Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione bengalese - Abu Bakr Zakariya * - Indice Traduzioni


Traduzione dei significati Versetto: (90) Sura: An-Nahl
۞ إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُ بِٱلۡعَدۡلِ وَٱلۡإِحۡسَٰنِ وَإِيتَآيِٕ ذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَيَنۡهَىٰ عَنِ ٱلۡفَحۡشَآءِ وَٱلۡمُنكَرِ وَٱلۡبَغۡيِۚ يَعِظُكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ
নিশ্চয় আল্লাহ্‌ আদল (ন্যায়পরায়ণতা) [১], ইহসান (সদাচরণ) [২] ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের [৩] নির্দেশ দেন [৪] এবং তিনি অশ্লীলতা [৫], অসৎকাজ [৬] ও সীমালঙ্ঘন [৭] থেকে নিষেধ করেন; তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর।
[১] আল্লাহ্ তা'আলা পূর্ববর্তী আয়াতে জানিয়েছিলেন যে, কুরআনে সবকিছুর বর্ণনাই স্থান পেয়েছে, সে কথার সত্যায়ণ স্বরূপ এ আয়াতে এমন কিছু আলোচনা করছেন যা সমস্ত বিধি-বিধানের মূল ও প্রাণ। [ফাতহুল কাদীর] তন্মধ্যে প্রথম নির্দেশ হচ্ছে, তিনি আদলের নির্দেশ দিচ্ছেন। মূলতঃ عدل শব্দের আসল ও আভিধানিক অর্থ সমান করা। এ অর্থের দিক দিয়েই স্বল্পতা ও বাহুল্যের মাঝামাঝি সমতাকেও عدل বলা হয়। [ফাতহুল কাদীর] কোনো কোনো মুফাসসির এ অর্থের সাথে সম্বন্ধ রেখেই আলোচ্য আয়াতে বাইরে ও ভেতরে সমান হওয়া দ্বারা عدل শব্দের তাফসীর করেছেনে। ইবন আব্বাস বলেন, এর অর্থ "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। কারও মতে আদল হচ্ছে, ফরয। কারও নিকট, আদল হচ্ছে, ইনসাফ। তবে বাস্তব কথা এই যে, عدل শব্দটি অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে তার আভিধানিক অর্থই গ্রহণ করা যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে। কেননা কোনো কিছুতে বাড়াবাড়ি যেমন খারাপ তেমনি কোনো কিছুতে কমতি করাও খারাপ। [ফাতহুল কাদীর]

[২] আয়াতের দ্বিতীয় নির্দেশ হচ্ছে, ইহসান করা বস্তুতঃ الْاِحْسَانِ -এর আসল আভিধানিক অর্থ সুন্দর করা, যাওয়াজিব নয় তা অতিরিক্ত প্রদান করা। যেমন, অতিরিক্ত সাদকা। [ফাতহুল কাদীর] ইমাম কুরতুবী বলেন, ‘আলোচ্য আয়াতে এ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই উপরোক্ত উভয় প্রকার অর্থই এতে শামিল রয়েছে।’ প্রসিদ্ধ 'হাদীসে জিবরীল'-এ স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহসানের যে অর্থ বর্ণনা করেছেন, তা হচ্ছে ইবাদাতের ইহসান। এর সারমর্ম এই যে, আল্লাহর ইবাদাত এভাবে করা দরকার, যেন তুমি তাকে দেখতে পাচ্ছ। যদি এ স্তর অর্জন করতে না পার, তবে এটুকু বিশ্বাস তো প্রত্যেক ইবাদতকারীরই থাকা উচিত যে, আল্লাহ্ তা'আলা তার কাজ দেখছেন। [ফাতহুল কাদীর]

[৩] আয়াতের এ হচ্ছে তৃতীয় আদেশ। আত্মীয়দের দান করা। কী বস্তু দেয়া, এখানে তা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু অন্য এক আয়াতে তা উল্লেখ করে বলা হয়েছে,"আত্মীয়কে তার প্রাপ্য প্রদান কর।" [সূরা আল-ইসরা ২৬]

বাহ্যতঃ আলোচ্য আয়াতেও তাই বোঝানো হয়েছে; অর্থাৎ আত্মীয়কে তার প্রাপ্য দিতে হবে। অর্থ দিয়ে আর্থিক সেবা করা, দৈহিক সেবা করা, অসুস্থ হলে দেখাশোনা করা, মৌখিক সাস্তুনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করা ইত্যাদি সবই উপরোক্ত প্রাপ্যের অন্তর্ভুক্ত। মোটকথা, তাদের যা প্রয়োজন তা প্রদান করা। [ফাতহুল কাদীর] ইহসান শব্দের মধ্যে আত্মীয়ের প্রাপ্য দেয়ার কথাও অন্তর্ভুক্ত ছিল; কিন্তু অধিক গুরুত্ব বোঝানোর জন্য একে পৃথক উল্লেখ করা হয়েছে। এ তিনটি ছিল ইতিবাচক নির্দেশ। [ফাতহুল কাদীর]

[৪] আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা তিনটি বিষয়ের আদেশ দিয়েছেন: সুবিচার, অনুগ্রহ ও আত্মীয়দের প্রতি অনুগ্রহ। পক্ষান্তরে তিন প্রকার কাজ করতে নিষেধ করেছেন: অশ্লীলতা, যাবতীয় মন্দ কাজ এবং যুলুম ও উৎপীড়ন। এ আয়াত সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এটি হচ্ছে কুরআনুল কারমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াত ৷ [ইবন কাসীর] কোনো কোনো সাহাবী এ আয়াত শ্রবণ করেই মুসলিম হয়েছিলেন। উসমান ইবন মাযউন রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, শুরুতে আমি লোকমুখে শুনে ঝোঁকের মাথায় ইসলাম গ্রহণ করেছিলাম, আমার অন্তরে ইসলাম বদ্ধমূল ছিল না। একদিন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে উপস্থিত ছিলাম, হঠাৎ তার উপর ওহী নাযিলের লক্ষণ প্রকাশ পেল। কতিপয় বিচিত্র অবস্থার পর তিনি বললেন: আল্লাহর দূত এসেছিল এবং এই আয়াত আমার প্রতি নাযিল হয়েছে। উসমান ইবন মাযউন বলেন, এই ঘটনা দেখে এবং আয়াত শুনে আমার অন্তরে ঈমান বদ্ধমূল ও অটল হয়ে গেল এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি মহব্বত আমার মনে আসন পেতে বসল। [মুসনাদে আহমাদ ১/৩১৮]

[৫] ওপরের তিনটি সৎকাজের মোকাবিলায় আল্লাহ তিনটি অসৎ কাজ করতে নিষেধ করেন। অর্থাৎ আল্লাহ অশ্লীলতা, অসৎকর্ম ও সীমালঙ্ঘন করতে নিষেধ করেছেন। তন্মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে, “ফাহশা” যার অর্থ অশ্লীলতা-নির্লজ্জতা, কথায় হোক বা কাজে। [ফাতহুল কাদীর] প্রকাশ্য মন্দকৰ্ম অথবা কথাকে অশ্লীলতা বলা হয়, যাকে প্রত্যেকেই মন্দ মনে করে। সব রকমের অশালীন, কদর্য ও নির্লজ্জ কাজ এর অন্তর্ভুক্ত। এমন প্রত্যেকটি খারাপ কাজ যা স্বভাবতই কুৎসিত, নোংরা, ঘৃণ্য ও লজ্জাকর তাকেই বলা হয় অশ্লীল। যেমন কৃপণতা, ব্যাভিচার, উলঙ্গতা, সমকামিতা, মুহাররাম আত্মীয়কে বিয়ে করা, চুরি, শরাব পান, ভিক্ষাবৃত্তি, গালাগালি করা, কটু কথা বলা ইত্যাদি। এভাবে সর্বসমক্ষে বেহায়াপনা ও খারাপ কাজ করা এবং খারাপ কাজকে ছড়িয়ে দেয়াও অশ্লীলতা-নির্লজ্জতার অন্তর্ভুক্ত। যেমন মিথ্যা প্রচারণা, মিথ্যা দোষারোপ, গোপন অপরাধ জন সমক্ষে বলে বেড়ানো, অসৎকাজের প্ররোচক গল্প, নাটক ও চলচ্চিত্র, উলংগ চিত্র, মেয়েদের সাজগোজ করে জনসমক্ষে আসা, নারী-পুরুষ প্রকাশ্যে মেলামেশা এবং মঞ্চে মেয়েদের নাচ-গান করা ও তাদের শারীরিক অংগভংগীর প্রদর্শনী করা ইত্যাদি।

[৬] নিষিদ্ধ দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, মুনকার তথা দুস্কৃতি বা অসৎকর্ম যা এমন কথা অথবা কাজকে বলা হয় যা শরীআত হারাম করেছেন। যাবতীয় গোনাহই এর অন্তর্ভুক্ত। কারও কারও মতে এর অর্থ শির্ক। [ফাতহুল কাদীর]

(৭) নিষিদ্ধ তৃতীয় জিনিসটি হচ্ছে, بغي শব্দের আসল অর্থ সীমালঙ্ঘন করা। [ফাতহুল কাদীর] কারও কারও মতে, যুলুম। কারও কারও মতে, হিংসা-দ্বেষ। মোটকথা, এর দ্বারা যুলুম ও উৎপীড়ন বোঝানো হয়েছে। নিজের সীমা অতিক্রম করা এবং অন্যের অধিকার লংঘন করা ও তার ওপর হস্তক্ষেপ করা। তা আল্লাহর হক হোক বা বান্দার হক। মুনকার শব্দের যে অর্থ বর্ণিত হয়েছে, তাতে بغي ও فَحْشَاءِ ও অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু চুড়ান্ত মন্দ হওয়ার কারণে فَحْشَاءِ কে পৃথক ও আগে উল্লেখ করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]
Esegesi in lingua araba:
 
Traduzione dei significati Versetto: (90) Sura: An-Nahl
Indice delle Sure Numero di pagina
 
Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione bengalese - Abu Bakr Zakariya - Indice Traduzioni

Traduzione dei significati del Nobile Corano in bengalese di Abu Bakr Muhammad Zakaria

Chiudi