Kur'an-ı Kerim meal tercümesi - Bengalce Tercüme * - Mealler fihristi


Anlam tercümesi Sure: Sûretu'l-Vâkıa   Ayet:

সূরা আল-ওয়াকিয়াহ

إِذَا وَقَعَتِ ٱلۡوَاقِعَةُ
যখন সংঘটিত হবে কিয়ামত [১],
৫৬- সূরা আল-ওয়াকিয়া
৯৬ আয়াত, মক্কী

হাদীসে এসেছে, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বৃদ্ধ হয়ে গেলেন। তিনি বললেন, আমাকে হূদ, আল-ওয়াকি”আহ, আল-মুরসিলাত, ‘আম্মা ইয়াতাছাআলুনা এবং ইযাসসামছু কুওয়িরাত বৃদ্ধ করে দিয়েছে।” [তিরমিয়ী ৩২৯৭] অপর হাদীসে জাবির ইবন সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘তোমরা বর্তমানে যেভাবে সালাত আদায় কর রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তেমনি সালাত আদায় করতেন; তবে তিনি অনেকটা হাল্কা করতেন। তার সালাত তোমাদের সালাতের চেয়ে অধিক হাল্কা ছিল। অবশ্য তিনি ফজরের সালাতে সূরা আল-ওয়াকি'আহ এবং এ জাতীয় সূরা পড়তেন।’ [মুসনাদে আহমাদ ৫/১০৪]

[১] الواقعة শব্দটির অভিধানিক অর্থ হচ্ছে, “যা ঘটা অবশ্যম্ভাবী।" এখানে الواقعة বলে কিয়ামত বোঝানো হয়েছে। ওয়াকি'আহ কেয়ামতের অন্যতম নাম। কেননা এর বাস্তবতায় কোনোরূপ সন্দেহ ও সংশয়ের অবকাশ নেই। [ফাতহুল কাদীর]
Arapça tefsirler:
لَيۡسَ لِوَقۡعَتِهَا كَاذِبَةٌ
(তখন) এটার সংঘটন মিথ্যা বলার কেউ থাকবে না [১]।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ যখন সেটা ঘটাতে চাইবেন তখন সেটাকে রোধ করে বা সেটার আগমন ঠেকানোর কেউ থাকবে না। [ফাতহুল কাদীর] অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা'আলা তা বলেছেন, “তোমাদের রবের ডাকে সাড়া দাও আল্লাহর পক্ষ থেকে সে দিন আসার আগে, যা অপ্রতিরোধ্য; যেদিন তোমাদের কোনো আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের জন্য তা নিরোধ করার কেউ থাকবে না।” [সূরা আশ-শূরা ৪৭] অন্যত্র বলা হয়েছে, “এক ব্যক্তি চাইল, সংঘটিত হোক শাস্তি যা অবধারিত--- কাফিরদের জন্য, এটাকে প্রতিরোধ করার কেউ নেই।” [সূরা আল-মা'আরিজ ১-২] তাছাড়া আরও এসেছে, “তাঁর কথাই সত্য। যেদিন শিংগায় ফুঁৎকার দেয়া হবে সেদিনের কর্তৃত্ব তো তাঁরই। উপস্থিত ও অনুপস্থিত সবকিছু সম্বন্ধে তিনি পরিজ্ঞাত; আর তিনিই প্রজ্ঞাময়, সবিশেষ অবহিত।” [সূরা আল-আন’আম ৭৩] আয়াতে كاذبة এর অর্থ কোনো কোনো মুফাসসিরের মতে, “অবশ্যম্ভাবী”। কোনো কোনো মুফাসসিরের মতে, “যা থেকে কোনো প্রত্যাবর্তন নেই”। আবার কারো কারো মতে, كاذبة শব্দটি عاقبة ও عافية এর ন্যায় একটি ধাতু। অর্থ এই যে, কেয়ামতের বাস্তবতা মিথ্যা হতে পারে না। [ইবন কাসীর]
Arapça tefsirler:
خَافِضَةٞ رَّافِعَةٌ
এটা কাউকে করবে নীচ, কাউকে করবে সমুন্নত [১];
[১] “নীচুকারী ও উঁচুকারী” এর একটি অর্থ হতে পারে সেই মহা ঘটনা সব কিছু উলট-পালট করে দেবে। কেয়ামত ভয়াবহ হবে এবং এতে অভিনব বিপ্লব সংঘটিত হবে। আরেকটি অর্থ এও হতে পারে যে, তা নীচে পতিত মানুষদেরকে উপরে উঠিয়ে দেবে এবং উপরের মানুষদেরকে নীচে নামিয়ে দেবে। আরেকটি অর্থ এও হতে পারে যে, সেটার সংবাদ কাছের লোকদেরকে আস্তে আসবে আর দূরের লোকদের কাছে উঁচু স্বরে আসবে। মোটকথা, সেই মহাসংবাদটি দূরের কাছের সবাই শোনতে পাবে। আরেকটি অর্থ হচ্ছে, কিয়ামতের সেদিন কাউকে উঁচু জান্নাতে স্থান করে দেয়া হবে আর কাউকে নীচু জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। [ইবন কাসীরা; কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]
Arapça tefsirler:
إِذَا رُجَّتِ ٱلۡأَرۡضُ رَجّٗا
যখন প্ৰবল কম্পনে প্ৰকম্পিত হবে যমীন
Arapça tefsirler:
وَبُسَّتِ ٱلۡجِبَالُ بَسّٗا
এবং চূৰ্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে পর্বতমালা,
Arapça tefsirler:
فَكَانَتۡ هَبَآءٗ مُّنۢبَثّٗا
অতঃপর তা পর্যবসিত হবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায় ;
Arapça tefsirler:
وَكُنتُمۡ أَزۡوَٰجٗا ثَلَٰثَةٗ
আর তোমারা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন দলে --- [১]
[১] ইবন কাসীর বলেন, কেয়ামতের দিন সব মানুষ তিন দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। এক দল আরাশের ডানপার্শ্বে থাকবে। তারা আদম আলাইহিস সালামের ডানপার্শ্বে থেকে পয়দা হয়েছিল এবং তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে। তারা সবাই জান্নাতী। দ্বিতীয় দল আরাশের বামদিকে একত্রিত হবে। তারা আদম আলাইহিস সালামের বামপার্শ্ব থেকে পয়দা হয়েছিল এবং তাদের আমলনামা তাদের বাম হাতে দেয়া হবে। তারা সবাই জাহান্নামী। তৃতীয় দল হবে অগ্রবতীদের দল। তারা আরশাধিপতি আল্লাহর সামনে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য ও নৈকট্যের আসনে থাকবে। তারা হবেন নবী, রাসূল, সিদ্দীক, শহীদগণ। তাদের সংখ্যা প্রথমোক্ত দলের তুলনায় কম হবে। [ইবন কাসীর] মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনের অন্যত্রও মানুষকে এ তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন। আল্লাহ বলেন, “তারপর আমরা কিতাবের অধিকারী করলাম আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাদেরকে আমরা মনোনীত করেছি; তবে তাদের কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী, কেউ মধ্যপন্থী এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী। এটাই মহাঅনুগ্রহ---” [সূরা ফাতির ৩২]
Arapça tefsirler:
فَأَصۡحَٰبُ ٱلۡمَيۡمَنَةِ مَآ أَصۡحَٰبُ ٱلۡمَيۡمَنَةِ
অতঃপর ডান দিকের দল; ডান দিকের দলটি কত সৌভাগ্যবান [১]!
[১] মূল আয়াতে اَصْحَبُ الْمَشْىَٔمَةِ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আরবী ব্যাকরণ অনুসারে مَيْمَنَةٌ শব্দটি يمين শব্দ থেকে গৃহিত হতে পারে, যার অর্থ ডান হাত। অর্থাৎ যাদের আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে বা যারা ডানপাশে থাকবে। আবার يمن শব্দ থেকেও গৃহিত হতে পারে, যার অর্থ শুভ লক্ষণ বা “খোশ নসীব" ও সৌভাগ্যবান। [কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
وَأَصۡحَٰبُ ٱلۡمَشۡـَٔمَةِ مَآ أَصۡحَٰبُ ٱلۡمَشۡـَٔمَةِ
এবং বাম দিকের দল; আর বাম দিকের দলটি কত হতভাগা [১]!
[১] মূল ইবারতে اَصْحٰبُ الْمِشْىَٔمَةِ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। مشأمة শব্দের উৎপত্তি হয়েছে شؤم থেকে। এর অর্থ, দূর্ভাগ্য, কুলক্ষণ, অশুভ লক্ষণ। আরবী ভাষায় বাঁ হাতকেও شؤمي বলা হয়। অতএব اَصْحٰبُ الْمِشْىَٔمَةِ অর্থ দুর্ভাগা লোক অথবা এমন লোক যারা আল্লাহর কাছে লাঞ্ছনার শিকার হবে এবং আল্লাহর দরবারে তাদেরকে বাঁ দিকে দাঁড় করানো হবে অথবা আমলনামা বাঁ হাতে দেয়া হবে। [কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
وَٱلسَّٰبِقُونَ ٱلسَّٰبِقُونَ
আর অগ্রবর্তিগণই তো অগ্রবর্তী [১],
[১] আয়াতে বলা হয়েছে, السابقون অর্থাৎ যারা সৎকাজ ও ন্যায়পরায়ণতায় সবাইকে অতিক্রম করেছে, প্রতিটি কল্যাণকর কাজে সবার আগে থেকেছে। আল্লাহ ও রাসূলের আহবানে সবার আগে সাড়া দিয়েছে, জিহাদের ব্যাপারে হোক কিংবা আল্লাহর পথে খরচের ব্যাপারে হোক কিংবা জনসেবার কাজ হোক কিংবা কল্যাণের পথে দাওয়াত কিংবা সত্যের পথে দাওয়াতের কাজ হোক। মুজাহিদ বলেন, অগ্রবর্তীগণ বলে নবী-রাসূলগণকে বোঝানো হয়েছে। ইবন সিরীনের মতে যারা বায়তুল মুকাদ্দাস ও বায়তুল্লাহ উভয় কেবলার দিকে মুখ করে সালাত পড়েছে, তারা অগ্রবর্তীগণ। হাসান ও কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার মতে, প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে অগ্রবর্তী সম্পপ্রদায় রয়েছে। এসব উক্তি উদ্ধৃত করার পর ইবন কাসীর বলেন, এসব উক্তি স্ব স্ব স্থানে সঠিক ও বিশুদ্ধ। পৃথিবীতে কল্যাণের প্রসার এবং অকল্যাণের উচ্ছেদের জন্য ত্যাগ ও কুরবানী এবং শ্ৰমদান জীবনদানের যে সুযোগই এসেছে তাতে সে-ই অগ্রগামী হয়ে কাজ করেছে। এ কারণে আখেরাতেও তাদেরকেই সবার আগে রাখা হবে। [ইবন কাসীর; কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]
Arapça tefsirler:
أُوْلَٰٓئِكَ ٱلۡمُقَرَّبُونَ
তারাই নৈকট্যপ্ৰাপ্ত ---
Arapça tefsirler:
فِي جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ
নি'আমতপূর্ণ উদ্যানে;
Arapça tefsirler:
ثُلَّةٞ مِّنَ ٱلۡأَوَّلِينَ
বহু সংখ্যক হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে;
Arapça tefsirler:
وَقَلِيلٞ مِّنَ ٱلۡأٓخِرِينَ
এবং অল্প সংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্য থেকে [১]।
[১] ثلة শব্দের অর্থ দল অথবা বড় দল। আলোচ্য আয়াতসমূহে দু’জায়গায় পূর্ববর্তীও পরবর্তীর বিভাগ উল্লেখ হয়েছে – নৈকট্যশীলদের বর্ণনায় এবং সাধারণ মুমিনদের বর্ণনায়। নৈকট্যশীলদের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, অগ্রবর্তী নৈকট্যশীলদের একটি বড় দল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে হবে এবং অল্প সংখ্যক পরবর্তীদের মধ্য থেকে হবে। সাধারণ মুমিনদের বর্ণনায় পূর্ববতী ও পরবতী উভয় জায়গায় ثلة শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ এই যে, সাধারণ মুমিনদের একটি বড় দল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে হবে এবং একটি বড় দল পরবর্তীদের মধ্য থেকেও হবে। এখন চিন্তা সাপেক্ষ বিষয় এই যে, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বলে কাদেরকে বোঝানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তফসীরবিদগণ দু’রকম উক্তি করেছেন।

(এক) আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ব পর্যন্ত সব মানুষ পূর্ববর্তী এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুরু করে কেয়ামত পর্যন্ত সব মানুষ পরবর্তী।

(দুই) তফসীরবিদগণের দ্বিতীয় উক্তি এই যে, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বলে এই উম্মতেরই দুটি স্তর বোঝানো হয়েছে। পূর্ববর্তী বলে কুরুনে-উলা তথা সাহাবী, তাবেয়ী প্রমুখদের যুগকে এবং পরবর্তী বলে তাদের পরবর্তী কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী মুসলিম সম্প্রদায়কে বোঝানো হয়েছে। অধিকাংশ মুফাসসির এই দ্বিতীয় উক্তিকেই অগ্ৰাধিকার দিয়েছেন। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]

এ পক্ষের যুক্তির সমর্থনে বলা যায় যে, পবিত্র কুরআন থেকে সুস্পষ্টরূপে বোঝা যায়, উম্মতে মুহাম্মদী পূর্ববতী সকল উম্মতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। [সা'দী] বলাবাহুল্য কোনো উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব তার ভিতরকার উচ্চস্তরের লোকদের সংখ্যাধিক্য দ্বারাই হয়ে থাকে। তাই শ্রেষ্ঠতম উম্মতের মধ্যে অগ্রবর্তী নৈকট্যশীলদের সংখ্যা কম হবে - এটা সুদূর পরাহত। যেসব আয়াত দ্বারা উম্মতে মুহাম্মদীর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়, সেগুলো এই:

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ [সূরা আলে ইমরান ১১০]

এবং

وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ [সূরা আল-বাকারাহ ১৪৩]

তাছাড়া এক হাদীসে বলা হয়েছে, “তোমরা সত্তরটি উম্মতের পরিশিষ্ট হবে। তোমরা সর্বশেষে এবং আল্লাহ তা’আলার কাছে সর্বাধিক সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠ হবে।” [তিরমিয়ী ৩০০১] অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, “তোমরা জান্নাতীদের এক চতুর্থাংশ হবে - এতে তোমরা সন্তুষ্ট আছ কি? আমরা বললাম, নিশ্চয় আমরা এতে সন্তুষ্ট। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, আমি আশা করি তোমরা জান্নাতের অর্ধেক হবে।” [বুখারী ৩৩৪৮, মুসলিম ২২২]

অন্য হাদীসে এসেছে, জান্নাতীগণ মোট একশ বিশ কাতারে থাকবে তন্মধ্যে আশি কাতার এই উম্মতের মধ্য থেকে হবে এবং অবশিষ্ট চল্লিশ কাতারে সমগ্র উম্মত শরীক হবে। [তিরমিয়ী ২৫৪৬, ইবন মাজাহ ৪২৮৯, মুসনাদে আহমাদ ১/৪৫৩, ৫/৩৪৭, ৫/৩৫৫] উপরোক্ত বর্ণনাসমূহে অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এই উম্মতের জান্নাতীদের পরিমাণ কোথাও এক চতুর্থাংশ, কোথাও অর্ধেক এবং শেষ বর্ণনায় দুই তৃতীয়াংশ বলা হয়েছে। এতে বুঝা গেল যে, এ নৈকট্যপ্রাপ্তদের সংখ্যা এ উম্মতের মধ্যে কম হওয়ার নয়।
Arapça tefsirler:
عَلَىٰ سُرُرٖ مَّوۡضُونَةٖ
স্বৰ্ণ ও দামী পাথর খচিত আসনে
Arapça tefsirler:
مُّتَّكِـِٔينَ عَلَيۡهَا مُتَقَٰبِلِينَ
তারা হেলান দিয়ে বসবে, পরস্পর মুখোমুখি হয়ে [১]।
[১] উপরোক্ত দু‘আয়াতে জান্নাতের আসনসমূহ কেমন হবে তার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নৈকট্যপ্রাপ্তদের আসন কেমন হবে তার বর্ণনা এসেছে। জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ, তার বাগানসমূহে বসার জায়গা কিভাবে চিত্তাকর্ষকভাবে সাজানো হয়েছে পবিত্র কুরআনের বিভিন্নস্থানে তার বিবরণ এসেছে। এ আয়াতসমূহে মহান আল্লাহ বলেন, “স্বর্ণ-খচিত আসনে, ওরা হেলান দিয়ে বসবে, পরস্পর মুখোমুখি হয়ে” অন্যত্র বলেন, “উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন শয্যা, প্রস্তুত থাকবে পানপাত্ৰ, সারি সারি উপাধান এবং বিছানা গালিচা।” |সূরা আল-গাশিয়াহ ১৩-১৬]

আরও বলেন, “সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে পুরু রেশমের আস্তর বিশিষ্ট ফরাশে, দুই উদ্যানের ফল হবে কাছাকাছি।” [সূরা আর-রাহমান ৫৪] আরও বলেন, “তারা বসবে শ্রেণীবদ্ধভাবে সজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে; আমি তাদের মিলন ঘটাব ডাগর চোখ বিশিষ্টা হূরের সংগে।” [সূরা আত-তূর ২০]

এভাবে ঠেস লাগিয়ে বসে তারা পরস্পর ভাই ভাই হিসেবে অবস্থান করবে। মহান আল্লাহ্‌ বলেন, “আর আমরা তাদের অন্তর হতে বিদ্বেষ দূর করব; তারা ভাইয়ের মত পরস্পর মুখোমুখি হয়ে আসনে অবস্থান করবে।” [সূরা আল-হিজর ৪৭] “তারা হেলান দিয়ে বসবে সবুজ তাকিয়ায় ও সুন্দর গালিচার উপরে।” [সূরা আর-রাহমান ৭৬] “সেখানে সমাসীন হবে সুসজ্জিত আসনে; কত সুন্দর পুরস্কার ও উত্তম আশ্রয়স্থল!” [সূরা আল-কাহাফ ৩১]
Arapça tefsirler:
يَطُوفُ عَلَيۡهِمۡ وِلۡدَٰنٞ مُّخَلَّدُونَ
তাদের আশেপাশে ঘুরাফিরা করবে চির - কিশোরেরা [১]
[১] অর্থাৎ এই কিশোররা সর্বদা কিশোরই থাকবে। তাদের মধ্যে বয়সের কোনো তারতম্য দেখা দেবে না। হূরদের ন্যায় এই কিশোরগণও জান্নাতেই পয়দা হবে এবং তারা জন্নাতীদের খেদমতগার হবে। কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে যে, একজন জান্নাতীর কাছে হাজারো খাদেম থাকবে। [বাইহাকী আব্দুল্লাহ ইবন আমরা থেকে] এই কিশোরেরা খুবই সুন্দর হবে। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে কিশোরেরা, সুরক্ষিত মুক্তার মত।” [সূরা আত-তূর ২৪]

আরও বলা হয়েছে, “তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে চিরকিশোরগণ, যখন আপনি তাদেরকে দেখবেন তখন মনে করবেন তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা।” [সূরা আল-ইনসান ১৯]

তাদের চলাফেরায় মনে হবে যেন মুক্তা ছড়িয়ে আছে। কোনো কোনো লোক মনে করে থাকে যে, ছোট ছোট বাচ্চারা যারা নাবালেগ অবস্থায় মারা যাবে তারা জান্নাতের খাদেম হবে। তাদের এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ, ছোট ছোট বাচ্চারা তখন পরিণত বয়সের হবে এবং জান্নাতের অধিবাসী হবে। পক্ষান্তরে এ সমস্ত খাদেমদেরকে আল্লাহ্ তাআলা জান্নাতেই সৃষ্টি করবেন। তাদের কাজই হবে খেদমত করা। তারা দুনিয়ার কোনো অধিবাসী নয়। [ইবন তাইমিয়্যা, মাজমু ফাতাওয়া ৪/২৭৯, ৪/৩১১]
Arapça tefsirler:
بِأَكۡوَابٖ وَأَبَارِيقَ وَكَأۡسٖ مِّن مَّعِينٖ
পানপাত্র, জগ ও প্রস্রবণ নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে [১]।
[১] أَكْوَابٌ শব্দটি كُوْبٌ এর বহুবচন। অর্থ গ্লাসের ন্যায় পানপাত্র। أَبَارِيْقٌ শব্দটি إِبْرِيْقٌ এর বহুবচন। এর অর্থ কুজা। এ জাতীয় পাত্রে ধরার ও বের করার জায়গা থাকে। كأس এর অর্থ সুরা পানের পেয়ালা। যদি পানীয় না থাকে তখন তাকে كأس বলা হয় না। معين এর উদ্দেশ্য এই যে, এই পানীয় একটি ঝর্ণা থেকে আনা হবে। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর; ইবন কাসীর]

জান্নাতের পানপত্র, কুজা, পেয়ালা এ সবই সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মী হবে। নামে এক হলেও গুণাবলীতে হবে আলাদা। তাদের এ সমস্ত সরঞ্জামাদি হবে স্বর্ণ ও রৌপ্য নির্মিত। মহান আল্লাহ বলেন, “স্বর্ণের থালা ও পানিপাত্ৰ নিয়ে তাদেরকে প্ৰদক্ষিণ করা হবে।" |সূরা আয-যুখরুফ ৭১]

আরও বলেন, “তাদেরকে পরিবেশন করা হবে রৌপ্যপাত্রে এবং স্ফটিকের মত স্বচ্ছ পানপাত্ৰে--- রজতশুভ্র স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা যথাযথ পরিমাণে তা পূর্ণ করবে।” [সূরা আল-ইনসান ১৫]

হাদীসেও এ সমস্ত পাত্রের বর্ণনা এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “মুমিনের জন্য জান্নাতে এমন একটি তাঁবু থাকবে, যা এমন একটি মুক্তা দিয়ে তৈরী হয়েছে যে মুক্তার মাঝখানে খালি করা হয়েছে। ... আর রৌপ্যের দু'টি জান্নাত থাকবে সেগুলোর পেয়ালা ও অন্যান্য প্রসাধনী সবই রৌপ্যের। অনুরূপভাবে দু'টি স্বর্ণ নির্মিত জান্নাত থাকবে, যার পেয়ালা ও অন্যান্য প্রসাধনী সবই স্বর্ণের।” [বুখারী ৪৮৭৮, মুসলিম ১৮০]
Arapça tefsirler:
لَّا يُصَدَّعُونَ عَنۡهَا وَلَا يُنزِفُونَ
সে সুরা পানে তাদের শিরঃপীড়া হবে না, তারা জ্ঞানহারাও হবে না--- [১]
[১] يُصَدَّعُوْنَ শব্দটি صدع থেকে উদ্ভুত। অর্থ মাথা ব্যথা। দুনিয়ার সুরা অধিক মাত্রায় পান করলে মাথাব্যথা ও মাথাঘোরা দেখা দেয়। জান্নাতের সুরা এই সুরা-উপসর্গ থেকে পবিত্র হবে। [ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী] আর يُنزِفُونَ এর আসল অর্থ কুপের সম্পূর্ণ পানি উত্তোলন করা। এখানে অর্থ জ্ঞানবুদ্ধি হারিয়ে ফেলা বা বিরক্তি বোধ করা। মহান আল্লাহ জান্নাতবাসীদের যে সমস্ত পানীয় দ্বারা সম্মানিত করবেন তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সুরা। কিন্তু সেগুলো কখনো দুনিয়ার মদের মত হবে না। দুনিয়ার মদ বিবেক নষ্ট করে, মাথা ব্যথা সৃষ্টি করে, পেট ব্যথার উদ্রেক করে, শরীর অসুস্থ করে, রোগ-ব্যাধি টেনে আনে। [ফাতহুল কাদীর]

মহান আল্লাহ বলেন, “তাদেরকে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হবে বিশুদ্ধ সুরাপূর্ণ পাত্রে শুভ্ৰ উজ্জ্বল, যা হবে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। তাতে ক্ষতিকর কিছু থাকবে না এবং তাতে তারা মাতালও হবে না।” [সূরা আস-সাফফাত ৪৫-৪৭]

অন্য আয়াতে বলেছেন, “মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত: তাতে আছে নির্মল পানির নাহর, আছে দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর, আছে পরিশোধিত মধুর নহর।” [সূরা মুহাম্মদ ১৫]

তাছাড়া সেটা পান করে তারা জ্ঞানহারাও হবে না। আবার পান করতে বিরক্তি বোধও হবে না। বলা হয়েছে, “তারা তাতে মাতালও হবে নাG” [সূরা আস-সাফফাত ৪৭]

আলোচ্য সূরার আয়াতেও সে সুরার গুণাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, “তাদের সেবায় ঘোরাফেরা করবে চির-কিশোরেরা, পানপত্র, কুজা ও প্রস্রবণ নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে, সে সুরা পানে তাদের শিরঃপীড়া হবে না, তারা জ্ঞানহারাও হবে না।” [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ১৭-১৯]

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, দুনিয়ার মদের চারটি খারাপ গুণ রয়েছে। মাতলামী, মাথাব্যথা, বমি ও পেশাব। পক্ষান্তরে জান্নাতের সুরা এগুলো থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র থাকবে। [কুরতুবী] অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ জান্নাতের সুরা সম্পর্কে বলেন যে, “তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধ পানীয় হতে পান করানো হবে; এটার মোহর মিসকের, এ বিষয়ে প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতা করুক।” [সূরা আল-মুতাফফিফীন ২৫-২৭]
Arapça tefsirler:
وَفَٰكِهَةٖ مِّمَّا يَتَخَيَّرُونَ
আর (ঘোরাফেরা করবে) তাদের পছন্দমত ফলমূল নিয়ে [১],
[১] জান্নাতের ফল-মূল দুনিয়ার ফল-মূলের নামে হলেও সেগুলোর স্বাদ ও গন্ধ হবে ভিন্ন প্রকৃতির। [সা’দী] আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “যখনই তাদেরকে কোনো ফল থেকে রিফিক দেয়া হবে তখনই তারা বলবে, পূর্বেও তো আমাদের এই রিযিক দেয়া হয়েছিল, আর তাদেরকে অনুরূপ ফলই দেয়া হয়েছে।” [সূরা আল-বাকারাহ ২৫] সুতরাং দেখতে ও নামে এক প্রকার হলেও স্বাদ হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ সমস্ত ফলের গাছ বিভিন্ন ধরনের হবে। মহান আল্লাহ জানিয়েছেন যে, সে সমস্ত গাছের মধ্যে রয়েছে, আঙ্গুরের গাছ, খেজুর গাছ, রুম্মান বা বেদানা গাছ, যেমন তাতে রয়েছে, বরই ও কলা গাছ। আল্লাহ বলেন, “মুক্তাকীদের জন্য তো আছে সাফল্য, উদ্যান, আঙ্গুর।” [সূরা আন-নাবা ৩১-৩২]

“সেখানে রয়েছে ফলমূল---খেজুর ও আনার।” [সূরা আর-রাহমান ৬৮] “আর ডান দিকের দল, কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল! তারা থাকবে এমন উদ্যানে, সেখানে আছে কাঁটাহীন কুলগাছ, কাঁদি ভরা কদলী গাছ, সম্প্রসারিত ছায়া, সদা প্রবাহমান পানি ও প্রচুর ফলমূল, যা শেষ হবে না ও যা নিষিদ্ধও হবে না।” [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ২৭-৩২] জান্নাতের বাগানে যা থাকবে তার মধ্যে কুরআন যা বর্ণনা করেছে তা খুব সামান্যই। আর এ জন্যই মহান আল্লাহ এ সমস্ত ফলমূলকে অন্যত্র একত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, "উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রত্যেক ফল দুই দুই প্রকার।” [সূরা আর-রাহমান ৫৩] জান্নাতের ফল-ফলাদির প্রাচুর্যের কারণে সেখানকার অধিবাসীরা যা ইচ্ছে তা দাবী করে নিবে আর যা ইচ্ছে তা পছন্দ করবে। “সেখানে তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা বহুবিধ ফলমূল ও পানীয় চাইবে।” [সূরা সোয়াদ ৫১] “এবং তাদের পছন্দমত ফলমূল।” [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ২০]

“মুত্তাকীরা থাকবে ছায়ায় ও প্রস্রবণ বহুল স্থানে, তাদের বাঞ্ছিত ফলমূলের প্রাচুর্যের মধ্যে।” [সূরা আল-মুরসালাত ৪১-৪২] মোটকথা, জান্নাতে সবধরনের যাবতীয় স্বাদের ফল-ফলাদি থাকবে যা তাদের আনন্দ দিবে ও যা তাদের মন চাইবে। মহান আল্লাহ বলেন, “স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র নিয়ে তাদেরকে প্রদক্ষিণ করা হবে; সেখানে রয়েছে সমস্ত কিছু, যা অন্তর চায় এবং যাতে নয়ন তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে।” [সূরা আয-যুখরুফ ৭১] তাছাড়া জান্নাতের গাছসমূহের আরেকটি গুণ হলো যে, সেগুলো কখনো ফল-ফলাদি শূন্য হবে না। সবসময় সব ঋতুতে তাতে ফল থাকবে। মহান আল্লাহ বলেন, “মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তার উপমা এরূপ: তার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, তার ফলসমূহ ও ছায়া চিরস্থায়ী।" [সূরা আর-রা'দ ৩৫] আরও বলেন, “আর প্রচুর ফলমূল যা শেষ হবে না ও যা নিষিদ্ধও হবে না।" [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ৩৩-৩৪]

এছাড়া জান্নাতের গাছসমূহ শাখা, কাণ্ডবিশিষ্ট ও বর্ধনশীল হবে। আল্লাহ বলেন, “আর যে আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য রয়েছে দুটি উদ্যান। কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্‌ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? উভয়ই বহু শাখা-পল্লববিশিষ্ট।” [সূরা আর-রাহমান ৪৭-৪৯] আরও বলেন, “এ উদ্যান দুটি ছাড়া আরো দুটি উদ্যান রয়েছে। কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্‌ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ঘন সবুজ এ উদ্যান দুটি। কাজেই তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? [সূরা আর-রাহমান ৬৩-৬৫]

এ সমস্ত গাছের ফলফলাদির আরো একটি গুণ হচ্ছে এই যে, এগুলো হাতের নাগালের মধ্যেই থাকবে, যাতে জান্নাতিদের কষ্ট না হয়। মহান আল্লাহ বলেন, “সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে পুরু রেশমের আস্তর বিশিষ্ট ফরাশে, দুই উদ্যানের ফল হবে কাছাকাছি।” [সূরা আর-রাহমান ৫৫] অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “সন্নিহিত গাছের ছায়া তাদের উপর থাকবে এবং তার ফলমূল সম্পূর্ণরূপে তাদের আয়ত্তাধীন করা হবে।" [সূরা আল-ইনসান ১৪] এছাড়া জান্নাতের গাছের ছায়া; তা তো বলার অপেক্ষা রাখেনা; মহান আল্লাহ বলেন, “যারা ঈমান আনে এবং ভাল কাজ করে তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, সেখানে তাদের জন্য পবিত্র স্ত্রী থাকবে এবং তাদেরকে চিরস্নিগ্ধ ছায়ায় প্রবেশ করাবেন।" [সূরা আন-নিসা ৫৬] “সম্প্রসারিত ছায়া” [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ৩০] “মুক্তাকীরা থাকবে ছায়ায় ও প্রস্রবণ বহুল স্থানে” [সূরা আল-মুরসালাত ৪১]

তাছাড়া এ সমস্ত গাছের আরও কিছু বর্ণনা রাসূলের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। কোনো কোনো হাদীসে এসেছে যে, “জান্নাতের কোনো কোনো গাছ এমন হবে যে, যার নীচে দিয়ে সফরকারী তার সর্বশক্তি দিয়ে সফর করলেও তা অতিক্রম করতে একশত বছর লাগবে, তারপরও সে তা শেষ করতে পারবে না।” [বুখারী ৩২৫১, মুসলিম ২৮২৮] অন্য হাদীসে এসেছে, “জান্নাতের গাছের কাণ্ড হবে স্বর্ণের।” [তিরমিয়ী ২৫২৫] জান্নাতের গাছ বৃদ্ধি করার উপায় সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইসরার রাত্রিতে আমি ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সাথে সাক্ষাৎ করি। তিনি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ! তোমার উম্মতকে আমার পক্ষ থেকে সালাম জানাবে তারপর তাদের জানাবে যে, জান্নাতের মাটি অতি উত্তম। পানি অতি মিষ্ট। আর এটা হচ্ছে গাছবিহীন ভূমি। এখানকার গাছ হলো, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার।” [তিরমিয়ী ৩৪৬২]
Arapça tefsirler:
وَلَحۡمِ طَيۡرٖ مِّمَّا يَشۡتَهُونَ
আর তাদের ঈন্সিত পাখীর গোশত নিয়ে [১]।
[১] অর্থাৎ রুচিসম্মত পাখির গোশত। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাউসার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এটা এমন এক নহর যা আমাকে আল্লাহ জান্নাতে দান করেছেন। যার মাটি মিসকের, যার পানি দুধের চেয়েও সাদা আর যা মধু থেকেও সুমিষ্ট। সেখানে এমন এমন উঁচু ঘাড়বিশিষ্ট পাখিসমূহ পড়বে যেগুলো দেখতে উটের ঘাড়ের মত। তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এগুলো তো অত্যন্ত আকর্ষণীয় হবে। তিনি বললেন, যারা সেগুলো খাবে তারা তাদের থেকেও আকর্ষণীয়।” [মুসনাদে আহমাদ ৩/২৩৬, তিরমিয়ী ২৫৪২, আল-মুখতারাহ ২২৫৮]
Arapça tefsirler:
وَحُورٌ عِينٞ
আর তাদের জন্য থাকবে ডাগর চক্ষুবিশিষ্টা হূর,
Arapça tefsirler:
كَأَمۡثَٰلِ ٱللُّؤۡلُوِٕ ٱلۡمَكۡنُونِ
যেন তারা সুরক্ষিত মুক্তা [১],
[১] আলোচ্য আয়াতে জান্নাতের নারীদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। জান্নাতে দু‘ধরনের নারী থাকবে। এক. সে সমস্ত নারী যারা দুনিয়াতে ছিল। তারা সেখানে স্ত্রী হিসেবে থাকবে। এ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা হল:

দুনিয়াতে যারা যাদের স্ত্রী ছিল তারা আখেরাতে তাদের স্বামীরা যদি জান্নাতে যায় তখন তারাও তাদের স্ত্রী হিসেবে থাকবে। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী, “স্থায়ী জান্নাত, তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের পিতা-মাতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকাজ করেছে তারাও এবং ফিরিশতাগণ তাদের কাছে উপস্থিত হবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে।” [সুরা আর-রা'দ ২৩]

সুতরাং তারা জান্নাতে পরস্পর আনন্দে বসবাস করবে। মহান আল্লাহ বলেন, “তারা এবং তাদের স্ত্রীগণ সুশীতল ছায়ায় সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসবে।” [সূরা ইয়াসিন ৫৬] আরও বলেন, “তোমরা এবং তোমাদের সহধর্মিণিগণ সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর।” [সূরা আয-যুখরুফ ৭০]

দুনিয়াতে যদি কোনো মহিলা পরপর কয়েকজনের স্ত্রী ছিল, তারপর যদি সে সমস্ত পুরুষেরা সবাই জান্নাতে যায় এবং সবাই মহিলার জন্য সমপর্যায়ের হয়, তবে সে মহিলা তাদের মধ্যকার সর্বশেষ ব্যক্তিটির স্ত্রী হবে। কারণ, মৃত্যুর কারণে তাদের পূর্বের সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়নি। স্বামীর জান্নাতে যাওয়ার কারণে এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান হবে যে, সে তার স্ত্রীর সাথে ভাল ব্যবহার করেছে। সুতরাং মহিলা তার সর্বশেষ যে স্বামীর সাথে ঘর করা অবস্থায় মারা গেছে তার সাথে সে জান্নাতে থাকবে। এর প্রমাণ রাসূল এর বাণী; তিনি বলেন, যে মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পরে অন্য স্বামী গ্ৰহণ করেছে সে তার সর্বশেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে। [ত্বাবরানী, আল-আওসাত ৩/২৭৫, নং ৩১৩০, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৪/২৭০]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, আসমা বিনত আবি বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহুর স্ত্রী ছিলেন। তিনি তার স্ত্রীর সাথে কঠোর ব্যবহার করতেন। আসমা তার পিতা আবু বকরের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বললেন, বেটি! সবর করো, কোনো মহিলা যদি তার স্বামীর সাথে থাকা অবস্থায় মারা যায় তারপর দু’জনই জান্নাতে যায় তবে আল্লাহ তাদের দু’জনকে জান্নাতেও এক সাথে রাখবেন। (বিশেষ করে যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত মানুষ) [তারিখে ইবন আসাকির ১৯/১৯৩] অনুরূপ অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার স্ত্রীকে মৃত্যুর সময় বলেন যে, তুমি যদি আখেরাতে আমার স্ত্রী হতে চাও তবে আমার পরে আর কারো সাথে বিয়ে করবে না। কারণ, একজন মহিলা তার সর্বশেষ স্বামীর সাথেই জান্নাতে থাকবে। আর এজন্যই আল্লাহ তাঁর নবীর স্ত্রীদেরকে নবীর পরে বিয়ে করতে নিষেধ করেছেন। [বাইহাকী, আস-সুনানুল কুবরা ৭/৬৯-৭০, খতিব বাগদাদী, তারিখে বাগদাদ ৯/৩২৮] অনুরূপভাবে অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহুর মৃত্যুর পরে মু'আবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু তার স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি এই বলে ফেরত দিলেন যে, আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাকে বলেছেন যে, একজন মহিলা তার সর্বশেষ স্বামীর সাথেই জান্নাতে থাকবে। আমি আবুদ্দারদার পরিবর্তে কাউকে চাই না। [বুসীরী, ইতিহাফুল খিয়ারাতুল মাহারাহ ৪/৩৭ নং ৩২৬৪, ইবন হাজার, আলমাতালিবুল আলিয়া ২/১১০]

আর যদি মহিলা কারও স্ত্রী হিসেবে সর্বশেষে ছিল না (যেমন তালাকপ্ৰাপ্ত ছিল), তখন সে তাদের মধ্যে যারা তার সাথে দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশী সুন্দর ব্যবহার করেছে তার সাথে থাকবে অথবা তাকে যে কাউকে গ্ৰহণ করার এখতিয়ার দেয়া হবে। বিভিন্ন বর্ণনা থেকে এ ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা পাওয়া যায় (যদিও বর্ণনাগুলো দূর্বল)। এক বর্ণনায় এসেছে, উম্মে হাবীবা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মহিলাদের কেউ কেউ দুটি বা তিনটি স্বামীর ঘর করেছে সে জন্নাতে কার থাকবে? তিনি উত্তরে বললেন, যার ব্যবহার-চরিত্র সবচেয়ে ভাল। [তাবরানী, মুজামুল কাবীর ২৩/২২২] কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে যে, এ প্রশ্নটি উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা করেছিলেন, জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তাকে এখতিয়ার দেয়া হবে যে, যাকে ইচ্ছে বাছাই করে নাও। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে উম্মে সালামাহ! উত্তম ব্যবহার- চরিত্র দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ নিয়ে গেল। [তাবরানী, মুজামুল কাবীর ২৩/৩৬৭, হাইসামী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৭/১১৯]

জন্নাতে কোনো কুমার থাকবে না। প্রত্যেক মুমিনের দু’জন স্ত্রী থাকবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, প্রথম যে দলটি জান্নাতে যাবে তাদের চেহারার লাবন্য হবে পূর্নিমার রাত্রির চাঁদের চেয়েও বেশী। তারা থুথু নিক্ষেপকারী হবে না, শর্দি-কাশি সম্পন্ন হবে না, পায়খানা-পেশাব করবেনা, তাদের পেয়ালা হবে স্বর্ণের, চিরুনি হবে স্বর্ণ ও রৌপ্যের, তাদের আগরকাঠ হবে উন্নতমানের উদকাঠ, ঘাম হবে মিসক, তাদের প্রত্যেকের থাকবে দু’জন করে স্ত্রী, যাদের সৌন্দর্যের প্রমাণ এত স্পষ্ট যে, তাদের হাড়ের ভিতরের মজ্জা গোস্ত ভেদ করে দেখা যাবে। [বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ২৮৩৪]

তবে দুনিয়াতে যদি কারও একাধিক স্ত্রী থাকে। তারপর তারা সবাই জান্নাতে যায়। তবে তারা সবাই সে লোকের স্ত্রী হিসেবে থাকবে। এর প্রমাণ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে।

আর যদি কারও স্বামী জান্নাতী না হয় তখন তাকে আল্লাহ যার সাথে পছন্দ করেন তার সাথে জান্নাতে থাকতে দিবেন।

জান্নাতী এ সমস্ত নারীরা তাদের দুনিয়ার অবস্থা থেকে সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন হবে। তারা হবে সবদিক থেকে পবিত্ৰা। তারা হায়েয, নিফাস, থুথু, কাশি, পেশাব, পায়খানা এসব থেকে মুক্ত থাকবে। মহান আল্লাহ বলেন, “আর তাদের জন্য সেখানে থাকবে পবিত্ৰা স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে স্থায়ী হবে।” [সূরা আল-বাকারাহ ২৫] তাছাড়া তাদের সৌন্দর্যও হবে চিত্তাকর্ষক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যদি জান্নাতী কোনো মহিলা যমীনের অধিবাসীদের দিকে তাকাতো তবে আসমান ও যমীনের মাঝের অংশ আলোতে ভরপুর হয়ে যেত, সুগন্ধিতে ভরে দিত। এমনকি তার মাথাস্থিত উড়না দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তা থেকে উত্তম।” [বুখারী ২৬৪৩, ২৭৯৬]

দুই. সে সমস্ত নারী যাদেরকে আল্লাহ্ তা'আলা জান্নাতে সৃষ্টি করেছেন, তাদেরকে বলা হয় হুর। মহান আল্লাহ বলেন, “আর আমরা তাদেরকে বড় চোখবিশিষ্টা হূরদের সাথে বিয়ে দেব।” [সূরা আদ-দোখান ৫৪] কুরআন ও হাদীসে তাদের কিছু গুণ বৰ্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে:

তারা হবে অত্যন্ত শুভ্র। আর এজন্যই তাদের নাম হয়েছে, হুর। কেননা হুর শব্দ দ্বারা ঐ সমস্ত নারীদেরকে বোঝায় যাদের চোখের সাদা অংশ অত্যন্ত ফর্সা, কোনো প্রকার খাদ নেই। আর যাদের চোখের কালো অংশ একেবারে কালো। তারা হবে প্রশস্ত চোখ বিশিষ্টা। তাদের এ দু'টি গুণ আলোচ্য আয়াতেই বর্ণিত হয়েছে। [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ২২]

তারা হবে সমবয়স্কা উদভিন্ন যৌবনা ও সুভাষিনী। আল্লাহ বলেন, “মুক্তাকীদের জন্য তো আছে সাফল্য, উদ্যান, আঙ্গুর, সমবয়স্ক উদভিন্ন যৌবনা তরুণী।” [সূরা আন-নাবা ৩১-৩৩]
তারা হবে কুমারী আর তারা হবে স্বামী সোহাগিনী, মহান আল্লাহ্‌ বলেন, “তাদেরকে আমরা সৃষ্টি করেছি বিশেষরূপে-- তাদেরকে করেছি কুমারী, সোহাগিনী ও সমবয়স্কা।” [সূরা আল-ওয়াকি'আহ ৩৫-৩৭]

তাদের দেখতে মনে হবে যেন মনি-মুক্তা; আল্লাহ বলেন, “সুরক্ষিত মুক্তাসদৃশ।” [সূরা আল-ওয়াকি’আহ ২৩] তাদের দেখতে মনে হবে যেন, পরিস্কার ডিম। আল্লাহ্‌ বলেন, “মনে হয় যেন তারা সুরক্ষিত ডিম্ব।” [সূরা আস-সাফফাত ৪৯] তাদেরকে এর আগে কেউ স্পর্শ করেনি। আর তারাও আপন স্বামী ছাড়া অন্য কারো দিকে তাকায় না। মহান আল্লাহ বলেন, “সেসবের মাঝে রয়েছে বহু আনত নয়না, যাদেরকে আগে কোনো মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করেনি।” [সূরা আর-রাহমান ৫৬]

অন্যত্র বলা হয়েছে, “তাদের সংগে থাকবে আয়তনয়না, আয়তলোচনা হুরীগণ ৷” [সূরা আস-সাফফাত ৪৮] আরও বলা হয়েছে, “তারা হূর, তাঁবুতে সুরক্ষিতা।” [সূরা আর রাহমান ৭১] তারা দেখতে মূল্যবান পাথরের মত সুন্দর ও মসৃন হবে। আল্লাহ বলেন, “তারা যেন পদ্মরাগ ও প্রবাল।” [সূরা আর-রাহমান ৫৭] তাদের সৌন্দর্য এমন যে, তা বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সার্বিকভাবে ফুটে উঠবে। আল্লাহ বলেন, “সে উদ্যানসমূহের মাঝে রয়েছে সুশীলা, সুন্দরীগণ ৷” [সূরা আর-রাহমান ৭০]

জান্নাতে তারা গানও গাইবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “জান্নাতীদের স্ত্রীগণ (হুরগণও এতে শামিল) তারা এমন সুন্দর স্বরে গান ধরবে যা কোনোদিন কেউ শুনেনি। তারা যা বলবে, “আমরা অনিন্দ সুন্দরী, সুশীলা, সন্মানিত লোকের স্ত্রী, যারা আমাদের দিকে চক্ষু শীতল করার জন্য তাকায়” তারা আরও বলবে, “আমরা চিরস্থায়ী; সুতরাং আমরা কখনো মরবনা, আমরা নিরাপদ সুতরাং আমাদের ভয় নেই, আমরা স্থায়ী অধিবাসী; সুতরাং আমরা চলে যাব না।” [তাবরানী, মুজামুস সাগীর ২/৩৫, নং ৭৩৪, আল আওসাত ৫/১৪৯, নং ৪৯১৭, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ১০/৪১৯]

দুনিয়াতে কোনো জান্নাতী পুরুষকে কোনো নারী কষ্টদিলে জান্নাতের হুরীরা সে জন্য কষ্ট অনুভব করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা বলেন, কোনো মহিলা যখনই কোনো জান্নাতী পুরুষকে দুনিয়াতে কষ্ট দেয় তখনি তার জান্নাতী হুর স্ত্রী বলতে থাকে, “তোমার ধ্বংস হোক, তুমি তাকে কষ্ট দিও না, সে তো তোমার কাছে সাময়িক অবস্থান করছে, অচিরেই সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের নিকট চলে আসবে।” [তিরমিয়ী ১১৭৪, ইবন মাজাহ ২০১৪]

সহীহ হাদীসের কোথাও একজন মুমিনের জন্য কতজন হূর থাকবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। এটা আল্লাহর রহমত ও বান্দার আমলের উপর নির্ভরশীল। তবে শহীদের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে যে, তাদের জন্য নিজেদের স্ত্রী ছাড়াও সত্তরোর্থ হূর থাকবে। [দেখুন, তিরমিয়ী ১৬৬৩, মুসনাদে আহমাদ ৪/১৩১]
Arapça tefsirler:
جَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ
তাদের কাজের পুরস্কারস্বরূপ।
Arapça tefsirler:
لَا يَسۡمَعُونَ فِيهَا لَغۡوٗا وَلَا تَأۡثِيمًا
সেখানে তারা শুনবে না কোন অসার বা পাপবাক্য [১],
[১] এটি জান্নাতের বড় বড় নিয়ামতের একটি। এসব নিয়ামত সম্পর্কে কুরআন মজীদের কয়েকটি স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে যে, মানুষের কান সেখানে কোনো অনর্থক ও বাজে কথা, মিথ্যা, গীবত, চৌগলিখুরী, অপবাদ, গালি, অহংকার ও বাজে গালগল্প বিদ্রুপ ও উপহাস, তিরস্কার ও বদনামমূলক কথাবার্তা শোনা থেকে রক্ষা পাবে। [যেমন, সূরা আল-গাশিয়াহ ১১, সূরা মারইয়াম ৬২]
Arapça tefsirler:
إِلَّا قِيلٗا سَلَٰمٗا سَلَٰمٗا
‘সালাম’ আর ‘সালাম’ বাণী ছাড়া।
Arapça tefsirler:
وَأَصۡحَٰبُ ٱلۡيَمِينِ مَآ أَصۡحَٰبُ ٱلۡيَمِينِ
আর ডান দিকের দল, কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল!
Arapça tefsirler:
فِي سِدۡرٖ مَّخۡضُودٖ
তারা থাকবে এমন উদ্যানে, যাতে আছে [১] কাঁটাহীন কুলগাছ [২]
[১] অর্থাৎ জান্নাতে প্রবেশের পরে তাদের কী কী নেয়ামত থাকবে তাই এখানে বর্ণিত হয়েছে। [তাবারী]

[২] জন্নাতের নেয়ামতসমূহ অসংখ্য, অদ্বিতীয় ও কল্পনাতীত। তন্মধ্যে কুরআন পাক মানুষের বোধগম্য ও পছন্দসই বস্তুসমূহ উল্লেখ করেছে। হাদীসে এসেছে, এক বেদুঈন এসে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ তা'আলা কুরআনে একটি কষ্টদায়ক গাছের কথা উল্লেখ করেছেন। আমি মনে করিনি যে, জান্নাতে কষ্ট দায়ক কিছু থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সেটা কী? বেদুঈন বলল: বরই। কেননা তাতে কাঁটা রয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “সেটা হবে কাঁটাহীন বরই গাছ। প্রতিটি কাঁটার জায়গায় একটি করে ফল থাকবে। এটা শুধু ফলই উৎপাদন করবে। ফলের সাথে বাহাত্তরটি বাহারী রং থাকবে যার এক রং অন্য রংয়ের সাথে সাদৃশ্য রাখবে না।” [মুস্তাদরাকে হাকিম ২/৪৭৬]
Arapça tefsirler:
وَطَلۡحٖ مَّنضُودٖ
এবং কাঁদি ভরা কলা গাছ
Arapça tefsirler:
وَظِلّٖ مَّمۡدُودٖ
আর সম্প্রসারিত ছায়া [১],
[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতে এমন গাছ থাকবে যার ছায়ায় ভ্ৰমণকারী একশত বছর ভ্রমণ করেও শেষ করতে পারবে না।” [বুখারী ৪৮৮১, মুসলিম ২১৭৫]
Arapça tefsirler:
وَمَآءٖ مَّسۡكُوبٖ
আর সদা প্রবাহমান পানি
Arapça tefsirler:
وَفَٰكِهَةٖ كَثِيرَةٖ
ও প্রচুর ফলমূল,
Arapça tefsirler:
لَّا مَقۡطُوعَةٖ وَلَا مَمۡنُوعَةٖ
যা শেষ হবে না ও যা নিষিদ্ধও হবেনা [১]।
[১] দুনিয়ার সাধারণ ফলের অবস্থা এই যে, মওসুম শেষ হয়ে গেলে ফলও শেষ হয়ে যায়। কোনো ফল গ্ৰীষ্মকালে হয় এবং মওসুম শেষ হয়ে গেলে নিঃশেষ হয়ে যায়। আবার কোনো ফল শীতকালে হয় এবং শীতকাল শেষ হয়ে গেলে ফলের নাম-নিশানাও অবশিষ্ট থাকে না। কিন্তু জান্নাতের প্রত্যেক ফল চিরস্থায়ী হবে- কোনো মওসুমের মধ্যে সীমিত থাকবে না। এমনিভাবে দুনিয়াতে বাগানের পাহারাদাররা ফল ছিড়তে নিষেধ করে কিন্তু জান্নাতের ফল ছিড়তে কোনো বাধা থাকবে না। [ইবন কাসীর; বাগভী; কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
وَفُرُشٖ مَّرۡفُوعَةٍ
আর সমুচ্চ শয্যাসমূহ [১];
[১] فُرُشٖ শব্দটি فراش এর বহুবচন। অর্থ বিছানা, ফরাস। উচ্চস্থানে বিছানো থাকবে বিধায় জান্নাতের শয্যা সমুন্নত হবে। দ্বিতীয়ত, এই বিছানা মাটিতে নয়, পালঙ্কের উপর থাকবে। তৃতীয়ত, স্বয়ং বিছানাও খুব পুরু হবে। কারও কারও মতে এখানে বিছানা বলে শয্যাশায়িনী নারী বোঝানো হয়েছে। কেননা নারীকেও বিছানা বলে ব্যক্ত করা হয়। এই অর্থ অনুযায়ী مرفوعة এর অর্থ হবে উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন ও সম্রান্ত। [ইবন কাসীর; কুরতুবী; বাগভী]
Arapça tefsirler:
إِنَّآ أَنشَأۡنَٰهُنَّ إِنشَآءٗ
নিশ্চয় আমরা তাদেরকে সৃষ্টি করেছি বিশেষরূপে [১]---
[১] أنشأ শব্দের অর্থ সৃষ্টি করা। هُنَّ সর্বনাম দ্বারা জান্নাতের নারীদেরকে বোঝানো হয়েছে। পূর্বোক্ত আয়াতে فرش এর অর্থ জান্নাতে নারী হলে তার স্থলেই এই সর্বনাম ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়া শয্যা, বিছানা ইত্যাদি ভোগবিলাসের বস্তু উল্লেখ করায় নারীও তার অন্তর্ভুক্ত আছে বলা যায়। আয়াতের অর্থ এই যে, আমি জান্নাতের নারীদেরকে এক বিশেষ প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি করেছি। [কুরতুবী] জান্নাতী হুরদের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রক্রিয়া এই যে, তাদেরকে জান্নাতেই প্রজননক্রিয়া ব্যতিরেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। দুনিয়ার যেসব নারী জান্নাতে যাবে, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষভঙ্গি এই যে, যারা দুনিয়াতে কুশ্ৰী, কৃষ্ণাঙ্গী অথবা বৃদ্ধা ছিল; জান্নাতে তাদেরকে সুশ্ৰী দূরবতী ও লাবণ্যময়ী করে দেয়া হবে। আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গৃহে আগমন করলেন। তখন এক বৃদ্ধা আমার কাছে বসা ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ কে? আমি আরয করলাম: সে সম্পর্কে আমার খালা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রসাচ্ছলে বললেন: “জান্নাতে কোনো বৃদ্ধা প্রবেশ করবে না।” একথা শুনে বৃদ্ধা বিষন্ন হয়ে গেল। কোনো কোনো বর্ণনায় আছে কাঁদতে লাগল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে সাস্তুনা দিলেন এবং স্বীয় উক্তির অর্থ এই বর্ণনা করলেন যে, বৃদ্ধারা যখন জান্নাতে যাবে, তখন বৃদ্ধা থাকবে না; বরং যুবতী হয়ে প্ৰবেশ করবে। অতঃপর তিনি উপরোক্ত আয়াত পাঠ করে শোনালেন। [শামায়েলে তিরমিয়ী ২৪০]
Arapça tefsirler:
فَجَعَلۡنَٰهُنَّ أَبۡكَارًا
অতঃপর তাদেরকে করেছি কুমারী [১],
[১] أبكار. শব্দটি بكر এর বহুবচন। অর্থ কুমারী বালিকা। [আইসারুত তাফাসীর] উদ্দেশ্য এই যে, জান্নাতের নারীদেরকে কুমারী করে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদেরকে কেউ কখনো স্পর্শ করেনি অথবা তাদেরকে এমনভাবে সৃষ্টি করা হবে যে, প্রত্যেক সঙ্গম-সহবাসের পর তারা আবার কুমারী হয়ে যাবে। [কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
عُرُبًا أَتۡرَابٗا
সোহাগিনী [১] ও সমবয়স্কা [২],
[১] عرب শব্দটি عروبة এর বহুবচন। অর্থ স্বামী সোহাগিনী ও প্রেমিকা নারী। আরবী ভাষায় এ শব্দটি মেয়েদের সর্বোত্তম মেয়েসুলভ গুণাবলী বুঝাতে বলা হয়। এ শব্দ দ্বারা এমন মেয়েদের বুঝানো হয় যারা কমনীয় স্বভাব ও বিনীত আচরণের অধিকারিনী, সদালাপী, নারীসুলভ আবেগ অনুভূতি সমৃদ্ধা, মনে প্ৰাণে স্বামীগত প্ৰাণ এবং স্বামীও যার প্রতি অনুরাগী। [কুরতুবী; ইবন কাসীর]

[২] أتراب শব্দটি ترب এর বহুবচন। অর্থ সমবয়স্ক। এর দুটি অর্থ হতে পারে। একটি অর্থ হচ্ছে তারা তাদের স্বামীদের সমবয়সী হবে। অন্য অর্থটি হচ্ছে, তারা পরস্পর সমবয়স্কা হবে। অর্থাৎ জান্নাতের সমস্ত মেয়েদের একই বয়স হবে এবং চিরদিন সেই বয়সেরই থাকবে। যুগপৎ এ দু'টি অর্থই সঠিক হওয়া অসম্ভব নয়। অর্থাৎ এসব জান্নাতী নারী পরস্পরও সমবয়সী হবে এবং তাদের স্বামীদেরকেও তাদের সমবয়সী বানিয়ে দেয়া হবে। [ইবন কাসীর] “জান্নাতবাসীরা জান্নাতে প্ৰবেশ করলে তাদের শরীরে কোনো পশম থাকবে না, দাড়ি থাকবে না। ফর্সা শ্বেত বর্ণ হবে। কুঞ্চিত কেশ হবে। কাজল কাল চোখ হবে এবং সবার বয়স ৩৩ বছর হবে।” [তিরমিয়ী ২৫৪৫, মুসনাদে আহমাদ ২/২৯৫]
Arapça tefsirler:
لِّأَصۡحَٰبِ ٱلۡيَمِينِ
ডানদিকের লোকদের জন্য।
Arapça tefsirler:
ثُلَّةٞ مِّنَ ٱلۡأَوَّلِينَ
তাদের অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে
Arapça tefsirler:
وَثُلَّةٞ مِّنَ ٱلۡأٓخِرِينَ
এবং অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য থেকে [১]।
[১] আয়াতের এক অর্থ পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, أوَّلِيْنَ বলে এই উম্মতেরই প্রাথমিক লোকদের বোঝানো হয়েছে। আর آخِرِيْنَ বলে এ উম্মতেরই পরবর্তী লোকদের বোঝানো হয়েছে। এমতাবস্থায় আয়াতের অর্থ স্পষ্ট। অর্থাৎ এ উম্মতের আসহাবুল ইয়ামীন উম্মতের প্রাথমিক লোকদের থেকে একটি বড় দল হবে। আর শেষের লোকদের থেকেও একটি বড় দল হবে। আর যদি আয়াতে أوَّلِيْنَ বলে আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সময়ের লোকদের বোঝানো হয় এবং آخِرِيْنَ বলে এ উম্মতে মুহাম্মদীকেই বোঝানো হয়ে থাকে তবে আয়াতের সারমর্ম এই হবে যে, ‘আসহাবুল-ইয়ামীন’ তথা মুমিন-মুত্তাকীগণ পূর্ববতী সমগ্র উম্মতের মধ্য থেকে একটি বড় দল হবে এবং একা উম্মতে মুহাম্মদীর মধ্য থেকে একটি বড় দল হবে। [দেখুন, কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
وَأَصۡحَٰبُ ٱلشِّمَالِ مَآ أَصۡحَٰبُ ٱلشِّمَالِ
আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বামদিকের দল !
Arapça tefsirler:
فِي سَمُومٖ وَحَمِيمٖ
তারা থাকবে অত্যন্ত উষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে
Arapça tefsirler:
وَظِلّٖ مِّن يَحۡمُومٖ
আর কালোবর্ণের ধূঁয়ার ছায়ায়,
Arapça tefsirler:
لَّا بَارِدٖ وَلَا كَرِيمٍ
যা শীতল নয়, আরামদায়কও নয়।
Arapça tefsirler:
إِنَّهُمۡ كَانُواْ قَبۡلَ ذَٰلِكَ مُتۡرَفِينَ
ইতোপূর্বে তারা তো মগ্ন ছিল ভোগ-বিলাসে
Arapça tefsirler:
وَكَانُواْ يُصِرُّونَ عَلَى ٱلۡحِنثِ ٱلۡعَظِيمِ
আর তারা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপকাজে।
Arapça tefsirler:
وَكَانُواْ يَقُولُونَ أَئِذَا مِتۡنَا وَكُنَّا تُرَابٗا وَعِظَٰمًا أَءِنَّا لَمَبۡعُوثُونَ
আর তারা বলত, ‘মরে অস্থি ও মাটিতে পরিণত হলেও কি আমাদেরকে উঠানো হবে?
Arapça tefsirler:
أَوَءَابَآؤُنَا ٱلۡأَوَّلُونَ
এবং আমাদের পিতৃপুরুষরাও?’
Arapça tefsirler:
قُلۡ إِنَّ ٱلۡأَوَّلِينَ وَٱلۡأٓخِرِينَ
বলুন, ‘অবশ্যই পূর্ববর্তীরা ও পরবর্তীরা---
Arapça tefsirler:
لَمَجۡمُوعُونَ إِلَىٰ مِيقَٰتِ يَوۡمٖ مَّعۡلُومٖ
সবাইকে একত্র করা হবে এক নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে।
Arapça tefsirler:
ثُمَّ إِنَّكُمۡ أَيُّهَا ٱلضَّآلُّونَ ٱلۡمُكَذِّبُونَ
তারপর হে বিভ্রান্ত মিথ্যারোপকারীরা !
Arapça tefsirler:
لَأٓكِلُونَ مِن شَجَرٖ مِّن زَقُّومٖ
তারা অবশ্যই আহার করবে যাক্কূম গাছ থেকে,
Arapça tefsirler:
فَمَالِـُٔونَ مِنۡهَا ٱلۡبُطُونَ
অতঃপর সেটা দ্বারা তারা পেট পূর্ণ করবে,
Arapça tefsirler:
فَشَٰرِبُونَ عَلَيۡهِ مِنَ ٱلۡحَمِيمِ
তদুপরি তারা পান করবে তার উপর অতি উষ্ণ পানি---
Arapça tefsirler:
فَشَٰرِبُونَ شُرۡبَ ٱلۡهِيمِ
অতঃপর পান করবে তৃষ্ণার্ত উটের ন্যায়।
Arapça tefsirler:
هَٰذَا نُزُلُهُمۡ يَوۡمَ ٱلدِّينِ
প্রতিদান দিবসে এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন।
Arapça tefsirler:
نَحۡنُ خَلَقۡنَٰكُمۡ فَلَوۡلَا تُصَدِّقُونَ
আমরাই [১] তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তবে কেন তোমরা বিশ্বাস করছ না?
[১] আলোচ্য আয়াতসমূহে এমন পথভ্রষ্ট মানুষকে হুঁশিয়ার করা হচ্ছে, যারা মূলত কেয়ামত সংঘটিত হওয়ায় এবং পুনরুজ্জীবনেই বিশ্বাসী নয়। [ইবন কাসীর; কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
أَفَرَءَيۡتُم مَّا تُمۡنُونَ
তোমরা কি ভেবে দেখেছ তোমাদের বীর্যপাত সম্বন্ধে?
Arapça tefsirler:
ءَأَنتُمۡ تَخۡلُقُونَهُۥٓ أَمۡ نَحۡنُ ٱلۡخَٰلِقُونَ
সেটা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমরা সৃষ্টি করি [১]?
[১] ছোট্র এ বাক্যে মানুষের সামনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। মানুষের জন্ম পদ্ধতি তো এছাড়া আর কিছুই নয় যে, পুরুষ তার শুক্র নারীর গর্ভাশয়ে পৌঁছে দেয় মাত্র। কিন্তু ঐ শুক্রের মধ্যে কি সন্তান সৃষ্টি করার এবং নিশ্চিত রূপে মানুষের সন্তান সৃষ্টি করার যোগ্যতা আপনা থেকেই সৃষ্টি হয়েছে অথবা মানুষ নিজে সৃষ্টি করেছে, না আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন? এ যুক্তির সঙ্গত জওয়াব একটিই। তা হচ্ছে, মানুষ পুরোপুরি আল্লাহর সৃষ্টি। [তাবারী, আদওয়াউল-বায়ান]
Arapça tefsirler:
نَحۡنُ قَدَّرۡنَا بَيۡنَكُمُ ٱلۡمَوۡتَ وَمَا نَحۡنُ بِمَسۡبُوقِينَ
আমরা তোমাদের মধ্যে মৃত্যু নির্ধারিত করেছি [১] এবং আমাদেরকে অক্ষম করা যাবে না...
[১] অর্থাৎ তোমাদেরকে সৃষ্টি করা যেমন আমার ইখতিয়ারে, তেমনি তোমাদের মৃত্যুও আমার ইখতিয়ারে। [কুরতুবী] কে মাতৃগর্ভে মারা যাবে, কে ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র মারা যাবে এবং কে কোন বয়সে উপনীত হয়ে মারা যাবে সে সিদ্ধান্ত আমিই নিয়ে থাকি। [ফাতহুল কাদীর]
Arapça tefsirler:
عَلَىٰٓ أَن نُّبَدِّلَ أَمۡثَٰلَكُمۡ وَنُنشِئَكُمۡ فِي مَا لَا تَعۡلَمُونَ
তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না [১]।
[১] অর্থাৎ কেউ আমার ইচ্ছাকে ডিঙ্গিয়ে যেতে পারে না। আমি এই মুহুর্তেও যা চাই, তাই করতে পারি। তোমাদের স্থলে তোমাদেরই মত অন্য কোনো জাতি নিয়ে আসতে পারি। [কুরতুবী] এমনকি তোমাদের এমন আকৃতি করে দিতে পারি, যা তোমরা জান না। [মুয়াসসার]
Arapça tefsirler:
وَلَقَدۡ عَلِمۡتُمُ ٱلنَّشۡأَةَ ٱلۡأُولَىٰ فَلَوۡلَا تَذَكَّرُونَ
আর অবশ্যই তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা উপদেশ গ্ৰহণ করা না কেন [১]?
[১] অর্থাৎ কিভাবে তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছিল তা তোমরা অবশ্যই জান। যে শুক্র দ্বারা তোমাদের অস্তিত্বের সূচনা হয়েছে তা পিতার মেরুদণ্ড থেকে কিভাবে স্থানান্তরিত হয়েছিল, মায়ের গর্ভাশয় যা কবরের অন্ধকার থেকে কোনো অংশে কম অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল না তার মধ্যে কিভাবে পর্যায়ক্রমে তোমাদের বিকাশ ঘটিয়ে জীবিত মানুষে রূপান্তরিত করা হয়েছে। [কুরতুবী] কিভাবে একটি অতি ক্ষুদ্র পরমাণু সদৃশ কোষের প্রবৃদ্ধি ও বিকাশ সাধন করে এই মন-মগজ, এই চোখ, কান ও এই হাত পা সৃষ্টি করা হয়েছে এবং বুদ্ধি ও অনুভূতি, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা, শিল্প জ্ঞান ও উদ্ভাবনী শক্তি, ব্যবস্থাপনা ও অধীনস্ত করে নেয়ার মত বিস্ময়কর যোগ্যতাসমূহ দান করা হয়েছে? [দেখুন, ইবন কাসীর] এটা কি মৃতদের জীবিত করে উঠানোর চেয়ে কম অলৌকিক ও কম বিস্ময়কর? অতএব, তা থেকে এ শিক্ষা কেন গ্ৰহণ করছোনা যে, আল্লাহর যে অসীম শক্তিতে দিন- রাতে এসব আশ্চর্য বিষয়াদি সংঘটিত হচ্ছে তার ক্ষমতায়ই মৃত্যুর পরের জীবন, হাশর -নাশর এবং জান্নাত ও জাহান্নামের মত বিষয়াদি সংঘটিত হতে পারে? [দেখুন, মুয়াসসার]
Arapça tefsirler:
أَفَرَءَيۡتُم مَّا تَحۡرُثُونَ
তোমরা যে বীজ বপন কর সে সম্পর্কে চিন্তা করেছ কি [১]?
[১] মানব সৃষ্টির গূঢ়তত্ত্ব উদঘাটিত করার পর এখন এই খাদ্যের স্বরূপ সম্পর্কে প্রশ্ন রাখা হয়েছে: তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছি কি? এই বীজ থেকে অংকুর বের করার ব্যাপারে তোমাদের কাজের কতটুকু দখল আছে? চিন্তা করলে এছাড়া জওয়াব নেই, কৃষক ক্ষেতে লাঙ্গল চালিয়ে সার দিয়ে মাটি নরম করেছে মাত্র, যাতে দুর্বল অংকুর মাটি ভেদ করে সহজেই গজিয়ে উঠতে পারে। বীজ বপনকারী কৃষকের সমগ্র প্রচেষ্টা এই এক বিন্দুতেই সীমাবদ্ধ। চারা গজিয়ে উঠার পর সে তার হেফাযতে লেগে যায়। কিন্তু একটি বীজের মধ্য থেকে চারা বের করে আনার সাধ্য তার নেই। সে চারাটি তৈরি করেছে বলে দাবিও করতে পারে না। কাজেই প্রশ্ন দেখা দেয় যে, সুবিশাল মটির স্তুপে পতিত বীজের মধ্য থেকে এই সুন্দর ও মহোপকারী বৃক্ষ কে তৈরি করল? জওয়াব এটাই যে, সেই পরম প্ৰভু, অপার শক্তিধর আল্লাহ তা'আলার অত্যাশ্চর্য কারিগরিই এর প্রস্তুতকারক। [দেখুন, আদওয়াউল-বায়ান]
Arapça tefsirler:
ءَأَنتُمۡ تَزۡرَعُونَهُۥٓ أَمۡ نَحۡنُ ٱلزَّٰرِعُونَ
তোমরা কি সেটাকে অংকুরিত কর, না আমরা অংকুরিত করি?
Arapça tefsirler:
لَوۡ نَشَآءُ لَجَعَلۡنَٰهُ حُطَٰمٗا فَظَلۡتُمۡ تَفَكَّهُونَ
আমরা ইচ্ছে করলে এটাকে খড়-কুটোয় পরিণত করতে পারি, তখন হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে তোমরা;
Arapça tefsirler:
إِنَّا لَمُغۡرَمُونَ
(এই বলে) ‘নিশ্চয় আমরা দায়গ্ৰস্ত হয়ে পড়েছি,’
Arapça tefsirler:
بَلۡ نَحۡنُ مَحۡرُومُونَ
বরং ‘আমরা হৃত-সর্বস্ব হয়ে পড়েছি।’
Arapça tefsirler:
أَفَرَءَيۡتُمُ ٱلۡمَآءَ ٱلَّذِي تَشۡرَبُونَ
তোমরা যে পানি পান কর তা সম্পর্কে আমাকে জানাও [১]
[১] অর্থাৎ শুধু তোমাদের ক্ষুধা নিবারণের ব্যবস্থাই নয়, তোমাদের পিপাসা মেটানোর ব্যবস্থাও আমিই করেছি। তোমাদের জীবন ধারণের জন্য যে পানি খাদ্যের চেয়েও অধিক প্রয়োজনীয় তার ব্যবস্থা তোমরা নিজেরা করনি, আমিই তা সরবরাহ করে থাকি। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] আমি তোমাদেরকে শুধু অস্তিত্ব দান করেই বসে থাকিনি, তোমাদের প্রতিপালনের এত সব ব্যবস্থাও আমি করছি, যা না থাকলে তোমরা বেঁচেই থাকতে পারতে না। [আদওয়াউল-বায়ান]
Arapça tefsirler:
ءَأَنتُمۡ أَنزَلۡتُمُوهُ مِنَ ٱلۡمُزۡنِ أَمۡ نَحۡنُ ٱلۡمُنزِلُونَ
তোমরা কি সেটা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমরা সেটা বর্ষণ করি?
Arapça tefsirler:
لَوۡ نَشَآءُ جَعَلۡنَٰهُ أُجَاجٗا فَلَوۡلَا تَشۡكُرُونَ
আমরা ইচ্ছে করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?
Arapça tefsirler:
أَفَرَءَيۡتُمُ ٱلنَّارَ ٱلَّتِي تُورُونَ
তোমরা যে আগুন প্ৰজ্বলিত করা সে ব্যাপারে আমাকে বল---
Arapça tefsirler:
ءَأَنتُمۡ أَنشَأۡتُمۡ شَجَرَتَهَآ أَمۡ نَحۡنُ ٱلۡمُنشِـُٔونَ
তোমরাই কি এর গাছ সৃষ্টি কর, না আমরা সৃষ্টি করি?
Arapça tefsirler:
نَحۡنُ جَعَلۡنَٰهَا تَذۡكِرَةٗ وَمَتَٰعٗا لِّلۡمُقۡوِينَ
আমরা এটাকে করেছি স্মারক [১] এবং মরুচারীদের প্রয়োজনীয় বস্তু [২]।
[১] মুজাহিদ বলেন, এর অর্থ, আমরা এ আগুনকে স্মরণিকা করেছি, এ আগুন আখেরাতের আগুনকে স্বরণ করিয়ে দিবে। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের এ আগুন যা তোমরা জ্বালিয়ে থাক তা জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ। সাগর দিয়ে দু’বার এটাকে ঠাণ্ডা করা হয়েছে যদি তা না হতো। তবে তা থেকে কেউ উপকৃত হতে পারত না। [মুসনাদে আহমাদ ২/২৪৪, সহীহ ইবন হিব্বান ৭৪৬৩, মুসনাদে হুমাইদী ১১২৯, অনুরূপ বর্ণনা বুখারী ৩২৬৫, মুসলিম ২৮৪৩]

[২] উপসংহারে সবগুলোর সার-সংক্ষেপ এরূপ বৰ্ণিত হয়েছে যে, “আমরা এটাকে করেছি স্মারক এবং পথচারীদের জন্য উপভোগ্য।” আয়াতে مُقْوِيْنَ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ভাষাভিজ্ঞ পণ্ডিতগণ এর বিভিন্ন অর্থ বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন মরুভূমিতে উপনীত মুসাফির বা পথচারী। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন ক্ষুধার্ত মানুষ। কারো কারো মতে এর অর্থ হচ্ছে, সেসব মানুষ যারা প্রান্তরে অবস্থান করে খাবার পাকানো, আলো পাওয়া কিংবা তা গ্ৰহণ করার কাজে আগুন ব্যবহার করে। সে সমস্ত মুসাফিরদেরকে বোঝানো হয়েছে। কারণ, এ সমস্ত মরুচারী ও মুসাফিররা খাবারের জন্য যেমন আগুনের প্রয়োজন বোধ করে তেমনি নিজের শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখার জন্যও আগুনের প্রতি বেশী মুখাপেক্ষী। আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, এসব সৃষ্টি আমার শক্তি-সামর্থ্যের ফসল। সুতরাং তোমরা ভেবে দেখা কার গুণ-গান করবে। [কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
فَسَبِّحۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلۡعَظِيمِ
কাজেই আপনি আপনার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন [১]।
[১] পূর্ববর্তী যে সমস্ত নেয়ামতের কথা উল্লেখ হলো এবং এটা স্পষ্ট হলো যে, এগুলো একমাত্র মহান আল্লাহই সম্পন্ন করে থাকেন। এর অবশ্যম্ভাবী ও যুক্তিভিত্তিক পরিণতি এই যে, মানুষ আল্লাহ তা'আলার অপার শক্তি ও তৌহীদে বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং মহান পালনকর্তার নামের পবিত্ৰতা ঘোষণা করবে। সুতরাং হে নবী! আপনি সে পবিত্র নাম নিয়ে ঘোষণা করে দিন যে, কাফের ও মুশরিকরা যেসব দোষত্রুটি, অপূর্ণতা ও দুর্বলতা তাঁর ওপর আরোপ করে তা থেকে পবিত্র এবং কুফার ও শির্কমূলক সমস্ত আকীদা ও আখেরাত অস্বীকারকারীদের প্রতিটি যুক্তি তর্কে যা প্রচ্ছন্ন আছে তা থেকেও মহান আল্লাহ সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। [দেখুন, কুরতুবী; ইবন কাসীর]
Arapça tefsirler:
۞ فَلَآ أُقۡسِمُ بِمَوَٰقِعِ ٱلنُّجُومِ
অতঃপর [১] আমি শপথ করছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের [২],
[১] বাক্যের শুরুতে এখানে একটি لا ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ, ‘না’। কোনো কোনো মুফাসসির এটাকে অতিরিক্ত বলেছেন। কিন্তু এ মতটি সঠিক নয়। পবিত্ৰ কুরআনে অতিরিক্ত কিছু নেই। বরং এটি আরবদের একটি সাধারণ বাকপদ্ধতি। যেমন বলা হয় لاواللّٰه এরূপ বাকপদ্ধতি আরবদের নিকট সুবিদিত। এরূপ স্থলে لا সম্বোধিত ব্যক্তির ধারণা খণ্ডনের জন্যে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ তোমরা যা মনে করে বসে আছো ব্যাপার তা নয়। কুরআন যে আল্লাহর পক্ষ থেকে সে বিষয়ে কসম খাওয়ার আগে এখানে لا শব্দের ব্যবহার করায় আপনা থেকেই একথা প্ৰকাশ পায় যে, এই পবিত্ৰ গ্ৰন্থ সম্পর্কে মানুষ মনগড়া কিছু কথাবার্তা বলছিলো। সেসব কথার প্রতিবাদ করার জন্যই এ কসম খাওয়া হচ্ছে। [ফাতহুল কাদীর; কুরতুবী]

[২] مواقع শব্দটি موقع এর বহুবচন। এর এক অর্থ তারকারাজি ও গ্রহসমূহের ‘অবস্থানস্থল', তাদের মনযিল ও তাদের কক্ষপথসমূহ। অন্য অর্থ নক্ষত্রের অস্তাচল অথবা অস্তের সময় বা চোখের আড়ালে চলে যাওয়া। [ফাতহুল কাদীর] এ আয়াতে নক্ষত্রের অস্ত যাওয়ার সময়ের শপথ করা হয়েছে; যেমন সূরা নজমেও وَالنَّجْمِ إِذَاهَوٰى বলে তাই করা হয়েছে।
Arapça tefsirler:
وَإِنَّهُۥ لَقَسَمٞ لَّوۡ تَعۡلَمُونَ عَظِيمٌ
আর নিশ্চয় এটা এক মহাশপথ, যদি তোমরা জানতে---
Arapça tefsirler:
إِنَّهُۥ لَقُرۡءَانٞ كَرِيمٞ
নিশ্চয় এটা মহিমান্বিত কুরআন [১],
[১] কুরআনের মহা সম্মানিত গ্ৰন্থ হওয়া সম্পর্কে ঐগুলোর শপথ করার অর্থ হচ্ছে ঊর্ধ্ব জগতে সৌরজগতের ব্যবস্থাপনা যত সুসংবদ্ধ ও মজবুত এই বাণীও ততটাই সুসংবদ্ধ ও মজবুত। [দেখুন, কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
فِي كِتَٰبٖ مَّكۡنُونٖ
যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে [১]।
[১] অর্থাৎ সুরক্ষিত বা গোপন কিতাব। একথা বলে এখানে লাওহে-মাহফুয বোঝানো হয়েছে। এর অর্থ এমন লিখিত বস্তু যা গোপন করে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ যা কারো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। [কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
لَّا يَمَسُّهُۥٓ إِلَّا ٱلۡمُطَهَّرُونَ
যারা সম্পূর্ণ পবিত্র তারা ছাড়া অন্য কেউ তা সম্পর্শ করে না [১]।
[১] ব্যাকরণিক দিক দিয়ে এই বাক্যের দ্বিবিধ অর্থ হতে পারে। প্রথম এই যে, এটা কিতাব অর্থাৎ “লওহে-মাহফুযের’ই দ্বিতীয় বিশেষণ এবং لايَمَسُّه এর সর্বনাম দ্বারা লওহে-মাহফুযই বোঝানো হয়েছে। আয়াতের অর্থ এই যে, সংরক্ষিত বা গোপন কিতাব অর্থাৎ লওহে-মাহফুযাকে সম্পূর্ণ পাক-পবিত্র লোকগণ ব্যতীত কেউ স্পর্শ করতে পারে না। এমতাবস্থায় مطهرون অর্থাৎ পাক-পবিত্ৰ লোকগণ-এর অর্থ ফেরেশতাগণই হতে পারে, যারা ‘লওহে-মাহফুয’ পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম। ফেরেশতাদের জন্য পবিত্র কথাটি ব্যবহার করার তাৎপর্য হলো মহান আল্লাহ তাদেরকে সব রকমের অপবিত্ৰ আবেগ অনুভূতি এবং ইচ্ছা আকাংখা থেকে পবিত্র রেখেছেন। [কুরতুবী] আয়াতের এ তাফসীরটি সবচেয়ে বেশী গ্রহণযোগ্য; কারণ এর সমর্থনে আমরা অন্যত্র আয়াত দেখতে পাই, যেখানে বলা হয়েছে, “এটা আছে মর্যাদা সম্পন্ন লিপিসমূহে, যা উন্নত, পবিত্ৰ, মহান, পবিত্র লেখকদের হাতে।” [সুরা আবাসা ১৩-১৬]

এ আয়াতে ‘পবিত্র' বলে ফেরেশতাদের বোঝানো হয়েছে বলে সবাই একমত। উপরোক্ত তাফসীর অনুযায়ী কাফেররা কুরআনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আরোপ করতো এটা তার জবাব হিসেবে বিবেচিত হবে। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে গণক আখ্যায়িত করে বলতো, জিন ও শয়তানরা তাকে এসব কথা শিখিয়ে দেয়। কুরআন মজীদের কয়েকটি স্থানে এর জবাব দেয়া হয়েছে। যেমন এক স্থানে বলা হয়েছে, “শয়তানরা এ বাণী নিয়ে আসেনি। এটা তাদের জন্য সাজেও না। আর তারা এটা করতেও পারে না। এ বাণী শোনার সুযোগ থেকেও তাদেরকে দূরে রাখা হয়েছে।” [সূরা আশ-শু'আরা ২১০-২১২] এ বিষয়টিই এখানে এ ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে যে, “পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ তা স্পর্শ করতে পারে না।”

দ্বিতীয় সম্ভাব্য অর্থ এই যে, لَّايَمَسُّهٗٓ اِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ এ বাক্যটি اِنَّهٗ لَقُرْاٰنٌ كَرِيْمٌ বাক্যের বিশেষণ। এমতাবস্থায় لايَمَسُّه এর সর্বনাম দ্বারা কুরআন বোঝানো হবে। [কুরতুবী] আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, এটাকে এমন লোক, যারা ‘হাদসে-আসগর’ ও ‘হাদসে আকবর’ থেকে পবিত্র তারা ব্যতীত কেউ যেন স্পর্শ না করে। (বে-ওযু অবস্থাকে 'হদসে-আসগর’ বলা হয়। ওযু করলে এই অবস্থা দূর হয়ে যায়। পক্ষান্তরে বীর্যস্থলনের কিংবা স্ত্রীসহবাসের পরবর্তী অবস্থা এবং হায়েয এবং নেফাসের অবস্থাকে ‘হদসে-আকবর’ বলা হয়) কিন্তু আয়াত থেকে এর সপক্ষে দলীল নেয়া খুব শক্তিশালী মত নয়। কিন্তু বিভিন্ন হাদীস থেকে এ মতের পক্ষে দলীল পাওয়া যায়। যেমন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআন সাথে নিয়ে কাফের দেশে সফর করতে নিষেধ করেছেন; যাতে তা কাফেরদের হাতে না পড়ে।” [বুখারী ২৯৯০, মুসলিম ১৮৬৯]

অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমর ইবন হাযমের কাছে লিখে পাঠিয়েছিলেন যে, "কুরআনকে যেন পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ স্পর্শ না করে।” [মুয়াত্তা মালেক ১/২৯৯, মুহাদ্দিসগণ আবু বকর ইবন হাযমের কাছে লিখা চিঠিটি বিশুদ্ধ বলে মত প্রকাশ করেছেন। দেখুন, আলবানী ইরাওয়াউল গালীল ১২২] তাছাড়া এ ব্যাপারে আলেমগণ একমত যে, ‘হদসে আকবর’ অবস্থায় কোনোভাবেই কুরআন স্পর্শ করা যাবে না। তবে ‘হদসে আসগর’ অবস্থায় কোনো কোনো আলেমের মতে স্পর্শ করা জায়েয আছে। তারা এ আয়াতে বর্ণিত مُطَهَّرُوْنَ দ্বারা ফেরেশতা উদ্দেশ্য নিয়েছেন। আর উপরোক্ত প্রথম হাদীসের নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বলেছেন যে, কাফেরদের হাতে পড়লে কুরআনের অবমাননার সম্ভাবনা থাকায় নিষেধ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় হাদীসটি তাদের নিকট বিশুদ্ধ বলে প্রমাণিত হয়নি। তাছাড়া কোনো কোনো আলেম এ আয়াত থেকে তৃতীয় আরেকটি অর্থ নিয়েছেন। তাদের মতে এখানে مس শব্দ দ্বারা উপকৃত হওয়া বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ এ কুরআন থেকে কেবল ঐ সমস্ত লোকরাই উপকৃত হতে পারে যাদের অন্তর পবিত্র। [দেখুন, কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
تَنزِيلٞ مِّن رَّبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
এটা সৃষ্টিকুলের রবের কাছ থেকে নাযিলকৃত।
Arapça tefsirler:
أَفَبِهَٰذَا ٱلۡحَدِيثِ أَنتُم مُّدۡهِنُونَ
তবুও কি তোমরা এ বাণীকে তুচ্ছ গণ্য করছ [১]?
[১] আয়াতে مُدْهِنُوْنَ শব্দটি শৈথিল্য প্রদর্শন করা ও কপটতা করা, তুচ্ছ জ্ঞান করা, খোশামোদ ও তোয়াজ করার নীতি গ্ৰহণ করা, গুরুত্ব না দেয়া এবং যথাযোগ্য মনোযোগের উপযুক্ত মনে না করার অর্থে ব্যবহৃত হয়। এখানেও কুরআনী আয়াতের ব্যাপারে কপটতা, মিথ্যারোপ, গুরুত্বহীন ও তুচ্ছ জ্ঞান করার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। [কুরতুবী]
Arapça tefsirler:
وَتَجۡعَلُونَ رِزۡقَكُمۡ أَنَّكُمۡ تُكَذِّبُونَ
আর তোমরা মিথ্যারোপকেই তোমাদের রিযিক করে নিয়োছ [১]!
[১] অর্থাৎ আল্লাহর নেয়ামতকে দেখেও তোমরা সেগুলোকে অস্বীকার করে যাচ্ছ। তোমরা কৃতজ্ঞ হওয়ার পরিবর্তে কৃতঘ্ন হচ্ছ। তোমরা আল্লাহর নেয়ামতকে অন্যের দিকে সম্বন্ধযুক্ত করছ। তোমরা শুকরিয়া আদায়ের জায়গায় কুফরী করছ। [ফাতহুল কাদীর] হাদীসে এসেছে, যায়েদ ইবন খালেদ আল-জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে হুদাইবিয়াতে ফজরের সালাত আদায় করেন। তার আগের রাত্রিতে বৃষ্টি হয়েছিল। সালাত শেষ করে রাসূল মানুষের দিকে ফিরে বললেন, তোমরা কি যান তোমাদের রব কি বলেছেন? সাহাবাগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, আল্লাহ বলেছেন, আমার বান্দাদের মধ্যে কেউ ঈমানদার আর কেউ কাফের এ দু'ভাগ হয়ে গেছে। যারা বলেছে আমরা আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি লাভ করেছি তারা আমার উপর ঈমান এনেছে নক্ষত্রপুঞ্জের প্রভাব অস্বীকার করেছে। আর যারা বলেছে আমরা ওমুক ওমুক নক্ষত্রের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে বৃষ্টি লাভ করেছি তারা আমার সাথে কুফরী করেছে এবং নক্ষত্রপুঞ্জের উপর ঈমান এনেছে। [বুখারী ১০৩৮, মুসলিম ৭১]
Arapça tefsirler:
فَلَوۡلَآ إِذَا بَلَغَتِ ٱلۡحُلۡقُومَ
সুতরাং কেন নয়---প্ৰাণ যখন কণ্ঠাগত হয় [১]
[১] অর্থাৎ যদি তোমরা নিজেদেরকে সর্বেসর্বা মনে করে থাক তবে কেন পার না তোমাদের প্ৰাণকে তোমাদের শরীরে রেখে দিতে? [ফাতহুল কাদীর]
Arapça tefsirler:
وَأَنتُمۡ حِينَئِذٖ تَنظُرُونَ
এবং তখন তোমরা তাকিয়ে থাক
Arapça tefsirler:
وَنَحۡنُ أَقۡرَبُ إِلَيۡهِ مِنكُمۡ وَلَٰكِن لَّا تُبۡصِرُونَ
আর আমরা তোমাদের চেয়ে তার কাছাকাছি, কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না [১]।
[১] অর্থাৎ এমতাবস্থায়ও আমরা আমাদের ফেরেশতাদের নিয়ে তোমাদের নিকটেই থাকি। এখানে ফেরেশতাগণ বান্দার নিকটে থাকার কথা বলা হয়েছে। এ মতটিই সবচেয়ে সঠিক মত। ইবন কাসীর এটাই গ্রহণ করেছেন। তিনি এর প্রমাণস্বরূপ বলছেন যে, এর পরে বলা হয়েছে, “কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না’। কারণ, ফেরেশতাদেরকে দেখতে পাওয়া যায় না। যেমন অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,

* وَهُوَ الْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِ ۖ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُمْ حَفَظَةً حَتَّىٰ إِذَا جَاءَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لَا يُفَرِّطُونَ

ثُمَّ رُدُّوا إِلَى اللَّهِ مَوْلَاهُمُ الْحَقِّ ۚ أَلَا لَهُ الْحُكْمُ وَهُوَ أَسْرَعُ الْحَاسِبِينَ

“তিনিই স্বীয় বান্দাদের উপর পরাক্রমশালী এবং তিনিই রক্ষক পাঠান। অবশেষে যখন তোমাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন আমার রাসূল (ফেরেশতাগণ) তার মৃত্যু ঘটায় এবং তারা কোনো ভুল করে না। তারপর তাদের প্রকৃত প্রতিপালক আল্লাহর দিকে তারা ফিরে আসে। দেখুন, কর্তৃত্ব তো তাঁরই এবং হিসেব গ্রহনে তিনিই সবচেয়ে তৎপর।” [সূরা আল-আন’আম ৬১-৬২] সেখানে যেভাবে ফেরেশতা পাঠানোর কথা বলা হয়েছে এখানেও এটাই উদ্দেশ্য। [ইবন কাসীর]
Arapça tefsirler:
فَلَوۡلَآ إِن كُنتُمۡ غَيۡرَ مَدِينِينَ
অতঃপর যদি তোমরা হিসাব নিকাশ ও প্রতিফলের সম্মুখীন না হও [১],
[১] مَدِيْنِيْنَ শব্দের এক অর্থ, হিসাব নিকাশের অধীন। কারণ, তারা মৃত্যুর পর হিসাব দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করত। [তাবারী] অপর অর্থ, পুনরুখিত হওয়া। যদি তোমরা পুনরুখিত না হওয়ার থাক, তবে রূহ ফেরত নিয়ে আস না কেন? [তাবারী] অপর অর্থ, প্রতিফল দেয়া। অর্থাৎ যদি তোমাদেরকে তোমাদের কাজের প্রতিফল না দিতে হয়, তবে তোমাদের রূহকে ফিরিয়ে নিয়ে আস না কেন? এ অর্থকে ইমাম তাবারী প্রাধান্য দিয়েছেন। কারও অধীন থাকা। অর্থাৎ যদি তোমরা কারও অধীন না থাক, কারও কর্তৃত্ব যদি তোমাদের উপর কার্যকর না থাকে, তবে তোমরা কেন তোমাদের রূহকে দেহে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হও না? [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
Arapça tefsirler:
تَرۡجِعُونَهَآ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ
তবে তোমরা ওটা [১] ফিরাও না কেন? যদি তোমরা সত্যবাদী হও!
[১] অর্থাৎ আত্মা কণ্ঠাগত হওয়ার পর তোমরা যখন দেখতে পাচ্ছ যে, তোমাদের সেখানে কোনও করণীয় নেই, তখন তোমাদের জন্য উচিত হবে ঈমান আনা। কিন্তু যদি তা না কর, তাহলে যুক্তির কথা হচ্ছে, তোমরা রূহটাকে ফেরৎ নিয়ে আস, যেন মৃত্যুই না আসে। কিন্তু তোমরা সেটাকে ফেরৎ আনতে সমর্থ নও। [জালালাইন; সা’দী; মুয়াসসার]
Arapça tefsirler:
فَأَمَّآ إِن كَانَ مِنَ ٱلۡمُقَرَّبِينَ
অতঃপর যদি সে নৈকট্যপ্ৰাপ্তদের একজন হয়,
Arapça tefsirler:
فَرَوۡحٞ وَرَيۡحَانٞ وَجَنَّتُ نَعِيمٖ
তবে তার জন্য রয়েছে আরাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখদ উদ্যান [১],
[১] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "মুমিনের প্রাণ তো জান্নাতের গাছে পাখির আকারে থাকবে, পুনরুত্থান দিবসে তার প্রাণকে তার শরীরে ফেরৎ দেয়া পর্যন্ত এভাবেই সে থাকবে।’ [মুসনাদে আহমাদ ৩/৪৫৫, ইবন মাজাহ ৪২৭১, মুয়াত্তা ইমাম মালেক ৪৯]
Arapça tefsirler:
وَأَمَّآ إِن كَانَ مِنۡ أَصۡحَٰبِ ٱلۡيَمِينِ
আর যদি সে ডান দিকের একজন হয়,
Arapça tefsirler:
فَسَلَٰمٞ لَّكَ مِنۡ أَصۡحَٰبِ ٱلۡيَمِينِ
তবে তাকে বলা হবে, তোমাকে সালাম যেহেতু তুমি ডান দিকের একজন ৷’
Arapça tefsirler:
وَأَمَّآ إِن كَانَ مِنَ ٱلۡمُكَذِّبِينَ ٱلضَّآلِّينَ
কিন্তু সে যদি হয় মিথ্যারোপকারী, বিভ্রান্তদের একজন,
Arapça tefsirler:
فَنُزُلٞ مِّنۡ حَمِيمٖ
তবে তার আপ্যায়ন হবে অতি উষ্ণ পানির
Arapça tefsirler:
وَتَصۡلِيَةُ جَحِيمٍ
এবং দহন জাহান্নামের;
Arapça tefsirler:
إِنَّ هَٰذَا لَهُوَ حَقُّ ٱلۡيَقِينِ
নিশ্চয় এটা সুনিশ্চিত সত্য।
Arapça tefsirler:
فَسَبِّحۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلۡعَظِيمِ
অতএব আপনি আপনার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন [১]।
[১] সুরার উপসংহারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলা হয়েছে যে, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্ৰতা ঘোষণা করুন। এতে সালাতের ভিতরে ও বাইরের সব তাসবীহ দাখিল রয়েছে। খোদ সালাতকেও মাঝে মাঝে তসবীহ বলে ব্যক্ত করা হয়। এমতাবস্থায় এটা সালাতের প্রতি গুরুত্বদানেরও আদেশ হয়ে যাবে। তাসবীহ পাঠের বিভিন্ন ফযীলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যদি কেউ বলে ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহী’ জান্নাতে তার জন্য একটি খেজুর গাছ রোপন করা হয়।” [তিরমিয়ী ৩৪৬৪, ৩৪৬৫] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “দু'টি এমন বাক্য রয়েছে যা জিহবার উপর হাল্কা, মীযানের পাল্লায় ভারী, রাহমানের নিকট প্রিয়, তা হচ্ছে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল ‘আযীম’ ৷” [বুখারী ৬৪০৬, ৬৬৮২, ৭৫৬৩, মুসলিম ২৬৯৪]
Arapça tefsirler:
 
Anlam tercümesi Sure: Sûretu'l-Vâkıa
Surelerin fihristi Sayfa numarası
 
Kur'an-ı Kerim meal tercümesi - Bengalce Tercüme - Mealler fihristi

Kur'an-ı Kerim mealinin Bengalce tercümesi, Dr. Ebubekir Muhammet Zekeriya tercüme etmiştir, Medine Münevvere Kral Faht Mushaf-ı Şerif Basın Kurumu tarafından basılmıştır, Basım tarihi H.1436

Kapat