Check out the new design

ترجمهٔ معانی قرآن کریم - ترجمه‌ى بنگالی - ابو بكر زكريا * - لیست ترجمه ها


ترجمهٔ معانی سوره: انعام   آیه:
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَمۡ يَلۡبِسُوٓاْ إِيمَٰنَهُم بِظُلۡمٍ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلۡأَمۡنُ وَهُم مُّهۡتَدُونَ
যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুম [১] (শির্ক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য [২] এবং তারাই হেদায়েতপ্রাপ্ত।
[১] এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যাখ্যা অনুযায়ী বলা হচ্ছে- যুলুমের অর্থ শির্ক- সাধারণ গোনাহ নয়। কিন্তু ظلم শব্দটি نكرة ব্যবহার করায় আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী এর অর্থ ব্যাপক হয়ে গেছে। অর্থাৎ যাবতীয় শির্কই এর অন্তর্ভুক্ত। يَلْبسُوْا শব্দটি لَبْسٌ থেকে উদ্ভুত। এর অর্থ পরিধান করা কিংবা মিশ্রিত করা। আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, যে ব্যক্তি স্বীয় বিশ্বাসের সাথে কোনো প্রকার শির্ক মিশ্রিত করে তার কোনো নিরাপত্তা নেই। এ আয়াত দ্বারা বুঝা গেল যে, খোলাখুলিভাবে মুশরিক বা মূর্তিপূজারী হয়ে যাওয়াই শুধু শির্ক নয়, বরং সে ব্যক্তিও মুশরিক, যে কোনো প্রতিমার পূজা করে না এবং ইসলামের কালেমা উচ্চারণ করে; কিন্তু কোনো ফিরিশতা কিংবা রাসূল কিংবা ওলীকে আল্লাহর কোনো কোনো বিশেষ গুণে অংশীদার মনে করে বা আল্লাহকে যা দিয়ে ইবাদাত করা হয় তাদেরকে তেমন কিছু দিয়ে ইবাদাত করে। সুতরাং জনসাধারণের মধ্যে যারা কোনো পীর, জ্বিন, ওলী বা মাযার ইত্যাদিকে মনোবাঞ্ছা পূরণকারী বলে বিশ্বাস করে এবং কার্যতঃ মনে করে যে, আল্লাহর ক্ষমতা যেন তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই মুশরিক। তারা আল্লাহর রুবুবিয়াতে শির্ক করল। অনুরূপভাবে যারা কবরবাসী, ওলী, মাযার, জ্বিন ইত্যাদিকে আহবান করে, সিজদা করে, সাহায্য চায়, মান্নত করে, তাদের উদ্দেশ্যে যবেহ্ করে তারা সবাই মুশরিক। তাদের নিরাপত্তা নেই। তারা আল্লাহর উলুহিয়াতে শির্ক করল এবং তাওবা না করে মারা গেলে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকবে।

[২] অর্থাৎ শাস্তির কবল থেকে নিরাপদ ও নিশ্চিত তারাই হতে পারে, যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে, তারপর সে ঈমানের সাথে কোনোরূপ যুলুমকে মিশ্রিত করেনি। হাদীসে আছে, এ আয়াত নাযিল হলে সাহাবায়ে কেরাম চমকে উঠেন এবং আরয করেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে পাপের মাধ্যমে নিজের উপর যুলুম করেনি? এ আয়াতে শাস্তির কবল থেকে নিরাপদ হওয়ার জন্য বিশ্বাসের সাথে যুলুমকে মিশ্রিত না করার শর্ত বর্ণিত হয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের মুক্তির উপায় কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেন, তোমরা আয়াতের প্রকৃত অর্থ বুঝতে সক্ষম হওনি। আয়াতে যুলুম বলতে শির্ককে বোঝানো হয়েছে। দেখ, অন্য এক আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন,

(اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ)

অর্থাৎ “নিশ্চিত শির্ক বিরাট যুলুম।” [বুখারী ৪৬২৯, ৬৯১৮] কাজেই আয়াতের অর্থ হচ্ছে, যে ব্যক্তি ঈমান আনে, অতঃপর আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী এবং তার ইবাদাতে কাউকে অংশীদার স্থির না করে, সে শাস্তির কবল থেকে নিরাপদ ও সুপথ প্রাপ্ত।
تفسیرهای عربی:
وَتِلۡكَ حُجَّتُنَآ ءَاتَيۡنَٰهَآ إِبۡرَٰهِيمَ عَلَىٰ قَوۡمِهِۦۚ نَرۡفَعُ دَرَجَٰتٖ مَّن نَّشَآءُۗ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيمٞ
আর এটাই আমাদের যুক্তি –প্রমাণ যা ইবরাহীমকে তার জাতির মোকাবেলায়, যাকে ইচ্ছা আমরা মর্যাদায় উন্নীত করি। নিশ্চয় আপনার রব প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।
দশম রুকূ’
تفسیرهای عربی:
وَوَهَبۡنَا لَهُۥٓ إِسۡحَٰقَ وَيَعۡقُوبَۚ كُلًّا هَدَيۡنَاۚ وَنُوحًا هَدَيۡنَا مِن قَبۡلُۖ وَمِن ذُرِّيَّتِهِۦ دَاوُۥدَ وَسُلَيۡمَٰنَ وَأَيُّوبَ وَيُوسُفَ وَمُوسَىٰ وَهَٰرُونَۚ وَكَذَٰلِكَ نَجۡزِي ٱلۡمُحۡسِنِينَ
আর আমরা তাকে দান করেছিলাম ইসহাক ও ইয়া’কূব, এদের প্রত্যেককে হিদায়াত দিয়েছিলাম; পূর্বে নূহকেও আমরা হিদায়াত দিয়েছিলাম এবং তার বংশধর দাউদ, সুলাইমান, আইউব, ইউনূস, মূসা ও হারূনকেও; আর এভাবেই মুহসিনদেরকে পুরস্কৃত করি;
تفسیرهای عربی:
وَزَكَرِيَّا وَيَحۡيَىٰ وَعِيسَىٰ وَإِلۡيَاسَۖ كُلّٞ مِّنَ ٱلصَّٰلِحِينَ
আর যাকারিয়্যা , ইয়াহইয়া, ঈসা এবং ইলয়াসকেও (হিদায়াত দিয়েছিলাম)। এরা প্রত্যেকেই সৎকর্মপরায়ণ ছিলেন;
تفسیرهای عربی:
وَإِسۡمَٰعِيلَ وَٱلۡيَسَعَ وَيُونُسَ وَلُوطٗاۚ وَكُلّٗا فَضَّلۡنَا عَلَى ٱلۡعَٰلَمِينَ
এবং ইসমা’ঈল, আল-ইয়াসা, ‘ইউনুস ও লূতকেও (হিদায়াত দিয়েছিলাম); আর তাদের প্রত্যেককে আমরা শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম দৃষ্টিকুলের উপর।
تفسیرهای عربی:
وَمِنۡ ءَابَآئِهِمۡ وَذُرِّيَّٰتِهِمۡ وَإِخۡوَٰنِهِمۡۖ وَٱجۡتَبَيۡنَٰهُمۡ وَهَدَيۡنَٰهُمۡ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ
এবং তাদের পিতৃপুরুষ, বংশধর ও ভাইদের কিছুসংখ্যককে। আর আমরা তাদেরকে মনোনীত করেছিলাম এবং সরল পথে পরিচালিত করেছিলাম।
تفسیرهای عربی:
ذَٰلِكَ هُدَى ٱللَّهِ يَهۡدِي بِهِۦ مَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦۚ وَلَوۡ أَشۡرَكُواْ لَحَبِطَ عَنۡهُم مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ
এটা আল্লাহ্‌র হিদায়াত, স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে তিনি এ দ্বারা হিদায়াত করেন। আর যদি তারা শির্ক করত তবে তাঁদের কৃতকর্ম নিস্ফল হত [১]।
[১] আলোচ্য আয়াতসমূহে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত দানসমূহ বর্ণনা করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসের একটি নিয়ম ব্যক্ত করা হয়েছে যে, “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে প্রিয় বস্তু বিসর্জন দেয়, আল্লাহ তা'আলা তাকে দুনিয়াতেও তদপেক্ষা উত্তম বস্তু দান করেন।" [মুসনাদে আহমাদ ৫/৩৬৩] অপরদিকে মক্কার মুশরিকদেরকে এসব অবস্থা শুনিয়ে বলা হয়েছে যে, দেখ, তোমাদের মান্যবর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তার সমগ্র পরিবার এ কথাই বলে এসেছেন যে, আরাধনার যোগ্য একমাত্র সত্তা হচ্ছেন আল্লাহ তা'আলা। তার সাথে অন্যকে আরাধনায় শরীক করা কিংবা তার বিশেষ গুণে তার সমতুল্য মনে করা, তার ইবাদাতে অপর কাউকে শরীক করা শির্ক, কুফর ও পথভ্রষ্টতা। অতএব, তোমরা যদি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদেশ অমান্য কর, তবে তোমরা আপন স্বীকৃত বিষয় অনুযায়ীও অভিযুক্ত।
تفسیرهای عربی:
أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ءَاتَيۡنَٰهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحُكۡمَ وَٱلنُّبُوَّةَۚ فَإِن يَكۡفُرۡ بِهَا هَٰٓؤُلَآءِ فَقَدۡ وَكَّلۡنَا بِهَا قَوۡمٗا لَّيۡسُواْ بِهَا بِكَٰفِرِينَ
এরাই তারা, যাদেরকে আমরা কিতাব, কতৃত্ব ও নবুওয়াত দান কারেছি, অতঃপর যদি তারা এগুলোর সাথে কুফরি করে, তবে আমরা এমন এক সম্প্রদায়কে এগুলোর ভার দিয়েছি যারা এগুলোর সাথে কাফির নয় [১]।
[১] অর্থাৎ কিছুসংখ্যক সম্বোধিত ব্যক্তি যদি আপনার কথা অমান্য করে এবং পূর্ববর্তী সমস্ত নবীগণের নির্দেশ বর্ণনা করা সত্বেও অস্বীকারই করতে থাকে, তবে আপনি দুঃখিত হবেন না। কেননা আপনার নবুওয়াত স্বীকার করার জন্য আমি একটি বিরাট জাতি স্থির করে রেখেছি। তারা অবিশ্বাস করবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমলে বিদ্যমান মুহাজির ও আনসার এবং কেয়ামত পর্যন্ত আগমনকারী সমস্ত মুসলিম এ ‘জাতি’র অন্তর্ভুক্ত। [আইসারুত তাফাসীর] এ আয়াত তাদের সবার জন্য গর্বের সামগ্রী। কেননা এ আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা প্রশংসার স্থলে তাদের উল্লেখ করেছেন।
تفسیرهای عربی:
أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ هَدَى ٱللَّهُۖ فَبِهُدَىٰهُمُ ٱقۡتَدِهۡۗ قُل لَّآ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ أَجۡرًاۖ إِنۡ هُوَ إِلَّا ذِكۡرَىٰ لِلۡعَٰلَمِينَ
এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ্‌ হিদায়াত করেছেন, কাজেই আপনি তাদের পথের অনুসরণ করুন [১]। বলুন, ‘এর জন্য আমি তোমাদের কাছে পারিশ্রমিক চাই না, এ তো শুধু সৃষ্টিকুলের জন্য উপদেশ [২]।’
[১] আলোচ্য আয়াতসমূহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করে মক্কাবাসীদেরকে শোনানো হয়েছে যে, কোনো জাতির পূর্বপুরুষরা শুধু পিতৃপুরুষ হওয়ার কারণেই অনুসরণীয় হতে পারে না যে, তাদের প্রত্যেকটি কথা ও কাজকে অনুসরণযোগ্য মনে করতে হবে। আরবদের সাধারণ ধারণা তাই ছিল। অনুসরণের ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হবে যে, যার অনুসরণ করা হবে, সে নিজেও বিশুদ্ধ পথে আছে কি না। তাই নবীগণের (আলাইহিমুস সালাম) একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “এরা এমন লোক, যাদেরকে আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেছেন।" এরপর বলেছেন, “আপনিও তাদের হেদায়াত ও কর্মপন্থা অনুসরণ করুন।" এতে দু'টি নির্দেশ রয়েছে- (এক) আরববাসী ও সমগ্র উম্মতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, পৈত্রিক অনুসরণের কুসংস্কার পরিত্যাগ কর এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সুপথপ্রাপ্ত নবী-রাসূলগণের অনুসরণ কর। (দুই) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আপনিও পূর্ববতী নবীগণের পস্থা অবলম্বন করুন।

[২] এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশেষভাবে একটি ঘোষণা করতে বলা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী নবীগণও করেছেন। ঘোষণাটি হচ্ছে, আমি তোমাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যেসব নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি, তজ্জন্য তোমাদের কাছে কোনো ফি বা পারিশ্রমিক চাই না। তোমরা এসব নির্দেশ মেনে নিলে আমার কোনো লাভ নাই এবং না মানলে তাতেও কোনো ক্ষতি নেই। এটি হচ্ছে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ ও শুভেচ্ছার বার্তা। বস্তুতঃ শিক্ষা ও প্রচারকার্যের জন্য কোনোরূপ পারিশ্রমিক গ্রহণ না করা সব যুগে সব নবীর নিকট অভিন্ন রীতি ছিল। প্রচারকার্য কার্যকরী হওয়ার ব্যাপারে এর প্রভাব অনস্বীকার্য।
تفسیرهای عربی:
 
ترجمهٔ معانی سوره: انعام
فهرست سوره ها شماره صفحه
 
ترجمهٔ معانی قرآن کریم - ترجمه‌ى بنگالی - ابو بكر زكريا - لیست ترجمه ها

ترجمه‌ى بنگالی. مترجم: دکتر ابوبکر محمد زکریا.

بستن