আর তিনি যমীনে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে যমীন তোমাদের নিয়ে হেলে না যায় [১] এবং স্থাপন করেছেন নদ-নদী ও পথসমূহ, যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছতে পার [২]
[১] رَوَاسِيَ শব্দটি رٰاسِيَة এর বহুবচন। এর অর্থ ভারী পাহাড়। تَمِيْدَ শব্দটি ميد থেকে উদ্ভুত। এর অর্থ আন্দোলিত হওয়া এবং অস্থিরভাবে টলমল করা। [ফাতহুল কাদীর] আয়াতের অর্থ এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা অনেক রহস্যের অধীনে ভূ-মণ্ডলকে নিবিড় ও ভারসাম্যবিহীন উপাদান দ্বারা সৃষ্টি করেননি। তাই এটা কোনো দিক দিয়ে ভারী এবং কোনো দিক দিয়ে হালকা হয়েছে। অন্যথায় এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি ছিল, ভূ-পৃষ্ঠের অস্থিরভাবে আন্দোলিত হওয়া। এই অস্থিরতাজনিত নড়াচড়া বন্ধ করা এবং পৃথিবীর উৎপাদনকে ভারসাম্যপূর্ণ করার জন্য আল্লাহ্ তা'আলা পৃথিবীতে পাহাড়ের ওজন স্থাপন করেন- যাতে পৃথিবী অস্থিরভাবে নড়াচড়া করতে না পারে। তাই এখানে (اَنْ تَمِيْدَ) এর পূর্বে كَرٰاهِيَة বা اِنْ এর পরে لا শব্দটি উহ্য ধরে নিয়ে অর্থ করতে হবে। [ফাতহুল কাদীর] এ আয়াত থেকে জানা যায়, ভূপৃষ্ঠে পর্বত শ্রেণী স্থাপনের উপকারিতা হচ্ছে, এর ফলে পৃথিবীর আবর্তন ও গতি সুষ্ঠ ও সুশৃংখল হয়। কুরআন মজীদের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড়ের এ উপকারিতা সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি, পাহাড়ের অন্য যে সমস্ত উপকারিতা আছে সেগুলো একেবারেই গৌণ। মূলত মহাশূন্যে আবর্তনের সময় পৃথিবীকে আন্দোলিত হওয়া থেকে রক্ষা করাই ভূপৃষ্ঠে পাহাড় স্থাপন করার মুখ্য উদ্দেশ্য। [আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]
[২] অর্থাৎ নদ-নদীর সাথে যে পথ তৈরী হয়ে যেতে থাকে। বিশেষ করে পার্বত্য এলাকাসমূহে এসব প্রাকৃতিক পথের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। অবশ্যি সমতল ভূমিতেও এগুলোর গুরুত্ব কম নয়। উপরে বাণিজ্যিক সফরের কথা বলা হয়েছে। তাই এসব সুযোগ-সুবিধার কথা এখানেও সমীচীন মনে হয়েছে, যেগুলো আল্লাহ তা'আলা পথিকদের পথ অতিক্রম ও মন্যিলে-মকসুদে পৌছার জন্য ভূ-মণ্ডল ও নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করেছেন। তাই পরবর্তী আয়াতে বলা হয়েছে
وَعَلامَاتٍ অর্থাৎ আমি পৃথিবীতে রাস্তা চেনার জন্য পাহাড়, নদী, বৃক্ষ, দালান-কোঠা ইত্যাদির সাহায্যে অনেক চিহ্ন স্থাপন করেছি। [ইবন কাসীর] বলাবাহুল্য, ভূ-পৃষ্ঠ যদি একটি চিহ্নবিহীন পরিমণ্ডল হতো তবে মানুষ কোনো গন্তব্যস্থানে পৌছার জন্য পথিমধ্যে কতই না ঘুরপাক খেত।
এবং পথ নির্দেশক চিহ্নসমূহও। আর তারা নক্ষত্রের সাহায্যে পথনির্দেশ পায় [১]।
[১] অর্থাৎ দিনের বেলায় পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য তিনি যেমন কিছু নিদর্শন রেখেছেন, তেমনি রাতের বেলায় পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য রেখেছেন তারকাসমূহ। দিনের বেলায় বিভিন্ন নিদর্শন দেখে আর রাতের বেলায় তারকাদের অবস্থান দৃষ্টে মানুষ বলতে পারে যে, তার গন্তব্যস্থল কোথায় হতে পারে। [জালালাইন, মুয়াসসার] আল্লাহ সমগ্র যমীনকে একই ধারায় সৃষ্টি করেননি; বরং প্রত্যেকটি এলাকাকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত করেছেন। এর অন্যান্য উপকারিতার মধ্যে একটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে এই যে, মানুষ নিজের পথ ও গন্তব্য আলাদাভাবে চিনে নেয়। সুতরাং তারকারাজি সৃষ্টি করার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে, রাস্তার পরিচয় লাভ। এগুলোর দ্বারা কোনো প্রকার ভাগ্য বা সৃষ্টিজগতের পরিচালনার নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করা কুফরী। কাতাদা রাহেমাহুল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ্ তা'আলা এ তারকাসমূহ তিনটি কারণে সৃষ্টি করেছেন, আকাশের সৌন্দর্য, শয়তানদের বিতাড়নকারী এবং কিছু আলামত যা দ্বারা পথের দিশা পাওয়া সম্ভব হয়। সুতরাং যে কেউ এর বাইরে অন্য কিছু দিয়ে এগুলোর ব্যাখ্যা করবে সে অবশ্যই ভুল করবে, তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে এবং এমন বস্তুর পিছনে অযথা দৌড়াবে যার ব্যাপারে তার কোনো জ্ঞান নেই।’ [বুখারী ৬/৩৪১]
কাজেই যিনি সৃষ্টি করেন, তিনি কি তার মত যে সৃষ্টি করে না? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না [১]?
[১] অর্থাৎ যদি তোমরা একথা মানো (যেমন বাস্তবে মক্কার কাফেররাও এবং দুনিয়ার অন্যান্য মুশরিকরাও মানতো) যে, একমাত্র আল্লাহই সব কিছুর স্রষ্টা বরং এ বিশ্বজগতে তোমাদের উপস্থাপিত শরীকদের একজনও কোনো কিছুই সৃষ্টি করেননি, তাহলে স্রষ্টার সৃষ্টি করা ব্যবস্থায় অস্রষ্টাদের মর্যাদা কেমন করে স্রষ্টার সমান হতে পারে? যদি তা না হয় তবে তার ইবাদাত ব্যতীত অন্যের ইবাদাত কেন করা হবে? তিনিই তো তোমাদের সৃষ্টিকর্তা, রিযকদাতা, তাঁর সাথে এই যে মূর্তিগুলোর ইবাদাত করা হয় সেগুলোও তো সৃষ্ট। সেগুলো কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে পারে না। যারা সেগুলোর ইবাদাত করে তাদের জন্যও এরা সামান্যতম লাভ বা ক্ষতি বয়ে আনতে পারে না। [ফাতহুল কাদীর]
আর তোমরা আল্লাহ্র অনুগ্রহ গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু [১]।
[১] আল্লাহর অপরিসীম অনুগ্রহের কথা বর্ণনা করার পরপরই তাঁর ক্ষমাশীল ও করুণাময় হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার যে নেয়ামত মানুষের উপর আছে তা দাবী করছে যে, মানুষ সর্বদা তাঁর শোকরগুজার হবে। কিন্তু আল্লাহ তাঁর অপার মহিমায় তাদের অপরাধ মার্জনা করেন। যদি তোমাদেরকে তার প্রতিটি নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় করতে বাধ্য করা হতো, তবে তোমরা কেউই সেটা করতে সক্ষম হতে না। যদি এ ধরণের নির্দেশ আসতো তবে তোমরা দুর্বল হয়ে যেতে এবং তা করা ছেড়ে দিতে। আর যদি তিনি এর জন্য তোমাদেরকে আযাব দিতেন তবে তিনি যালেম বিবেচিত হতেন না। কিন্তু আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল। অনেক কিছুই তিনি ক্ষমা করে দেন। অল্প কিছুরই শাস্তি দিয়ে থাকেন। [ইবন কাসীর]
তোমরা যদি তার কোনো কোনো নেয়ামতের শোকর আদায় করতে কিছুটা কসূর করে ফেল, তারপর তাওবাহ্ করো এবং তাঁর আনুগত্য ও সস্তুষ্টির দিকে ফিরে আসো তবে তিনি তোমাদেরকে অবশ্যই ক্ষমা করে দিবেন। তাওবাহ ও তার দিকে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি তো তোমাদের জন্য অতিশয় দয়ালু। [তাবারী]
আর তারা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য যাদেরকে ডাকে তারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয় [১]।
[১] আগের আয়াতে বলা হয়েছিল যে, এ সমস্ত উপাস্যগুলো নিজেরা কোনো কিছু সৃষ্টি করতে পারে না। এ আয়াতে তা আরও স্পষ্ট বর্ণনা দিচ্ছে যে, কাফেরদের উপাস্যগুলো ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য নয়। কারণ, সেগুলো কাউকে সৃষ্টি যেমন করতে পারে না। তেমনি নিজেরাও অন্যদের দ্বারা সৃষ্ট। পূর্বের আয়াতে শুধু তাদের ভালো গুণ অস্বীকার করা হয়েছিল। এখানে ভালো গুণ অস্বীকার করার সাথে সাথে খারাপ গুণও সাব্যস্ত করা হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]
তারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে সে বিষয়ে তাদের কোনো চেতনা নেই [১]।
[১] অর্থাৎ অতি ভক্তের দল এসব সত্তাকে সংকট নিরসনকারী, অভিযোগের প্রতিকারকারী, দরিদ্রের সহায়, ধনদাতা এবং না জানি আরো কত কিছু মনে করে নিজেদের প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য ডাকতে থাকে। অথচ এরা আসলে মৃত নিশ্চল বস্তু এগুলোতে কোনো রূহ নেই। এগুলো কোনো কথা শুনে না, দেখে না, বুঝেও না। আরও অতিরিক্ত হচ্ছে যে, এগুলো জানে না কখন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে, তাহলে তাদের কাছে কিভাবে কোনো উপকারের আশা করা যেতে পারে? কিভাবে সওয়াব ও প্রতিদানের আশা তাদের কাছে করা যায়? এটা তো শুধু তার কাছ থেকেই জানা যায় যে সবকিছু জানে এবং সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা। [ইবন কাসীর]
তোমাদের ইলাহ্ এক ইলাহ্, কাহেই যারা আখিরাতে ঈমান আনে না তাদের অন্তর অস্বীকারকারী [১] এবং তারা অহংকারী [২]।
[১] এ আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা জানাচ্ছেন যে, একমাত্র এক ও অমুখাপেক্ষী আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই। আর এটাও জানাচ্ছেন যে, কাফেররা তা অস্বীকার করে। তাদের মধ্যে ওয়ায নসীহত ও স্মরণ কোনো প্রতিক্রিয়া করতে পারে না। তারা হক গ্রহণের বদলে শুধু অহংকারই করে বেড়ায়, সঠিক কোনো কিছু মেনে নেয়াকে তারা অনেক বড় করে দেখে। অস্বীকার তাদের প্রকৃতিতে পরিণত হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর] তারা এ জন্য প্রায়ই শুধু আশ্চর্যবোধ করত। তারা বলত: “তিনি কি সমস্ত ইলাহকে এক ইলাহ বানিয়ে ফেলেছেন? এটা তো এক আশ্চর্য বস্তু"। [সূরা ছোয়াদ ৫] অন্য আয়াতে আল্লাহ তাদের অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, “শুধু এক আল্লাহর কথা বলা হলে যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর বিতৃষ্ণায় সংকুচিত হয় এবং আল্লাহর পরিবর্তে উপাস্যগুলোর উল্লেখ করা হলে তারা আনন্দে উল্লসিত হয়।" [সূরা আয-যুমার ৪৫]
[২] তাদের অহংকারের কারণে আল্লাহ তাদেরকে কঠোর শাস্তি দিবেন। সূরা গাফেরের ৬০ নং আয়াতেও আল্লাহ তা উল্লেখ করেছেন। [ইবন কাসীর] হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার অন্তরে সামান্যতম অহংকারও থাকবে সে জান্নাতে যাবে না। আর যার অন্তরে সামান্যতম ঈমানও থাকবে সে জাহান্নামে থাকবে না। একলোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! কোনো লোক যদি চায় যে তার কাপড় সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক? তিনি বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর তিনি সুন্দর পছন্দ করেন। অহংকার হচ্ছে হককে না মানা ও মানুষকে হেয় করে দেখা। [মুসলিম ৯১]
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমাদের রব কী নাযিল করেছেন? তখন তারা বলে, পূর্ববর্তীদের উপকথা! [১]’
[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াতের চর্চা যখন চারদিকে হতে লাগলো তখন মক্কার লোকেরা যেখানেই যেতো সেখানেই তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হতো, তোমাদের এখানে যে ব্যক্তি নবী হয়ে এসেছেন তিনি কি শিক্ষা দেন? কুরআন কোন ধরনের কিতাব, তার মধ্যে কী বিষয়ের আলোচনা করা হয়েছে? ইত্যাদি ইত্যাদি। এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে মক্কার কাফেররা সবসময় এমন সব শব্দ প্রয়োগ করতো যাতে প্রশ্নকারীর মনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তিনি যে কিতাবটি এনেছেন সে সম্পর্কে কোনো না কোনো সন্দেহ জাগতো অথবা কমপক্ষে তার মনে নবীর বা তাঁর নবুওয়াতের ব্যাপারে সকল প্রকার আগ্রহ খতম হয়ে যেত। [এ ব্যাপারে আরো দেখুন, সূরা আল-ফুরকান ৫]
এভাবেই তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর মিথ্যাচার করতো এবং তার সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী সম্পূর্ণ অসার অলীক বাতিল কথাবার্তা বলতো। কেননা যারাই হকের বিপরীতে কথা বলবে, তারা যত প্রকারের কথাই বলুক না কেন, সবই ভুল ও অসার হতে বাধ্য। তারা বলত, জাদুকর, কবি, গণক, পাগল। শেষ পর্যন্ত তারা তাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক ওলীদ ইবন মুগীরা আল-মাখযুমী যা বলেছিল তাতেই সবাই একমত হয়েছিল। আল্লাহ বলেন, “সে তো চিন্তা করল এবং সিদ্ধান্ত করল। সুতরাং ধ্বংস হোক সে! কেমন করে সে এ সিদ্ধান্ত করল! তারপরও ধবংস হোক সে! কেমন করে সে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হল! তারপর সে তাকাল। তারপর সে ভ্ৰকুঞ্চিত করল ও মুখ বিকৃত করল। তারপর সে পিছন ফিরল এবং অহংকার করল। অতঃপর সে বলল, এটা তো লোক পরম্পরায় প্রাপ্ত জাদু ভিন্ন আর কিছু নয়।” [সূরা আল-মুদ্দাসসির ২৪]
অর্থাৎ বলা হয়ে থাকে যে, তার আনিত বিষয় জাদু। শেষপর্যন্ত তারা এটার উপর পরস্পর একমত হয়ে চলে যায়। [ইবন কাসীর]
ফলে কিয়ামতের দিন তারা বহন করবে তাদের পাপের বোঝা পূর্ণ মাত্রায় এবং তাদেরও পাপের বোঝা যাদেরকে তারা অজ্ঞতাবশত বিভ্রান্ত করেছে [১]। দেখুন, তারা যা বহন করবে তা কত নিকৃষ্ট !
[১] যারাই কারো পথভ্রষ্টতার কারণ হবে তারাই ভ্ৰষ্টদের যাবতীয় পাপের ভাগী হবে। অন্য আয়াতেও আল্লাহ বলেন, “তারা তো বহন করবে নিজেদের ভার এবং নিজেদের বোঝার সাথে আরো কিছু বোঝা; আর তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করত সে সম্পর্কে কিয়ামতের দিন অবশ্যই তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।" [সূরা আল-আনকাবূত ১৩]
অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "কেউ ভালো কাজের সূচনা করলে যত লোক এর উপর আমল করবে তত লোকের আমলের সমপরিমান সওয়াব তার জন্য লিখা হবে, আর কেউ মন্দ কাজের সূচনা করলে যত লোক এ কাজ করবে ততলোকের কাজের সমপরিমান গুণাহ তার জন্য লিখা হবে। অথচ তাদের গুণাহের সামান্যতমও কমতি করা হবেনা।” [মুসলিম ১০১৭]
অবশ্যই তাদের পূর্ববর্তীগণ চক্রান্ত করেছিল; অতঃপর আল্লাহ্ তাদের ইমারতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন; ফলে ইমারতের ছাদ তাদের উপর ধ্বসে পড়ল এবং তাদের প্রতি শাস্তি আসল এমনভাবে যে, তারা উপব্ধি করতে পারেনি [১]
[১] এ আয়াতে কাদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে এ ব্যাপারে আলেমগণ বিভিন্ন মত পোষণ করেছেন। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, এর দ্বারা নমরূদকে বুঝানো হয়েছে। যে নিজেকে ইলাহ বলে দাবী করেছিল এবং আকাশে উঠার জন্য সিঁড়ি স্থাপন করেছিল। সে সিঁড়ির মুলোৎপাটিত করা হয়েছিল। তারপর আল্লাহ তাকে সামান্য একটি মশা দিয়ে শাস্তি দিয়েছিলেন যা তার নাকের ছিদ্র পথে ঢুকে গিয়েছিল। তারপর চারশ’ বছর পর্যন্ত সে এ শাস্তি ভোগ করেছে। তার কাছে ঐ ব্যক্তি বেশী দরদী বলে বিবেচিত হতো যে দুহাতে হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় পেটাতো। সে চারশ’ বছর মানুষকে পদানত করে রেখেছিল। তাই আল্লাহ্ তাকে চারশ’ বছর পর্যন্ত হাঁতুড়ির পেটা খাইয়েছেন। তারপর আল্লাহ তাকে মৃত্যু দেন। [ইবন কাসীর] কোনো কোনো মুফাসসির অবশ্য বলেন যে, এ আয়াতের উদ্দেশ্য বুখতনাসর। [ইবন কাসীর] তার সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা ইয়াহুদী ও নাসারাদের গ্রন্থে এসেছে। অবশ্য অধিকাংশ মুফাসসির বলেন, এখানে কোনো সুনির্দিষ্ট লোক না বুঝিয়ে যারাই আল্লাহর দীন থেকে মানুষকে বিরত রাখার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ও কুটকৌশল অবলম্বন করেছিল তাদের সবার জন্য উদাহরণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে। [ইবন কাসীর] বিভিন্ন সূরায় আল্লাহ তা'আলা এ বিষয়টি বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন। [দেখুন, সূরা ইবরাহীম ৪৬, সূরা নূহ ২২, সূরা সাবা ৩৩]
Contents of the translations can be downloaded and re-published, with the following terms and conditions:
1. No modification, addition, or deletion of the content.
2. Clearly referring to the publisher and the source (QuranEnc.com).
3. Mentioning the version number when re-publishing the translation.
4. Keeping the transcript information inside the document.
5. Notifying the source (QuranEnc.com) of any note on the translation.
6. Updating the translation according to the latest version issued from the source (QuranEnc.com).
7. Inappropriate advertisements must not be included when displaying translations of the meanings of the Noble Quran.
تلاش کے نتائج:
API specs
Endpoints:
Sura translation
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/sura/{translation_key}/{sura_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified sura (by its number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114)
Returns:
json object containing array of objects, each object contains the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/aya/{translation_key}/{sura_number}/{aya_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified aya (by its number sura_number and aya_number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114) aya_number: [1-...] (Aya number in the sura)
Returns:
json object containing the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".