Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione bengalese - Abu Bakr Zakariya * - Indice Traduzioni


Traduzione dei significati Versetto: (6) Sura: Luqmân
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَشۡتَرِي لَهۡوَ ٱلۡحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ بِغَيۡرِ عِلۡمٖ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًاۚ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمۡ عَذَابٞ مُّهِينٞ
আর মানুষের মধ্যে থেকে কেউ কেউ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য কিনে নেয় [১] জ্ঞান ছাড়াই [২] এবং আল্লাহর দেখানো পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। তাদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।
[১] لَهْوَ الْحَدِيْثِ বাক্যটিতে حديث শব্দের অর্থ কথা, কিসসা-কাহিনী এবং لهو শব্দের অর্থ গাফেল হওয়া। যেসব বিষয় মানুষকে প্রয়োজনীয় কাজ থেকে গাফেল করে দেয় সেগুলোকে لهو বলা হয়। মাঝে মাঝে এমন কাজকেও لهو বলা হয়, যার কোনো উল্লেখযোগ্য উপকারিতা নেই, কেবল সময় ক্ষেপণ অথবা মনোরঞ্জনের জন্যে করা হয়। আলোচ্য আয়াতে لَهْوَ الْحَدِيْثِ এর অর্থ ও তফসীর কী, এ সম্পর্কে তাফসীরবিদগণের উক্তি বিভিন্নরূপ। ইবন মাসউদ, ইবন আব্বাস ও জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহুমের মতে এর অর্থ, গান-বাদ্য করা। অধিকাংশ সাহাবী, তাবেয়ী ও তফসীরবিদগণের মতে এর অর্থ গান, বাদ্যযন্ত্র ও অনর্থক কিসসা-কাহিনীসহ যেসব বস্তু মানুষকে আল্লাহর ইবাদত ও স্মরণ থেকে গাফেল করে, সেগুলো সবই لَهْوَ الْحَدِيْثِ। ইমাম বুখারী তার কিতাবে لَهْوَ الْحَدِيْثِ এর এ তাফসীরই অবলম্বন করেছেন। তিনি বলেন,

لَهْوُ الْحَدِيْثِ هُوَ الْغِنَاءُ وَ أَشْبَاهُه

অর্থাৎ, لَهْوَ الْحَدِيْثِ বলে গান ও অনুরূপ অন্যান্য বিষয় বোঝানো হয়েছে যা আল্লাহর ইবাদত থেকে গাফেল করে দেয়।

পূর্বেই বলা হয়েছে যে, অধিকাংশ সাহাবী উল্লেখিত আয়াতে لَهْوَالْحَدِيْثِ এর তাফসীর করেছেন গান-বাজনা করা। তবে কোনো কোনো সাহাবী আয়াতের ব্যাপক তাফসীর করে বলেছেন যে, আয়াতে এমন যে কোনো খেলা বোঝানো হয়েছে, যা মানুষকে আল্লাহ থেকে গাফেল করে দেয়। আলেমগণ পবিত্র কুরআনের لَايَثْهَدُوْنَ الزُّوْرَه আয়াতের শব্দের তাফসীর করেছেন গান-বাজনা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমার উম্মতের কিছু লোক মদের নাম পাল্টিয়ে তা পান করবে। তাদের সামনে গায়িকারা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহকারে গান করবে। আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে ভূ-গর্ভে বিলীন করে দেবেন এবং কতকের আকৃতি বিকৃত করে বানর ও শূকরে পরিণত করে দেবেন।” [বুখারী ৫৫৯০, আবু দাউদ ৪০৩৯] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা'আলা মদ, জুয়া, তবলা ও সারেঙ্গী হারাম করেছেন। তিনি আরও বলেন, নেশাগ্ৰস্ত করে এমন প্রত্যেক বস্তু হারাম। [আহমদ ১/৩৫০, আবু দাউদ ৩৬৯৮] এতদ্ভিন্ন বহু প্রমাণ ও নির্ভরযোগ্য হাদীস রয়েছে, যাতে গান-বাদ্য হারাম ও না-জায়েয বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কবাণী রয়েছে এবং কঠিন শাস্তির ঘোষণা রয়েছে। সারকথা, যেসব কাজ প্রকৃতপক্ষে খেলা; অর্থাৎ যাতে কোনো দীনী বা পার্থিব উপকারিতা নেই সেগুলো অবশ্যই নিন্দনীয় ও মাকরূহ। তবে কতক একেবারে কুফার পর্যন্ত পৌঁছে যায়, কতক প্রকাশ্য হারাম এবং কতক কমপক্ষে মাকরূহ। যেসব কাজ প্রকৃতই খেলা, তার কোনোটিই এ বিধানের বাইরে নয়। বর্তমান যুগে অধিকাংশ যুবক-যুবতী অশ্লীল উপন্যাস, পেশাদার অপরাধীদের কাহিনী অথবা অশ্লীল কবিতা পাঠে অভ্যস্ত। এসব বিষয় উপরোক্ত হারাম খেলারই অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে পথভ্রষ্ট বাতিলপন্থীদের চিন্তাধারা অধ্যায়ন করাও সর্ব সাধারণের জন্যে পথভ্রষ্টতার কারণ বিধায় না-জায়েয। তবে গভীর জ্ঞানের অধিকারী আলেমগণ জওয়াব দানের উদ্দেশ্যে এগুলো পাঠ করলে তাতে আপত্তির কারণ নেই।

খেলার সাজ-সরঞ্জাম ক্ৰয়-বিক্রয়ের বিধান হলো, যেসব সাজ-সরঞ্জাম কুফার অথবা হারাম খেলায় ব্যবহৃত হয় সেগুলো ক্ৰয়-বিক্রয় করাও হারাম এবং যেগুলো মাকরূহ খেলায় ব্যবহৃত হয় সেগুলোর ব্যবসা করাও মাকরূহ। পক্ষান্তরে যেসব সাজ-সরঞ্জাম বৈধ ও ব্যতিক্রমভুক্ত খেলায় ব্যবহার করা হয় সেগুলোর ব্যবসাও বৈধ এবং যেগুলো বৈধ ও অবৈধ উভয় প্রকার খেলায় ব্যবহার করা হয়; সেগুলোর ব্যবসাও অবৈধ।

এর বাইরে এমনও কতক খেলা রয়েছে যেগুলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষভাবে নিষিদ্ধ করেছেন, যদিও সেগুলোতে কিছু কিছু উপকারিতা আছে বলেও উল্লেখ করা হয়, যেমন দাবা, চওসর ইত্যাদি। এগুলোর সাথে হারজিত ও টাকা-পয়সার লেনদেন জড়িত থাকলে এগুলো জুয়া ও অকাট্য হারাম। অন্যথায় কেবল চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যে খেলা হলেও হাদীসে এসব খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি চওসর খেলায় প্রবৃত্ত হয়, সে যেন তার হাতকে শূকরের রক্তে রঞ্জিত করে। [মুসলিম ২২৬০] এমনিভাবে কবুতর নিয়ে খেলা করাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবৈধ সাব্যস্ত করেছেন। [আবু দাউদ ৪৯৪০] এই নিষেধাজ্ঞার বাহ্যিক কারণ এই যে, সাধারণভাবে এসব খেলায় মগ্ন হলে মানুষ জরুরী কাজকর্ম এমন কি সালাত, সাওম ও অন্যান্য ইবাদত থেকেও অসাবধান হয়ে যায়।

তাই সংক্ষেপে এটাই বলা যায় যে, যে খেলায় কোনো ধর্মীয় ও পার্থিব উপকারিতা নেই, সেসব খেলাই নিন্দনীয় ও নিষিদ্ধ। যে খেলা শারীরিক ব্যায়াম তথা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্যে অথবা অন্য কোনো ধর্মীয় ও পার্থিব উপকারিতা লাভের জন্যে অথবা কমপক্ষে মানসিক অবসাদ দূর করার জন্যে খেলা হয়, সে খেলা শরীয়ত অনুমোদন করে, যদি তাতে বাড়াবাড়ি না করা এবং এতে ব্যস্ত থাকার কারণে প্রয়োজনীয় কাজ-কর্ম বিঘ্নিত না হয়। আর ধর্মীয় প্রয়োজনের নিয়তে খেলা হলে তাতে সওয়াবও আছে। হাদীসে তিনটি খেলাকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে: তীর নিক্ষেপ, অশ্বারোহণ এবং স্ত্রীর সাথে হাস্যরস করা। [সাঈদ ইবন মানসূর ২৪৫০, ইবন আবি শাইবাহ ৫/৩২০,৩২১, নাসায়ী, আস সুনানুল কুবরা ৪৩৫৪, ৮৯৩৮, ৮৯৩৯, ৮৯৪০, আস-সুগরা ৬/২৮, ত্বাবরানী, আল-মুজামুল কবীর ১৭৮৫, আবু দাউদ ২৫১৩, আল-মুনতাকা ১০৬২, মুসনাদে আহমাদ 8/১৪৪, ১৪৬, ১৪৮] কোনো কোনো বর্ণনায় এর সাথে যোগ করা হয়েছে সাঁতার কাটা। [ত্বাবরানী, মুজামুল কাবীর ২/১৯৩, (১৭৮৬)] অপর বর্ণনায় এর সাথে যোগ করা হয়েছে দৌড় প্রতিযোগিতা করা। [নাসায়ী, সুনানুল কুবরা ৫/৩০২, (৮৯৩৯)] অন্য বর্ণনায় এসেছে, সালামাহ ইবন আকওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, জনৈক আনসারী দৌড়ে অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। প্রতিযোগিতায় কেউ তাঁকে হারাতে পারত না। তিনি একদিন ঘোষণা করলেন কেউ আমার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হতে প্রস্তুত আছে কী? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দিলেন। অতঃপর প্রতিযোগিতায় আমি জয়ী হয়ে গেলাম। [মুসলিম ১৮০৭] এ থেকে জানা গেল যে, দৌড় প্রতিযোগিতা বৈধ।

আবিসিনিয়ার কতিপয় যুবক মদীনা তাইয়্যেবায় সামরিক কলা-কৌশল অনুশীলনকল্পে বর্শা ইত্যাদি নিয়ে খেলায় প্রবৃত্ত ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে নিজের পেছনে দাঁড় করিয়ে তাদের খেলা উপভোগ করাচ্ছিলেন। তিনি তাদেরকে বলেছিলেন খেলাধুলা অব্যাহত রাখো ৷ [বুখারী ৪৫৪] অনুরূপভাবে কোনো কোনো সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, যখন তারা কুরআন ও হাদীস সম্পর্কিত কাজে ব্যস্ততার ফলে অবসন্ন হয়ে পড়তেন, তখন অবসাদ দূর করার জন্যে মাঝে মাঝে আরবে প্রচলিত কবিতা ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলী দ্বারা মনোরঞ্জন করতেন। এক হাদীসে বলা হয়েছে “তোমরা মাঝে মাঝে অন্তরকে বিশ্রাম ও আরাম দিবে।” [আবু দাউদ ১৫২৮] এ থেকে অন্তর ও মস্তিষ্কের বিনোদন এবং এর জন্যে কিছু সময় বের করার বৈধতা প্রমাণিত হয়।

[২] “জ্ঞান ছাড়াই” শব্দের সম্পর্ক “কিনে নেয়” এর সাথেও হতে পারে আবার “বিচ্যুত করে” এর সাথেও হতে পারে। যদি প্রথম বাক্যাংশের সাথে এর সম্পর্ক মেনে নেয়া হয়, তাহলে এর অর্থ হবে, সেই মূৰ্থ অজ্ঞ লোক এই মনোমুগ্ধকর জিনিসটি কিনে নেয় এবং সে জানে না কেমন মূল্যবান জিনিস বাদ দিয়ে সে কেমন ধ্বংসকর জিনিস কিনে নিচ্ছে। একদিকে আছে জ্ঞান ও সঠিক পথনির্দেশনা সমৃদ্ধ আল্লাহর আয়াত। বিনামূল্যে সে তা লাভ করছে কিন্তু তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। অন্যদিকে রয়েছে সব অর্থহীন ও বাজে জিনিস। সেগুলো চিন্তা ও চরিত্ৰশক্তি ধ্বংস করে দেয়। নিজের টাকা পয়সা খরচ করে সে সেগুলো লাভ করছে। আর যদি একে দ্বিতীয় বাক্যাংশের সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করা হয়, তাহলে এর অর্থ হবে যে, সে জ্ঞান ছাড়াই লোকদের পথ দেখাচ্ছে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা করে সে যে নিজের ঘাড়ে কত বড় জুলুমের দায়ভার চাপিয়ে নিচ্ছে, তা সে জানে না।
Esegesi in lingua araba:
 
Traduzione dei significati Versetto: (6) Sura: Luqmân
Indice delle Sure Numero di pagina
 
Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione bengalese - Abu Bakr Zakariya - Indice Traduzioni

Traduzione dei significati del Nobile Corano in bengalese di Abu Bakr Muhammad Zakaria

Chiudi