Check out the new design

Terjemahan makna Alquran Alkarim - Terjemahan Berbahasa Bangladesh - Abu Bakar Zakaria * - Daftar isi terjemahan


Terjemahan makna Surah: Al-An'ām   Ayah:
وَلَوۡ جَعَلۡنَٰهُ مَلَكٗا لَّجَعَلۡنَٰهُ رَجُلٗا وَلَلَبَسۡنَا عَلَيۡهِم مَّا يَلۡبِسُونَ
আর যদি তাকে ফিরিশতা করতাম তবে তাঁকে পুরুষ মানুষের আকৃতিতেই পাঠাতাম, আর তাদেরকে সেরূপ বিভ্রমে ফেলতাম যেরূপ বিভ্রমে তারা এখন রয়েছে [১]।
[১] অর্থাৎ এ গাফেলরা এসব দাবী-দাওয়া করে মৃত্যু ও ধ্বংসকেই ডেকে আনছে। কেননা, মানুষদের থেকে রাসূল পাঠানো আল্লাহর এক বিরাট রহমত। যাতে একে অপরকে বুঝতে পারে, হেদায়াত নেয়া উম্মতের জন্য সহজ হয়। প্রশ্ন করা ও উত্তর নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে। [ইবন কাসীর]
Tafsir berbahasa Arab:
وَلَقَدِ ٱسۡتُهۡزِئَ بِرُسُلٖ مِّن قَبۡلِكَ فَحَاقَ بِٱلَّذِينَ سَخِرُواْ مِنۡهُم مَّا كَانُواْ بِهِۦ يَسۡتَهۡزِءُونَ
আর আপনার আগে অনেক রাসূলকে নিয়েই তো ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে। ফলে রাসূলদের সাথে বিদ্রুপকারীদেরকে তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছিল তা-ই পরিবেষ্টন করেছে [১]।
[১] এ আয়াতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সান্ত্বনার জন্য বলা হয়েছে: স্বজাতির পক্ষ থেকে আপনি যে উপহাস, ঠাট্টা-বিদ্রুপ ও যাতনা ভোগ করছেন, তা শুধু আপনারই বৈশিষ্ট্য নয়, আপনার পূর্বেও সব নবীকে এমনি হৃদয়বিদারক ও প্রাণঘাতি ঘটনাবলীর সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু তারা সাহস হারাননি। পরিণামে বিদ্রুপকারী জাতিকে সে আযাবই পাকড়াও করেছে, যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। মোটকথা, আল্লাহর বিধানাবলী প্রচার করাই আপনার কাজ। এ দায়িত্ব পালন করে আপনি দায়মুক্ত হয়ে যান। কেউ তা গ্রহণ করল কি না তা দেখাশোনা করা আপনার দায়িত্ব নয়। তাই এতে মশগুল হয়ে আপনি অন্তরকে ব্যথিত করবেন না। আপনার পূর্বেও নবী-রাসূলগণের সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে। যেমন নূহ আলাইহিস সালামকে তারা বলেছিল, নবী হওয়ার পরে সুতার হয়ে গেলে। হুদ আলাইহিস সালামকে বলেছিল, “আমরা তো এটাই বলি, আমাদের উপাস্যদের মধ্যে কেউ তোমাকে অশুভ দ্বারা আবিষ্ট করেছে।” [সূরা হুদ ৫৪] সালেহ আলাইহিস সালামকে বলেছিল, “হে সালিহ! তুমি আমাদেরকে যার ভয় দেখাচ্ছে, তা নিয়ে এস, যদি তুমি রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাক।” [সূরা আল-আরাফ ৭৭] লুত আলাইহিস সালাম সম্পর্কে তারা বলেছিল, “লুত-পরিবারকে তোমরা জনপদ থেকে বহিস্কার কর, এরা তো এমন লোক যারা পবিত্র সাজতে চায়।” [সূরা আন-নামল ৫৬] অনুরূপভাবে শু'আইব আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেছিল “হে শু'আইব! তুমি যা বল তার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলতাম, আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও।” [সূরা হুদ ৯১] তাছাড়া তারা নবীর সালাত নিয়েও ঠাট্টা করে বলত, “হে শু'আইব! তোমার সালাত কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যার ইবাদাত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও? তুমি তো অবশ্যই সহিষ্ণু, বুদ্ধিমান।” [সূরা হুদ ৮৭] [আদওয়াউল বায়ান]
Tafsir berbahasa Arab:
قُلۡ سِيرُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ ثُمَّ ٱنظُرُواْ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلۡمُكَذِّبِينَ
বলুন, ‘তোমারা যমীনে পরিভ্রমন কর, তরপর দেখ, যারা মিথ্যারোপ করেছে তাদের পরিণাম কি হয়েছিলো [১]!’
দ্বিতীয় রুকূ‘

[১] কাতাদা বলেন, অর্থাৎ তিনি তাদেরকে পাকড়াও করে ধ্বংস করেছেন তারপর তাদেরকে জাহান্নামের দিকে পৌঁছে দিয়েছেন। [তাবারী]
Tafsir berbahasa Arab:
قُل لِّمَن مَّا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ قُل لِّلَّهِۚ كَتَبَ عَلَىٰ نَفۡسِهِ ٱلرَّحۡمَةَۚ لَيَجۡمَعَنَّكُمۡ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ لَا رَيۡبَ فِيهِۚ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ فَهُمۡ لَا يُؤۡمِنُونَ
বলুন , ‘আসমানসমূহ ও যমীনে যা আছে তা কার? বলুন, ‘আল্লাহরই’ [১], তিনি তাঁর নিজের উপর দয়া করা লিখে নিয়েছেন [২]। কিয়ামতের দিন তিনি তোমাদেরকে অবশ্যই একত্র করবেন [৩], এতে কোনো সন্দেহ নেই। যারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে তারা ঈমান আনবে না [৪]
[১] এ আয়াতে কাফেরদেরকে প্রশ্ন করা হয়েছে: নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল এবং এতদুভয়ে যা আছে, তার মালিক কে? অতঃপর আল্লাহ নিজেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাচনিক উত্তর দিয়েছেন: সবার মালিক আল্লাহ। কাফেরদের উত্তরের অপেক্ষা করার পরিবর্তে নিজেই উত্তর দেয়ার কারণ এই যে, এ উত্তর কাফেরদের কাছেও স্বীকৃত। তারা যদিও শির্ক ও পৌত্তলিকতায় লিপ্ত ছিল, তথাপি ভূমণ্ডল, নভোমণ্ডল ও সবকিছুর মালিক আল্লাহ তা'আলাকেই মানতো অর্থাৎ তারা তাওহীদুর রবুবিয়াতের এ অংশে বিশ্বাসী ছিল। আর তারা যেহেতু তাওহীদের এ অংশে বিশ্বাস করছে, তাদের উচিত হবে তাওহীদের বাকী অংশ তাওহীদুল উলুহিয়ার স্বীকৃতি দেয়া এবং একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করা। [সা’দী; আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]

[২] সহীহ মুসলিমে আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখন আল্লাহ তা'আলা যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেন, তখন একটি ওয়াদাপত্র লিপিবদ্ধ করেন। এটি আল্লাহ তা'আলার কাছেই রয়েছে। এতে লিখিত আছে, আমার অনুগ্রহ আমার ক্রোধের উপর প্রবল থাকবে। [বুখারী ৭৪০৪, মুসলিম ২৭৫১]

[৩] এ বাক্যে الى শব্দটি في অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তাতে মর্ম দাঁড়িয়েছে এই যে, আল্লাহ তা'আলা পূর্বের ও পরের সব মানুষকে কেয়ামতের দিন সমবেত করবেন কিংবা এখানে কবরে একত্রিত করা বুঝানো হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, কেয়ামত পর্যন্ত সব মানুষকে কবরে একত্রিত করতে থাকবেন এবং কেয়ামতের দিন সবাইকে জীবিত করবেন আর তোমাদেরকে তোমাদের কর্মকাণ্ডের শাস্তি প্রদান করবেন। [কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]

[৪] এতে ইঙ্গিত আছে যে, আয়াতের শুরুতে বর্ণিত আল্লাহ তা'আলার ব্যাপক অনুগ্রহ থেকে যদি কাফের ও মুশরিকরা বঞ্চিত হয়, তবে স্বীয় কৃতকর্মের কারণেই হবে। কারণ, তারা অনুগ্রহ লাভের উপায় অর্থাৎ ঈমান অবলম্বন করেনি। আল্লাহ্ তাআলা আখেরাত ও কিয়ামতের বাস্তবতার উপর অনেক দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন, যাতে তা বাস্তব সত্যরূপে মানুষের কাছে প্রতিভাত হয়। কিন্তু তারা অস্বীকার ছাড়া কিছুই করেনি। তারা পুনরুত্থানকে অস্বীকার করেছে, ফলে তারা আল্লাহর অবাধ্যতায় নিপতিত হয়েছে এবং কুফরী করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছে। এতে করে তারা তাদের দুনিয়া ও আখেরাত উভয়টিই বরবাদ করেছে। [সা'দী]
Tafsir berbahasa Arab:
۞ وَلَهُۥ مَا سَكَنَ فِي ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِۚ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ
আর রাত ও দিনে যা কিছু স্থিত হয়, তা তাঁরই [১]এবং তিনি সবকিছু শুনেন, সবকিছু জানেন।
[১] এখানে سُكُون অর্থ اِستَقَرَّ অবস্থান করা; অর্থাৎ পৃথিবীর দিবা-রাত্রিতে যা কিছু অবস্থিত আছে, তা সবই আল্লাহর তাবারী অথবা এর অর্থ - سُكُون و حَرْكَت এ এর সমষ্টি। অর্থাৎ مَا سَكَنَ ومَاتَحَرَّكَ (স্থাবর ও অস্থাবর)। আয়াতে শুধু سُكُون উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা এর বিপরীত حَرْكَت আপনা-আপনিই বুঝা যায়। অথবা سَكَنَ অর্থ যাবতীয় সৃষ্টি। অর্থাৎ যাবতীয় সৃষ্টির মালিকানা আল্লাহরই। [কুরতুবী]
Tafsir berbahasa Arab:
قُلۡ أَغَيۡرَ ٱللَّهِ أَتَّخِذُ وَلِيّٗا فَاطِرِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَهُوَ يُطۡعِمُ وَلَا يُطۡعَمُۗ قُلۡ إِنِّيٓ أُمِرۡتُ أَنۡ أَكُونَ أَوَّلَ مَنۡ أَسۡلَمَۖ وَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ
বলুন, ‘আমি কি আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করব [১]? তিনিই খাবার দান করেন কিন্তু তাঁকে খাবার দেয়া হয় না [২]। বলুন ‘নিশ্চয় আমি আদেশ পেয়েছি যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে যেন আমি প্রথম ব্যক্তি হই [৩],আর (আমাকে আরও আদেশ করা হয়েছে) ‘আপনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।’
[১] সুদ্দী বলেন, এখানে ওলীরূপে গ্রহণ করার অর্থ, যাকে অভিভাবক মানা হয় এবং যার রবুবিয়াত এর স্বীকৃতি দেয়া হয়। [আত-তাফসীরুস সহীহ]

[২] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা সমস্ত সৃষ্টিকুলের রিযিকের ব্যবস্থা করেন। তিনি পূর্ণ অমুখাপেক্ষী। তাঁর কোনো রিফিকের প্রয়োজন পড়ে না। অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা'আলা সেটা বলেছেন, “আর আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্যেই যে, তারা কেবল আমার ইবাদাত করবে। আমি তাদের কাছ থেকে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে খাওয়াবে, নিশ্চয় আল্লাহ, তিনিই তো রিযুকদাতা, প্রবল শক্তিধর, পরাক্রমশালী।” [সূরা আয-যারিয়াত ৫৬-৫৮] [আদওয়াউল বায়ান]

[৩] অর্থাৎ যে উম্মতের মধ্যে আমি প্রেরিত হয়েছি সে উম্মতের মধ্যে ইসলাম গ্রহণ করার ব্যাপারে প্রথম ব্যক্তি হই। এর অর্থ এ নয় যে, সমস্ত জাতির মধ্যে তিনিই প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী হবেন। কারণ, কুরআনের বহু আয়াতে এটা এসেছে যে, তার পূর্বেও নবীগণ ইসলামের উপর ছিলেন এবং অনেক উম্মতও ইসলামের উপর গত হয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন, “স্মরণ করুন, যখন তার রব তাকে বলেছিলেন, আত্মসমর্পণ করুন', তিনি বলেছিলেন, ‘আমি সৃষ্টিকুলের রব-এর কাছে আত্মসমর্পণ করলাম।" [সূরা আলবাকারাহ ১৩১] আর ইউসুফ আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলেন, “আপনি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দিন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন।" [সূরা ইউসুফ ১০১] [আদওয়াউল বায়ান]
Tafsir berbahasa Arab:
قُلۡ إِنِّيٓ أَخَافُ إِنۡ عَصَيۡتُ رَبِّي عَذَابَ يَوۡمٍ عَظِيمٖ
বলুন, ‘আমি যদি আমার রব –এর অবাধ্যতা করি, তবে নিশ্চয় আমি ভয় করি মহাদিনের শাস্তির [১]।’
[১] আয়াতে নির্দেশ অমান্য করার শাস্তি এক বিশেষ ভঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আদেশ দেয়া হয়েছে যে, আপনি বলে দিন, মনে কর, আমি যদিও স্বীয় প্রতিপালকের নির্দেশ অমান্য করি, তবে আমারও কিয়ামতের শাস্তির ভয় রয়েছে। আল্লাহর নির্দেশের বিরোধিতা করলে যখন নবীগণের যিনি নেতা, তাকেও ক্ষমা করা যায় না, তখন অন্যদের কথা তো বলাই বাহুল্য। যদি কেউ আল্লাহর অবাধ্য হয় আর সে অবাধ্যতা হয় শির্ক বা কুফরীর মাধ্যমে তাহলে তার রক্ষা নেই। সে স্থায়ীভাবে আল্লাহর ক্রোধে ও জাহান্নামে অবস্থান করবে। [সা'দী]
Tafsir berbahasa Arab:
مَّن يُصۡرَفۡ عَنۡهُ يَوۡمَئِذٖ فَقَدۡ رَحِمَهُۥۚ وَذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡمُبِينُ
‘সেদিন যার থেকে তা সরিয়ে নেয়া হবে, তার প্রতি তো তিনি দয়া করলেন [১] এবং এটাই স্পষ্ট সফলতা [২]।’
[১] বলা হয়েছে, হাশর দিবসের শাস্তি অত্যন্ত লোমহর্ষক ও কঠোর হবে। কাতাদা বলেন, এখানে যা সরানোর কথা বলা হচ্ছে, তা হচ্ছে শাস্তি। কারো উপর থেকে এ শাস্তি সরে গেলে মনে করতে হবে যে, তার প্রতি আল্লাহর অশেষ করুণা হয়েছে। [তাফসীর আবদির রাযযাক]

[২] অর্থাৎ এটিই বৃহৎ ও প্রকাশ্য সফলতা। কুরতুবী এখানে সফলতার অর্থ জান্নাতে প্রবেশ। কারণ, শাস্তি থেকে মুক্তি ও জান্নাতে প্রবেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
Tafsir berbahasa Arab:
وَإِن يَمۡسَسۡكَ ٱللَّهُ بِضُرّٖ فَلَا كَاشِفَ لَهُۥٓ إِلَّا هُوَۖ وَإِن يَمۡسَسۡكَ بِخَيۡرٖ فَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
আর যদি আল্লাহ্‌ আপনাকে কোনো দুর্দশা দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি ছাড়া তা মোচনকারী আর কেঊ নেই। আর যদি তিনি আপনাকে কোনো কল্যাণ দ্বারা স্পর্শ করেন, তবে তিনি তো সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান [১]।
[১] এ আয়াতে ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি লাভক্ষতির মালিক প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্ তা'আলা। সত্যিকারভাবে কোনো ব্যক্তি কারো সামান্য উপকারও করতে পারে না, ক্ষতিও করতে পারে না। আল্লাহ যদি কারও লাভ করতে চান তবে তা বন্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আর আল্লাহ যদি আপনার মংগল চান তবে তাঁর অনুগ্রহ প্রতিহত করার কেউ নেই। তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে তার কাছে সেটা পৌঁছান। [সূরা ইউনুস ১০৭] এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইমাম বাগভী আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন, ‘একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উটে সওয়ার হয়ে আমাকে পিছনে বসিয়ে নিলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, “হে বৎস’! আমি আরয করলাম: আদেশ করুন, আমি হাযির আছি। তিনি বললেন, “তুমি আল্লাহর বিধি-বিধানকে হেফাযত করবে, আল্লাহ তোমাকে হেফাযত করবেন। তুমি আল্লাহর বিধি-বিধানকে হেফাযত করো তাহলে আল্লাহকে সাহায্যের সাথে তোমার সামনে পাবে। তুমি শান্তি ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময় আল্লাহকে স্মরণ রাখলে, বিপদের সময় তিনি তোমাকে স্মরণ রাখবেন। কোনো কিছু চাইতে হলে তুমি আল্লাহর কাছেই চাও এবং সাহায্য চাইতে হলে আল্লাহর কাছেই চাও। জগতে যা কিছু হবে, ভাগ্যের লেখনী তা লিখে ফেলেছে। সমগ্র সৃষ্টজীব সম্মিলিতভাবে তোমার এমন কোনো উপকার করতে চাইলে যা তোমার তাকদিরে লিখা নেই তারা কখনো তা করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যদি তারা সবাই মিলে তোমার এমন কোনো ক্ষতি করতে চায়, যা তোমার ভাগ্যে নেই, তবে কখনোই তারা তা করতে সক্ষম হবে না। যদি তুমি বিশ্বাস সহকারে ধৈর্যধারণের মাধ্যমে আমল করতে পার তবে অবশ্যই তা করো। সক্ষম না হলে ধৈর্য ধর। কেননা তুমি যা অপছন্দ করো তার বিপক্ষে ধৈর্য ধারণ করায় অনেক মঙ্গল রয়েছে। মনে রাখবে, আল্লাহর সাহায্য ধৈর্যের সাথে জড়িত-কষ্টের সাথে সুখ এবং অভাবের সাথে স্বাচ্ছন্দ্য জড়িত।’ [মুসনাদে আহমাদ ১/৩০৭]

পরিতাপের বিষয়, কুরআনুল কারীমের এ সুস্পষ্ট ঘোষণা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আজীবনের শিক্ষা সত্ত্বেও মুসলিমরা এ ব্যাপারে পথ ভ্রান্ত। তারা আল্লাহ্ তা'আলার সব ক্ষমতা সৃষ্টজীবের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছে। আজ এমন মুসলিমের সংখ্যা নগণ্য নয়, যারা বিপদের সময় আল্লাহ্ তা'আলাকে স্মরণ করে না এবং তারা তাঁর কাছে দো'আ করার পরিবর্তে বিভিন্ন নামের দোহাই দেয় এবং তাদেরই সাহায্য কামনা করে। তারা আল্লাহ তা'আলার প্রতি লক্ষ্য করে না। কোনো সৃষ্ট জীবকে অভাব পূরণের জন্য ডাকা এ কুরআনী নির্দেশের পরিপন্থী ও প্রকাশ্য বিদ্রোহ ঘোষণার নামান্তর। আল্লাহ তা'আলা মুসলিমদেরকে সরল পথে কায়েম রাখুন।
Tafsir berbahasa Arab:
وَهُوَ ٱلۡقَاهِرُ فَوۡقَ عِبَادِهِۦۚ وَهُوَ ٱلۡحَكِيمُ ٱلۡخَبِيرُ
আর তিনিই আপন বান্দাদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণকারী [১], আর তিনি প্রজ্ঞাময়, সম্যাক অবহিত।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলাই সবার উপর পরাক্রান্ত ও শক্তিমান এবং সবাই তাঁর ক্ষমতাধীন ও মুখাপেক্ষী। এ কারণেই দুনিয়ার জীবনে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন মহোত্তম ব্যক্তিগণও সব কাজে সাফল্য অর্জন করতে পারে না এবং তার সব মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় না; তিনি নৈকট্যশীল রাসূলই হোন কিংবা রাজা বাদশাহ। আর তিনি যা আদেশ, নিষেধ, সাওয়াব, শাস্তি, সৃষ্টি বা নির্ধারণ যাই করেন তাই প্রজ্ঞাময়। তিনি গোপন যাবতীয় কিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত। এ সবকিছুই তাঁর তাওহীদের প্রমাণ। [সা‘দী ]
Tafsir berbahasa Arab:
 
Terjemahan makna Surah: Al-An'ām
Daftar surah Nomor Halaman
 
Terjemahan makna Alquran Alkarim - Terjemahan Berbahasa Bangladesh - Abu Bakar Zakaria - Daftar isi terjemahan

Bahasa Bangladesh diterjemahkan oleh Dr. Abu Bakar Muhammad Zakaria.

Tutup