Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation of "Abridged Explanation of the Quran" * - Translations’ Index


Translation of the meanings Surah: Al-Mā’idah   Ayah:

সূরা আল-মায়েদা

Purposes of the Surah:
الأمر بالوفاء بالعقود، والتحذير من مشابهة أهل الكتاب في نقضها.
চুক্তিসমূহ পরিপূর্ণভাবে আদায় করা এবং শরীয়ত ও তার দÐবিধি সম্পূর্ণরূপে মেনে চলা উপরন্তু ধর্মের পরিপূর্ণতা প্রদান।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَوۡفُواْ بِٱلۡعُقُودِۚ أُحِلَّتۡ لَكُم بَهِيمَةُ ٱلۡأَنۡعَٰمِ إِلَّا مَا يُتۡلَىٰ عَلَيۡكُمۡ غَيۡرَ مُحِلِّي ٱلصَّيۡدِ وَأَنتُمۡ حُرُمٌۗ إِنَّ ٱللَّهَ يَحۡكُمُ مَا يُرِيدُ
১. হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ¯্রষ্টা ও তাঁর সৃষ্টির মাঝে করা পাকাপোক্ত সকল অঙ্গীকার পূর্ণ করো। আল্লাহ তা‘আলা দয়া করে তোমাদের জন্য গৃহপালিত চতুস্পদ জন্তু তথা উট, গরু ও ছাগল হালাল করেছেন। তবে তোমাদেরকে পড়ে শুনানো হারাম বস্তু এবং হজ্জ ও উমরাহর ইহরাম অবস্থায় স্থলভাগের শিকার করা হারাম পশুগুলো ছাড়া। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হিকমত অনুযায়ী যা হালাল ও হারাম করার ইচ্ছা করেন তাই ফায়সালা করেন। এ বিষয়ে তাঁকে বাধ্য করা এবং তাঁর ফায়সালার ব্যাপারে আপত্তি করার কেউ নেই।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تُحِلُّواْ شَعَٰٓئِرَ ٱللَّهِ وَلَا ٱلشَّهۡرَ ٱلۡحَرَامَ وَلَا ٱلۡهَدۡيَ وَلَا ٱلۡقَلَٰٓئِدَ وَلَآ ءَآمِّينَ ٱلۡبَيۡتَ ٱلۡحَرَامَ يَبۡتَغُونَ فَضۡلٗا مِّن رَّبِّهِمۡ وَرِضۡوَٰنٗاۚ وَإِذَا حَلَلۡتُمۡ فَٱصۡطَادُواْۚ وَلَا يَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَـَٔانُ قَوۡمٍ أَن صَدُّوكُمۡ عَنِ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ أَن تَعۡتَدُواْۘ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ وَلَا تَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ
২. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর হারামকৃত বস্তুগুলোকে হালাল মনে করবে না। যার প্রতি তিনি তোমাদেরকে সম্মান প্রদর্শনের আদেশ করেছেন। আর তোমরা ইহরাম অবস্থার নিষিদ্ধ কর্মকাÐ থেকে বিরত থাকো। যেমন: পুরুষরা সেলাই কাপড় পরিধান করবে না। হারাম এলাকার নিষিদ্ধ কর্মকাÐ থেকেও বিরত থাকবে। যেমন: সেখানকার কোন পশু শিকার করা। অনুরূপভাবে তোমরা জিলক্বদ, যিলহজ্জ, মুহাররাম ও রজব তথা হারাম এ চার মাসে হত্যাকাÐকে হালাল মনে করো না। তেমনিভাবে যে চতুস্পদ পশুগুলোকে হারাম এলাকায় জবাইয়ের জন্য হাদিয়া দেয়া হয় সেগুলোকে তোমরা অপহরণ ইত্যাদি অথবা সেগুলোকে নিজ জায়গায় পৌঁছুতে বাধা দেয়ার মাধ্যমে হালাল করে নিয়ো না। অনুরূপভাবে সে পশুকেও হালাল মনে করো না যার গলায় তাকে হাদি হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য সুতো ইত্যাদির মালা পরানো হয়েছে। তেমনিভাবে বাইতুল্লাহিল-হারামকে উদ্দেশ্য করে আসা লোকদের সম্পদকেও তোমরা হালাল মনে করো না। যারা এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক লাভ ও আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে। আর যখন তোমরা হজ্জ-উমরাহর ইহরাম থেকে হালাল হবে এবং হারাম থেকে বের হয়ে যাবে তখন তোমরা চাইলে শিকার করতে পারো। তোমাদেরকে মসজিদুল-হারামে আসতে বাধা দেয়ার দরুন কোন সম্প্রদায়ের শত্রæতা যেন তাদের উপর যুলুম ও বেইনসাফি করতে উৎসাহিত না করে। হে মু’মিনরা! তোমরা আদিষ্ট কাজ করা ও নিষিদ্ধ কাজ ছাড়তে একে অপরকে সহযোগিতা করো। আর আল্লাহর আনুগত্যে অনড় থাকবে ও তাঁর অবাধ্যতা থেকে দূরে থেকে তাঁকে ভয় করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অবাধ্যের কঠিন শাস্তিদাতা। তাই তোমরা তাঁর শাস্তির ব্যাপারে সতর্ক থাকো।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• عناية الله بجميع أحوال الورثة في تقسيم الميراث عليهم.
ক. মিরাস বন্টনের ক্ষেত্রে ওয়ারিশদের সার্বিক অবস্থার প্রতি গুরুত্বারোপ।

• الأصل هو حِلُّ الأكل من كل بهيمة الأنعام، سوى ما خصه الدليل بالتحريم، أو ما كان صيدًا يعرض للمحرم في حجه أو عمرته.
খ. মূল বিধান হলো সকল গৃহপালিত চতুস্পদ জন্তু খাওয়া হালাল। তবে শরীয়ত নির্ধারিত হারাম জন্তু এবং হজ্জ ও উমরাহর সময় ইহরামকারীর সামনে উপস্থিত শিকার ছাড়া।

• النهي عن استحلال المحرَّمات، ومنها: محظورات الإحرام، والصيد في الحرم، والقتال في الأشهر الحُرُم، واستحلال الهدي بغصب ونحوه، أو مَنْع وصوله إلى محله.
গ. হারাম বস্তুগুলোকে হালাল করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা। যেমন: ইহরাম অবস্থার নিষিদ্ধ কর্মকাÐ, হারাম এলাকায় শিকার করা, হারাম মাসগুলোকে হত্যাকাÐ এবং অপহরণ ইত্যাদির মাধ্যমে হাদিকে হালাল করা অথবা সেটিকে নিজ স্থানে পৌঁছুতে বাধা দেয়া।

حُرِّمَتۡ عَلَيۡكُمُ ٱلۡمَيۡتَةُ وَٱلدَّمُ وَلَحۡمُ ٱلۡخِنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ لِغَيۡرِ ٱللَّهِ بِهِۦ وَٱلۡمُنۡخَنِقَةُ وَٱلۡمَوۡقُوذَةُ وَٱلۡمُتَرَدِّيَةُ وَٱلنَّطِيحَةُ وَمَآ أَكَلَ ٱلسَّبُعُ إِلَّا مَا ذَكَّيۡتُمۡ وَمَا ذُبِحَ عَلَى ٱلنُّصُبِ وَأَن تَسۡتَقۡسِمُواْ بِٱلۡأَزۡلَٰمِۚ ذَٰلِكُمۡ فِسۡقٌۗ ٱلۡيَوۡمَ يَئِسَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِن دِينِكُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَٱخۡشَوۡنِۚ ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ فَمَنِ ٱضۡطُرَّ فِي مَخۡمَصَةٍ غَيۡرَ مُتَجَانِفٖ لِّإِثۡمٖ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৩. আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর হারাম করেছেন জবাই ছাড়া মৃত পশু। তেমনিভাবে তিনি হারাম করেছেন প্রবাহিত রক্ত, শূকরের গোস্ত, আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নামে জবাই করা পশু, শ্বাসরুদ্ধ করে মারা পশু, আঘাত করে মারা পশু, উপর থেকে নিচে পড়ে মারা যাওয়া পশু, অন্য পশুর আঘাতে মারা যাওয়া পশু, হিং¯্র প্রাণী যেমন: সিংহ, চিতা ও নেকড়ে কর্তৃক ছিঁড়ে খাওয়া পশু। তবে উক্ত পশুগুলো জীবিত পেয়ে জবাই করলে তা তোমাদের জন্য হালাল। তেমনিভাবে তোমাদের জন্য হারাম মূর্তির জন্য জবাই করা পশু। অনুরূপভাবে তিনি হারাম করেছেন তোমাদের অদৃশ্যের বন্টনকে পাথর ও তীরের মাধ্যমে কামনা করা যেগুলোর কোনটিতে লিখা আছে “করো” আর কোনটিতে লিখা আছে “করো না”। যা তার জন্য বের হয় সে সেটির উপরই আমল করে। উপরোক্ত হারাম কাজগুলো করা মানে আল্লাহর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যাওয়া। আজ কাফিররা ইসলামের শক্তি দেখে ইসলাম ধর্ম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হয়ে গেছে। তাই তোমরা তাদেরকে ভয় না করে কেবল আমাকেই ভয় করো। আজ আমি তোমাদের ধর্ম ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছি, আর আমার প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সকল নিয়ামত পুরোপুরি দিয়েছি এবং আমি তোমাদের জন্য ইসলামকেই ধর্ম হিসেবে চয়ন করেছি। তাই আমি এ ছাড়া অন্য কোন ধর্ম গ্রহণ করবো না। তবে কেউ পাপের প্রবণতা ছাড়া কেবল ক্ষুধার তাড়নায় মৃত পশু খেতে বাধ্য হলে তাতে তার কোন গুনাহ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাশীল দয়ালু।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَسۡـَٔلُونَكَ مَاذَآ أُحِلَّ لَهُمۡۖ قُلۡ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّيِّبَٰتُ وَمَا عَلَّمۡتُم مِّنَ ٱلۡجَوَارِحِ مُكَلِّبِينَ تُعَلِّمُونَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَكُمُ ٱللَّهُۖ فَكُلُواْ مِمَّآ أَمۡسَكۡنَ عَلَيۡكُمۡ وَٱذۡكُرُواْ ٱسۡمَ ٱللَّهِ عَلَيۡهِۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلۡحِسَابِ
৪. হে রাসূল! আপনার সাহাবীগণ আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা কী খাওয়া হালাল করেছেন? আপনি বলুন, হে রাসূল! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হালাল করেছেন সকল পবিত্র খাদ্য এবং দন্ত বিশিষ্ট প্রশিক্ষিত পশু যেমন: কুকুর ও বাঘ এবং থাবাযুক্ত পাখী যেমন: বাজ ইত্যাদির শিকার। প্রশিক্ষিত পশু-পাখির গুণ হলো তাদেরকে শিকারের আদেশ করা হলে সে আদেশ মানে আর তা থেকে বিরত থাকতে ধমক দেয়া হলে তা থেকে বিরত হয়। তাই সেগুলোর হত্যা করা শিকার তোমরা খেতে পারো। তবে তোমরা সেগুলোকে ছাড়ার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। আর আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আমলসমূহের দ্রæত হিসাবকারী।
Arabic explanations of the Qur’an:
ٱلۡيَوۡمَ أُحِلَّ لَكُمُ ٱلطَّيِّبَٰتُۖ وَطَعَامُ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ حِلّٞ لَّكُمۡ وَطَعَامُكُمۡ حِلّٞ لَّهُمۡۖ وَٱلۡمُحۡصَنَٰتُ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنَٰتِ وَٱلۡمُحۡصَنَٰتُ مِنَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ إِذَآ ءَاتَيۡتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ مُحۡصِنِينَ غَيۡرَ مُسَٰفِحِينَ وَلَا مُتَّخِذِيٓ أَخۡدَانٖۗ وَمَن يَكۡفُرۡ بِٱلۡإِيمَٰنِ فَقَدۡ حَبِطَ عَمَلُهُۥ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ
৫. আজ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য সুস্বাদু পবিত্র খাবার এবং আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের জবাইকৃত পশু হালাল করেছেন। উপরন্তু তোমাদের জবাইকৃত পশুও তাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তেমনিভাবে তোমাদের জন্য সতী-স্বাধীন মু’মিন নারী এবং পূর্বের কিতাবী তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের নারীদেরকেও বিবাহ করা হালাল করা হয়েছে। যদি তোমরা তাদের মোহরানা দিয়ে দাও এবং ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া থেকে সৎ থাকো। উপরন্তু তাদের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য তাদেরকে গোপন সঙ্গিনী বা প্রেমিকা হিসেবে গ্রহণ না করো। আল্লাহর বান্দাদের জন্য রচিত বিধানাবলীর সাথে কুফরিকারীর আমলসমূহ বাতিল হয়ে যায়। কারণ, তার মাঝে আমল কবুল হওয়ার শর্তটুকু তথা ঈমানই পাওয়া যায় না। উপরন্তু সে কিয়ামতের দিন জাহান্নামে প্রবেশ করে সেখানে অনন্ত কাল থাকবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• تحريم ما مات دون ذكاة، والدم المسفوح، ولحم الخنزير، وما ذُكِرَ عليه اسْمٌ غير اسم الله عند الذبح، وكل ميت خنقًا، أو ضربًا، أو بسقوط من علو، أو نطحًا، أو افتراسًا من وحش، ويُستثنى من ذلك ما أُدرِكَ حيًّا وذُكّيَ بذبح شرعي.
ক. জবাই ছাড়া মৃত পশু, প্রবাহিত রক্ত, শূকরের গোস্ত, আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নামে জবাই করা পশু এবং গলায় ফাঁস লেগে, আঘাত লেগে, উপর থেকে পড়ে, অন্য কোন পশুর শিংয়ের গুতোয় অথবা হিং¯্র পশুর আক্রমণে মৃত পশু সবই হারাম। তবে এগুলোর যেটিকে জীবিত পেয়ে শরয়ী পন্থায় জবাই করা হয়েছে তা খাওয়া হালাল।

• حِلُّ ما صاد كل مدرَّبٍ ذي ناب أو ذي مخلب.
খ. দন্ত বিশিষ্ট বা থাবা দেয়া প্রশিক্ষিত পশুর শিকার খাওয়া হালাল।

• إباحة ذبائح أهل الكتاب، وإباحة نكاح حرائرهم من العفيفات.
গ. আহলে কিতাবের জবাই করা পশু হালাল এবং তাদের সতী-স্বাধীন মেয়েদেরকে বিবাহ করাও হালাল।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا قُمۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ فَٱغۡسِلُواْ وُجُوهَكُمۡ وَأَيۡدِيَكُمۡ إِلَى ٱلۡمَرَافِقِ وَٱمۡسَحُواْ بِرُءُوسِكُمۡ وَأَرۡجُلَكُمۡ إِلَى ٱلۡكَعۡبَيۡنِۚ وَإِن كُنتُمۡ جُنُبٗا فَٱطَّهَّرُواْۚ وَإِن كُنتُم مَّرۡضَىٰٓ أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوۡ جَآءَ أَحَدٞ مِّنكُم مِّنَ ٱلۡغَآئِطِ أَوۡ لَٰمَسۡتُمُ ٱلنِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدٗا طَيِّبٗا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَيۡدِيكُم مِّنۡهُۚ مَا يُرِيدُ ٱللَّهُ لِيَجۡعَلَ عَلَيۡكُم مِّنۡ حَرَجٖ وَلَٰكِن يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمۡ وَلِيُتِمَّ نِعۡمَتَهُۥ عَلَيۡكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
৬. হে ঈমানদাররা! তোমরা সালাত আদায়ের প্রস্তুতির ইচ্ছা করলে এবং কম নাপাক হলে ওযু করো। ওযুর নিয়ম হলো মুখমÐল ও কনুইসহ হাতগুলো ধৌত করা এবং নিজেদের মাথাগুলো মাসেহ করা ও জঙ্ঘার জোড়ার উঁচু গোড়ালিসহ পাগুলো ধৌত করা। আর বড় রকমের নাপাক হলে গোসল করে নাও। তোমরা অসুস্থ হয়ে পড়া এবং রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা সুস্থ হতে দেরি হওয়ার আশঙ্কা করলে অথবা সুস্থাবস্থায় মুসাফির হলে কিংবা মলমূত্র ত্যাগের মতো কোন কারণে কম নাপাক হলে অথবা স্ত্রী সহবাসের মাধ্যমে বড় ধরনের নাপাক হলে এবং খোঁজা সত্তে¡ও পবিত্রতার জন্য পানি না পেলে মাটি নিবে। এরপর তাতে হাত লাগিয়ে চেহারা ও হাতদু’টো মাসেহ করবে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর বিধানগত সঙ্কীর্ণতা চাপিয়ে দিতে চান না তথা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর পানি ব্যবহারে তোমাদেরকে বাধ্য করেন না। তাই তিনি তোমাদের জন্য রোগের কারণে পানি ব্যবহারে ওজর থাকলে কিংবা পানিই না থাকলে এর বিকল্পের বিধান করেন। তাঁর নিয়ামত তোমাদের উপর পরিপূর্ণ করার জন্য। যাতে তোমরা আল্লাহর নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারো এবং তাঁর সাথে কুফরি না করো।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَٱذۡكُرُواْ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ وَمِيثَٰقَهُ ٱلَّذِي وَاثَقَكُم بِهِۦٓ إِذۡ قُلۡتُمۡ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
৭. তোমরা ইসলামের প্রতি হিদায়েতের ন্যায় আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ করো আর সেই অঙ্গীকারকেও স্মরণ করো যা তিনি তোমাদের সাথে করেছেন যখন তোমরা রাজি ও নারাজ অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কথা শুনা ও তাঁর আনুগত্য করার বায়আত করতে গিয়ে বললে: আমরা আপনার কথা শুনলাম ও আপনার আদেশ মানলাম। আর তোমরা আল্লাহর আদেশ (তাতে তাঁর সাথে করা অঙ্গীকারও রয়েছে) নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের অন্তরের সবই জানেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন নয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُونُواْ قَوَّٰمِينَ لِلَّهِ شُهَدَآءَ بِٱلۡقِسۡطِۖ وَلَا يَجۡرِمَنَّكُمۡ شَنَـَٔانُ قَوۡمٍ عَلَىٰٓ أَلَّا تَعۡدِلُواْۚ ٱعۡدِلُواْ هُوَ أَقۡرَبُ لِلتَّقۡوَىٰۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ
৮. হে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী মু’মিনরা! তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁর অধিকারগুলোর প্রতিষ্ঠাকারী ও ইনসাফের সাক্ষী হয়ে যাও; যুলুমের নয়। কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন বেইনসাফির প্রতি উৎসাহিত না করে। কারণ, ইনসাফটুকু বন্ধু ও শত্রæ উভয়ের সাথেই কাম্য। তাই তোমরা তাদের উভয়ের সাথেই ইনসাফ করো। কারণ, ইনসাফ আল্লাহর ভয়। আর যুলুম তাঁর সাথে ধৃষ্টতা দেখানোরই নামান্তর। তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের কর্মকাÐ সম্পর্কে সম্যক অবগত। তাঁর নিকট তোমাদের কোন আমলই গোপন নয়। তাই অচিরেই তিনি তোমাদেরকে তার প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَهُم مَّغۡفِرَةٞ وَأَجۡرٌ عَظِيمٞ
৯. আল্লাহ তা‘আলা তিনি ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী নেককারদের সাথে গুনাহ মাফের এবং জান্নাতে প্রবেশের ন্যায় মহা পুরস্কারের ওয়াদা করেছেন। যিনি তাঁর ওয়াদা কখনো ভঙ্গ করেন না।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• الأصل في الطهارة هو استعمال الماء بالوضوء من الحدث الأصغر، والغسل من الحدث الأكبر.
ক. পবিত্রতার মূল হলো ছোট নাপাকি থেকে ওযু এবং বড় নাপাকি থেকে গোসলের জন্য পানি ব্যবহার করা।

• في حال تعذر الحصول على الماء، أو تعذّر استعماله لمرض مانع أو برد قارس، يشرع التيمم (بالتراب) لرفع حكم الحدث (الأصغر أو الأكبر).
খ. পানি পাওয়া অসম্ভব হলে অথবা রোগ কিংবা অত্যধিক ঠাÐার দরুন পানি ব্যবহার করা অসম্ভব হলে ছোট কিংবা বড় নাপাকির বিধান উঠিয়ে দেয়ার জন্য মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করা শরীয়তের একটি নিয়ম।

• الأمر بتوخي العدل واجتناب الجور حتى في معاملة المخالفين.
গ. সর্বদা ইনসাফ করা ও যুলুম থেকে দূরে থাকার আদেশ। এমনকি তা বিরোধীদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে হলেও।

وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ وَكَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِنَآ أُوْلَٰٓئِكَ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَحِيمِ
১০. যারা আল্লাহর সাথে কুফরি করেছে এবং তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তারা মূলতঃ জাহান্নামের অধিবাসী। তারা নিজেদের কুফরি ও মিথ্যা প্রতিপন্নের শাস্তি স্বরূপ সেখানে প্রবেশ করবে। তারা সেখানকার বাধ্যতামূলক সঙ্গী হবে যেমনিভাবে কোন সাথী তার সাথীর সর্বদার সঙ্গী হয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ إِذۡ هَمَّ قَوۡمٌ أَن يَبۡسُطُوٓاْ إِلَيۡكُمۡ أَيۡدِيَهُمۡ فَكَفَّ أَيۡدِيَهُمۡ عَنكُمۡۖ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡيَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ
১১. হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের অন্তর ও মুখ দিয়ে স্মরণ করো আল্লাহর দেয়া নিরাপত্তার নিয়ামত এবং যে ভয় তোমাদের শত্রæর অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন যখন তোমাদেরকে কঠিনভাবে ধরে হত্যা করার জন্য তারা তোমাদের দিকে তাদের হাত বাড়ানোর ইচ্ছা করেছে। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তোমাদের থেকে সরিয়ে দিয়েছেন এবং তোমাদেরকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন। তাই তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করো। দ্বীন ও দুনিয়ার সুবিধাদি হাসিলের ক্ষেত্রে মু’মিনরা যেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার উপরই ভরসা করে।
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ وَلَقَدۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَٰقَ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ وَبَعَثۡنَا مِنۡهُمُ ٱثۡنَيۡ عَشَرَ نَقِيبٗاۖ وَقَالَ ٱللَّهُ إِنِّي مَعَكُمۡۖ لَئِنۡ أَقَمۡتُمُ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَيۡتُمُ ٱلزَّكَوٰةَ وَءَامَنتُم بِرُسُلِي وَعَزَّرۡتُمُوهُمۡ وَأَقۡرَضۡتُمُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنٗا لَّأُكَفِّرَنَّ عَنكُمۡ سَيِّـَٔاتِكُمۡ وَلَأُدۡخِلَنَّكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُۚ فَمَن كَفَرَ بَعۡدَ ذَٰلِكَ مِنكُمۡ فَقَدۡ ضَلَّ سَوَآءَ ٱلسَّبِيلِ
১২. আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈল থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছেন যার বর্ণনা সামনে আসছে এবং তাদের উপর বারো জন দায়িত্বশীল নিযুক্ত করেছেন। প্রত্যেক দায়িত্বশীল তার অধীনস্থের ব্যাপারটি দেখবে। উপরন্তু আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈলকে বলেন: আমি তোমাদের সাহায্য-সহযোগিতায় রয়েছি যদি তোমরা পরিপূর্ণভাবে সালাত আদায় করো, নিজেদের সম্পদের যাকাত দাও আর কোন পার্থক্য ছাড়া আমার সকল রাসূলকে বিশ্বাস, সম্মান ও সহযোগিতা করো এবং কল্যাণের ক্ষেত্রগুলোতে ব্যয় করো। তোমরা এ সব কাজ করলে আমি তোমাদের কৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেবো আর কিয়ামতের দিন এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবো যার অট্টালিকাসমূহের তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় অনেকগুলো নদী। যে ব্যক্তি এ দৃঢ় অঙ্গীকার নেয়ার পর আবারো কুফরি করলো সে যেন জেনেশুনে স্বেচ্ছায় সত্য পথ থেকে দূরে সরে গেলো।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّيثَٰقَهُمۡ لَعَنَّٰهُمۡ وَجَعَلۡنَا قُلُوبَهُمۡ قَٰسِيَةٗۖ يُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَنَسُواْ حَظّٗا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِۦۚ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلَىٰ خَآئِنَةٖ مِّنۡهُمۡ إِلَّا قَلِيلٗا مِّنۡهُمۡۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱصۡفَحۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِينَ
১৩. তাদের কাছ থেকে গৃহীত অঙ্গীকার ভঙ্গ করার দরুন আমি তাদেরকে আমার রহমত থেকে বিতাড়িত করেছি এবং তাদের অন্তরগুলোকে শক্ত ও কঠিন বানিয়ে দিয়েছি। তাই সেগুলোর দিকে আর কোন কল্যাণ পৌঁছাবে না এবং কোন উপদেশ বাণীও সেগুলোর ফায়দায় আসবে না। তারা কুর‘আনের শব্দগুলোকে পরিবর্তন করে নিজ জায়গা থেকে বিচ্যুত করে এবং নিজেদের মন মতো সেগুলোর অর্থকে বিকৃত করে। উপরন্তু তারা তাদেরকে দেয়া কিছু উপদেশের উপর আমল ছেড়ে দিয়েছে। হে রাসূল! আপনি আল্লাহ ও তাঁর মু’মিন বান্দাদের প্রতি তাদের খিয়ানত অবিরত দেখতে পাবেন। তাদের খুব কম সংখ্যকই তাদের থেকে নেয়া অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে। তাই আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তাদেরকে সে জন্য পাকড়াও না করে তাদের অপরাধগুলো মার্জনা করুন। কারণ, এটিই হলো সৎকর্মশীলতা। আর আল্লাহ তা‘আলা সৎকর্মশীলদেরকে ভালোবাসেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• من عظيم إنعام الله عز وجل على النبي عليه الصلاة والسلام وأصحابه أن حماهم وكف عنهم أيدي أهل الكفر وضررهم.
ক. নবী ও তাঁর সাথীদের উপর সর্ববৃহৎ আল্লাহর নিয়ামত হলো তিনি তাদেরকে রক্ষা করেছেন এবং তাদের উপর থেকে কাফিরদের হস্তক্ষেপ ও ক্ষতি প্রতিহত করেছেন।

• أن الإيمان بالرسل ونصرتهم وإقامة الصلاة وإيتاء الزكاة على الوجه المطلوب، سببٌ عظيم لحصول معية الله تعالى وحدوث أسباب النصرة والتمكين والمغفرة ودخول الجنة.
খ. রাসূলদের উপর ঈমান আনা ও তাঁদের সহযোগিতা করা, সালাত কায়িম করা ও যথাযথভাবে যাকাত আদায় করা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল এবং তাঁর সাহায্য ও ক্ষমতায়নের উপলক্ষ সৃষ্টি উপরন্তু তাঁর ক্ষমা ও জান্নাতে প্রবেশের একটি বড় মাধ্যম।

• نقض المواثيق الملزمة بطاعة الرسل سبب لغلظة القلوب وقساوتها.
গ. রাসূলদের বাধ্যতামূলক আনুগত্যের অঙ্গীকার ভঙ্গ করা অন্তর শক্ত ও কঠিন হওয়ার একটি বিশেষ কারণ।

• ذم مسالك اليهود في تحريف ما أنزل الله إليهم من كتب سماوية.
ঘ. আল্লাহর নাযিলকৃত আসমানী কিতাবসমূহ বিকৃত করার ইহুদি চরিত্রের প্রতি নিন্দা।

وَمِنَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّا نَصَٰرَىٰٓ أَخَذۡنَا مِيثَٰقَهُمۡ فَنَسُواْ حَظّٗا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِۦ فَأَغۡرَيۡنَا بَيۡنَهُمُ ٱلۡعَدَاوَةَ وَٱلۡبَغۡضَآءَ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِۚ وَسَوۡفَ يُنَبِّئُهُمُ ٱللَّهُ بِمَا كَانُواْ يَصۡنَعُونَ
১৪. যেভাবে আমি ইহুদিদের থেকে মজবুত ও দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছি তেমনিভাবে আমি ওদের থেকেও অঙ্গীকার নিয়েছি যারা ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) এর অনুসারী বলে নিজেদের পবিত্রতা বর্ণনা করেছে; অথচ তারা স্মৃত বিধানের কিছু অংশের উপর আমল ছেড়ে দিয়েছে। যেমন তাদের পূর্বেকার ইহুদিরা করেছে। ফলে আমি কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তাদের মাঝে ঝগড়া ও কঠিন ঘৃণা বৃদ্ধি করে দিয়েছি। তাই তারা পরস্পর হত্যা ও সংঘর্ষকারীর রূপ ধারণ করে একে অপরকে কাফির বলছে। আল্লাহ তা‘আলা অচিরেই তাদেরকে তাদের কর্মকাÐের সংবাদ ও সেই ভিত্তিতে তাদের প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ قَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمۡ كَثِيرٗا مِّمَّا كُنتُمۡ تُخۡفُونَ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَيَعۡفُواْ عَن كَثِيرٖۚ قَدۡ جَآءَكُم مِّنَ ٱللَّهِ نُورٞ وَكِتَٰبٞ مُّبِينٞ
১৫. হে তাওরাত ধারণকারী ইহুদি ও ইঞ্জীলধারণকারী খ্রিস্টান আহলে কিতাব! নিশ্চয়ই আমার রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদের নিকট এসেছেন। যিনি তোমাদের জন্য তোমাদের উপর অবতীর্ণ কিতাবের গোপন অনেক কিছুই বর্ণনা করবেন। তবে যেগুলোতে তোমাদের মানহানি করা ছাড়া অন্য কোন ফায়েদা নেই এমন অনেক কিছুই তিনি এড়িয়ে যাবেন। তোমাদের নিকট কুর‘আন মাজীদ আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি কিতাব হিসেবেই এসেছে। যা দুনিয়া ও আখিরাতে মানুষের যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন সেগুলোর একটি সুস্পষ্ট কিতাব ও আলোকময় জ্যোতি।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَهۡدِي بِهِ ٱللَّهُ مَنِ ٱتَّبَعَ رِضۡوَٰنَهُۥ سُبُلَ ٱلسَّلَٰمِ وَيُخۡرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذۡنِهِۦ وَيَهۡدِيهِمۡ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ
১৬. আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাবের মাধ্যমে ওদেরকে তাঁর শাস্তি থেকে মুক্তির পথ দেখান যারা ঈমান ও আল্লাহর পছন্দীয় নেক আমলের অনুসরণ করে। এমন পথ যা জান্নাতের দিকে পৌঁছিয়ে দেয় এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তাদেরকে কুফরি ও গুনাহর অন্ধকার থেকে ঈমান ও আনুগত্যের আলোর দিকে বের করে নিয়ে আসে। উপরন্তু তিনি তাদেরকে ইসলামের সরল ও সোজা পথে চলার তাওফীক দেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَۚ قُلۡ فَمَن يَمۡلِكُ مِنَ ٱللَّهِ شَيۡـًٔا إِنۡ أَرَادَ أَن يُهۡلِكَ ٱلۡمَسِيحَ ٱبۡنَ مَرۡيَمَ وَأُمَّهُۥ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗاۗ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَاۚ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
১৭. “নিশ্চয়ই মাসীহ ‘ঈসা ইবনু মারইয়ামই হলেন স্বয়ং আল্লাহ” এর প্রবক্তা খ্রিস্টানরা কাফির হয়ে গেছে। হে রাসূল! আপনি তাদেরকে বলুন: আল্লাহ তা‘আলা যদি মাসীহ ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম, তাঁর মা এবং দুনিয়ার সকলকে ধ্বংস করার ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে কে আছে এমন যে আল্লাহ তা‘আলাকে এ কাজে বাধা দিতে সক্ষম?! যদি কেউ তাঁকে এ কাজে বাধা দিতে সক্ষমই না হয়ে থাকে তাহলে তা এটা প্রমাণ করে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই। আর ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম, তাঁর মা এবং দুনিয়ার সকল সৃষ্টি একমাত্র আল্লাহরই সৃষ্টি। আকাশ-জমিন ও এতদুভয়ের মাঝে যা কিছু আছে তার মালিকানা একমাত্র আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যা সৃষ্টি করতে চেয়েছেন তার মধ্যকার অন্যতম হলেন ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম)। তাই তিনি তাঁর বান্দা ও রাসূল। আর আল্লাহ তা‘আলা সব কিছু করতেই সক্ষম।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• تَرْك العمل بمواثيق الله وعهوده قد يوجب وقوع العداوة وإشاعة البغضاء والتنافر والتقاتل بين المخالفين لأمر الله تعالى.
ক. আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা ও অঙ্গীকার অনুযায়ী আমল না করা কখনো কখনো আল্লাহর আদেশ বিরোধীদের মাঝে শত্রæতা, বিদ্বেষ, ঘৃণা ও হত্যাকাÐের জন্ম দেয়।

• الرد على النصارى القائلين بأن الله تعالى تجسد في المسيح عليه السلام، وبيان كفرهم وضلال قولهم.
খ. সেই খ্রিস্টানদের জবাব যারা বলে: আল্লাহ তা‘আলা মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) এর শরীরে প্রবেশ করেছেন। উপরন্তু তাদের কথার ভ্রষ্টতা ও কুফরির বর্ণনা।

• من أدلة بطلان ألوهية المسيح أن الله تعالى إن أراد أن يهلك المسيح وأمه عليهما السلام وجميع أهل الأرض فلن يستطيع أحد رده، وهذا يثبت تفرده سبحانه بالأمر وأنه لا إله غيره.
গ. মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) এর ইলাহ হওয়ার ব্যাপারটি বাতিল হওয়ার অন্যতম প্রমাণ হলো আল্লাহ তা‘আলা যদি চান মাসীহ (আলাইহিস-সালাম), তাঁর মা ও সকল দুনিয়াবাসীকে ধ্বংস করে দিতে তাহলে কেউ তা প্রতিরোধ করতে পারবে না। এটি আদেশের ক্ষেত্রে আল্লাহর একক হওয়া এবং তিনি ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ না থাকাই প্রমাণ করে।

• من أدلة بطلان ألوهية المسيح أن الله تعالى يُذَكِّر بكونه تعالى ﴿ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ﴾ (المائدة: 17)، فهو يخلق من الأبوين، ويخلق من أم بلا أب كعيسى عليه السلام، ويخلق من الجماد كحية موسى عليه السلام، ويخلق من رجل بلا أنثى كحواء من آدم عليهما السلام.
ঘ. মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) এর ইলাহ হওয়ার ব্যাপারটি বাতিল হওয়ার আরেকটি অন্যতম প্রমাণ হলো আল্লাহ তা‘আলা এ কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি মাতা-পিতা উভয় থেকে সৃষ্টি করেন। তেমনিভাবে পিতা ছাড়া মা থেকেও সৃষ্টি করেন যেমন: ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম)। আবার তিনি জড় পদার্থ থেকেও সৃষ্টি করেন যেমন: মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সাপ। তেমনিভাবে তিনি মহিলা ছাড়া পুরুষ থেকেও সৃষ্টি করেন যেমন: আদম (আলাইহিস-সালাম) থেকে হাওয়া।

وَقَالَتِ ٱلۡيَهُودُ وَٱلنَّصَٰرَىٰ نَحۡنُ أَبۡنَٰٓؤُاْ ٱللَّهِ وَأَحِبَّٰٓؤُهُۥۚ قُلۡ فَلِمَ يُعَذِّبُكُم بِذُنُوبِكُمۖ بَلۡ أَنتُم بَشَرٞ مِّمَّنۡ خَلَقَۚ يَغۡفِرُ لِمَن يَشَآءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشَآءُۚ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَاۖ وَإِلَيۡهِ ٱلۡمَصِيرُ
১৮. ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রত্যেকেই দাবি করে যে, তারা আল্লাহর সন্তান ও প্রিয়পাত্র। হে রাসূল! আপনি তাদের দাবি খÐন করতে গিয়ে বলুন: তাহলে তোমাদের কৃত পাপের জন্য আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে শাস্তি দেন কেন?! তোমাদের দাবি অনুযায়ী তোমরা যদি সত্যিই তাঁর প্রিয়পাত্র হতে তাহলে তিনি তোমাদেরকে দুনিয়াতে হত্যা ও বিকৃতির মাধ্যমে এবং আখিরাতে আগুনের মাধ্যমে শাস্তি দিতেন না। কারণ, তিনি তো তাঁর প্রিয় পাত্রকে শাস্তি দেন না। বরং তোমরা অন্য মানুষের মতোই সাধারণ মানুষ। তাদের মধ্যকার যে ভালো করবে তিনি তাকে জান্নাত দিয়ে প্রতিদান দিবেন আর যে খারাপ করবে তাকে জাহান্নাম দিয়ে শাস্তি দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা যাকে চান তাকেই তাঁর দয়ায় ক্ষমা করেন আর যাকে চান তাকেই তাঁর ইনসাফ ভিত্তিক শাস্তি দিয়ে থাকেন। একমাত্র আল্লাহর জন্যই আসমান, জমিন ও এতদুভয়ের সব কিছুর মালিকানা। একমাত্র তাঁর দিকেই সব কিছুর প্রত্যাবর্তন।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ قَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمۡ عَلَىٰ فَتۡرَةٖ مِّنَ ٱلرُّسُلِ أَن تَقُولُواْ مَا جَآءَنَا مِنۢ بَشِيرٖ وَلَا نَذِيرٖۖ فَقَدۡ جَآءَكُم بَشِيرٞ وَنَذِيرٞۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
১৯. হে ইহুদি ও খ্রিস্টান আহলে কিতাব! রাসূলদের আগমন দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা এবং আমার রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে পাঠানোর কঠিন প্রয়োজনীয়তা দেখার পরই তিনি তোমাদের নিকট এসেছেন। যাতে তোমরা ওজর-আপত্তি করতে না পারো, আমাদের কাছে আল্লাহর সাওয়াবের সুসংবাদদাতা এবং তাঁর শাস্তির প্রতি ভীতি প্রদর্শনকারী কোন রাসূলই আসেননি। তাই আল্লাহর সাওয়াবের সুসংবাদ এবং তাঁর শাস্তি প্রতি ভীতি প্রদর্শন করতে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তোমাদের কাছে এসেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা সব কিছু করতে সক্ষম। কোন বস্তুই তাঁকে অক্ষম করতে পারে না। আর তাঁর শক্তির একটি আলামত হলো রাসূলদেরকে পাঠানো এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মাধ্যমে তাঁদের সমাপ্তি ঘটানো।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَإِذۡ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوۡمِهِۦ يَٰقَوۡمِ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَةَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡ إِذۡ جَعَلَ فِيكُمۡ أَنۢبِيَآءَ وَجَعَلَكُم مُّلُوكٗا وَءَاتَىٰكُم مَّا لَمۡ يُؤۡتِ أَحَدٗا مِّنَ ٱلۡعَٰلَمِينَ
২০. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন মূসা (আলাইহিস-সালাম) তাঁর সম্প্রদায় বনী ইসরাঈলকে বললেন: হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা নিজেদের মুখ ও অন্তর দিয়ে আল্লাহর সে নিয়ামতের কথা স্মরণ করো যখন তিনি তোমাদের মাঝে এমন নবীদেরকে পাঠিয়েছেন যাঁরা তোমাদেরকে হিদায়েতের দিকে ডাকে। আর তিনি তোমাদেরকে বাদশাহ বানিয়েছেন। তোমরা একদিন বাধ্যতামূলক গোলাম ছিলে। আর আজ নিজেরাই নিজেদের মালিক হয়েছো। উপরন্তু তিনি তোমাদেরকে এমন নিয়ামত দিয়েছেন যা ইতোপূর্বে তোমাদের সমকালীন আর কাউকে দেননি।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰقَوۡمِ ٱدۡخُلُواْ ٱلۡأَرۡضَ ٱلۡمُقَدَّسَةَ ٱلَّتِي كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡ وَلَا تَرۡتَدُّواْ عَلَىٰٓ أَدۡبَارِكُمۡ فَتَنقَلِبُواْ خَٰسِرِينَ
২১. মূসা (আলাইহিস-সালাম) বললেন: হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা পবিত্র ভ‚মি তথা বাইতুল-মাক্বদিস এবং তার আশপাশের এলাকায় প্রবেশ করো। যাতে প্রবেশ ও তথা কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করার ওয়াদা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সাথে করেছেন। আর তোমরা প্রবল শক্তিধরদের সামনে পরাজিত হয়ো না। তা হলে দুনিয়া ও আখিরাত উভকালেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالُواْ يَٰمُوسَىٰٓ إِنَّ فِيهَا قَوۡمٗا جَبَّارِينَ وَإِنَّا لَن نَّدۡخُلَهَا حَتَّىٰ يَخۡرُجُواْ مِنۡهَا فَإِن يَخۡرُجُواْ مِنۡهَا فَإِنَّا دَٰخِلُونَ
২২. মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায় তাঁকে বললো: হে মূসা! নিশ্চয়ই পবিত্র ভ‚মিতে কঠিন যুদ্ধবাজ শক্তিশালী একটি সম্প্রদায় রয়েছে। সেখানে প্রবেশে আমাদের জন্য এটি বড় বাধা। তাই তারা থাকা পর্যন্ত আমরা তাতে কখনো প্রবেশ করবো না। কারণ, তাদের সাথে যুদ্ধ করার আমাদের কোন শক্তি-সামর্থ্য নেই। তারা সেখান থেকে বের হলেই কেবল আমরা সেখানে ঢুকবো।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالَ رَجُلَانِ مِنَ ٱلَّذِينَ يَخَافُونَ أَنۡعَمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِمَا ٱدۡخُلُواْ عَلَيۡهِمُ ٱلۡبَابَ فَإِذَا دَخَلۡتُمُوهُ فَإِنَّكُمۡ غَٰلِبُونَۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَتَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ
২৩. মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায়ের দু’ ব্যক্তি যারা আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর শাস্তিকে ভয় পায় এবং যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আনুগত্যের তাওফীকের মতো বিশেষ নিয়ামতটুকু দিয়েছেন তারা নিজেদের সম্প্রদায়কে মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর আদেশ মানার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে গিয়ে বললো: তোমরা সাহস করে এ প্রকাÐ শক্তিধরদের দরজায় আঘাত করো। তোমরা যদি তা করতে পারো তাহলে তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান ও বৈষয়িক উপকরণ সংগ্রহের ভিত্তিতে জয় পাওয়ার আল্লাহর সাধারণ নিয়মের উপর আস্থা রেখে তাঁর ইচ্ছায় তাদের উপর অচিরেই নিশ্চিত জয়ী হবে। তোমরা সত্যিকারের মু’মিন হলে একমাত্র আল্লাহর উপরই নির্ভরশীল ও তাঁর উপর ভরসা করো। কারণ, একমাত্র ঈমানই কাউকে তাঁর উপর ভরসা করতে বাধ্য করে।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• تعذيب الله تعالى لكفرة بني إسرائيل بالمسخ وغيره يوجب إبطال دعواهم في كونهم أبناء الله وأحباءه.
ক. বনী ইসরাঈলের কাফিরদেরকে আল্লাহর শাস্তি দেয়া তারা আল্লাহর সন্তান ও তাঁর প্রিয়পাত্র হওয়ার দাবির অসারতা প্রমাণ করে।

• التوكل على الله تعالى والثقة به سبب لاستنزال النصر.
খ. আল্লাহর উপর ভরসা ও দৃঢ় আস্থা আল্লাহর পক্ষ থেকে বিজয় পাওয়ার বিশেষ মাধ্যম।

• جاءت الآيات لتحذر من الأخلاق الرديئة التي كانت عند بني إسرائيل.
গ. উক্ত আয়াতগুলোতে বনী ইসরাঈলের নিকৃষ্ট চরিত্রগুলোর ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।

• الخوف من الله سبب لنزول النعم على العبد، ومن أعظمها نعمة طاعته سبحانه.
ঘ. আল্লাহভীতি বান্দার নিয়ামতপ্রাপ্তির একটি মাধ্যম। যার অন্যতম হচ্ছে তাঁরই আনুগত্যের নিয়ামত।

قَالُواْ يَٰمُوسَىٰٓ إِنَّا لَن نَّدۡخُلَهَآ أَبَدٗا مَّا دَامُواْ فِيهَا فَٱذۡهَبۡ أَنتَ وَرَبُّكَ فَقَٰتِلَآ إِنَّا هَٰهُنَا قَٰعِدُونَ
২৪. মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায় তথা বনী ইসরাঈল তাদের নবী মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর আদেশ অমান্য করার ক্ষেত্রে নিজেদের অনড় অবস্থান দেখাতে গিয়ে বললো: এ প্রকাÐ শক্তিধররা এ শহরে অবস্থান করা পর্যন্ত আমরা কখনো প্রবেশ করবো না। তাই হে মূসা! আপনি ও আপনার রব গিয়ে এ প্রকাÐ শক্তিধরদের সাথে যুদ্ধ করুন আর আমরা আপনাদের সাথে যুদ্ধ করতে না গিয়ে এখানেই অবস্থান করছি।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالَ رَبِّ إِنِّي لَآ أَمۡلِكُ إِلَّا نَفۡسِي وَأَخِيۖ فَٱفۡرُقۡ بَيۡنَنَا وَبَيۡنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَٰسِقِينَ
২৫. মূসা (আলাইহিস-সালাম) তাঁর রব্বকে বললেন: হে আমার রব! আমি ও আমার ভাই হারূন ছাড়া কারো উপর আমার কর্তৃত্ব নেই। কাজেই আপনি আমাদের মাঝে এবং আপনি ও আপনার রাসূলের আনুগত্যের বাইরে অবস্থানকারী সম্প্রদায়ের মাঝে একটি ফায়সালা করে দিন।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالَ فَإِنَّهَا مُحَرَّمَةٌ عَلَيۡهِمۡۛ أَرۡبَعِينَ سَنَةٗۛ يَتِيهُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ فَلَا تَأۡسَ عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡفَٰسِقِينَ
২৬. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী মূসা (আলাইহিস-সালাম) কে বললেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈলের উপর চল্লিশ বছরের জন্য এ পবিত্র ভ‚মিতে প্রবেশ হারাম করেছেন। তারা এ সময় মরুভ‚মিতে পথ না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরবে। তাই হে মূসা! আপনি আল্লাহর আনুগত্য থেকে বের হওয়া সম্প্রদায়ের জন্য কোন হা-হুতাশ করবেন না। কারণ, তারা যে শাস্তি পাচ্ছে তা তাদের পাপের ফসল।
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ وَٱتۡلُ عَلَيۡهِمۡ نَبَأَ ٱبۡنَيۡ ءَادَمَ بِٱلۡحَقِّ إِذۡ قَرَّبَا قُرۡبَانٗا فَتُقُبِّلَ مِنۡ أَحَدِهِمَا وَلَمۡ يُتَقَبَّلۡ مِنَ ٱلۡأٓخَرِ قَالَ لَأَقۡتُلَنَّكَۖ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ ٱللَّهُ مِنَ ٱلۡمُتَّقِينَ
২৭. হে রাসূল! আপনি এ ইহুদি যালিম হিংসুকদেরকে আদম (আলাইহিস-সালাম) এর দু’ সন্তানের প্রকৃত ঘটনা জানিয়ে দিন। তারা হলো হাবীল ও কাবীল। তারা উভয়ে আল্লাহর নৈকট্যার্জনে একটি করে কুরবানী করলে আল্লাহ তা‘আলা হাবীলেরটি গ্রহণ করেন। আর কাবীলেরটি বর্জন করেন। কারণ, হাবীল ছিলো মুত্তাকী। আর কাবীল ছিলো বিদ্রোহী। তখন কাবীল হিংসাবশত হাবীলের কুরবানী কবুল হওয়াকে অপছন্দ করে উদ্ধত হয়ে বললো: হাবীল! আমি তোমাকে নিশ্চিত হত্যা করবো। তখন হাবীল ন¤্রভাবে বললো: আল্লাহ তা‘আলা তো কেবল তাঁর আদেশ-নিষেধ মান্যকারী মুত্তাকীর কুরবানীই কবুল করে থাকেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَئِنۢ بَسَطتَ إِلَيَّ يَدَكَ لِتَقۡتُلَنِي مَآ أَنَا۠ بِبَاسِطٖ يَدِيَ إِلَيۡكَ لِأَقۡتُلَكَۖ إِنِّيٓ أَخَافُ ٱللَّهَ رَبَّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
২৮. তুমি আমাকে হত্যার জন্য আমার দিকে হাত বাড়ালেও আমি কিন্তু তোমার কর্মের ন্যায় তোমাকে প্রতিদান দেবো না। বস্তুতঃ এটি আমার পক্ষ থেকে কাপুরুষতা নয়। বরং আমি কেবল সকল সৃষ্টির রব আল্লাহকে ভয় করি।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِنِّيٓ أُرِيدُ أَن تَبُوٓأَ بِإِثۡمِي وَإِثۡمِكَ فَتَكُونَ مِنۡ أَصۡحَٰبِ ٱلنَّارِۚ وَذَٰلِكَ جَزَٰٓؤُاْ ٱلظَّٰلِمِينَ
২৯. সে তাকে আরো ভয় দেখিয়ে বলে: আমি চাই তুমি যুলুম ও অত্যাচারবশত আমাকে হত্যা করার গুনাহ নিয়ে তোমার পূর্বের গুনাহের দিকে ফিরে গিয়ে কিয়ামতের দিন জাহান্নামে প্রবেশকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। এ প্রতিদান মুলতঃ অত্যাচারীদেরই প্রতিদান। তোমাকে হত্যা করার গুনাহ নিয়ে তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া আমি চাই না।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَطَوَّعَتۡ لَهُۥ نَفۡسُهُۥ قَتۡلَ أَخِيهِ فَقَتَلَهُۥ فَأَصۡبَحَ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ
৩০. অতঃপর কাবীলের অসৎকর্মে প্ররোচনাকারী আত্মা তার ভাই হাবীলকে যুলুমবশত হত্যা করার ব্যাপারটিকে তার সামনে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করলে সে তাকে হত্যা করে। ফলে সে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদেরই অন্তর্ভুক্ত হয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَبَعَثَ ٱللَّهُ غُرَابٗا يَبۡحَثُ فِي ٱلۡأَرۡضِ لِيُرِيَهُۥ كَيۡفَ يُوَٰرِي سَوۡءَةَ أَخِيهِۚ قَالَ يَٰوَيۡلَتَىٰٓ أَعَجَزۡتُ أَنۡ أَكُونَ مِثۡلَ هَٰذَا ٱلۡغُرَابِ فَأُوَٰرِيَ سَوۡءَةَ أَخِيۖ فَأَصۡبَحَ مِنَ ٱلنَّٰدِمِينَ
৩১. তারপর আল্লাহ তা‘আলা একটি কাক পাঠালেন যে আরেকটি মৃত কাককে দাফন করার জন্য তার সামনেই মাটি খনন করতে লাগলো। যাতে সে কাবীলকে জানাতে পারে কীভাবে সে তার ভাইয়ের শরীর লুকাতে পারে। সে বললো: ধিক আমার! আমি এ কাকটির মতোও হতে পারলাম না যাতে আমি আমার ভাইয়ের লাশটি লুকাতে পারি? ফলে সে খুবই অনুতপ্ত হলো।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• مخالفة الرسل توجب العقاب، كما وقع لبني إسرائيل؛ إذ عاقبهم الله تعالى بالتِّيه.
ক. রাসূলদের বিরোধিতা শাস্তিকে অবধারিত করে। যা বনী ইসরাঈলের ব্যাপারে ঘটেছিলো। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ভবঘুরের শাস্তি দিয়েছেন।

• قصة ابني آدم ظاهرها أن أول ذنب وقع في الأرض - في ظاهر القرآن - هو الحسد والبغي، والذي أدى به للظلم وسفك الدم الحرام الموجب للخسران.
খ. আদম (আলাইহিস-সালাম) এর দু’ ছেলের ঘটনার বাহ্যিক দিক হলো, সর্বপ্রথম দুনিয়াতে যে গুনাহটি সংঘটিত হলো তা হলো হিংসা ও অত্যাচার। যা কুর‘আনের বাহ্যিক শব্দ থেকেই বুঝা যায়। যা যুলুম ও হারাম রক্ত প্রবাহিত করা পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়। যা একান্ত ক্ষতিগ্রস্ততারই কারণ।

• الندامة عاقبة مرتكبي المعاصي.
গ. লজ্জাই পাপে লিপ্তদের শেষ পরিণতি।

• أن من سَنَّ سُنَّة قبيحة أو أشاع قبيحًا وشجَّع عليه، فإن له مثل سيئات من اتبعه على ذلك.
ঘ. অসৎকর্ম বাস্তবায়নকারী, প্রচারক ও তাতে উৎসাহদাতা তার অনুসারীর গুনাহের সমপরিমাণ পাপের অংশীদার হবে।

مِنۡ أَجۡلِ ذَٰلِكَ كَتَبۡنَا عَلَىٰ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفۡسَۢا بِغَيۡرِ نَفۡسٍ أَوۡ فَسَادٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِيعٗا وَمَنۡ أَحۡيَاهَا فَكَأَنَّمَآ أَحۡيَا ٱلنَّاسَ جَمِيعٗاۚ وَلَقَدۡ جَآءَتۡهُمۡ رُسُلُنَا بِٱلۡبَيِّنَٰتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرٗا مِّنۡهُم بَعۡدَ ذَٰلِكَ فِي ٱلۡأَرۡضِ لَمُسۡرِفُونَ
৩২. কাবীল তার ভাইকে হত্যা করার দরুন আমি বনী ইসরাঈলকে জানিয়ে দিলাম যে, কিসাস অথবা কুফরি কিংবা ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মাধ্যমে জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করার ন্যায় কোন কারণ ছাড়া অন্যকে হত্যা করলে সে তাবৎ দুনিয়ার সকল মানুষ হত্যাকারীর সমান পাপী হবে। কারণ, তার নিকট অপরাধী ও নির্দোষের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। আর যে ব্যক্তি কোন মানুষকে হত্যা করা হারাম মনে করে কাউকে হত্যা না করে আল্লাহর হারামকৃত কাউকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকলো সে যেন দুনিয়ার সকল মানুষকে বাঁচিয়ে দিলো। কারণ, তার এ কর্মকাÐের মাঝে সকলেরই নিরাপত্তা রয়েছে। বস্তুতঃ আমার রাসূলগণ বনী ইসরাঈলের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ ও প্রকাশ্য দলীল নিয়ে এসেছেন। এতদসত্তে¡ও তাদের অধিকাংশই গুনাহে লিপ্ত হওয়া ও তাঁর রাসূলগণের বিরোধিতার মাধ্যমে আল্লাহর সীমারেখা অতিক্রম করে গেছে।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِنَّمَا جَزَٰٓؤُاْ ٱلَّذِينَ يُحَارِبُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَسۡعَوۡنَ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوٓاْ أَوۡ يُصَلَّبُوٓاْ أَوۡ تُقَطَّعَ أَيۡدِيهِمۡ وَأَرۡجُلُهُم مِّنۡ خِلَٰفٍ أَوۡ يُنفَوۡاْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِۚ ذَٰلِكَ لَهُمۡ خِزۡيٞ فِي ٱلدُّنۡيَاۖ وَلَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
৩৩. যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ করে এবং হত্যা, ছিনতাই ও ডাকাতির মাধ্যমে জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি ও শত্রæতার প্রকাশ্য ঘোষণা দেয় তাদের শাস্তি হলো তাদেরকে ক্রুশবিদ্ধ করা ছাড়া হত্যা করা হবে অথবা ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা হবে কিংবা তাদের ডান হাত ও বাম পা কেটে দেয়া হবে এবং আবার করলে তার বাম হাত ও ডান পা কেটে দেয়া হবে অথবা তাদেরকে দেশান্তর করা হবে। এটি শুধু তাদের দুনিয়ার লাঞ্ছনা এবং পরকালে তো রয়েছে তাদের জন্য মহাশাস্তি।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِلَّا ٱلَّذِينَ تَابُواْ مِن قَبۡلِ أَن تَقۡدِرُواْ عَلَيۡهِمۡۖ فَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৩৪. তবে হে কর্তৃত্বশীলরা! এ ছিনতাইকারী ও ডাকাতদের যারা তোমাদের হাতে ধরা পড়ার আগেই তাওবা করে নেয় তোমরা জেনে রাখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাওবার পর তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। আর তাদের প্রতি তাঁর দয়ার একটি নমুনা হলো তাদের শাস্তিটুকু মওকুফ করে দেয়া।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱبۡتَغُوٓاْ إِلَيۡهِ ٱلۡوَسِيلَةَ وَجَٰهِدُواْ فِي سَبِيلِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ
৩৫. হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। আর আদিষ্ট কাজ আদায় ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য কামনা করো। উপরন্তু তাঁর সন্তুষ্টি কামনার্থে কাফিরদের সাথে যুদ্ধ করো। তা করতে পারলে তোমরা নিজেদের প্রাপ্যটুকু পাবে এবং আতঙ্কের বিষয় থেকে দূরে থাকতে পারবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَوۡ أَنَّ لَهُم مَّا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا وَمِثۡلَهُۥ مَعَهُۥ لِيَفۡتَدُواْ بِهِۦ مِنۡ عَذَابِ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنۡهُمۡۖ وَلَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ
৩৬. যারা আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরি করেছে যদি ধরে নেয়া হয় যে, তাদের প্রত্যেকেই দুনিয়ার সকল কিছু এবং তার সমপরিমাণের মালিক উপরন্তু তারা তা উপস্থাপন করেছে কিয়ামতের দিন আল্লাহর শাস্তি থেকে নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য তারপরও সে মুক্তিপণ তাদের থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• حرمة النفس البشرية، وأن من صانها وأحياها فكأنما فعل ذلك بجميع البشر، وأن من أتلف نفسًا بشرية أو آذاها من غير حق فكأنما فعل ذلك بالناس جميعًا.
ক. মানব জাতির কেউ কারো সম্মান রক্ষা করলে ধরে নেয়া হবে সে যেন সে উক্ত কর্মটি সকলের সাথেই করলো। আর যে তাকে ধ্বংস করলো ও তাকে অবৈধভাবে কষ্ট দিলো সে যেন উক্ত কর্মটি সকলের সাথেই করলো।

• عقوبة الذين يحاربون الله ورسوله ممن يفسدون بالقتل وانتهاب الأموال وقطع الطرق هي: القتل بلا صلب، أو مع الصلب، أو قطع الأطرف من خلاف، أو بتغريبهم من البلاد؛ وهذا على حسب ما صدر منهم.
খ. যারা আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তথা হত্যা, ছিনতাই ও ডাকাতির মাধ্যমে জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করেছে তাদের শাস্তি হলো ক্রুশবিদ্ধ করা ছাড়া হত্যা অথবা তা-সহ হত্যা কিংবা বিপরীত দিকের অঙ্গগুলো কেটে ফেলা অথবা দেশান্তর করা। এটি নির্ধারিত হবে মূলতঃ তাদের কর্ম অনুযায়ী।

• توبة المفسدين من المحاربين وقاطعي الطريق قبل قدرة السلطان عليهم توجب العفو.
গ. প্রশাসকের হাতে ধরা পড়ার আগে ডাকাত ও ছিনতাইকারী ফাসাদীদের তাওবা তাদের ক্ষমাকে সাব্যস্ত করে।

يُرِيدُونَ أَن يَخۡرُجُواْ مِنَ ٱلنَّارِ وَمَا هُم بِخَٰرِجِينَ مِنۡهَاۖ وَلَهُمۡ عَذَابٞ مُّقِيمٞ
৩৭. তারা জাহান্নামে ঢুকার পর তা থেকে বের হতে চাইলেও কখনো বের হতে পারবে না। বরং তাতে রয়েছে তাদের জন্য স্থায়ী শাস্তি।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَٱلسَّارِقُ وَٱلسَّارِقَةُ فَٱقۡطَعُوٓاْ أَيۡدِيَهُمَا جَزَآءَۢ بِمَا كَسَبَا نَكَٰلٗا مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ
৩৮. হে বিচারকরা! তোমরা চোর ও চুন্নি উভয়ের হাত কেটে দিবে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য শাস্তি ও প্রতিদান স্বরূপ। কারণ, তারা মানুষের সম্পদ অবৈধভাবে হরণ করেছে। উপরন্তু এটি তাদের ও অন্যান্যদের জন্য ভীতি প্রদর্শন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা পরাক্রমশালী। কোন বস্তুই তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। তিনি তাঁর শরীয়ত ও তাকদীরে অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَمَن تَابَ مِنۢ بَعۡدِ ظُلۡمِهِۦ وَأَصۡلَحَ فَإِنَّ ٱللَّهَ يَتُوبُ عَلَيۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٌ
৩৯. তবে কেউ চুরি থেকে বিরত থেকে আল্লাহর নিকট তাওবা করে এবং তার আমলটুকু ঠিক করে নিলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা দয়া করে তার তাওবাটুকু গ্রহণ করবেন। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের পাপসমূহ ক্ষমাকারী এবং তাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। তবে তাওবার মাধ্যমে তাদের দÐখানা রহিত হবে না যদি ব্যাপারটি প্রশাসকের নিকট পৌঁছে যায়।
Arabic explanations of the Qur’an:
أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ يُعَذِّبُ مَن يَشَآءُ وَيَغۡفِرُ لِمَن يَشَآءُۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
৪০. হে রাসূল! আপনি জানেন যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আসমান ও জমিনের মালিক। তিনি যা চান সেভাবে তা করতে পারেন। তিনি যাকে চান ইনসাফ ভিত্তিক শাস্তি দিবেন। আর যাকে চান স্বীয় অনুগ্রহে ক্ষমা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সব কিছুর উপর ক্ষমতাশীল। কোন বস্তু তাঁকে অক্ষম করতে পারে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ لَا يَحۡزُنكَ ٱلَّذِينَ يُسَٰرِعُونَ فِي ٱلۡكُفۡرِ مِنَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ ءَامَنَّا بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَلَمۡ تُؤۡمِن قُلُوبُهُمۡۛ وَمِنَ ٱلَّذِينَ هَادُواْۛ سَمَّٰعُونَ لِلۡكَذِبِ سَمَّٰعُونَ لِقَوۡمٍ ءَاخَرِينَ لَمۡ يَأۡتُوكَۖ يُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ مِنۢ بَعۡدِ مَوَاضِعِهِۦۖ يَقُولُونَ إِنۡ أُوتِيتُمۡ هَٰذَا فَخُذُوهُ وَإِن لَّمۡ تُؤۡتَوۡهُ فَٱحۡذَرُواْۚ وَمَن يُرِدِ ٱللَّهُ فِتۡنَتَهُۥ فَلَن تَمۡلِكَ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِ شَيۡـًٔاۚ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَمۡ يُرِدِ ٱللَّهُ أَن يُطَهِّرَ قُلُوبَهُمۡۚ لَهُمۡ فِي ٱلدُّنۡيَا خِزۡيٞۖ وَلَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٞ
৪১. হে রাসূল! যে মুনাফিকরা ঈমানকে প্রকাশ করে ও কুফরিকে লুকিয়ে রাখে তারা যেন রাগান্বিত করার জন্য কুফরি কর্মকাÐ দ্রæত প্রকাশ করে আপনাকে ব্যথিত করতে না পারে। তেমনিভাবে বড়দের মিথ্যা কথা মান্যকারী আপনার থেকে বিমুখ ইহুদিরাও যেন আপনাকে ব্যথিত করতে না পারে। তারা তাওরাতে থাকা আল্লাহর বাণীকে নিজেদের মতো করে বিকৃত করে। আর তাদের অনুসারীদেরকে বলে: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ফায়সালা তোমাদের মতো মনে হলে তার অনুসরণ করবে। আর মনের বিরোধী হলে তার ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা কারো ভ্রষ্টতা চাইলে তার ভ্রষ্টতা দূর করে তাকে সত্যের পথ দেখাবে হে রাসূল! আপনি এমন কোন লোক খুঁজে পাবেন না। মূলতঃ এ সকল বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ইহুদি ও মুনাফিকদের অন্তরগুলোকে আল্লাহ তা‘আলা কুফরি থেকে পরিচ্ছন্ন করার ইচ্ছা করেন নি। দুনিয়াতে তাদের জন্য রয়েছে লজ্জা ও লাঞ্ছনা। আর আখিরাতে রয়েছে তাদের জন্য জাহান্নামের মহাশাস্তি।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• حكمة مشروعية حد السرقة: ردع السارق عن التعدي على أموال الناس، وتخويف من عداه من الوقوع في مثل ما وقع فيه.
ক. চুরির দÐবিধির মূল রহস্য হলো চোরকে মানুষের সম্পদের উপর আক্রমণ থেকে ফিরানো এবং অন্যদেরকে এ জাতীয় কর্মকাÐে লিপ্ত হওয়া থেকে ভীতি প্রদর্শন।

• قَبول توبة السارق ما لم يبلغ السلطان وعليه إعادة ما سرق، فإذا بلغ السلطان وجب الحكم، ولا يسقط بالتوبة.
খ. চুরির ব্যাপারটি প্রশাসকের নিকট না পৌঁছালে চোরের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে। তবে সে যা চুরি করেছে তা অবশ্যই মালিককে ফেরত দিবে। কিন্তু প্রশাসকের নিকট ব্যাপারটি পৌঁছে গেলে দÐবিধি বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে। তখন তা তাওবার মাধ্যমে রহিত হবে না।

• يحسن بالداعية إلى الله ألَّا يحمل همًّا وغمًّا بسبب ما يحصل من بعض الناس مِن كُفر ومكر وتآمر؛ لأن الله تعالى يبطل كيد هؤلاء.
গ. আল্লাহর পথের একজন দা‘য়ীর উচিত হবে সে যেন কোন মানুষের কুফরি, ধোঁকা ও ষড়যন্ত্রের দরুন চিন্তিত ও ব্যথিত না হয়। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা নিজেই তাদের ষড়যন্ত্র বাতিল করে দিবেন।

• حِرص المنافقين على إغاظة المؤمنين بإظهار أعمال الكفر مع ادعائهم الإسلام.
ঘ. মুনাফিকরা মুখে ইসলামের দাবি করা সত্তে¡ও সর্বদা কুফরি কর্মকাÐ প্রকাশ করে মু’মিনদেরকে রাগান্বিত করতে চাইবে।

سَمَّٰعُونَ لِلۡكَذِبِ أَكَّٰلُونَ لِلسُّحۡتِۚ فَإِن جَآءُوكَ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُمۡ أَوۡ أَعۡرِضۡ عَنۡهُمۡۖ وَإِن تُعۡرِضۡ عَنۡهُمۡ فَلَن يَضُرُّوكَ شَيۡـٔٗاۖ وَإِنۡ حَكَمۡتَ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِٱلۡقِسۡطِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُقۡسِطِينَ
৪২. এ ইহুদিরা মিথ্যা কথা বেশি শুনে ও সুদের মতো হারাম সম্পদ বেশি ভক্ষণ করে। তারা আপনার নিকট ফায়সালার জন্য আসলে হে রাসূল! তাদের ফায়সালা আপনার এখতিয়ার। আপনি উভয় ক্ষেত্রেই স্বাধীন। আপনি তাদের মাঝে ফায়সালা করা পরিত্যাগ করলে তারা আপনার কোন ধরনের ক্ষতি করতে পারবে না। আর ফায়সালা করলে ইনসাফ ভিত্তিক ফায়সালা করুন। যদিও তারা জালিম ও আপনাদের শত্রæ হোক না কেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা বিচার-ফায়সালায় ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন। যদিও বিচারপ্রার্থীরা বিচারকের শত্রæ হোক না কেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَكَيۡفَ يُحَكِّمُونَكَ وَعِندَهُمُ ٱلتَّوۡرَىٰةُ فِيهَا حُكۡمُ ٱللَّهِ ثُمَّ يَتَوَلَّوۡنَ مِنۢ بَعۡدِ ذَٰلِكَۚ وَمَآ أُوْلَٰٓئِكَ بِٱلۡمُؤۡمِنِينَ
৪৩. বস্তুতঃ তাদের ব্যাপারটি খুবই আশ্চর্যজনক। তারা আপনার সাথে কুফরি করে। আবার তাদের মন মতো বিচার পেতে তারাই আপনার নিকট বিচারপ্রার্থী হয়। অথচ তাদের নিকটই রয়েছে তাওরাত যার উপর তারা ঈমান আনার দাবি করে আর তাতেই রয়েছে আল্লাহর বিধান। আবার আপনার ফায়সালা তাদের মন মতো না হলে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অতএব তারা দু’ অপরাধই একত্রে করলো: তাদের কিতাবে থাকা ফায়সালার সাথে কুফরি এবং আপনার ফায়সালা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। তাদের এ কর্মকাÐ বস্তুতঃ মু’মিনদের কর্মকাÐ নয়। তাই তারা আসলেই আপনাতে ও আপনার আনীত বিধানে ঈমান আনয়নকারী নয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِنَّآ أَنزَلۡنَا ٱلتَّوۡرَىٰةَ فِيهَا هُدٗى وَنُورٞۚ يَحۡكُمُ بِهَا ٱلنَّبِيُّونَ ٱلَّذِينَ أَسۡلَمُواْ لِلَّذِينَ هَادُواْ وَٱلرَّبَّٰنِيُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ بِمَا ٱسۡتُحۡفِظُواْ مِن كِتَٰبِ ٱللَّهِ وَكَانُواْ عَلَيۡهِ شُهَدَآءَۚ فَلَا تَخۡشَوُاْ ٱلنَّاسَ وَٱخۡشَوۡنِ وَلَا تَشۡتَرُواْ بِـَٔايَٰتِي ثَمَنٗا قَلِيلٗاۚ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡكَٰفِرُونَ
৪৪. নিশ্চয়ই আমি মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর উপর তাওরাত নাযিল করেছি। তাতে রয়েছে কল্যাণের প্রতি ইঙ্গিত ও পথ প্রদর্শন এবং এমন আলোকিত হওয়ার জ্যোতি। আল্লাহর একান্ত অনুগত বনী ইসরাঈলের নবীগণ যা কর্তৃক ফায়সালা করে থাকেন। আরো তা কর্তৃক ফায়সালা করে থাকেন এমন আলিম ও ফকীহগণ যারা মানুষকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন সে কিতাবের যে কিতাবের সংরক্ষণকারী ও আমানতদার আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে বানিয়েছেন। যে কিতাবকে তাঁরা সকল ধরনের পরিবর্তন ও বিকৃতি থেকে রক্ষা করেন এবং তাঁরা তার সত্যতার ব্যাপারেও সাক্ষী। উপরন্তু সে ব্যাপারে মানুষরা তাঁদের দিকেই ফিরে আসে। তাই হে ইহুদিরা তোমরা মানুষকে ভয় করো না। বরং তোমরা শুধু আমাকেই ভয় করো। আর তোমরা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানানুযায়ী ফায়সালা করার পরিবর্তে সামান্যটুকু মূল্য তথা নের্তৃত্ব, সম্মান ও সম্পদ গ্রহণ করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর অবতীর্ণ ওহী অনুযায়ী বিচার-ফায়সালা করে না চাই তা হালাল মনে করে হোক অথবা অন্যটিকে এর চেয়ে উৎকৃষ্ট কিংবা সমান মনে করে হোক তারা সত্যিই কাফির।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَكَتَبۡنَا عَلَيۡهِمۡ فِيهَآ أَنَّ ٱلنَّفۡسَ بِٱلنَّفۡسِ وَٱلۡعَيۡنَ بِٱلۡعَيۡنِ وَٱلۡأَنفَ بِٱلۡأَنفِ وَٱلۡأُذُنَ بِٱلۡأُذُنِ وَٱلسِّنَّ بِٱلسِّنِّ وَٱلۡجُرُوحَ قِصَاصٞۚ فَمَن تَصَدَّقَ بِهِۦ فَهُوَ كَفَّارَةٞ لَّهُۥۚ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ
৪৫. আমি তাওরাতে ইহুদিদের উপর যে বিষয়টি অবধারিত করেছি তা হলো যে কাউকে ইচ্ছাকৃত অবৈধভাবে হত্যা করবে তাকে তার পরিবর্তে হত্যা করা হবে। যে চোখ উপড়ে ফেলবে তার চোখও উপড়ে ফেলা হবে। যে নাক কেটে ফেলবে তার নাকও কেটে দেয়া হবে। যে কান কেটে ফেলবে তার কানও কেটে দেয়া হবে। যে দাঁত উঠিয়ে নিবে তার দাঁতও উঠিয়ে নেয়া হবে। আমি তাদের উপর আরো অবধারিত করেছি যে, জখম করা হলে অপরাধীকে তার অপরাধের সমপরিমাণ শাস্তি দেয়া হবে। আর যে অপরাধীকে এমনিতেই ক্ষমা করে দিবে তার এ ক্ষমা তার গুনাহগুলোর জন্য কাফফারা হবে। কারণ, সে তার জালিমকে ক্ষমা করলো। আর যে কিসাস ও অন্যান্য বিষয়ে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করবে না সে বস্তুতঃ আল্লাহর দেয়া সীমারেখা অতিক্রমকারী।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• تعداد بعض صفات اليهود، مثل الكذب وأكل الربا ومحبة التحاكم لغير الشرع؛ لبيان ضلالهم وللتحذير منها.
ক. ইহুদিদের কিছু বৈশিষ্ট্যের পরিসংখ্যান। যেমন: মিথ্যা, সুদ খাওয়া, শরীয়ত ছাড়া অন্য কিছুর ফায়সালাকে ভালোবাসা। এটি মূলতঃ তাদের ভ্রষ্টতা বর্ণনা করার জন্য এবং সেগুলো থেকে অন্যদেরকে সতর্ক করার জন্য।

• بيان شرعة القصاص العادل في الأنفس والجراحات، وهي أمر فرضه الله تعالى على من قبلنا.
খ. ব্যক্তি হত্যা ও জখমের ক্ষেত্রে ন্যায়পূর্ণ কিসাসের বিধানের বর্ণনা। সেটি এমন একটি ব্যাপার যা আল্লাহ তা‘আলা আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করে দিয়েছেন।

• الحث على فضيلة العفو عن القصاص، وبيان أجرها العظيم المتمثّل في تكفير الذنوب.
গ. কিসাস না নিয়ে ক্ষমা করার ফযীলতের প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং তার মহা প্রতিদানের বর্ণনা যা গুনাহের কাফফারা কর্তৃক রূপায়িত।

• الترهيب من الحكم بغير ما أنزل الله في شأن القصاص وغيره.
ঘ. কিসাস ও অন্যান্য ব্যাপারে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান ছাড়া অন্য কিছুর আলোকে ফায়সালা করার প্রতি ভীতিপ্রদর্শন।

وَقَفَّيۡنَا عَلَىٰٓ ءَاثَٰرِهِم بِعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِۖ وَءَاتَيۡنَٰهُ ٱلۡإِنجِيلَ فِيهِ هُدٗى وَنُورٞ وَمُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلتَّوۡرَىٰةِ وَهُدٗى وَمَوۡعِظَةٗ لِّلۡمُتَّقِينَ
৪৬. আর আমি বনী ইসরাঈলের নবীদের পরপরই ‘ঈসা ইবনু মারইয়ামকে পাঠিয়েছি তাওরাতের বিষয়ে বিশ্বাসী ও তা কর্তৃক বিচারক হিসেবে। উপরন্তু আমি তাঁকে ইঞ্জীল দিয়েছি যাতে সত্যের প্রতি দিশা ও সন্দেহ দূরকারী প্রমাণাদি রয়েছে। আরো তাতে রয়েছে বিধানগত সমস্যাদির সমাধান। যা পূর্বের অবতীর্ণ তাওরাত মাফিক। শুধু সামান্য বিধানেই পার্থক্য যা পরবর্তীতে রহিত হয়েছে। বস্তুতঃ আমি ইঞ্জীলকে হিদায়েত বানিয়েছি যা কর্তৃক হিদায়েত গ্রহণ করা যায় এবং তাদের উপর হারামকৃত বস্তুতে লিপ্ত হওয়া থেকে প্রতিহতকারী।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَلۡيَحۡكُمۡ أَهۡلُ ٱلۡإِنجِيلِ بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فِيهِۚ وَمَن لَّمۡ يَحۡكُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡفَٰسِقُونَ
৪৭. খ্রিস্টানরা যেন আল্লাহ তা‘আলার ইঞ্জীলে অবতীর্ণ বিষয়ে ঈমান আনে এবং সে অনুযায়ী তারা ফায়সালা করে তাদের নিকট মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে পাঠানোর পূর্বে তাঁর সত্যতা সম্পর্কে যে বাণী এসেছে সে ব্যাপারে। যারা আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে না তারা মূলতঃ আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে অবস্থানকারী, সত্য বর্জনকারী ও বাতিলমুখী।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَأَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَمُهَيۡمِنًا عَلَيۡهِۖ فَٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَكُمۡ أُمَّةٗ وَٰحِدَةٗ وَلَٰكِن لِّيَبۡلُوَكُمۡ فِي مَآ ءَاتَىٰكُمۡۖ فَٱسۡتَبِقُواْ ٱلۡخَيۡرَٰتِۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِيعٗا فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ فِيهِ تَخۡتَلِفُونَ
৪৮. হে রাসূল! আমি সন্দেহ ও সংশয়হীন সত্য দিয়ে আপনার উপর কুর‘আন নাযিল করেছি। যা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে এবং যা তার আগের অবতীর্ণ কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী ও সেগুলোর আমানত রক্ষাকারী। সুতরাং সেগুলোর যে বিধানের সাথে কুর‘আনের মিল রয়েছে সেটি সত্য। আর যা তার বিপরীত তা বাতিল। তাই আপনি আল্লাহ তা‘আলার নাযিল করা বিষয়ের ভিত্তিতে মানুষের মাঝে ফায়সালা করুন। আর আল্লাহ তা‘আলা আপনার উপর যে নিঃসন্দেহ সত্য নাযিল করেছেন তা বাদ দিয়ে আপনি তাদের গৃহীত খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেন না। আমি প্রত্যেক উম্মতকে কার্জগত বিধানাবলীর একটি শরীয়ত ও সুস্পষ্ট পদ্ধতি দিয়েছি যা কর্তৃক তারা হিদায়েত গ্রহণ করতে পারে। আল্লাহ চাইলে সকল শরীয়তকে এক করে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে প্রত্যেক উম্মতকে একটি করে শরীয়ত দিয়েছেন তা দিয়ে সবাইকে পরীক্ষা করার জন্য। যাতে অনুগত ও অবাধ্য প্রকাশ পায়। তাই তোমরা কল্যাণকর কর্মসমূহের দিকে দ্রæত অগ্রসর হও এবং অসৎ কাজগুলোকে পরিত্যাগ করো। কিয়ামতের দিন একমাত্র আল্লাহর দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অচিরেই তিনি তোমাদেরকে দ্ব›দ্বপূর্ণ বিষয়সমূহ জানিয়ে দিবেন এবং তোমাদের অগ্রিম প্রেরিত আমলগুলোর প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَأَنِ ٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ وَٱحۡذَرۡهُمۡ أَن يَفۡتِنُوكَ عَنۢ بَعۡضِ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ إِلَيۡكَۖ فَإِن تَوَلَّوۡاْ فَٱعۡلَمۡ أَنَّمَا يُرِيدُ ٱللَّهُ أَن يُصِيبَهُم بِبَعۡضِ ذُنُوبِهِمۡۗ وَإِنَّ كَثِيرٗا مِّنَ ٱلنَّاسِ لَفَٰسِقُونَ
৪৯. হে রাসূল! আল্লাহ আপনার প্রতি যে বিধান নাযিল করেছেন আপনি সে অনুযায়ী তাদের মাঝে ফায়সালা করুন। আপনি কখনো তাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ সৃষ্ট খেয়াল-খুশির অনুকরণ করবেন না। আর আপনি এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন যে, তারা যেন আপনাকে আল্লাহ তা‘আলা আপনার উপর যা নাযিল করেছেন তার কিয়দংশ থেকে পথভ্রষ্ট করতে না পারে। তারা কখনো এ পথে চেষ্টা চালাতে সামান্যটুকুও ত্রæটি করবে না। তারা আপনার প্রতি নাযিল করা আল্লাহর ফায়সালা গ্রহণ থেকে বিমুখ হলে আপনি জেনে রাখুন যে, আল্লাহ তা‘আলা চান তাদের কিছু গুনাহর জন্য দুনিয়াতে আর সকল গুনাহর জন্য পরকালে শাস্তি দিতে। বস্তুতঃ অনেক মানুষই আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে।
Arabic explanations of the Qur’an:
أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ
৫০. তারা কি আপনার ফায়সালা থেকে বিমুখ হয়ে জাহিলী যুগের মূর্তিপূজকদের ফায়সালা কামনা করছে। যারা নিজের খেয়াল-খুশি অনুযায়ী বিচার-ফায়সালা করে থাকে?! দৃঢ় বিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহর চেয়ে সুন্দর ফায়সালাকারী আর কেউ নেই যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর রাসূলের উপর নাযিলকৃত বিধান বুঝতে সক্ষম। মূর্খ ও প্রবৃত্তিপূজারীদের জন্য নয় যারা নিজেদের খেয়াল-খুশি মাফিক কোন জিনিস না হলে তা গ্রহণ করে না। যদিও তা বাতিল হয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• الأنبياء متفقون في أصول الدين مع وجود بعض الفروق بين شرائعهم في الفروع.
ক. নবীগণ শরীয়তের শাখাগত বিষয়ে তাঁদের মাঝে কিছু পার্থক্য থাকলেও ধর্মের মৌলিক বিষয়াদিতে তাঁরা একমত।

• وجوب تحكيم شرع الله والإعراض عمّا عداه من الأهواء.
খ. আল্লাহর শরীয়তকে যে কোন বিষয়ে ফায়সালাকারী বানানো এবং তা ভিন্ন অন্যান্য মানুষের খেয়াল-খুশি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া ওয়াজিব।

• ذم التحاكم إلى أحكام أهل الجاهلية وأعرافهم.
গ. জাহিলী লোকদের বিধি-বিধান ও তাদের প্রচলন অনুযায়ী ফায়সালা গ্রহণ করার প্রতি নিন্দা।

۞ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلۡيَهُودَ وَٱلنَّصَٰرَىٰٓ أَوۡلِيَآءَۘ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمۡ فَإِنَّهُۥ مِنۡهُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ
৫১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাসী হে মু’মিনরা! তোমরা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের যাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাও তাদের কাউকে খাঁটি দোস্ত ও বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে পারো না। কারণ, ইহুদিরা তাদের ধর্মের লোকদেরকে এবং খ্রিস্টানরাও তাদের ধর্মের লোকদেরকে বন্ধু বানাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তোমরা তাদের উভয়ের সাথেই শত্রæতা পোষণ করবে। তোমাদের কেউ তাদের সাথে বন্ধুত্ব করলে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সাথে তাদের বন্ধুত্বের দরুন যালিম সম্প্রদায়কে সঠিক পথ দেখান না।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَتَرَى ٱلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٞ يُسَٰرِعُونَ فِيهِمۡ يَقُولُونَ نَخۡشَىٰٓ أَن تُصِيبَنَا دَآئِرَةٞۚ فَعَسَى ٱللَّهُ أَن يَأۡتِيَ بِٱلۡفَتۡحِ أَوۡ أَمۡرٖ مِّنۡ عِندِهِۦ فَيُصۡبِحُواْ عَلَىٰ مَآ أَسَرُّواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ نَٰدِمِينَ
৫২. হে রাসূল! আপনি দুর্বল ঈমানদার মুনাফিকদেরকে দেখবেন তারা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের সাথে এ আশঙ্কায় দ্রæত বন্ধুত্ব করে যে, তারা একদিন সফল হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করবে। আর আমরা তাদের কাছ থেকে কেবল অপছন্দনীয় আচরণই পাবো। আমরা আশা করছি আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল ও মু’মিনদেরকেই সফলতা দিবেন অথবা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পক্ষ থেকে এমন ব্যবস্থা করবেন যার ফলে ইহুদি ও তাদের বন্ধুদের দাপট প্রতিহত হবে। তখন তাদের বন্ধুত্বে দ্রæত অগ্রসর লোকেরা তাদের অন্তরে লুকানো মুনাফিকীর জন্য লজ্জিত হবে। কারণ, তখন তাদের ধারণকৃত ঠুনকো যুক্তিগুলো বাতিল বলে প্রমাণিত হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَيَقُولُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَهَٰٓؤُلَآءِ ٱلَّذِينَ أَقۡسَمُواْ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَيۡمَٰنِهِمۡ إِنَّهُمۡ لَمَعَكُمۡۚ حَبِطَتۡ أَعۡمَٰلُهُمۡ فَأَصۡبَحُواْ خَٰسِرِينَ
৫৩. তখন মু’মিনরা মুনাফিকদের এ অবস্থা দেখে আশ্চর্য হয়ে বলবে: এরাই কি একদা শক্ত কসম করে বলেছিলো তারা ঈমান, সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে তোমাদের সাথেই রয়েছে। হে মু’মিনরা! বস্তুতঃ তাদের আমলগুলো বাতিল হয়ে গেছে। ফলে তাদের উদ্দেশ্যটুকু হাত ছাড়া হয়েছে আর তাদের জন্য প্রস্তুত করা শাস্তির দরুন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مَن يَرۡتَدَّ مِنكُمۡ عَن دِينِهِۦ فَسَوۡفَ يَأۡتِي ٱللَّهُ بِقَوۡمٖ يُحِبُّهُمۡ وَيُحِبُّونَهُۥٓ أَذِلَّةٍ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى ٱلۡكَٰفِرِينَ يُجَٰهِدُونَ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوۡمَةَ لَآئِمٖۚ ذَٰلِكَ فَضۡلُ ٱللَّهِ يُؤۡتِيهِ مَن يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ وَٰسِعٌ عَلِيمٌ
৫৪. হে মু’মিনরা! ধর্ম ছেড়ে কুফরির দিকে ফিরে যাওয়াদের পরিবর্তে অচিরেই আল্লাহ তা‘আলা এমন এক সম্প্রদায় নিয়ে আসবেন যারা তাদের ধর্মের উপর অটলতার দরুন তাঁকে ভালোবাসবে এবং তিনিও তাদেরকে ভালোবাসবেন। যারা মু’মিনদের প্রতি দয়াশীল ও কাফিরদের প্রতি কঠিন হবে। তারা নিজেদের জান-মাল দিয়ে আল্লাহর বাণীকে সুউচ্চ করতে যুদ্ধ করবে। এ ক্ষেত্রে তারা কোন কঠোরতাকারীর কঠোরতাকে ভয় পাবে না। কারণ, তারা তো আল্লাহর সন্তুষ্টিকে তাঁর সৃষ্টির সন্তুষ্টির উপর অগ্রাধিকার দিয়েছে। এটি মূলতঃ আল্লাহর দান যা তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যকার যাকে চান দান করেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা সুপ্রশস্ত দয়া ও করুণার অধিকারী। তিনি তাঁর জানা অনুযায়ী তাঁর করুণার উপযুক্তকে তা দিয়ে থাকেন আর অনুপযুক্তকে তা থেকে বঞ্চিত করেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُۥ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُمۡ رَٰكِعُونَ
৫৫. ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য কাফিররা তোমাদের বন্ধু নয়। বরং বন্ধু ও সাহায্যকারী হলো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং পরিপূর্ণভাবে সালাত আদায়কারী, সম্পদের যাকাত আদায়কারী এবং আল্লাহর তা‘আলার জন্য সর্বদা বিনয়ী ও বিন¤্র মু’মিন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَمَن يَتَوَلَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ فَإِنَّ حِزۡبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلۡغَٰلِبُونَ
৫৬. আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ বন্ধুত্বকারীরাই মূলতঃ আল্লাহর দলভুক্ত। আর আল্লাহর দলই সত্যিকার বিজয়ী। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাদের সহযোগিতায় রয়েছেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ ٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ دِينَكُمۡ هُزُوٗا وَلَعِبٗا مِّنَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَٱلۡكُفَّارَ أَوۡلِيَآءَۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ
৫৭. হে ঈমানদারগণ! তোমরা পূর্বের কিতাবী তথা ইহুদি ও খ্রিস্টান উপরন্তু তোমাদের ধর্ম নিয়ে ঠাট্টা ও তামাশাকারী মুশরিকদেরকে খাঁটি দোস্ত ও বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। আর তাদের বন্ধুত্বের বিষয়ে আল্লাহর নিষেধাজ্ঞাকে মেনে তাঁকেই ভয় করো। যদি তোমরা তাঁর উপর এবং তোমাদের প্রতি নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনে থাকো।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• التنبيه علي عقيدة الولاء والبراء التي تتلخص في الموالاة والمحبة لله ورسوله والمؤمنين، وبغض أهل الكفر وتجنُّب محبتهم.
ক. শত্রæতা ও বন্ধুত্বের বিষয়ে আকীদার প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। এখানে মূল কথা হলো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের ভালোবেসে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে হবে এবং কাফিরদের প্রতি শত্রæতা ও তাদের ভালোবাসা থেকে দূরে থাকতে হবে।

• من صفات أهل النفاق: موالاة أعداء الله تعالى.
খ. মুনাফিকদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো আল্লাহর শত্রæদের সাথে বন্ধুত্ব।

• التخاذل والتقصير في نصرة الدين قد ينتج عنه استبدال المُقَصِّر والإتيان بغيره، ونزع شرف نصرة الدين عنه.
গ. পরিস্থিতির কারণে ধর্মের অসহযোগিতাকারীকে পরিবর্তন করে তদস্থলে ধর্মের সহযোগিতা ও সম্মানকারীকে আনা হয়ে থাকে।

• التحذير من الساخرين بدين الله تعالى من الكفار وأهل النفاق، ومن موالاتهم.
ঘ. ধর্মকে নিয়ে ঠাট্টাকারী কাফির ও মুনাফিকদের সাথে বন্ধুত্বের ব্যাপারে আল্লাহর সতর্কীকরণ।

وَإِذَا نَادَيۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ ٱتَّخَذُوهَا هُزُوٗا وَلَعِبٗاۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَعۡقِلُونَ
৫৮. সর্ববৃহৎ একটি সাওয়াবের কাজ সালাতের আযান দিলে তারা এভাবেই ঠাট্টা ও তামাশা করে। কারণ, তারা এমন সম্প্রদায় যারা আল্লাহর ইবাদাত এবং মানুষের জন্য তাঁর রচিত শরীয়তের মূল মর্ম কথাটুকুই বুঝে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
قُلۡ يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ هَلۡ تَنقِمُونَ مِنَّآ إِلَّآ أَنۡ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيۡنَا وَمَآ أُنزِلَ مِن قَبۡلُ وَأَنَّ أَكۡثَرَكُمۡ فَٰسِقُونَ
৫৯. হে রাসূল! আপনি ঠাট্টাকারী আহলে কিতাবকে বলুন: আমরা আল্লাহ এবং আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর নাযিল করা বিষয়ের উপর ঈমান এনেছি বলেই তোমরা কি আমাদের এটাই দোষ ধরছো। আর আমরা এও বিশ্বাস করি যে, তোমাদের অধিকাংশই আল্লাহর উপর ঈমান না এনে এবং তাঁর আদেশ অমান্য করে আল্লাহর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গেছে?! বস্তুতঃ তোমরা আমাদের যা দোষ ধরছো তা আমাদের জন্য প্রশংসার ব্যাপার; নিন্দার ব্যাপার নয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
قُلۡ هَلۡ أُنَبِّئُكُم بِشَرّٖ مِّن ذَٰلِكَ مَثُوبَةً عِندَ ٱللَّهِۚ مَن لَّعَنَهُ ٱللَّهُ وَغَضِبَ عَلَيۡهِ وَجَعَلَ مِنۡهُمُ ٱلۡقِرَدَةَ وَٱلۡخَنَازِيرَ وَعَبَدَ ٱلطَّٰغُوتَۚ أُوْلَٰٓئِكَ شَرّٞ مَّكَانٗا وَأَضَلُّ عَن سَوَآءِ ٱلسَّبِيلِ
৬০. হে রাসূল! আপনি বলে দিন: আমি কি তোমাদেরকে এদের চেয়ে বেশি দোষী ও কঠিন শাস্তি পাওয়ার উপযুক্তদের সংবাদ দেবো না?! তারা হলো মূলতঃ এদেরই পূর্বসূরি যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রহমত থেকে বিতাড়িত এবং তাদের সুন্দর আকৃতিটুকু বিকৃত করে তাদেরকে শূকর ও বানরে পরিণত করেছেন। উপরন্তু তাদের কিছু সংখ্যককে তাগূতের পূজারী বানিয়েছেন। তাগূত হলো সেই ব্যক্তি আল্লাহকে বাদ দিয়ে যার ইবাদাত ও আনুগত্য করা হয় এবং সেও এ ব্যাপারে খুশি। উক্ত ব্যক্তিবর্গের অবস্থান কিয়ামতের দিবসে সর্বনিকৃষ্ট এবং সঠিক পথের অনুসন্ধানে তারাই সবচেয়ে বেশি পথভ্রষ্ট।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَإِذَا جَآءُوكُمۡ قَالُوٓاْ ءَامَنَّا وَقَد دَّخَلُواْ بِٱلۡكُفۡرِ وَهُمۡ قَدۡ خَرَجُواْ بِهِۦۚ وَٱللَّهُ أَعۡلَمُ بِمَا كَانُواْ يَكۡتُمُونَ
৬১. হে মু’মিনরা! তাদের মুনাফিকরা মুনাফিকীবশত তোমাদের নিকট এসে ঈমান প্রকাশ করবে। বস্তুতঃ তারা ঢুকা ও বের হওয়ার সময় কুফরির সাথেই সম্পৃক্ত থাকে অবিচ্ছিন্নভাবে। তারা তোমাদের সামনে ঈমান প্রকাশ করলেও আল্লাহ তা‘আলা তাদের গোপন কুফরি সম্পর্কে খুব ভালোই জানেন। তিনি অচিরেই তাদেরকে এর প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَتَرَىٰ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ يُسَٰرِعُونَ فِي ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡعُدۡوَٰنِ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ
৬২. হে রাসূল! আপনি অধিকাংশ ইহুদি ও মুনাফিকদেরকে মিথ্যা, যুলুম ও হারাম পন্থায় মানুষের সম্পদ ভক্ষণের মাধ্যমে তাদের উপর অত্যাচার করা ইত্যাদি গুনাহের প্রতি দ্রæত ধাবিত হতে দেখবেন। তাদের উক্ত কর্ম কতোই না নিকৃষ্ট।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَوۡلَا يَنۡهَىٰهُمُ ٱلرَّبَّٰنِيُّونَ وَٱلۡأَحۡبَارُ عَن قَوۡلِهِمُ ٱلۡإِثۡمَ وَأَكۡلِهِمُ ٱلسُّحۡتَۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ يَصۡنَعُونَ
৬৩. তাদের প্রশাসক ও আলিমরা কেন তাদেরকে মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া এবং অবৈধভাবে মানুষের সম্পদ খাওয়ার প্রতি দ্রæত ধাবিত হওয়া থেকে তিরস্কার ও বাধা প্রদান করে না?! তাদের প্রশাসক ও আলিমদের এ কর্মকাÐ খুবই নিকৃষ্ট যে, তারা ওদেরকে অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَقَالَتِ ٱلۡيَهُودُ يَدُ ٱللَّهِ مَغۡلُولَةٌۚ غُلَّتۡ أَيۡدِيهِمۡ وَلُعِنُواْ بِمَا قَالُواْۘ بَلۡ يَدَاهُ مَبۡسُوطَتَانِ يُنفِقُ كَيۡفَ يَشَآءُۚ وَلَيَزِيدَنَّ كَثِيرٗا مِّنۡهُم مَّآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَ طُغۡيَٰنٗا وَكُفۡرٗاۚ وَأَلۡقَيۡنَا بَيۡنَهُمُ ٱلۡعَدَٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَآءَ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِۚ كُلَّمَآ أَوۡقَدُواْ نَارٗا لِّلۡحَرۡبِ أَطۡفَأَهَا ٱللَّهُۚ وَيَسۡعَوۡنَ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَسَادٗاۚ وَٱللَّهُ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُفۡسِدِينَ
৬৪. দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংক্রান্ত কষ্ট-ক্লেশ দেখা দিলে ইহুদিরা বললো: দান ও মানুষের কল্যাণ করার ব্যাপারে আল্লাহর হাত খুবই সঙ্কুচিত। তিনি তাঁর ধন-ভাÐার আমাদেরকে না দিয়ে নিজের কাছে আটকে রেখেছেন। বরং তাদের হাত দান ও মানুষের কল্যাণ করার ব্যাপারে আবদ্ধ এবং তাদের এ কথার দরুন তাদেরকে আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। বরং আল্লাহর হাত দান ও কল্যাণে প্রশস্ত। তিনি যেভাবে যাকে চান কখনো বিস্তর আবার কখনো নির্ধারিত পরিমাণে দান করেন। তাঁকে নিষেধকারী ও বাধ্যকারী কেউ নেই। হে রাসূল! আপনার উপর নাযিলকৃত কিতাব ইহুদিদের সীমাতিক্রম ও অস্বীকার আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, তাদের মাঝে প্রচুর হিংসা রয়েছে। আর আমি ইহুদি সম্প্রদায়ের মাঝে শত্রæতা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়েছি। যখনই তারা যুদ্ধের জন্য একত্রিত হয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করে অথবা যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র করে তখনই আল্লাহ তা‘আলা তাদের কাজ ভÐুল করে তাদের শক্তিকে নিঃশেষ করে দেন। সর্বদা তারা জমিনে ফাসাদ সৃষ্টির চেষ্টা করে। তা হলো ইসলামকে বাতিলের ষড়যন্ত্র। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদেরকে ভালোবাসেন না।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• ذمُّ العالم على سكوته عن معاصي قومه وعدم بيانه لمنكراتهم وتحذيرهم منها.
ক. নিজ সম্প্রদায়ের গুনাহগুলো দেখে চুপ করে থাকা এবং তাদের অসৎ কাজগুলো বর্ণনা ও সে ব্যাপারে সতর্ক না করার ক্ষেত্রে আলিমের প্রতি নিন্দা।

• سوء أدب اليهود مع الله تعالى، وذلك لأنهم وصفوه سبحانه بأنه مغلول اليد، حابس للخير.
খ. আল্লাহর সাথে ইহুদিদের বেয়াদবি। কারণ, তারা আল্লাহ তা‘আলাকে হাতবাঁধা ও কল্যাণের গতিরোধকারী বিশেষণে বিশেষিত করেছে।

• إثبات صفة اليدين، على وجه يليق بذاته وجلاله وعظيم سلطانه.
গ. আল্লাহর দু’ হাতের গুণ সাব্যস্ত করা। এমনভাবে যা তাঁর সত্তা ও মহান ক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্যশীল।

• الإشارة لما وقع فيه بعض طوائف اليهود من الشقاق والاختلاف والعداوة بينهم نتيجة لكفرهم وميلهم عن الحق.
ঘ. কুফরি ও সত্য থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলে ইহুদিদের কিছু সম্প্রদায়ের মাঝে যে ফাটল, মতভেদ ও শত্রæতা দেখা দিয়েছে তার প্রতি ইঙ্গিত।

وَلَوۡ أَنَّ أَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ ءَامَنُواْ وَٱتَّقَوۡاْ لَكَفَّرۡنَا عَنۡهُمۡ سَيِّـَٔاتِهِمۡ وَلَأَدۡخَلۡنَٰهُمۡ جَنَّٰتِ ٱلنَّعِيمِ
৬৫. ইহুদি ও খ্রিস্টানরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আনা বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে পাপ থেকে দূরে থেকে আল্লাহকে ভয় করলে আমি তাদের কৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেবো। উপরন্তু আমি তাদেরকে কিয়ামতের দিন নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করাবো। তারা সেখানের অফুরন্ত নিয়ামত ভোগ করবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَلَوۡ أَنَّهُمۡ أَقَامُواْ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِيلَ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِم مِّن رَّبِّهِمۡ لَأَكَلُواْ مِن فَوۡقِهِمۡ وَمِن تَحۡتِ أَرۡجُلِهِمۚ مِّنۡهُمۡ أُمَّةٞ مُّقۡتَصِدَةٞۖ وَكَثِيرٞ مِّنۡهُمۡ سَآءَ مَا يَعۡمَلُونَ
৬৬. ইহুদিরা তাওরাতে এবং খ্রিস্টানরা ইঞ্জীলে উপরন্তু তাদের উপর নাযিলকৃত কুর‘আনের উপর আমল করলে তাদের জন্য রিযিকের উপকরণগুলো তথা আকাশ থেকে বৃষ্টি নাযিল হওয়া ও জমিনে ফসল উৎপাদিত হওয়া সহজ হয়ে যেতো। আহলে কিতাবের কিছু সংখ্যক সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত মধ্যমপন্থী। তবে মু’মিন না হওয়ায় তাদের অধিকাংশের আমলই খারাপ।
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ يَٰٓأَيُّهَا ٱلرَّسُولُ بَلِّغۡ مَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَۖ وَإِن لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَهُۥۚ وَٱللَّهُ يَعۡصِمُكَ مِنَ ٱلنَّاسِۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡكَٰفِرِينَ
৬৭. হে রাসূল! আপনার উপর প্রতিপালকের নাযিল করা বিষয় পুরোপুরি জানিয়ে দিন। সামান্যও লুকাবেন না। যদি তা করেন তাহলে ধরে নেয়া হবে আপনি রবের বাণীটুকুই পৌঁছান নি। বস্তুতঃ আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পৌঁছানোর আদেশের সবই পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। তাই কেউ এর বিপরীত ধারণা করলে সে মূলতঃ আল্লাহর উপর মহা অপবাদ দিলো। আজ থেকে আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে মানুষের হাত থেকে রক্ষা করবেন। তাই তারা কখনোই অকল্যাণের উদ্দেশ্যে আপনার নিকট পৌঁছাতে পারবে না। তাই আপনার একমাত্র দায়িত্ব হলো পৌঁছে দেয়া। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে সঠিক পথে চলার তাওফীকই দেন না যারা মূলতঃ হিদায়েত পাওয়ারই ইচ্ছা করে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
قُلۡ يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ لَسۡتُمۡ عَلَىٰ شَيۡءٍ حَتَّىٰ تُقِيمُواْ ٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِيلَ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيۡكُم مِّن رَّبِّكُمۡۗ وَلَيَزِيدَنَّ كَثِيرٗا مِّنۡهُم مَّآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ مِن رَّبِّكَ طُغۡيَٰنٗا وَكُفۡرٗاۖ فَلَا تَأۡسَ عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ
৬৮. হে রাসূল! আপনি বলে দিন: হে ইহুদি ও খ্রিস্টানরা! তোমরা ধর্মের ধর্তব্য কোন বিষয়ের উপরই নও যতক্ষণ না তোমরা তাওরাত ও ইঞ্জীলের উপর আমল করো। উপরন্তু তোমাদের উপর অবতীর্ণ কুর‘আনের উপর আমল করো যা করা হয়েছে যার উপর ঈমান না আনলে এবং তার উপর আমল না করলে তোমাদের ঈমানই শুদ্ধ হবে না। বস্তুতঃ আপনার প্রতি আপনার রবের অবতীর্ণ বিষয় অধিকাংশ আহলে কিতাবের হঠকারিতা ও কুফরি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, তাদের মধ্যে রয়েছে প্রচুর হিংসা। তাই আপনি এ কাফিরদের উপর আফসোস করবেন না বরং যে মু’মিনরা আপনার আনুগত্য করেছে তাই যথেষ্ট।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَٱلَّذِينَ هَادُواْ وَٱلصَّٰبِـُٔونَ وَٱلنَّصَٰرَىٰ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا فَلَا خَوۡفٌ عَلَيۡهِمۡ وَلَا هُمۡ يَحۡزَنُونَ
৬৯. মু’মিন, ইহুদি, সাবিয়ী তথা কোন কোন নবীর অনুসারীদের একটি দল ও খ্রিস্টানদের যারা আল্লাহ ও পরকালের উপর ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তাদের ভবিষ্যতে কোন ভয় নেই, না দুনিয়ার কোন স্বার্থ হাসিল না হওয়ার দরুন তারা চিন্তিত আছে।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَقَدۡ أَخَذۡنَا مِيثَٰقَ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ وَأَرۡسَلۡنَآ إِلَيۡهِمۡ رُسُلٗاۖ كُلَّمَا جَآءَهُمۡ رَسُولُۢ بِمَا لَا تَهۡوَىٰٓ أَنفُسُهُمۡ فَرِيقٗا كَذَّبُواْ وَفَرِيقٗا يَقۡتُلُونَ
৭০. আমি বনী ইসরাঈল থেকে শ্রবণ ও আনুগত্যের কঠিন অঙ্গীকার নিয়েছি কিন্তু তারা সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে নিজেদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করেছে তথা তাদের রাসূলগণ তাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে; তাদের কাউকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে ও কাউকে হত্যা করেছে।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• العمل بما أنزل الله تعالى سبب لتكفير السيئات ودخول الجنة وسعة الأرزاق.
ক. আল্লাহ তা‘আলা যা নাযিল করেছেন তার উপর আমল করা গুনাহ মাফ, জান্নাতে প্রবেশ ও রিযিকের প্রশস্ততার কারণ।

• توجيه الدعاة إلى أن التبليغ المُعتَدَّ به والمُبْرِئ للذمة هو ما كان كاملًا غير منقوص، وفي ضوء ما ورد به الوحي.
খ. দা‘য়ীদেরকে এ ব্যাপারে উপদেশ দেয়া যে, যিম্মামুক্ত ও ধর্তব্য তাবলীগ হলো যা কোন ধরনের ঘাটতিবিহীন পরিপূর্ণ হবে এবং যা ওহীর আলোকেই দেয়া হবে।

• لا يُعْتد بأي معتقد ما لم يُقِمْ صاحبه دليلًا على أنه من عند الله تعالى.
গ. কোন আকীদাই ধর্তব্য হবে না যতক্ষণ না তার ধারক এ ব্যাপারে দলীল দাঁড় করাবে যে, তা নিশ্চিত আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে।

وَحَسِبُوٓاْ أَلَّا تَكُونَ فِتۡنَةٞ فَعَمُواْ وَصَمُّواْ ثُمَّ تَابَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِمۡ ثُمَّ عَمُواْ وَصَمُّواْ كَثِيرٞ مِّنۡهُمۡۚ وَٱللَّهُ بَصِيرُۢ بِمَا يَعۡمَلُونَ
৭১. তারা এ ধারণা করেছে যে, তাদের ওয়াদা ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করা, নবীদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা ও তাদেরকে হত্যা করা তা তাদের কোন ক্ষতিই করবে না। বস্তুতঃ তারা যা ধারণা করেনি তাই ঘটেছে। তারা সত্য দেখা থেকে অন্ধ হয়েছে তাই তারা সত্যের পথ খুঁজে পায়নি আর তারা গ্রহণের মানসিকতায় সত্য শুনা থেকেও বধির হয়েছে। অতঃপর দয়া করে আল্লাহ তা‘আলা তাদের তাওবা গ্রহণ করলেন। এরপর তারা আবারও সত্য দেখা থেকে অন্ধ হয়েছে এবং সত্য শুনা থেকে বধির হয়েছে। এটি কিন্তু তাদের অনেকের ব্যাপারেই ঘটেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাদের সকল কর্মকাÐ দেখছেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন নয়। তাই তিনি অচিরেই এর প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَۖ وَقَالَ ٱلۡمَسِيحُ يَٰبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمۡۖ إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ
৭২. নিশ্চয়ই খ্রিস্টানরা কুফরিই করেছে যারা বললো যে, আল্লাহই হলেন স্বয়ং মাসীহ ঈসা ইবনু মারইয়াম। কারণ, তারা উলূহিয়্যাত তথা ইবাদাতের ব্যাপারটিকে আল্লাহ ছাড়া অন্যের সাথে সম্পৃক্ত করেছে। অথচ মাসীহ ইবনু মারইয়াম তিনি নিজেই তাদেরকে বললেন: হে বনী ইসরাঈল! তোমরা একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করো। তিনি হলেন আমার ও তোমাদের রব্ব। তাই আমরা সবাই তাঁর দাসত্বে সমান। বস্তুতঃ যে আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক করলো আল্লাহ তা‘আলা সর্বদার জন্য তার জান্নাতে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তার আবাসস্থল হবে জাহান্নামের আগুন। সে দিন আল্লাহর নিকট তার কোন সাহায্যকারী ও সহযোগী থাকবে না। না অপেক্ষমাণ আযাব থেকে কেউ তাকে রক্ষা করবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ ثَالِثُ ثَلَٰثَةٖۘ وَمَا مِنۡ إِلَٰهٍ إِلَّآ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۚ وَإِن لَّمۡ يَنتَهُواْ عَمَّا يَقُولُونَ لَيَمَسَّنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۡهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٌ
৭৩. নিশ্চয়ই খ্রিস্টানরা কুফরি করেছে যারা বললো: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তিনের সমষ্টি। তারা হলো পিতা, পুত্র ও রূহুল-কুদুস। আল্লাহ তা‘আলা তাদের এমন কথা থেকে বহু উপরে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা একাধিক নন। তিনি হলেন এক ইলাহ; যাঁর কোন শরীক নেই। তারা এ নিকৃষ্ট বক্তব্য থেকে বিরত না হলে তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ভোগ করতে হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
أَفَلَا يَتُوبُونَ إِلَى ٱللَّهِ وَيَسۡتَغۡفِرُونَهُۥۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৭৪. তারা কি তাদের এ কথা থেকে আল্লাহর নিকট তাওবা করে ফিরে আসবে না এবং তাদের কৃত শিরক থেকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইবে না?! বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা যে কোন গুনাহ থেকে তাওবাকারীর প্রতি ক্ষমাশীল। যদিও গুনাহটি তাঁর সাথে কুফরি করাই হয়ে থাকে। তিনি মু’মিনদের প্রতি দয়াশীল।
Arabic explanations of the Qur’an:
مَّا ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَ إِلَّا رَسُولٞ قَدۡ خَلَتۡ مِن قَبۡلِهِ ٱلرُّسُلُ وَأُمُّهُۥ صِدِّيقَةٞۖ كَانَا يَأۡكُلَانِ ٱلطَّعَامَۗ ٱنظُرۡ كَيۡفَ نُبَيِّنُ لَهُمُ ٱلۡأٓيَٰتِ ثُمَّ ٱنظُرۡ أَنَّىٰ يُؤۡفَكُونَ
৭৫. মূলতঃ মাসীহ ঈসা ইবনু মারইয়াম রাসূলদেরই একজন। অন্যদের মতো তাঁকেও মৃত্যু গ্রাস করবে। আর তাঁর মা মারইয়াম (আলাইহাস-সালাম) অধিক সত্যবাদিনী ও সত্যায়নকারিণী। তাঁরা উভয়েই প্রয়োজনে খাদ্য গ্রহণ করতেন। তাহলে তাঁরা কীভাবে ইলাহ হতে পারেন অথচ তাঁদের খাদ্যের প্রয়োজন রয়েছে?! তাই হে রাসূল! আপনি ভেবে দেখুন, আমি কীভাবে তাদের জন্য আয়াতগুলো সুস্পষ্ট করে দিচ্ছি। যা আল্লাহ তা‘আলার একক হওয়া এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দিকে উলূহিয়্যাত তথা ইবাদাতকে সম্পৃক্ত করায় বাড়াবাড়ি করা বাতিল হওয়া প্রমাণ করে। অথচ তারা এ আয়াতগুলো যেন চিনেই না। অতঃপর আপনি আবারো ভেবে দেখুন, তাদেরকে কীভাবে সত্য থেকে অন্য দিকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে অথচ এ সুস্পষ্ট আয়াতগুলো আল্লাহর একক হওয়াই প্রমাণ করে।
Arabic explanations of the Qur’an:
قُلۡ أَتَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَمۡلِكُ لَكُمۡ ضَرّٗا وَلَا نَفۡعٗاۚ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ
৭৬. হে রাসূল! আল্লাহ ছাড়া অন্যের ইবাদাতের ক্ষেত্রে দলীল দিয়ে আপনি তাদেরকে বলুন: তোমাদের না কোন উপকারে আসবে আর না ক্ষতি দূর করতে পারবে তোমরা কি এমন কিছুর ইবাদাত করছো?! সে তো অক্ষম। আর আল্লাহ তা‘আলা তা থেকে পবিত্র। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা এককভাবেই তোমাদের কথাগুলো শুনেন। তার কোনটাই তাঁর হাত ছাড়া হয় না। তিনি তোমাদের কর্মকাÐ সম্পর্কে সম্যক অবগত। কোন কিছুই তাঁর নিকট গোপন নয়। তাই তিনি অচিরেই তোমাদেরকে এর প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
قُلۡ يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ لَا تَغۡلُواْ فِي دِينِكُمۡ غَيۡرَ ٱلۡحَقِّ وَلَا تَتَّبِعُوٓاْ أَهۡوَآءَ قَوۡمٖ قَدۡ ضَلُّواْ مِن قَبۡلُ وَأَضَلُّواْ كَثِيرٗا وَضَلُّواْ عَن سَوَآءِ ٱلسَّبِيلِ
৭৭. হে রাসূল! আপনি খ্রিস্টানদেরকে বলুন: সত্য অনুসরণের আদেশে তোমরা সীমাতিক্রম করো না। আর তোমাদেরকে যাঁদের সম্মান করতে আদেশ করা হয়েছে যেমন: নবীগণ, তাঁদের সম্মানে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না। যেমন তোমরা তাঁদের ব্যাপারে উলূহিয়্যাতের বিশ্বাস করবে যা তোমরা ‘ঈসা ইবনু মারইয়ামের ক্ষেত্রে করেছিলে। তা মূলতঃ তোমাদের পথভ্রষ্টকারী ও পথভ্রষ্ট পূর্বসূরিদেরই অনুসরণ।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• بيان كفر النصارى في زعمهم ألوهية المسيح عليه السلام، وبيان بطلانها، والدعوةُ للتوبة منها.
ক. মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) এর উলূহিয়্যাত তথা তাঁর ইবাদাতের ধারণার ক্ষেত্রে খ্রিস্টানদের কুফরি ও তা বাতিল হওয়ার বর্ণনা এবং তা থেকে তাদেরকে তাওবার দাওয়াত।

• من أدلة بشرية المسيح وأمه: أكلهما للطعام، وفعل ما يترتب عليه.
খ. মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) ও তাঁর মায়ের মানুষ হওয়ার অন্যতম প্রমাণ হলো তাঁদের খাদ্য গ্রহণ এবং তা ভিত্তিক তাঁদের কর্মকাÐ।

• عدم القدرة على كف الضر وإيصال النفع من الأدلة الظاهرة على عدم استحقاق المعبودين من دون الله للألوهية؛ لكونهم عاجزين.
গ. ক্ষতি প্রতিহত করা ও লাভ পৌঁছানোয় অক্ষম হওয়াই এক অনন্য সুস্পষ্ট প্রমাণ কোন কোন মা’বূদের উলূহিয়্যাত তথা ইবাদাতের উপযুক্ত না হওয়ার। কারণ, তারা অক্ষম।

• النهي عن الغلو وتجاوز الحد في معاملة الصالحين من خلق الله تعالى.
ঘ. আল্লাহর সৃষ্টি নেককারদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি ও সীমাতিক্রম নিষেধ।

لُعِنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۢ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ عَلَىٰ لِسَانِ دَاوُۥدَ وَعِيسَى ٱبۡنِ مَرۡيَمَۚ ذَٰلِكَ بِمَا عَصَواْ وَّكَانُواْ يَعۡتَدُونَ
৭৮. আল্লাহ তা‘আলা এ ব্যাপারে সংবাদ দিচ্ছেন যে, তিনি বনী ইসরাঈলের কাফিরদেরকে তাঁর রহমত থেকে বিতাড়িত করেছেন। এটি বর্ণিত আছে দাঊদ (আলাইহিস-সালাম) এর উপর অবতীর্ণ যাবূরে এবং ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস-সালাম) এর উপর অবতীর্ণ ইঞ্জীলে। তবে এ রহমত থেকে বিতাড়িত করার মূল কারণ হলো তাদের কৃত গুনাহ এবং আল্লাহর হারামকৃত বস্তুর উপর হস্তক্ষেপ।
Arabic explanations of the Qur’an:
كَانُواْ لَا يَتَنَاهَوۡنَ عَن مُّنكَرٖ فَعَلُوهُۚ لَبِئۡسَ مَا كَانُواْ يَفۡعَلُونَ
৭৯. তারা একে অপরকে গুনাহ থেকে বিরত রাখতো না। বরং তাদের পাপীরা প্রকাশ্যেই গুনাহ ও অসৎ কাজ করতো। কারণ, তাদেরকে বাধা দেয়ার কেউই ছিলো না। তাদের এ অসৎ কাজ থেকে বাধা না দেয়ার ব্যাপারটি কতোই না নিকৃষ্ট ছিলো।
Arabic explanations of the Qur’an:
تَرَىٰ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ يَتَوَلَّوۡنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۚ لَبِئۡسَ مَا قَدَّمَتۡ لَهُمۡ أَنفُسُهُمۡ أَن سَخِطَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِمۡ وَفِي ٱلۡعَذَابِ هُمۡ خَٰلِدُونَ
৮০. হে রাসূল! আপনি উক্ত বহু কাফির ইহুদিকে দেখবেন কাফিরদেরকে ভালোবাসতে ও তাদের প্রতি আকৃষ্ট হতে এবং আপনি ও তাওহীদপন্থীদের সাথে শত্রæতা করতে। তারা যে কাফিরদের সাথে বন্ধুত্বে অগ্রসর হচ্ছে তা কতোই না নিকৃষ্ট। কারণ, এটি তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হওয়া এবং তাদেরকে চিরন্তন জাহান্নামে প্রবেশ করানোর একটি বিশেষ উপকরণ। যা থেকে তারা কখনোই বের হবে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَلَوۡ كَانُواْ يُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلنَّبِيِّ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مَا ٱتَّخَذُوهُمۡ أَوۡلِيَآءَ وَلَٰكِنَّ كَثِيرٗا مِّنۡهُمۡ فَٰسِقُونَ
৮১. যদি এ ইহুদিরা আল্লাহ ও তাঁর নবীর উপর সত্যিকারার্থে ঈমান আনতো তাহলে তারা মুশরিকদের কাউকে বন্ধু বানাতো না। মু’মিনদেরকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তারা ভালোবাসবে ও তাদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। কারণ, তাদেরকে কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে। বস্তুতঃ এ ইহুদিদের অনেকেই আল্লাহর আনুগত্য এবং তিনি ও তাঁর মু’মিন বান্দাদের বন্ধুত্ব থেকে বাইরে অবস্থিত।
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ ٱلنَّاسِ عَدَٰوَةٗ لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلۡيَهُودَ وَٱلَّذِينَ أَشۡرَكُواْۖ وَلَتَجِدَنَّ أَقۡرَبَهُم مَّوَدَّةٗ لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّا نَصَٰرَىٰۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّ مِنۡهُمۡ قِسِّيسِينَ وَرُهۡبَانٗا وَأَنَّهُمۡ لَا يَسۡتَكۡبِرُونَ
৮২. হে রাসূল! আপনি ইহুদিদের মাঝে হিংসা, বিদ্বেষ ও অহঙ্কার থাকায় আপনার ও আপনার আনা বিধানের প্রতি ঈমান আনা লোকদের মহা শত্রæ হিসেবে দেখতে পাবেন। আর পাবেন মূর্তিপূজারী ও আল্লাহর সাথে অন্যান্য শিরককারীদেরকে। তেমনিভাবে আপনি ওদেরকে যারা নিজেদের ব্যাপারে বলে, তারা খ্রিস্টান তাদেরকে আপনি ও আপনার আনা বিধানের প্রতি ঈমান আনা লোকদের নিকটতম ভালোবাসার পাত্র হিসেবে পাবেন। মু’মিনদেরকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে এরা নিকটতম হওয়ার কারণ হলো এদের মধ্যে রয়েছে অনেক আলিম ও আবিদ। আর তারা ন¤্র অহঙ্কারী নয়। কারণ, অহঙ্কারীর অন্তরে সাধারণত কল্যাণ পৌঁছায় না।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَإِذَا سَمِعُواْ مَآ أُنزِلَ إِلَى ٱلرَّسُولِ تَرَىٰٓ أَعۡيُنَهُمۡ تَفِيضُ مِنَ ٱلدَّمۡعِ مِمَّا عَرَفُواْ مِنَ ٱلۡحَقِّۖ يَقُولُونَ رَبَّنَآ ءَامَنَّا فَٱكۡتُبۡنَا مَعَ ٱلشَّٰهِدِينَ
৮৩. এরা যেমন: নাজাশী ও তার সাথীরা তাদের অন্তরগুলো হলো নরম। তারা নাযিলকৃত কুর‘আন শুনে বিনয়ভরে কেঁদে ফেলে যখন তারা জানতে পারে যে, নিশ্চয়ই এটা সত্য। কারণ, তারা ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) আনীত বিধান সম্পর্কে জানে। তারা তখন বলে: হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর নাযিল করা বিষয়ে ঈমান এনেছি। তাই হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের নামগুলোকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উম্মতের সাথে লিখে দিন। যা কিয়ামতের দিন মানুষের বিরুদ্ধে প্রমাণ হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• ترك الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر موجب لِلَّعْنِ والطرد من رحمة الله تعالى.
ক. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধের কাজটি পরিত্যাগ করা আল্লাহর রহমত থেকে বিতাড়িত হওয়া ও অভিসম্পাতের কারণ।

• من علامات الإيمان: الحب في الله والبغض في الله.
খ. ঈমানের একটি অনন্য আলামত হলো আল্লাহর জন্য ভালোবাসা ও তাঁর ব্যাপারে শত্রæতা পোষণ করা।

• موالاة أعداء الله توجب غضب الله عز وجل على فاعلها.
গ. আল্লাহর শত্রæদেরকে ভালোবাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর আল্লাহর গযব নাযিল হওয়া অবধারিত করে।

• شدة عداوة اليهود والمشركين لأهل الإسلام، وفي المقابل وجود طوائف من النصارى يدينون بالمودة للإسلام؛ لعلمهم أنه دين الحق.
ঘ. মুসলমানদের প্রতি ইহুদি ও মুশরিকদের কঠিন শত্রæতা। ঠিক এর বিপরীতে খ্রিস্টানদের মাঝে এমন কিছু দলও পাওয়া যায় যারা ইসলামকে ভালোবাসা নিজেদের ধর্ম হিসেবেই মনে করে। কারণ, তারা জানে, নিশ্চয়ই এটি সত্য ধর্ম।

وَمَا لَنَا لَا نُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَمَا جَآءَنَا مِنَ ٱلۡحَقِّ وَنَطۡمَعُ أَن يُدۡخِلَنَا رَبُّنَا مَعَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلصَّٰلِحِينَ
৮৪. কোন্ কারণটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলো আমাদের মাঝে এবং আল্লাহ ও তিনি যে সত্য নাযিল করেছেন এবং যা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিয়ে এসেছেন তার মাঝে?! অথচ আমরা আশা করি আল্লাহর অনুগত ও তাঁর শাস্তির ব্যাপারে ভীতরা নবীগণ ও তাঁদের অনুসারীদের সাথে জান্নাতে যাবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَأَثَٰبَهُمُ ٱللَّهُ بِمَا قَالُواْ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ وَذَٰلِكَ جَزَآءُ ٱلۡمُحۡسِنِينَ
৮৫. ফলে আল্লাহ তা‘আলা ঈমান ও সত্য স্বীকারের দরুন প্রতিদান স্বরূপ তাদেরকে জান্নাত দিয়েছেন যার অট্টালিকা ও গাছের তলদেশ দিয়ে অনেকগুলো নদী প্রবাহিত। যাতে তারা চিরকাল থাকবে। আর এটিই মূলতঃ সত্য অনুসরণ ও বিনা শর্তে তার আনুগত্যের দরুন সৎকর্মশীলদের প্রতিদান।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ وَكَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِنَآ أُوْلَٰٓئِكَ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَحِيمِ
৮৬. আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরি করেছে উপরন্তু রাসূলের উপর অবতীর্ণ আল্লাহর আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তারাই জ্বলন্ত আগুনের বাধ্যতামুলক সঙ্গী যা থেকে তারা কখনোই বের হবে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تُحَرِّمُواْ طَيِّبَٰتِ مَآ أَحَلَّ ٱللَّهُ لَكُمۡ وَلَا تَعۡتَدُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِينَ
৮৭. হে মু’মিনরা! তোমরা খাদ্য, পানীয় ও বিবাহের ন্যায় মজাদার হালাল বস্তুগুলোকে হারাম করো না। তোমরা সেগুলোকে ইবাদাত ও দুনিয়া বিমুখতা মনে করে হারাম করো না। উপরন্তু তোমরা আল্লাহর হারাম করা বস্তুসমূহের সীমারেখা অতিক্রম করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সীমারেখা অতিক্রমকারীদেরকে ভালোবাসেন না। বরং তিনি তাদেরকে ঘৃণা করেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَكُلُواْ مِمَّا رَزَقَكُمُ ٱللَّهُ حَلَٰلٗا طَيِّبٗاۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِيٓ أَنتُم بِهِۦ مُؤۡمِنُونَ
৮৮. আর তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করা আল্লাহর হালাল ও পবিত্র রিযিক তোমরা খাও। তবে হারাম খেয়ো না যেমন: অপহৃত বা নাপাক বস্তু। উপরন্তু তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। কারণ, তোমরা তো তাঁকে বিশ্বাস করেছো। আর তাঁকে সত্যিকার বিশ্বাস তাঁকে ভয় করা বাধ্যতামূলক করে।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَا يُؤَاخِذُكُمُ ٱللَّهُ بِٱللَّغۡوِ فِيٓ أَيۡمَٰنِكُمۡ وَلَٰكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ ٱلۡأَيۡمَٰنَۖ فَكَفَّٰرَتُهُۥٓ إِطۡعَامُ عَشَرَةِ مَسَٰكِينَ مِنۡ أَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُونَ أَهۡلِيكُمۡ أَوۡ كِسۡوَتُهُمۡ أَوۡ تَحۡرِيرُ رَقَبَةٖۖ فَمَن لَّمۡ يَجِدۡ فَصِيَامُ ثَلَٰثَةِ أَيَّامٖۚ ذَٰلِكَ كَفَّٰرَةُ أَيۡمَٰنِكُمۡ إِذَا حَلَفۡتُمۡۚ وَٱحۡفَظُوٓاْ أَيۡمَٰنَكُمۡۚ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَايَٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
৮৯. হে মু’মিনগণ! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের মুখ দিয়ে এমনিতেই বেরিয়ে যাওয়া অনিচ্ছাকৃত কসমের হিসাব নিবেন না। বরং তিনি সে কসমের হিসাব নিবেন যার উপর তোমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়েছো এবং অন্তরগুলোকে পোক্ত করে তা ভঙ্গ করেছো। তবে মুখে উচ্চারণ করা পরিপক্ব কসম ভঙ্গের গুনাহ তিনটি স্বেচ্ছাধীন বস্তুর যে কোন একটিই মিটিয়ে দিবে। আর তা হলো পর্যায়ক্রমে, দশজন মিসকীনকে নিজেদের এলাকার মাঝারী খাদ্য খাওয়ানো। প্রত্যেক মিসকীনকে আধা সা’ তথা দেড় কিলো খাদ্য দেয়া অথবা তাদেরকে সমাজ প্রচলিত দশটি পোশাক দেয়া কিংবা একজন মু’মিন গোলাম স্বাধীন করা। কসমের কাফফারাদাতা এ তিনটি বস্তুর কোনটিই না পেলে সে তিন দিন রোযা রেখে তার কাফফারা দিবে। হে মু’মিনগণ! মূলতঃ উল্লিখিত বস্তুগুলোই তোমাদের ভঙ্গ করা কসমের কাফফারা। আর তোমরা মিথ্যা ও বেশি কসম করা এবং কসম খেয়ে তা পুরণ না করা থেকে বিরত থেকে কসমের মর্যাদা রক্ষা করো। তবে কসম পুরণ না করা উত্তম হয়ে থাকলে উত্তমটিই করো এবং কসমের কাফফারা দিয়ে দাও। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য কসমের কাফফারার মতো হালাল এবং হারাম সংক্রান্ত বিধানাবলীও বর্ণনা করেছেন। যাতে অজানা জিনিসগুলো জানিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহর কৃতজ্ঞ হতে পারো।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّمَا ٱلۡخَمۡرُ وَٱلۡمَيۡسِرُ وَٱلۡأَنصَابُ وَٱلۡأَزۡلَٰمُ رِجۡسٞ مِّنۡ عَمَلِ ٱلشَّيۡطَٰنِ فَٱجۡتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ
৯০. হে মু’মিনগণ! মস্তিষ্ক বিকৃতকারী মদ, উভয় পক্ষের বিনিময় সম্বলিত জুয়া, মুশরিকদের সম্মানিত পাথর যার নিকট তারা পশু জবাই করে অথবা তার ইবাদাতের জন্য স্থাপন করে এবং ভাগ্য নির্ধারণকারী তীর এ সবই শয়তানের প্রবঞ্চনা ও গুনাহের কাজ। তাই তোমরা তা থেকে দূরে থাকো। যাতে তোমরা দুনিয়ায় সম্মানজনক জীবন ও আখিরাতে জান্নাতের নিয়ামত পেয়ে কৃতকার্য হতে পারো।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• الأمر بتوخي الطيب من الأرزاق وترك الخبيث.
ক. পবিত্র রিযিক অনুসন্ধান ও নাপাক রিযিক পরিত্যাগ করার নির্দেশ।

• عدم المؤاخذة على الحلف عن غير عزم للقلب، والمؤاخذة على ما كان عن عزم القلب ليفعلنّ أو لا يفعلنّ.
খ. অন্তরের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ছাড়া কসমের জন্য ধৃত হবে না। তবে কোন কিছু নিশ্চিতভাবে করা বা না করার অন্তরের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়ে কসম করলে ধৃত হবে।

• بيان أن كفارة اليمين: إطعام عشرة مساكين، أو كسوتهم، أو عتق رقبة مؤمنة، فإذا لم يستطع المكفِّر عن يمينه الإتيان بواحد من الأمور السابقة، فليكفِّر عن يمينه بصيام ثلاثة أيام.
গ. কসমের কাফফারা হলো, দশজন মিসকীনকে প্রচলিত নিয়মে খাদ্য অথবা কাপড় প্রদান কিংবা একজন মু’মিন গোলাম স্বাধীন করা। কাফফারাদাতা উপরোক্ত বিষয়ে অপারগ হলে সে তিন দিন রোযা রেখে কসমের কাফফারা দিবে।

• قوله تعالى: ﴿... إنَّمَا الْخَمْرُ ...﴾ هي آخر آية نزلت في الخمر، وهي نص في تحريمه.
ঘ. (إِنَّمَا الْـخَمْرُ...) আয়াতটি মদ সম্পর্কে নাযিল হওয়া সর্বশেষ আয়াত। মাদকদ্রব্য হারাম হওয়ার ব্যাপারে যা একেবারেই সুস্পষ্ট।

إِنَّمَا يُرِيدُ ٱلشَّيۡطَٰنُ أَن يُوقِعَ بَيۡنَكُمُ ٱلۡعَدَٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَآءَ فِي ٱلۡخَمۡرِ وَٱلۡمَيۡسِرِ وَيَصُدَّكُمۡ عَن ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَعَنِ ٱلصَّلَوٰةِۖ فَهَلۡ أَنتُم مُّنتَهُونَ
৯১. মদ ও জুয়াকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে শয়তান চায় অন্তরগুলোর মাঝে শত্রæতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে। উপরন্তু আল্লাহর যিকির ও সালাত থেকে ফিরিয়ে দিতে। হে মু’মিনরা! তাহলে তোমরা কি এ সকল অসৎ কাজ ছাড়বে? নিঃসন্দেহে এটি তোমাদের জন্য উপযুক্ত। তাই তোমরা তা থেকে বিরত থাকো।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ وَٱحۡذَرُواْۚ فَإِن تَوَلَّيۡتُمۡ فَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّمَا عَلَىٰ رَسُولِنَا ٱلۡبَلَٰغُ ٱلۡمُبِينُ
৯২. শরীয়তের আদেশ মেনে এবং নিষেধ থেকে দূরে থেকে তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো এবং তাঁদের বিরোধিতা থেকে সতর্ক থাকো। তোমরা এ থেকে বিমুখ হলে জেনে রাখো যে, আমার রাসূলের দায়িত্ব হলো আল্লাহ যা প্রচারের আদেশ করেছেন তা করা। আর তিনি তা ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন। তাই তোমরা সঠিক পথে চললে তা তোমাদেরই উপকারে আসবে। আর খারাপ করলে তা তোমাদেরই ক্ষতির কারণ হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
لَيۡسَ عَلَى ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ جُنَاحٞ فِيمَا طَعِمُوٓاْ إِذَا مَا ٱتَّقَواْ وَّءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ ثُمَّ ٱتَّقَواْ وَّءَامَنُواْ ثُمَّ ٱتَّقَواْ وَّأَحۡسَنُواْۚ وَٱللَّهُ يُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِينَ
৯৩. আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নকারী ও তাঁর নৈকট্য হাসিলের জন্য নেক আমলকারী মদ হারাম হওয়ার পূর্বে তা পান করলে কোন গুনাহ হবে না। যদি তারা আল্লাহর উপর ঈমান এনে ও নেক আমলের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে আল্লাহর অসন্তুষ্টির ভয়ে হারাম পরিত্যাগ করে থাকে। অতঃপর তারা আল্লাহর মুরাকাবায় অগ্রসর হয়ে এমনভাবে ইবাদাত করে যেন তারা তাঁকে দেখতে পাচ্ছে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা এ ধরনের ইবাদতকারীকে ভালোবাসেন। কারণ, তাদের মাঝে রয়েছে সর্বদা আল্লাহর পর্যবেক্ষণ অনুভ‚তি। আর এ অনুভ‚তিই একজন মু’মিনকে তার আমলগুলো সুন্দর ও সূ²ভাবে করতে উৎসাহিত করে।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَيَبۡلُوَنَّكُمُ ٱللَّهُ بِشَيۡءٖ مِّنَ ٱلصَّيۡدِ تَنَالُهُۥٓ أَيۡدِيكُمۡ وَرِمَاحُكُمۡ لِيَعۡلَمَ ٱللَّهُ مَن يَخَافُهُۥ بِٱلۡغَيۡبِۚ فَمَنِ ٱعۡتَدَىٰ بَعۡدَ ذَٰلِكَ فَلَهُۥ عَذَابٌ أَلِيمٞ
৯৪. হে মু’মিনগণ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে ইহরামরত অবস্থায় স্থলভাগের তোমাদের নাগালে পাওয়া শিকার দিয়ে পরীক্ষা করবেন। যা ছোটরা হাত দিয়ে ধরতে পারে আর বড়রা বর্শা দিয়ে। যেন আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ্যে জানার ভিত্তিতে বান্দাদের হিসাব নিবেন; তাঁর জ্ঞান সম্পর্কে পূর্ণ ঈমান রেখে কে তাঁকে না দেখে ভয় করে এবং শিকার থেকে বিরত থাকে। তাঁর কাছে কোন আমলই গোপন নয়। সুতরাং যে সীমাতিক্রম করবে এবং হজ্জ ও উমরার ইহরামরত অবস্থায় শিকার করবে কিয়ামতের দিন তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। কারণ, সে আল্লাহর নিষেধাজ্ঞায় লিপ্ত ছিলো।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَقۡتُلُواْ ٱلصَّيۡدَ وَأَنتُمۡ حُرُمٞۚ وَمَن قَتَلَهُۥ مِنكُم مُّتَعَمِّدٗا فَجَزَآءٞ مِّثۡلُ مَا قَتَلَ مِنَ ٱلنَّعَمِ يَحۡكُمُ بِهِۦ ذَوَا عَدۡلٖ مِّنكُمۡ هَدۡيَۢا بَٰلِغَ ٱلۡكَعۡبَةِ أَوۡ كَفَّٰرَةٞ طَعَامُ مَسَٰكِينَ أَوۡ عَدۡلُ ذَٰلِكَ صِيَامٗا لِّيَذُوقَ وَبَالَ أَمۡرِهِۦۗ عَفَا ٱللَّهُ عَمَّا سَلَفَۚ وَمَنۡ عَادَ فَيَنتَقِمُ ٱللَّهُ مِنۡهُۚ وَٱللَّهُ عَزِيزٞ ذُو ٱنتِقَامٍ
৯৫. হে মু’মিনগণ! তোমরা হজ্জ ও উমরার ইহরাম অবস্থায় স্থলভাগে কোন শিকার করো না। তোমাদের কেউ স্বেচ্ছায় কোন শিকার করলে শিকারের সমপরিমাণ প্রতিদান তাকেই দিতে হবে। চাই তা উট, গরু বা ছাগল হোক না কেন। যার ফায়সালা করবে মুসলমানদের দু’ জন ন্যায়পরায়ণ পুরুষ। তারা যে পশুর ব্যাপারেই ফায়সালা করুক না কেন তার সাথে সে আচরণই করা হবে যা কোন হাদির (ক্বিরান ও তামাত্তু হজ্জের নির্ধারিত পশু) সাথে করা হয়। তথা সে পশুকে মক্কায় পাঠানো হবে এবং হারাম এলাকায়ই তাকে জবাই করা হবে অথবা সে পশুর মূল্যমানের খাদ্য হারামের ফকিরদেরকে দেয়া হবে। প্রত্যেক ফকিরকে আধা সা’ তথা দেড় কিলো খাদ্য দিবে কিংবা প্রত্যেক আধা সা’ খাদ্যের পরিবর্তে এক দিন রোযা রাখবে। এ সবই তার শিকারের পরিণাম। হারাম করার পূর্বে ইহরাম অবস্থায় স্থলভাগের শিকার আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিয়েছেন। তবে হারামের পর শিকার করলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে শাস্তি দিয়ে প্রতিশোধ নিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা এক অজেয় শক্তিধর। তাঁর শক্তির একটি নমুনা হলো তিনি চাইলে তাঁর অবাধ্য থেকে প্রতিশোধ নিতে পারেন। সে ব্যাপারে তাঁকে বাধা দেয়ার আর কেউই নেই।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• عدم مؤاخذة الشخص بما لم يُحَرَّم أو لم يبلغه تحريمه.
ক. না জেনে হারামে লিপ্ত ব্যক্তিকে পাকড়াও করা হবে না।

• تحريم الصيد على المحرم بالحج أو العمرة، وبيان كفارة قتله.
খ. হজ্জ ও উমরার ইহরামরত ব্যক্তির জন্য শিকার করা হারাম এবং শিকার হত্যার কাফফারার বর্ণনা।

• من حكمة الله عز وجل في التحريم: ابتلاء عباده، وتمحيصهم، وفي الكفارة: الردع والزجر.
গ. হারামের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলার হিকমত হলো তাঁর বান্দাদেরকে পরীক্ষা করা ও তাদেরকে খাঁটি করে নেয়া। আর কাফফারার মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তিরস্কার করা ও তাকে অপরাধ থেকে বিরত রাখা।

أُحِلَّ لَكُمۡ صَيۡدُ ٱلۡبَحۡرِ وَطَعَامُهُۥ مَتَٰعٗا لَّكُمۡ وَلِلسَّيَّارَةِۖ وَحُرِّمَ عَلَيۡكُمۡ صَيۡدُ ٱلۡبَرِّ مَا دُمۡتُمۡ حُرُمٗاۗ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِيٓ إِلَيۡهِ تُحۡشَرُونَ
৯৬. আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন জলচর প্রাণী শিকার করা এবং সাগরের জীবিত অথবা মৃত প্রাণী। যা তোমাদের মুকীম বা মুসাফিরের জন্য লাভজনক সম্বল। জলচর প্রাণীর মতো হজ্জ ও উমরার ইহরাম অবস্থায় তোমাদের জন্য স্থলচর শিকারও হারাম। আর তোমরা আল্লাহর আদেশ মেনে এবং তাঁর নিষিদ্ধ কর্ম থেকে দূরে থেকে তাঁকেই ভয় করো। কিয়ামতের দিন একমাত্র তাঁর দিকেই ফিরতে হবে। তখন তিনি তোমাদেরকে আমলের প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ جَعَلَ ٱللَّهُ ٱلۡكَعۡبَةَ ٱلۡبَيۡتَ ٱلۡحَرَامَ قِيَٰمٗا لِّلنَّاسِ وَٱلشَّهۡرَ ٱلۡحَرَامَ وَٱلۡهَدۡيَ وَٱلۡقَلَٰٓئِدَۚ ذَٰلِكَ لِتَعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَأَنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٌ
৯৭. আল্লাহ তা‘আলা কা’বা তথা বাইতুল্লাহিল-হারামকে মানুষের জীবন উপকরণ বানিয়েছেন। এর মাধ্যমেই তারা পেয়ে থাকে ধর্মীয় সুবিধাদি তথা সালাত, হজ্জ ও উমরাহ এবং দুনিয়ার সুবিধাদি তথা হারামের নিরাপত্তা ও ফল-ফলাদির সমাহার। তেমনিভাবে তিনি হারাম মাসগুলো তথা যুল-কি’দাহ, যুল-হিজ্জাহ, মুহাররাম ও রজব মাসকেও তাদের জীবন উপকরণ বানিয়েছেন। এ মাসগুলোতে যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে তাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন। অনুরূপভাবে তিনি হাদিকে এবং হারামে নিয়ে যাওয়া পশুর গলার মালাগুলোকে মানুষের জীবন উপকরণ বানিয়েছেন। এ সব প্রাণীর মালিকদেরকে কষ্ট থেকে নিরাপত্তা দিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে এ নিয়ামতগুলো দিয়ে এ কথা অবগত করিয়েছেন যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আসমান ও যমিনের নিশ্চিত সবজান্তা। এগুলোর বিধান তোমাদের উপকারে আসবে এবং ক্ষতি থেকে বাঁচাবে। আসলে বান্দাহর উপযোগী বস্তু সম্পর্কে আল্লাহর সম্যক জ্ঞান রয়েছে তাই প্রমাণ করে।
Arabic explanations of the Qur’an:
ٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ وَأَنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৯৮. হে মানুষ! তোমরা জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর অবাধ্যদের জন্য কঠিন শাস্তিদাতা এবং তাওবাকারীদের জন্য অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
Arabic explanations of the Qur’an:
مَّا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلۡبَلَٰغُۗ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ مَا تُبۡدُونَ وَمَا تَكۡتُمُونَ
৯৯. রাসূলের দায়িত্ব হলো কেবল আল্লাহ তা‘আলার আদেশ পৌঁছে দেয়া। মানুষকে হিদায়েতের তাওফীক দেয়া নয়। এটা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই এখতিয়ারে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের প্রকাশ্য ও গোপন হিদায়েত ও ভ্রষ্টতা সবই জানেন। তাই তিনি তোমাদেরকে শিগগির এর প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
قُل لَّا يَسۡتَوِي ٱلۡخَبِيثُ وَٱلطَّيِّبُ وَلَوۡ أَعۡجَبَكَ كَثۡرَةُ ٱلۡخَبِيثِۚ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ يَٰٓأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ
১০০. হে রাসূল! আপনি বলে দিন যে, অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে আকৃষ্ট করলেও প্রত্যেক জিনিসের পবিত্র ও অপবিত্র সমান নয়। কারণ, এর আধিক্য কখনো এর ফযীলত বুঝায় না। তাই হে বুদ্ধিমানরা! তোমরা নাপাক ত্যাগ করে পবিত্র কর্ম করার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। তাহলেই তোমরা জান্নাত পেয়ে সফলকাম হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَسۡـَٔلُواْ عَنۡ أَشۡيَآءَ إِن تُبۡدَ لَكُمۡ تَسُؤۡكُمۡ وَإِن تَسۡـَٔلُواْ عَنۡهَا حِينَ يُنَزَّلُ ٱلۡقُرۡءَانُ تُبۡدَ لَكُمۡ عَفَا ٱللَّهُ عَنۡهَاۗ وَٱللَّهُ غَفُورٌ حَلِيمٞ
১০১. হে মু’মিনগণ! তোমরা রাসূলকে অপ্রয়োজনীয় কোন বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না। এটি ধর্মীয় বিষয়ের সহযোগীও নয়। তোমাদের জন্য তা প্রকাশ করা হলে মনে কষ্ট পাবে। কারণ, তাতে রয়েছে কষ্টেরই ব্যাপার। রাসূলের উপর ওহী নাযিলের সময় তোমাদেরকে যে সকল বস্তু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে নিষেধ করা হয়েছে তা জিজ্ঞাসা করলে তা তোমাদের জন্য বর্ণনা করা হবে। আল্লাহর জন্য তা খুবই সহজ। আল্লাহ তা‘আলা এমন অনেক বিষয় এড়িয়ে গেছেন যে ব্যাপারে কুর‘আন নিশ্চুপ রয়েছে। তাই তোমরা সেগুলো জিজ্ঞাসা করো না। তোমরা যদি সেগুলো জিজ্ঞাসা করো তাহলে সেগুলোর বিধান তোমাদের উপর বাধ্যতামূলকভাবে নাযিল হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَدۡ سَأَلَهَا قَوۡمٞ مِّن قَبۡلِكُمۡ ثُمَّ أَصۡبَحُواْ بِهَا كَٰفِرِينَ
১০২. এমন কিছু বিষয় সম্পর্কে তোমাদের পূর্বের লোকেরা জিজ্ঞাসা করেছে। তবে যখন সেগুলোকে তাদের উপর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তখন তারা তা করেনি। ফলে তারা সে কারণে কাফির হয়ে গেছে।
Arabic explanations of the Qur’an:
مَا جَعَلَ ٱللَّهُ مِنۢ بَحِيرَةٖ وَلَا سَآئِبَةٖ وَلَا وَصِيلَةٖ وَلَا حَامٖ وَلَٰكِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ يَفۡتَرُونَ عَلَى ٱللَّهِ ٱلۡكَذِبَۖ وَأَكۡثَرُهُمۡ لَا يَعۡقِلُونَ
১০৩. আল্লাহ তা‘আলা চতুস্পদ জন্তু হালাল করে দিয়েছেন সেগুলোর কোনটিই তিনি হারাম করেননি যা মুশরিকরা তাদের মূর্তির জন্য নিজেদের উপর হারাম করেছে। যেমন: “বাহীরা” তথা নির্দিষ্ট সংখ্যক বাচ্চা প্রসবের পর যে উটের কান কেটে দেয়া হয়, “সায়িবাহ” তথা নির্দিষ্ট বয়সের পর যে উটকে তাদের মূর্তির জন্য ছেড়ে দেয়া হয়, “ওয়াসীলাহ” তথা যে উট একটার পর একটা মাদি বাচ্চাই প্রসব করে, “হামী” তথা যে মাদা উটের ঔরস থেকে কিছু সংখ্যক উট জন্ম নেয়। কাফিররা মিথ্যা ও অপবাদবশত ধারণা করে যে, আল্লাহ তা‘আলা উল্লিখিত পশুগুলোকে হারাম করে দিয়েছেন। বস্তুতঃ অধিকাংশ কাফিরই হক ও বাতিল এবং হালাল ও হারামের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• الأصل في شعائر الله تعالى أنها جاءت لتحقيق مصالح العباد الدنيوية والأخروية، ودفع المضار عنهم.
ক. আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মূল হলো তা বান্দার দুনিয়া ও আখিরাতের সুবিধাদি বাস্তবায়ন এবং তাদের ক্ষতি প্রতিরোধের জন্য এসে থাকে।

• عدم الإعجاب بالكثرة، فإنّ كثرة الشيء ليست دليلًا على حِلِّه أو طِيبه، وإنما الدليل يكمن في الحكم الشرعي.
খ. আধিক্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া যাবে না। কারণ, কোন জিনিসের আধিক্য তা হালাল ও পবিত্র হওয়ার প্রমাণ বহন করে না। বরং দলীল শরয়ী বিধানের মধ্যেই লুক্কায়িত।

• من أدب المُسْتفتي: تقييد السؤال بحدود معينة، فلا يسوغ السؤال عما لا حاجة للمرء ولا غرض له فيه.
গ. ফতোয়া তলবকারীর আদব হলো প্রশ্নকে নির্দিষ্ট সীমায় আবদ্ধ করা। তাই যে ব্যাপারে মানুষের কোন প্রয়োজন কিংবা নির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য নেই তা জিজ্ঞাসা করা যাবে না।

• ذم مسالك المشركين فيما اخترعوه وزعموه من محرمات الأنعام ك: البَحِيرة، والسائبة، والوصِيلة، والحامي.
ঘ. মুশরিকদের মত ও পথের নিন্দা, হারাম চতুষ্পদ জন্তু সম্পর্কে তারা যা ধারণা ও আবিষ্কার করেছে। যেমন: “বাহীরাহ”, “সায়িবাহ”, “ওয়াসীলাহ” ও “হামী”।

وَإِذَا قِيلَ لَهُمۡ تَعَالَوۡاْ إِلَىٰ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَإِلَى ٱلرَّسُولِ قَالُواْ حَسۡبُنَا مَا وَجَدۡنَا عَلَيۡهِ ءَابَآءَنَآۚ أَوَلَوۡ كَانَ ءَابَآؤُهُمۡ لَا يَعۡلَمُونَ شَيۡـٔٗا وَلَا يَهۡتَدُونَ
১০৪. কিছু চতুষ্পদ জন্তু হারাম করার ব্যাপারে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদকারীদেরকে যখন বলা হয়, হালাল হারাম চিনার জন্য তোমরা আল্লাহর নাযিলকৃত কুর‘আন ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সুন্নাতের দিকে চলে এসো তখন তারা বলে: আমরা যে বিশ্বাস, কথা ও কাজ আমাদের পূর্ব পুরুষদের থেকে বংশ পরম্পরায় মিরাসি সূত্রে পেয়েছি তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। বস্তুতঃ কীভাবেই বা তাদের জন্য এটি যথেষ্ট হবে; অথচ তাদের পূর্ব পুরুষরা কিছুই জানতো না এবং তারা সত্যের প্রতি হিদায়েতপ্রাপ্তও হয় নি?! সুতরাং তাদের অনুসারী তাদের চেয়ে আরো বেশি মূর্খ এবং আরো বেশি পথভ্রষ্ট। তাই বলতে হয়, সত্যিই এরা মূর্খ ও পথভ্রষ্ট।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ عَلَيۡكُمۡ أَنفُسَكُمۡۖ لَا يَضُرُّكُم مَّن ضَلَّ إِذَا ٱهۡتَدَيۡتُمۡۚ إِلَى ٱللَّهِ مَرۡجِعُكُمۡ جَمِيعٗا فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ
১০৫. হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের ব্যাপার নিজেরাই দেখো। তোমাদের সংশোধনে আসে এমন কাজ করতে তোমরা নিজেদেরকে বাধ্য করো। তোমরা হিদায়েতের উপর থাকলে তোমাদের ডাকে সাড়া না দেয়া পথভ্রষ্টরা তোমাদের কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। তোমাদের হিদায়েতের উপর থাকা মানে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা। কিয়ামতের দিন একমাত্র আল্লাহর দিকেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। তখন তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে তোমাদের দুনিয়ার কর্মের প্রতিদান দিবেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ شَهَٰدَةُ بَيۡنِكُمۡ إِذَا حَضَرَ أَحَدَكُمُ ٱلۡمَوۡتُ حِينَ ٱلۡوَصِيَّةِ ٱثۡنَانِ ذَوَا عَدۡلٖ مِّنكُمۡ أَوۡ ءَاخَرَانِ مِنۡ غَيۡرِكُمۡ إِنۡ أَنتُمۡ ضَرَبۡتُمۡ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَأَصَٰبَتۡكُم مُّصِيبَةُ ٱلۡمَوۡتِۚ تَحۡبِسُونَهُمَا مِنۢ بَعۡدِ ٱلصَّلَوٰةِ فَيُقۡسِمَانِ بِٱللَّهِ إِنِ ٱرۡتَبۡتُمۡ لَا نَشۡتَرِي بِهِۦ ثَمَنٗا وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰ وَلَا نَكۡتُمُ شَهَٰدَةَ ٱللَّهِ إِنَّآ إِذٗا لَّمِنَ ٱلۡأٓثِمِينَ
১০৬. হে মু’মিনগণ! মৃত্যুর কোন আলামত প্রকাশ পাওয়ার মাধ্যমে তোমাদের কারো মৃত্যু ঘনিয়ে এসেছে বুঝতে পারলে যেন তার ওসিয়তের ব্যাপারে দু’জন ন্যায়পরায়ণ মুসলমানকে সাক্ষী রাখে। মুসলমান পাওয়া না গেলে প্রয়োজনে দু’জন কাফিরকে সাক্ষী রাখে। সফরে কারো মৃত্যু উপস্থিত হলে এবং তাদের সাক্ষীর ব্যাপারে কোন সন্দেহ হলে তোমরা তাদেরকে কোন এক সালাতের পর সবার সামনে দাঁড় করিয়ে এভাবে আল্লাহর নামে কসম করাবে যে, তারা যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের অংশকে কোন কিছুর বিনিময়ে বিক্রি করে না দেয়। না সে ব্যাপারে কোন আত্মীয়ের পক্ষপাতিত্ব করে। না তাদের কাছে থাকা আল্লাহর কোন সাক্ষ্যকে লুকিয়ে রাখে। এ কাজ করলে তারা পাপী ও আল্লাহর অবাধ্য বলে বিবেচিত হবে।
Arabic explanations of the Qur’an:
فَإِنۡ عُثِرَ عَلَىٰٓ أَنَّهُمَا ٱسۡتَحَقَّآ إِثۡمٗا فَـَٔاخَرَانِ يَقُومَانِ مَقَامَهُمَا مِنَ ٱلَّذِينَ ٱسۡتَحَقَّ عَلَيۡهِمُ ٱلۡأَوۡلَيَٰنِ فَيُقۡسِمَانِ بِٱللَّهِ لَشَهَٰدَتُنَآ أَحَقُّ مِن شَهَٰدَتِهِمَا وَمَا ٱعۡتَدَيۡنَآ إِنَّآ إِذٗا لَّمِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
১০৭. কসমের পর সাক্ষ্য বা কসমের ক্ষেত্রে তাদের মিথ্যা সুস্পষ্ট হলে অথবা তাদের আত্মসাৎ প্রকাশ পেলে তদস্থলে মৃতের নিকটতম ব্যক্তিদের দু’জন যেন সত্যের পক্ষে কসম করে বা সাক্ষ্য দেয়। তারা আল্লাহর নামে কসম করে বলবে যে, তাদের সত্যবাদিতা ও আমানতদারিতার ব্যাপারে তাদের সাক্ষ্যের চেয়ে তাদের মিথ্যা ও আত্মসাতের ব্যাপারে আমাদের সাক্ষ্য অধিক সত্য। আর সত্যিই আমরা মিথ্যা কসম করি নি। মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে আমরা যালিম ও আল্লাহর সীমা অতিক্রমকারী বলে বিবেচিত হবো।
Arabic explanations of the Qur’an:
ذَٰلِكَ أَدۡنَىٰٓ أَن يَأۡتُواْ بِٱلشَّهَٰدَةِ عَلَىٰ وَجۡهِهَآ أَوۡ يَخَافُوٓاْ أَن تُرَدَّ أَيۡمَٰنُۢ بَعۡدَ أَيۡمَٰنِهِمۡۗ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱسۡمَعُواْۗ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلۡفَٰسِقِينَ
১০৮. সাক্ষ্যের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হলে সালাতের পর সাক্ষীদ্বয়কে কসম করানো এবং মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাদের সাক্ষ্যকে প্রত্যাখ্যান করা শরীয়তসম্মতভাবে তাদের সাক্ষ্য প্রদানের খুবই নিকটবর্তী। তাহলে তারা সাক্ষ্য না বিকৃত করবে; না পরিবর্তন কিংবা আত্মসাৎ করবে। উপরন্তু তা এরও খুবই নিকটবর্তী যে, তারা এ ব্যাপারে অবশ্যই ভয় পাবে যে, তাদের কসমের পর ওয়ারিশরাও কসম করতে পারে। আর ওয়ারিশরা সাক্ষ্যের বিপরীত কসম করলে তারা অবশ্যই লাঞ্ছিত হবে। আর তোমরা সাক্ষ্য ও কসমের ব্যাপারে মিথ্যা ও আত্মসাৎ পরিত্যাগ করে আল্লাহকে ভয় করো। উপরন্তু তোমাদেরকে দেয়া আদেশ গ্রহণ করার নিয়তে শুনো। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে আসা লোকদেরকে সঠিক পথে চলার তাওফীক দেন না।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• إذا ألزم العبد نفسه بطاعة الله، وأمر بالمعروف ونهى عن المنكر بحسب طاقته، فلا يضره بعد ذلك ضلال أحد، ولن يُسْأل عن غيره من الناس، وخاصة أهل الضلال منهم.
ক. বান্দা নিজকে আল্লাহর আনুগত্যে বাধ্য করলে এবং তার সাধ্যমত সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করলে কারো ভ্রষ্টতা তাকে কোন ধরনের ক্ষতিই করতে পারবে না। অন্য মানুষ তথা পথভ্রষ্টদের সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাও করা হবে না।

• الترغيب في كتابة الوصية، مع صيانتها بإشهاد العدول عليها.
খ. অসিয়ত লেখার ব্যাপারে সবাইকে উৎসাহিত করা। তবে সাক্ষী হতে হবে ন্যায়পরায়ণদেরকে।

• بيان الصورة الشرعية لسؤال الشهود عن الوصية.
গ. সাক্ষীদেরকে ওসিয়ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার শরীয়তসম্মত পদ্ধতির বর্ণনা।

۞ يَوۡمَ يَجۡمَعُ ٱللَّهُ ٱلرُّسُلَ فَيَقُولُ مَاذَآ أُجِبۡتُمۡۖ قَالُواْ لَا عِلۡمَ لَنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّٰمُ ٱلۡغُيُوبِ
১০৯. হে মানুষ! তোমরা কিয়ামতের দিনের কথা স্মরণ করো। যখন আল্লাহ তা‘আলা সকল রাসূলকে একত্রিত করে বলবেন: যে উম্মতের নিকট আমি তোমাদেরকে পাঠিয়েছি তারা তোমাদের ডাকে কী ধরনের সাড়া দিয়েছে? তখন তাঁরা এর উত্তর আল্লাহর দিকে সোপর্দ করে বলবেন: হে আমাদের রব! এ ব্যাপারে আমাদের কোন সঠিক জ্ঞান নেই। তা তো কেবল আপনার নিকটেই। গায়েবের খবর আপনিই নিশ্চিত জানেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِذۡ قَالَ ٱللَّهُ يَٰعِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ٱذۡكُرۡ نِعۡمَتِي عَلَيۡكَ وَعَلَىٰ وَٰلِدَتِكَ إِذۡ أَيَّدتُّكَ بِرُوحِ ٱلۡقُدُسِ تُكَلِّمُ ٱلنَّاسَ فِي ٱلۡمَهۡدِ وَكَهۡلٗاۖ وَإِذۡ عَلَّمۡتُكَ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَٱلتَّوۡرَىٰةَ وَٱلۡإِنجِيلَۖ وَإِذۡ تَخۡلُقُ مِنَ ٱلطِّينِ كَهَيۡـَٔةِ ٱلطَّيۡرِ بِإِذۡنِي فَتَنفُخُ فِيهَا فَتَكُونُ طَيۡرَۢا بِإِذۡنِيۖ وَتُبۡرِئُ ٱلۡأَكۡمَهَ وَٱلۡأَبۡرَصَ بِإِذۡنِيۖ وَإِذۡ تُخۡرِجُ ٱلۡمَوۡتَىٰ بِإِذۡنِيۖ وَإِذۡ كَفَفۡتُ بَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ عَنكَ إِذۡ جِئۡتَهُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِ فَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنۡهُمۡ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّا سِحۡرٞ مُّبِينٞ
১১০. আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন আল্লাহ তা‘আলা ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) কে উদ্দেশ্য করে বললেন: হে ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম! তোমাকে দেয়া আমার নিয়ামতসমূহের কথা স্মরণ করো। তম্মধ্যে, ক. পিতা ছাড়া তোমার সৃষ্টি। খ. তোমার মা মারইয়াম (আলাইহাস-সালাম) কে সমকালীন মহিলাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান। গ. জিব্রীল (আলাইহিস-সালাম) এর মাধ্যমে তোমাকে শক্তিশালী করণ। ঘ. দুধ পানের বয়সে মানুষের সাথে কথোপকথন ও তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহŸান । তেমনিভাবে পূর্ণ বয়সেও তাদের কাছে পাঠানো ওহীর ব্যাপারে কথোপকথন। ঙ. আমি তোমাকে লেখা শিক্ষা দিয়েিেছ। চ. তোমাকে মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর উপর অবতীর্ণ তাওরাতও শিক্ষা দিয়েছি। ছ. তোমার উপর ইঞ্জীল নাযিল করে তাও তোমাকে শিক্ষা দিয়েছি। জ. তোমাকে শরীয়তের রহস্য কথা, ফায়েদা ও হিকমত শিক্ষা দিয়েছি। ঝ. তুমি মাটি থেকে পাখী বানিয়ে তাতে ফুঁ দিলে তা পাখী হয়ে যেতো। ঞ. তুমি জন্মান্ধকে তার অন্ধত্ব থেকে আরোগ্য দিতে পারো। ট. তুমি কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য দিতে পারো। তখন সে সুন্দর চামড়ার অধিকারী হয়ে যায়। ঠ. তুমি আল্লাহর নিকট জীবন দেয়ার দু‘আর মাধ্যমে মৃতদেরকে জীবিত করতে পারো। এ সবই কেবল আমারই অনুমতিক্রমে। ড. বনী ইসরাঈলের নিকট আনা সুস্পষ্ট মু’জিযার জন্য তোমাকে হত্যা করতে চাইলে আমি তোমার পক্ষ হয়ে তাদেরকে প্রতিহত করেছি। এতদসত্তে¡ও তারা নিদর্শনাবলীর সাথে কুফরি করে বললো: ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) যা নিয়ে এসেছে তা সুস্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَإِذۡ أَوۡحَيۡتُ إِلَى ٱلۡحَوَارِيِّـۧنَ أَنۡ ءَامِنُواْ بِي وَبِرَسُولِي قَالُوٓاْ ءَامَنَّا وَٱشۡهَدۡ بِأَنَّنَا مُسۡلِمُونَ
১১১. তুমি আরো স্মরণ করো আমার বিশেষ নিয়ামতের কথা যখন আমি সহজভাবে তোমার কিছু সহযোগী তৈরি করেছি যখন হাওয়ারীদের মাঝে আমার ও তোমার উপর ঈমান আনার চেতনা ঢুকিয়ে দিয়েছি। তখন তারা নত হয়ে তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে বললো: আমরা আপনার উপর ঈমান এনেছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি সাক্ষী থাকুন যে, নিশ্চয়ই আমরা আপনারই একান্ত অনুগত মুসলমান।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِذۡ قَالَ ٱلۡحَوَارِيُّونَ يَٰعِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ هَلۡ يَسۡتَطِيعُ رَبُّكَ أَن يُنَزِّلَ عَلَيۡنَا مَآئِدَةٗ مِّنَ ٱلسَّمَآءِۖ قَالَ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ
১১২. তুমি আরো স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন হাওয়ারীরা বললো: আপনি দু‘আ করলে আপনার প্রতিপালক কি পারবে আকাশ থেকে খাঞ্চাভর্তি খাদ্য নাযিল করতে? তখন ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) তাদের উত্তরে তাদেরকে আল্লাহভীতি ও ফিতনার কারণ হতে পারে বিধায় তাদের চাওয়া জিনিস পরিত্যাগ করার আদেশ করলেন। তাই তিনি তাদেরকে বললেন: মু’মিন হয়ে থাকলে তোমরা রিযিক অনুসন্ধানে নিজেদের প্রতিপালকের উপর ভরসা করো।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالُواْ نُرِيدُ أَن نَّأۡكُلَ مِنۡهَا وَتَطۡمَئِنَّ قُلُوبُنَا وَنَعۡلَمَ أَن قَدۡ صَدَقۡتَنَا وَنَكُونَ عَلَيۡهَا مِنَ ٱلشَّٰهِدِينَ
১১৩. হাওয়ারীরা ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) কে বললো: আমরা চাই যে, আমরা এ খাঞ্চাভর্তি খাদ্য থেকে কিছু খাবো। তখন আল্লাহর পরিপূর্ণ কুদরত ও আপনার রিসালাতের ব্যাপারে আমাদের মন প্রশান্ত হয়ে যাবে। আর আমরা এ কথা দৃঢ়ভাবে জানতে পারবো যে, আপনি আল্লাহর কাছ থেকে যা নিয়ে এসেছেন সে ব্যাপারে আপনি আমাদের সাথে সত্য কথাই বলছেন। উপরন্তু আমরা অনুপস্থিত লোকদের নিকট এ ব্যাপারে সাক্ষী হবো।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• إثبات جمع الله للخلق يوم القيامة جليلهم وحقيرهم.
ক. আল্লাহ তা‘আলা যে কিয়ামতের দিন প্রকাÐ ও সাধারণ তথা সকল সৃষ্টিকে একত্রিত করবেন তা সাব্যস্ত করা।

• إثبات بشرية المسيح عليه السلام وإثبات آياته الحسية من إحياء الموتى وإبراء الأكمه والأبرص التي أجراها الله على يديه.
খ. মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) এর মনুষ্যত্ব এবং তাঁর প্রকাশ্য মু’জিযা সাব্যস্ত করা। যেমন: মৃতদেরকে জীবিত করা এবং জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য করা। যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হাতের উপর চালু রেখেছেন।

• بيان أن آيات الأنبياء تهدف لتثبيت الأتباع وإفحام المخالفين، وأنها ليست من تلقاء أنفسهم، بل تأتي بإذن الله تعالى.
গ. এ কথা বর্ণনা করা যে, নবীদের মু’জিযার একান্ত উদ্দেশ্য হলো তাঁদের অনুসারীদেরকে দৃঢ় করা ও বিরোধীদের মুখ বন্ধ করে দেয়া। আর সেগুলো তাঁদের নিজেদের পক্ষ থেকে নয়; বরং তা আল্লাহ তা‘আলার একান্ত অনুমতিক্রমেই।

قَالَ عِيسَى ٱبۡنُ مَرۡيَمَ ٱللَّهُمَّ رَبَّنَآ أَنزِلۡ عَلَيۡنَا مَآئِدَةٗ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ تَكُونُ لَنَا عِيدٗا لِّأَوَّلِنَا وَءَاخِرِنَا وَءَايَةٗ مِّنكَۖ وَٱرۡزُقۡنَا وَأَنتَ خَيۡرُ ٱلرَّٰزِقِينَ
১১৪. ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আল্লাহকে ডেকে বললেন: হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের উপর খাঞ্চাভর্তি খাদ্য নাযিল করুন। সে দিনকে আমরা ঈদ হিসেবে গ্রহণ করে আপনার কৃতজ্ঞতার্থে তাকে আমরা সম্মান করবো। উপরন্তু তা হবে আপনার একক সত্তা ও আমার প্রেরিত বিষয়ের সত্যতার প্রমাণ ও আলামত। আপনার ইবাদাতের সহযোগী হবে আপনি আমাদেরকে এমন রিযিক দিন। হে প্রতিপালক! আপনিই সর্বোত্তম রিযিকদাতা।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالَ ٱللَّهُ إِنِّي مُنَزِّلُهَا عَلَيۡكُمۡۖ فَمَن يَكۡفُرۡ بَعۡدُ مِنكُمۡ فَإِنِّيٓ أُعَذِّبُهُۥ عَذَابٗا لَّآ أُعَذِّبُهُۥٓ أَحَدٗا مِّنَ ٱلۡعَٰلَمِينَ
১১৫. আল্লাহ তা‘আলা ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) এর ডাকে সাড়া দিয়ে বললেন: তোমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমি নিশ্চিত খাঞ্চাভর্তি খাদ্য নাযিল করবো। তবে নাযিল হওয়ার পরও কেউ কুফরি করলে সে যেন নিজকেই তিরস্কার করে। আমি তাকে অচিরেই এমন কঠিন শাস্তি দেবো যা আর কাউকে দেবো না। কারণ, সে সুস্পষ্ট নিদর্শন দেখেছে। তাই তার কুফরি হলো হঠকারিতার কুফরি। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাথে কৃত ওয়াদা বাস্তবায়ন ও তা তাদের উপর নাযিল করলেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
وَإِذۡ قَالَ ٱللَّهُ يَٰعِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ ءَأَنتَ قُلۡتَ لِلنَّاسِ ٱتَّخِذُونِي وَأُمِّيَ إِلَٰهَيۡنِ مِن دُونِ ٱللَّهِۖ قَالَ سُبۡحَٰنَكَ مَا يَكُونُ لِيٓ أَنۡ أَقُولَ مَا لَيۡسَ لِي بِحَقٍّۚ إِن كُنتُ قُلۡتُهُۥ فَقَدۡ عَلِمۡتَهُۥۚ تَعۡلَمُ مَا فِي نَفۡسِي وَلَآ أَعۡلَمُ مَا فِي نَفۡسِكَۚ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّٰمُ ٱلۡغُيُوبِ
১১৬. স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিবসে ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (আলাইহিস-সালাম) কে উদ্দেশ্য করে বলবেন: হে ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম! তুমি কি মানুষকে বলেছিলে, তোমরা আমাকে ও আমার মা-কে আল্লাহ ছাড়া মা’বূদ বানিয়ে নাও। তখন ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) তাঁর রব্বের পবিত্রতা বর্ণনা করে উত্তরে বলেন: বস্তুতঃ সত্য ছাড়া অন্য কিছু বলা আমার জন্য উচিত নয়। তারপরও যদি ধরে নেয়া হয় যে, আমি তা বলেছি তাহলে আপনি তো তা অবশ্যই জানেন। কারণ, আপনার নিকট কোন কিছুই গোপন নয়। আপনি আমার অন্তরে লুকিয়ে রাখা বিষয় জানেন। আমি তো আপনার অন্তরের কিছুই জানি না। একমাত্র আপনিই প্রত্যেক অনুপস্থিত, গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই জানেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
مَا قُلۡتُ لَهُمۡ إِلَّا مَآ أَمَرۡتَنِي بِهِۦٓ أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمۡۚ وَكُنتُ عَلَيۡهِمۡ شَهِيدٗا مَّا دُمۡتُ فِيهِمۡۖ فَلَمَّا تَوَفَّيۡتَنِي كُنتَ أَنتَ ٱلرَّقِيبَ عَلَيۡهِمۡۚ وَأَنتَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ شَهِيدٌ
১১৭. ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) তাঁর রব্বকে বললেন: আমি মানুষদেরকে আপনার নির্দেশিত বিষয় বলেছি। তথা আপনার একক ইবাদাতের নির্দেশ। আমি তাদের কথার পর্যবেক্ষক ছিলাম যতদিন আমি তাদের মাঝে অবস্থান করেছিলাম। যখন আপনি আমাকে জীবিতাবস্থায় আকাশে উঠিয়ে নেয়ার মাধ্যমে তাদের মাঝে আমার উপস্থিতির পরিসমাপ্তি ঘটালেন তখন আপনিই একমাত্র তাদের আমলসমূহের সংরক্ষক হে আমার রব্ব! বস্তুতঃ আপনি সব কিছুরই সাক্ষী। কোন কিছুই আপনার অলক্ষ্যে নেই। তাই তাদের উদ্দেশ্যে বলা আমার কোন কথা এবং আমার পরে তাদের কোন কথা আপনার নিকট গোপন নয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
إِن تُعَذِّبۡهُمۡ فَإِنَّهُمۡ عِبَادُكَۖ وَإِن تَغۡفِرۡ لَهُمۡ فَإِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ
১১৮. হে আমার রব্ব! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিলে তারা তো আপনারই বান্দা। আপনি তাদের সাথে যা চান তাই করতে পারেন। আর আপনি তাদের মু’মিনদেরকে দয়া ও ক্ষমা করলে তাতে আপনাকে বাধা দেয়ারও কেউ নেই। আপনি হলেন অপরাজেয় পরাক্রমশালী। আপনি নিজ পরিচালনায় অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়।
Arabic explanations of the Qur’an:
قَالَ ٱللَّهُ هَٰذَا يَوۡمُ يَنفَعُ ٱلصَّٰدِقِينَ صِدۡقُهُمۡۚ لَهُمۡ جَنَّٰتٞ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۖ رَّضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُۚ ذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ
১১৯. আল্লাহ তা‘আলা ‘ঈসা (আলাইহিস-সালাম) কে বললেন: আজ কথা, কাজ ও নিয়তে সত্যবাদীদের সত্যতা তাদের উপকারে আসবে। তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত যার অট্টালিকা ও গাছের নিচ দিয়ে অনেকগুলো নদী প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। মৃত্যু কখনোই তাদেরকে গ্রাস করবে না। আল্লাহ তা‘আলা তাদের উপর সন্তুষ্ট। কখনোই তাদের উপর অসন্তুষ্ট হবেন না। আর তারাও স্থায়ী নিয়ামত পেয়ে তাঁর উপর সন্তুষ্ট। এ প্রতিদান ও সন্তুষ্টি সত্যিই মহা সফলতা। আর কোন সফলতাই এর নিকটবর্তীও নয়।
Arabic explanations of the Qur’an:
لِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا فِيهِنَّۚ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرُۢ
১২০. একমাত্র আল্লাহর জন্যই আকাশ ও জমিনের মালিকানা। তিনিই সেগুলোকে সৃষ্টি ও পরিচালনা করছেন এবং সেগুলোর মাঝে যা কিছু রয়েছে সে সকল সৃষ্টির মালিকও তিনি। তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিধর। কোন বস্তুই তাঁকে অক্ষম করতে পারে না।
Arabic explanations of the Qur’an:
Benefits of the verses in this page:
• توعد الله تعالى كل من أصرَّ على كفره وعناده بعد قيام الحجة الواضحة عليه.
ক. যারা সুস্পষ্ট প্রমাণ কায়েম হওয়ার পরও কুফরি ও হঠকারিতার উপর অবিচল আল্লাহ তা‘আলা তাদের সকলকে শাস্তির হুমকি দিয়েছেন।

• تَبْرئة المسيح عليه السلام من ادعاء النصارى بأنه أبلغهم أنه الله أو أنه ابن الله أو أنه ادعى الربوبية أو الألوهية.
খ. খ্রিস্টানদের দাবির ব্যাপারে মাসীহ (আলাইহিস-সালাম) এর পবিত্রতা ঘোষণা। খ্রিস্টানরা দাবি করেছিলো যে, তিনি তাদের নিকট এ কথা পৌঁছিয়েছেন যে, তিনি আল্লাহ অথবা তিনি আল্লাহর ছেলে কিংবা তিনি রুবূবিয়্যাত বা উলূহিয়্যাতের দাবিদার।

• أن الله تعالى يسأل يوم القيامة عظماء الناس وأشرافهم من الرسل، فكيف بمن دونهم درجة؟!
গ. আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যকার মহান ও সম্মানি ব্যক্তিবর্গ তথা রাসূলদেরকে প্রশ্ন করবেন। সুতরাং যারা মর্যাদার দিক থেকে তাঁদের অনেক নিচের তাদের কী হবে?!

• علو منزلة الصدق، وثناء الله تعالى على أهله، وبيان نفع الصدق لأهله يوم القيامة.
ঘ. সত্যবাদিতার উচ্চ মর্যাদা এবং তাদের ব্যাপারে আল্লাহর প্রশংসা। উপরন্তু কিয়ামতের দিবসে সত্যবাদিতার গুণটুকু তাদের উপকারে আসার বর্ণনা।

 
Translation of the meanings Surah: Al-Mā’idah
Surahs’ Index Page Number
 
Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation of "Abridged Explanation of the Quran" - Translations’ Index

Bengali translation of "Abridged Explanation of the Quran" by Tafsir Center of Quranic Studies

close