Check out the new design

Qurani Kərimin mənaca tərcüməsi - Benqal dilinə tərcümə- Əbu Bəkir Zəkəriyyə. * - Tərcumənin mündəricatı


Mənaların tərcüməsi Surə: ən-Nisa   Ayə:
مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَآ أَرۡسَلۡنَٰكَ عَلَيۡهِمۡ حَفِيظٗا
কেউ রাসূলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল [১], আর কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলে আপনাকে তো আমরা তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠাই নি।
[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মতের সকল লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। কিন্তু যে অস্বীকার করেছে (সে জান্নাতবাসী হতে পারবে না)। জিজ্ঞাসা করা হল: কে অস্বীকার করেছে, হে রাসূল! উত্তরে বললেন, যে আমার অনুসরণ করল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আমার অনুসরণ করল না, সে অস্বীকার করল। [বুখারী ৭২৮০]

অপর বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে আমার আনুগত্য করল সে অবশ্যই আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে আমার অবাধ্য হলো সে আল্লাহর অবাধ্য হল। অনুরূপভাবে যে ক্ষমতাসীনের আনুগত্য করল সে আমার আনুগত্য করল। আর যে ক্ষমতাসীনের অবাধ্য হলো সে আমার নাফরমানী করলো। ইমাম বা শাসক তো ঢালস্বরূপ, যার পিছনে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করা যায় এবং যার দ্বারা বাঁচা যায়। যদি ইমাম বা শাসক আল্লাহর তাকওয়ার নির্দেশ দেন এবং ইনসাফ করেন তা হলে সেটা তার জন্য সওয়াবের কাজ হবে। আর যদি অন্য কিছু করেন তবে সেটা তার উপরই বর্তাবে।” [বুখারী ২৯৫৭, মুসলিম ১৮৩৫]
Ərəbcə təfsirlər:
وَيَقُولُونَ طَاعَةٞ فَإِذَا بَرَزُواْ مِنۡ عِندِكَ بَيَّتَ طَآئِفَةٞ مِّنۡهُمۡ غَيۡرَ ٱلَّذِي تَقُولُۖ وَٱللَّهُ يَكۡتُبُ مَا يُبَيِّتُونَۖ فَأَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ وَكِيلًا
আর তারা বলে, ‘আনুগত্য করি’; তারপর যখন তারা আপনার কাছ থেকে চলে যায় তখন রাতে তাদের একদল যা বলে তার বিপরীত পরামর্শ করে। তারা যা রাতে পরামর্শ করে আল্লাহ তা লিপিবদ্ধ করে রাখেন। কাজেই আপনি তাদেরকে উপেক্ষা করুন এবং আল্লাহর প্রতি ভরসা করুন; আর কাজ উদ্ধারের জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট [১]।
[১] মুনাফিকরা যখন আপনার নিকট আসে, তখন বলে যে, আমরা আপনার নির্দেশ কবুল করে নিয়েছি। কিন্তু যখন তারা নাফরমানী করার উদ্দেশ্যে নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বড় কষ্ট হয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ্ তা’আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হেদায়াত দান করছেন যে, এসব বিষয়ে আপনি কোনো পরোয়া করবেন না। আপনি আপনার যাবতীয় কাজ আল্লাহর উপর ভরসা করে চালিয়ে যেতে থাকুন। কারণ, আপনার জন্য তিনিই যথেষ্ট। এতে প্রতীয়মান হয় যে, যারা মানুষকে হেদায়াতের জন্য দাওয়াত দেবে তাদেরকে নানারকম জটিলতা অতিক্রম করতেই হবে। মানুষ তাদের প্রতি নানারকম উল্টা-সিধা অপবাদ আরোপ করবে। বন্ধুরূপী বহু শত্রুও থাকবে। এসব সত্বেও সে সংকল্প ও দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর উপর ভরসা করে নিজের কাজে নিয়োজিত থাকা উচিত। যদি তার লক্ষ্য ও কর্মপন্থা সঠিক হয়, তবে ইনশাআল্লাহ তারা কৃতকার্য হবেই।
Ərəbcə təfsirlər:
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَيۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُواْ فِيهِ ٱخۡتِلَٰفٗا كَثِيرٗا
তবে কি তারা কুরআনকে গভীরভাবে অনুধাবন করে না? যদি তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট হতে আসত, তবে তারা এতে অনেক অসঙ্গতি পেত [১]।
[১] পবিত্র কুরআনে কোনো একটি বিষয়েও অসংগতি নেই। অতএব, এটা একান্তভাবেই আল্লাহর কালাম। মানুষের কালামে এমন অপূর্ব সামঞ্জস্য হতেই পারে না। এর কোথাও না আছে ভাষালঙ্কারের কোনো ত্রুটি, না আছে তাওহীদ, কুফর, কিংবা হালাল-হারামের বিবরণে কোনো স্ববিরোধিতা ও পার্থক্য। তাছাড়া গায়েবী বিষয়সমূহের মাঝেও এমন কোনো সংবাদ নেই যা প্রকৃত বিষয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তদুপরি না আছে কুরআনের ধারাবাহিকতার কোনো পার্থক্য যে, একটি হবে অলঙ্কারপূর্ণ আরেকটি হবে অলঙ্কারহীন। প্রত্যেক মানুষের ভাষা-বিবৃতি ও রচনা-সংকলনে পরিবেশের কমবেশী প্রভাব অবশ্যই থাকে -আনন্দের সময় তা এক ধরণের হয়, আবার বিষাদে হয় অন্যরকম। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে হয় এক রকম, আবার অশান্তিপূর্ণ পরিবেশে হয় অন্য রকম। কিন্তু কুরআন এ ধরণের যাবতীয় ক্রটি, পার্থক্য ও স্ববিরোধিতা থেকে পবিত্র ও উর্ধ্বে। আর এটাই হলো কালামে-ইলাহী হওয়ার প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
Ərəbcə təfsirlər:
وَإِذَا جَآءَهُمۡ أَمۡرٞ مِّنَ ٱلۡأَمۡنِ أَوِ ٱلۡخَوۡفِ أَذَاعُواْ بِهِۦۖ وَلَوۡ رَدُّوهُ إِلَى ٱلرَّسُولِ وَإِلَىٰٓ أُوْلِي ٱلۡأَمۡرِ مِنۡهُمۡ لَعَلِمَهُ ٱلَّذِينَ يَسۡتَنۢبِطُونَهُۥ مِنۡهُمۡۗ وَلَوۡلَا فَضۡلُ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ وَرَحۡمَتُهُۥ لَٱتَّبَعۡتُمُ ٱلشَّيۡطَٰنَ إِلَّا قَلِيلٗا
যখন শান্তি বা শংকার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে তখন তারা তা প্রচার করে থাকে [১]। যদি তারা তা রাসূল [২] এবং তাদের মধ্যে যারা নির্দেশ প্রদানের অধিকারী তাদেরকে জানাত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে তারা সেটার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত [৩]। তোমাদের প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না থাকত তবে তোমাদের অল্প সংখ্যক ছাড়া সকলে শয়তানের অনুসরণ করত।
[১] এ আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হচ্ছে যে, কোনো শ্রুত কথা যাচাই, অনুসন্ধান ব্যতিরেকে বর্ণনা করা উচিত নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, ‘কোনো লোকের পক্ষে মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে কোনো রকম যাচাই না করেই সমস্ত শ্রুত কথা প্রচার করে।’ [মুসলিম ৫] অপর এক হাদীসে তিনি বলেছেন, “যে লোক এমন কোন কথা বর্ণনা করে, যার ব্যাপারে সে জানে যে, সেটি মিথ্যা, তাহলে সে দু’জন মিথ্যাবাদীর একজন মিথ্যাবাদী।” [তিরমিয়ী ২৬৬২; ইবন মাজাহ ৩৮; মুসনাদে আহমাদ ৪/২৫৫]

[২] আয়াতের দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামও দলীল-প্রমাণের মাধ্যমে হুকুম-আহকাম উদ্ভাবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত। তার কারণ, আয়াতে দু’রকম লোকের নিকট প্রত্যাবর্তন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের একজন হলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং অপরজন হচ্ছেন, ‘উলুল আমর’। অতঃপর বলা হয়েছে, ‘তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদেরকে জানাত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে তারা সেটার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত।’ আর এই নির্দেশটি অত্যন্ত ব্যাপক। রাসূল ও আলেম সমাজ এর আওতাভুক্ত।

[৩] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কুরআন তার একাংশ অপরাংশ দ্বারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য নাযিল হয়নি, বরং এর একাংশ অপরাংশের সত্যতা নিরূপন করে। সুতরাং তোমরা এর মধ্যে যা বুঝতে পার তার উপর আমল কর আর যা বুঝতে পারবে না সেটা যারা বুঝে তাদের হাতে ছেড়ে দাও। [ইবন মাজাহ ৮৫, মুসনাদে আহমাদ ২/১৮১]
Ərəbcə təfsirlər:
فَقَٰتِلۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفۡسَكَۚ وَحَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَۖ عَسَى ٱللَّهُ أَن يَكُفَّ بَأۡسَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۚ وَٱللَّهُ أَشَدُّ بَأۡسٗا وَأَشَدُّ تَنكِيلٗا
কাজেই আল্লাহর পথে যুদ্ধ করুন; আপনি আপনার নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কিছুর যিম্মাদার নন [১] এবং মুমিনগণকে উদ্বুদ্ধ করুন [২], হয়ত আল্লাহ কাফেরদের শক্তি সংযত করবেন। আর আল্লাহ শক্তিতে প্রবলতর ও শাস্তিদানে কঠোরতর।
[১] এ আয়াতের প্রথম বাক্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, “আপনি একাই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়ুন; কেউ আপনার সাথে থাক বা নাই থাক।” কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় বাক্যে এ কথাও বলা হয়েছে যে, অন্যান্য মুসলিমকে এ ব্যাপারে উৎসাহ দানের কাজটিও পরিহার করবেন না। এভাবে উৎসাহ দানের পরেও যদি তারা যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ না হয়, তবে আপনার দায়িত্ব পালিত হয়ে গেল; তাদের কর্মের জন্য আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে না। এতদসঙ্গে একা যুদ্ধ করতে গিয়ে যেসব বিপদাশংকা দেখা দিতে পারে, তার প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে: “আশা করা যায় আল্লাহ কাফেরদের যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন এবং তাদেরকে ভীত ও পরাজিত করে দেবেন। আর আপনাকে একাই জয়ী করবেন।” অতঃপর এই বিজয় প্রসঙ্গে প্রমাণ বর্ণনা করা হয়েছে যে, আপনার প্রতি যখন আল্লাহ তা’আলার সমর্থন রয়েছে, যার সমর শক্তি কাফেরদের শক্তি অপেক্ষা অসংখ্যগুণ বেশী, তখন আপনার বিজয়ই অবশ্যম্ভাবী। তারপর এই সুদৃঢ় প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে স্বীয় শাস্তির কঠোরতা বর্ণনা করা হয়েছে। এ শাস্তি কিয়ামতের দিনেই হোক, কিংবা পার্থিব জীবনেই হোক, যুদ্ধের ক্ষেত্রে যেমন আমার শক্তি অপরাজেয়, তেমনি শাস্তি দানের ক্ষেত্রেও আমার শাস্তি অত্যন্ত কঠোর।

[২] কিসে উদ্বুদ্ধ করা হবে, তা এ আয়াতে বলা হয় নি। অন্য আয়াতে এসেছে, “আর আপনি মুমিনদেরকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করুন।” [সূরা আল-আনফাল ৬৫]
Ərəbcə təfsirlər:
مَّن يَشۡفَعۡ شَفَٰعَةً حَسَنَةٗ يَكُن لَّهُۥ نَصِيبٞ مِّنۡهَاۖ وَمَن يَشۡفَعۡ شَفَٰعَةٗ سَيِّئَةٗ يَكُن لَّهُۥ كِفۡلٞ مِّنۡهَاۗ وَكَانَ ٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ مُّقِيتٗا
কেউ কোনো ভালো কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে এবং কেউ কোনো মন্দ কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে [১]। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর নজর রাখেন [২]।
[১] এ আয়াতে ‘শাফা’আত’ অর্থাৎ সুপারিশকে ভালো ও মন্দ দু’ভাগে বিভক্ত করার পর এর স্বরূপ বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক সুপারিশ যেমন মন্দ নয়, তেমনি প্রত্যেক সুপারিশ ভালোও নয়। আরো বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ভালো সুপারিশ করবে, সে সওয়াবের অংশ পাবে এবং যে ব্যক্তি মন্দ সুপারিশ করবে, সে আযাবের অংশ পাবে। সুতরাং যে ব্যক্তি কারো বৈধ অধিকার ও বৈধ কাজের জন্য বৈধ পন্থায় সুপারিশ করবে, সেও সওয়াবের অংশ পাবে। তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কোনো অবৈধ কাজের জন্য অথবা অবৈধ পন্থায় সুপারিশ করবে, সে আযাবের অংশ পাবে। অংশ পাওয়ার অর্থ এই যে, যার কাছে সুপারিশ করা হয়, সে যখন এই উৎপীড়িতের কিংবা বঞ্চিতের কার্যোদ্ধার করে দেবে তখন কার্যোদ্ধারকারী ব্যক্তি যেমন সওয়াব পাবে, তেমনি সুপারিশকারীও সওয়াব পাবে। এমনিভাবে কোনো অবৈধ কাজের সুপারিশকারীও গোনাহগার হবে। তবে সুপারিশকারীর সওয়াব কিংবা আযাব তার সুপারিশ কার্যকরী ও সফল হওয়ার উপর নির্ভরশীল নয়; বরং সর্বাবস্থায় সে নিজ অংশ পাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো সৎকাজে অপরকে উদ্বুদ্ধ করে, সেও ততটুকু সওয়াব পায়, যতটুকু সৎকর্মী পায়।’ [মুসলিম ১৮৯৩] এতে জানা গেল যে, সৎকাজে কাউকে উদ্ভুদ্ধ করা যেমন একটি সৎকাজ তেমনি অসৎ ও পাপ কাজে কাউকে উদ্ভুদ্ধ করা কিংবা সহযোগিতা প্রদান করা সমান গোনাহ। এ সবই হচ্ছে দুনিয়ার সুপারিশের বিষয়। আখেরাতের সুপারিশের আলোচনা অন্যত্র করা হয়েছে।

[২] আভিধানিক দিক দিয়ে (مُقِيْتٌ) শব্দের অর্থ তিনটি: (এক) শক্তিশালী, সংরক্ষক ও ক্ষমতাবান, (দুই) উপস্থিত ও দর্শক এবং (তিন) রুযী বন্টনকারী। উল্লেখিত বাক্যে তিনটি অর্থই প্রযোজ্য। প্রথম অর্থের দিক দিয়ে বাক্যের অর্থ হবে- আল্লাহ্ তা’আলা প্রত্যেক বস্তুর উপর ক্ষমতাবান। যে কাজ করে এবং যে সুপারিশ করে তাদেরকে প্রতিদান কিংবা শাস্তিদান তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। দ্বিতীয় অর্থের দিক দিয়ে বাক্যের অর্থ হবে- আল্লাহ্ তা’আলা প্রত্যেক বস্তুর পরিদর্শক। কে কোন নিয়তে সুপারিশ করে; আল্লাহর ওয়াস্তে মুসলিম ভাইয়ের সাহায্যার্থে করে, না ঘুষ হিসেবে তার কাছ থেকে কোনো মতলব হাসিলের উদ্দেশ্যে করে, তিনি সে সবই জানেন। তৃতীয় অর্থের দিক দিয়ে বাক্যের মর্ম হবে রিযিক ও রুয়ী বন্টনের কাজে আল্লাহ্ স্বয়ংযিম্মাদার। যার জন্য যতটুকু লিখে দিয়েছেন, সে ততটুকু অবশ্যই পাবে। কারো সুপারিশে তিনি প্রভাবিত হবেন না; বরং যাকে যতটুকু ইচ্ছা দেবেন, তবে সুপারিশকারী ব্যক্তি মাঝখান থেকে সওয়াব পেয়ে যাবে। কেননা এটা হচ্ছে দুর্বলের সাহায্য। হাদীসে বলা হয়েছে: ‘আল্লাহ তা’আলা ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দার সাহায্য অব্যাহত রাখেন, যতক্ষণ সে কোনো মুসলিম ভাইয়ের সাহায্যে ব্যাপৃত থাকে। তোমরা সুপারিশ কর, সওয়াব পাবে। অতঃপর আল্লাহ স্বীয় পয়গম্বরের মাধ্যমে যে ফয়সালা করেন তাতে সন্তুষ্ট থাক।’ [বুখারী ১৪৩২, মুসলিম ২৬২৭]

এ কারণেই কুরআনুল কারীমের ভাষায় ইঙ্গিত রয়েছে যে, সুপারিশের সওয়াব ও আযাব সুপারিশ সফল হওয়ার উপর নির্ভরশীল নয়, বরং সুপারিশ করলেই সর্বাবস্থায় সওয়াব অথবা আযাব হবে। আপনি ভালো সুপারিশ করলেই সওয়াবের অধিকারী হয়ে যাবেন এবং মন্দ সুপারিশ করলেই আযাবের যোগ্য হয়ে পড়বেন -আপনার সুপারিশ কার্যকরী হোক বা না হোক। তবে অন্যের কাছে সুপারিশ করেই সুপারিশকারী যেন ক্ষান্ত হয়ে যায়, তা গ্রহণ করতে বাধ্য করবে না। স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার মুক্ত করা বাদী বারীরা দাসী অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার পর তার স্বামী মুগীছের কাছ থেকে পৃথক হয়ে যান। মুগীছ বারীরার ভালোবাসায় পাগলপারা হয়ে পড়লে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুগীছকে গ্রহণ করার জন্য বারীরার কাছে সুপারিশ করেন। বারীরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এটি আপনার নির্দেশ হলে শিরোধার্য, পক্ষান্তরে সুপারিশ হলে আমার মন তাতে সম্মত নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নির্দেশ নয়, সুপারিশই। বারীরা জানতেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীতির বাইরে অসন্তুষ্ট হবেন না। তাই পরিস্কার ভাষায় বললেন, তাহলে আমি এ সুপারিশ গ্রহণ করবো না। [বুখারী ৪৯৭৯]
Ərəbcə təfsirlər:
وَإِذَا حُيِّيتُم بِتَحِيَّةٖ فَحَيُّواْ بِأَحۡسَنَ مِنۡهَآ أَوۡ رُدُّوهَآۗ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٍ حَسِيبًا
আর তোমাদেরকে যখন অভিবাদন করা হয় তখন তোমরাও তার চেয়ে উত্তম প্রত্যাভিবাদন করবে অথবা সেটারই অনুরূপ করবে [১]; নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুর হিসেব গ্রহণকারী [২]।
[১] এ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা সালাম ও তার জবাবের আদব বর্ণনা করেছেন। মূলতঃ ‘আস-সালাম’ শব্দটি আল্লাহ্ তা’আলার উত্তম নামসমূহের অন্যতম। যার অর্থ শান্তি ও নিরাপত্তার আধার। বান্দা যখন এ কথা বলে তখন সে তার ভাইয়ের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা ও হেফাযত কামনা করে। সে হিসেবে ‘আস-সালামু আলাইকুম’ এর অর্থ, আল্লাহ তা’আলা তোমাদের সংরক্ষক। সালামের উৎপত্তি সম্পর্কে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আল্লাহ তা’আলা যখন আদম ‘আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেন তখন তার উচ্চতা ছিল ষাট হাত। আল্লাহ্ তা’আলা তাকে সৃষ্টি করে বললেন, যাও, ফেরেশ্‌তাদের অবস্থানরত দলকে সালাম করো এবং মন দিয়ে শুনবে, তারা তোমার সালামের কি জবাব দেয়। এটাই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। সুতরাং আদম ‘আলাইহিস সালাম গিয়ে বললেন, আসসালামু আলাইকুম। ফেরেশতাগণ জবাব দিলেন- ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। ফেরেশতাগণ ওয়া রাহমাতুল্লাহ বৃদ্ধি করলেন। তারপর যারা জন্নাতে যাবে তারা প্রত্যেকেই আদম ‘আলাইহিস সালামের আকৃতি বিশিষ্ট হবে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত মানুষের উচ্চতা ক্রমাগত হ্রাস পেয়েই আসছে। [বুখারী ৬২২৭]

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক লোক এসে বললেন, আস্‌সালামুআলাইকুম, রাসূল তার সালামের জবাব দিলেন। তারপর লোকটি বসল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দশ। তারপর আরেকজন এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের জবাব দিয়ে বললেন, বিশ। তারপর আরও একজন এসে বললেন, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের জবাব দিয়ে বললেন, ত্রিশ। [আবু দাউদ ৫১৯৫, তিরমিযী ২৬৮৯]

এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, ইসলামী অভিবাদন অন্যান্য জাতির অভিবাদন থেকে উত্তম। জগতের প্রত্যেক সভ্য জাতির মধ্যে পারস্পারিক দেখা-সাক্ষাতের সময় ভালোবাসা ও সম্প্রীতি প্রকাশার্থে কোনো কোনো বাক্য আদান-প্রদান করার প্রথা প্রচলিত আছে। কিন্তু তুলনা করলে দেখা যাবে যে, ইসলামী সালাম যতটুকু ব্যাপক অর্থবোধক, অন্য কোনো জাতির অভিবাদন ততটুকু নয়। কেননা এতে শুধু ভালোবাসাই প্রকাশ করা হয় না, বরং সাথে সাথে ভালোবাসার যথার্থ হকও আদায় করা হয়। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে দোআ করা হয় যে, আল্লাহ আপনাকে সর্ববিধ বিপদাপদ থেকে নিরাপদে রাখুন। এতে এ বিষয়েরও অভিব্যক্তি রয়েছে যে, আমরা ও তোমরা - সবাই আল্লাহ তা'আলার মুখাপেক্ষী। তাঁর অনুমতি ছাড়া আমরা একে অপরের উপকার করতে পারি না। এ অর্থের দিক দিয়ে বাক্যটি একাধারে একটি ইবাদাত এবং মুসলিম ভাইকে আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেয়ার উপায়ও বটে। মোট কথা, ইসলামী সালামে বিরাট অর্থগত ব্যাপ্তি রয়েছে। যথা- (১) এটি আল্লাহর একটি নাম। তাছাড়া এতে রয়েছে আল্লাহ তা'আলার যিকর, (২) আল্লাহর কথা মনে করিয়ে দেয়া, (৩) মুসলিম ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা ও সম্প্রীতি প্রকাশ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা ঈমান না আনা পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরকে ভালোবাসবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের ঈমান পূর্ণ হবে না। আমি কি তোমাদেরকে একটা বিষয় শিক্ষা দিব, যা করলে তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে ? তোমরা তোমাদের মধ্যে সালামের প্রসার ঘটাও।” [মুসলিম ৫৪]

(৪) মুসলিম ভাইয়ের জন্য সর্বোত্তম দো'আ এবং (৫) মুসলিম ভাইয়ের সাথে এ চুক্তি যে, আমার হাত ও মুখ দ্বারা আপনার কোনো কষ্ট হবে না। সহীহ হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যার হাত ও জিহবা থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ সে-ই প্রকৃত মুসলিম।’ [বুখারী ১৫ মুসলিম ৪১]

অমুসলিমরা কেউ যদি মুসলিমদেরকে সালাম দেয় তবে তার উত্তরে ‘ওয়া আলাইকুম’ পর্যন্ত বলতে হবে। কারণ, তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়। যদি সে ভালো উদ্দেশ্যে বলে থাকে, তবে ভালো পাবে, আর যদি খারাপ উদ্দেশ্যে বলে, তবে এটা তার জন্য বদ দোআর কাজ করবে। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ইয়াহুদীরা যখন তোমাদেরকে সালাম দেয়, তখন তোমরা প্রত্তোত্তরে ‘ওয়া আলাইকুম’ বা তোমাদের উপরও অনুরূপ হোক এ কথাটি বলবে। কেননা তারা তোমাদের মৃত্যুর দো’আ করে থাকে।’ [বুখারী ৬২৫৭, মুসলিম ২১৬৪]

তাছাড়া সালাম যেহেতু মুসলিমদের একান্ত নিজস্ব ব্যাপার, সেহেতু অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য তা প্রয়োগ করা যাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা ইয়াহুদী ও নাসারাদেরকে সালাম দিও না; যদি তাদের কারো সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হয়, তবে তাকে সংকীর্ণ পথে চলে যেতে বাধ্য করবে।’ [মুসলিম ২১৬৭]

[২] অর্থাৎ মানুষ এবং ইসলামী অধিকার; যথা- সালাম ও সালামের জবাব ইত্যাদি সবই এর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ্ তা’আলা এগুলোরও হিসাব নেবেন।
Ərəbcə təfsirlər:
 
Mənaların tərcüməsi Surə: ən-Nisa
Surələrin mündəricatı Səhifənin rəqəmi
 
Qurani Kərimin mənaca tərcüməsi - Benqal dilinə tərcümə- Əbu Bəkir Zəkəriyyə. - Tərcumənin mündəricatı

Banqalca tərcümə edən: Əbu Bəkir Muhəmməd Zəkəriyyə.

Bağlamaq