Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation - Abu Bakr Zakaria * - Translations’ Index


Translation of the meanings Ayah: (1) Surah: At-Tawbah

সূরা আত-তাওবা

بَرَآءَةٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦٓ إِلَى ٱلَّذِينَ عَٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ
এটা সম্পর্কচ্ছেদ আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে, সে সব মুশরিকদের সাথে, যাদের সাথে তোমরা পারস্পারিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলে [১]।
সূরা সংক্রান্ত আলোচনা:

সূরা নাযিল হওয়ার স্থান:

সূরাটি সর্বসম্মতভাবে মাদানী সূরা। বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সূরা বারা’আত সবশেষে অবতীর্ণ সূরা। [বুখারী ৪৬৫৪, মুসলিম ১৬১৮]

আয়াত সংখ্যা: ১২৯।

সূরার নামকরণ:

তাফসীরে এ সূরার ১৩ টি নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তন্মধ্যে বিখ্যাত হলো, সূরা আত-তাওবাহ, সূরা আল-বারাআহ বা বারাআত। বারাআত বলা হয় এ জন্য যে, এতে কাফেরদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়িত্ব মুক্তির উল্লেখ রয়েছে। আর "তাওবাহ’ বলা হয় এজন্য যে, এতে মুসলিমদের তাওবাহ কবুল হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। এ ছাড়াও এ সূরার আরও কয়েকটি নাম উল্লেখ করা হয়। যেমন, সূরা আল-ফাদিহা বা গোপন বিষয় প্রকাশ করে লজ্জা দিয়ে মাথা হেটকারী। [বুখারী ৪৮৮২, মুসলিম ৩০৩১, মুস্তাদরাকে হাকেম ৩২৭৪] এ সূরার আরেক নাম সূরা আল-আযাব। এ ছাড়াও এ সূরার অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে, ‘আল মুকাশকেশাহ’ ‘আল বুহুস’ ‘আল-মুনাক্কেরাহ’ ‘আল-হাফিরাহ’ ‘আল-মুসিরাহ’ ‘আল-মুবাসিরাহ’ আল-মুদামদিমাহ’ ‘আল-মুখযিয়াহ’ ‘আল মুনাক্কিলাহ’ ‘আল মুশাররিদাহ’। পরবর্তী নামগুলোর অধিকাংশই মুনাফেকদের অবস্থা বর্ণনাকারী। [আসমাউ সুওয়ারিল কুরআন ]

সূরাটির প্রথমে বিসমিল্লাহ পড়া না পড়ার হুকুম:

সূরাটির একটি বৈশিষ্ট্য হল, কুরআন মজীদে এর শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখা হয় না, অথচ অন্যান্য সকল সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখা হয়। কুরআন সংগ্রাহক উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় শাসনামলে যখন কুরআনকে গ্রন্থের রূপ দেন, তখন অন্যান্য সূরার মত করে সূরা তাওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ' লিখা হয়নি। ইবন আব্বাস বলেন, আমি উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞেস করলাম, কি কারণে আপনারা আল-আনফালকে মাসানী বা শতের চেয়েও ছোট হওয়া সত্বেও সূরা বারাআত এর সাথে রাখলেন, অথচ বারাআত হচ্ছে, শত আয়াত সম্পন্ন সূরা? আবার এ দু’সূরার মাঝখানে কেনইবা বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লাইনটি লিখলেন না? তারপরও সেটাকে লম্বা সাতটি সূরার অন্তর্ভুক্ত কেন করলেন? তখন উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, কুরআনে মজীদ বিভিন্ন সময় ধরে অল্প অল্প করে নাযিল হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখনই কোনো আয়াত নাযিল হত, তখনই যারা ওহী লিখত তাদের কাউকে ডেকে বলতেন, এটাকে ঐ সূরার মধ্যে সন্নিবেশিত করে দিবে যাতে অমুক অমুক বিষয় লিখা আছে। সুতরাং যখনই কোনো সূরা নাযিল হত, তখনই তিনি তাদেরকে বলতেন, এটাকে অমুক অমুক বিষয় যে সূরায় আলোচনা আছে তোমরা সেখানে স্থান দাও। আর সূরা আল-আনফাল ছিল মদীনায় নাযিল হওয়া প্রাথমিক সূরাগুলোর অন্যতম ৷ পক্ষান্তরে ‘বারাআত’ ছিল কুরআনের শেষে নাযিল হওয়া সূরা। কিন্তু এ দুটির ঘটনা একই ধরনের। তাই আমি মনে করেছি যে, এটা পূর্বের সূরারই অংশ। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যু হয়। অথচ তিনি আমাদেরকে স্পষ্ট জানিয়ে দেননি যে, এটি পূর্বের সূরার অংশ। এজন্যই আমি এ দু'টিকে একসাথে লিখেছি এবং এ দু’য়ের মাঝখানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম লিখিনি। তারপর সেটাকে প্রাথমিক সাতটি লম্বা সূরার মধ্যে স্থান দিলাম। [তিরমিযী ৩০৮৬; মুসনাদে আহমাদ ১/৫৭; আবু দাউদ ৭৮৬; নাসায়ী ফিল কুবরা ৮০০৭; মুস্তাদরাকে হাকিম ২/৩৩০]

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা কর্তৃক আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অপর একটি বর্ণনায় সূরা তাওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ না লেখার কারণ দর্শানো হয় যে, বিসমিল্লাহ-তে আছে শান্তি ও নিরাপত্তার পয়গম, কিন্তু সূরা তাওবায় কাফেরদের জন্যে শান্তি ও নিরাপত্তা চুক্তিগুলো নাকচ করে দেয়া হয়। [কুরতুবী আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]

---------------

[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবম হিজরীতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠালেন। তিনি কুরবানীর দিন এগুলোকে মানুষের মধ্যে ঘোষণা করলেন। এর সাথে আরও ঘোষণা ছিল যে, এরপর আর কোনো লোক উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করবে না। কোনো মুশরিক হজ করবে না। মুমিন ছাড়া কেউ জান্নাতে যাবে না। এভাবে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু সেটা বলতেন, যখন অপারগ হতেন, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন। [ইবন কাসীর]
Arabic explanations of the Qur’an:
 
Translation of the meanings Ayah: (1) Surah: At-Tawbah
Surahs’ Index Page Number
 
Translation of the Meanings of the Noble Qur'an - Bengali translation - Abu Bakr Zakaria - Translations’ Index

Translation of the Quran meanings into Bengali by Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria.

close