ترجمة معاني القرآن الكريم - الترجمة البنغالية - أبو بكر زكريا * - فهرس التراجم


ترجمة معاني آية: (24) سورة: ابراهيم
أَلَمۡ تَرَ كَيۡفَ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلٗا كَلِمَةٗ طَيِّبَةٗ كَشَجَرَةٖ طَيِّبَةٍ أَصۡلُهَا ثَابِتٞ وَفَرۡعُهَا فِي ٱلسَّمَآءِ
আপনি কি লক্ষ্য করেন না আল্লাহ্ কিভাবে উপমা দিয়ে থাকেন? সৎবাক্যের [১] তুলনা উৎকৃষ্ট গাছ যার মূল সুদৃঢ় ও যার শাখা-প্রশাখা উপরে বিস্তৃত [২],
[১] মূল আয়াতে (كَلِمَةً طَيِّبَةً) বলা হয়েছে। “কালেমা তাইয়েবা”র শাব্দিক অর্থ “পবিত্র কথা।” পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এ কালেমা। [বাগভী] এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন,

(كَلِمَةً طَيِّبَةً)

হলো: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য দেয়া আর

(كَشَجَرَةٍ طَيِّبَةٍ)

হলো মু’মিন। [ইবন কাসীর] এরপর

(اَصْلُهَا ثَابِتٌ)

এর অর্থ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মু’মিনের অন্তরে সুপ্রতিষ্ঠিত।

(وَّفَرْعُهَا فِي السَّمَاۗءِ)

অর্থ, এ কালেমার কারণে এর মাধ্যমে মু’মিনের আমল আসমানে উত্থিত হয়। [ইবন কাসীর] আর এ তাফসীরই দাহহাক, সা’য়ীদ ইবন জুবাইর, ইকরিমাহ এবং কাতাদা সহ অনেক মুফাসসীর থেকে বর্ণিত হয়েছে। যার সারকথা হলো, উত্তম বৃক্ষ হলো মু’মিন যার তুলনা খেজুর গাছের সাথে বিভিন্ন হাদীসে দেয়া হয়েছে। খেজুর গাছ শুধু ভাল কিছুই উপহার দেয়। তেমনি ঈমানদার, শুধু ভালকাজই তার কাছ থেকে আসমানে উঠতে থাকে। সে ভাল কথা, ভাল কাজ করেই যেতে থাকে আর তা দুনিয়াতে হলেও তার ফলাফল নির্ধারিত হয় আকাশে। [ইবন কাসীর]

[২] এ আয়াতে মু’মিন ও তার ক্রিয়াকর্মের উদাহরণে এমন একটি বৃক্ষের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যার কাণ্ড মজবুত ও সুউচ্চ এবং শিকড় মাটির গভীরে প্রেথিত। ভূগর্ভস্থ ঝর্ণা থেকে সেগুলো সিক্ত হয়। গভীর শিকড়ের কারণে বৃক্ষটি এত শক্ত যে, দমকা বাতাসে ভূমিসাৎ হয়ে যায় না। ভূপৃষ্ঠ থেকে উর্ধ্বে থাকার কারণে এর ফল ময়লা ও আবর্জনা থেকে মুক্ত। এ বৃক্ষের দ্বিতীয় গুণ এই যে, এর শাখা উচ্চতায় আকাশ পানে ধাবমান। তৃতীয় গুণ এই যে, এর ফল সবসময় সর্বাবস্থায় খাওয়া যায়। এ বৃক্ষটি কি এবং কোথায়, এ সম্পর্কে তাফসীরবিদগণের বিভিন্ন উক্তি বর্ণিত আছে। সর্বাধিক তথ্যনির্ভর উক্তি এই যে, এটি হচ্ছে খেজুর বৃক্ষ। [আত-তাফসীরুস সহীহ] এর সমর্থন অভিজ্ঞতা এবং চাক্ষুষ দেখা দ্বারাও হয় এবং বিভিন্ন হাদীস থেকেও পাওয়া যায়। খেজুর বৃক্ষের কাণ্ড যে উচ্চ ও মজবুত, তা প্রত্যক্ষ বিষয়-সবাই জানে। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘কুরআনে উল্লিখিত পবিত্র বৃক্ষ হচ্ছে খেজুর বৃক্ষ এবং অপবিত্র বৃক্ষ হচ্ছে হানযল তথা মাকাল বৃক্ষ।’ [তিরমিযি ৩১১৯, নাসায়ী ২৮২]

আব্দুল্লাহ্ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। জনৈক ব্যক্তি তার কাছে খেজুর বৃক্ষের শাঁস নিয়ে এল। তখন তিনি সাহাবায়ে কেরামকে একটি প্রশ্ন করলেন: বৃক্ষসমূহের মধ্যে একটি বৃক্ষ হচ্ছে মর্দে-মু’মিনের দৃষ্টান্ত। (বুখারীর বর্ণনা মতে এ স্থলে তিনি আরো বললেন যে, কোনো ঋতুতেই এ বৃক্ষের পাতা ঝরে না।) বল, এ কোন বৃক্ষ? ইবন উমর বললেন: আমার মন চাইল যে, বলে দেই- খেজুর বৃক্ষ। কিন্তু মজলিশে আবু বকর, উমর ও অন্যান্য প্রধান প্রধান সাহাবী উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে চুপ দেখে আমি বলার সাহস পেলাম না। এরপর স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: এ হচ্ছে খেজুর বৃক্ষ।’ [বুখারী ৭২, ১৩১, ২২০৯, ৪৬৯৮, মুসলিম ২৮১১, মুসনাদে আহমাদ ২/১২, ২/৬১]

এ বৃক্ষ দ্বারা মু’মিনের দৃষ্টান্ত দেয়ার কারণ এই যে, কালেমায়ে তাইয়্যেবার মধ্যে ঈমান হচ্ছে মজবুত ও অনড় শিকড়বিশিষ্ট, দুনিয়ার বিপদাপদ একে টলাতে পারে না। সাহাবী ও তাবেয়ী; বরং প্রতি যুগের খাঁটি মুসলিমদের দৃষ্টান্ত বিরল নয়, যারা ঈমানের মোকাবেলায় জান, মাল ও কোনো কিছুর পরওয়া করেনি। দ্বিতীয় কারণ তাদের পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। তারা দুনিয়ার নোংরামী থেকে সবসময় দূরে সরে থাকেন যেমন ভূপৃষ্ঠের ময়লা-আবর্জনা উঁচু বৃক্ষকে স্পর্শ করতে পারে না। এ দু’টি গুণ হচ্ছে (اَصْلُهَا ثَابِتٌ)-এর দৃষ্টান্ত। তৃতীয় কারণ এই যে, খেজুর বৃক্ষের শাখা যেমন আকাশের দিকে উচ্চে ধাবমান, মু’মিনের ঈমানের ফলাফলও অর্থাৎ সৎকর্মও তেমনি আকাশের দিকে উত্থিত হয়। কুরআন বলে:

(اِلَيْهِ يَصْعَدُ الْكَلِمُ الطَّيِّبُ)

[সূরা ফাতির ১০] -অর্থাৎ পবিত্র বাক্যাবলী আল্লাহ্ তা’আলার যেসব যিকর, তাসবীহ্-তাহলীল, কুরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি করে, সেগুলো সকাল-বিকাল আল্লাহ্‌র দরবারে পৌঁছতে থাকে। চতুর্থ কারণ এই যে, খেজুর বৃক্ষের ফল যেমন সব সময় সর্বাবস্থায় এবং সব ঋতুতে দিবারাত্র খাওয়া হয়, মু’মিনের সৎকর্মও তেমনি সবসময়, সর্বাবস্থায় এবং সব ঋতুতে অব্যাহত রয়েছে এবং খেজুর বৃক্ষের প্রত্যেকটি অংশই যেমন উপকারী, তেমনি মু’মিনের প্রত্যেক কথা ও কাজ, ওঠাবসা এবং এসবের প্রতিক্রিয়া সমগ্র বিশ্বের জন্য উপকারী ও ফলদায়ক। তবে শর্ত এই যে, আল্লাহ্ ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষা অনুযায়ী হতে হবে। [দেখুন, ইবনুল কাইয়্যেম, ই’লামুল মুওয়াক্কে’য়ীন ১/১৩৩; আল-বাদর, তাআম্মুলাত ফী মুমাসালাতিল মু’মিন বিন নাখলাহ] উপরোক্ত বক্তব্য থেকে জানা গেল যে,

(تُؤْتِيْٓ اُكُلَهَا كُلَّ حِيْنٍ)

বাক্যে اُكُلٌ শব্দের অর্থ হচ্ছে ফল ও খাদ্যোপযোগী বস্তু এবং حين শব্দের অর্থ প্রতিমুহূর্ত। এটিই সবচেয়ে প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত। [তাবারী] যদিও এখানে অন্যান্য মতও রয়েছে। [দেখুন, তাবারী; বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর]
التفاسير العربية:
 
ترجمة معاني آية: (24) سورة: ابراهيم
فهرس السور رقم الصفحة
 
ترجمة معاني القرآن الكريم - الترجمة البنغالية - أبو بكر زكريا - فهرس التراجم

ترجمة معاني القرآن الكريم إلى اللغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا.

إغلاق