ترجمهٔ معانی قرآن کریم - ترجمه ى بنگالی - ابو بكر زكريا * - لیست ترجمه ها


ترجمهٔ معانی آیه: (28) سوره: سوره فاطر
وَمِنَ ٱلنَّاسِ وَٱلدَّوَآبِّ وَٱلۡأَنۡعَٰمِ مُخۡتَلِفٌ أَلۡوَٰنُهُۥ كَذَٰلِكَۗ إِنَّمَا يَخۡشَى ٱللَّهَ مِنۡ عِبَادِهِ ٱلۡعُلَمَٰٓؤُاْۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
আর মানুষের মাঝে, জন্তু ও গৃহপালিত জানোয়ারের মাঝেও বিচিত্র বর্ণ রয়েছে অনুরূপ। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই কেবল তাঁকে ভয় করে [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
[১] বলা হয়েছে যে, কেবল আলেম ও জ্ঞানীগণই আল্লাহকে ভয় করে। আল্লাহর শক্তিমত্তা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বিজ্ঞানময়তা, ক্ৰোধ, পরাক্রম, সার্বভৌম কর্তৃত্ব-ক্ষমতা ও অন্যান্য গুণাবলী সম্পর্কে যে ব্যক্তি যতবেশী জানবে সে ততবেশী তাঁর নাফরমানী করতে ভয় পাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলীর ব্যাপারে যতবেশী অজ্ঞ হবে সে তাঁর ব্যাপারে তত বেশী নির্ভীক হবে। এ আয়াতে জ্ঞান অর্থ দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস, অংক ইত্যাদি স্কুল-কলেজে পঠিত বিষয়ের জ্ঞান নয়। বরং এখানে জ্ঞান বলতে আল্লাহর গুণাবলীর জ্ঞান বুঝানো হয়েছে। এ জন্য শিক্ষিত ও অশিক্ষিত হওয়ার প্রশ্ন নেই। তাই আয়াতে العلماء বা ‘উলামা’ বলে এমন লোকদের বোঝানো হয়েছে, যারা আল্লাহ তা'আলার সত্তা ও গুণাবলী সম্পর্কে সম্যক অবগত এবং পৃথিবীর সৃষ্টবস্তু সামগ্ৰী, তার পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও আল্লাহর দয়া-করুণা নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেন। কেবল আরবী ভাষা, ব্যাকরণ-অলংকারাদি সম্পর্কে জ্ঞানী ব্যক্তিকেই কুরআনের পরিভাষায় 'আলেম’ বলা হয় না। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে না সে যুগের শ্ৰেষ্ঠ পণ্ডিত হলেও এ জ্ঞানের দৃষ্টিতে সে নিছক একজন মুর্খ ছাড়া আর কিছুই নয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর গুণাবলী জানে এবং নিজের অন্তরে তাঁর ভীতি পোষণ করে সে অশিক্ষিত হলেও জ্ঞানী। তবে কারও ব্যাপারে তখনই এ আয়াতটির প্রয়োগ ক্ষেত্রে পরিণত হবে যখন তাদের মধ্যে আল্লাহভীতি থাকবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও এক হাদীসে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তবে হাসতে কম কাঁদতে বেশী।” [বুখারী ৬৪৮৬, মুসলিম ২৩৫৯] এর কারণ, রাসূল আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী জানেন, তার তাকওয়াও সবচেয়ে বেশী। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একথাই বলেছেন, “বিপুল সংখ্যক হাদীস জানা জ্ঞানের পরিচায়ক নয় বরং বেশী পরিমাণ আল্লাহভীতিই জ্ঞানের পরিচয় বহন করে।” ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘তারাই হচ্ছে আলেম যারা নিশ্চিত বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান।' তিনি আরও বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি রহমান সম্পর্কে আলেম যিনি তার সাথে কাউকে শরীক করেন নি, তাঁর হালালকে হালাল করেছেন, হারামকে হারাম করেছেন, তাঁর অসীয়ত বা নির্দেশাবলীর পূর্ণ হিফাযত করেছেন, আর বিশ্বাস করেছেন যে, একদিন তাকে তার সাথে সাক্ষাত করতে হবে এবং তার যাবতীয় কর্মকাণ্ডের হিসাব দিতে হবে।’ হাসান বাসরী রাহে মাহুল্লাহ বলেন, “আল্লাহকে না দেখে বা একান্তে ও জনসমক্ষে যে ভয় করে সেই হচ্ছে আলেম। আল্লাহ যা কিছু পছন্দ করেন সেদিকেই আকৃষ্ট হয় এবং যে বিষয়ে আল্লাহ নারাজ সে ব্যাপারে সে কোনো আগ্রহ পোষণ করে না।” সুফিয়ান সাওরী বর্ণনা করেন যে, জ্ঞানী তিন ধরনের হয়। এক. আল্লাহ সম্পর্কে সম্যক অবগত, তাঁর নির্দেশ সম্পর্কেও জ্ঞানী। দুই. আল্লাহ সম্পর্কে সম্যক অবগত, কিন্তু তাঁর নির্দেশ সম্পর্কে অজ্ঞ। তিন. আল্লাহর নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞানী, কিন্তু আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ। সুতরাং যে আল্লাহ সম্পর্কে সম্যক অবগত ও তার নির্দেশ সম্পর্কেও জ্ঞানী সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহর ফরয ওয়াজিবের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে। আর যে আল্লাহর নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞানী কিন্তু আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে ভয় করে কিন্তু তাঁর ফরয ওয়াজিবের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেনা। আর যে আল্লাহর নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞানী অথচ তাঁর সম্পর্কে জ্ঞান রাখেনা সে এ ব্যক্তি যে, আল্লাহকে ভয় করে না কিন্তু আল্লাহর ফরয ওয়াজিবের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে। সারকথা, যার মধ্যে যে পরিমাণ আল্লাহ ভীতি হবে, সে সেই পরিমাণ আলেম হবে। আহমদ ইবন সালেহ মিসরী বলেন, অধিক বর্ণনা ও অধিক জ্ঞান দ্বারা আল্লাহভীতির পরিচয় পাওয়া যায় না; বরং কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ দ্বারা এর পরিচয় পাওয়া যায়। সুতরাং যার মধ্যে আল্লাহভীতি নেই, সে আলেম নয়। [দেখুন, তাবারী; বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
تفسیرهای عربی:
 
ترجمهٔ معانی آیه: (28) سوره: سوره فاطر
فهرست سوره ها شماره صفحه
 
ترجمهٔ معانی قرآن کریم - ترجمه ى بنگالی - ابو بكر زكريا - لیست ترجمه ها

ترجمهٔ معانی قرآن کریم به زبان بنغالی. ترجمهٔ دکتر ابوبکر محمد زکریا.

بستن