وه‌رگێڕانی ماناكانی قورئانی پیرۆز - وەرگێڕاوی بەنگالی - ئەبوبەکر زەکەریا * - پێڕستی وه‌رگێڕاوه‌كان


وه‌رگێڕانی ماناكان ئایه‌تی: (65) سوره‌تی: سورەتی الأنعام
قُلۡ هُوَ ٱلۡقَادِرُ عَلَىٰٓ أَن يَبۡعَثَ عَلَيۡكُمۡ عَذَابٗا مِّن فَوۡقِكُمۡ أَوۡ مِن تَحۡتِ أَرۡجُلِكُمۡ أَوۡ يَلۡبِسَكُمۡ شِيَعٗا وَيُذِيقَ بَعۡضَكُم بَأۡسَ بَعۡضٍۗ ٱنظُرۡ كَيۡفَ نُصَرِّفُ ٱلۡأٓيَٰتِ لَعَلَّهُمۡ يَفۡقَهُونَ
বলুন [১], ‘তোমাদের উপর [২] বা নীচ থেকে শাস্তি পাঠাতে [৩] ,বা তোমাদেরকে বিভিন্ন সন্দেহপূর্ণ দলে বিভক্ত করতে বা এক দলকে অন্য দলের সংঘর্ষের আস্বাদ গ্রহণ করাতে [৪] তিনি (আল্লাহ) সক্ষম।’ দেখুন,আমারা কি রূপে বিভিন্নভাবে আয়াতসদমূহ বিবৃত করি যাতে তারা ভালোভাবে বুঝতে পারে।
[১] এখানে বলা হচ্ছে যে, আল্লাহ্ তা'আলা যেকোনো আযাব ও যেকোনো বিপদ দূর করতে যেমন সক্ষম, তেমনিভাবে তিনি যখন কোনো ব্যক্তি অথবা সম্প্রদায়কে অবাধ্যতার শাস্তি দিতে চান, তখন যেকোনো শাস্তি দেয়াও তার পক্ষে সহজ। কোনো অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার জন্য দুনিয়ার শাসনকর্তাদের ন্যায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দরকার হয় না এবং কোনো সাহায্যকারীরও প্রয়োজন হয় না। বলা হচ্ছে, আল্লাহ্ তাআলা এ বিষয়েও শক্তিমান যে, তোমাদের প্রতি উপরদিক থেকে কিংবা পদতল থেকে কোনো শাস্তি পাঠিয়ে দেবেন কিংবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত করে পরস্পরের মুখোমুখি করে দেবেন এবং এককে অপরের হাতে শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন। মূলতঃ আল্লাহর শাস্তি তিন প্রকার: (এক) যা উপর দিক থেকে আসে, (দুই) যা নিচের দিক থেকে আসে এবং (তিন) যা নিজেদের মধ্যে মতানৈক্যের আকারে সৃষ্টি হয়। এসব প্রকার আযাব দিতে আল্লাহ্ তা'আলা সক্ষম।

[২] মুফাসসিরগণ বলেন, উপর দিক থেকে আযাব আসার দৃষ্টান্ত বিগত উম্মতসমূহের মধ্যে অনেক রয়েছে। যেমন নূহ আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের উপর প্লাবণাকারে বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছিল, আদ জাতির উপর ঝড়-ঝঞা চড়াও হয়েছিল, লুত আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের উপর প্রস্তর বর্ষিত হয়েছিল এবং ইসরাঈল বংশধরদের উপর রক্ত, ব্যাঙ ইত্যাদি বর্ষণ করা হয়েছিল। আবরাহার হস্তিবাহিনী যখন মক্কার উপর চড়াও হয়, তখন পক্ষীকুল দ্বারা তাদের উপর কঙ্কর বর্ষণ করা হয়। ফলে সবাই চর্বিত ভূষির ন্যায় হয়ে যায়। [বাগভী]

[৩] এমনিভাবে বিগত উম্মতসমূহের মধ্যে নীচের দিক থেকে আযাব আসারও বিভিন্ন প্রকার অতিবাহিত হয়েছে। নূহ আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের প্রতি উপরের আযাব বৃষ্টির আকারে এবং নীচের আযাব ভূতল থেকে পানি স্ফীত হয়ে প্রকাশ পেয়েছিল। তারা একই সময়ে উভয় প্রকার আযাবে পতিত হয়েছিল। ফিরআউনের সম্প্রদায়কে পদতলের আযাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কারুন স্বীয় ধন-ভাণ্ডারসহ এ আযাবে পতিত হয়ে মৃত্তিকার অভ্যন্তরে প্রোথিত হয়েছিল। [বাগভী] আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা, মুজাহিদ রাহিমাহুল্লাহ প্রমূখ মুফাসসিরগণ বলেন, উপরের আযাবের অর্থ অত্যাচারী বাদশাহ ও নির্দয় শাসকবর্গ এবং নীচের আযাবের অর্থ নিজ চাকর, নোকর ও অধীনস্ত কর্মচারীদের বিশ্বাসঘাতক, কর্তব্যে অবহেলাকারী ও আত্মসাৎকারী হওয়া। [ফাতহুল কাদীর]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যখন আল্লাহ তা'আলা কোনো প্রশাসক বা শাসনকর্তার মঙ্গল চান, তখন তাকে উত্তম সহকারী দান করেন, যাতে প্রশাসক আল্লাহর কোনো বিধান ভুলে গেলে সে তা স্মরণ করিয়ে দেয়, আর যদি প্রশাসক আল্লাহর বিধান স্মরণ করে তখন সে তা বাস্তবায়নে সহায়তা করে। পক্ষান্তরে যখন কোনো প্রশাসক বা শাসনকর্তার অমঙ্গলের ইচ্ছা করেন, তখন মন্দ লোকদেরকে তার পরামর্শদাতা নিযুক্ত করা হয়; ফলে সে যখন আল্লাহর কোনো বিধান ভুলে যায় তখন তারা তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না। আর যদি সে প্রশাসক নিজেই স্মরণ করে তখন তারা তাকে তা বাস্তবায়ন করতে সহায়তা করে না। [আবু দাউদ ২৯৩২; নাসায়ী: ৪২০৪] এসব হাদীস ও আলোচ্য আয়াতের উল্লিখিত তাফসীরের সারমর্ম এই যে, জনগণ শাসকবর্গের হাতে যেসব কষ্ট ও বিপদাপদ ভোগ করে, তা উপর দিককার আযাব এবং যেসব কষ্ট অধীন কর্মচারীদের দ্বারা ভোগ করতে হয়, সেগুলো নীচের দিককার আযাব! এগুলো কোনো আকস্মিক দুর্ঘটনা নয়, বরং আল্লাহর আইন অনুসারে মানুষের কৃতকর্মের শাস্তি। সুফিয়ান সওরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, যখন আমি কোনো গোনাহ করে ফেলি, তখন এর ক্রিয়া স্বীয় চাকর, আরোহণের ঘোড়া ও বোঝা বহনের গাধার মেজাজেও অনুভব করি। এরা সবাই আমার অবাধ্যতা করতে থাকে।

[৪] আয়াতে বর্ণিত তৃতীয় প্রকার আযাব হচ্ছে, বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের মুখোমুখি হয়ে যাওয়া এবং একদল অন্য দলের জন্য আযাব হওয়া। তাই আয়াতের অনুবাদ এরূপ হবে, এক প্রকার আযাব এই যে, জাতি বিভিন্ন দলে-উপদলে বিভক্ত হয়ে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে যাবে। এ কারণেই আলোচ্য আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদেরকে সম্বোধন করে বললেন, ‘সাবধান! তোমরা আমার পরে পুনরায় কাফের হয়ে যেয়ো না যে, একে অন্যের গর্দান মারতে শুরু করবে।’ [বুখারী ১২১] সা’আদ ইবন আবী ওয়াক্কাস বলেন, ‘একবার আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে চলতে চলতে বনী মুয়াবিয়ার মসজিদে প্রবেশ করে দুরাকাআত সালাত আদায় করলাম। তিনি তার রবের কাছে অনেকক্ষণ দুআ করার পর বললেন, আমি রব-এর নিকট তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেছি- তিনি আমাকে দুটি বিষয় দিয়েছেন, আর একটি থেকে নিষেধ করেছেন। আমি প্রার্থনা করেছি যে, (এক) আমার উম্মতকে যেন দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধা দ্বারা ধ্বংস করা না হয়, আল্লাহ্ তা'আলা এ দু'আ কবুল করেছেন। (দুই) আমার উম্মতকে যেন নিমজ্জিত করে ধ্বংস করা না হয়। আল্লাহ্ তা'আলা এ দু'আও কবুল করেছেন। (তিন) আমার উম্মত যেন পারস্পরিক দ্বন্দ্ব দ্বারা ধ্বংস না হয়। আমাকে তা প্রদান করতে নিষেধ করেছেন। [মুসলিম ২৮৯০]

এসব হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, উম্মতে মুহাম্মাদীর উপর বিগত উম্মতদের ন্যায় আকাশ কিংবা ভূতল থেকে কোনো ব্যাপক আযাব আগমন করবে না; কিন্তু একটি আযাব দুনিয়াতে তাদের উপরও আসতে থাকবে। এ আযাব হচ্ছে পারস্পরিক যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং দলীয় সংঘর্ষ। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত জোর সহকারে উম্মতকে বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-কলহ ও যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতে নিষেধ করেছেন। তিনি প্রতি ক্ষেত্রেই হুশিয়ার করেছেন যে, দুনিয়াতে যদি তোমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে, তবে তা পারস্পরিক যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমেই আসবে।

অন্য আয়াতে এ বিষয়টি পূর্ববর্তী জাতিদের ক্ষেত্রে আরও স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে, “তারা সর্বদা পরষ্পরে মতবিরোধই করতে থাকবে, তবে যাদের প্রতি আল্লাহ্‌র রহমত রয়েছে, তারা এর ব্যতিক্রম।" [সূরা হুদ ১১৮-১১৯] এতে বুঝা গেল যে, যারা পরস্পর (শরীআতসম্মত কারণ ছাড়া) মতবিরোধ করে, তারা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত কিংবা দূরবতী। তাই আয়াতে বলা হয়েছে, যারা বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং মতবিরোধ করেছে, তোমরা তাদের মত হয়ো না। কেননা যারা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে তারা আল্লাহর রহমত হতে দূরে সরে এসেছে।
تەفسیرە عەرەبیەکان:
 
وه‌رگێڕانی ماناكان ئایه‌تی: (65) سوره‌تی: سورەتی الأنعام
پێڕستی سوره‌ته‌كان ژمارەی پەڕە
 
وه‌رگێڕانی ماناكانی قورئانی پیرۆز - وەرگێڕاوی بەنگالی - ئەبوبەکر زەکەریا - پێڕستی وه‌رگێڕاوه‌كان

وەرگێڕاوی ماناکانی قورئانی پیرۆز بۆ زمانی بەنگالی، وەرگێڕان: د. أبو بکر محمد زکریا.

داخستن