Check out the new design

Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione Bengalese - Abu Bakr Zakaria * - Indice Traduzioni


Traduzione dei significati Sura: Al-A‘râf   Versetto:
وَجَٰوَزۡنَا بِبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ ٱلۡبَحۡرَ فَأَتَوۡاْ عَلَىٰ قَوۡمٖ يَعۡكُفُونَ عَلَىٰٓ أَصۡنَامٖ لَّهُمۡۚ قَالُواْ يَٰمُوسَى ٱجۡعَل لَّنَآ إِلَٰهٗا كَمَا لَهُمۡ ءَالِهَةٞۚ قَالَ إِنَّكُمۡ قَوۡمٞ تَجۡهَلُونَ
আর আমরা বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করিয়ে দেই; তারপর তারা মূর্তিপূজায় রত এক জাতির কাছে উপস্থিত হয়। তারা বলল, ‘হে মূসা! তাদের মা’বুদদের ন্যায় আমাদের জন্যও একজন মা’বুদ স্থির করে দাও [১]। তিনি বললেন, ‘তোমরা তো এক জাহিল সম্প্রদায়।’
[১] বনী ইসরাঈলদের মত অবস্থা এ উম্মতের মধ্যে ঘটেছে এবং নিত্য ঘটছে। এ উম্মাতের মধ্যেও কিছু না বুঝে না শুনে অন্যান্য জাতির অনুকরণে শির্ক ও কুফরী করার মানসিকতা রয়ে গেছে। আবু ওয়াকিদ আল-লাইসি বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক হাদীসে এসেছে, আবু ওয়াকিদ বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হুনাইনের দিকে এক যুদ্ধে বের হলাম। আমরা একটা বরই গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমাদের জন্য এ গাছটিকে লটকানোর জন্য নির্ধারিত করে দিন যেমনটি নির্ধারিত রয়েছে কাফেরদের জন্য। কারণ, কাফেরদের একটি বরই গাছ ছিল যাতে তারা তাদের হাতিয়ার লটকিয়ে রাখত এবং তার চতুষ্পার্শ ঘিরে বসত। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহু আকবার! এটা তো এমন যেমন বনী ইসরাঈল মূসাকে বলেছিল: “তাদের যেমন অনেক উপাস্য রয়েছে আমাদের জন্যও তেমন উপাস্য নির্ধারিত করে দিন।” অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতির অনুসরণ করবে।” [তিরমিয়ী ২১৮০, মুসনাদে আহমাদ ৫/২১৮, ইবন হিব্বান ৬৭০২]
Esegesi in lingua araba:
إِنَّ هَٰٓؤُلَآءِ مُتَبَّرٞ مَّا هُمۡ فِيهِ وَبَٰطِلٞ مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ
‘এসব লোক যাতে লিপ্ত রয়েছে তা তো বিধ্বস্ত করা হবে এবং তারা যা করছে তাও অমূলক।’
Esegesi in lingua araba:
قَالَ أَغَيۡرَ ٱللَّهِ أَبۡغِيكُمۡ إِلَٰهٗا وَهُوَ فَضَّلَكُمۡ عَلَى ٱلۡعَٰلَمِينَ
তিনি আরো বললেন, ‘আল্লাহ্‌ ছাড়া তোমাদের জন্য আমি কি অন্য ইলাহ খোঁজ করব অথচ তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টিকুলের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন?’
Esegesi in lingua araba:
وَإِذۡ أَنجَيۡنَٰكُم مِّنۡ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ يَسُومُونَكُمۡ سُوٓءَ ٱلۡعَذَابِ يُقَتِّلُونَ أَبۡنَآءَكُمۡ وَيَسۡتَحۡيُونَ نِسَآءَكُمۡۚ وَفِي ذَٰلِكُم بَلَآءٞ مِّن رَّبِّكُمۡ عَظِيمٞ
আর স্মরণ কর, যখন আমরা তোমাদেরকে ফির’আউনের অনুসারীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছি যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিত। তারা তোমাদের পুত্রসন্তানদেরকে হত্যা করত এবং তোমাদের নারীদেরকে জীবিত রাখত; এতে ছিল তোমাদের রবের এক মহাপরীক্ষা [১]।
[১] অর্থাৎ আমরা বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করে দিয়েছি। ফিরআউন সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় বনী ইসরাঈলের যে অলৌকিক কৃতকার্যতা ও প্রশান্তি লাভ হয়, তার সে প্রতিক্রিয়াই হয়েছে যা সাধারণতঃ প্রাচুর্য আসার পর বস্তুবাদী জনগোষ্ঠীর মধ্যে সৃষ্টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ তারাও ভোগবিলাসের প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করল। ঘটনাটি হল এই যে, এই জাতি মূসা ‘আলাইহিস সালামের মু'জিযা বলে সদ্য লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে এসেছিল এবং গোটা ফির’আউন সম্পপ্রদায়ের সাগরে ডুবে মরার দৃশ্য স্বচক্ষে দেখে নিয়েছিল, কিন্তু তা সত্বেও একটু অগ্রসর হতেই তারা এমন এক মানব গোষ্ঠীর বাসভূমির উপর দিয়ে অতিক্রম করল, যারা বিভিন্ন মূর্তির পূজায় লিপ্ত ছিল। এই দেখে বনী ইসরাঈলেরও তাদের সেসব রীতি-নীতি পছন্দ হতে লাগল। তাই মূসা ‘আলাইহিস সালামের নিকট আবেদন জানাল, এসব লোকের যেমন বহু উপাস্য রয়েছে, আপনি আমাদের জন্যও এমনি ধরণের কোনো একটা উপাস্য নির্ধারণ করে দিন, যাতে আমরা একটা দৃষ্ট বস্তুকে সামনে রেখে ইবাদাত করতে পারি, আল্লাহর সত্তা তো আর সামনে আসে না। মূসা ‘আলাইহিস সালাম বললেন, “তোমাদের মধ্যে বড়ই মূর্খতা রয়েছে।" যাদের রীতি-নীতি তোমরা পছন্দ করছ, তাদের সমস্ত আমল তো বিনষ্ট ও বরবাদ হয়ে গেছে। এরা মিথ্যার অনুগামী। তাদের এসব ভ্রান্ত রীতি-নীতির প্রতি আকৃষ্ট হওয়া তোমাদের পক্ষে উচিত নয়। আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমি কি তোমাদের জন্য অন্য কোনো উপাস্য বানিয়ে দেব? অথচ তিনিই তোমাদেরকে দুনিয়াবাসীর উপর বিশিষ্টতা দান করেছেন। অর্থাৎ তৎকালীন বিশ্ববাসীর উপর মর্যাদাসম্পন্ন করেছেন। কারণ, তখন মূসা আলাইহিস সালামের উপর যারা ঈমান এনেছিল, তারাই ছিল অন্যান্য লোক অপেক্ষা বেশী মর্যাদাসম্পন্ন ও উত্তম। অতঃপর বনী ইস্রাঈলকে তাদের বিগত অবস্থা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয়েছে যে, ফিরআউনের কওমের হাতে তারা এমনই নির্যাতিত ও দুর্দশাগ্রস্ত ছিল যে, তাদের ছেলেদেরকে হত্যা করে নারীদেরকে অব্যাহতি দেয়া হত সেবাদাসী বানিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ মূসা 'আলাইহিস সালামের বদৌলতে এবং তার দো’আর বরকতে তাদেরকে সে আযাব থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এই অনুগ্রহের প্রভাব কি এই হওয়া উচিত যে, তোমরা সেই রাববুল আলামীনের সাথে দুনিয়ার নিকৃষ্টতম পাথরকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে। এ যে মহা যুলুম। এই থেকে তাওবাহ কর।
Esegesi in lingua araba:
۞ وَوَٰعَدۡنَا مُوسَىٰ ثَلَٰثِينَ لَيۡلَةٗ وَأَتۡمَمۡنَٰهَا بِعَشۡرٖ فَتَمَّ مِيقَٰتُ رَبِّهِۦٓ أَرۡبَعِينَ لَيۡلَةٗۚ وَقَالَ مُوسَىٰ لِأَخِيهِ هَٰرُونَ ٱخۡلُفۡنِي فِي قَوۡمِي وَأَصۡلِحۡ وَلَا تَتَّبِعۡ سَبِيلَ ٱلۡمُفۡسِدِينَ
আর মূসার জন্য আমরা ত্রিশ রাতের ওয়াদা করি [১] এবং আরো দশ দিয়ে তা পূর্ণ করি। এভাবে তার রবের নির্ধারিত সময় চল্লিশ রাতে [২] পূর্ণ হয়। এবং মূসা তার ভাই হারূনকে বললেন, ‘আমার অনুপস্থিতিতে আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে আপনি আমার প্রতিনিধিত্ব করবেন, সংশোধন করবেন আর বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পথ অনুসরণ করবেন না [৩]।’
সতেরতম রুকূ’

[১] وٰعَدْنَا শব্দটির প্রকৃত অর্থ হল দু'পক্ষ থেকে প্রতিজ্ঞা বা প্রতিশ্রুতি দান করা। এখানেও আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে ছিল তাওরাত দানের প্রতিশ্রুতি আর মূসা আলাইহিস্ সালামের পক্ষ থেকে চল্লিশ রাত এবং এতেকাফের প্রতিজ্ঞা। কাজেই وَوَعَدْنَا না বলে وَوٰعَدْنَا বলা হয়েছে। ওয়াদার তাৎপর্য হল, কাউকে লাভজনক কোনো কিছু দেয়ার পূর্বে তা প্রকাশ করে দেয়া যে, তোমার জন্য অমুক কাজ করব। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলা মূসা আলাইহিস সালামের প্রতি স্বীয় কিতাব নাযিল করার ওয়াদা করেছেন এবং সেজন্য শর্ত আরোপ করেছেন যে, মূসা আলাইহিস সালাম ত্রিশ রাত্রি তুর পর্বতে আল্লাহর ইবাদাতে অতিবাহিত করবেন। অতঃপর এই ত্রিশ রাত্রির উপর আরো দশ রাত্রি বাড়িয়ে চল্লিশ রাত্রি করে দিয়েছেন।

[২] এখান থেকে একটি বিষয় সাব্যস্ত হয় যে, নবী-রাসূলগণের শরী’আতে তারিখের হিসাব ধরা হতো রাত থেকে। কারণ, এ আয়াতে ত্রিশ দিনের ক্ষেত্রে ত্রিশ রাত্রি আর চল্লিশ দিনের ক্ষেত্রে চল্লিশ রাত্রি উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, সৌর হিসাব পার্থিব লাভের জন্য, আর চান্দ্র হিসাব হলো ইবাদতের জন্য। [কুরতুবী]

[৩] মূসা ‘আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা'আলার ওয়াদা অনুসারে তূর পর্বতে গিয়ে যখন এতেকাফ করার ইচ্ছা করেন, তখন স্বীয় ভাই হারূন আলাইহিস সালামকে বললেন, “আমার অবর্তমানে আপনি আমার সম্প্রদায়ে আমার স্থলাভিষিক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করুন।” এতে প্রমাণিত হয় যে, যদি কোনো ব্যক্তি কোনো কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত হন তবে প্রয়োজনবোধে কোথাও যেতে হলে সে কাজের ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো লোক নিয়োগ করে যাওয়া উত্তম। [কুরতুবী] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাধারণ রীতি এই ছিল যে, কখনো যদি তাকে মদীনার বাইরে যেতে হত, তখন তিনি কাউকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করে যেতেন। একবার তিনি আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রতিনিধি নির্ধারণ করেন এবং একবার আব্দুল্লাহ ইবন উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে খলীফা নিযুক্ত করেন। এমনিভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুমকে মদীনায় খলীফা নিযুক্ত করে তিনি বাইরে যেতেন। [কুরতুবী]

মূসা ‘আলাইহিস সালাম হারূন ‘আলাইহিস সালামকে খলীফা নিযুক্ত করার সময় তাকে কয়েকটি উপদেশ দান করেন। তাতে প্রমাণিত হয় যে, কাজের সুবিধার জন্য প্রতিনিধিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ বা উপদেশ দিয়ে যেতে হয়। এই হেদায়াত বা নির্দেশাবলীর মধ্যে প্রথম নির্দেশ হল وَاَصْلِحْ এখানে اَصْلِحْ এর কোনো কর্ম উল্লেখ করা হয়নি যে, কার ইসলাহ বা সংশোধন করা হবে। এতে বুঝা যায় যে, নিজেরও ইসলাহ করবেন এবংসঙ্গে সঙ্গে স্বীয় সম্প্রদায়েরও ইসলাহ করবেন। অর্থাৎ তাদের মাঝে দাঙ্গা-হাঙ্গামাজনিত কোনো বিষয় আঁচ করতে পারলে তাদেরকে সরল পথে আনয়নের চেষ্টা করবেন। দ্বিতীয় হেদায়াত হল এই যে,

(وَلَا تَتَّبِعْ سَبِيْلَ الْمُفْسِدِيْنَ)

অর্থাৎ দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের পথ অনুসরণ করবেন না। বলাবাহুল্য, হারূন আলাইহিস সালাম হলেন আল্লাহর নবী, তার নিজের পক্ষে ফাসাদে পতিত হওয়ার কোনো আশংকাই ছিল না। কাজেই এই হেদায়াতের উদ্দেশ্য ছিল এই যে, দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের কোনো সাহায্য-সহায়তা করবেন না। সুতরাং হারূন আলাইহিস সালাম যখন দেখলেন, তার সম্প্রদায় সামেরী’-এর অনুগমন করতে শুরু করে দিয়েছে, তখন তার সম্প্রদায়কে এহেন ভণ্ডামী থেকে বাধা দান করলেন এবং সামেরীকে সে জন্য শাসলেন। অতঃপর ফিরে এসে মূসা 'আলাইহিস সালাম যখন ধারণা করলেন যে, হারূন ‘আলাইহিস সালাম আমার অবর্তমানে কর্তব্য পালনে অবহেলা করেছেন, তখন তার প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করলেন।
Esegesi in lingua araba:
وَلَمَّا جَآءَ مُوسَىٰ لِمِيقَٰتِنَا وَكَلَّمَهُۥ رَبُّهُۥ قَالَ رَبِّ أَرِنِيٓ أَنظُرۡ إِلَيۡكَۚ قَالَ لَن تَرَىٰنِي وَلَٰكِنِ ٱنظُرۡ إِلَى ٱلۡجَبَلِ فَإِنِ ٱسۡتَقَرَّ مَكَانَهُۥ فَسَوۡفَ تَرَىٰنِيۚ فَلَمَّا تَجَلَّىٰ رَبُّهُۥ لِلۡجَبَلِ جَعَلَهُۥ دَكّٗا وَخَرَّ مُوسَىٰ صَعِقٗاۚ فَلَمَّآ أَفَاقَ قَالَ سُبۡحَٰنَكَ تُبۡتُ إِلَيۡكَ وَأَنَا۠ أَوَّلُ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
আর মূসা যখন আমাদের নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হলেন এবং তার রব তার সাথে কথা বললেন [১], তখন তিনি বললেন, ‘হে আমার রব! আমাকে দর্শন দান করুন, আমি আপনাকে দেখব’। তিনি বললেন, ‘আপনি আমাকে দেখতে পাবেন না [২]। আপনি বরং পাহাড়ের দিকেই তাকিয়ে দেখুন [৩], সেটা যদি নিজের জায়গায় স্থির থাকে তবে আপনি আমাকে দেখতে পাবেন।’ যখন তাঁর রব পাহারে জৌতি প্রকাশ করলেন [৪] তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ-বিচূর্ণ করল এবং মূসা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন [৫]। যখন তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন তখন বললেন, ‘মহিমাময় আপনি, আমি অনুতপ্ত হয়ে আপনার কাছে তাওবাহ্‌ করছি এবং মুমিনদের মধ্যে আমিই প্রথম।’
[১] কুরআনের প্রকৃষ্ট শব্দের দ্বারাই প্রমাণিত যে, আল্লাহ্ তা'আলা মূসা ‘আলাইহিস সালামের সাথে কথা বলেছেন। তাঁর এ কালাম দ্বারা উদ্দেশ্য প্রথমতঃ সেসব কালাম যা নবুওয়াত দানকালে হয়েছিল। আর দ্বিতীয়তঃ সেসব কালাম যা তাওরাত দানকালে হয়েছিল এবং যার আলোচনা এ আয়াতে করা হয়েছে। আল্লাহ তা'আলার সাথে মূসা আলাইহিস সালামের কথা বলা হক ও বাস্তব। এতে বিশ্বাস করতেই হবে। এর মাধ্যমে আল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ একটি গুণ কথা বলা সাব্যস্ত হচ্ছে। [দেখুন, সিফাতুল্লাহিল ওয়ারিদা ফিল কিতাবি ওয়াসসুন্নাহ ২১৬-২১৯]

[২] দর্শন যদিও অসম্ভব নয়, কিন্তু যার প্রতি সম্বোধন করা হয়েছে অর্থাৎ মূসা ‘আলাইহিস সালাম বর্তমান অবস্থায় তা সহ্য করতে পারবেন না। পক্ষান্তরে দর্শন যদি আদৌ সম্ভব না হত, তাহলে (لَنْ تَرٰنِىْ) না বলে বলা হত لَنْ اُرَى “আমার দর্শন হতে পারে না।” এতে প্রমাণিত হয় যে, যৌক্তিকতার বিচারে পৃথিবীতে আল্লাহর দর্শন লাভ যদিও সম্ভব, কিন্তু তবুও এতে তার সংঘটনের অসম্ভবতা প্রমাণিত হয়ে গেছে। আর এটাই হল অধিকাংশ আহলে সুন্নাহর মত যে, এ পৃথিবীতে আল্লাহর দীদার বা দর্শন লাভ যুক্তিগতভাবে সম্ভব হলেও শরীআতের দৃষ্টিতে সম্ভব নয়। যেমন হাদীসে রয়েছে, তোমাদের মধ্যে কেউ মৃত্যুর পূর্বে তার রবকে দেখতে পারবে না। [মুসলিম ২৯৩১, আবু দাউদ ৪৩২০, ইবন মাজাহ ৪০৭৭] এ ব্যাপারে সূরা আল-আন’আমের ১০নং আয়াতের ব্যাখ্যায় বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।

[৩] এতে প্রমাণিত হচ্ছে যে, বর্তমান অবস্থায় দর্শক আল্লাহর দর্শন সহ্য করতে পারবে না বলেই পাহাড়ের উপর যৎসামান্য ছটা বিকিরণ করে বলে দেয়া হয়েছে যে, তাও আপনার পক্ষে সহ্য করা সম্ভবপর নয়; মানুষ তো একান্ত দুর্বলচিত্ত সৃষ্টি; সে তা কেমন করে সহ্য করবে?

[৪] আরবী অভিধানে تَجَلّٰى অর্থ প্রকাশিত ও বিকশিত হওয়া। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতটি তিলাওয়াত করে হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলির মাথায় বৃদ্ধাঙ্গুলিটি রেখে ইঙ্গিত করেছেন যে, আল্লাহ্ তা'আলার এতটুকু অংশই শুধু প্রকাশ করা হয়েছিল, যাতে পাহাড় পর্যন্ত ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেল। অবশ্য এতে গোটা পাহাড়ই যে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যেতে হবে তা অপরিহার্য নয়; বরং পাহাড়ের যে অংশে আল্লাহর তাজালী বিচ্ছুরিত হয়েছিল, সে অংশটিই হয়ত প্রভাবিত হয়ে থাকবে। [আহমাদ ৩/১২৫, তিরমিযী ৩০৭৪, হাকেম ২/৩২০]

[৫] মূসা ‘আলাইহিস সালাম সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলায় তার পুরস্কারস্বরূপ হাশরের মাঠে তাকে প্রথম সচেতন হিসাবে দেখা যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের মাঠে মানুষ সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলবে, আমিই সর্বপ্রথম সংজ্ঞা ফিরে পাব, তখন দেখতে পাব যে, মূসা আল্লাহর আরশের খুঁটি ধরে দাড়িয়ে আছেন। আমি জানি না তিনি কি আমার আগে সংজ্ঞা ফিরে পেয়েছেন, না কি তুর পাহাড়ে যে সংজ্ঞা হারিয়েছিলেন, তার বিনিময়ে তিনি সচেতনই ছিলেন।” [বুখারী ৪৬৩৮, মুসলিম ২৩৭৪]
Esegesi in lingua araba:
 
Traduzione dei significati Sura: Al-A‘râf
Indice delle Sure Numero di pagina
 
Traduzione dei Significati del Sacro Corano - Traduzione Bengalese - Abu Bakr Zakaria - Indice Traduzioni

Bengalese tradotta da Abu Bakr Muhammad Zakaria.

Chiudi