Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation - Abu Bakr Zakaria * - Translations’ Index


Translation of the meanings Ayah: (24) Surah: Al-Baqarah
فَإِن لَّمۡ تَفۡعَلُواْ وَلَن تَفۡعَلُواْ فَٱتَّقُواْ ٱلنَّارَ ٱلَّتِي وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُۖ أُعِدَّتۡ لِلۡكَٰفِرِينَ
অতএব, যদি তোমরা তা করতে না পারো আর কখনই তা করতে পারবে না [১], তাহলে তোমরা সে আগুন থেকে বাঁচার ব্যবস্থা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর [২], যা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে [৩] কাফেরদের জন্য।
[১] এটা কুরআনের বিশেষ মু'জিযা। একমাত্র কুরআনই নিঃসংকোচে সৰ্বকালের জন্য নিজ স্বীকৃত সত্তার এভাবে ঘোষণা দিতে পারে। যেভাবে রাসূলের যুগে কেউ এ কুরআনের মত আনতে পারে নি। তেমনি কুরআন এ ঘোষণাও নিঃশঙ্ক ও নিঃসংকোচে দিতে পেরেছে যে, যুগের পর যুগের জন্য, কালের পর কালের জন্য এই চ্যলেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হচ্ছে যে, এ কুরআনের মত কোনো কিতাব কেউ কোনো দিন আনতে পারবে না। অনুরূপই ঘটেছে এবং ঘটে চলেছে। রাসূলের যুগ থেকে আজ পর্যন্ত কেউ এ কুরআনের মত কিছু আনার দুঃসাহস দেখাতে পারে নি। আর কোনোদিন পারবেও না। গোটা বিশ্বের যিনি সৃষ্টিকর্তা তাঁর কথার সমকক্ষ কোনো কথা কি কোন সৃষ্টির পক্ষে আনা সম্ভব?

[২] ইবন কাসীর বলেন, এখানে ‘পাথর’ দ্বারা কালো গন্ধক পাথর বোঝানো হয়েছে। গন্ধক দিয়ে আগুন জ্বালালে তার তাপ ভীষণ ও স্থায়ী হয়। আসমান যমীন সৃষ্টির সময়ই আল্লাহ্ তা'আলা কাফিরদের জন্য তা সৃষ্টি করে প্রথম আসমানে রেখে দিয়েছেন। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, এখানে ঐ সমস্ত পাথর উদ্দেশ্য, যেগুলোর ইবাদাত করা হয়েছে। [ইবন কাসীর] আর জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, “তোমাদের এ আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের এক ভাগ। সাহাবায়ে কিরাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এ এক ভাগ দিয়ে শাস্তি দিলেই তো যথেষ্ট হতো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, জাহান্নামের আগুন তোমাদের আগুনের তুলনায় উনসত্তর গুণ বেশী উত্তপ্ত।" [বুখারী ৩২৬৫, মুসলিম ২৪৮৩]

[৩] এ আয়াতাংশের ব্যাখ্যা হচ্ছে, জাহান্নাম কাফেরদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানে (اعِدَّ) এর সর্বনামটির ইঙ্গিত সুস্পষ্টতই মানুষ ও পাথর দ্বারা প্রজ্জ্বলিত জাহান্নামের দিকে। অবশ্য এ সর্বনামটি পাথরের ক্ষেত্রেও হতে পারে। তখন অর্থ দাঁড়ায়, পাথরগুলো কাফিরদের শাস্তি প্রদানের জন্য তৈরী করে রাখা হয়েছে। ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অনুরূপ তাফসীর বর্ণিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উভয় অর্থের মধ্যে বড় ধরনের কোনো তফাৎ নেই। একটি অপরটির পরিপূরক ও পরস্পর অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আগুন বিহীন যেমন পাথর জ্বলে না, তেমনি পাথর বিহীন আগুনের দাহ্য ক্ষমতাও বাড়ে না। সুতরাং উভয় উপাদানই কাফেরদের কঠোর শাস্তি দেয়ার জন্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আয়াতের এ অংশ দ্বারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইমামগণ দলীল নেন যে, জাহান্নাম বর্তমানে তৈরী করা অবস্থায় আছে। জাহান্নাম যে বাস্তবিকই বর্তমানে রয়েছে তার প্রমাণ অনেক হাদীস দ্বারা পাওয়া যায়। যেমন, জাহান্নাম ও জান্নাতের বিবাদের বর্ণনা সংক্রান্ত হাদীস। [বুখারী ৪৮৪৯, মুসলিম: ২৮৪৬]

জাহান্নামের প্রার্থনা মোতাবেক তাকে বছরে শীত ও গ্রীষ্মে দুই বার শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের অনুমতি প্রদানের বর্ণনা [বুখারী ৫৩৭, মুসলিম ৬৩৭]

ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এক হাদীসে আছে, “আমরা একটি বিকট শব্দ শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে তার কারণ জানতে চাওয়ায় তিনি বললেন, এটা সত্তর বছর পূর্বে জাহান্নামের উদ্দেশ্যে নিক্ষিপ্ত পাথর জাহান্নামে পতিত হওয়ার আওয়ায।" [মুসলিম ২৮৪৪, মুসনাদে আহমাদ ২/৪৭১] তাছাড়া সূর্যগ্রহণের সালাত এবং মিরাজের রাত্রির ঘটনাবলীও প্রমাণ করে যে, জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়টিই তৈরী করে রাখা হয়েছে। [ইবন কাসীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
 
Translation of the meanings Ayah: (24) Surah: Al-Baqarah
Surahs’ Index Page Number
 
Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation - Abu Bakr Zakaria - Translations’ Index

Translation of the Quran meanings into Bengali by Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria.

close