قرآن کریم کے معانی کا ترجمہ - بنگالی ترجمہ - ابو زکریا * - ترجمے کی لسٹ


معانی کا ترجمہ آیت: (125) سورت: سورۂ بقرہ
وَإِذۡ جَعَلۡنَا ٱلۡبَيۡتَ مَثَابَةٗ لِّلنَّاسِ وَأَمۡنٗا وَٱتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبۡرَٰهِـۧمَ مُصَلّٗىۖ وَعَهِدۡنَآ إِلَىٰٓ إِبۡرَٰهِـۧمَ وَإِسۡمَٰعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيۡتِيَ لِلطَّآئِفِينَ وَٱلۡعَٰكِفِينَ وَٱلرُّكَّعِ ٱلسُّجُودِ
আর স্মরণ করুন [১], যখন আমরা কা’বা ঘরকে মানবজাতির মিলনকেন্দ্র [২] ও নিরাপত্তাস্থল [৩] করেছিলাম এবং বলেছিলাম, তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থান রূপে গ্রহণ করো [৪]। আর ইবরাহীম ও ইসমা’ঈলকে আদেশ দিয়েছিলাম তাওয়াফকারী, ই’তিকাফকারী, রুকূ’ ও সিজদাকারীদের জন্য [৫] আমার ঘরকে পবিত্র রাখতে [৬]।
[১] এই আয়াতে কা'বা গৃহের ইতিহাস, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম ও ইসমাঈল ‘আলাইহিস সালাম কর্তৃক কা'বা গৃহের নির্মাণ, কাবা ও মক্কার কতিপয় বৈশিষ্ট্য এবং কা'বা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধি-বিধান উল্লেখিত হয়েছে। এ বিষয়টি কুরআনের অনেক সূরায় ছড়িয়ে রয়েছে। পরবর্তী আয়াতসমূহে এর কিছু বর্ণনা আসছে।

[২] (مثابةً) শব্দের অর্থ প্রত্যাবর্তনস্থল। এ শব্দ থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ্‌ তা'আলা কাবা গৃহকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। ফলে তা সর্বদাই মানবজাতির প্রত্যাবর্তনস্থল হয়ে থাকবে এবং মানুষ বার বার তার দিকে ফিরে যেতে আকাংখী হবে। মুফাসসির মুজাহিদ বলেন, ‘কোনো মানুষ কা'বা গৃহের যিয়ারত করে তৃপ্ত হয় না, বরং প্রতিবারই যিয়ারতের অধিক বাসনা নিয়ে ফিরে আসে।' [আত-তাফসীরুস সহীহ] কোনো কোনো আলেমের মতে, কা'বা গৃহ থেকে ফিরে আসার পর আবার সেখানে যাওয়ার আগ্রহ হজ কবুল হওয়ার অন্যতম লক্ষণ। সাধারণভাবে দেখা যায়, প্রথমবার কা'বাগৃহ যিয়ারত করার যতটুকু আগ্রহ থাকে, দ্বিতীয়বার তা আরও বৃদ্ধি পায় এবং যতবারই যিয়ারত করতে থাকে, এ আগ্রহ উত্তরোত্তর ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ বিস্ময়কর ব্যাপারটি একমাত্র কা'বারই বৈশিষ্ট্য। নতুন জগতের শ্রেষ্ঠতম মনোরম দৃশ্যও এক-দু’বার দেখেই মানুষ পরিতৃপ্ত হয়ে যায়। পাঁচ-সাতবার দেখলে আর দেখার ইচ্ছাই থাকে না। অথচ এখানে না আছে কোনো মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট, না এখানে পৌছা সহজ এবং না আছে ব্যবসায়িক সুবিধা, তা সত্ত্বেও এখানে পৌছার আকুল আগ্রহ মানুষের মনে অবিরাম ঢেউ খেলতে থাকে। হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে অপরিসীম দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে এখানে পৌছার জন্য মানুষ ব্যাকুল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। [ তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন ]

[৩] (امنا) শব্দের অর্থ (مأمن) অর্থাৎ শান্তির আবাসস্থল। আর (بيت) শব্দের অর্থ ঘর। তবে এখানে শুধু কাবাগৃহ উদ্দেশ্য নয়, বরং সম্পূর্ণ মসজিদুল হারাম। কুরআনে (بيت اللّٰه) ও (كعبة) বলে সমগ্র হারাম শরীফকে বুঝানো হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে,

(ثُمَّ مَحِلُّهَآ اِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ)

“তারপর তাদের যবাইয়ের স্থান হচ্ছে প্রাচীন ঘরটির কাছে।" [সূরা আল-হাজ:৩৩]
কারণ, এতে কুরবানী যবাই করার কথা আছে। কুরবানী কাবা গৃহের অভ্যন্তরে হয় না। কাজেই আয়াতের অর্থ হবে যে, ‘আমরা কাবার হারাম শরীফকে শান্তির আলোয় করেছি’। শান্তির আলয় করার অর্থ মানুষকে নির্দেশ দেয়া যে, এ স্থানকে সাধারণ হত্যা ও যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি অশান্তি জনিত কার্যকলাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।

[৪] এখানে মাকামে ইবরাহীমের অর্থ ঐ পাথর, যাতে মু'জিযা হিসেবে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের পদচিহ্ন অংকিত হয়ে গিয়েছিল। কা'বা নির্মাণের সময় এ পাথরটি তিনি ব্যবহার করেছিলেন। [সহীহ আল-বুখারী] আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি এই পাথরে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের পদচিহ্ন দেখেছি। যিয়ারত কারীদের উপর্যুপরি স্পর্শের দরুন চিহ্নটি এখন অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে মাকামে ইবরাহীমের ব্যাখ্যা প্রসংগে বর্ণিত রয়েছে যে, সমগ্র হারাম শরীফই মাকামে ইবরাহীম। এর অর্থ বোধ হয় এই যে, তাওয়াফের পর যে দু রাকাআত সালাত মাকামে ইবরাহীমে আদায় করার নির্দেশ আলোচ্য আয়াতে রয়েছে, তা হারাম শরীফের যে কোনো অংশে পড়লেই চলে। অধিকাংশ আলেম এ ব্যাপারে একমত।

আয়াতে মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের জায়গা করে নিতে বলা হয়েছে। স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের সময় কথা ও কর্মের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। তিনি তাওয়াফের পর কা'বা গৃহের সম্মুখে অনতিদূরে রক্ষিত মাকামে ইবরাহীমের কাছে আগমন করলেন এবং এ আয়াতটি পাঠ করলেন, অতঃপর মাকামে ইবরাহীমের পিছনে এমনভাবে দাড়িয়ে দুরাকাআত সালাত আদায় করলেন যে, কা'বা ছিল তার সম্মুখে এবং কাবা ও তার মাঝখানে ছিল মাকামে ইবরাহীম। [দেখুন, সহীহ মুসলিম ১২১৮] আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাওয়াফ পরবতী দুই রাকাআত সালাত ওয়াজিব।

[৫] শব্দগুলো থেকে কতিপয় বিধি-বিধান প্রমাণিত হয়। প্রথমতঃ কা'বা গৃহ নির্মাণের উদ্দেশ্য তাওয়াফ, ইতেকাফ ও সালাত। দ্বিতীয়তঃ তাওয়াফ আগে আর সালাত পরে। তৃতীয়তঃ ফরয হোক কিংবা নফল কা'বা গৃহের অভ্যন্তরে যে কোনো সালাত আদায় করা বৈধ ৷

[৬] এখানে কা'বাগৃহকে পাক-সাফ করার নির্দেশ বর্ণিত হয়েছে। বাহ্যিক অপবিত্রতা ও আবর্জনা এবং আত্মিক অপবিত্রতা উভয়টিই এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন কুফর, শির্ক, দুশ্চরিত্রতা, হিংসা, লালসা, কুপ্রবৃত্তি, অহংকার, রিয়া, নাম-যশ ইত্যাদির কলুষ থেকেও কা'বা গৃহকে পবিত্র রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ্‌র ঘরের আসল পবিত্রতা হচ্ছে এই যে, সেখানে আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কারো নাম উচ্চারিত হবে না। যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র ঘরে বসে আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কাউকে মালিক, প্রভূ, মা’বুদ, অভাব পূরণকারী ও ফরিয়াদ শ্রবণকারী হিসেবে ডাকে, সে আসলে তাকে নাপাক ও অপবিত্র করে দিয়েছে। এ নির্দেশে (بيتى) শব্দ দ্বারা ইংগিত করা হয়েছে যে, এ আদেশ যে কোনো মসজিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ, সব মসজিদই আল্লাহ্‌র ঘর। কুরআনে বলা হয়েছে, (فِيْ بُيُوْتٍ اَذِنَ اللّٰهُ اَنْ تُرْفَعَ) উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদে এক ব্যক্তিকে উচ্চঃস্বরে কথা বলতে শুনে বললেন - তুমি কোথায় দাড়িয়ে আছ, জান না? অর্থাৎ মসজিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত, এতে উচ্চঃস্বরে কথা বলা উচিত নয়। মোটকথা, আলোচ্য আয়াতে কা'বা গৃহকে যেমন যাবতীয় বাহ্যিক ও আত্মিক অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রাখতে বলা হয়েছে, তেমনি অন্যান্য মসজিদকেও পাক-পবিত্র রাখতে হবে। দেহ ও পোষাক-পরিচ্ছদকে যাবতীয় অপবিত্রতা ও দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু থেকে পাক-সাফ করে এবং অন্তরকে কুফর, শির্ক, দুশ্চরিত্রতা, অহংকার, হিংসা, লোভ-লালসা ইত্যাদি থেকে পবিত্র করে মসজিদে প্রবেশ করা কর্তব্য। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি দুৰ্গন্ধযুক্ত বস্তু খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে বারণ করেছেন। [ মা'আরিফুল কুরআন ]।
عربی تفاسیر:
 
معانی کا ترجمہ آیت: (125) سورت: سورۂ بقرہ
سورتوں کی لسٹ صفحہ نمبر
 
قرآن کریم کے معانی کا ترجمہ - بنگالی ترجمہ - ابو زکریا - ترجمے کی لسٹ

قرآن کریم کے معانی کا بنگالی زبان میں ترجمہ: ڈاکٹر ابوبکر محمد زکریا نے کیا ہے۔

بند کریں