّيۡنَٰهُم بِسَحَرٖ
৩৪. আমি তাদের উপর পাথর নিক্ষেপকারী এমন বায়ু প্রেরণ করলাম যা কেবল লুত পরিবার ব্যতীত বাকী সবাইকে আঘাত করে। তাদেরকে শাস্তি পায়নি। কেননা, আমি তাদেরকে তা থেকে মুক্তি দিয়েছি। যেহেতু তিনি শেষ রাতে শাস্তি সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই তাদেরকে নিয়ে সফরে বের হয়ে যান।
আরবি তাফসীরসমূহ:
نِّعۡمَةٗ مِّنۡ عِندِنَاۚ كَذَٰلِكَ نَجۡزِي مَن شَكَرَ
৩৫. আমি তাদেরকে পুরস্কার স্বরূপ শাস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছি। বস্তুতঃ এই প্রতিদান যদ্বারা আমি লুতকে পুরস্কৃত করেছি তেমনিই আমি প্রত্যেক আল্লাহর নিআমতের শুকরিয়া আদায়কারীকে প্রতিদান দেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ أَنذَرَهُم بَطۡشَتَنَا فَتَمَارَوۡاْ بِٱلنُّذُرِ
৩৬. লুত (আলাইহিস-সালাম) তাদেরকে আমার শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করেন। তবে তারা এ সতর্ক-সংকেত নিয়ে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হয় এবং তারা সেটির প্রতি মিথ্যারোপ করে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ رَٰوَدُوهُ عَن ضَيۡفِهِۦ فَطَمَسۡنَآ أَعۡيُنَهُمۡ فَذُوقُواْ عَذَابِي وَنُذُرِ
৩৭. লুত (আলাইহিস-সালাম)কে তাঁর জাতি কুকর্মের উদ্দেশ্যে তাঁর মেহমান ফিরিশতাদের নিকট পৌঁছুতে পিড়াপিড়ি করে। ফলে আমি তাদের দৃষ্টি অন্ধ করে দেই। তাই তারা ওদেরকে দেখতে পেলো না। আমি তাদেরকে বললাম: তোমরা আমার শাস্তি ও আমার পক্ষ থেকে তোমাদের উদ্দেশ্যে সতর্ক-সংকেতের স্বাদ আস্বাদন করো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ صَبَّحَهُم بُكۡرَةً عَذَابٞ مُّسۡتَقِرّٞ
৩৮. তাদের নিকট প্রভাতেই শাস্তি আগমন করে। যা পরকালে পাড়ি জমানো পর্যন্ত চলমান থাকবে। অতঃপর পরকালের শাস্তি তাদের নিকট আগমন করবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَذُوقُواْ عَذَابِي وَنُذُرِ
৩৯. তাদেরকে বলা হবে, তোমরা আমার পক্ষ থেকে প্রেরিত শাস্তি ও লুত কর্তৃক সতর্ক-সংকতের পরিণতি আস্বাদন করো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
৪০. আমি কুরআনকে শিক্ষা ও উপদেশ গ্রহণের উদ্দেশ্যে সহজ করেছি। কেউ কি আছে তাতে নিহিত শিক্ষা ও উপদেশসমূহ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ جَآءَ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ ٱلنُّذُرُ
৪১. ফিরাউন পরিবারের নিকট মূসা ও হারূন (আলাইহিমাস-সালাম) এর যবানীতে আমার সতর্ক-সংকেত পৌঁছেছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
كَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِنَا كُلِّهَا فَأَخَذۡنَٰهُمۡ أَخۡذَ عَزِيزٖ مُّقۡتَدِرٍ
৪২. তারা আমার পক্ষ থেকে আগত দলীল-প্রমাণাদিকে অবিশ্বাস করলো। ফলে আমি তাদের মিথ্যারোপের দরুন তাদেরকে এমন প্ররাক্রমশালীর শাস্তি প্রদান করলাম যাঁকে ঠেকানোর কেউ নেই। যিনি এমন ক্ষমতাধর যাঁকে কোন কিছুই অপারগ করতে পারে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَكُفَّارُكُمۡ خَيۡرٞ مِّنۡ أُوْلَٰٓئِكُمۡ أَمۡ لَكُم بَرَآءَةٞ فِي ٱلزُّبُرِ
৪৩. হে মক্কাবাসীরা! তোমাদের কাফিররা কি উপরোক্ত কাফিরদের অপেক্ষা উত্তম তথা নূহ (আলাইহিস-সালাম) এর জাতি, আদ, সামূদ, লুত (আলাইহিস-সালাম) এর জাতি, ফিরআউন ও তার জাতি?! না কি তোমরা আল্লাহর সেই শাস্তি থেকে মুক্ত যা আসমানী কিতাবসমূহে বর্ণিত হয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَمۡ يَقُولُونَ نَحۡنُ جَمِيعٞ مُّنتَصِرٞ
৪৪. বরং মক্কার এ সব কাফির কি বলে যে, আমরা ওদের উপর বিজয়ী যারা আমাদেরকে পরাজিত করতে চায় কিংবা আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে চায়?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
سَيُهۡزَمُ ٱلۡجَمۡعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ
৪৫. অচিরেই এ সব কাফিরের দল পরাজিত হবে এবং তারা মু’মিনদের সম্মুখ থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালাবে। বাস্তবে তা বদর যুদ্ধের দিন সংঘটিত হয়েছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
بَلِ ٱلسَّاعَةُ مَوۡعِدُهُمۡ وَٱلسَّاعَةُ أَدۡهَىٰ وَأَمَرُّ
৪৬. বরং তাদের আসল শাস্তির জায়গা ওই কিয়ামত দিবস যা তারা অস্বীকার করে। আর কিয়ামত দিবস বদর যুদ্ধে তাদের পাওয়া শাস্তি অপেক্ষা সমধিক ভয়াবহ ও কঠিন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ ٱلۡمُجۡرِمِينَ فِي ضَلَٰلٖ وَسُعُرٖ
৪৭. নিশ্চয়ই কুফরী ও পাপাচারের অপরাধীরা সত্য থেকে বহু দূরে রয়েছে এবং তারা শাস্তি ও কষ্টের মধ্যে আছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
يَوۡمَ يُسۡحَبُونَ فِي ٱلنَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمۡ ذُوقُواْ مَسَّ سَقَرَ
৪৮. যে দিন তাদেরকে মুখের ভরে আগুনে টেনে নেয়া হবে। আর ধমকের স্বরে বলা হবে, তোমরা আগুনের স্বাদ আস্বাদন করো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ
৪৯. আমি সৃষ্টিকুলের প্রত্যেকটি বস্তু আমার পূর্ব নির্ধারণ, জ্ঞান, ইচ্ছা ও লাওহে মাহফ‚যে লিখিত ফায়সালা অনুযায়ী সৃষ্টি করেছি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• شمول العذاب للمباشر للجريمة والمُتَمالئ معه عليها.
ক. অপরাধী ও তার সাথে অংশগ্রহণকারী উভয়ের শাস্তি এক।

• شُكْر الله على نعمه سبب السلامة من العذاب.
খ. আল্লাহর নিআমতের শুকরিয়া আদায় শাস্তি থেকে বাঁচার উপায়।

• إخبار القرآن بهزيمة المشركين يوم بدر قبل وقوعها من الإخبار بالغيب الدال على صدق القرآن.
গ. বদর দিবসের পরাজয়ের অজানা সংবাদ পূর্বে পরিবেশন এ কথার প্রমাণ বহন করে যে, কুরআন নিশ্চয়ই সত্য।

• وجوب الإيمان بالقدر.
ঘ. ভাগ্যলিপির উপর ঈমান আনা অপরিহার্য।

وَمَآ أَمۡرُنَآ إِلَّا وَٰحِدَةٞ كَلَمۡحِۭ بِٱلۡبَصَرِ
৫০. আমি যখন কোন কাজ সম্পাদন করতে চাই তখন শুধু একটি কথাই বলি। আর তা হলো “হয়ে যা”। ফলে আমি যা চাই তা চোখের পলকে দ্রæত হয়ে যায়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَقَدۡ أَهۡلَكۡنَآ أَشۡيَاعَكُمۡ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
৫১. আমি তোমাদের মতো তোমাদের পূর্বেকার কাফির জাতিকে ধ্বংস করেছি। তাই কেউ কি আছে উপদেশ গ্রহণ করে তার কুফরী থেকে বিরত থাকবে?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَكُلُّ شَيۡءٖ فَعَلُوهُ فِي ٱلزُّبُرِ
৫২. বান্দারা যা কিছু করে তা সংরক্ষক ফিরিশতাদের খাতায় লিপিবদ্ধ রয়েছে। কোন কিছুই তাদের থেকে বাদ পড়ে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَكُلُّ صَغِيرٖ وَكَبِيرٖ مُّسۡتَطَرٌ
৫৩. ছোট-বড় সব কথা ও কাজ আমল নামা ও লাওহে মাহফ‚জে লিপিবদ্ধ আছে। এর ভিত্তিতেই প্রতিদান দেয়া হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ ٱلۡمُتَّقِينَ فِي جَنَّٰتٖ وَنَهَرٖ
৫৪. অবশ্যই আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্যকারী মুত্তকীরা উদ্যানসমূহ ও প্রবাহিত নদ-নদীতে উপভোগে থাকবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فِي مَقۡعَدِ صِدۡقٍ عِندَ مَلِيكٖ مُّقۡتَدِرِۭ
৫৫. সব কিছুর মালিক ও সব কাজে সামর্থ্যবানের নিকট সত্যনিষ্ঠ মাজলিসে। যেথায় কোন বাজে কিংবা পাপের কথা নেই। তাই তাদের অবিচ্ছিন্ন ভোগসামগ্রী সম্পর্কে জিজ্ঞেসের কোন অপেক্ষা রাখে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• كتابة الأعمال صغيرها وكبيرها في صحائف الأعمال.
ক. ছোট-বড় সকল আমল আমলনামায় লিপিবদ্ধ থাকে।

• ابتداء الرحمن بذكر نعمه بالقرآن دلالة على شرف القرآن وعظم منته على الخلق به.
খ. দয়াময় কর্তৃক কুরআনের নিয়ামত উল্লেখ পূর্বক সুচনা দ্বারা কুরআনের মর্যাদা ও তদ্বারা সৃষ্টিকুলকে বিরাট ধরনের অনুগ্রহের উপর প্রমাণ পেশ করা হয়েছে।

• مكانة العدل في الإسلام.
গ. ইসলামে ইনসাফের আসন সুউচ্চ।

• نعم الله تقتضي منا العرفان بها وشكرها، لا التكذيب بها وكفرها.
ঘ. আল্লাহর নিয়ামত আমাদের থেকে তার স্বীকৃতি ও শুকরিয়ার দাবি রাখে। সেটির প্রতি মিথ্যারোপ কিংবা কুফরীর অবকাশ রাখে না।

 
অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা আল-কামার
সূরাসমূহের সূচী পৃষ্ঠার নাম্বার
 
কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - অনুবাদসমূহের সূচী

বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। মারকাযু তাফসীর লিদ-দিরাসাতিল কুরআনিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত।

বন্ধ