৪. আমি আকাশ থেকে এমন কোন নিদর্শন নাযিল করার ইচ্ছা করলে তা করতে পারতাম যার সামনে তারা নিজেদের ঘাড়গুলোকে নিচু ও অবনমিত করতে বাধ্য হতো। কিন্তু আমি তা করিনি, তাদেরকে এ পরীক্ষা করার জন্য যে, তারা সত্যিই অদৃশ্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে কিনা?
৫. যখনই দয়ালু প্রভুর পক্ষ থেকে তাঁর তাওহীদ ও তাঁর নবীর সত্যতা বুঝায় এমন প্রমাণাদিসহ নতুনভাবে কোন উপদেশ আসে তখনই তারা তা শুনা ও বিশ্বাস করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
৬. তাদের রাসূল তাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন তারা তা অস্বীকার করেছে। তাই অচিরেই তাদের নিকট তাদের ঠাট্টাকৃত সংবাদগুলোর বাস্তবতা নেমে আসবে এবং তাদের উপর আযাব অবতরণ হবে।
৮. নিশ্চয়ই জমিনে হরেক রকমের উদ্ভিদ তৈরির মাঝে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, নিশ্চয়ই এগুলোর তৈরিকারক মৃতদেরকেও জীবিত করতে সক্ষম। তারপরও তাদের অধিকাংশরা এ ব্যাপারে ঈমান আনে না।
১০. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন আপনার প্রতিপালক মূসা (আলাইহিস-সালাম) কে এ আদেশ করে ডেকে বললেন যে, তিনি যেন সেই যালিম সম্প্রদায়ের নিকট আসেন যারা আল্লাহর সাথে কুফরি ও মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায়কে গোলাম বানিয়ে নিয়েছে।
১৩. ফলে তাদের মিথ্যারোপের দরুন আমার অন্তর সঙ্কীর্ণ হয়ে যাবে এবং আমার কথা মুখে আটকে যাবে। তাই আপনি জিব্রীল (আলাইহিস-সালাম) কে আমার ভাই হারূনের নিকট পাঠান যেন সে আমার সহযোগী হতে পারে।
১৫. আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আলাইহিস-সালাম) কে বললেন: না, কক্ষনোই না, তারা কষ্মিন কালেও তোমাকে হত্যা করতে পারবে না। তাই তুমি ও তোমার ভাই হারূন তার নিকট তোমাদের সত্যতা বুঝায় এমন নিদর্শনাবলী নিয়ে যাও। নিশ্চয়ই আমি সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে তোমাদের সাথেই রয়েছি। আমি তোমরা যা বলো এবং তোমাদেরকে যা বলা হয় তা সবই শুনছি। এর কোন কিছুই আমার আয়ত্বের বাইরে নয়।
১৮. ফিরআউন মূসা (আলাইহিস-সালাম) কে বললো: আমরা কি তোমাকে শিশুকালে আমাদের কাছে রেখে লালন-পালন করিনি? আর তুমি কি নিজ বয়সের অনেকগুলো বছর আমাদের মাঝে কাটাওনি? তাহলে তুমি কেন আবার নবুওয়াতের দাবি করতে গেলে?
১৯. আর তুমি একটি মহা অন্যায় কাজ করেছো যখন তুমি নিজ বংশের একজনকে সাহায্য করতে গিয়ে একজন কিবতীকে হত্যা করেছো। তুমি মুলতঃ তোমাকে দেয়া আমার অনুগ্রহসমূহকে অস্বীকার করেছো।
ক. মানুষের হিদায়েতের জন্য রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দীর্ঘ আকাক্সক্ষা ছিলো।
• إثبات صفة العزة والرحمة لله.
খ. আল্লাহর জন্য সম্মান ও রহমতের বৈশিষ্ট্যদ্বয় সাব্যস্ত করা।
• أهمية سعة الصدر والفصاحة للداعية.
গ. একজন দা‘য়ীর জন্য বাকপটুতা ও প্রশস্ত অন্তরের গুরুত্ব অপরিসীম।
• دعوات الأنبياء تحرير من العبودية لغير الله.
ঘ. নবীদের দা’ওয়াত হলো মানুষকে আল্লাহ ছাড়া অন্য যে কারো গোলামি থেকে মুক্ত করার দা’ওয়াত।
• احتج فرعون على رسالة موسى بوقوع القتل منه عليه السلام فأقر موسى بالفعلة، مما يشعر بأنها ليست حجة لفرعون بالتكذيب.
ঙ. ফিরআউন মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর রিসালাতের বিরুদ্ধে তাঁর মাধ্যমে সংঘটিত হত্যাকাÐকে প্রমাণ হিসেবে দাঁড় করালো। আর মূসা (আলাইহিস-সালাম) ও উক্ত কর্মের কথা স্বীকার করলেন। যা এ কথা বুঝায় যে, হত্যাকাÐটি মূলতঃ ফিরআউনের অস্বীকারের কোন প্রমাণ হতে পারে না।
২১. আমি সত্যিই তাকে হত্যা করার পর তার পরিবর্তে আমাকে হত্যা করার ভয়ে তোমাদের কাছ থেকে মাদয়ান এলাকায় পালিয়ে গিয়েছি। অতঃপর আমার প্রতিপালক আমাকে জ্ঞান দিয়েছেন এবং আমাকে তাঁর রাসুলদের অন্যতম বানিয়েছেন যাঁদেরকে তিনি মানুষের কাছে পাঠিয়ে থাকেন।
২২. আর বনী ইসরাঈলের ন্যায় আমাকে গোলাম না বানিয়ে স্বাধীনভাবে আমাকে লালন-পালন করা সত্যিই এমন একটি নিয়ামত যার খোঁটা তুমি আমাকে দিচ্ছো। তবে তা আমাকে তোমার প্রতি দা’ওয়াত দেয়া থেকে বিরত রাখতে পারবে না।
২৪. মূসা (আলাইহিস-সালাম) ফিরআউনের উত্তরে বললেন: তিনি সকল সৃষ্টির মালিক যিনি আকাশ, জমিন ও এতদুভয়ের মধ্যকার সব কিছুর মালিক। যদি তোমরা বিশ্বাস করো যে, নিশ্চয়ই তিনি তাদের প্রতিপালক তাহলে তোমরা এককভাবে তাঁরই ইবাদাত করো।
২৭. ফিরআউন বললো: নিশ্চয়ই যে দাবি করছে যে, সে তোমাদের নিকট একজন প্রেরিত রাসূল সে তো অবশ্যই একজন পাগল। সে কীভাবে উত্তর দিবে তা বুঝে না এবং যা বুঝে না তাই বলে বেড়ায়।
২৮. মূসা (আলাইহিস-সালাম) বললেন: যে আল্লাহর দিকে আমি তোমাদেরকে ডাকছি তিনি পূর্ব, পশ্চিম ও এতদুভয়ে মধ্যকার সবকিছুর মালিক। তোমাদের যদি কোন বুদ্ধি-বিবেক থাকে তাহলে তোমরা তা বুঝতে পারবে।
৩০. মূসা (আলাইহিস-সালাম) ফিরআউনকে বললেন: আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নিয়ে এসেছি তার সত্যতা প্রমাণ করে এমন কিছুও যদি তোমার নিকট নিয়ে আসি তারপরও কি তুমি আমাকে জেলে বন্দি করবে?
৩৬. তারা তাকে বললো: মূসা (আলাইহিস-সালাম) ও তার ভাইকে কিছু সময় দিন। তাদেরকে দ্রæত শাস্তি দিবেন না। বরং মিশরের শহরে শহরে যাদুকরদেরকে একত্রিত করার জন্য লোক পাঠিয়ে দিন।
৪১. যখন যাদুকররা মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য ফিরআউনের নিকট আসলো তখন তারা তাকে বললো: আমরা যদি মূসার উপর বিজয়ী হই তাহলে আমাদের জন্য কি কোন আর্থিক বা মর্যাদাগত প্রতিদান রয়েছে?
৪২. ফিরআউন তাদেরকে বললো: হ্যাঁ, তোমাদের জন্য প্রতিদান রয়েছে। তোমরা যদি তার উপর বিজয়ী হও তাহলে অবশ্যই তোমরা আমার নিকটবর্তীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। তথা তোমাদেরকে সুউচ্চ পদাবলী দেয়া হবে।
৪৩. মূসা (আলাইহিস-সালাম) আল্লাহর সাহায্যের উপর আস্থা রেখে এবং এ কথা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা দিয়ে যে, তাঁর নিকট যা রয়েছে তা যাদু নয় তাদেরকে বললেন: তোমরা যে রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করার জন্য এনেছো সেগুলো নিক্ষেপ করো।
৪৪. অতঃপর তারা নিজেদের রশি ও লাঠিগুলো নিক্ষেপ করলো এবং সেগুলো নিক্ষেপ করার সময় তারা বললো: ফিরআউনের ইজ্জতের কসম! নিশ্চয়ই আমার বিজয়ী হবো এবং মূসা পরাজিত হবে।
৪৯. ফিরআউন যাদুকরদের ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে বললো: তোমরা কি আমার অনুমতির পূর্বেই মূসার উপর ঈমান এনে ফেলেছো?! নিশ্চয়ই মূসা তোমাদেরই মহাগুরু যে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে। নিশ্চয়ই তোমরা সবাই মিশরবাসীকে মিশর থেকে বের করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছো। তাই তোমরা অচিরেই জানতে পারবে আমি তোমাদেরকে যে শাস্তি দেবো। আমি অবশ্যই তোমাদের সকলের হাত-পাগুলোকে বিপরীত দিক থেকে কেটে দেবো। তথা ডান পা ও বাম হাত এবং বাম পা ও ডান হাত। আর তোমাদের সবাইকে খেজুর গাছের গুঁড়িতে শূলে চড়াবো। আমি আর তোমাদের কাউকে জীবন্ত বাকি রাখবো না।
৫০. যাদুকররা ফিরআউনকে বললো: তোমরা দুনিয়াতে যে হত্যাকাÐ ও শূলে চড়ানোর হুমকি দিচ্ছো তাতে আমাদের কোন ক্ষতি নেই। কারণ, তোমার শাস্তি তো একসময় শেষ হয়ে যাবে। আর আমরা নিজেদের প্রতিপালকের নিকট চলে যাবো। তিনি আমাদেরকে অচিরেই তাঁর স্থায়ী রহমতে প্রবেশ করাবেন।
৫১. আমরা আশা করছি যে, আল্লাহ তা‘আলা আমাদের কৃত পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। কারণ, আমরা মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর উপর সর্বপ্রথম ঈমান আনয়নকারী এবং তাঁকে সত্যায়নকারী।
৫২. আমি মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর নিকট ওহী পাঠালাম যেন তিনি বনী ইসরাঈলকে সাথে নিয়ে রাত্রি বেলায় বের হয়ে যান। কারণ, ফিরআউন ও তার সাথীরা তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের পিছু নিবে।
৫৩. অতঃপর ফিরআউন যখন মিশর থেকে তাদের চলে যাওয়ার খবর পেলো তখন তার কিছু সেনা অফিসারকে বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দিলো। তারা যেন বনী ইসরাঈলকে ফেরত আনার জন্য প্রচুর সেনাবাহিনী জমা করে।
৫৯. যেমনিভাবে আমি ফিরআউন ও তার সম্প্রদায়কে এ নিয়ামতসমূহ থেকে বের করে দিয়েছি তেমনিভাবে আমি এ জাতীয় নিয়ামতসমূহ তাদের পরের সিরিয়াবাসী বনী ইসরাঈলকে দিয়েছি।
৬১. যখন ফিরআউন ও তার সম্প্রদায় মূসা (আলাইহিস-সালাম) ও তাঁর সম্প্রদায়ের মুখোমুখী হলো তথা তাদের এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দেখতে পেলো তখন মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সাথীরা বললো: নিশ্চয়ই ফিরআউন ও তার সম্প্রদায় আমাদেরকে অচিরেই পেয়ে বসবে। তাদের মুকাবিলা করা আমাদের পক্ষে সম্ভবপর নয়।
৬২. মূসা (আলাইহিস-সালাম) তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন: তোমরা যা মনে করছো ব্যাপারটি তেমন নয়। কারণ, সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে আমার সাথে আমার প্রতিপালক রয়েছেন। তিনি অচিরেই আমাদেরকে বাঁচার সঠিক পথ দেখিয়ে দিবেন।
৬৩. অতঃপর আমি মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর নিকট সাগরে তাঁর লাঠি দিয়ে আঘাত করার আদেশ করে ওহী পাঠালাম। তাই তিনি লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সাগরখানা চিরে বনী ইসরাঈলের বংশগুলোর সংখ্যানুযায়ী বারোটি রাস্তা সৃষ্টি হলো। ফলে সাগরের পানি স্থির হয়ে সুবিশাল পাহাড়ের মতো হয়ে গেলো। যে কারণে পানির প্রবাহ বন্ধ রইলো।
৬৭. নিশ্চয়ই মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর জন্য সাগর ফেটে যাওয়া ও তাঁর মুক্তি এবং ফিরআউন ও তার সম্প্রদায় ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মধ্যে মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সত্যতার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বস্তুতঃ ফিরআউনের সম্প্রদায়ের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
৬৮. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক অবশ্যই পরাক্রমশালী যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ নেন। তেমনিভাবে তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দার প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
৭৪. তারা বললো: আমরা তাদেরকে ডাকলে তারা আমাদের ডাক শুনে না। না তারা আমাদের কোন উপকার করতে পারে যদি আমরা তাদের আনুগত্য করি। না তারা আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারি যদি আমরা তাদের অবাধ্য হই। বরং প্রকৃত ঘটনা হলো এই যে, আমরা নিজেদের বাপ-দাদাকে তা করতে দেখেছি। তাই আমরা তাদের অনুসরণ করি।
৮৩. ইব্রাহীম (আলাইহিস-সালাম) তাঁর প্রতিপালককে ডেকে বললেন: হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে ধর্মীয় বুঝ দিন এবং আমাকে আমার পূর্বের নেককার নবীদের সাথী বানান তথা আমাকে তাদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করান।
৮৫. আর আপনি আমাকে ওদের অন্তর্ভুক্ত করুন যারা এমন জান্নাতের মর্যাদাপূর্ণ স্থানসমূহের উত্তরাধিকারী হবে যাতে আপনার মু’মিন বান্দারা নিয়ামতপ্রাপ্ত হবে। উপরন্তু আপনি আমাকে সেখানে বসবাসের সুযোগ করে দিন।
৮৬. আর আপনি আমার পিতাকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই সে তো শিরকের দরুন সত্যভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত। মূলতঃ ইব্রাহীম (আলাইহিস-সালাম) তাঁর পিতার জন্য দু‘আ করেছেন এ কথা তাঁর নিকট সুস্পষ্ট হওয়ার আগে যে, নিশ্চয়ই সে জাহান্নামী। তবে যখন তাঁর নিকট ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হয়ে গেলো তখন তিনি তার থেকে দায়িত্বমুক্ত হন এবং তার জন্য আর কোন দু‘আ করেননি।
৮৯. কিন্তু যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট পরিচ্ছন্ন অন্তর নিয়ে আসবে সেই লাভবান হবে। যাতে কোন ধরনের শিরক, মুনাফিকি, কাউকে দেখানোর মনোভাব ও অহঙ্কার থাকবে না। তবে সে ওই সম্পদ কর্তৃক লাভবান হবে যা সে আল্লাহর পথে খরচ করেছে এবং ওই সন্তানাদি কর্তৃক লাভবান হবে যারা তার জন্য দু‘আ করেছে।
৯৩. তোমরা আল্লাহ ছাড়া যেগুলোর পূজা করতে সেগুলো? তারা কি আজ তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা করে তোমাদের সাহায্য করতে পারবে, না তারা নিজেরাই নিজেদের সাহায্য করতে পারবে?
১০৩. ইব্রাহীম (আলাইহিস-সালাম) এর উক্ত ঘটনায় এবং তাঁর প্রতি মিথ্যারোপকারীদের পরিণতিতে শিক্ষা গ্রহণকারীদের জন্য অবশ্যই শিক্ষা রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
১০৭. নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরই রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তোমাদের কাছেই পাঠিয়েছেন। আমি একজন আমানতদারও বটে। আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট যে ওহী পাঠিয়েছেন আমি তার চেয়ে এতটুকুও বেশ-কম করি না।
১০৯. আমি নিজ প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট যা পৌঁছিয়ে দেই সে ব্যাপারে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সকল সৃষ্টির মালিক আল্লাহর নিকটই; অন্য কারো নিকট নয়।
১১১. তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে বললো: হে নূহ! আমরা কি তোমাকে বিশ্বাস করে তোমার আনীত বিধানকে মেনে চলবো ও সে অনুযায়ী আমল করবো; অথচ তোমার অনুসারীরা সমাজের নি¤œ শ্রেণীর মানুষ। তাদের মাঝে কোন নেতৃস্থানীয় ও সম্মানী লোক নেই?!
• أهمية سلامة القلب من الأمراض كالحسد والرياء والعُجب.
ক. হিংসা, লোক দেখানো এবং আত্মঅহঙ্কারের মতো রোগসমূহ থেকে অন্তরকে মুক্ত রাখার গুরুত্ব।
• تعليق المسؤولية عن الضلال على المضلين لا تنفع الضالين.
খ. পরকালে ভ্রষ্টকারীদের উপর ভ্রষ্টতার দায়-দায়িত্ব চাপিয়ে দিলে বস্তুতঃ ভ্রষ্টদের কোন লাভ হবে না।
• التكذيب برسول الله تكذيب بجميع الرسل.
গ. আল্লাহর কোন একজন রাসূলের প্রতি মিথ্যারোপ মূলতঃ সকল রাসূলের প্রতিই মিথ্যারোপ।
• حُسن التخلص في قصة إبراهيم من الاستطراد في ذكر القيامة ثم الرجوع إلى خاتمة القصة.
ঘ. ইব্রাহীম (আলাইহিস-সালাম) এর ঘটনার সুন্দর পরিসমাপ্তির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে কিয়ামতের কথা উল্লেখ করা হলো। এরপর আবারো সেই ঘটনার পরিসমাপ্তির দিকে ফিরে আসা হলো।
১১২. নূহ (আলাইহিস-সালাম) তাদেরকে বললেন: এ মু’মিনদের ধর্মকর্মের পেছনে কোন্ উদ্যোগ কাজ করছে এবং তার মূল্যই বা কি সে সম্পর্কে জানার কোন মাধ্যম আমার কাছে নেই। এ বিষয়টি দেখা ও তার হিসাব রাখা আমার কাজ নয়।
১১৩. তাদের হিসাবের দায়িত্ব কেবল আল্লহর উপর। যিনি তাদের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব কিছুই জানেন। হায়! তোমরা যদি এ বিষয়টির মর্ম উপলব্ধি করতে পারতে তাহলে এমন কথা কখনোই বলতে না।
১১৭. নূহ (আলাইহিস-সালাম) তাঁর প্রতিপালককে ডেকে বললেন: হে আমার প্রতিপালক! নিশ্চয়ই আমার সম্প্রদায় আমাকে মিথ্যুক বানিয়েছে। তেমনিভাবে আমি আপনার কাছ থেকে যা নিয়ে এসেছি তারা সে ব্যাপারে আমাকে সত্যবাদী মনে করেনি।
১১৮. তাই আপনি আমার ও তাদের মাঝে চ‚ড়ান্তকারী ফায়সালা করুন। তথা বাতিলের উপর অবিচল থাকার দরুন তাদেরকে ধ্বংস করুন। আর আপনি কাফির সম্প্রদায়কে যে শাস্তি দিবেন তা থেকে আমাকে ও আমার মু’মিন সাথীদেরকে রক্ষা করুন।
১২১. নিশ্চয়ই নূহ (আলাইহিস-সালাম) ও তাঁর সম্প্রদায়ের উল্লিখিত ঘটনায় তথা নূহ (আলাইহিস-সালাম) ও তাঁর মু’মিন সাথীদের বেঁচে যাওয়া এবং কাফিরদের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মধ্যে শিক্ষা গ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
১২২. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক অত্যন্ত পরাক্রমশালী যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন এবং তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
১২৪. আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন তাদের নবী হূদ (আলাইহিস-সালাম) তাদেরকে বললো: তোমরা কি আল্লাহ ভিন্ন অন্যের ইবাদাত পরিত্যাগ করে তাঁর ভয়ে খাঁটি মুত্তাকী হয়ে যাবে না?!
১২৫. নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরই রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তোমাদের কাছেই পাঠিয়েছেন। আমি একজন আমানতদারও বটে। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে যা পৌঁছানোর আদেশ করেছেন আমি তার চেয়ে এতটুকুও বেশ-কম করি না।
১২৭. আমি নিজ প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট যা পৌঁছিয়ে দেই সে ব্যাপারে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সকল সৃষ্টির মালিক আল্লাহর নিকটই; অন্য কারো নিকট নয়।
১৩৬. তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে বললো: তুমি আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছো বা দাওনি তা সবই আমাদের নিকট সমান। আমরা কখনোই তোমার উপর ঈমান আনবো না। না আমরা কখনো আমাদের অনুসৃত পথ থেকে ফিরে আসবো।
১৩৯. তারা নিজেদের নবী হূদ (আলাইহিস-সালাম) এর প্রতি মিথ্যারোপ করার ক্ষেত্রে অটল থাকলো। ফলে আমি তাদেরকে এ মিথ্যারোপের দরুন কঠিন ঝড়ো হাওয়ার মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছি। মূলতঃ এ ধ্বংসের মাঝে শিক্ষা গ্রহণকারীদের জন্য অবশ্যই শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
১৪০. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক অত্যন্ত পরাক্রমশালী। যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন এবং তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
১৪৩. নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য একজন রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তোমাদের কাছেই পাঠিয়েছেন। আমি আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে যা কিছু প্রচার করি তাতে একজন আমানতদারও বটে। আমি তার মধ্যে এতটুকুও বেশ-কম করি না।
১৪৫. আমি নিজ প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট যা পৌঁছিয়ে দেই সে ব্যাপারে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সকল সৃষ্টির মালিক আল্লাহর নিকটই; অন্য কারো নিকট নয়।
১৫৪. তুমি তো কেবল আমাদের মতোই একজন মানুষ। আমাদের উপর তোমার এমন কোন বিশেষত্ব নেই যার ভিত্তিতে তুমি রাসূল হবে। তাই তুমি এমন কোন আলামত নিয়ে আসো যা এ কথা প্রমাণ করবে যে, নিশ্চয়ই তুমি একজন রাসূল। যদি তুমি নিজের রিসালাতের দাবিতে সত্যবাদী হয়ে থাকো।
১৫৫. সালিহ (আলাইহিস-সালাম) কে ইতিমধ্যে আল্লাহ তা‘আলা একটি আলামত দিলেন তথা আল্লাহ তা‘আলা পাথর থেকে একটি উষ্ট্রী বের করে আনলেন। অতঃপর সালিহ (আলাইহিস-সালাম) তাদেরকে বললেন: এই যে একটি উষ্ট্রী যা দেখাও যাচ্ছে আবার ধরাও যাচ্ছে। যার জন্য পানির একটি অংশ রয়েছে যেমনিভাবে তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট একটি অংশ রয়েছে। সে তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট দিনে পান করবে না। তাই তোমরাও তার জন্য নির্দিষ্ট দিনে পান করো না।
১৫৬. তোমরা তার জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু করো না। যেমন: তাকে হত্যা করা কিংবা মারপিট করা। না হয় এর জন্য তোমাদেরকে আল্লাহর আযাব পেয়ে বসবে। যার মাধ্যমে তিনি তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন। সে এক কঠিন দিন যাতে তোমাদের উপর সেই বিপদ নাযিল হবে।
১৫৭. তদুপরি তারা তাকে হত্যা করার ব্যাপারে একমত হলো এবং তাদেরই একজন দুর্ভাগা তাকে হত্যা করলো। ফলে তারা যখন জানতে পারলো যে, নিশ্চয়ই আযাব তাদের উপর অবশ্যম্ভাবীরূপে নাযিল হবে তখন তারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হলো। কিন্তু আযাব দেখার সময় লজ্জা কোন ফায়েদায় আসে না।
১৫৮. ফলে তাদের সাথে ওয়াদাকৃত আযাবই তাদেরকে পাকড়াও করলো। যা হলো বিকট আওয়াজ ও ভূমিকম্প। নিশ্চয়ই সালিহ (আলাইহিস-সালাম) ও তাঁর সম্প্রদায়ের উল্লিখিত ঘটনায় উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য উপদেশ রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
১৫৯. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক অত্যন্ত পরাক্রমশালী। যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন এবং তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
১৬২. নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য একজন রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তোমাদের কাছেই পাঠিয়েছেন। আমি আল্লাহ তা‘আলার কাছ থেকে যা কিছু প্রচার করি তাতে একজন আমানতদারও বটে। আমি তার মধ্যে এতটুকুও বেশ-কম করি না।
১৬৪. আমি নিজ প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট যা পৌঁছিয়ে দেই সে ব্যাপারে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সকল সৃষ্টির মালিক আল্লাহর নিকটই; অন্য কারো নিকট নয়।
১৬৬. আর তোমাদের যৌন চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যে তোমাদের স্ত্রীদের লজ্জাস্থান সৃষ্টি করেছেন তা ব্যবহার করা পরিত্যাগ করছো না?! বাস্তবে তোমরা এ অসৎ কর্মকাÐের দরুন আল্লাহর দেয়া সীমারেখা অতিক্রমকারী।
১৬৭. তাঁর সম্প্রদায় তাঁকে বললো: হে লূত! তুমি যদি আমাদেরকে এ কাজ থেকে নিষেধ করা ও তা প্রত্যাখ্যানের আহŸান করা থেকে বিরত না হও তাহলে তোমাকে ও তোমার সাথীদেরকে আমাদের এলাকা থেকে অবশ্যই বের করে দেয়া হবে।
১৭৩. আমি তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণের ন্যায় আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করেছি। কতোই না বিশ্রী বর্ষণ হলো ওদের উপর যাদেরকে লূত (আলাইহিস-সালাম) আল্লাহর আযাবের ব্যাপারে সতর্ক ও ভীতি প্রদর্শন করেছেন। হায়! যদি তারা অসৎ কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতো।
১৭৪. অশ্লীল কর্মকাÐের দরুন লূত (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায়ের উপর নেমে আসা উল্লিখিত আযাবের মাঝে অবশ্যই শিক্ষা গ্রহণকারীদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
১৭৫. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক অত্যন্ত পরাক্রমশালী। যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন এবং তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
১৭৬. মাদয়ানের নিকটবর্তী ঘন গাছ বিশিষ্ট এলাকার অধিবাসীরা মূলতঃ সকল রাসূলকেই অস্বীকার করেছে যখন তারা নিজেদের নবী শু‘আইব (আলাইহিস-সালাম) কে অস্বীকার করে বসলো।
১৭৮. নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য রাসূল। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তোমাদের কাছেই পাঠিয়েছেন। আমি তাঁর পক্ষ থেকে কোন কিছু পৌঁছানোর ব্যাপারে একজন আমানতদারও বটে। আল্লাহ তা‘আলা আমাকে যা পৌঁছানোর আদেশ করেছেন আমি তার মধ্যে এতটুকুও বেশ-কম করি না।
১৮০. আমি নিজ প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট যা পৌঁছিয়ে দেই সে ব্যাপারে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সকল সৃষ্টির মালিক আল্লাহর নিকটই; অন্য কারো নিকট নয়।
১৮৪. যিনি তোমাদেরকে ও পূর্ববর্তী সম্প্রদায়গুলোকে সৃষ্টি করেছেন তোমরা সেই সত্তার প্রতি তাকওয়া অবলম্বন করো। এই ভয়ে যে, তাঁর আযাব তোমাদের উপর নাযিল হয়ে যেতে পারে।
১৮৫. শু‘আইব (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায় তাঁকে বললো: নিশ্চয়ই তুমি ওদেরই অন্তর্ভুক্ত যারা বারবার যাদুগ্রস্ত হয়েছে। ফলে যাদু তোমার মেধার উপর ক্রিয়াশীল হয়ে তাকে পুরোপুরি বিলুপ্ত করে দিয়েছে।
১৮৬. তাছাড়া তুমি আমাদের মতোই একজন মানুষ। আমাদের উপর তোমার কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য নেই। তাহলে তুমি কিভাবে রাসূল হবে? বস্তুতঃ আমরা তোমাকে রিসালাতের দাবিতে একজন মিথ্যুক বলেই মনে করি।
১৮৯. কিন্তু তারা তাঁকে অস্বীকার করতেই থাকলো। তাই এক মহা শাস্তি তাদেরকে পেয়ে বসলো। এক কঠিন গরমের দিনের শেষে কালো মেঘ তাদেরকে ঢেকে ফেললো উপরন্তু তাদের উপর আগুন বর্ষণ করে তাদেরকে জ্বালিয়ে দিলো। বস্তুতঃ তাদের ধ্বংসের দিনটি এক মহা ভয়ঙ্কর দিন ছিলো।
১৯০. উল্লিখিত শু‘আইব (আলাইহিস-সালাম) এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের মাঝে অবশ্যই শিক্ষা গ্রহণকারীদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই মু’মিন ছিলো না।
১৯১. হে রাসূল! নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক অত্যন্ত পরাক্রমশালী। যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন এবং তিনি তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
১৯৪. হে রাসূল! জিব্রীল (আলাইহিস-সালাম) তা নিয়ে আপনার হৃদয়ের উপর নাযিল হয়েছেন যেন আপনি সেই রাসূলগণের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন যাঁরা মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করেন এবং আল্লাহর আযাবের ভয় দেখান।
১৯৭. এ মিথ্যারোপকারীদের জন্য আপনার সত্যবাদিতার ব্যাপারে এটি কি একটি বিশেষ আলামত নয় যে, বনী ইসরাঈলের আলিমরা আপনার উপর নাযিলকৃত বিধানের বাস্তবতা জানতে পেরেছে। যেমন: আব্দুল্লাহ ইবনু সালাম।
১৯৯. অতঃপর সে তাদেরকে তা পড়ে শুনায় তখন তারা এর প্রতি কখনোই ঈমান আনবে না। কারণ, তারা অচিরেই বলবে: আমরা এটি বুঝি না। তাই তারা যেন এ মর্মে আল্লাহর প্রশংসা করে যে, তিনি তাদের ভাষায়ই কুর‘আন নাযিল করেছেন।
২০৪. এ কাফিররাই কি আমার শাস্তি দ্রæত কামনা করে বলেছিলো না যে, আমরা আপনার উপর ঈমান আনবো না যতক্ষণ না আপনি নিজ ধারণা মাফিক আকাশকে টুকরো টুকরো করে আমাদের উপর ফেলবেন?!
২০৯. যা মূলতঃ তাদের জন্য ওয়াজ এবং উপদেশই ছিলো। বস্তুতঃ আমি তাদের নিকট রাসূল পাঠিয়ে এবং কিতাব নাযিল করে তাদের ওজর-আপত্তি বন্ধ করে দেয়ার পর তাদেরকে শাস্তি দিয়ে কোন যুলুম করিনি।
২১৬. তারা যদি আপনার অবাধ্য হয় এবং আপনি তাদেরকে যে তাওহীদ ও আল্লাহর আনুগত্যের আদেশ করেছেন তাতে যদি তারা সাড়া না দেয় তাহলে আপনি তাদেরকে বলে দিন: নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কৃত পাপ ও শিরক থেকে সম্পূর্ণরূপে দায়মুক্ত।
২১৭. আর আপনি নিজের সকল ব্যাপারে সেই পরাক্রমশালীর উপর নির্ভরশীল হোন যিনি তাঁর শত্রæদের থেকে প্রতিশোধ নিতে পারেন। উপরন্তু যিনি তাঁর অভিমুখীদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু।
২২৩. জিনশয়তানরা ফিরিশতাদের কাছ থেকে কথা চুরি করে নিজেদের গনক বন্ধুদের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়। আর গণকদের অধিকাংশই মিথ্যুক। যদি তারা একটি কথা সত্য বলে তাহলে তার সাথে একশত কথা মিথ্যা বলে।
২২৪. তোমরা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে যে কবিদের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করছো তাদেরকে তো অনুসরণ করে থাকে শুধুমাত্র তারাই যারা শরীয়ত বিমুখ ও সত্যপথভ্রষ্ট। তাই কবিরা যে কবিতাই বলে এরা তা বর্ণনা করতেই ব্যস্ত থাকে।
২২৫. হে রাসূল! আপনি কি দেখেননি যে, তাদের ভ্রষ্টতার একটি নিদর্শন হলো এই যে, তারা প্রত্যেক প্রান্তে উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়। তারা কখনো মানুষের প্রশংসা করে। আবার কখনো নিন্দা। আবার কখনো বা অন্য কিছু।
২২৭. তবে যে কবিরা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করছে উপরন্তু তারা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে এবং আল্লাহর শত্রæদের যুলুমের পর তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করে -যেমন: হাসসান ইবনু সাবিত- তারা অবশ্যই এ থেকে ভিন্ন। আল্লাহর সাথে শিরককারী ও তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যাচারী যালিমরা অচিরেই জানবে কোন্ গন্তব্যের দিকে তারা রওয়ানা করেছে। তারা বস্তুতঃ এক ভয়াবহ পরিস্থিতি ও সূ² হিসাবের দিকে রওয়ানা করেছে।