Check out the new design

Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation - Abu Bakr Zakaria * - Translations’ Index


Translation of the meanings Surah: An-Nahl   Ayah:
وَيَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَمۡلِكُ لَهُمۡ رِزۡقٗا مِّنَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ شَيۡـٔٗا وَلَا يَسۡتَطِيعُونَ
আর তারা ইবাদাত করে আল্লাহ্‌ ছাড়া এমন কিছুর, যেগুলো আসমান ও যমীন হতে তাদের কোনো জীবনোপকরণের মালিক নয় এবং হতেও সক্ষম নয় [১]।
[১] অর্থাৎ তোমাদের জন্য বৃষ্টি নাযিল করা, ফসল উৎপন্ন করা, গাছ-গাছালির ব্যবস্থা করা, এগুলো কিছুরই তারা মালিক নয়। তারা যদি এগুলো করতে চায়ও তারপরও তারা তা করতে সক্ষম হবে না। এজন্য আল্লাহ এরপরই বলেছেন, “কাজেই তোমরা আল্লাহর কোন সদৃশ স্থির করো না।" তিনি জানেন ও সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তিনি ব্যতীত আর কোনো হক ইলাহ নেই, অথচ তোমরা তাঁর সাথে অন্যদেরকে শরীক করছ। [ইবন কাসীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
فَلَا تَضۡرِبُواْ لِلَّهِ ٱلۡأَمۡثَالَۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ
কাজেই তোমরা আল্লাহ্‌র কোন সদৃশ স্থির করো না [১]। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ জানেন এবং তোমরা জান না।
[১] ‘আল্লাহর জন্য সদৃশ স্থির করো না’ এর তাফসীরে মুফাসসির যাজ্জাজ বলেন, তোমরা আল্লাহর জন্য উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত পেশ করো না। কেননা তিনি এক, তার কোনো দৃষ্টান্ত নেই। আর তারা বলত যে, জগতের মা’বুদ এতই মহিয়ান যে তাকে আমাদের কেউ ইবাদত করতে পারে না। সুতরাং তারা মূর্তি-প্রতিমা, দেব-দেবী ও তারকারাজির মাধ্যম গ্রহণ করত। যেমন সাধারণ ছোট ছোট লোকেরা বাদশার দরবারে যেতে বড় বড় লোকদের দ্বারস্থ হয়ে থাকে। আর এ বড় বড় লোকগুলো বাদশার খেদমত করে, সুতরাং তাদের কথা শুনবে। এ আয়াতে তাদেরকে তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ আল্লাহকে দুনিয়ার রাজা-মহারাজা ও বাদশাহ-শাহানশাহদের সমপর্যায়ে রেখে বিচার করো না। রাজা-বাদশাহদের অনুচর, সভাসদ ও মোসাহেবদের মাধ্যম ছাড়া তাদের কাছে কেউ নিজের আবেদন নিবেদন পৌছাতে পারে না। ঠিক তেমনি আল্লাহর ব্যাপারেও তোমরা এ ধারণা করতে থাকো যে, তিনি নিজের শাহী মহলে ফেরেশতা, আউলিয়া ও অন্যান্য সভাসদ পরিবৃত হয়ে বিরাজ করছেন এবং এদের মাধ্যমে ছাড়া তাঁর কাছে কারোর কোনো কাজ সম্পন্ন হতে পারে না। আলোচ্য বাক্যটি তাদের সন্দেহের মূল উপড়ে দিয়ে বলেছে যে, আল্লাহ তা'আলার জন্য সৃষ্টজীবের দৃষ্টান্ত পেশ করা একান্তই নিবুদ্ধিতা। তিনি দৃষ্টান্ত, উদাহরণ এবং আমাদের ধারণা-কল্পনার অনেক উর্ধ্বে। এরপর আল্লাহ্ তা'আলা তার জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করতে নিষেধ করার কারণ হিসেবে বলেছেন যে, আল্লাহ জানেন তোমাদের উপর কি ইবাদাত করণীয়, তোমরা জান না তিনি ব্যতীত অন্যদের ইবাদত করলে কি কঠিন পরিণতির সম্মুখীন তোমাদের হতে হবে। [ফাতহুল কাদীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
۞ ضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلًا عَبۡدٗا مَّمۡلُوكٗا لَّا يَقۡدِرُ عَلَىٰ شَيۡءٖ وَمَن رَّزَقۡنَٰهُ مِنَّا رِزۡقًا حَسَنٗا فَهُوَ يُنفِقُ مِنۡهُ سِرّٗا وَجَهۡرًاۖ هَلۡ يَسۡتَوُۥنَۚ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِۚ بَلۡ أَكۡثَرُهُمۡ لَا يَعۡلَمُونَ
আল্লাহ্‌ উপমা দিচ্ছেন [১] অন্যের অধিকারভুক্ত এক দাসের, যে কোনো কিছুর উপর শক্তি রাখে না এবং এমন এক ব্যক্তির যাকে আমরা আমার পক্ষ থেকে উত্তম রিযক দান করেছি এবং সে তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; তারা কি একে অন্যের সমান [২]? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌রই প্রাপ্য [৩]; বরং তাদের অধিকাংশই জানে না [৪]।
[১] অর্থাৎ যদি উপমার সাহায্যে কথা বুঝতে হয় তাহলে আল্লাহ সঠিক উপমা দিয়ে তোমাদের সত্য বুঝিয়ে দেন। তোমরা যেসব উপমা দিচ্ছে সেগুলো ভুল। তাই তোমরা সেগুলো থেকে ভুল ফলাফল গ্রহণ করে থাকো। তোমরা সঠিক উপমা দিতে জান না। আল্লাহ নিজেই তোমাদেরকে উপমা শিখিয়ে দিচ্ছেন। [ফাতহুল কাদীর]

[২] ইবন আব্বাস বলেন, এ উদাহরণটি আল্লাহ্ তা'আলা কাফের ও মুমিনের জন্য প্রদান করেছেন। ইবন জরীর তাবারীও তা পছন্দ করেছেন। যে দাস কিছুরই ক্ষমতা রাখে না সে হচ্ছে কাফের। আর যাকে উত্তম রিযিক দেয়া হয়েছে আর সে তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে সে হচ্ছে মুমিন। মুজাহিদ বলেন, এ উপমাটি মূর্তি-প্রতিমা ও আল্লাহ্ তা'আলার জন্য পেশ করা হয়েছে। এ দু'টি কি সমান? যখন তাদের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট, বোকা ছাড়া সবাই তা বুঝতে সক্ষম, তখন বলা হল যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। [ইবন কাসীর] কিন্তু তারা অধিকাংশই জানে না। যদি তারা জানত তবে যার জন্য ইবাদাত করা হক ও যথাযথ তাঁরই ইবাদাত করত, আর যিনি তাদেরকে এত এত নেয়ামত দ্বারা ধন্য করেছেন তাঁর নেয়ামতের স্বীকৃতি তারা দিত। [ফাতহুল কাদীর]

[৩] আল-হামদুলিল্লাহ বা সমস্ত প্রশংসা তাঁরই প্রাপ্য। এটা বলার কারণ সম্পর্কে কয়েকটি মত রয়েছে। এক. কারণ, তিনিই তো সব নেয়ামত প্রদান করেছেন, তার বান্দাদের কেউই তা দেয় নি। সুতরাং যারা মৌলিকভাবে অথবা মাধ্যম হয়ে কোনোভাবেই কোনো নেয়ামত দেয়নি তারা কিভাবে প্রশংসা পেতে পারে? দুই. সমস্ত প্রশংসা তাঁর জন্যে এ কারণে যে, তিনিই তাঁর বন্ধুদেরকে তাওহীদের মত নেয়ামত প্রদান করেছেন। তিন. অথবা এখানে নির্দেশ দিয়ে বলা হচ্ছে যে, আপনি বলুন, আল-হামদুলিল্লাহ। তখন নির্দেশটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং যারাই এ নেয়ামত উপলব্ধি করতে পারবে তাদের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চার. অথবা যে উদাহরণ পেশ করা হলো তা যে কত জোরালো, তার মোকাবিলায় যে তারা কোনো কিছুই দাড় করাতে পারবে না, দলীল-প্রমাণের সে শক্তি অনুভব করে আল-হামদুলিল্লাহ বলা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]

[৪] এখানে তাদেরকে জানে না’ বলার কারণ হয়ত এই যে, তারা তাদের উপর যা কর্তব্য তা না জানার কারণে সত্যিকারেই জাহেল বা মূর্খে পরিণত হয়েছে অথবা তারা হক জেনেও ইচ্ছাকৃত বিরোধিতা করার জন্য তা মেনে নিচ্ছে না। এতে করে তারা যাদের জ্ঞান নেই, তাদের কাতারে নেমে গেছে। [ফাতহুল কাদীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
وَضَرَبَ ٱللَّهُ مَثَلٗا رَّجُلَيۡنِ أَحَدُهُمَآ أَبۡكَمُ لَا يَقۡدِرُ عَلَىٰ شَيۡءٖ وَهُوَ كَلٌّ عَلَىٰ مَوۡلَىٰهُ أَيۡنَمَا يُوَجِّههُّ لَا يَأۡتِ بِخَيۡرٍ هَلۡ يَسۡتَوِي هُوَ وَمَن يَأۡمُرُ بِٱلۡعَدۡلِ وَهُوَ عَلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ
আর আল্লাহ্‌ আরো উপমা দিচ্ছেন দু ব্যক্তির: তাদের একজন বোবা, কোনো কিছুরই শক্তি রাখে না এবং সে তার অভিভাকের উপর বোঝা; তাকে যেখানেই পাঠানো হোক না কেন সে কোনো কল্যাণ নিয়ে আসতে পারে না; সে কি সমান ঐ ব্যক্তির, যে ন্যায়ের নির্দেশ দেয় এবং যে আছে সরল পথে [১]?
[১] মুজাহিদ বলেন, এ উদাহরণটি আল্লাহ্ তা'আলা মূর্তি-প্রতিমা ও তার নিজের ব্যাপারে পেশ করেছেন। [ইবন কাসীর] অর্থাৎ মূর্তিগুলো বোবা, কথা বলে না, কল্যাণ ও অকল্যাণ কোনো প্রকার কথাই বলে না, কোনো কিছুর উপরই তাদের ক্ষমতা নেই, কথায়ও নয়, কাজেও নয়। তদুপরি সে তার অভিভাবকের উপর নির্ভরশীল। তাকে কোথাও পাঠানো হলে সে কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। তার চেষ্টাতেও সফল হয় না। এমতাবস্থায় যার হচ্ছে এ ধরণের অক্ষমতার গুণ সে কি তার মত যে, ন্যায় ও ইনসাফের কথা বলে, আর যে সঠিক পথের উপর আছে? [ইবন কাসীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
وَلِلَّهِ غَيۡبُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَمَآ أَمۡرُ ٱلسَّاعَةِ إِلَّا كَلَمۡحِ ٱلۡبَصَرِ أَوۡ هُوَ أَقۡرَبُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
আর আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েবী বিষয় আল্লাহ্‌রই। আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় [১], অথবা তা থেকেও সত্বর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
[১] উপরোক্ত দুটি উদাহরণ পেশ করার পর আল্লাহ তা'আলা এখানে নিজের প্রশংসা করছেন যে, তিনিই শুধু গায়বের সংবাদের মালিক। তিনি ছাড়া আর কেউ গায়েব জানে না। আসমান ও যমীনে যা বর্তমানে গায়েব আছে তা একমাত্র তিনিই জানেন। অনুরূপভাবে কিয়ামতের দিনের খবরও তিনিই জানেন; বান্দাদের কাছে তা গায়েব রাখা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
وَٱللَّهُ أَخۡرَجَكُم مِّنۢ بُطُونِ أُمَّهَٰتِكُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ شَيۡـٔٗا وَجَعَلَ لَكُمُ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡأَبۡصَٰرَ وَٱلۡأَفۡـِٔدَةَ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
আর আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে নির্গত করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভ থেকে এমন অবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানতে না এবং তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর [১]।
[১] অর্থাৎ এমন সব উপকরণ যার সাহায্যে তোমরা দুনিয়ার সব রকমের জ্ঞান ও তথ্য সংগ্রহ করে দুনিয়ার যাবতীয় কাজ কর্ম চালানোর যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছো। জন্মকালে মানব সন্তান যত বেশী অসহায় ও অজ্ঞ হয় এমনটি অন্য কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে হয় না। কিন্তু শুধুমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞানের উপকরণাদির (শ্রবণ শক্তি, দৃষ্টিশক্তি, বিবেক ও চিন্তাশক্তি) সাহায্যেই সে উন্নতি লাভ করে পৃথিবীর সকল বস্তুর ওপর প্রাধান্য বিস্তার এবং তাদের ওপর রাজত্ব করার যোগ্যতা অর্জন করে। আয়াতের শেষে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার অর্থ, এগুলোকে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিতে কাজে লাগানো। সুতরাং আল্লাহর সন্তুষ্টি যাতে হয় তাই শুধু সে করবে। এক হাদীসে এ ব্যাপারটি স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, “মহান আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো অলীর সাথে শক্রতা পোষণ করে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম। আমার বান্দার উপর যা আমি ফরয করেছি তা ছাড়া আমার কাছে অন্য কোনো প্রিয় বস্তু নেই যার মাধ্যমে সে আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে। আমার বান্দা আমার কাছে নফল কাজসমূহ দ্বারা নৈকট্য অর্জন করতেই থাকে, শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালবাসি। তারপর যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার শ্রবণশক্তি হয়ে যাই যার দ্বারা সে শুনে, তার দৃষ্টি শক্তি হয়ে যাই যার দ্বারা সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যার দ্বারা সে ধারণ করে আর তার পা হয়ে যাই যার দ্বারা সে চলে। তখন আমার কাছে কিছু চাইলে আমি তাকে তা অবশ্যই দেব, আমার কাছে আশ্রয় চাইলে আমি তাকে অবশ্যই উদ্ধার করব।" [বুখারী ৬৫০২]

হাদীসের অর্থ হচ্ছে, বান্দাহ যখন একমাত্র আল্লাহর আনুগত্য করে এবং যাবতীয় কাজ আল্লাহর জন্যই করে, তখন তার সমস্ত কর্মকাণ্ড একমাত্র আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। সে তখন এর বাইরে চলতে পারে না। সে যা শোনে তা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই শোনে। যা দেখে তা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই দেখে, অর্থাৎ তার শরীআতের অনুমোদন ছাড়া কিছুই দেখে না। অনুরূপভাবে তার যাবতীয় চলা-ফেরা, ধর-পাকড় কেবলমাত্র আল্লাহর আনুগত্য অনুসারে হয়। তার সাহায্যেই অনুষ্ঠিত হয়। আর যখন বান্দা এরকম হয়, তখন আল্লাহও তার ডাকে সাড়া দেন। তার যাবতীয় কাজ সফল হতে থাকে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ তা'আলা বান্দার কাছে সবসময়ই চায় তার বান্দাগণ তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। অন্য আয়াতেও সে কথা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন,

“বলুন, তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তকরণ। তোমরা খুব অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। বলুন, তিনিই যমীনে তোমাদেরকে ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং তারই কাছে তোমাদেরকে সমবেত করা হবে।” [সূরা আল-মুলক ২৩-২৪] [ইবন কাসীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
أَلَمۡ يَرَوۡاْ إِلَى ٱلطَّيۡرِ مُسَخَّرَٰتٖ فِي جَوِّ ٱلسَّمَآءِ مَا يُمۡسِكُهُنَّ إِلَّا ٱللَّهُۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يُؤۡمِنُونَ
তারা কি লক্ষ্য করে না আকাশের শুন্য গর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন বিহংগের প্রতি? আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কেউই সেগুলোকে ধরে রাখেন না। নিশ্চয় এতে এমন সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে যারা ঈমান আনে [১]।
[১] এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা তার বান্দাদেরকে একটু আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখার প্রতি আহবান জানাচ্ছেন। যেখানে পাখি আসমান ও যমীনের মাঝখানে ভাসমান হয়ে থাকে। কিভাবে তিনি সেটাকে দুডানা মেলে শূণ্যে ভেসে বেড়াতে দিয়েছেন। এগুলোকে তো আল্লাহই কেবল তাঁর কুদরতে ধারণ করে রাখেন। (তিনিই তো তাদেরকে ডানা মেলা ও বন্ধ করা শিখিয়েছেন। তারা সেভাবে ডানা মেলে ও বন্ধ করে যেমন কোনো সাতারু পানিতে সাতার কাটার সময় করে থাকে। [ফাতহুল কাদীর]) সেখানে তিনি এমন শক্তির উদ্ভব করেছেন যে, তারা উড়ে বেড়াতে পারে। অনুরূপভাবে তিনি বাতাসকে নিয়োজিত করেছেন সেগুলোকে বহন করতে। আর পাখিও অনুরূপভাবে বাতাসে চলাফেরা করতে পারে। অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা'আলা এ নেয়ামতের কথা ও তার কুদরতের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “তারা কি লক্ষ্য করে না তাদের উপরে পাখিদের প্রতি, যারা পাখা বিস্তার করে ও সংকুচিত করে? দয়াময় আল্লাহই তাদেরকে স্থির রাখেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।" [সূরা আল-মুলক ১৯]

এ সবকিছুতে অবশ্যই অনেক নিদর্শন রয়েছে। [ইবন কাসীর] এসবই আল্লাহর একত্ববাদ ও তার অপার ক্ষমতার উপর প্রকৃষ্ট প্রমান। কিন্তু তারাই শুধু তা দেখতে পায় ও বুঝতে পারে যারা আল্লাহর উপর এবং তাঁর রাসূলদের মাধ্যমে প্রেরিত শরীআতের উপর ঈমান রাখে। [ফাতহুল কাদীর] যারা তার এ সমস্ত নিদর্শন বুঝতে পারে তারা শ্রদ্ধায় অবনত মস্তকে সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে যিনি তাদেরকে এ নেয়ামত দান করেছেন।
Arabic explanations of the Qur’an:
 
Translation of the meanings Surah: An-Nahl
Surahs’ Index Page Number
 
Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation - Abu Bakr Zakaria - Translations’ Index

Bengali translation of Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria

close