Traducción de los significados del Sagrado Corán - Traducción bengalí- Abu Bakr Zakaria * - Índice de traducciones


Traducción de significados Versículo: (10) Capítulo: Sura Yunus
دَعۡوَىٰهُمۡ فِيهَا سُبۡحَٰنَكَ ٱللَّهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمۡ فِيهَا سَلَٰمٞۚ وَءَاخِرُ دَعۡوَىٰهُمۡ أَنِ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
সেখানে তাদের ধ্বনি হবে: ‘হে আল্লাহ্‌! আপনি মহান, পবিত্র [১]! এবং সেখানে তাদের অভিবাদন হবে, ‘সালাম’ [২] আর তাদের শেষ ধ্বনি হবে: ‘সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ্‌র প্রাপ্য [৩]!’
[১] এ আয়াতে জান্নাতবাসীদের প্রথম ও প্রধান অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। [সা’দী] বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসীদের دعوى হবে (سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ)। এখানে دعوى শব্দটির অর্থ কি, এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত রয়েছে। কারণ, دعوى শব্দটির কয়েকটি অর্থ রয়েছে-

(এক) দাবী করা। তখন আয়াতের অর্থ হবে, দুনিয়ায় ও আখেরাতে সবসময়ই জান্নাতবাসীগণের দাবী ছিল আল্লাহ্ তা'আলাকে যাবতীয় দোষ-ত্রুটিমুক্ত ঘোষণা করা, তাঁর জন্য উলুহিয়াত তথা যাবতীয় ইবাদাত সাব্যস্ত করা। তাই তারা জান্নাতেও এটার দাবী করবে। [তাবারী] কোনো কোনো মুফাসসির আবার এ অর্থ করেছেন যে, এখানে দাবী করার অর্থ সার্বক্ষণিক এ কাজে লেগে থাকা। ছুটতে থাকে। [ফাতহুল কাদীর]

(দুই) দোআ করা। [তাবারী] আর দোআ করার অর্থ নির্ধারণে আলেমগণ বেশকিছু মতামত ব্যক্ত করেছেন- (ক) তাদের আহবান ও সম্বোধন হবে তাসবীহ ও তাহমীদের মাধ্যমে। (খ) তাদের ইবাদাত হবে সুবাহানাকাল্লাহুম্মা এ কালেমার মাধ্যমে। [বাগভী] (গ) তাদের কথা ও কাজও হবে উক্ত কালেমার মাধ্যমে। [বাগভী] এসবগুলোই অর্থ হতে পারে। কারণ, আমরা জানি যে, দুআ দু'প্রকার। (এক) চাওয়ার মাধ্যমে দু’আ। যেমন আল্লাহ আমাকে অমুক বস্তু দান করুন। এ ধরণের দোআ অনেক পরিচিত। (দুই) ইবাদাত ও প্রশংসার মাধ্যমে দোআ যাতে আল্লাহর প্রশংসা এবং শুকরিয়া থাকে। এ হিসাবে কুরআন ও সুন্নায় বহু দোআ এসেছে। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সবচেয়ে উত্তম দোআ হলো আলহামদুলিল্লাহ। [তিরমিযী ৩৩০৫, ইবন মাজাহ ৩৭৯০] অনুরূপভাবে অন্য হাদিসে বলা হয়েছে: মুসীবতের দো’আ হচ্ছে-

( لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ، وَرَبُّ الْأَرْضِ، وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ)

অর্থাৎ, ‘আল্লাহ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য কোনো মা’বুদ নেই, তিনি মহান, সহিষ্ণু। আল্লাহ্‌ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই, তিনি আরশের মহান রব। আল্লাহ্‌ ছাড়া ইবাদাতের যোগ্য কোনো মা’বুদ নেই, তিনি আসমান-যমীনের রব এবং ‘আরশের মহান রব’। [বুখারী ৬৩৪৫, মুসলিম ২৭৩০] অনুরূপভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, যিন্নুন (ইউনুস) 'আলাইহিস সালাম যখন মাছের পেটে ছিলেন তখন তার দো'আ ছিল : (লা ইলাহা ইল্লা আনৃতা সুবহানাকা ইন্নিকুন্তু মিনায্‌যোয়ালিমীন)। এ দোআ দ্বারা যখনই কোনো মুসলিম কিছুর জন্য দো'আ করবে, আল্লাহ তার দো'আ কবুল করবেন। [তিরমিযী ৩৫০০] এ সমস্ত হাদীস এবং এ জাতীয় অন্যান্য অনেক হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, আল্লাহর প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে দোআ করার নির্দেশ শরীআতে এসেছে। তাই অনেক আলেম এ ধরণের প্রশংসাসূচক দোআকে চাওয়াসূচক দোআ হতে শ্রেষ্ঠ বলে মত প্রকাশ করেছেন। এসব কিছু থেকে একথা স্পষ্ট হচ্ছে যে, জান্নাতের অধিবাসীগণের আল্লাহর প্রশংসা, পবিত্রতা ঘোষণা করা মূলতঃ আল্লাহর কাছে দোআ করা। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, যেহেতু তাদের উপর থেকে ইবাদতের যাবতীয় বোঝা নামিয়ে দেয়া হয়েছে, তখন তাদের কাছে শুধু বাকী থাকবে সবচেয়ে বড় স্বাদের বিষয়। আর তা হচ্ছে আল্লাহর যিকর করা যা অন্যান্য যাবতীয় নে’আমতের চেয়ে তাদের কাছে বেশী মজাদায়ক হবে, যাতে থাকবে না কোনো কষ্ট। [সা'দী]

(তিন) আশা-আকাঙ্খা করা, [ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ জান্নাতে তাদের সবধরণের নেয়ামত লাভের পর তাদের আর কোনো চাহিদা বাকী থাকবে না। তাই তারা শুধু সুবাহানাকা আল্লাহুম্মা বা ‘হে আল্লাহ্! আপনি কতই না পবিত্র!’ এ প্রশংসামূলক বাক্যই তাদের দ্বারা সর্বক্ষণ ঘোষিত হোক এমনটি আশা করবে এবং বলতে চাইবে। [ইবন কাসীর] মোটকথা, জান্নাতবাসীদের যাবতীয় দোআ, কাজ, কথা, দাবী, আশা-আকাঙ্খা সবকিছুই হবে আল্লাহর তাসবীহ পাঠ ও তার তাহমীদ বা প্রশংসায় নিয়োজিত থাকা। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "জান্নাতবাসীগণ জান্নাতে খাবে এবং পান করবে, কিন্তু কোন থুথু, পায়খানা-পেশাব, সর্দি-কাশির সম্মুখীন হবে না। শুধুমাত্র ঢেকুর আসবে যাতে মিস্কের সুঘ্ৰাণ থাকবে। তাদের মনে শ্বাস-প্রশ্বাসের মতই আল্লাহর তাসবীহ তাহমীদ (সুবাহানাল্লাহ-আলহামদুলিল্লাহ) পাঠ করতে ইলহাম (মনে উদিত করে দেয়া) হবে। [মুসলিম ২৮৩৫]

[২] জান্নাতবাসীদের দ্বিতীয় অবস্থা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে (وَ تَحِیَّتُهُمۡ فِیۡهَا سَلٰمٌ) প্রচলিত অর্থে تَحِيَّةٌ বলা হয় এমন শব্দ বা বাক্যকে যার মাধ্যমে কোনো আগন্তুক কিংবা অভ্যাগতকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। যেমন, সালাম, স্বাগতম, খোশ আমদেদ, কিংবা আহলান ওয়া সাহ্লান প্রভৃতি। সুতরাং আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা'আলা অথবা ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে জান্নাতবাসীদেরকে سلام এর মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হবে। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ এ সুসংবাদ দেয়া হবে যে, তোমরা যে কোনো রকম কষ্ট ও অপছন্দনীয় বিষয় থেকে হেফাযতে থাকবে। এ সালাম স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকেও হতে পারে। যেমন, সূরা ইয়াসীনে রয়েছে

(سَلٰمٌ ۟ قَوۡلًا مِّنۡ رَّبٍّ رَّحِیۡمٍ)

আবার ফিরিশতাদের পক্ষ থেকেও হতে পারে। আবার ফিরিশতা কর্তৃক তাদের রবের পক্ষ থেকেও হতে পারে। [বাগভী] যেমন, অন্যত্র বলা হয়েছে

(وَ الۡمَلٰٓئِکَةُ یَدۡخُلُوۡنَ عَلَیۡهِمۡ مِّنۡ کُلِّ بَابٍ ٭ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ)

অর্থাৎ ফিরিশতাগণ প্রতিটি দরজা দিয়ে সালামুন আলাইকুম বলতে বলতে জান্নাতবাসীদের কাছে আসতে থাকবেন। [সূরা আর-রাদ ২৩-২৪] আর এ দু'টি বিষয়ে বিরোধ-বৈপরীত্ব নেই যে, কখনো সরাসরি স্বয়ং আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে এবং কখনো ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে সালাম আসবে। আবার জান্নাতীগণ পরস্পরকে এ সালামের মাধ্যমে সাদর সম্ভাষণ জানাবেন। [ফাতহুল কাদীর; সাদী] আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,

(تَحِیَّتُهُمۡ یَوۡمَ یَلۡقَوۡنَهٗ سَلٰمٌ)

অর্থাৎ "যেদিন তারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎকরবে, সেদিন তাদের পরস্পর সম্ভাষণ হবে সালামের মাধ্যমে।” [সূরা আহযাব ৪৪, অনুরূপ আয়াত আরো দেখুন, ওয়াকি'আ ২৫-২৬] অর্থাৎ সালাম শব্দটি তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে, ফিরিশতাদের পক্ষ থেকে এবং মুমিনগণ পরস্পর নিজেদের মধ্যে বিনিময় করবে। সালাম শব্দের আরেক অর্থ দোআ বা যাবতীয় আপদ থেকে নিরাপত্তা। তখন অর্থ হবে, জাহান্নামবাসীরা যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে তোমাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করা হচ্ছে। [তাবারী]

[৩] জান্নাতবাসীদের তৃতীয় অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, জান্নাতবাসীদের সর্বশেষ দোআ হবে

(اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ)

অর্থাৎ জান্নাতীরা জান্নাতে পৌছার পর আল্লাহ তা'আলাকে জানার ক্ষেত্রে বিপুল উন্নতি লাভ করবে। তখন তারা শুধু তার প্রশংসাই করতে থাকবে। জান্নাতীদের প্রাথমিক দো’আ হবে (سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ) আর সর্বশেষ দো’আ হবে

(اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ)

এতে আল্লাহ রাববুল আলামীন-এর বিশেষ কিছু গুণ-বৈশিষ্টের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। [বাগভী] যেমন, পরাক্রম ও মহত্ত্ব গুণ যাতে যাবতীয় দোষ-ত্রুটি হতে আল্লাহ তা'আলার পবিত্রতার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। আরো রয়েছে ‘সিফাতে করম’ যাতে তার মহানুভবতা, পরিপূর্ণতা ও পরাকাষ্ঠার উল্লেখ রয়েছে। কুরআনুল কারীমের

(تَبٰرَکَ اسۡمُ رَبِّکَ ذِی الۡجَلٰلِ وَ الۡاِکۡرَامِ) [সূরা আর-রাহমান ৭৮]

আয়াতে এতদুভয় গুণ-বৈশিষ্টের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ আয়াত এবং এ জাতীয় অন্যান্য আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলা সদা প্রশংসিত। সহীহ হাদীসে এসেছে, “জান্নাতবাসীগণকে তাসবীহ ও তাহমীদ যথা সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহর ইলহাম এমনভাবে করা হবে যেমনিভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ইলহাম করা হবে।" [মুসলিম ২৮৩৫] এটা একথাই প্রমাণ করে যে, মহান আল্লাহ সদা প্রসংশিত। আমরা যদি কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের প্রতি তাকাই তাহলে দেখতে পাব যে, আল্লাহ নিজেকে বিভিন্নভাবে প্রশংসনীয় বলে ব্যক্ত করেছেন। সূরা আলফাতিহার তাফসীরে তার বর্ণনা চলে গেছে।
Las Exégesis Árabes:
 
Traducción de significados Versículo: (10) Capítulo: Sura Yunus
Índice de Capítulos Número de página
 
Traducción de los significados del Sagrado Corán - Traducción bengalí- Abu Bakr Zakaria - Índice de traducciones

Traducción del significado del Noble Corán al bengalí por el Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria

Cerrar