আর অবশ্যই আমরা তাদের নিকট নিয়ে এসেছি এমন এক কিতাব যা আমরা জ্ঞানের ভিত্তিতে বিশদ ব্যাখ্যা করেছি [২]। আর যা মুমিন সম্প্রদায়ের জন্য হিদায়াত ও রহমতস্বরূপ।
[১] আল্লাহ্ তা'আলা এখানে কাফের-মুশরিকদের ওজর আপত্তি তোলার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি তাদের কাছে রাসূল পাঠিয়েছেন। তাদের জন্য রাসূলের মাধ্যমে কিতাব দিয়েছেন, যে কিতাবে সবকিছু স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। অন্যান্য আয়াতেও এ বিস্তারিত বর্ণনার কথা আল্লাহ বর্ণনা করেছেন। [ইবন কাসীর]
তারা কি শুধু সে পরিণামের অপেক্ষা করে? যেদিন সে পরিণাম প্রকাশ পাবে, সেদিন যারা আগে সেটার কথা ভুলে গিয়েছিল তারা বলবে, ‘আমাদের রবের রাসূলগণ তো সত্যবাণী এনেছিলেন, আমাদের কি এমন কোনো সুপারিশকারী আছে যে আমাদের জন্য সুপারিশ করবে অথবা আমাদেরকে কি আবার ফেরত পাঠানো হবে-- যেন আমরা আগে যা করতাম তা থেকে ভিন্ন কিছু করতে পারি?’ অবশ্যই তারা নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং তারা যে মিথ্যা রটনা করত, তা তাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে।
নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ্ যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় [১] দিনে [২] সৃষ্টি করেছেন [৩]; তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন [৪]। তিনিই দিনকে রাত দিয়ে ঢেকে দেন, তাদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য,চাঁদ ও নক্ষত্ররাজি, যা তাঁরই হুকুমের অনুগত, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন [৫]।জেনে রাখ, সৃজন ও আদেশ তাঁরই [৬]। সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ্ কত বরকতময়!
সপ্তম রুকূ’
[১] এখানে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃষ্টি ছয় দিনে সমাপ্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে সূরা ফুসসিলাতের নবম ও দশম আয়াতে বলা হয়েছে যে, দুদিনে ভূমণ্ডল, দুদিনে ভূমণ্ডলের পাহাড়, সমুদ্র, খনি, বৃক্ষ, উদ্ভিদ এবং মানুষ ও জন্তুজানোয়ারের পানাহারের বস্তু-সামগ্রী সৃষ্টি করা হয়েছে। মোট চার দিন হল। বলা হয়েছে:
যে দু’দিনে ভূমণ্ডল সৃষ্টি করা হয়েছে, তা ছিল রবিবার ও সোমবার। দ্বিতীয় দুদিন ছিল মঙ্গল ও বুধ, যাতে ভূমণ্ডলের সাজ-সরঞ্জাম পাহাড়, নদী ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়। এরপর বলা হয়েছে:
(فَقَضٰهُنَّ سَبْعَ سَمٰوَاتٍ فِيْ يَوْمَيْنِ)
-অর্থাৎ "অতঃপর সাত আকাশ সৃষ্টি করেন দুদিনে।" [সূরা ফুস্সিলাত ১২] বাহ্যতঃ এ দুদিন হবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার; অর্থাৎ এ পর্যন্ত ছয় দিন হল। [আদওয়াউল বায়ান]
[২] জানা কথা যে, সূর্যের পরিক্রমণের ফলে দিন ও রাত্রির সৃষ্টি। নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টির পূর্বে যখন চন্দ্ৰ-সূৰ্যই ছিল না তখন ছয় দিনের সংখ্যা কি হিসাবে নিরূপিত হল? কোনো কোনো তাফসীরবিদ বলেছেন, ছয় দিন বলে জাগতিক ৬ দিন বুঝানো হয়েছে। কিন্তু পরিষ্কার ও নির্মল উত্তর এই যে, সূর্যোদয় থেকে সূর্যস্ত পর্যন্ত যে দিন এবং সূর্যস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত যে রাত এটা এ জগতের পরিভাষা। বিশ্ব সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ্ তা'আলার কাছে দিবা-রাত্রির পরিচয়ের অন্য কোনো লক্ষণ নির্দিষ্ট থাকতে পারে; যেমন জান্নাতের দিবা-রাত্রি সূর্যের পরিক্রমণের অনুগামী হবেনা। সহীহ বর্ণনা অনুযায়ী যে ছয় দিনে জগত সৃষ্টি হয়েছে তা রবিবার থেকে শুরু করে শুক্রবার শেষ হয়।
[৩] এখানে প্রশ্ন হয় যে, আল্লাহ্ তা'আলা সমগ্র বিশ্বকে মুহুর্তের মধ্যে সৃষ্টি করতে সক্ষম। স্বযং কুরআনুল কারীমেও বিভিন্ন ভঙ্গিতে একথা বার বার বলা হয়েছে। কোথাও বলা হয়েছে: “এক নিমেষের মধ্যে আমার আদেশ কার্যকরী হয়ে যায়।” [সূরা আল-কামার ৫০] আবার কোথাও বলা হয়েছে: “আল্লাহ তা'আলা যখন কোনো বস্তু সৃষ্টি করতে চান, তখন বলে দেন: হয়ে যাও। আর সঙ্গে সঙ্গে তা সৃষ্টি হয়ে যায়।” যেমন, [সূরা আল-বাকারাহ ১১৭] এমতাবস্থায় বিশ্ব সৃষ্টিতে ছয় দিন লাগার কারণ কী? তাফসীরবিদ সায়ীদ ইবন জুবাইর রাহিমাহুল্লাহ এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আল্লাহ্ তা'আলার মহাশক্তি নিঃসন্দেহে এক নিমেষে সব কিছু সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু মানুষকে বিশ্ব ব্যবস্থা পরিচালনার ধারাবাহিকতা ও কর্মতৎপরতা শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যেই এতে ছয় দিন ব্যয় করা হয়েছে।
[৪] আল্লাহ্ তা'আলা আরশের উপর উঠেছেন এটা সহীহ আকীদা। কিন্তু তিনি কিভাবে উঠেছেন, কুরআন-সুন্নায় এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য নাই বিধায় তা আমরা জানি না। এ বিষয়ে সূরা আল-বাকারার ২৯নং আয়াতের ব্যাখ্যায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ইমাম মালেক রাহিমাহুল্লাহকে কেউ استواء সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন, استواء শব্দের অর্থ তো জানাই আছে; কিন্তু এর স্বরূপ ও অবস্থা মানব বুদ্ধি সম্যক বুঝতে অক্ষম। এতে বিশ্বাস স্থাপন করা ওয়াজিব। এর অবস্থা ও স্বরূপ জিজ্ঞেস করা বিদ’আত। কেননা সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ ধরনের প্রশ্ন কখনো করেননি। কারণ, তারা এর অর্থ বুঝতেন। শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা'আলা এ গুণে কিভাবে গুণান্বিত হলেন, তা শুধু মানুষের অজানা। এটি আল্লাহর একটি গুণ। আল্লাহ তা'আলা যে রকম, তার গুণও সে রকম। সুফিয়ান সওরী, ইমাম আওযায়ী, লাইস ইবন সাদ, সুফিয়ান ইবন উয়াইনা, আব্দুল্লাহ ইবন মোবারক রাহিমাহুমুল্লাহ প্রমুখ বলেছেন, যেসব আয়াত আল্লাহ্ তা'আলার সত্তা ও গুণাবলী সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে, সেগুলোর প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে যে, এগুলো হক এবং এগুলোর অর্থও স্পষ্ট। তবে গুণান্বিত হওয়ার ধরণের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। বরং যেভাবে আছে সেভাবে রেখে কোনোরূপ অপব্যাখ্যা ও সাদৃশ্য ছাড়াই বিশ্বাস স্থাপন করা উচিত। [ এ ব্যাপারে বিস্তারিত দেখুন, ইমাম যাহাবী রচিত আল-উলু]
[৫] অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা রাত্রি দ্বারা দিনকে সমাচ্ছন্ন করেন এভাবে যে, রাত্রি দ্রুত দিনকে ধরে ফেলে। উদ্দেশ্য এই যে, সমগ্র বিশ্বকে আলো থেকে অন্ধকারে অথবা অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসেন। দিবা-রাত্রির এ বিরাট পরিবর্তন আল্লাহর কুদরতে অতি দ্রুত ও সহজে সম্পন্ন হয়ে যায় -মোটেই দেরী হয় না। সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্রসমূহকে এমতাবস্থায় সৃষ্টি করেছেন যে, সবাই আল্লাহ্ তা'আলার নির্দেশের অনুগামী। এতে প্রত্যেক বুদ্ধিমানের জন্য চিন্তার খোরাক রয়েছে। কারণ, এগুলো শুধুমাত্র আল্লাহর আদেশে চলছে। এ চলার গতিতে বিন্দুমাত্র পার্থক্য আসাও অসম্ভব। তবে সর্বশক্তিমান আল্লাহ নিজেই যখন নির্দিষ্ট সময়ে এগুলোকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করবেন, তখন গোটা ব্যবস্থাই তছনছ হয়ে যাবে। আর তখনই হবে কেয়ামত।
[৬] الخلق শব্দের অর্থ সৃষ্টি করা এবং الامر শব্দের অর্থ আদেশ করা। বাক্যের অর্থ এই যে, সৃষ্টিকর্তা হওয়া এবং আদেশদাতা হওয়া আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। যেমনিভাবে তিনিই উপর-নীচের সবকিছু সৃষ্টি করেছেন তেমনিভাবে নির্দেশ দানের অধিকারও তাঁর। এ নির্দেশ দুনিয়ায় তাঁর শরীআত সম্বলিত নির্দেশকে বোঝানো হবে। আর আখেরাতে ফয়সালা ও প্রতিদান-প্রতিফল দেয়াকে বোঝানো হবে। [সা'দী]
তোমরা বিনিতভাবে ও গোপনে [১] তোমাদের রবকে ডাক [২]; নিশ্চয় তিনি সীমালংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না [৩]।
[১] এখানে দোআর কতিপয় আদব শেখানো হচ্ছে। বলা হয়েছে: (تَضَرُّعًا وَّخُفْيَةً) এর মধ্যে تضرع শব্দের অর্থ অক্ষমতা, বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ করা এবং خفية শব্দের অর্থ গোপন। এ শব্দদ্বয়ে দোআর দুটি গুরুত্বপূর্ণ আদব বর্ণিত হয়েছে। প্রথমতঃ অপারগতা ও অক্ষমতা এবং বিনয় ও নম্রতা; যা দো'আর প্রাণ। আল্লাহর কাছে এর মাধ্যমে নিজের অভাব-অনটন ব্যক্ত করা। দ্বিতীয়তঃ চুপিচুপি ও সংগোপনে দোআ করা; যা উত্তম এবং কবুলের নিকটবর্তী। কারণ, উচ্চস্বরে দোআ চাওয়ার মধ্যে প্রথমতঃ বিনয় ও নম্রতা বিদ্যমান থাকা কঠিন। দ্বিতীয়তঃ এতে রিয়া এবং সুখ্যাতিরও আশংকা রয়েছে। তৃতীয়তঃ এতে প্রকাশ পায় যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই কথা জানে না যে, আল্লাহ তা'আলা শ্রোতা ও মহাজ্ঞানী, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সবই তিনি জানেন এবং সরব ও নীরব সব কথাই তিনি শোনেন। এ কারণেই খাইবার যুদ্ধের সময় দোআ করতে গিয়ে সাহাবায়ে কেরামের আওয়াজ উচ্চ হয়ে গেলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা কোনো বধিরকে অথবা অনুপস্থিতকে ডাকাডাকি করছ না যে, এত জোরে বলতে হবে; বরং একজন শ্রোতা ও নিকটবর্তীকে সম্বোধন করছ।’ [বুখারী ৬৬১০, মুসলিম ২৭০৪] অনুরূপভাবে,আল্লাহ্ তা'আলা জনৈক নবীর দোআ উল্লেখ করে বলেন,
(اِذْ نَادٰى رَبَّهٗ نِدَاءً خَفِيًّا)
অৰ্থাৎ “যখন সে তার পালনকর্তাকে অনুচ্চস্বরে ডাকলেন।" [সূরা মারইয়াম ৩] এতে বুঝ গেল যে, অনুচ্চস্বরে দোআ করা আল্লাহ তা'আলার পছন্দ।
পূর্ববর্তী মনীষীবৃন্দ অধিকাংশ সময় আল্লাহর স্মরণে ও দো’আয় মশগুল থাকতেন, কিন্তু কেউ তাদের আওয়াজ শুনতে পেত না। বরং তাদের দো'আ তাদের ও আল্লাহর মধ্যে সীমিত থাকত। তাদের অনেকেই সমগ্র কুরআন মুখস্থ তিলাওয়াত করতেন; কিন্তু অন্য কেউ টেরও পেত না। অনেকেই প্রভূত দীনী জ্ঞান অর্জন করতেন; কিন্তু মানুষের কাছে তা প্রকাশ করে বেড়াতেন না। অনেকেই রাতের বেলায় স্বগৃহে দীর্ঘ সময় সালাত আদায় করতেন; কিন্তু আগন্তুকরা তা বুঝতেই পারত না। হাসান বসরী আরো বলেন, আমি এমন অনেককে দেখেছি, যারা গোপনে সম্পাদন করার মত কোনো ইবাদাত কখনো প্রকাশ্যে করেন নি। দো'আয় তাদের আওয়াজ অত্যন্ত অনুচ্চ হত। ইবন জুরাইজ বলেন, দোআয় আওয়াজকে উচ্চ করা এবং শোরগোল করা মাকরূহ। [ইবন কাসীর] আবু বকর জাস্সাস বলেন, এ আয়াত থেকে জানা যায় যে, নীরবে দো'আ করা জোরে দোআ করার চাইতে উত্তম। এমনকি আয়াতে যদি দোআর অর্থ যিকর ও ইবাদাত নেয়া হয়, তবে এ সম্পর্কেও পূর্ববর্তী মনীষীদের সুনিশ্চিত অভিমত এই যে, নীরবে যিকর সরব যিকর অপেক্ষা উত্তম। [আহকামুল কুরআন]
তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ও সময়ে সরব যিকরই কাম্য ও উত্তম। উদাহরণতঃ আযান ও একামত উচ্চঃস্বরে বলা, সরব সালাতসমূহে উচ্চঃস্বরে কুরআন তিলাওয়াত করা, সালাতের তাকবীর, আইয়ামে তাশরীকের তাকবীর এবং হজে পুরুষদের জন্য লাব্বাইকা উচ্চঃস্বরে বলা ইত্যাদি। এ কারণেই এ সম্পর্কে আলেমগণের সিদ্ধান্ত এই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব বিশেষ অবস্থা ও স্থানে কথা ও কর্মের মাধ্যমে সরব যিকর করার শিক্ষা দিয়েছেন, সেখানে সজোরেই করা উচিত। এছাড়া অন্যান্য অবস্থা ও স্থানে নীরব যিকরই উত্তম ও অধিক উপকারী।
[২] এ আয়াতে এদিকে দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে যে, একমাত্র আল্লাহই যখন অসীম শক্তির অধিকারী এবং যাবতীয় অনুকম্পা ও নেয়ামত প্রদানকারী, তখন বিপদাপদ ও অভাব-অনটনে তাঁকেই ডাকা এবং তাঁর কাছেই দোআ-প্রার্থনা করা উচিত। তাঁকে ছেড়ে অন্যদিকে মনোনিবেশ করা মূর্খতা ও বঞ্চিত হওয়ার নামান্তর। আরবী ভাষায় দোআর দুটি অর্থ হয়- (এক) বিপদাপদ দূরীকরণ ও অভাব পূরণের জন্য কাউকে ডাকা; যাকে দোআয়ে-মাসআলা বলে। (দুই) যে কোনো অবস্থায় ইবাদাতের মাধ্যমে কাউকে স্মরণ করা; যাকে দোআয়ে-ইবাদাত বলে। আয়াতে দো'আ দ্বারা উভয় অর্থই উদ্দেশ্য। অর্থাৎ অভাব পূরণের জন্য স্বীয় পালনকর্তাকে ডাক অথবা স্মরণ কর এবং পালনকর্তার ইবাদাত কর। প্রথম অবস্থায় অর্থ হবে স্বীয় অভাব-অনটনের সমাধান একমাত্র আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা কর। আর দ্বিতীয় অবস্থার অর্থ হবে, স্মরণ ও ইবাদাত একমাত্র তাঁরই কর। [সা’দী] উভয় তাফসীরই পূর্ববর্তী মনীষী ও তাফসীরবিদদের থেকে বর্ণিত হয়েছে।
[৩] مُعْتَدِيْنَ শব্দটি اعْتِدَاء থেকে উদ্ভুত। এর অর্থ সীমা অতিক্রম করা। উদ্দেশ্য এই যে, আল্লাহ তা'আলা সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না। তা দো’আয় সীমা অতিক্রম করাই হোক কিংবা অন্য কোনো কাজে- কোনটিই আল্লাহর পছন্দনীয় নয়। চিন্তা করলে দেখা যাবে যে, সীমা ও শর্তাবলী পালন ও আনুগত্যের নামই ইসলাম। সালাত, সিয়াম, হজ, যাকাত ও অন্যান্য লেনদেনে শরীআতের সীমা অতিক্রম করলে সেগুলো ইবাদাতের পরিবর্তে গোনাহে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
দো’আয় সীমা অতিক্রম করা কয়েক প্রকারে হতে পারে। (এক) দো’আয় শাব্দিক লৌকিকতা, ছন্দ ইত্যাদি অবলম্বন করা। এতে বিনয় ও নম্রতা ব্যাহত হয়। (দুই) দো’আয় অনাবশ্যক শর্ত সংযুক্ত করা। যেমন, বর্ণিত আছে যে, আব্দুল্লাহ ইবন মুগাফফাল রাদিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় পুত্রকে এভাবে দো'আ করতে দেখলেন: 'হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে জান্নাতে শুভ্র রঙ্গের ডান দিকস্থ প্রাসাদ প্রার্থনা করি। তিনি পুত্রকে বারণ করে বললেন, বৎস, তুমি আল্লাহর কাছে জান্নাত চাও এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, এমন কিছু লোক হবে যারা দো’আ এবং পবিত্রতার মধ্যে সীমাতিক্রম করবে।’ [ আবু দাউদ ৯৬, ইবন মাজাহ ৩৮৬৪, মুসনাদে আহমাদ ৪/৮৭, ৫/৫৫] (তিন) সাধারণ মুসলিমদের জন্য বদ দো’আ করা কিংবা এমন কোনো বিষয় কামনা করা যা সাধারণ লোকের জন্য ক্ষতিকর এবং অনুরূপ এখানে উল্লিখিত দো'আয় বিনা প্রয়োজনে আওয়াজ উচ্চ করাও এক প্রকার সীমা অতিক্রম। (চার) এমন অসম্ভব বিষয় কামনা করা যা হবার নয়। যেমন, নবীদের মর্যাদা বা নবুওয়ত চাওয়া।
আর যমীনে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না [১]। আর আল্লাহকে ভয় ও আশার সাথে ডাক [২]। নিশ্চয় আল্লাহ্র অনুগ্রহ মুহসিনদের খুব নিকটে [৩]।
[১] এখানে - صلاح ও فساد শব্দ দুটি পরস্পর বিরোধী। صلاح শব্দের অর্থ সংস্কার আর اصلاح শব্দের অর্থ সংস্কার করা এবং فساد শব্দের অর্থ অনর্থ ও গোলযোগ আর افساد শব্দের অর্থ অনর্থ সৃষ্টি করা। মূলতঃ সমতা থেকে বের হয়ে যাওয়াকে ‘ফাসাদ’ বলা হয়; তা সামান্য হোক কিংবা বেশী। কম বের হলে কম ফাসাদ এবং বেশী বের হলে বেশী ফাসাদ হবে। কাজেই আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় এই যে, পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না, আল্লাহ্ তা'আলা কর্তৃক সংস্কার করার পর।
আল্লাহ্ তা'আলার সংস্কার কয়েক প্রকার হতে পারে। (এক) প্রথমেই জিনিসটি সঠিকভাবে সৃষ্টি করা। যেমন, সূরা মুহাম্মাদের ২নং আয়াতে বলা হয়েছে: (وَاَصْلَحَ بَالَهُمْ) (দুই) অনর্থ আসার পর তা দূর করা। যেমন, সূরা আল-আহযাবের ৭১নং আয়াতে বলা হয়েছে:
(يُّصْلِحْ لَكُمْ اَعْمَالَكُمْ)
(তিন) সংস্কারের নির্দেশ দান করা। যেমন, এ আয়াতে বলা হয়েছে: “যখন আল্লাহ্ তা'আলা পৃথিবীর সংস্কার সাধন করেছেন, তখন তোমরা তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না।" এখানে পৃথিবীর সংস্কার সাধন করার দুটি অর্থ হতে পারে। (এক) বাহ্যিক সংস্কার; অর্থাৎ পৃথিবীকে চাষাবাদ ও বৃক্ষ রোপনের উপযোগী করেছেন, তাতে মেঘের সাহায্যে পানি বর্ষণ করে মাটি থেকে ফল-ফুল উৎপন্ন করেছেন এবং মানুষ ও অন্যান্য জীব-জন্তুর জন্য মাটি থেকে জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় সামগ্ৰী সৃষ্টি করেছেন। (দুই) পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ ও অর্থগত সংস্কার করেছেন। নবী-রাসূল, গ্রন্থ ও হেদায়াত প্রেরণ করে পৃথিবীকে কুফর, শির্ক, পাপাচার ইত্যাদি থেকে পবিত্র করেছেন। সৎ আমল দিয়ে পূর্ণ করেছেন। আয়াতে উভয় অর্থ, বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সংস্কারও উদ্দিষ্ট হতে পারে। অতএব, আয়াতের অর্থ এই যে, আল্লাহ তা'আলা বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ দিক দিয়ে পৃথিবীর সংস্কার সাধন করেছেন। এখন তোমরা এতে গোনাহ ও অবাধ্যতার মাধ্যমে গোলযোগ ও অনর্থ সৃষ্টি করো না। [কুরতুবী, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
[২] অর্থাৎ আল্লাহকে ভয় ও আশা সহকারে ডাক। এক দিকে দো’আ অগ্রাহ্য হওয়ার ভয় থাকবে এবং অপরদিকে তাঁর করুণা লাভের পূর্ণ আশাও থাকবে। এ আশা ও ভয়ই দৃঢ়তার পথে মানবাত্মার দুটি বাহু। এ বাহুদ্বয়ের সাহায্যে সে উর্ধ্বলোকে আরোহণ করে এবং সুউচ্চ পদ মর্যাদা অর্জন করে। এ বাক্য থেকে বাহ্যতঃ প্রতীয়মান হয় যে, আশা ও ভয় সমান সমান হওয়া উচিত। কোনো কোনো আলেম বলেন, জীবিতাবস্থায় ও সুস্থতার সময় ভয়কে প্রবল রাখা প্রয়োজন, যাতে আনুগত্যে ক্রটি না হয়, আর যখন মৃত্যু নিকটবর্তী হয়, তখন আশাকে প্রবল রাখবে। কেননা এখন কাজ করার শক্তি বিদায় নিয়েছে। করুণা লাভের আশা করাই এখন তার একমাত্র কাজ। [কুরতুবী] মোটকথা, দো’আর দুটি আদব হল- বিনয় ও নম্রতা এবং আস্তে ও সংগোপনে দো’আ করা। এ দুটি গুণই মানুষের বাহ্যিক দেহের সাথে সম্পৃক্ত। কেননা বিনয়ের অর্থ হল দো’আর সময় দৈহিক আকার-আকৃতিকে অপারগ ও ফকীরের মত করে নেয়া, অহংকারী ও বেপরোয়ার মত না হওয়া। দো’আ সংগোপনে করার সম্পর্কও জিহবার সাথে যুক্ত। এ আয়াতে দো’আর আরো দুটি আভ্যন্তরীণ আদব বর্ণিত হয়েছে। এগুলোর সম্পর্ক মানুষের মনের সাথে। আর তা হল এই যে, দো'আকারীর মনে এ ভয় ও আশংকা থাকা উচিত যে, সম্ভবতঃ দো’আটি গ্রাহ্য হবে না এবং এ আশাও থাকা উচিত যে, দো’আ কবুল হতে পারে। তবে দো'আকারীর মনে এটা প্রবল থাকতে হবে যে, তার দো’আ কবুল হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা আল্লাহকে এমনভাবে ডাকবে যে, তোমাদের দৃঢ় বিশ্বাস তিনি তা কবুল করবেন।“ [তিরমিয়ী ৩৪৭৯, হাকেম ১/৪৯৩, মুসনাদে আহমাদ ২/১৭৭]
[৩] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলার করুণা সৎকর্মীদের নিকটবর্তী। এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যদিও দো’আর সময় ভয় ও আশা উভয় অবস্থাই থাকা বাঞ্চনীয়, কিন্তু এতদুভয়ের মধ্যে আশার দিকটিই থাকবে প্রবল। কেননা বিশ্ব প্রতিপালক পরম দয়ালু আল্লাহর দান ও অনুগ্রহে কোনো ক্রটি ও কৃপণতা নেই। তিনি মন্দের চেয়ে মন্দ লোকের দো’আও কবুল করতে পারেন। কবুল না হওয়ার আশংকা স্বীয় কুকর্ম ও গোনাহর অকল্যাণেই থাকতে পারে। কারণ, আল্লাহর রহমতের নিকটবর্তী হওয়ার জন্য সৎকর্মী হওয়া প্রয়োজন। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেউ কেউ সুদীর্ঘ সফর করে, স্বীয় বেশভূষা ফকীরের মত করে এবং আল্লাহর সামনে দো’আর হস্ত প্রসারিত করে; কিন্তু তার খাদ্য, পানীয় ও পোষাক সবই হারাম- এরূপ লোকের দো'আ কিরূপে কবুল হতে পারে?’ [মুসলিম ১০১৫) অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘বান্দা যতক্ষণ কোনো গোনাহ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদের দো’আ না করে এবং তড়িঘড়ি না করে, ততক্ষণ তার দো'আ কবুল হতে থাকে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, তড়িঘড়ি দোআ করার অর্থ কি? তিনি বলেন, এর অর্থ হল এরূপ ধারণা করে বসা যে, আমি এত দীর্ঘ দিন থেকে দোআ করছি, অথচ এখনো পর্যন্ত কবুল হল না। অতঃপর নিরাশ হয়ে দো’আ ত্যাগ করা। [মুসলিম ২৭৩৫] অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যখনই আল্লাহর কাছে দো'আ করবে তখনই কবুল হওয়ার ব্যাপারে নিঃসন্দেহ হয়ে দো’আ করবে মুসনাদ।” [আহমাদ ২/১৭৭, তিরমিয়ী ৩৪৭৯) অর্থাৎ আল্লাহর রহমতের ভাণ্ডারের বিস্তৃতিকে সামনে রেখে দোআ করলে অবশ্যই দোআ কবুল হবে বলে মনকে মজবুত কর। এমন মনে করা, গোনাহর কারণে দোআ কবুল না হওয়ার আশংকা অনুভব করা এর পরিপন্থী নয়।
আর তিনিই সে সত্তা; যিনি তাঁর রহমত বৃষ্টির আগে বায়ূ প্রবাহিত করেন সুসংবাদ হিসেবে [১], অবশেষে যখন সেটা ভারী মেঘমালা বয়ে আনে [২] তখন আমরা সেটাকে মৃত জনপদের দিকে চালিয়ে দেই, অতঃপর আমরা তার দ্বারা বৃষ্টি বর্ষণ করি [৩], তারপর তা দিয়ে সব রকমের ফল উৎপাদন করি। এভাবেই আমরা মৃতদেরকে বের করব, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর [৪]।
[১] এতে رياح শব্দটি ريح শব্দের বহুবচন। এর অর্থ বায়ু। আর بُشراً শব্দের অর্থ সুসংবাদ। এবং রহমত বলে বৃষ্টির রহমত বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলাই বৃষ্টির পূর্বে সুসংবাদ দেয়ার জন্য বায়ু প্রেরণ করেন। উদ্দেশ্য এই যে, বৃষ্টির পূর্বে ঠান্ডা বায়ু প্রেরণ করা আল্লাহর চিরন্তন রীতি। এ বাতাস দ্বারা স্বয়ং মানুষ আরাম ও প্রফুল্লতা অর্জন করে এবং তা যেন ভাবী বৃষ্টির সংবাদও পূর্বাহ্নে প্রদান করে।
[২] سحاب শব্দের অর্থ মেঘ, এবং ثقال শব্দটি ثقيل এর বহুবচন। এর অর্থ ভারী। অর্থাৎ বায়ূ যখন ভারী মেঘমালাকে উপরে উঠিয়ে নেয়। ভারী মেঘমালার অর্থ, পানিতে ভরপুর মেঘমালা- যা বাতাসের কাঁধে সওয়ার হয়ে উপরে উঠে যায়। এভাবে হাজারো মণ ভারী পানি বাতাসে ভর করে উপরে পৌঁছে যায়। আল্লাহ্ তা'আলার হুকুম হওয়া মাত্র আপনা-আপনি সমুদ্র থেকে বাস্প (মৌসুমী বায়ু) উখিত হতে থাকে এবং উপরে উঠে মেঘমালার আকার ধারণ করে।
[৩] অর্থাৎ বাতাস যখন ভারী মেঘমালাকে তুলে নেয়, তখন আমি মেঘমালাকে কোনো মৃত শহরের দিকে পরিচালিত করি। মৃত শহর বলে এমন জনপদকে বুঝানো হয়েছে, যা পানির অভাবে উজাড়প্রায়। [মানার; আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]
এ পর্যন্ত আলোচ্য আয়াতের বিষয়-বস্তুর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক প্রমাণিত হল। প্রথমতঃ বৃষ্টি মেঘমালা থেকে বর্ষিত হয়। এতে বুঝা গেল যে, যেসব আয়াতে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণের কথা বলা হয়েছে, সেখানেও ‘সামা’ (আকাশ) শব্দ দ্বারা মেঘমালাকেই বুঝানো হয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ কোনো বিশেষ দিক কিংবা বিশেষ ভূখণ্ডের দিকে মেঘমালা ধাবিত হওয়া সরাসরি আল্লাহর নির্দেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তিনি যখন যেখানে ইচ্ছা এবং যে পরিমাণ ইচ্ছা বৃষ্টি বর্ষণের নির্দেশ দান করেন। মেঘমালা আল্লাহর সে নির্দেশই পালন করে মাত্র।
এ বিষয়টি সর্বত্রই এভাবে প্রত্যক্ষ করা যায় যে, মাঝে মাঝে কোনো শহর অথবা জনপদের উপর মেঘমালা পুঞ্জীভূত হয়ে থাকে এবং সেখানে বৃষ্টির প্রয়োজনও থাকে, কিন্তু মেঘমালা সেখানে এক ফোটা পানিও দেয় না; বরং আল্লাহর নির্দেশে যে শহর বা জনপদের প্রাপ্য নির্ধারিত থাকে, সেখানে পৌঁছেই বর্ষিত হয়। নির্দিষ্ট শহর ছাড়া অন্যত্র মেঘের পানি লাভ করার সাধ্য কারো নেই।
[৪] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলা বলছেন: আমি মৃত শহরে পানি বর্ষণ করি, তারপর পানি দ্বারা সব রকম ফল-মূল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরকে কেয়ামতের দিন উথিত করব যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। আমি যেভাবে মৃত ভূখণ্ডকে জীবিত করি এবং তা থেকে বৃক্ষ ও ফল-মূল নির্গত করি, তেমনিভাবে কেয়ামতের দিন মৃতদেরকে পুনরায় জীবিত করে তুলব। আমি এসব দৃষ্টান্ত এজন্য বর্ণনা করি, যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পাও এবং ঈমান আন। [জালালাইন] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতে দু’বার শিঙ্গা ফুঁকা হবে। প্রথম ফুঁৎকারের পর সারা বিশ্ব ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে, কোনো কিছুই জীবিত থাকবে না। দ্বিতীয় ফুঁৎকারের পর নতুনভাবে সারা বিশ্ব সৃজিত হবে এবং সব মৃত জীবিত হয়ে যাবে। হাদীসে আরো বলা হয়েছে যে, উভয়বার শিঙ্গায় ফুঁৎকারের মাঝখানে চল্লিশ বছরের ব্যবধান হবে। এ চল্লিশ বছর পর্যন্ত অবিরাম বৃষ্টিপাত হতে থাকবে। এ সময়ের মধ্যেই প্রতিটি মৃত মানুষ ও জন্তুর দেহের অংশ একত্রিত করে পূর্ণ কাঠামো তৈরী করা হবে। অতঃপর শিঙ্গা ফুঁকার সাথে সাথে এসব মৃতদেহে আত্মা এসে যাবে এবং জীবিত হয়ে দণ্ডায়মান হবে। [দেখুন, মুসলিম ২৯৫৫]
Contents of the translations can be downloaded and re-published, with the following terms and conditions:
1. No modification, addition, or deletion of the content.
2. Clearly referring to the publisher and the source (QuranEnc.com).
3. Mentioning the version number when re-publishing the translation.
4. Keeping the transcript information inside the document.
5. Notifying the source (QuranEnc.com) of any note on the translation.
6. Updating the translation according to the latest version issued from the source (QuranEnc.com).
7. Inappropriate advertisements must not be included when displaying translations of the meanings of the Noble Quran.
అన్వేషణ ఫలితాలు:
API specs
Endpoints:
Sura translation
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/sura/{translation_key}/{sura_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified sura (by its number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114)
Returns:
json object containing array of objects, each object contains the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/aya/{translation_key}/{sura_number}/{aya_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified aya (by its number sura_number and aya_number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114) aya_number: [1-...] (Aya number in the sura)
Returns:
json object containing the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".