Check out the new design

Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione Bengalese - Abu Bakr Zakaria * - Indice Traduzioni


Traduzione dei significati Sura: Al-Qamar   Versetto:
وَنَبِّئۡهُمۡ أَنَّ ٱلۡمَآءَ قِسۡمَةُۢ بَيۡنَهُمۡۖ كُلُّ شِرۡبٖ مُّحۡتَضَرٞ
আর তাদেরকে জানিয়ে দিন যে, তাদের মধ্যে পানি বন্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশের জন্য প্রত্যেকে উপস্থিত হবে পালাক্রমে।
Esegesi in lingua araba:
فَنَادَوۡاْ صَاحِبَهُمۡ فَتَعَاطَىٰ فَعَقَرَ
অতঃপর তারা তাদের সঙ্গীকে ডাকল, ফলে সে সেটাকে (উষ্ট্রী) ধরে হত্য করল।
Esegesi in lingua araba:
فَكَيۡفَ كَانَ عَذَابِي وَنُذُرِ
অতএব কিরূপ কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও ভীতিপ্রদর্শন !
Esegesi in lingua araba:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَا عَلَيۡهِمۡ صَيۡحَةٗ وَٰحِدَةٗ فَكَانُواْ كَهَشِيمِ ٱلۡمُحۡتَظِرِ
নিশ্চয় আমরা তাদের উপর পাঠিয়েছিলাম এক বিরাট আওয়াজ; ফলে তারা হয়ে গেল খোয়াড় প্রস্তুতকারীর বিখন্ডিত শুল্ক খড়ের ন্যায় [১]।
[১] যারা গবাদি পশু লালন পালন করে তারা পশুর খোয়াড়ের সংরক্ষণ ও হিফাজতের জন্য কাঠ ও গাছের ডাল পালা দিয়ে বেড়া তৈরী করে দেয়। এ বেড়ার কাঠ ও গাছ-গাছালীর ডালপালা আস্তে আস্তে শুকিয়ে ঝরে পড়ে এবং পশুদের আসা যাওয়ায় পদদলিত হয়ে করাতের গুঁড়ার মত হয়ে যায়। সামূদ জাতির দলিত মথিত লাশসমূহকে করাতের ঐ গুড়োর সাথে তুলনা করা হয়েছে।
Esegesi in lingua araba:
وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
আর অবশ্যই আমরা কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?
Esegesi in lingua araba:
كَذَّبَتۡ قَوۡمُ لُوطِۭ بِٱلنُّذُرِ
লুত সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল সতর্ককারীদের প্রতি,
Esegesi in lingua araba:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَا عَلَيۡهِمۡ حَاصِبًا إِلَّآ ءَالَ لُوطٖۖ نَّجَّيۡنَٰهُم بِسَحَرٖ
নিশ্চয় আমরা তাদের উপর পাঠিয়েছিলাম পাথর বহনকারী প্রচণ্ড ঝটিকা, কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়; তাদেরকে আমরা উদ্ধার করেছিলাম রাতের শেষাংশে,
Esegesi in lingua araba:
نِّعۡمَةٗ مِّنۡ عِندِنَاۚ كَذَٰلِكَ نَجۡزِي مَن شَكَرَ
আমাদের পক্ষ থেকে অনুগ্রহস্বরূপ; যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, আমরা এভাবেই তাকে পুরস্কৃত করে থাকি।
Esegesi in lingua araba:
وَلَقَدۡ أَنذَرَهُم بَطۡشَتَنَا فَتَمَارَوۡاْ بِٱلنُّذُرِ
আর অবশ্যই লূত তাদেরকে সতর্ক করেছিল আমাদের কঠোর পাকড়াও সম্পর্কে; কিন্তু তারা সতর্কবাণী সম্বন্ধে বিতণ্ডা [১] শুরু করল।
[১] আয়াতের অন্য অর্থ হচ্ছে, তারা সতর্কবাণী সম্পর্কে সন্দেহ করেছিল এবং মিথ্যারোপ করেছিল। [মুয়াসসার]
Esegesi in lingua araba:
وَلَقَدۡ رَٰوَدُوهُ عَن ضَيۡفِهِۦ فَطَمَسۡنَآ أَعۡيُنَهُمۡ فَذُوقُواْ عَذَابِي وَنُذُرِ
আর অবশ্যই তারা লূতের কাছ থেকে তার মেহমানদেরকে অসদুদ্দেশ্যে দাবি করল [১], তখন আমরা তাদের দৃষ্টি শক্তি লোপ করে দিলাম এবং বললাম, ‘আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং ভীতির পরিণাম।
[১] رَاوَدَ ও مُرَاوَدَةٌ শব্দের অর্থ কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্যে কাউকে ফুসলানো। কওমে লুত বালকদের সাথে অপকর্মে অভ্যস্ত ছিল। আল্লাহ তা'আলা তাদের পরীক্ষার জন্যেই কয়েকজন ফেরেশতাকে সুশ্ৰী বালকের বেশে প্রেরণ করেন। দুৰ্বত্তরা তাদের সাথে অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার জন্যে লুত আলাইহিস সালামের গৃহে উপস্থিত হয়। লুত আলাইহিস সালাম দরজা বন্ধ করে দেন। কিন্তু তারা দরজা ভেঙে অথবা প্রাচীর টপকিয়ে ভিতরে আসতে থাকে। লুত আলাইহিস সালাম বিব্ৰতবোধ করলে ফেরেশতাগণ তাদের পরিচয় প্রকাশ করে বললেন: আপনি চিন্তিত হবেন না। এরা আমাদের কিছুই করতে পারবে না। আমরা তাদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্যেই আগমন করেছি।
Esegesi in lingua araba:
وَلَقَدۡ صَبَّحَهُم بُكۡرَةً عَذَابٞ مُّسۡتَقِرّٞ
আর অবশ্যই প্রত্যুষে তাদের উপর বিরামহীন শাস্তি আঘাত করেছিল।
Esegesi in lingua araba:
فَذُوقُواْ عَذَابِي وَنُذُرِ
সুতরাং ‘আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং ভীতিপ্রদর্শনের পরিণাম।’
Esegesi in lingua araba:
وَلَقَدۡ يَسَّرۡنَا ٱلۡقُرۡءَانَ لِلذِّكۡرِ فَهَلۡ مِن مُّدَّكِرٖ
আর অবশ্যই আমরা কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্ৰহণকারী কেউ আছে কি?
Esegesi in lingua araba:
وَلَقَدۡ جَآءَ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ ٱلنُّذُرُ
আর অবশ্যই ফির’আউন সম্প্রদায়ের কাছে এসেছিল সতর্ককারী;
Esegesi in lingua araba:
كَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِنَا كُلِّهَا فَأَخَذۡنَٰهُمۡ أَخۡذَ عَزِيزٖ مُّقۡتَدِرٍ
তারা আমাদের সব নিদর্শনে মিথ্যারোপ করল, সুতরাং আমরা মহাপরাক্রমশালী ও সর্বশক্তিমানরূপে তাদেরকে পাকড়াও করলাম।
Esegesi in lingua araba:
أَكُفَّارُكُمۡ خَيۡرٞ مِّنۡ أُوْلَٰٓئِكُمۡ أَمۡ لَكُم بَرَآءَةٞ فِي ٱلزُّبُرِ
তোমাদের মধ্যকার কাফিররা কি তাদের চেয়ে ভাল? না কি তোমাদের অব্যাহতির কোনো সনদ রয়েছে পূর্ববতী কিতাবে?
Esegesi in lingua araba:
أَمۡ يَقُولُونَ نَحۡنُ جَمِيعٞ مُّنتَصِرٞ
নাকি তারা বলে, ‘আমরা এক সংঘবদ্ধ অপরাজেয় দল? ’
Esegesi in lingua araba:
سَيُهۡزَمُ ٱلۡجَمۡعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ
এ দল তো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পিঠ দেখিয়ে পালাবে [১],
[১] এটা একটি সুস্পষ্ট ভবিষ্যতবাণী। অর্থাৎ কুরাইশদের সংঘবদ্ধ শক্তি, যা নিয়ে তাদের গর্ব ছিল অচিরেই মুসলিমদের কাছে পরাজিত হবে। [কুরতুবী; ইবন কাসীর] আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাসের ছাত্র ইকরিমা বর্ণনা করেন যে, উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলতেন, যে সময় সূরা কামারের এ আয়াত নাযিল হয় তখন আমি অস্থির হয়ে পড়েছিলাম যে, এটা কোন সংঘবদ্ধ শক্তি যা পরাজিত হবে? কিন্তু বদর যুদ্ধে যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ম পরিহিত অবস্থায় সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন এবং তার পবিত্র জবান থেকে

سَيُهۡزَمُ ٱلۡجَمۡعُ وَيُوَلُّونَ ٱلدُّبُرَ

উচ্চারিত হচ্ছে তখন আমি বুঝতে পারলাম এ পরাজয়ের খবরই দেয়া হয়েছিল। [দেখুন, বুখারী ৪৮৭৫]
Esegesi in lingua araba:
بَلِ ٱلسَّاعَةُ مَوۡعِدُهُمۡ وَٱلسَّاعَةُ أَدۡهَىٰ وَأَمَرُّ
বরং কিয়ামত তাদের শাস্তির নির্ধারিত সময়। আর কিয়ামত হবে কঠিনতর ও তিক্তকর [১];
[১] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর এ আয়াত নাযিল হয়েছিল তখন আমি এত ছোট ছিলাম যে, খেলা-ধুলা করতাম। [বুখারী ৪৮৭৬]
Esegesi in lingua araba:
إِنَّ ٱلۡمُجۡرِمِينَ فِي ضَلَٰلٖ وَسُعُرٖ
নিশ্চয় অপরাধীরা বিভ্রান্তি ও শাস্তিতে রয়েছে [১]।
[১] এছাড়া আয়াতের আরেক অর্থ হচ্ছে, নিশ্চয় অপরাধীরা দুনিয়াতে রয়েছে বিভ্রান্তিতে আর আখেরাতে থাকবে প্রজ্জলিত আগুনে। [বাগভী] অপর অর্থ হচ্ছে, তারা দুনিয়াতে ধ্বংস ও আখেরাতে প্ৰজলিত আগুনে। [জালালাইন]
Esegesi in lingua araba:
يَوۡمَ يُسۡحَبُونَ فِي ٱلنَّارِ عَلَىٰ وُجُوهِهِمۡ ذُوقُواْ مَسَّ سَقَرَ
যেদিন তাদেরকে উপুড় করে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের দিকে; সেদিন বলা হবে, ‘জাহান্নামের যন্ত্রণা আস্বাদন কর।’
Esegesi in lingua araba:
إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ
নিশ্চয় আমরা প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে [১],
[১] قدر বা ‘কদর’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরিমাপ করা, কোনো বস্তু উপযোগিতা অনুসারে পরিমিতরূপে তৈরি করা। [ফাতহুল কাদীর] এছাড়া শরীআতের পরিভাষায় ‘কদার’ শব্দটি মহান আল্লাহর তাকদীর তথা বিধিলিপির অর্থেও ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ তফসীরবিদ বিভিন্ন হাদীসের ভিত্তিতে আলোচ্য আয়াতে এই অর্থই নিয়েছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কুরাইশ কাফেররা একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে তাকদীর সম্পর্কে বিতর্ক শুরু করলে আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ হয়। [মুসলিম ২৬৫৬]

তাকদীর ইসলামের একটি অকাট্য আকীদা-বিশ্বাস। যে একে সরাসরি অস্বীকার করে, সে কাফের। উপরোক্ত আয়াত ও তার শানে নুযুল থেকে আমরা এর প্রমাণ পাই। তাছাড়া পবিত্র কুরআনের অন্যত্রও তাকদীরের কথা এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন: “আর আল্লাহর নির্দেশ ছিল সুনির্ধারিত।” [সূরা আল-আহযাব ৩৮] অন্যত্র বলেন, “তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন তারপর নির্ধারণ করেছেন যথাযথ অনুপাতে।” [সূরা আল-ফুরকান ২]

সহীহ মুসলিমে উমর ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যা 'হাদীসে জিবরীল’ নামে বিখ্যাত, তাতে রয়েছে: জিবরীল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জানতে চেয়ে বলেন যে, আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন, তিনি বললেন: “আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনা, আর তাকদীরের ভাল ও মন্দের প্রতি ঈমান আনা।” [মুসলিম ১] অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি: “আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সৃষ্টি জগতের তাকদীর লিখে রেখেছেন।” বললেন, “আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর।” [মুসলিম ২৬৫৩] অনুরূপভাবে তাকদীরের উপর ঈমান আনা উম্মত তথা সাহাবায়ে কেরাম ও তাদের পরবর্তী সবার ইজমা’ বা ঐক্যমতের বিষয়। সহীহ মুসলিমে ত্বাউস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি অনেক সাহাবীকে পেয়েছি যারা বলতেন: সব কিছু তাকদীর অনুসারে হয়।’ আরো বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবন উমরকে বলতে শুনেছি: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “সবকিছুই তাকদীর মোতাবেক হয়, এমনকি অপারগতা ও সক্ষমতা অথবা বলেছেন: সক্ষমতা ও অপারগতা।” [মুসলিম ২৬৫৫]

তাকদীরের স্তর বা পর্যায়সমূহ চারটি, যার উপর কুরআন ও সুন্নায় অসংখ্য দলীল-প্রমাণাদি এসেছে আর আলেমগণও তার স্বীকৃতি দিয়েছেন।

প্রথম স্তর: অস্তিত্ব সম্পন্ন, অস্তিত্বহীন, সম্ভব এবং অসম্ভব সবকিছু সম্পর্কে আল্লাহর জ্ঞান থাকা এবং এ সবকিছু তাঁর জ্ঞানের আওতাভুক্ত থাকা। সুতরাং তিনি যা ছিল এবং যা হবে, আর যা হয় নি যদি হত তাহলে কি রকম হতো তাও জানেন। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন।” [সূরা আত্‌ তালাক ১২] সহীহ বুখারী ও মুসলিমে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীসে বর্ণিত, তিনি বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুশরিকদের সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “তারা কি কাজ করত (জীবিত থাকলে) তা আল্লাহই ভাল জানেন।” [বুখারী ১৩৮৪, মুসলিম ২৬৫৯]

দ্বিতীয় স্তর: ক্ৰিয়ামত পর্যন্ত যত কিছু ঘটবে সে সব কিছু মহান আল্লাহ কর্তৃক লিখে রাখা। মহান আল্লাহ বলেন, “আপনি কি জানেন না যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে আল্লাহ তা জানেন। এসবই এক কিতাবে আছে; নিশ্চয়ই তা আল্লাহর নিকট সহজ।” [সূরা আল-হাজ্জ ৭০] আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন, “আমরা তো প্রত্যেক জিনিস এক স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত করেছি।” [সূরা ইয়াসীন ১২] পূর্বে বর্ণিত ‘আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আসের হাদীসে এ কথাও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করার পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সৃষ্টি জগতের তাকদীর লিখে রেখেছেন। [মুসলিম ২৬৫৩] তাছাড়া অন্য হাদীসে এসেছে, ওলীদ ইবন উবাদাহ বলেন, আমি আমার পিতাকে অসিয়ত করতে বললে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ যখন প্রথমে কলম সৃষ্টি করলেন তখন তাকে বললেন, লিখ। তখন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যা হবে সে মূহুর্ত থেকে কলম তা লিখতে শুরু করেছে।' হে প্রিয় বৎস! তুমি যদি এটার উপর ঈমান না এনে মারা যাও তবে তুমি জাহান্নামে যাবে। [মুসনাদে আহমাদ ৫/৩১৭] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ঐ পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ চারটি বিষয়ের উপর ঈমান না আনবে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো হক ইলাহ নেই- এটার সাক্ষ্য দেয়া। আর আমি আল্লাহর রাসূল। আল্লাহ আমাকে হক সহ পাঠিয়েছে। অনুরূপভাবে সে মৃত্যুর উপর ঈমান আনবে। আরো ঈমান আনবে মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানের। আরও ঈমান আনবে তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর। [তিরমিয়ী ২১৪৪]

তৃতীয় স্তর: আল্লাহর ইচ্ছ: তিনি যা চান তা হয়, আর যা চান না তা হয় না। মহান আল্লাহ বলেন, “তাঁর ব্যাপার শুধু এতটুকুই যে, তিনি যখন কোনো কিছুর ইচ্ছা করেন, তিনি তখন তাকে বলেন, ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায়।” [সূরা ইয়াসীন ৮২] মহান আল্লাহ আরো বলেন, “সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রতিপালক আল্লাহর ইচ্ছা! ব্যতীত তোমরা কোনো ইচ্ছাই করতে পার না।” [সূরা আত-তাকওয়ীর ২৯] হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের কেউ যেন একথা কখনো না বলে যে, হে আল্লাহ! যদি আপনি চান আমাকে ক্ষমা করুন, হে আল্লাহ! যদি আপনি চান আমাকে দয়া করুন, বরং দোআ করার সময় দৃঢ়ভাবে কর। কেননা আল্লাহ যা ইচ্ছা তা-ই করেন, তাঁকে জোর করার কেউ নেই।” [বুখারী ৬৩৩৯, মুসলিম ২৬৭৯]

চতুর্থ স্তর: আল্লাহ কর্তৃক যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করা ও অস্তিত্বে আনা এবং এ ব্যাপারে তাঁর পূর্ণ ক্ষমতা থাকা। কেননা তিনিই সে পবিত্র সত্তা যিনি সমস্ত কর্মী ও তার কর্ম, প্রত্যেক নড়াচড়াকারী ও তার নড়াচড়া এবং যাবতীয় স্থিরিকৃত বস্তু ও তার স্থিরতার সৃষ্টিকারক। মহান আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর কর্মবিধায়ক।” সূরা আয-যুমার ৬২] আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন, “প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যা কর তাও।” [সূরা আস-সাফফাত ৯৬] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “একমাত্র আল্লাহ্‌ ছিলেন, তিনি ব্যতীত আর কোনো বস্তু ছিলনা, আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর এবং তিনি সবকিছু লাওহে মাহফুজে লিখে রেখেছেন, আর আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন।” [বুখারী ৩১৯১]

তাই তাকদীরের উপর ঈমান বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য এ চারটি স্তরের উপর ঈমান আনা ওয়াজিব। যে কেউ তার সামান্যও অস্বীকার করে তাকদীরের উপর তার ঈমান পূর্ণ হবে না।

তাকদীরের উপর ঈমানের উপকারিতা: তাকদীরের উপর ঈমান যথার্থ হলে মুমিনের জীবনের উপর তার যে বিরাট প্রভাব ও হিতকর ফলাফল অর্জিত হয়, তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে:

কার্যোদ্ধারের জন্য কোনো উপায় বা কৌশল অবলম্বন করলেও কেবল আল্লাহর উপরই ভরসা করবে; কেননা তিনিই যাবতীয় কৌশল ও কৌশল্যকারীর নিয়ন্তা। যখন বান্দা এ কথা সত্যিকার ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে যে, সবকিছুই আল্লাহর ফয়সালা ও তাকদীর অনুসারেই হয় তখন তার আত্মিক প্রশান্তি ও মানসিক প্ৰসন্নতা অর্জিত হয়।

উদ্দেশ্য সাধিত হলে নিজের মন থেকে আত্মম্ভরিতা দূর করা সম্ভব হয়। কেননা আল্লাহ তার জন্য উক্ত কল্যাণ ও সফলতার উপকরণ নির্ধারণ করে দেয়ার কারণেই তার পক্ষে এ নেয়ামত অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, তাই সে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ হবে এবং আত্মম্ভরিতা পরিত্যাগ করবে।
উদ্দেশ্য সাধিত না হলে বা অপছন্দনীয় কিছু ঘটে গেলে মন থেকে অশান্তি ও পেরেশানীভাব দূর করা (তাকদীরে ঈমানের কারণে) সম্ভব হয়। কেননা এটা আল্লাহর ফয়সালা আর তাঁরই তাকদীরের ভিত্তিতে হয়েছে। সুতরাং সে ধৈর্য ধারণ করবে এবং সওয়াবের আশা করবে। [উসুলুল ঈমান ফি দাওয়িল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ]
Esegesi in lingua araba:
 
Traduzione dei significati Sura: Al-Qamar
Indice delle Sure Numero di pagina
 
Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione Bengalese - Abu Bakr Zakaria - Indice Traduzioni

Bengalese tradotta da Abu Bakr Muhammad Zakaria.

Chiudi