Tradução dos significados do Nobre Qur’an. - Tradução Bengali - Abu Bakr Zakaria * - Índice de tradução


Tradução dos significados Surah: Suratu Ash-Shura   Versículo:

সূরা আশ-শুরা

حمٓ
হা-মীম।
৪২- সূরা আশ-শুরা
৫৩ আয়াত, মক্কী
Os Tafssir em língua árabe:
عٓسٓقٓ
‘আইন-সীন- কাফ।
Os Tafssir em língua árabe:
كَذَٰلِكَ يُوحِيٓ إِلَيۡكَ وَإِلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكَ ٱللَّهُ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ
এভাবেই আপনার প্রতি এবং আপনার পূৰ্ববর্তীদের প্রতি ওহী করেন পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ্ [১]।
[১] অহীর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, দ্রুত ইংগিত এবং গোপন ইংগিত। [ইবন হাজার, ফাতহুল বারী ১/২০৪]
Os Tafssir em língua árabe:
لَهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ
আসমানসমূহে যা আছে ও যমীনে যা আছে তা তাঁরই। তিনি সুউচ্চ, সুমহান।
Os Tafssir em língua árabe:
تَكَادُ ٱلسَّمَٰوَٰتُ يَتَفَطَّرۡنَ مِن فَوۡقِهِنَّۚ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ يُسَبِّحُونَ بِحَمۡدِ رَبِّهِمۡ وَيَسۡتَغۡفِرُونَ لِمَن فِي ٱلۡأَرۡضِۗ أَلَآ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
আসমানসমূহ উপর থেকে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়, আর ফেরেশতাগণ তাদের রবের সপ্ৰশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং যমীনে যারা আছে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। জেনে রাখুন, নিশ্চয় আল্লাহ, তিনিই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Os Tafssir em língua árabe:
وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَ ٱللَّهُ حَفِيظٌ عَلَيۡهِمۡ وَمَآ أَنتَ عَلَيۡهِم بِوَكِيلٖ
আর যারা তাঁর পরিবর্তে অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে [১] গ্ৰহণ করে, আল্লাহ্ তাদের প্রতি সম্যক দৃষ্টিদাতা। আর আপনি তো তাদের উপর কর্মবিধায়ক নন।
[১] মূল আয়াতে أولياء শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আরবী ভাষায় যার অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক। বাতিল উপাস্যদের সম্পর্কে পথভ্রষ্ট মানুষদের বিভিন্ন আকীদা-বিশ্বাস এবং ভিন্ন ভিন্ন অনেক কর্মপদ্ধতি আছে। কুরআন মজীদে এগুলোকেই “আল্লাহ ছাড়া অন্যদের ওলী বা অভিভাবক বানানো” বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুরআন মজীদে অনুসন্ধান করলে ‘ওলী’ শব্দটির কয়েকটি অর্থ জানা যায়। এক. মানুষ যার কথামত কাজ করে, যার নির্দেশনা মেনে চলে এবং যার রচিত নিয়ম-পস্থা, রীতি-নীতি এবং আইন-কানুন অনুসরণ করে। [দেখুন, সূরা আন নিসা ১১৮-১২০; সূরা আল-আরাফ ৩, ২৭-৩০] দুই. যার দিকনির্দেশনার ওপর মানুষ আস্থা স্থাপন করে এবং মনে করে সে তাকে সঠিক রাস্তা প্রদর্শনকারী এবং ভ্রান্তি থেকে রক্ষাকারী। [সূরা আল বাকারাহ ২৫৭; সূরা আল-ইসরা ৯৭; সূরা আল-কাহাফ ১৭ ও সূরা আল-জাসিয়া ১৯] তিন. যার সম্পর্কে মানুষ মনে করে, আমি পৃথিবীতে যাই করি না কেন সে আমাকে তার কুফল থেকে রক্ষা করবে। এমনকি যদি আল্লাহ থাকেন এবং আখেরাত সংঘটিত হয় তাহলে তার আযাব থেকেও রক্ষা করবেন। [সূরা আন- নিসা ১২৩-১৭৩; সূরা আল-আন’আম ৫১; সূরা আর-রা'দ ৩৭; সূরা আল-‘আনকাবুত ২২; সূরা আল-আহযাব ৬৫; সূরা আয-যুমার ৩] চার. যার সম্পর্কে মানুষ মনে করে, পৃথিবীতে তিনি অতি প্রাকৃতিক উপায়ে তাকে সাহায্য করেন, বিপদাপদে তাকে রক্ষা করেন। রুজি-রোজগার দান করেন, সন্তান দান করেন, ইচ্ছা পূরণ করেন এবং অন্যান্য সব রকম প্রয়োজন পূরণ করেন। [সূরা হুদ ২০; সূরা আর-রা'দ ১৬, সূরা আল-আনকাবূত ৪১]
Os Tafssir em língua árabe:
وَكَذَٰلِكَ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ قُرۡءَانًا عَرَبِيّٗا لِّتُنذِرَ أُمَّ ٱلۡقُرَىٰ وَمَنۡ حَوۡلَهَا وَتُنذِرَ يَوۡمَ ٱلۡجَمۡعِ لَا رَيۡبَ فِيهِۚ فَرِيقٞ فِي ٱلۡجَنَّةِ وَفَرِيقٞ فِي ٱلسَّعِيرِ
আর এভাবে আমরা আপনার প্রতি কুরআন নাযিল করেছি আরবী ভাষায়, যাতে আপনি মক্কা ও তার চারদিকের জনগণকে [১] সতর্ক করতে পারেন এবং সতর্ক করতে পারেন কেয়ামতের দিন সম্পর্কে, যাতে কোনো সন্দেহ নেই। একদল থাকবে জান্নাতে আরেক দল জলন্ত আগুনে।
[১] এর অর্থ সকল জনপদ ও শহরের মূল ও ভিত্তি। এখানে মক্কা মোকাররমা বুঝানো হয়েছে। এই নামকরণের হেতু এই যে, এ শহরটি সমগ্ৰ বিশ্বের শহর-জনপদ এমনকি ভূ-পৃষ্ঠ অপেক্ষা আল্লাহ তা'আলার কাছে অধিক সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠ। [তাবারী, ইবন কাসীর] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে হিজরত করার সময় মক্কাকে সম্বোধন করে বলেছিলেন: অবশ্যই তুমি আমার কাছে আল্লাহর সমগ্ৰ পৃথিবী থেকে শ্রেষ্ঠ এবং সমগ্ৰ পৃথিবী অপেক্ষা অধিক প্রিয়। যদি আমাকে তোমার থেকে বহিস্কার করা না হত, তবে আমি কখনও স্বেচ্ছায় তোমাকে ত্যাগ করতাম না। [তিরমিযী ৩৯২৬]
Os Tafssir em língua árabe:
وَلَوۡ شَآءَ ٱللَّهُ لَجَعَلَهُمۡ أُمَّةٗ وَٰحِدَةٗ وَلَٰكِن يُدۡخِلُ مَن يَشَآءُ فِي رَحۡمَتِهِۦۚ وَٱلظَّٰلِمُونَ مَا لَهُم مِّن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٍ
আর আল্লাহ্ ইচ্ছে করলে তাদেরকে একই উম্মত করতে পারতেন; কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছে তাকে স্বীয় অনুগ্রহে প্ৰবেশ করান। আর যালিমরা, তাদের কোনো অভিভাবক নেই, কোনো সাহায্যকারীও নেই।
Os Tafssir em língua árabe:
أَمِ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَۖ فَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡوَلِيُّ وَهُوَ يُحۡيِ ٱلۡمَوۡتَىٰ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
তারা কি আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরূপে গ্ৰহণ করেছে, কিন্তু আল্লাহ্, অভিভাবক তো তিনিই এবং তিনি মৃতকে জীবিত করেন। আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمَا ٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِيهِ مِن شَيۡءٖ فَحُكۡمُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبِّي عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُ وَإِلَيۡهِ أُنِيبُ
আর তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ করা না কেন---তার ফয়সালা তো আল্লাহরই কাছে। তিনিই আল্লাহ্ --- আমার রব; তাঁরই উপর আমি নির্ভর করেছি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী হই।
Os Tafssir em língua árabe:
فَاطِرُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ جَعَلَ لَكُم مِّنۡ أَنفُسِكُمۡ أَزۡوَٰجٗا وَمِنَ ٱلۡأَنۡعَٰمِ أَزۡوَٰجٗا يَذۡرَؤُكُمۡ فِيهِۚ لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ
তিনি আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা, তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং গৃহপালিত জন্তুর মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন জোড়া। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন; কোনো কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্ৰষ্টা।
Os Tafssir em língua árabe:
لَهُۥ مَقَالِيدُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ يَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقۡدِرُۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٞ
তাঁরই কাছে আসমানসমূহ ও যমীনের চাবিকাঠি। তিনি যার জন্যে ইচ্ছে তার রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সংকুচিত করেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।
Os Tafssir em língua árabe:
۞ شَرَعَ لَكُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِۦ نُوحٗا وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ وَمَا وَصَّيۡنَا بِهِۦٓ إِبۡرَٰهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰٓۖ أَنۡ أَقِيمُواْ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُواْ فِيهِۚ كَبُرَ عَلَى ٱلۡمُشۡرِكِينَ مَا تَدۡعُوهُمۡ إِلَيۡهِۚ ٱللَّهُ يَجۡتَبِيٓ إِلَيۡهِ مَن يَشَآءُ وَيَهۡدِيٓ إِلَيۡهِ مَن يُنِيبُ
তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন নূহকে, আর যা আমরা ওহী করেছি আপনাকে এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ‘ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে বিভেদ সৃষ্টি কর না [১]। আপনি মুশরিকদেরকে যার প্রতি ডাকছেন তা তাদের কাছে কঠিন মনে হয়। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে তার দীনের প্রতি আকৃষ্ট করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয় তাকে তিনি দীনের দিকে হেদায়াত করেন।
[১] দীন প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেয়ার পর আল্লাহ এ আয়াতে সর্বশেষ যে কথা বলেছেন তা হচ্ছে ‘দীনে বিভেদ সৃষ্টি করো না’ কিংবা ‘তাতে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ো না’। পূর্ববর্তী উম্মতদের কর্মকাণ্ড থেকে শিক্ষা গ্ৰহণ করে এ ধরনের কাজ থেকে সাবধান করে বহু হাদীস বর্ণিত হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সামনে একটি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর এর ডানে ও বায়ে আরও কয়েকটি রেখা টেনে বললেন, ডান-বামের এসব রেখা শয়তানের আবিস্কৃত পথ। এর প্রত্যেকটিতে একটি করে শয়তান নিয়োজিত রয়েছে। সে মানুষকে সে পথেই চলার উপদেশ দেয়। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী সকল রেখার দিকে ইশারা করে বললেন:

وَاَنَّ هٰذَاِصرَ اطِىْ مُسْتَقِيْمًا فَاتَّبِعُوْهُ

“আর এটা আমার সরল পথ, সুতরাং তোমরা এরই অনুসরণ কর।” [মুসনাদে আহমাদ ১/৪৩৫] এ দৃষ্টান্তে সরল পথ বলে নবী-রাসূলগণের অভিন্ন দীনের পথই বোঝান হয়েছে। এতে শাখা-প্ৰশাখা বের করা ও বিভেদ সৃষ্টি করা হারাম ও শয়তানের কাজ। এ সম্পর্কে হাদীসে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলিমদের জামাত (সামষ্টিকভাবে সকল উম্মত) থেকে অর্ধ হাত পরিমাণও দূরে সরে পড়ে, সে-ই ইসলামের বন্ধনই তার কাধ থেকে সরিয়ে দিল।’ [আবু দাউদ ৪৭৬০] তিনি আরও বলেন, ‘জামাত (তথা মুসলিম উম্মতের) উপর আল্লাহর হাত রয়েছে।’ [নাসায়ী ৪০২০] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন, “শয়তান মানুষের জন্য ব্যাঘ্রস্বরূপ। বাঘ ছাগলের পেছনে লাগে, অতঃপর যে ছাগল পালের পেছনে অথবা এদিক ওদিক বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে সেটির উপরই পতিত হয়। তাই তোমাদের উচিত দলের সঙ্গে থাকা-পৃথক না থাকা। [মুসনাদে আহমাদ ৫/২৩২] মনে রাখতে হবে যে, মুসলিমরা সবাই এক উম্মত; তাদের থেকে কেউ আলাদা কোনো দল করে পৃথক হলে সে উম্মতের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ঘটালো। এটাই শরীআতে নিন্দনীয়।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمَا تَفَرَّقُوٓاْ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلۡعِلۡمُ بَغۡيَۢا بَيۡنَهُمۡۚ وَلَوۡلَا كَلِمَةٞ سَبَقَتۡ مِن رَّبِّكَ إِلَىٰٓ أَجَلٖ مُّسَمّٗى لَّقُضِيَ بَيۡنَهُمۡۚ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ أُورِثُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِنۢ بَعۡدِهِمۡ لَفِي شَكّٖ مِّنۡهُ مُرِيبٖ
আর তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত [১] তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়। আর এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে আপনার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয় ফয়সালা হয়ে যেত। আর তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে, নিশ্চয় তারা সে সম্পর্কে বিভ্ৰান্তিকর সন্দেহে রয়েছে।
[১] এই মতভেদ সৃষ্টির চালিকা শক্তি ছিল নিজের নাম ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চিন্তা, পারস্পরিক জিদ ও একগুঁয়েমি, একে অপরকে পরাস্ত করার প্রচেষ্টা এবং সম্পদ ও মর্যাদা অর্জন প্রচেষ্টার ফল। [কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]
Os Tafssir em língua árabe:
فَلِذَٰلِكَ فَٱدۡعُۖ وَٱسۡتَقِمۡ كَمَآ أُمِرۡتَۖ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡۖ وَقُلۡ ءَامَنتُ بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِن كِتَٰبٖۖ وَأُمِرۡتُ لِأَعۡدِلَ بَيۡنَكُمُۖ ٱللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمۡۖ لَنَآ أَعۡمَٰلُنَا وَلَكُمۡ أَعۡمَٰلُكُمۡۖ لَا حُجَّةَ بَيۡنَنَا وَبَيۡنَكُمُۖ ٱللَّهُ يَجۡمَعُ بَيۡنَنَاۖ وَإِلَيۡهِ ٱلۡمَصِيرُ
সুতরাং আপনি আহ্বান করুন [১] এবং দৃঢ় থাকুন, যেভাবে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন। আর আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না এবং বলুন, 'আল্লাহ্ যে কিতাব নাযিল করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে। আল্লাহ্ আমাদের রব এবং তোমাদেরও রব। আমাদের আমল আমাদের এবং তোমাদের আমল তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসম্বাদ নেই। আল্লাহ্ আমাদেরকে একত্র করবেন এবং ফিরে যাওয়া তারই কাছে [২]।'
[১] তাওহীদের দিকে অথবা এ সুপ্রতিষ্ঠিত দীনের দিকে যার নির্দেশ তিনি সমস্ত নবী রাসূলগণকে দিয়েছেন এবং তার ওসিয়ত করেছেন। [জালালাইন; মুয়াসসার]

[২] হাফেয ইবন কাসীর বলেন, দশটি বাক্য সম্বলিত এই আয়াতের প্রত্যেকটি বাক্যে বিশেষ বিশেষ বিধান বর্ণিত হয়েছে। সমগ্র কুরআনে আয়াতুল কুরসীই এর একমাত্র দৃষ্টান্ত। তাতেও দশটি বিধান বিধৃত হয়েছে। আলোচ্য আয়াতের প্রথম বিধান হচ্ছে فَلِذٰلِكَ فَادْعُ অর্থাৎ যদিও মুশরেকদের কাছে আপনার তাওহীদের দাওয়াত কঠিন মনে হয়, তথাপি আপনি এ দাওয়াত ত্যাগ করবেন না এবং উপর্যুপরি দাওয়াতের কাজ অব্যাহত রাখুন।

দ্বিতীয় বিধান وَاسْتَقِمُ كَمَآاُمِرْتَ অর্থাৎ আপনি এ দীনে নিজে অবিচল থাকুন, যেমন আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন। কোনো দিকেই যেন কোনোরূপ বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য এই দীনের মধ্যে কোনো রদ-বদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সাথে কোনো আপোষ করবেন না। বলাবাহুল্য, এরূপ দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: شَيَّبَتْنِيْ هُوْد অর্থাৎ সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সূরা হুদের ১১২ নং আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দীনের উপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তৃতীয় বিধান- وَلَاتَتَّبِعْ اَهْوَآءَهُمْ অর্থাৎ প্রচারের দায়িত্ব পালনে আপনি কারও বিরোধিতার পরওয়া করবেন না। শুধু কোনো না কোনো ভাবে ইসলামের গণ্ডির মধ্যে এসে যাক, এ লোভের বশবর্তী হয়ে এদের কুসংস্কার ও গোড়ামি এবং জাহেলী আচার-আচরণের জন্য দীনের মধ্যে কোনো অবকাশ সৃষ্টি করবেন না। আল্লাহ তাঁর দীনকে যেভাবে নাযিল করেছেন কেউ মানতে চাইলে সেই খাঁটি ও মূল দীনকে যেন সরাসরি মেনে নেয়। অন্যথায় যে জাহান্নামে হুমড়ি খেয়ে পড়তে চায় পড়ুক। মানুষের ইচ্ছানুসারে আল্লাহর দীনের পরিবর্তন সাধন করা যায় না। মানুষ যদি নিজের কল্যাণ চায় তাহলে যেন নিজেকেই পরিবর্তন করে দীন অনুসারে গড়ে নেয়।

চতুর্থ বিধান-

وَقُلْ اٰمَنْتُ بِمَآ اَنْزَلَ اللهُ مِنْ كِتٰبٍ

অর্থাৎ আপনি ঘোষনা করুন: আল্লাহ তা'আলা যত কিতাব নাযিল করেছেন, সবগুলোর প্রতি আমি ঈমান এনেছি। অন্য কথায় আমি সেই বিভেদ সৃষ্টিকারী লোকদের মত নই যারা আল্লাহর প্রেরিত কোনো কোনো কিতাব মানে আবার কোনো কোনোটি মানে না। আমি আল্লাহর প্রেরিত প্রতিটি কিতাবই মানি।

পঞ্চম বিধান- وَاُمِرْتُ لِاَعْدِلَ بِيْنَكُمْ এই ব্যাপকার্থক আয়াতাংশের কয়েকটি অর্থ হয়: একটি অর্থ হচ্ছে, আমি এসব দলাদলি থেকে দূরে থেকে নিরপেক্ষ ন্যায় নিষ্ঠা অবলম্বনের জন্য আদিষ্ট। কোনো দলের স্বার্থে এবং কোনো দলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করা আমার কাজ নয়। সব মানুষের সাথে আমার সমান সম্পর্ক। আর সে সম্পর্ক হচ্ছে ন্যায় বিচার ও ইনসাফের সম্পর্ক। যার যে বিষয়টি ন্যায় ও সত্য সে যত দূরেরই হোক না কেন আমি তার সহযোগী। আর যার যে বিষয়টি ন্যায় ও সত্যের পরিপন্থী সে আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হলেও আমি তার বিরোধী। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, আমি তোমাদের সামনে যে সত্য পেশ করার জন্য আদিষ্ট তাতে কারো জন্য কোনো বৈষম্য নেই, বরং তা সবার জন্য সমান। তাতে নিজের ও পরের, বড়র ও ছোটর, গরীবের ও ধনীর, উচ্চের ও নীচের ভিন্ন ভিন্ন সত্য নেই। যা সত্য তা সবার জন্য সত্য, যা গোনাহ তা সবার জন্য গোনাহ, যা হারাম তা সবার জন্য হারাম এবং যা অপরাধ তা সবার জন্য অপরাধ। এই নির্ভেজাল বিধানে আমার নিজের জন্যও কোনো ব্যতিক্রম নেই। তৃতীয় অর্থ হচ্ছে, আমি পৃথিবীতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আদিষ্ট। মানুষের মধ্যে ইনসাফ কয়েম করা এবং তোমাদের জীবনে ও তোমাদের সমাজে যে ভারসাম্যহীনতা ও বে-ইনসাফী রয়েছে তার ধ্বংস সাধনের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। পারস্পারিক বিবাদ-বিসংবাদের কোনো মোকদ্দমা আমার কাছে আসলে তাতে ন্যায় বিচার করার নির্দেশ আমাকে দেয়া হয়েছে। চতুর্থ অর্থ এই যে, এখানে عدل এর অর্থ সাম্য। সুতরাং আয়াতের অর্থ হচ্ছে, আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, দীনের যাবতীয় বিধি-বিধান তোমাদের মধ্যে সমান সমান রাখি, প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক কিতাবে বিশ্বাস স্থাপন করি এবং সব বিধান পালন করি-এরূপ নয় যে, কোনো বিধান মানবো আর কোনোটি অমান্য করব অথবা কোনোটির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব ও কোনোটির প্রতি করব না।

ষষ্ট বিধান- اَللهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ আল্লাহকেই একমাত্র রব হিসেবে মানব। তিনি আমাদের ও তোমাদের রব। একথা তোমরা স্বীকার করে থাক কিন্তু এ কথার কারণে একমাত্র আল্লাহরই যে ইবাদাত করতে হবে, তোমরা এটা মানতে রাজী নও। কিন্তু আমি তা মানি। আর আমার অনুসারীরা সবাই এটা মেনে একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করে।

সপ্তম বিধান- لَنَآاَعْمَا لُنَاوَلَكُمْ اَعْمَالُكُمْ অর্থাৎ আমাদের কর্ম আমাদের কাজে আসবে, তোমাদের তাতে কোনো লাভ-লোকসান হবে না। আর তোমাদের কর্ম তোমাদের কাজে আসবে, আমার তাতে কোনো লাভ ও ক্ষতি নাই। কেউ কেউ বলেন, মক্কায় যখন কাফেরদের বিরুদ্ধে জেহাদ করার আদেশ অবতীর্ণ হয়নি, তখন এ আয়াত নাযিল হয়েছিল। পরে জেহাদের আদেশ অবতীর্ণ হওয়ায় এই বিধান রহিত হয়ে যায়। কেননা জেহাদের সারমর্ম এই যে, যারা উপদেশ ও অনুরোধে প্রভাবিত হয় না, যুদ্ধের মাধ্যমে তাদেরকে পরাভূত করতে হবে। তাদেরকে তাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দিলে চলবে না। কেউ কেউ বলেন, আয়াতটি রহিত হয়নি এবং উদ্দেশ্য এই যে, দলীলের মাধ্যমে সত্য প্রমাণিত হওয়ার পর তোমাদের না মানা কেবল শক্রুতা ও হঠকারিতা বশতঃই হতে পারে। শত্রুতা সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর এখন প্রমাণাদির আলোচনা অর্থহীন। তোমাদের কর্ম তোমাদের সামনে এবং আমার কর্ম আমার সামনে থাকবে।

অষ্টম বিধান- لَاحُجَّةَ بَيْنَنَا وَبِيْنَكُمْ অর্থাৎ সত্য স্পষ্ট ও প্রমাণিত হওয়ার পরও যদি তোমরা শক্রতাকেই কাজে লাগাও, তবে তর্ক-বিতর্কের কোনো অর্থ নেই। কাজেই আমাদেরও তোমাদের মধ্যে এমন কোনো বিতর্ক নেই।

নবম বিধান- اَللهُ يَحْبمَعُ بِيْنَنَا অর্থাৎ কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে একত্রিত করবেন এবং প্রত্যেকের কর্মের প্রতিদান দেবেন।

দশম বিধান- وَاِلَيْهِ الْمَصِيْرُ অর্থাৎ আমরা সকলেই তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করব। সুতরাং তোমরা চিন্তা করে দেখ কি করলে তখন তোমরা উপকৃত হবে। [দেখুন, ইবন কাসীর]
Os Tafssir em língua árabe:
وَٱلَّذِينَ يُحَآجُّونَ فِي ٱللَّهِ مِنۢ بَعۡدِ مَا ٱسۡتُجِيبَ لَهُۥ حُجَّتُهُمۡ دَاحِضَةٌ عِندَ رَبِّهِمۡ وَعَلَيۡهِمۡ غَضَبٞ وَلَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدٌ
আর আল্লাহর আহ্বানে সাড়া আসার পর যারা আল্লাহ্ সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের যুক্তি-তর্ক তাদের রবের দৃষ্টিতে অসার এবং তাদের উপর রয়েছে তাঁর ক্ৰোধ এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
Os Tafssir em língua árabe:
ٱللَّهُ ٱلَّذِيٓ أَنزَلَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ وَٱلۡمِيزَانَۗ وَمَا يُدۡرِيكَ لَعَلَّ ٱلسَّاعَةَ قَرِيبٞ
আল্লাহ্, যিনি নাযিল করেছেন সত্যসহকারে কিতাব এবং মীযান [১]। আর কিসে আপনাকে জানাবে যে, সম্ভবত কিয়ামত আসন্ন?
[১] অতঃপর উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। এতে আল্লাহর হক ও বান্দার হকের জন্য পূর্ণাঙ্গ আইন-কানুন রয়েছে।

اَنْزَلَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ وَالْمِيْزَانَ

এখানে ‘কিতাব' বলে কুরআনসহ সমস্ত আসমানী গ্ৰন্থকে বোঝানো হয়েছে এবং হক বলতে পূর্বোক্ত সত্যদ্বীনকে বোঝানো হয়েছে। ميزان এর শাব্দিক অর্থ দাঁড়ি-পাল্লা। এটা যেহেতু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার এবং অধিকার পূর্ণ মাত্রায় দেয়ার একটি মানদণ্ড তাই ইবন আব্বাস এর তাফসীর করেছেন ন্যায় বিচার। মুজাহিদ বলেন, মানুষ যে দাঁড়ি-পাল্লা ব্যবহার করে এখানে তাই বোঝানো হয়েছে। সুতরাং হক শব্দের মধ্যে আল্লাহর যাবতীয় হক এবং ميزان শব্দের মধ্যে বান্দার যাবতীয় হকের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। আর তখন ‘হকসহকারে' এর অর্থ হবে, হকের বর্ণনা সম্বলিত। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, এখানে মীযান অর্থ আল্লাহর শরীয়ত, যা দাঁড়িপাল্লার মত ওজন করে ভুল ও শুদ্ধ, হক ও বাতিল, জুলুম ও ন্যায়বিচার এবং সত্য ও অসত্যের পার্থক্য স্পষ্ট করে দেয়। ওপরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে যে, “তোমাদের মধ্যে ইনসাফ করার জন্য আমাকে আদেশ দেয়া হয়েছে।” এখানে বলা হয়েছে যে, এই পবিত্ৰ কিতাব সহকারে সেই ‘মিযান’ এসে গেছে যার সাহায্যে এই ইনসাফ কায়েম করা যাবে। [তাবারী, কুরতুবী]
Os Tafssir em língua árabe:
يَسۡتَعۡجِلُ بِهَا ٱلَّذِينَ لَا يُؤۡمِنُونَ بِهَاۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مُشۡفِقُونَ مِنۡهَا وَيَعۡلَمُونَ أَنَّهَا ٱلۡحَقُّۗ أَلَآ إِنَّ ٱلَّذِينَ يُمَارُونَ فِي ٱلسَّاعَةِ لَفِي ضَلَٰلِۭ بَعِيدٍ
যারা এটাতে ঈমান রাখে না তারাই তা ত্বরান্বিত করতে চায়। আর যারা ঈমান এনেছে তারা তা থেকে ভীত থাকে এবং তারা জানে যে, তা অবশ্যই সত্য। জেনে রাখুন, নিশ্চয় কিয়ামত সম্পর্কে যারা বাক-বিতণ্ডা করে তারা ঘোর বিভ্ৰান্তিতে নিপতিত।
Os Tafssir em língua árabe:
ٱللَّهُ لَطِيفُۢ بِعِبَادِهِۦ يَرۡزُقُ مَن يَشَآءُۖ وَهُوَ ٱلۡقَوِيُّ ٱلۡعَزِيزُ
আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত কোমল; তিনি যাকে ইচ্ছে রিযিক দান করেন [১]। আর তিনি সর্বশক্তিমান, প্ৰবল পরাক্রমশালী।
[১] অভিধানে لطيف শব্দটি একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। ইবন আব্বাস এর অর্থ করেছেন, দয়ালু, পক্ষান্তরে মুকাতিল করেছেন অনুগ্রহকারী। অন্য অর্থ, সুক্ষ্মদর্শী। মুকাতিল বলেন, আল্লাহ তা'আলা সমস্ত বান্দার প্রতিই দয়ালু। এমনকি কাফের এবং পাপাচারীর উপরও দুনিয়াতে তাঁর নেয়ামত বর্ষিত হয়। বান্দাদের প্রতি আল্লাহ তা'আলার অনুগ্রহ ও কৃপা অসংখ্য প্রকার।

আল্লাহ তা'আলার রিযিক সমগ্র সৃষ্টির জন্যে ব্যাপক। স্থলে ও জলে বসবাসকারী যেসব জন্তু সম্পর্কে কেউ কিছুই জানে না, আল্লাহর রিযিক তাদের কাছেও পৌঁছে। আয়াতে যাকে ইচ্ছা রিযিক দেন, বলা হয়েছে। আল্লাহ তা'আলার রিফিক অসংখ্য প্রকার। জীবনধারণের উপযোগী রিযিক সবাই পায়। এরপর বিশেষ প্রকারের রিযিক বন্টনে তিনি বিভিন্ন স্তর ও মাপ রেখেছেন। কাউকে ধন-সম্পদের রিযিক অধিক দান করেছেন। কাউকে স্বাস্থ্য ও শক্তির, কাউকে জ্ঞান এবং কাউকে অন্যান্য প্রকার রিফিক দিয়েছেন। এভাবে প্রত্যেক মানুষ অপরের মুখাপেক্ষীও থাকে এবং এই মুখাপেক্ষিতাই তাদেরকে পারস্পারিক সাহায্য ও সহযোগিতায় উদ্বুদ্ধ করে, যার উপর মানব সভ্যতার ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত। [দেখুন, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]
Os Tafssir em língua árabe:
مَن كَانَ يُرِيدُ حَرۡثَ ٱلۡأٓخِرَةِ نَزِدۡ لَهُۥ فِي حَرۡثِهِۦۖ وَمَن كَانَ يُرِيدُ حَرۡثَ ٱلدُّنۡيَا نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَا وَمَا لَهُۥ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِن نَّصِيبٍ
যে কেউ আখিরাতের ফসল কামনা করে তার জন্য আমরা তার ফসল বাড়িয়ে দেই এবং যে কেউ দুনিয়ার ফসল কামনা করে আমরা তাকে তা থেকে কিছু দেই। আর আখেরাতে তার জন্য কিছুই থাকবে না [১]।
[১] একজন ঈমানদারের উচিত আখেরাতমুখী হওয়া। যে আখেরাতমুখী হবে সে দুনিয়া আখেরাত সবই পাবে। পক্ষান্তরে যে দুনিয়াকে প্রাধান্য দিবে সে দুনিয়াও হারাবে আখেরাতও পাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “মহান আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদতের জন্য নিজেকে নিয়োজিত কর; আমি তোমার বক্ষকে অমুখাপেক্ষিতা দিয়ে পূর্ণ করে দেব। তোমার দারিদ্রতাকে দূর করে দেব। আর যদি তা না কর আমি তোমার বক্ষ ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেব আর তোমার দারিদ্রতা অবশিষ্ট রেখে দেব।” [মুস্তাদরাকে হাকিম ২/৪৪৩, তিরমিয়ী ২৪৬৬] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ জাতিকে সুসংবাদ দাও আলো, উচ্চমর্যাদা, দীন, সাহায্য, যমীনের বুকে প্রতিষ্ঠার। তবে এ উম্মতের মধ্যে যে কেউ আখেরাতের কাজ দুনিয়া হাসিলের জন্য করবে, আখেরাতে সে কিছুই পাবে না। [মুসনাদে আহমাদ ৫/১৩৪]
Os Tafssir em língua árabe:
أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ وَلَوۡلَا كَلِمَةُ ٱلۡفَصۡلِ لَقُضِيَ بَيۡنَهُمۡۗ وَإِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ
নাকি তাদের এমন কতগুলো শরীক রয়েছে, যারা এদের জন্য দীন থেকে শরীআত প্রবর্তন করেছে, যার অনুমতি আল্লাহ্ দেননি? আর ফয়সালার ঘোষণা না থাকলে এদের মাঝে অবশ্যই সিদ্ধান্ত হয়ে যেত। আর যালিমদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
Os Tafssir em língua árabe:
تَرَى ٱلظَّٰلِمِينَ مُشۡفِقِينَ مِمَّا كَسَبُواْ وَهُوَ وَاقِعُۢ بِهِمۡۗ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ فِي رَوۡضَاتِ ٱلۡجَنَّاتِۖ لَهُم مَّا يَشَآءُونَ عِندَ رَبِّهِمۡۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِيرُ
আপনি যালিমদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন তাদের কৃতকর্মের জন্য; অথচ তা আপতিত হবে তাদেরই উপর। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তারা থাকবে জান্নাতের উদ্যানসমূহে। তারা যা কিছু চাইবে তাদের রবের কাছে তাদের জন্য তা-ই থাকবে। এটাই তো মহা অনুগ্রহ।
Os Tafssir em língua árabe:
ذَٰلِكَ ٱلَّذِي يُبَشِّرُ ٱللَّهُ عِبَادَهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِۗ قُل لَّآ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ أَجۡرًا إِلَّا ٱلۡمَوَدَّةَ فِي ٱلۡقُرۡبَىٰۗ وَمَن يَقۡتَرِفۡ حَسَنَةٗ نَّزِدۡ لَهُۥ فِيهَا حُسۡنًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ شَكُورٌ
এটা হলো তা, যার সুসংবাদ আল্লাহ্ দেন তাঁর বান্দাদেরকে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে। বলুন, 'আমি এর বিনিময়ে তোমাদের কাছ থেকে আত্মীয়তার সৌহার্দ্য ছাড়া অন্য কোনো প্রতিদান চাই না [১]।' যে উত্তম কাজ করে আমরা তার জন্য এতে কল্যাণ বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয় আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, গুণগ্ৰাহী।
[১] অর্থাৎ আমি তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না। তবে القربى এর ভালবাসা অবশ্যই প্রত্যাশা করি। এই শব্দটির ব্যাখ্যায় মুফাসসিরদের মধ্যে বেশ মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। এক দল মুফাসসির এ শব্দটিকে আত্মীয়তা (আত্মীয়তার বন্ধন) অর্থে গ্ৰহণ করেছেন এবং আয়াতের অর্থ বর্ণনা করেছেন এই যে, “আমি এ কাজের জন্য তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক বা বিনিময় চাই না। তবে তোমাদের ও আমাদের মাঝে আত্মীয়তার যে বন্ধন আছে তোমরা (কুরাইশরা)' অন্তত সেদিকে লক্ষ্য রাখবে এতটুকু আমি অবশ্যই চাই। তোমাদের উচিত ছিল আমার কথা মেনে নেয়া। কিন্তু যদি তোমরা তা না মানো তাহলে গোটা আরবের মধ্যে সবার আগে তোমরাই আমার সাথে দুশমনী করতে বদ্ধপরিকর হবে, তা অন্তত করো না। তোমাদের অধিকাংশ গোত্রে আমার আত্মীয়তা রয়েছে। আত্মীয়তার অধিকার ও আত্মীয় বাৎসল্যের প্রয়োজন তোমরা অস্বীকার কর না। অতএব, আমি তোমাদের শিক্ষা, প্রচার ও কর্ম সংশোধনের যে দায়িত্ব পালন করি, এর কোনো পারিশ্রমিক তোমাদের কাছে চাই না। তবে এতটুকু চাই যে, তোমরা আত্মীয়তার অধিকারের প্রতি লক্ষ্য রাখ। মানা না মানা তোমাদের ইচ্ছা। কিন্তু শক্ৰতা প্রদর্শনে তো কমপক্ষে আত্মীয়তার সম্পর্ক প্রতিবন্ধক হওয়া উচিত। বলাবাহুল্য, আত্মীয়তার অধিকারের প্রতি লক্ষ্য রাখা স্বয়ং তাদেরই কর্তব্য ছিল। একে কোনো শিক্ষা ও প্রচারকার্যের পারিশ্রমিক বলে অভিহিত করা যায় না। অর্থাৎ আমি তোমাদের কাছে এটা চাই। এটা প্রকৃতপক্ষে কোনো পারিশ্রমিক নয়। তোমরা একে পারিশ্রমিক মনে করলে ভুল হবে। যুগে যুগে নবী রাসুলগণ নিজ নিজ সম্প্রদায়কে পরিস্কার ভাষায় বলে দিয়েছেন, আমি তোমাদের মঙ্গলার্থে যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, তার কোনো বিনিময় তোমাদের কাছে চাই না। আমার প্রাপ্য আল্লাহ তা'আলাই দেবেন। অতএব, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকলের সেরা নবী হয়ে স্বজাতির কাছে কেমন করে বিনিময় চাইবেন? ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরাইশদের যে গোত্রের সাথে সম্পর্ক রাখতেন, তার প্রত্যেকটি শাখা-পরিবারের সাথে তাঁর আত্মীয়তার জন্মগত সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। [মুসনাদে আহমাদ ১/২২৯] তাই আল্লাহ বলেছেন, আপনি মুশরিকদের বলুন, দাওয়াতের জন্যে আমি তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় চাই না। আমি চাই, তোমরা আত্মীয়তার খাতিরে আমাকে তোমাদের মধ্যে অবাধে থাকতে দাও এবং আমার হেফাযত কর। আরবের অন্যান্য লোক আমার হেফাযত ও সাহায্যে অগ্রণী হলে তোমাদের জন্যে তা গৌরবের বিষয় হবে না।

কোনো কোনো মুফাসসির القربى শব্দটিকে নৈকট্য (নৈকট্য অর্জন) অর্থে গ্রহণ করেন এবং আয়াতটির অর্থ করেছেন, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নৈকট্যের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া ছাড়া আমি তোমাদের কাছে এ কাজের জন্য আর কোনো বিনিময় চাই না। অর্থাৎ তোমরা সংশোধিত হয়ে যাও। শুধু এটাই আমার পুরস্কার। এ ব্যাখ্যা হাসান বাসারী থেকে উদ্ধৃত হয়েছে, পবিত্র কুরআনের অন্য এক স্থানে বিষয়টি এ ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এদের বলে দাও, এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না। যার ইচ্ছা সে তার রবের পথ অনুসরণ করুক, (আমার পারিশ্রমিক শুধু এটাই)। [সূরা আল-ফুরকান ৫৭] [দেখুন, তাবারী, ইবন কাসীর, সা’দী]
Os Tafssir em língua árabe:
أَمۡ يَقُولُونَ ٱفۡتَرَىٰ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبٗاۖ فَإِن يَشَإِ ٱللَّهُ يَخۡتِمۡ عَلَىٰ قَلۡبِكَۗ وَيَمۡحُ ٱللَّهُ ٱلۡبَٰطِلَ وَيُحِقُّ ٱلۡحَقَّ بِكَلِمَٰتِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
নাকি তারা বলে যে, সে আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে, যদি তা-ই হত তবে আল্লাহ্ ইচ্ছে করলে আপনার হৃদয় মোহর করে দিতেন। আর আল্লাহ্ মিথ্যাকে মুছে দেন এবং নিজ বাণী দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নিশ্চয় অন্তরসমূহে যা আছে সে বিষয়ে তিনি সবিশেষ অবগত।
Os Tafssir em língua árabe:
وَهُوَ ٱلَّذِي يَقۡبَلُ ٱلتَّوۡبَةَ عَنۡ عِبَادِهِۦ وَيَعۡفُواْ عَنِ ٱلسَّيِّـَٔاتِ وَيَعۡلَمُ مَا تَفۡعَلُونَ
আর তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন ও পাপসমূহ মোচন করেন [১] এবং তোমরা যা কর তিনি তা জানেন।
[১] আলোচ্য আয়াতে তাওবা কবুল করাকে আল্লাহ তা'আলা তাঁর নিজের বিশেষ গুণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা মুমিন বান্দার তাওবায় ঐ ব্যক্তির চেয়েও বেশী খুশী হন, যে কোনো ঊষর মরুর বুকে ছিল, তার সাথে ছিল বাহন যার উপর ছিল তার খাদ্য ও পানীয়। এমতাবস্থায় সে ঘুমিয়ে পড়েছিল, জাগ্রত হয়ে দেখতে পেল যে, বাহনটি তার খাবার ও পানীয়সহ চলে গেছে। সে তার বাহন খুঁজতে খুঁজতে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ল। তারপর সে বলল, যেখানে ছিলাম সেখানে গিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়ব ও মারা যাব। সে তার হাতের উপর মাথা রেখে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিল, এমতাবস্থায় সে সচেতন হয়ে দেখল যে, তার বাহন ফিরে এসেছে এবং বাহনের উপর তার খাবার ও পানীয় তেমনিভাবে রয়েছে। তখন সে আনন্দে ভুল করে বলে ফেলল: আল্লাহ আপনি আমার বান্দা এবং আমি আপনার রব। আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দার তাওবাতে বাহন ও খাদ্য-পানীয় ফিরে পাওয়া লোকটি থেকেও বেশী খুশী হন। [মুসলিম ২৭৪৪]
Os Tafssir em língua árabe:
وَيَسۡتَجِيبُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ وَيَزِيدُهُم مِّن فَضۡلِهِۦۚ وَٱلۡكَٰفِرُونَ لَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدٞ
আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেন এবং তাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন; আর কাফিররা, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
Os Tafssir em língua árabe:
۞ وَلَوۡ بَسَطَ ٱللَّهُ ٱلرِّزۡقَ لِعِبَادِهِۦ لَبَغَوۡاْ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَلَٰكِن يُنَزِّلُ بِقَدَرٖ مَّا يَشَآءُۚ إِنَّهُۥ بِعِبَادِهِۦ خَبِيرُۢ بَصِيرٞ
আর যদি আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের রিযিক প্রশস্ত করে দিতেন, তবে তারা যমীনে অবশ্যই সীমালংঘন করত; কিন্তু তিনি তাঁর ইচ্ছেমত পরিমানেই নাযিল করে থাকেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক অবহিত ও সর্বদ্ৰষ্টা।
Os Tafssir em língua árabe:
وَهُوَ ٱلَّذِي يُنَزِّلُ ٱلۡغَيۡثَ مِنۢ بَعۡدِ مَا قَنَطُواْ وَيَنشُرُ رَحۡمَتَهُۥۚ وَهُوَ ٱلۡوَلِيُّ ٱلۡحَمِيدُ
আর তাদের নিরাশ হওয়ার পরে তিনিই বৃষ্টি প্রেরণ করেন এবং তাঁর রহমত ছড়িয়ে দেন এবং তিনিই অভিভাবক, অত্যন্ত প্ৰশংসিত।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمِنۡ ءَايَٰتِهِۦ خَلۡقُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَثَّ فِيهِمَا مِن دَآبَّةٖۚ وَهُوَ عَلَىٰ جَمۡعِهِمۡ إِذَا يَشَآءُ قَدِيرٞ
আর তাঁর অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং এ দুয়ের মধ্যে তিনি যে সকল জীব-জন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলো; আর তিনি যখন ইচ্ছে তখনই তাদেরকে সমবেত করতে সক্ষম।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمَآ أَصَٰبَكُم مِّن مُّصِيبَةٖ فَبِمَا كَسَبَتۡ أَيۡدِيكُمۡ وَيَعۡفُواْ عَن كَثِيرٖ
আর তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তা তোমাদের হাত যা অর্জন করেছে তার কারণে এবং অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمَآ أَنتُم بِمُعۡجِزِينَ فِي ٱلۡأَرۡضِۖ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٖ
আর তোমরা যমীনে (আল্লাহকে) অপারগকারী নও এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবক নেই, কোনো সাহায্যকারীও নেই।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمِنۡ ءَايَٰتِهِ ٱلۡجَوَارِ فِي ٱلۡبَحۡرِ كَٱلۡأَعۡلَٰمِ
আর তাঁর অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে পর্বতসদৃশ সাগরে চলমান নৌযানসমূহ।
Os Tafssir em língua árabe:
إِن يَشَأۡ يُسۡكِنِ ٱلرِّيحَ فَيَظۡلَلۡنَ رَوَاكِدَ عَلَىٰ ظَهۡرِهِۦٓۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّكُلِّ صَبَّارٖ شَكُورٍ
তিনি ইচ্ছে করলে বায়ুকে স্তব্ধ করে দিতে পারেন; ফলে নৌযানসমূহ নিশ্চল হয়ে পড়বে সমুদ্রপৃষ্ঠে। নিশ্চয় এতে অনেক নিদর্শন রয়েছে, প্রত্যেক চরম ধৈর্যশীল ও একান্ত কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য।
Os Tafssir em língua árabe:
أَوۡ يُوبِقۡهُنَّ بِمَا كَسَبُواْ وَيَعۡفُ عَن كَثِيرٖ
অথবা তিনি তারা যা অর্জন করেছে তার কারণে সেগুলোকে বিধ্বস্ত করে দিতে পারেন। আর অনেক (অর্জিত অপরাধ) তিনি ক্ষমাও করেন;
Os Tafssir em língua árabe:
وَيَعۡلَمَ ٱلَّذِينَ يُجَٰدِلُونَ فِيٓ ءَايَٰتِنَا مَا لَهُم مِّن مَّحِيصٖ
আর আমার নিদর্শন সম্পর্কে যারা বিতর্ক করে তারা যেন জানতে পারে যে, তাদের কোনো আশ্রয়স্থল নেই।
Os Tafssir em língua árabe:
فَمَآ أُوتِيتُم مِّن شَيۡءٖ فَمَتَٰعُ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَاۚ وَمَا عِندَ ٱللَّهِ خَيۡرٞ وَأَبۡقَىٰ لِلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ يَتَوَكَّلُونَ
সুতরাং তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা দুনিয়ার জীবনের ভোগ্য সামগ্ৰী মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা আছে তা উত্তম ও স্থায়ী, তাদের জন্য যারা ঈমান আনে এবং তাদের রবের উপর নির্ভর করে।
Os Tafssir em língua árabe:
وَٱلَّذِينَ يَجۡتَنِبُونَ كَبَٰٓئِرَ ٱلۡإِثۡمِ وَٱلۡفَوَٰحِشَ وَإِذَا مَا غَضِبُواْ هُمۡ يَغۡفِرُونَ
আর যারা কবীরা গোনাহ ও অশ্লীল কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন রাগান্বিত হয় তখন তারা ক্ষমা করে দেয় [১]।
[১] এটা খাঁটি মুমিনদের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ। তারা ক্রোধের সময় নিজেদেরকে হারিয়ে ফেলে না, বরং তখনও ক্ষমা ও অনুকম্পা তাদের মধ্যে প্ৰবল থাকে। ফলে ক্ষমা করে দেয়। তারা রুক্ষ ও ক্রুদ্ধ স্বভাবের হয় না, বরং নম্র স্বভাব ও ধীর মেজাজের মানুষ হয়। তাদের স্বভাব প্রতিশোধ পরায়ণ হয় না। তারা আল্লাহর বান্দাদের সাথে ক্ষমার আচরণ করে এবং কোনো কারণে ক্রোধান্বিত হলেও তা হজম করে। এটি মানুষের সর্বোত্তম গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত। কুরআন মজীদ একে অত্যন্ত প্রশংসার যোগ্য বলে ঘোষণা করেছে। [সূরা আলে ইমরান ১৩৪] এবং একে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাফল্যের বড় বড় কারণসমূহের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। [সূরা আলে। ইমরান ১৫৯] অনুরুপভাবে হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বৰ্ণনা করেছেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তিগত কারণে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে আল্লাহর কোনো হুরমত বা মর্যাদার অবমাননা করা হলে তিনি শাস্তি বিধান করতেন।” [বুখারী ৩৫৬০, মুসলিম ২৩২৭]
Os Tafssir em língua árabe:
وَٱلَّذِينَ ٱسۡتَجَابُواْ لِرَبِّهِمۡ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَمۡرُهُمۡ شُورَىٰ بَيۡنَهُمۡ وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ
আর যারা তাদের রবের ডাকে সাড়া দেয়, সালাত কায়েম করে এবং তাদের কার্যাবলী পরস্পর পরামর্শের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। আর তাদেরকে আমরা যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।
Os Tafssir em língua árabe:
وَٱلَّذِينَ إِذَآ أَصَابَهُمُ ٱلۡبَغۡيُ هُمۡ يَنتَصِرُونَ
আর যারা, যখন তাদের উপর সীমালঙ্গন হয় তখন তারা তার প্ৰতিবিধান করে।
Os Tafssir em língua árabe:
وَجَزَٰٓؤُاْ سَيِّئَةٖ سَيِّئَةٞ مِّثۡلُهَاۖ فَمَنۡ عَفَا وَأَصۡلَحَ فَأَجۡرُهُۥ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلظَّٰلِمِينَ
আর মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ অতঃপর যে ক্ষমা করে দেয় ও আপস-নিস্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে আছে। নিশ্চয় তিনি যালিমদেরকে পছন্দ করেন না।
Os Tafssir em língua árabe:
وَلَمَنِ ٱنتَصَرَ بَعۡدَ ظُلۡمِهِۦ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَا عَلَيۡهِم مِّن سَبِيلٍ
তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিবিধান করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হবে না;
Os Tafssir em língua árabe:
إِنَّمَا ٱلسَّبِيلُ عَلَى ٱلَّذِينَ يَظۡلِمُونَ ٱلنَّاسَ وَيَبۡغُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ بِغَيۡرِ ٱلۡحَقِّۚ أُوْلَٰٓئِكَ لَهُمۡ عَذَابٌ أَلِيمٞ
শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে যারা মানুষের উপর যুলুম করে এবং যমীনে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়, তাদেরই জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
Os Tafssir em língua árabe:
وَلَمَن صَبَرَ وَغَفَرَ إِنَّ ذَٰلِكَ لَمِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ
আর অবশ্যই যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয়, নিশ্চয় তা দৃঢ় সংকল্পেরই কাজ।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمَن يُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن وَلِيّٖ مِّنۢ بَعۡدِهِۦۗ وَتَرَى ٱلظَّٰلِمِينَ لَمَّا رَأَوُاْ ٱلۡعَذَابَ يَقُولُونَ هَلۡ إِلَىٰ مَرَدّٖ مِّن سَبِيلٖ
আর আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, এরপর তার জন্য কোনো অভিভাবক নেই। আর যালিমরা যখন শাস্তি দেখতে পাবে তখন আপনি তাদেরকে বলতে শুনবেন, 'ফিরে যাওয়ার কোনো উপায় আছে কি?'
Os Tafssir em língua árabe:
وَتَرَىٰهُمۡ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا خَٰشِعِينَ مِنَ ٱلذُّلِّ يَنظُرُونَ مِن طَرۡفٍ خَفِيّٖۗ وَقَالَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٱلَّذِينَ خَسِرُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ وَأَهۡلِيهِمۡ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۗ أَلَآ إِنَّ ٱلظَّٰلِمِينَ فِي عَذَابٖ مُّقِيمٖ
আর আপনি তাদেরকে দেখতে পাবেন যে, তাদেরকে জাহান্নামের সামনে উপস্থিত করা হচ্ছে; তারা অপমানে অবনত অবস্থায় আড় চোখে তাকাচ্ছে; আর যারা ঈমান এনেছে তারা কিয়ামতের দিন বলবে, 'নিশ্চয় ক্ষতিগ্ৰস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিজনবর্গের ক্ষতি সাধন করেছে।' সাবধান, নিশ্চয় যালিমরা স্থায়ী শাস্তিতে নিপতিত থাকবে।
Os Tafssir em língua árabe:
وَمَا كَانَ لَهُم مِّنۡ أَوۡلِيَآءَ يَنصُرُونَهُم مِّن دُونِ ٱللَّهِۗ وَمَن يُضۡلِلِ ٱللَّهُ فَمَا لَهُۥ مِن سَبِيلٍ
আর আল্লাহ্ ছাড়া তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোনো অভিভাবক থাকবে না। আর আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোনো পথ নেই।
Os Tafssir em língua árabe:
ٱسۡتَجِيبُواْ لِرَبِّكُم مِّن قَبۡلِ أَن يَأۡتِيَ يَوۡمٞ لَّا مَرَدَّ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِۚ مَا لَكُم مِّن مَّلۡجَإٖ يَوۡمَئِذٖ وَمَا لَكُم مِّن نَّكِيرٖ
তোমরা তোমাদের রবের ডাকে সাড়া দাও আল্লাহর পক্ষ থেকে সে দিন আসার আগে, যা অপ্রতিরোধ্য; যেদিন তোমাদের কোনো আশ্রয়স্থল থাকবে না এবং তোমাদের কোনো অস্বীকার থাকবে না [১]।
[১] আয়াতের শেষে مِّنْ نَّكِيْرٍ বলে কি বোঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে কয়েকটি অভিমত বর্ণিত হয়েছে। এক. সেদিন কেউ তার অপরাধ অস্বীকার করতে পারবে না। [জালালাইন] দুই. সে দিন কেউ কোনোভাবেই আত্মগোপন করতে পারবে না। [ইবন কাসীর; মুয়াসসার] তিন. সেদিন তার জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না। [তাবারী; সা’দী]
Os Tafssir em língua árabe:
فَإِنۡ أَعۡرَضُواْ فَمَآ أَرۡسَلۡنَٰكَ عَلَيۡهِمۡ حَفِيظًاۖ إِنۡ عَلَيۡكَ إِلَّا ٱلۡبَلَٰغُۗ وَإِنَّآ إِذَآ أَذَقۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ مِنَّا رَحۡمَةٗ فَرِحَ بِهَاۖ وَإِن تُصِبۡهُمۡ سَيِّئَةُۢ بِمَا قَدَّمَتۡ أَيۡدِيهِمۡ فَإِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ كَفُورٞ
অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে আপনাকে তো আমরা এদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কাজ তো শুধু বাণী পৌঁছে দেয়া। আর আমরা যখন মানুষকে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো রহমত আস্বাদন করাই তখন সে এতে উৎফুল্ল হয় এবং যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের বিপদ-আপদ ঘটে, তখন তো মানুষ হয়ে পড়ে খুবই অকৃতজ্ঞ।
Os Tafssir em língua árabe:
لِّلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۚ يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثٗا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ
আসমানসমূহ ও যমীনের আধিপত্য আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছে তা-ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছে কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছে পুত্ৰ সন্তান দান করেন,
Os Tafssir em língua árabe:
أَوۡ يُزَوِّجُهُمۡ ذُكۡرَانٗا وَإِنَٰثٗاۖ وَيَجۡعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٞ قَدِيرٞ
অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছে তাকে করে দেন বন্ধ্যা; নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাবান।
Os Tafssir em língua árabe:
۞ وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ ٱللَّهُ إِلَّا وَحۡيًا أَوۡ مِن وَرَآيِٕ حِجَابٍ أَوۡ يُرۡسِلَ رَسُولٗا فَيُوحِيَ بِإِذۡنِهِۦ مَا يَشَآءُۚ إِنَّهُۥ عَلِيٌّ حَكِيمٞ
আর কোনো মানুষেরই এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ্ তার সাথে কথা বলবেন ওহীর মাধ্যম ছাড়া অথবা পর্দার আড়াল ছাড়া অথবা এমন দূত প্রেরণ ছাড়া, যে দূত তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ওহী করেন, তিনি সর্বোচ্চ, হিকমতওয়ালা।
Os Tafssir em língua árabe:
وَكَذَٰلِكَ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ رُوحٗا مِّنۡ أَمۡرِنَاۚ مَا كُنتَ تَدۡرِي مَا ٱلۡكِتَٰبُ وَلَا ٱلۡإِيمَٰنُ وَلَٰكِن جَعَلۡنَٰهُ نُورٗا نَّهۡدِي بِهِۦ مَن نَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِنَاۚ وَإِنَّكَ لَتَهۡدِيٓ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ
আর এভাবে [১] আমরা আপনার প্রতি আমাদের নির্দেশ থেকে রূহকে ওহী করেছি; আপনি তো জানতেন না কিতাব কী এবং ঈমান কী! কিন্তু আমরা এটাকে করেছি নূর, যা দ্বারা আমরা আমাদের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে হেদায়াত দান করি; আর আপনি তো অবশ্যই সরল পথের দিকে দিকনির্দেশনা করেন---
[১] “এভাবে” অর্থ শুধু শেষ পদ্ধতি নয়, বরং ওপরের আয়াতে যে তিনটি পদ্ধতি উল্লেখিত হয়েছে তার সব কটি। আর "রূহ’ অর্থ অহী [তাবারী] অথবা এখানে রূহ বলে কুরআনকে বোঝানো হয়েছে। কারণ, কুরআন হচ্ছে এমন রূহ যার দ্বারা অন্তরসমূহ জীবন লাভ করে। [জালালাইন] কুরআন ও হাদীস থেকেই একথা প্রমাণিত যে, এই তিনটি পদ্ধতিতেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হিদায়াত দান করা হয়েছে। হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অহী আসার সূচনা হয়েছিলো সত্য স্বপ্নের আকারে। [বুখারী ৩] এই ধারা পরবর্তী সময় পর্যন্ত জারি ছিল। তাই হাদীসে তার বহু সংখ্যক স্বপ্নের উল্লেখ দেখা যায়। যার মাধ্যমে হয় তাকে কোনো শিক্ষা দেয়া হয়েছে কিংবা কোনো বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তাছাড়া কুরআন মজীদে নবীর একটি স্বপ্নের সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। [সূরা আল-ফাতহ ২৭] তাছাড়া কতিপয় হাদীসে একথারও উল্লেখ আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার মনে অমুক বিষয়টি সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে, কিংবা আমাকে একথাটি বলা হয়েছে বা আমাকেই নির্দেশ দান করা হয়েছে অথবা আমাকে এ কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ধরনের সব কিছু অহীর প্রথমোক্ত শ্রেণীর সাথে সম্পর্কিত। বেশীর ভাগ হাদীসে কুদসী এই শ্রেণীরই অন্তর্ভুক্ত। মে'রাজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দ্বিতীয় প্রকার অহী দ্বারা সম্মানিত করা হয়েছে। কতিপয় হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নির্দেশ দেয়া এবং তা নিয়ে তার বার বার দরখাস্ত পেশ করার কথা যেভাবে উল্লেখিত হয়েছে তা থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, সে সময় কথাবার্তা হয়েছিলো যেমনটি তুর পাহাড়ের পাদদেশে মূসা আলাইহিস সালাম ও আল্লাহর মধ্যে হয়েছিলো। এরপর থাকে অহীর তৃতীয় শ্রেণী। এ ব্যাপারে কুরআন নিজেই সাক্ষ্য দান করে যে, কুরআনকে জিবরাঈল আমীনের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পৌছানো হয়েছে। [সূরা আল-বাকারাহ ৯৭, সূরা আশ-শু'আরা ১৯২-১৯৫]
Os Tafssir em língua árabe:
صِرَٰطِ ٱللَّهِ ٱلَّذِي لَهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ أَلَآ إِلَى ٱللَّهِ تَصِيرُ ٱلۡأُمُورُ
সে আল্লাহর পথ, যিনি আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে তার মালিক। জেনে রাখুন, সব বিষয় আল্লাহরই দিকে ফিরে যাবে।
Os Tafssir em língua árabe:
 
Tradução dos significados Surah: Suratu Ash-Shura
Índice de capítulos Número de página
 
Tradução dos significados do Nobre Qur’an. - Tradução Bengali - Abu Bakr Zakaria - Índice de tradução

Tradução dos significados do Alcorão em Bengali pelo Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria.

Fechar