ترجمة معاني القرآن الكريم - الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم * - فهرس التراجم


ترجمة معاني سورة: الأنفال   آية:

سورة الأنفال - সূরা আল-আনফাল

من مقاصد السورة:
الامتنان على المؤمنين بنصر الله لهم في بدر، وبيان سنن النصر والهزيمة.
বদর যুদ্ধের বর্ণনার মাধ্যমে জিহাদের বিধানাবলী এবং জয় ও পরাজয়ের মূল কারণসমূহের বর্ণনা করা।

يَسۡـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡأَنفَالِۖ قُلِ ٱلۡأَنفَالُ لِلَّهِ وَٱلرَّسُولِۖ فَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَأَصۡلِحُواْ ذَاتَ بَيۡنِكُمۡۖ وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥٓ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ
১. হে রাসূল! আপনার সাথীরা আপনাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে সেটির বন্টন কী ধরনের হবে? এবং কারা কারা সে সম্পদের অধিকারী হবে? হে রাসূল! আপনি তাদের প্রশ্নের উত্তরে বলুন: যুদ্ধলব্ধ সম্পদগুলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। এর বন্টন ও ব্যবহারের ক্ষমতা কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্যই। তোমাদের কাজ হবে শুধু তা মেনে নেয়া ও তার সামনে মাথা নত করা। হে মু’মিনরা! তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। আর তোমাদের নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ককে বিনষ্ট না করে ভালোবাসা, পারস্পরিক যোগাযোগ, সচ্চরিত্র ও ক্ষমার মাধ্যমে দৃঢ় ও মজবুত করার চেষ্টা করো। তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যকে আঁকড়ে ধরো যদি তোমরা সত্যিকারার্থে মু’মিন হয়ে থাকো। কারণ, ঈমান বস্তুতঃ আনুগত্যে উৎসাহিত ও গুনাহ থেকে দূরে রাখে। উপরোক্ত প্রশ্নটি মূলতঃ বদরের যুদ্ধের পরপরই করা হয়েছিলো।
التفاسير العربية:
إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ ٱللَّهُ وَجِلَتۡ قُلُوبُهُمۡ وَإِذَا تُلِيَتۡ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُهُۥ زَادَتۡهُمۡ إِيمَٰنٗا وَعَلَىٰ رَبِّهِمۡ يَتَوَكَّلُونَ
২. সত্যিকার ঈমানদার ওরা যাদের সামনে আল্লাহকে স্মরণ করা হলে তাদের অন্তরগুলো ভয়ে কেঁপে উঠে অতঃপর তাদের হৃদয় ও শরীর আনুগত্যের জন্য তৈরি হয়ে যায়। যখন তাদের নিকট আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন তারা সেগুলোকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে। ফলে তাদের ঈমান উত্তরোত্তর বেড়ে যায়। আর তারা নিজেদের কল্যাণের অন্বেষণে এবং অকল্যাণ ও পাপাচার থেকে বাঁচার জন্য একমাত্র তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা করে থাকে।
التفاسير العربية:
ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ
৩. যারা সময় মতো পরিপূর্ণ পদ্ধতিতে সর্বদা সালাত আদায় করে থাকে। আর আমি তাদেরকে যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে বাধ্যতামূলভাবে এবং স্বেচ্ছায় দান করে।
التفاسير العربية:
أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ حَقّٗاۚ لَّهُمۡ دَرَجَٰتٌ عِندَ رَبِّهِمۡ وَمَغۡفِرَةٞ وَرِزۡقٞ كَرِيمٞ
৪. এ বৈশিষ্ট্যাবলীর অধিকারীরা সত্যিকারার্থেই মু’মিন। কারণ, তাদের মাঝে ঈমান ও ইসলামের প্রকাশ্য গুণাবলীর সমন্বয় ঘটেছে। তাদের প্রতিদান হবে নিজেদের প্রতিপালকের নিকট সুউচ্চ অট্টালিকা, গুনাহের ক্ষমা ও সম্মানজনক রিযিক। যা আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্য নিয়ামত স্বরূপ তৈরি করে রেখেছেন।
التفاسير العربية:
كَمَآ أَخۡرَجَكَ رَبُّكَ مِنۢ بَيۡتِكَ بِٱلۡحَقِّ وَإِنَّ فَرِيقٗا مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ لَكَٰرِهُونَ
৫. যুদ্ধলব্ধ সম্পদের বন্টন নিয়ে তোমাদের মাঝে দ্ব›দ্ব-বিগ্রহের পর আল্লাহ তা‘আলা আপন ক্ষমতা বলে বন্টনের বিষয়টি নিজের ও তদীয় রাসূলের হাতে ন্যস্ত করলেন এভাবেই হে রাসূল! আপনার প্রতিপালক আপনাকে ওহীর মাধ্যমে মদীনা থেকে বের করে মুশরিকদের মুখোমুখী দাঁড় করালেন। অথচ মু’মিনদের একদল লোক তখনো তা দারুনভাবে অপছন্দ করছিলো।
التفاسير العربية:
يُجَٰدِلُونَكَ فِي ٱلۡحَقِّ بَعۡدَ مَا تَبَيَّنَ كَأَنَّمَا يُسَاقُونَ إِلَى ٱلۡمَوۡتِ وَهُمۡ يَنظُرُونَ
৬. হে রাসূল! মু’মিনদের এ দলটির নিকট মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ অবধারিত হওয়ার ব্যাপারটি সুস্পষ্ট হওয়ার পরও তারা আপনার সাথে ঝগড়া করেছে। যেন এর মাধ্যমে তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাঁকিয়ে নেয়া হচ্ছে আর তারা তা সচক্ষে দেখতে পাচ্ছে। কারণ, তারা যুদ্ধের জন্য বের হওয়াকে কঠিনভাবে অপছন্দ করছিলো। তারা এর জন্য কোনভাবেই প্রস্তুত ছিলো না।
التفاسير العربية:
وَإِذۡ يَعِدُكُمُ ٱللَّهُ إِحۡدَى ٱلطَّآئِفَتَيۡنِ أَنَّهَا لَكُمۡ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَيۡرَ ذَاتِ ٱلشَّوۡكَةِ تَكُونُ لَكُمۡ وَيُرِيدُ ٱللَّهُ أَن يُحِقَّ ٱلۡحَقَّ بِكَلِمَٰتِهِۦ وَيَقۡطَعَ دَابِرَ ٱلۡكَٰفِرِينَ
৭. হে ঝগড়াকারী মু’মিনরা! তোমরা সে সময়ের কথা স্মরণ করো যখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সাথে এ ওয়াদা করেছেন যে, তিনি অচিরেই তোমাদেরকে মুশরিকদের দু’ দলের কোন একটিকে আয়ত্বে আনার সুযোগ করে দিবেন। একটি ছিলো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দল এবং তারা যে সম্পদগুলো বহন করে আনছে। তা তোমরা গনীমত তথা যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হিসেবে গ্রহণ করবে। অন্যটি ছিলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত দল। যাদের সাথে যুদ্ধ করে তোমরা তাদের উপর জয়লাভ করবে। বস্তুতঃ তোমরা চাচ্ছিলে ব্যবসায়ী দলকে ধরার জন্য। কারণ, যুদ্ধ ছাড়া তাদেরকে আয়ত্ব করা খুবই সহজ। অথচ আল্লাহ তা‘আলা চাচ্ছিলেন তোমাদেরকে যুদ্ধের ময়দানে এনে সত্যকে বাস্তবায়িত করতে। যাতে তোমরা মুশরিকদের নেতাদেরকে হত্যা এবং তাদের অধিকাংশকে বন্দী করতে পারো। ফলে ইসলামের শক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ পাবে।
التفاسير العربية:
لِيُحِقَّ ٱلۡحَقَّ وَيُبۡطِلَ ٱلۡبَٰطِلَ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُجۡرِمُونَ
৮. আল্লাহ তা‘আলা তা এ জন্যই করেছেন যেন তিনি ইসলামের সত্যতার ব্যাপারে কিছু প্রমাণ দাঁড় করিয়ে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে জনসমক্ষে প্রকাশ করে সত্যের জয় ও মিথ্যার পরাজয়কে নিশ্চিত ও প্রমাণিত করতে পারেন। যদিও মুশরিকরা এমনটি চাচ্ছে না তবুও আল্লাহ তা‘আলা তা অবশ্যই প্রকাশ করবেন।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• ينبغي للعبد أن يتعاهد إيمانه ويُنمِّيه؛ لأن الإيمان يزيد وينقص، فيزيد بفعل الطاعة وينقص بضدها.
ক. ঈমান বাড়ে ও কমে এমন বান্দার উচিৎ তার ঈমানের পরিচর্যা ও তাকে বাড়ানোর চেষ্টা করা। কারণ, আনুগত্যের মাধ্যমে ঈমান বাড়ে এবং আনুগত্যহীনতার মাধ্যমে তা কমে যায়।

• الجدال محله وفائدته عند اشتباه الحق والتباس الأمر، فأما إذا وضح وبان فليس إلا الانقياد والإذعان.
খ. যখন সত্য-মিথ্যার একটিকে অন্যটি থেকে পৃথক করা না যায় বা কষ্টকর হয় ততক্ষণ ঝগড়া-বিবাদের একটা কারণ থাকতে পারে। কিন্তু যখন সত্যটি প্রকাশ পেয়ে যায় এবং তা সুস্পষ্ট হয়ে যায় তখন তা মানতে হবে ও স্বীকার করে নিতে হবে। এরপরও ঝগড়া-বিবাদ অব্যাহত থাকার কোন কারণ থাকতে পারে না।

• أَمْر قسمة الغنائم متروك للرّسول صلى الله عليه وسلم، والأحكام مرجعها إلى الله تعالى ورسوله لا إلى غيرهما.
গ. যুদ্ধলব্ধ সম্পদ বন্টনের ব্যাপারটি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর হাতে ন্যস্ত এবং এর যাবতীয় বিধান ও সমাধান স্থল হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল। তাঁরা ভিন্ন অন্য কেউ নন।

• إرادة تحقيق النّصر الإلهي للمؤمنين؛ لإحقاق الحق وإبطال الباطل.
ঘ. মু’মিনদের জন্য ঐশী বিজয় বাস্তবায়নের মূল উদ্দেশ্য হলো সত্যকে প্রতিষ্ঠা করা ও বাতিলকে নির্মূল করা।

إِذۡ تَسۡتَغِيثُونَ رَبَّكُمۡ فَٱسۡتَجَابَ لَكُمۡ أَنِّي مُمِدُّكُم بِأَلۡفٖ مِّنَ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ مُرۡدِفِينَ
৯. বদরের দিনের কথা স্মরণ করো যখন তোমরা আল্লাহর কাছ থেকে শত্রæর উপর জয়ের ব্যাপারে সহযোগিতার আবেদন করছিলে তখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের দু‘আ কবুল করে এ ঘোষণা দিলেন যে, হে মু’মিনরা! আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে এক হাজার ফিরিশতা দিয়ে সাহায্য ও সহযোগিতা করবেন। যারা ধারাবাহিকভাবে একের পর এক আসতে থাকবে।
التفاسير العربية:
وَمَا جَعَلَهُ ٱللَّهُ إِلَّا بُشۡرَىٰ وَلِتَطۡمَئِنَّ بِهِۦ قُلُوبُكُمۡۚ وَمَا ٱلنَّصۡرُ إِلَّا مِنۡ عِندِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ
১০. হে মু’মিনরা! আল্লাহর পক্ষ থেকে ফিরিশতা কর্তৃক তোমাদেরকে সাহায্য করা শুধু তোমাদেরকে এ সুসংবাদ দেয়ার জন্য যে, তিনি তোমাদেরকে শত্রæর উপর বিজয়ী করবেন। আর যেন তোমাদের অন্তরগুলো সাহায্যের দৃঢ় বিশ্বাসে শান্ত হয়ে যায়। বিজয় শুধু সংখ্যাধিক্য ও প্রচুর সরঞ্জামের জন্য নয় বরং তা আল্লাহর কাছ থেকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা নিজ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী। তাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। তিনি তাঁর শরীয়ত ও তাক্বদীরে অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়।
التفاسير العربية:
إِذۡ يُغَشِّيكُمُ ٱلنُّعَاسَ أَمَنَةٗ مِّنۡهُ وَيُنَزِّلُ عَلَيۡكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءٗ لِّيُطَهِّرَكُم بِهِۦ وَيُذۡهِبَ عَنكُمۡ رِجۡزَ ٱلشَّيۡطَٰنِ وَلِيَرۡبِطَ عَلَىٰ قُلُوبِكُمۡ وَيُثَبِّتَ بِهِ ٱلۡأَقۡدَامَ
১১. হে মু’মিনরা! তোমরা সে সময়ের কথা স্মরণ করো যখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর শত্রæর ভয় থেকে নিরাপত্তা স্বরূপ তন্দ্রা ঢেলে দিলেন। তেমনিভাবে তিনি তোমাদেরকে নাপাকী থেকে পবিত্র করতে ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচাতে এবং তোমাদের অন্তরগুলোকে স্থির রাখতে আকাশ থেকে বৃষ্টি নাযিল করলেন। যাতে যুদ্ধের সময় তোমাদের শরীরগুলোও স্থির থাকে এবং বালুময় জমিনে পাগুলোও দৃঢ় থাকে।
التفاسير العربية:
إِذۡ يُوحِي رَبُّكَ إِلَى ٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ أَنِّي مَعَكُمۡ فَثَبِّتُواْ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْۚ سَأُلۡقِي فِي قُلُوبِ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ ٱلرُّعۡبَ فَٱضۡرِبُواْ فَوۡقَ ٱلۡأَعۡنَاقِ وَٱضۡرِبُواْ مِنۡهُمۡ كُلَّ بَنَانٖ
১২. হে নবী! স্মরণ করুন বদর যুদ্ধে যখন ফিরিশতাগণকে দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে সহযোগিতা করেছেন তখন আপনার প্রতিপালক তাঁদেরকে এ মর্মে ওহী করলেন যে, হে ফিরিশতারা! আমি সাহায্য-সহযোগিতায় তোমাদের সাথেই রয়েছি। সুতরাং তোমরা শত্রæর সাথে যুদ্ধের ব্যাপারে মু’মিনদের মনোবলকে শক্তিশালী করো। আমি অচিরেই কাফিরদের অন্তরে কঠিন ভয় ঢেলে দেবো। তাই হে মু’মিনরা! তোমরা কাফিরদের ঘাড়ে আঘাত করো যাতে তারা মারা যায়। তেমনিভাবে তোমরা তাদের গিরায় গিরায় আঘাত করো যাতে তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে অক্ষম হয়।
التفاسير العربية:
ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ شَآقُّواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥۚ وَمَن يُشَاقِقِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ
১৩. কাফিরদেরকে হত্যা ও তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে যে আঘাত করা হলো তা কেবল এ জন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করেছে। তাদেরকে যা আদেশ করা হয়েছে তা তারা মানেনি এবং তাদেরকে যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে তা থেকে তারা বিরত থাকেনি। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাকে দুনিয়াতে হত্যা ও বন্দী এবং পরকালে জাহান্নামের আগুনের মাধ্যমে কঠিন শাস্তি দিবেন।
التفاسير العربية:
ذَٰلِكُمۡ فَذُوقُوهُ وَأَنَّ لِلۡكَٰفِرِينَ عَذَابَ ٱلنَّارِ
১৪. হে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীরা! উক্ত শাস্তি তোমাদেরই জন্য। তাই তোমরা দুনিয়ার জীবনে নগদেই এর স্বাদ আস্বাদন করো। আর যদি তোমরা কুফরি ও হঠকারিতার উপর মৃত্যু বরণ করো তাহলে পরকালে তোমাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا لَقِيتُمُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ زَحۡفٗا فَلَا تُوَلُّوهُمُ ٱلۡأَدۡبَارَ
১৫. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর রাসূলের অনুসারী মু’মিনরা! যখন তোমরা যুদ্ধ ক্ষেত্রে একে অপরের খুব কাছাকাছি থেকে মুশরিকদের মুকাবিলা করবে তখন তোমরা কখনো রণে ভঙ্গ দিবে না। পালিয়ে গিয়ে তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। বরং তোমরা তাদের সামনে অটল থাকো এবং তাদের মুকাবিলায় ধৈর্যের পরিচয় দাও। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে তোমাদের সাথেই রয়েছেন।
التفاسير العربية:
وَمَن يُوَلِّهِمۡ يَوۡمَئِذٖ دُبُرَهُۥٓ إِلَّا مُتَحَرِّفٗا لِّقِتَالٍ أَوۡ مُتَحَيِّزًا إِلَىٰ فِئَةٖ فَقَدۡ بَآءَ بِغَضَبٖ مِّنَ ٱللَّهِ وَمَأۡوَىٰهُ جَهَنَّمُۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِيرُ
১৬. যে ব্যক্তি পালিয়ে গিয়ে তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলো সে মূলতঃ আল্লাহর রাগ নিয়ে ফিরে আসলো এবং সে তার উপযুক্তও বটে আর পরকালে তার জায়গা হবে জাহান্নাম যা নিকৃষ্টতম গন্তব্য ও নিকৃষ্টতম প্রত্যাবর্তন। তবে কেউ যদি পুনরায় যুদ্ধে ফিরে আসার কৌশল হিসেবে যেমন তাদেরকে পালানোর ভাব দেখিয়ে আবার আক্রমণ করা অথবা সাহায্যের জন্য কোন মুসলিম বাহিনীর সাথে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সেটা ভিন্ন কথা।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• في الآيات اعتناء الله العظيم بحال عباده المؤمنين، وتيسير الأسباب التي بها ثبت إيمانهم، وثبتت أقدامهم، وزال عنهم المكروه والوساوس الشيطانية.
ক. উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা যে তাঁর মু’মিন বান্দাদের অবস্থার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকেন সে কথা বলা হয়েছে। তিনি তাদের ঈমান যেন শক্ত হয়, তারা যেন দৃঢ়পদ হয় এবং তাদের কাছ থেকে যেন শয়তানের কুমন্ত্রণা ও বিপদ দূর হয় সে উপকরণগুলোও সহজ করে দেন।

• أن النصر بيد الله، ومن عنده سبحانه، وهو ليس بكثرة عَدَدٍ ولا عُدَدٍ مع أهمية هذا الإعداد.
খ. বিজয় কেবল আল্লাহর হাতে এবং তাঁর কাছ থেকেই আসে। তা সংখ্যাধিক্য ও বিপুল সরঞ্জামের দরুন আসে না যদিও এমন প্রস্তুতির গুরুত্ব অবশ্যই রয়েছে।

• الفرار من الزحف من غير عذر من أكبر الكبائر.
গ. বিনা ওজরে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে আসা সবচেয়ে বড় গুনাহ।

• في الآيات تعليم المؤمنين قواعد القتال الحربية، ومنها: طاعة الله والرسول، والثبات أمام الأعداء، والصبر عند اللقاء، وذِكْر الله كثيرًا.
ঘ. উক্ত আয়াতগুলোতে মু’মিনদেরকে যুদ্ধের মূল ভিত্তিসমূহের বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয়েছে। যা হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করা, শত্রæর সামনে অবিচল থাকা, শত্রæর মুকাবিলায় ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা।

فَلَمۡ تَقۡتُلُوهُمۡ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ قَتَلَهُمۡۚ وَمَا رَمَيۡتَ إِذۡ رَمَيۡتَ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ رَمَىٰ وَلِيُبۡلِيَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ مِنۡهُ بَلَآءً حَسَنًاۚ إِنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٞ
১৭. হে মু’মিনরা! তোমরা বদরের দিন শুধু নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য দিয়েই মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করোনি। বরং আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছেন। তোমরা তাদেরকে হত্যা করোনি। বরং যেন আল্লাহ তা‘আলাই হত্যা করেছেন। হে নবী! আপনি যখন মুশরিকদের দিকে ধূলি নিক্ষেপ করেছিলেন তখন আপনি তা নিক্ষেপ করেননি বরং যেন আল্লাহ তা‘আলাই তা নিক্ষেপ করেছেন। এমনকি তিনি তা তাদের পর্যন্ত পৌঁছিয়েও দিয়েছেন। আর তা এ জন্য করেছেন, যেন তিনি মু’মিনদের সংখ্যা ও সরঞ্জাম কম থাকা সত্তে¡ও তাদেরকে কাফিরদের উপর বিজয়ী হওয়ার নিয়ামত দিয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন। এর ফলে তারা তাঁর কৃতজ্ঞতাও আদায় করতে পারবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সকল দু‘আ ও সাধারণ কথাগুলো শুনছেন এবং তিনি তোমাদের সকল আমল ও কোন্টিতে তোমাদের কল্যাণ রয়েছে সে সবই জানেন।
التفاسير العربية:
ذَٰلِكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ مُوهِنُ كَيۡدِ ٱلۡكَٰفِرِينَ
১৮. উক্ত ব্যাপারটি তথা মুশরিকদেরকে হত্যা করা এবং তাদেরকে ধূলি নিক্ষেপের পর তাদের পরাজিত হওয়া ও পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়ে যাওয়া এবং মু’মিনদেরকে তাদের শত্রæর উপর বিজয়ী করে তাদের প্রতি দয়া করা এ সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের ষড়যন্ত্রকে দুর্বল করে দেন।
التفاسير العربية:
إِن تَسۡتَفۡتِحُواْ فَقَدۡ جَآءَكُمُ ٱلۡفَتۡحُۖ وَإِن تَنتَهُواْ فَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۖ وَإِن تَعُودُواْ نَعُدۡ وَلَن تُغۡنِيَ عَنكُمۡ فِئَتُكُمۡ شَيۡـٔٗا وَلَوۡ كَثُرَتۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
১৯. হে মুশরিকরা! তোমরা যদি চাও আল্লাহ তা‘আলা তাঁর শাস্তি ও আযাব যালিম ও হঠকারীদের উপর নিপতিত করুক তাহলে তিনি তো তোমাদের উপর তা নিপতিত করেছেন যা তোমরা চেয়েছো। তোমাদের উপর তিনি যা নাযিল করেছেন তা তোমাদের জন্য শাস্তি এবং মুত্তাকীদের জন্য শিক্ষণীয়। যদি তোমরা উক্ত বাসনা থেকে বিরত থাকতে তাহলে তা তোমাদের জন্য অনেক উত্তম হতো। কারণ, তিনি অধিকাংশ সময় তোমাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন; তোমাদের থেকে দ্রæত প্রতিশোধ নেন না। তোমরা যদি তা আবার তলব করো অথবা মু’মিনদের সাথে যুদ্ধ করো আমি আবার তোমাদের উপর আযাব নাযিল করবো এবং মু’মিনদেরকে সাহায্য করবো। জেনে রাখো, যদিও তোমরা সংখ্যা ও সরঞ্জামে বেশি এবং মু’মিনরা কম তবুও তোমাদের দল ও সাহায্যকারীরা কখনো তোমাদের কোন উপকারে আসবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সাহায্য ও সহযোগিতা নিয়ে মু’মিনদের সাথেই রয়েছেন। বস্তুতঃ যার সাথে আল্লাহ রয়েছেন তাকে কেউ পরাজিত করতে পারে না।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَوَلَّوۡاْ عَنۡهُ وَأَنتُمۡ تَسۡمَعُونَ
২০. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর অনুসারী মু’মিনরা! তোমরা শরীয়তের সকল আদেশ-নিষেধ মেনে চলার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো। তাঁর আদেশ-নিষেধ অমান্য করে কখনো তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না; অথচ আল্লাহর আয়াতগুলো তোমাদের সামনে পড়া হচ্ছে তা তোমরা শুনতে পাচ্ছো।
التفاسير العربية:
وَلَا تَكُونُواْ كَٱلَّذِينَ قَالُواْ سَمِعۡنَا وَهُمۡ لَا يَسۡمَعُونَ
২১. হে মু’মিনগণ! তোমরা সেই মুনাফিক ও মুশরিকদের মতো হয়ো না যাদের সামনে আল্লাহর আয়াতগুলো পাঠ করে শুনানো হলে তারা বলে: আমরা কুর‘আনের তিলাওয়াত নিজেদের কান দিয়ে শুনেছি। তবে তারা চিন্তা-গবেষণা ও উপদেশ গ্রহণের উদ্দেশ্যে তা শুনে না, তা না হলে তারা তা শুনে উপকৃত হতে পারতো।
التفاسير العربية:
۞ إِنَّ شَرَّ ٱلدَّوَآبِّ عِندَ ٱللَّهِ ٱلصُّمُّ ٱلۡبُكۡمُ ٱلَّذِينَ لَا يَعۡقِلُونَ
২২. আল্লাহর নিকট তাঁর জমিনের বুকে বিচরণকারী সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টি হলো সেই বধির যারা গ্রহণের নিয়তে সত্য কথা শুনে না এবং সেই মূক যারা সত্য কথা বলতে পারে না। তারা মূলতঃ আল্লাহর আদেশ-নিষেধ কোন কিছুই বুঝে না।
التفاسير العربية:
وَلَوۡ عَلِمَ ٱللَّهُ فِيهِمۡ خَيۡرٗا لَّأَسۡمَعَهُمۡۖ وَلَوۡ أَسۡمَعَهُمۡ لَتَوَلَّواْ وَّهُم مُّعۡرِضُونَ
২৩. আল্লাহ তা‘আলা যদি জানতেন এ মিথ্যারোপকারী মুশরিকদের মাঝে কোন কল্যাণ রয়েছে তাহলে তিনি তাদেরকে লাভজনক কোন কিছু শুনার ব্যবস্থা করে দিতেন এবং তারাও তাঁর কাছ থেকে দলীল ও প্রমাণ বুঝতে পারতো। তবে আল্লাহ তা‘আলা জানেন যে, তাদের মাঝে কোন কল্যাণ নেই। তদুপরি যদি আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে শুনাতেন তাহলেও তারা হঠকারিতাবশতঃ ঈমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো। তারা সেদিকে সামান্য ভ্রƒক্ষেপও করতো না।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱسۡتَجِيبُواْ لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمۡ لِمَا يُحۡيِيكُمۡۖ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ يَحُولُ بَيۡنَ ٱلۡمَرۡءِ وَقَلۡبِهِۦ وَأَنَّهُۥٓ إِلَيۡهِ تُحۡشَرُونَ
২৪. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর রাসূলের অনুসারী মু’মিনরা! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যখন তোমাদেরকে সত্যের দিকে ডাকে তখন তাঁদের আদেশ-নিষেধ মানার জন্য তাঁদের ডাকে সাড়া দাও। উপরন্তু তোমরা এ কথায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রেখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু করতে সক্ষম। তোমরা সত্য প্রত্যাখ্যানের পর তা আবার গ্রহণ করতে চাইলে তিনি অবশ্যই তোমাদের ও সত্য গ্রহণের মাঝে বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম। তাই তোমরা সত্য গ্রহণে দ্রæত অগ্রসর হও। মনে রেখো, নিশ্চয়ই তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন তাঁর কাছেই একত্রিত করা হবে। তখন তিনি তোমাদেরকে দুনিয়ার আমলগুলোর প্রতিদান দিবেন।
التفاسير العربية:
وَٱتَّقُواْ فِتۡنَةٗ لَّا تُصِيبَنَّ ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ مِنكُمۡ خَآصَّةٗۖ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ
২৫. হে মু’মিনগণ! তোমরা সেই আযাবকে ভয় করো যা শুধু পাপীকেই স্পর্শ করবে না। বরং তা পাপী ও পুণ্যবান উভয়কেই স্পর্শ করবে। সেটি হবে তখন যখন যুলুম প্রকাশ্যে করা হবে; অথচ সে অবস্থার পরিবর্তনের কোন চেষ্টা-সাধনা করা হবে না। তাছাড়া তোমরা এ কথায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রেখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা পাপীদের কঠিন শাস্তিদাতা। তাই তোমরা তাঁর বিরুদ্ধাচরণকে ভয় করো।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• من كان الله معه فهو المنصور وإن كان ضعيفًا قليلًا عدده، وهذه المعية تكون بحسب ما قام به المؤمنون من أعمال الإيمان.
ক. আল্লাহ তা‘আলা যার সাথে আছেন সেই সাহায্যপ্রাপ্ত হবে। আর এ সাহায্যপ্রাপ্তি মু’মিনদের ঈমান ও আমলের অনুপাতে কম-বেশি হয়ে থাকে।

• المؤمن مطالب بالأخذ بالأسباب المادية، والقيام بالتكليف الذي كلفه الله، ثم يتوكل على الله، ويفوض الأمر إليه، أما تحقيق النتائج والأهداف فهو متروك لله عز وجل.
খ. একজন মু’মিন বৈষয়িক উপকরণ ও সেই দায়িত্বভার গ্রহণ করতে বাধ্য যা আল্লাহ তা‘আলা তার উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। অতঃপর সে আল্লাহর উপর ভরসা ও তাঁর দিকেই সকল ব্যাপার সোপর্দ করবে। তবে উদ্দেশ্য হাসিল ও সুফল বয়ে আনার ব্যাপারটি একমাত্র আল্লাহর প্রতিই ন্যস্ত।

• في الآيات دليل على أن الله تعالى لا يمنع الإيمان والخير إلا عمَّن لا خير فيه، وهو الذي لا يزكو لديه هذا الإيمان ولا يثمر عنده.
গ. উক্ত আয়াতগুলোতে এ কথার প্রমাণ রয়েছে যে, নিশ্চয়ই যার মাঝে কোন কল্যাণ নেই আল্লাহ তা‘আলা কেবল তার কাছ থেকেই ঈমান ও হেদায়েত দূরে রাখেন। অন্য কারো কাছ থেকে নয়। কারণ, এ ঈমান তার জন্য কোন ফল দিবে না।

• على العبد أن يكثر من الدعاء: يا مقلب القلوب ثبِّت قلبي على دينك، يا مُصرِّف القلوب اصرف قلبي إلى طاعتك.
ঘ. একজন বান্দার উচিৎ নি¤েœাক্ত দু‘আটি বেশি বেশি করে আমল করা: يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِيْ عَلَى دِيْنِكَ، يَا مُصَرِّفَ الْقُلُوْبِ اصْرِفْ قَلْبِيْ إِلَى طَاعَتِكَ “হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আপনি আমার অন্তরকে আপনার দীনের উপর অটল রাখুন। হে অন্তরসমূহের দিক নির্ণয়কারী! আপনি আমার অন্তরকে আপনার আনুগত্যের দিকে ধাবিত করুন”।

• أَمَرَ الله المؤمنين ألا يُقِرُّوا المنكر بين أظهرهم فيعُمَّهم العذاب.
ঙ. আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদেরকে এ আদেশ করেছেন যে, তারা যেন কোন অসৎ কাজের স্বীকৃতি না দেয়। তা না হলে তাদের উপর ব্যাপক শাস্তি আপতিত হবে।

وَٱذۡكُرُوٓاْ إِذۡ أَنتُمۡ قَلِيلٞ مُّسۡتَضۡعَفُونَ فِي ٱلۡأَرۡضِ تَخَافُونَ أَن يَتَخَطَّفَكُمُ ٱلنَّاسُ فَـَٔاوَىٰكُمۡ وَأَيَّدَكُم بِنَصۡرِهِۦ وَرَزَقَكُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ لَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
২৬. হে মু’মিনগণ! তোমরা সে সময়ের কথা স্মরণ করো যখন তোমরা মক্কা এলাকায় সংখ্যায় কম ছিলে, সে এলাকার লোকেরা তোমাদেরকে দুর্বল ভাবতো এবং তোমাদেরকে নির্যাতন করতো। উপরন্তু তোমরা এ ব্যাপারে ভয় পেতে যে, শত্রæরা দ্রæত তোমাদেরকে গ্রাস করে নিবে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে মদীনা নামক ঠিকানায় একত্রিত করলেন এবং তিনি তোমাদেরকে যুদ্ধের ক্ষেত্রগুলোতে (যেগুলোর একটি হলো বদর যুদ্ধ) শত্রæর উপর বিজয় দিয়ে শক্তিশালী করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র রিযিক দিয়েছেন। যেগুলোর একটি হলো যুদ্ধলব্ধ সম্পদ যা তোমরা শত্রæদের থেকে হাসিল করেছো। উদ্দেশ্য হলো তোমরা যেন আল্লাহ তা‘আলার নিয়ামতগুলোর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারো। তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তিনি তোমাদেরকে তা আরো বাড়িয়ে দিবেন। সুতরাং তোমরা কখনো সেগুলোর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ো না। অন্যথায় তিনি তোমাদের থেকে তা ছিনিয়ে নিবেন ও তোমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিবেন।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَخُونُواْ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ وَتَخُونُوٓاْ أَمَٰنَٰتِكُمۡ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ
২৭. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর রাসূলের অনুসারী মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূলের আদেশ-নিষেধ অমান্য করে তাঁদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করো না। তোমাদের নিকট যা কিছু আমানত রাখা হয়েছে তার খিয়ানত করো না। যদি তোমরা এসব কাজে লিপ্ত হও তাহলে বিশ্বাসঘাতকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
التفاسير العربية:
وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّمَآ أَمۡوَٰلُكُمۡ وَأَوۡلَٰدُكُمۡ فِتۡنَةٞ وَأَنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥٓ أَجۡرٌ عَظِيمٞ
২৮. হে মু’মিনগণ! তোমরা এ কথা জেনে রাখো যে, নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে কেবল পরীক্ষা মাত্র। তাই কখনো কখনো সেগুলো তোমাদেরকে আখিরাতের আমল করতে বাধা দিবে এবং তোমাদেরকে বিশ্বাসঘাতকতা করতে উৎসাহিত করবে। তোমরা আরো জেনে রাখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলার নিকট রয়েছে মহা প্রতিদান। তাই তোমরা সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এবং সেগুলোর জন্য বিশ্বাসঘাতকতা করতে গিয়ে এ সাওয়াবকে নিজেদের হাতছাড়া করো না।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِن تَتَّقُواْ ٱللَّهَ يَجۡعَل لَّكُمۡ فُرۡقَانٗا وَيُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَيِّـَٔاتِكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡۗ وَٱللَّهُ ذُو ٱلۡفَضۡلِ ٱلۡعَظِيمِ
২৯. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর রাসূলের অনুসারী মু’মিনগণ! তোমরা এ কথা জেনে রাখো যে, সত্যিকারার্থে তোমরা যদি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করতে পারো তাহলে তিনি তোমাদেরকে সত্য-মিথ্যার প্রভেদজ্ঞান প্রদান করবেন। ফলে সত্য-মিথ্যা তোমাদের নিকট কখনো মিশ্রিত হবে না। উপরন্তু তিনি তোমাদের কৃত পাপগুলো মুছে দিবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা মহান দয়াশীল। তাঁর মহান দয়ার একটি হলো জান্নাত। যা তিনি তাঁর মুত্তাকী বান্দাদের জন্য তৈরি করেছেন।
التفاسير العربية:
وَإِذۡ يَمۡكُرُ بِكَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لِيُثۡبِتُوكَ أَوۡ يَقۡتُلُوكَ أَوۡ يُخۡرِجُوكَۚ وَيَمۡكُرُونَ وَيَمۡكُرُ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَيۡرُ ٱلۡمَٰكِرِينَ
৩০. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন মুশরিকরা আপনার সাথে এ ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করতে একমত হয়েছে যে, তারা হয়তো বা আপনাকে বন্দী করবে কিংবা আপনাকে হত্যা করবে অথবা তারা আপনাকে নিজ এলাকা থেকে অন্য এলাকায় তাড়িয়ে দিবে। তারা পারলে আপনার সাথে ষড়যন্ত্র করুক। আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তাদের ষড়যন্ত্রের উত্তর দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা কৌশলে যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আর তিনি হলেন সর্বোত্তম কৌশলী।
التفاسير العربية:
وَإِذَا تُتۡلَىٰ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُنَا قَالُواْ قَدۡ سَمِعۡنَا لَوۡ نَشَآءُ لَقُلۡنَا مِثۡلَ هَٰذَآ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّآ أَسَٰطِيرُ ٱلۡأَوَّلِينَ
৩১. যখন তাদের নিকট আমার আয়াতগুলো পড়া হয় তখন তারা সত্যের প্রতি হঠকারিতা দেখিয়ে অহঙ্কার করে বলে: আমরা এরূপ পূর্বেও শুনেছি। আমরা এ কুর‘আনের ন্যায় বলতে চাইলে অবশ্যই বলতে পারবো। আমরা যে কুর‘আন শুনছি, তা মূলতঃ পূর্বসূরীদের মিথ্যা কল্পকাহিনীমাত্র। সুতরাং আমরা এর উপর ঈমান আনবো না।
التفاسير العربية:
وَإِذۡ قَالُواْ ٱللَّهُمَّ إِن كَانَ هَٰذَا هُوَ ٱلۡحَقَّ مِنۡ عِندِكَ فَأَمۡطِرۡ عَلَيۡنَا حِجَارَةٗ مِّنَ ٱلسَّمَآءِ أَوِ ٱئۡتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيمٖ
৩২. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন মুশরিকরা বললো: হে আল্লাহ! যদি মুহাম্মাদ আনীত বিধান সত্য হয়ে থাকে তাহলে আপনি আমাদেরকে আকাশ থেকে পাথর ফেলে ধ্বংস করে দিন অথবা আমাদেরকে কঠিন শাস্তি দিন। তারা কুর‘আনকে চরমভাবে অস্বীকার করতে গিয়ে এরকম বলেছে।
التفاسير العربية:
وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمۡ وَأَنتَ فِيهِمۡۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ مُعَذِّبَهُمۡ وَهُمۡ يَسۡتَغۡفِرُونَ
৩৩. আল্লাহ তা‘আলা আপনার উপস্থিতিতে আপনার উম্মতকে এমন শাস্তি দিবেন না যে, তাদেরকে একেবারেই মূলোৎপাটন করে দিবেন। চাই তারা আপনাকে মেনে নিক বা না নিক। মূলতঃ তাদের মাঝে আপনার উপস্থিতি তাদের জন্য আমার আযাব থেকে নিরাপত্তা স্বরূপ। তেমনিভাবে আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিবেন না যতক্ষণ তারা নিজেদের পাপসমূহ থেকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• الشكر نعمة عظيمة يزيد بها فضل الله تعالى، وينقص عند إغفالها.
ক. কৃতজ্ঞতা এমন একটি বড় নিয়ামত যার মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ বেড়ে যায়। আর তা থেকে গাফিল হলে আল্লাহর অনুগ্রহ কমে যায়।

• للأمانة شأن عظيم في استقامة أحوال المسلمين، ما ثبتوا عليها وتخلقوا بها، وهي دليل نزاهة النفس واعتدال أعمالها.
খ. মুসলমানদের অবস্থার স্থিতিশীলতার জন্য আমানতের ভ‚মিকা অপরিসীম। যতক্ষণ তারা এর উপর অটল থাকবে ও এ চরিত্রে চরিত্রবান হবে। উপরন্তু এটি মানুষের মানসিক পরিচ্ছন্নতা ও আমলের ভারসাম্যতার প্রমাণ।

• ما عند الله من الأجر على كَفِّ النفس عن المنهيات، خير من المنافع الحاصلة عن اقتحام المناهي لأجل الأموال والأولاد.
গ. সন্তান ও সম্পদের জন্য নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হয়ে কিছু অর্জনের চেয়ে নিজকে নিষিদ্ধ কাজ থেকে দূরে রাখার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে যে সাওয়াব রয়েছে তা অনেক উত্তম।

• في الآيات بيان سفه عقول المعرضين؛ لأنهم لم يقولوا: اللَّهُمَّ إن كان هذا هو الحق من عندك فاهدنا إليه.
ঘ. উক্ত আয়াতসমূহে আল্লাহর বিধান থেকে অমুখাপেক্ষীদের বোকামির সুন্দর বর্ণনা রয়েছে। কারণ, তারা এ কথা বলেনি যে, যদি এটি আপনার পক্ষ থেকে আসা সত্য হয়ে থাকে তাহলে আপনি আমাদেরকে সে পথ দেখান।

• في الآيات فضيلة الاستغفار وبركته، وأنه من موانع وقوع العذاب.
ঙ. উক্ত আয়াতসমূহে ইস্তিগফারের ফযীলত ও বরকতের বর্ণনা রয়েছে। ইস্তিগফার মূলতঃ আল্লাহর শাস্তি নিপতিত হওয়ার পথে এক ধরনের বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

وَمَا لَهُمۡ أَلَّا يُعَذِّبَهُمُ ٱللَّهُ وَهُمۡ يَصُدُّونَ عَنِ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ وَمَا كَانُوٓاْ أَوۡلِيَآءَهُۥٓۚ إِنۡ أَوۡلِيَآؤُهُۥٓ إِلَّا ٱلۡمُتَّقُونَ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَهُمۡ لَا يَعۡلَمُونَ
৩৪. কোন্ জিনিস তাদেরকে আমার শাস্তি থেকে রক্ষা করবে; অথচ তারা এমন কাজে লিপ্ত হয়েছে যা তাদের শাস্তিকে অবধারিত করে। তারা মানুষকে মসজিদে হারামে তাওয়াফ ও সালাত আদায় করতে বাধা দেয়। তদুপরি তারা দাবি করে যে, তারা হলো মূলতঃ আল্লাহর বন্ধু; অথচ তারা আল্লাহর বন্ধু নয়। বস্তুতঃ মুশরিকরা কখনো আল্লাহর বন্ধু হতে পারে না। আল্লাহর বন্ধু শুধু তারাই যারা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকে ভয় করে চলে। কিন্তু অধিকাংশ মুশরিক তা বুঝে না।
التفاسير العربية:
وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمۡ عِندَ ٱلۡبَيۡتِ إِلَّا مُكَآءٗ وَتَصۡدِيَةٗۚ فَذُوقُواْ ٱلۡعَذَابَ بِمَا كُنتُمۡ تَكۡفُرُونَ
৩৫. মসজিদে হারামের নিকট মুশরিকদের সালাত শুধু শিস ধ্বনি ও হাত তালি দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। হে মুশরিকরা! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরি করার দরুন বদরের দিনে হত্যা ও বন্দী হওয়ার মত শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করো।
التفاسير العربية:
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ يُنفِقُونَ أَمۡوَٰلَهُمۡ لِيَصُدُّواْ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِۚ فَسَيُنفِقُونَهَا ثُمَّ تَكُونُ عَلَيۡهِمۡ حَسۡرَةٗ ثُمَّ يُغۡلَبُونَۗ وَٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِلَىٰ جَهَنَّمَ يُحۡشَرُونَ
৩৬. যারা কাফির তারা মূলতঃ নিজেদের সম্পদগুলো মানুষকে আল্লাহর দীন থেকে দূরে সরানোর জন্যই ব্যয় করে। তারা অচিরেই সম্পদগুলো আরো ব্যয় করবে কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য কখনো হাসিল হবে না। বরং তাদের এ সম্পদ ব্যয়ের পরিণতি হবে শুধু আপসোস ও লজ্জা। পরিশেষে তারাই পরাজিত হবে আর মু’মিনরা বিজয়ী হবে। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর সাথে কুফরি করেছে তাদেরকে কিয়ামতের দিন জাহান্নামের দিকেই হাঁকিয়ে নেয়া হবে। তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে ও অনাদি-অনন্ত কাল সেখানে অবস্থান করবে।
التفاسير العربية:
لِيَمِيزَ ٱللَّهُ ٱلۡخَبِيثَ مِنَ ٱلطَّيِّبِ وَيَجۡعَلَ ٱلۡخَبِيثَ بَعۡضَهُۥ عَلَىٰ بَعۡضٖ فَيَرۡكُمَهُۥ جَمِيعٗا فَيَجۡعَلَهُۥ فِي جَهَنَّمَۚ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡخَٰسِرُونَ
৩৭. যারা নিজেদের সম্পদকে আল্লাহর পথে বাধা প্রদানের জন্য ব্যয় করে এ জাতীয় কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে হাঁকিয়ে নেয়া হবে। যেন আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের নিকৃষ্ট দলকে মু’মিনদের পবিত্র দল থেকে পৃথক করতে পারেন। আর যেন তিনি সকল নিকৃষ্ট ব্যক্তি, আমল ও সম্পদের এক একটিকে অন্যটির উপর স্ত‚প ও গাদাগাদি করে রেখে সেগুলোকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত করতে পারেন। বস্তুতঃ তারাই হলো ক্ষতিগ্রস্ত। কারণ, তারা কিয়ামতের দিন নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং নিজেদের পরিবার-পরিজনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
التفاسير العربية:
قُل لِّلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِن يَنتَهُواْ يُغۡفَرۡ لَهُم مَّا قَدۡ سَلَفَ وَإِن يَعُودُواْ فَقَدۡ مَضَتۡ سُنَّتُ ٱلۡأَوَّلِينَ
৩৮. হে রাসূল! আপনি নিজ বংশের আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি অবিশ্বাসী লোকদেরকে বলে দিন: তারা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরি এবং মু’মিনদেরকে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকে তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাদের পূর্বেকার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিবেন। কারণ, ইসলাম তার পূর্বেকার গুনাহগুলো নস্যাত করে দেয়। আর যদি তারা কুফরির দিকে ফিরে যায় তাহলে তাদের পূর্ববর্তীদের ব্যাপারে তো আল্লাহর এ নিয়ম চালু আছে যে, তারা যদি মিথ্যারোপ করে ও কুফরির উপর অটল থাকে তাহলে তিনি তাদেরকে দ্রæত শাস্তি দেন।
التفاسير العربية:
وَقَٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَةٞ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ كُلُّهُۥ لِلَّهِۚ فَإِنِ ٱنتَهَوۡاْ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِمَا يَعۡمَلُونَ بَصِيرٞ
৩৯. হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের কাফির শত্রæদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও যতক্ষণ না শিরক উঠে যায় ও আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠায় মুসলমানদেরকে বাধা দেয়া দূর হয় এবং সকল আনুগত্য ও ধার্মিকতা শিরকমুক্ত হয়ে এক আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত হয়। বস্তুতঃ কাফিররা যদি শিরক ও আল্লাহর পথে বাধা দেয়া থেকে বিরত থাকে তাহলে তোমরা তাদেরকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাদের সমূহ কর্মকাÐ সম্পর্কে অবগত আছেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন নয়।
التفاسير العربية:
وَإِن تَوَلَّوۡاْ فَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ مَوۡلَىٰكُمۡۚ نِعۡمَ ٱلۡمَوۡلَىٰ وَنِعۡمَ ٱلنَّصِيرُ
৪০. আর যদি তারা তাদেরকে যে শিরক পরিহার করা ও আল্লাহর পথে বাধা না দেয়ার আদেশ অমান্য করে তাহলে হে মু’মিনরা! তোমার এ কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন। তিনি তাঁর বন্ধুদের জন্য কতোই না উত্তম অভিভাবক। আর তাঁর দীনের সাহায্যকারীদের জন্য কতোই না উত্তম সাহায্যকারী। কারণ, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে বন্ধুত্ব করবে সে সত্যিই সফলকাম আর যে ব্যক্তি তাঁকে সাহায্য করবে সে সত্যিই সাহায্যপ্রাপ্ত।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• الصد عن المسجد الحرام جريمة عظيمة يستحق فاعلوه عذاب الدنيا قبل عذاب الآخرة.
ক. মসজিদুল-হারাম থেকে মানুষকে বাধা দেয়া একটি মারাত্মক অপরাধ। এ অপরাধীরা আখিরাতের শাস্তির আগেই দুনিয়ার শাস্তি পাওয়ারও উপযুক্ত।

• عمارة المسجد الحرام وولايته شرف لا يستحقه إلّا أولياء الله المتقون.
খ. মসজিদুল-হারামকে আবাদ করা তথা তার দেখাশুনা ও দায়িত্ব পালন করা এমন একটি সম্মানজনক কাজ যার উপযুক্ত কেবল আল্লাহর মুত্তাকী বন্ধুরা।

• في الآيات إنذار للكافرين بأنهم لا يحصلون من إنفاقهم أموالهم في الباطل على طائل، وسوف تصيبهم الحسرة وشدة الندامة.
গ. উক্ত আয়াতগুলোতে কাফিরদেরকে এ মর্মে ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে যে, নিশ্চয়ই তারা বাতিল পথে নিজেদের সম্পদগুলো ব্যয় করে। সত্যিকারার্থে তারা কোনভাবেই লাভবান হবে না। বরং অচিরেই তাদেরকে এ জন্য কঠিন লজ্জা পেতে হবে ও আপসোস করতে হবে।

• دعوة الله تعالى للكافرين للتوبة والإيمان دعوة مفتوحة لهم على الرغم من استمرار عنادهم.
ঘ. কাফিরদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈমান ও তাওবার আহŸান মূলতঃ একটি উন্মুক্ত আহŸান। যদিও তারা সর্বদাই নিজেদের হঠকারিতার উপর অটল।

• من كان الله مولاه وناصره فلا خوف عليه، ومن كان الله عدوًّا له فلا عِزَّ له.
ঙ. আল্লাহ তা‘আলা যার বন্ধু ও সাহায্যকারী হয়ে যাবেন তার কোন ভয় থাকবে না। আর আল্লাহ যার শত্রæ হয়ে যাবেন তার কোন ইজ্জত থাকবে না।

۞ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّمَا غَنِمۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُۥ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي ٱلۡقُرۡبَىٰ وَٱلۡيَتَٰمَىٰ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِ إِن كُنتُمۡ ءَامَنتُم بِٱللَّهِ وَمَآ أَنزَلۡنَا عَلَىٰ عَبۡدِنَا يَوۡمَ ٱلۡفُرۡقَانِ يَوۡمَ ٱلۡتَقَى ٱلۡجَمۡعَانِۗ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٌ
৪১. হে মু’মিনরা! যদি তোমরা আমি আল্লাহর উপর এবং বদরের দিন আমার বান্দা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি যা নাযিল করেছি তার উপর বিশ্বাসী হয়ে থাকো তাহলে এ কথা জেনে রাখো যে, তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হিসেবে কাফিরদের থেকে যা কিছু হাসিল করো তা পাঁচ ভাগে ভাগ করা হবে: যার চার ভাগ মুজাহিদদের মাঝে বন্টন করা হবে এবং অবশিষ্ট পঞ্চম ভাগকে আবারো পাঁচ ভাগে ভাগ করা হবে: যার এক ভাগ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য অর্থাৎ তা মুসলমানদের সাধারণ খরচের খাতে ব্যয় করা হবে। আরেক ভাগ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর আত্মীয় তথা বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবের জন্য। আরেক ভাগ এতীমের জন্য। আরেক ভাগ ফকির ও মিসকিনের জন্য। আরেক ভাগ পথে আটকে পড়া মুসাফিরদের জন্য। যে বদরের দিন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নিজেদের শত্রæদের উপর বিজয়ী করে সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করেছেন। বস্তুতঃ যে আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন তিনি সব কিছুই করতে সক্ষম।
التفاسير العربية:
إِذۡ أَنتُم بِٱلۡعُدۡوَةِ ٱلدُّنۡيَا وَهُم بِٱلۡعُدۡوَةِ ٱلۡقُصۡوَىٰ وَٱلرَّكۡبُ أَسۡفَلَ مِنكُمۡۚ وَلَوۡ تَوَاعَدتُّمۡ لَٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِي ٱلۡمِيعَٰدِ وَلَٰكِن لِّيَقۡضِيَ ٱللَّهُ أَمۡرٗا كَانَ مَفۡعُولٗا لِّيَهۡلِكَ مَنۡ هَلَكَ عَنۢ بَيِّنَةٖ وَيَحۡيَىٰ مَنۡ حَيَّ عَنۢ بَيِّنَةٖۗ وَإِنَّ ٱللَّهَ لَسَمِيعٌ عَلِيمٌ
৪২. তোমরা স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন তোমরা মদীনার দিকের উপত্যকার নিকটবর্তী অংশে অবস্থান করছিলে আর মুশরিকরা মক্কার দিকের দূরবর্তী অংশে অবস্থান করছিলো। আর মক্কার ব্যবসায়ী দলটি লোহিত সাগর পাড়ের দিকের নি¤œাঞ্চলে অবস্থান করছিলো। যদি তোমরা ও মুশরিকরা বদরে একত্রিত হওয়ার পরস্পর ওয়াদা করতে তাহলে তোমরা একে অপরের সাথে ওয়াদা খেলাফ করতে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা পূর্বের কোন ওয়াদা ছাড়াই বদর এলাকায় তোমাদেরকে একত্রিত করেছেন এমন একটি ব্যাপারকে পরিপূর্ণ করার জন্য যা নিশ্চিতভাবে হওয়ারই ছিলো। তা হলো মু’মিনদেরকে সাহায্য ও কাফিরদেরকে অপদস্ত করা। উপরন্তু তাঁর দীনকে বিজয়ী ও শিরককে পরাজিত করা। যেন তাদের মধ্যকার যারা মৃত্যু বরণ করলো তারা সংখ্যা ও সরঞ্জাম কম থাকা সত্তে¡ও মু’মিনদের বিজয়ী হওয়ার বিষয়টি দেখে যায়। আর যাদের জীবন আছে তারা যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রকাশিত এ দিব্য দলীল ও প্রমাণ দেখে বেঁচে থাকে। যাতে আল্লাহর উপর কারো কোন অভিযোগ না থাকে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা সকলের কথা শুনেন ও সকলের কর্মকাÐ সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন নয়। তিনি অচিরেই তাদেরকে এর প্রতিদান দিবেন।
التفاسير العربية:
إِذۡ يُرِيكَهُمُ ٱللَّهُ فِي مَنَامِكَ قَلِيلٗاۖ وَلَوۡ أَرَىٰكَهُمۡ كَثِيرٗا لَّفَشِلۡتُمۡ وَلَتَنَٰزَعۡتُمۡ فِي ٱلۡأَمۡرِ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ سَلَّمَۚ إِنَّهُۥ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
৪৩. হে রাসূল! আপনি নিজের উপর ও মু’মিনদের উপর আল্লাহর নিয়ামতের কথা স্মরণ করুন যখন আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে স্বপ্নের মাধ্যমে মুশরিকদের সংখ্যা কম দেখিয়েছেন। তখন আপনি মু’মিনদেরকে ব্যাপারটি জানালে তারা কল্যাণের সুসংবাদ পায় এবং শত্রæর সাথে সাক্ষাৎ ও যুদ্ধের জন্য তাদের মনোবল আরো শক্তিশালী হয়। যদি আল্লাহ তা‘আলা স্বপ্নের মাধ্যমে আপনাকে মুশরিকদের সংখ্যা বেশি দেখাতেন তাহলে আপনার সাথীদের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়তো এবং তারা যুদ্ধ করতে ভয় পেতো। তবে আল্লাহ তা‘আলা শত্রæদের সংখ্যা কম দেখিয়ে মু’মিনদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন এবং তাদেরকে ব্যর্থতা থেকে বাঁচিয়েছেন। নিশ্চয়ই তিনি অন্তরে যা গচ্ছিত আছে এবং মনের ভেতর যা লুক্কায়িত আছে তা সবই জানেন।
التفاسير العربية:
وَإِذۡ يُرِيكُمُوهُمۡ إِذِ ٱلۡتَقَيۡتُمۡ فِيٓ أَعۡيُنِكُمۡ قَلِيلٗا وَيُقَلِّلُكُمۡ فِيٓ أَعۡيُنِهِمۡ لِيَقۡضِيَ ٱللَّهُ أَمۡرٗا كَانَ مَفۡعُولٗاۗ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ
৪৪. হে মু’মিনগণ! তোমরা স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে যুদ্ধের সময় মুশরিকদের সংখ্যা কম দেখিয়েছেন। তাই তোমরা যুদ্ধে অংশগ্রহণে সাহসী হয়েছো। তেমনিভাবে তিনি তোমাদেরকেও তাদের চোখে কম দেখিয়েছেন যাতে তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধে অগ্রসর হয় এবং ফিরে যাওয়ার চিন্তা না করে। যাতে আল্লাহ তা‘আলা এমন একটি ব্যাপারে ফায়সালা করে ফেলেন যা অবধারিত ছিলো। তা হলো হত্যা ও বন্দী করার মাধ্যমে মুশরিকদের থেকে প্রতিশোধ নেয়া এবং শত্রæর উপর বিজয় ও সাহায্যের মাধ্যমে মু’মিনদেরকে নিয়ামত দেয়া। বস্তুতঃ এক আল্লাহর দিকেই সব কিছুর প্রত্যাবর্তন হবে। তিনি তখন সকল অপকর্মকারীকে তার অপকর্মের এবং সৎকর্মশীলকে তার সৎকর্মের প্রতিদান দিবেন।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا لَقِيتُمۡ فِئَةٗ فَٱثۡبُتُواْ وَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَثِيرٗا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ
৪৫. হে আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর রাসূলের অনুসারী মু’মিনরা! যখন তোমরা কাফিরদের কোন দলের সম্মুখীন হবে তখন তোমরা তাদের সাক্ষাতে দৃঢ়পদ হও এবং কখনো তাদেরকে দুর্বলতা দেখাবে না। আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো ও ডাকো। তিনিই তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য করতে সক্ষম। যাতে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের উদ্দেশ্য হাসিল করিয়ে দিতে পারেন এবং তোমাদের আশঙ্কার বস্তু থেকে তোমাদেরকে দূরে রাখতে পারেন।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• الغنائم لله يجعلها حيث شاء بالكيفية التي يريد، فليس لأحد شأن في ذلك.
ক. যুদ্ধলব্ধ সম্পদ একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার অধিকারভুক্ত। তিনি যাকে চান তাকে দিবেন এবং যেভাবে চান সেভাবেই দিবেন। কারো এখানে কোন দখলদারিত্ব নেই।

• من أسباب النصر تدبير الله للمؤمنين بما يعينهم على النصر، والصبر والثبات والإكثار من ذكر الله.
খ. বিজয়ের কিছু মাধ্যম হলো আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ লাভ করা, ধৈর্য ধারণ করা, দৃঢ়পদ থাকা ও বেশি বেশি আল্লাহর যিকির করা।

• قضاء الله نافذ وحكمته بالغة وهي الخير لعباد الله وللأمة كلها.
গ. আল্লাহর ফায়সালাই চ‚ড়ান্ত এবং তাঁর হিকমত হলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের। যা আল্লাহর বান্দা ও সকল উম্মতের জন্য কল্যাণকর।

وَأَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَلَا تَنَٰزَعُواْ فَتَفۡشَلُواْ وَتَذۡهَبَ رِيحُكُمۡۖ وَٱصۡبِرُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ
৪৬. তোমরা কথা, কাজ তথা সর্বাবস্থায় আল্লাহর আনুগত্য ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো। কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে কখনো দ্ব›দ্ব করো না। কারণ, দ্ব›দ্ব দুর্বলতা, কাপুরুষতা তোমাদের শক্তি নিঃশেষের অন্যতম কারণ। তোমরা শত্রæর মুখোমুখী হলে ধৈর্যধারণ করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদানে ধৈর্যশীলদের সাথেই রয়েছেন। আর আল্লাহ তা‘আলা যার সাথে রয়েছেন সে অবশ্যই বিজয়ী ও জয়লাভকারী।
التفاسير العربية:
وَلَا تَكُونُواْ كَٱلَّذِينَ خَرَجُواْ مِن دِيَٰرِهِم بَطَرٗا وَرِئَآءَ ٱلنَّاسِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِۚ وَٱللَّهُ بِمَا يَعۡمَلُونَ مُحِيطٞ
৪৭. তোমরা সেই মুশরিকদের মতো হয়ো না যারা গর্বভরে ও লোক দেখানোর জন্য মক্কা থেকে বের হয়েছে এবং মানুষকে আল্লাহর দীন থেকে সরিয়ে দিয়েছে ও তাতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে চলেছে। বস্তুতঃ মানুষের সমূহ কর্মকাÐ আল্লাহ তা‘আলারই আয়ত্বে। তাঁর নিকট তাদের কোন কর্মকাÐই লুক্কায়িত নয়। তিনি অচিরেই তাদেরকে সেগুলোর প্রতিদান দিবেন।
التفاسير العربية:
وَإِذۡ زَيَّنَ لَهُمُ ٱلشَّيۡطَٰنُ أَعۡمَٰلَهُمۡ وَقَالَ لَا غَالِبَ لَكُمُ ٱلۡيَوۡمَ مِنَ ٱلنَّاسِ وَإِنِّي جَارٞ لَّكُمۡۖ فَلَمَّا تَرَآءَتِ ٱلۡفِئَتَانِ نَكَصَ عَلَىٰ عَقِبَيۡهِ وَقَالَ إِنِّي بَرِيٓءٞ مِّنكُمۡ إِنِّيٓ أَرَىٰ مَا لَا تَرَوۡنَ إِنِّيٓ أَخَافُ ٱللَّهَۚ وَٱللَّهُ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ
৪৮. হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিয়ামতসমূহের কথা স্মরণ করো যখন শয়তান মুশরিকদের সামনে তাদের আমলগুলোকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে তাদেরকে মুসলমানদের সাথে সাক্ষাতে ও যুদ্ধে উৎসাহিত করেছে এবং তাদেরকে বলেছে: আজ তোমাদেরকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। আমি তোমাদের সাহায্যকারী ও শত্রæর হাত থেকে রক্ষাকারী। অতঃপর যখন উভয় দল একত্রিত হলো: একদিকে মু’মিনদের দল যাদেরকে ফিরিশতাগণ সহযোগিতা করছেন আর অন্যদিকে মুশরিকদের দল যাদের সাথে শয়তান রয়েছে। - তখন শয়তান পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালিয়ে গেলো এবং মুশরিকদেরকে বললো: আমি তোমাদের দায়ভারমুক্ত। আমি ফিরিশতাগণকে দেখছি যাঁরা মু’মিনদের সহযোগিতার জন্য এসেছেন। আমি ভয় পাচ্ছি যে, আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ধ্বংস করে দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা খুবই কঠিন শাস্তিদাতা। যাঁর শাস্তি সহ্য করার ক্ষমতা কারো নেই।
التفاسير العربية:
إِذۡ يَقُولُ ٱلۡمُنَٰفِقُونَ وَٱلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ غَرَّ هَٰٓؤُلَآءِ دِينُهُمۡۗ وَمَن يَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ
৪৯. তোমরা স্মরণ করো সে সময়ের কথা যখন মুনাফিক ও দুর্বল মু’মিনরা বললো: মুলতঃ মুসলমানদেরকে তাদের ধর্মই ধোঁকায় ফেলেছে, যে ধর্ম তাদেরকে শত্রæর উপর জয়ের ওয়াদা দিচ্ছে; অথচ তাদের সংখ্যাও কম আবার সরঞ্জামাদিও খুবই দুর্বল। আর শত্রæদের সংখ্যাও বেশি আবার তাদের সরঞ্জামাদিও খুবই শক্তিশালী। কিন্তু তারা জানে না যে, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করবে এবং তাঁর ওয়াদাকৃত সাহায্যের ব্যাপারে আস্থাশীল হবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাকে সর্বাবস্থায় সাহায্য করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা পরাক্রমশালী; কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। তিনি তাঁর নিয়ন্ত্রণ কাজে ও বিধান রচনায় সত্যিই প্রজ্ঞাময়।
التفاسير العربية:
وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذۡ يَتَوَفَّى ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ يَضۡرِبُونَ وُجُوهَهُمۡ وَأَدۡبَٰرَهُمۡ وَذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡحَرِيقِ
৫০. হে রাসূল! আপনি যদি ওই দৃশ্যটা দেখতেন যখন ফিরিশতাগণ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরিকারীদের রূহ কবয করে থাকেন। রূহ ছিনিয়ে নেয়ার সময় তারা সামনে অগ্রসর হলে ফিরিশতাগণ তাদের চেহারায় আঘাত করেন। আর পিছিয়ে যেতে চাইলে তাঁরা তাদের পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন এবং তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন: হে কাফিররা! তোমরা অগ্নিদগ্ধের শাস্তি ভোগ করো। আপনি যদি এ অবস্থা দেখতেন তাহলে সত্যিই একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি অবলোকন করতেন।
التفاسير العربية:
ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتۡ أَيۡدِيكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَيۡسَ بِظَلَّٰمٖ لِّلۡعَبِيدِ
৫১. হে কাফিররা! তোমাদের রূহ কবযের সময়কার এ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এবং তোমাদের কবর ও পরকালে অগ্নিদগ্ধের শাস্তি এ সবই হলো দুনিয়ার জীবনে তোমাদের কৃতকর্মের ফল। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা মানুষের উপর যুলুম করেন না। বরং তিনি তাদের মাঝে ইনসাফের ফায়সালা করেন। বস্তুতঃ তিনি ন্যায়পরায়ণ ফায়সালাকারী।
التفاسير العربية:
كَدَأۡبِ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ وَٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَفَرُواْ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ فَأَخَذَهُمُ ٱللَّهُ بِذُنُوبِهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِيّٞ شَدِيدُ ٱلۡعِقَابِ
৫২. উক্ত কাফিরদের ক্ষেত্রে অবতীর্ণ এ শাস্তি শুধু এদের সাথেই বিশেষিত নয়। বরং এটি হলো আল্লাহর এক চিরায়ত নিয়ম যা তিনি প্রত্যেক জায়গার ও যুগের কাফিরদের উপর চালু রাখেন। এ জাতীয় শাস্তি ফিরআউনের বংশ ও তার পূর্বেকার উম্মতদের কাছেও পৌঁছেছে যখন তারা আল্লাহর আয়াতসমূহের সাথে কুফরি করেছে। আল্লাহ তা‘আলা তাদের গুনাহের দরুন তাদেরকে পরাক্রমশালী শক্তিধরের ন্যায় পাকড়াও করেছেন। তিনি তাদের উপর তাঁর শাস্তি নাযিল করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মহান শক্তিধর যাঁকে পরাজিত ও অধীন করা যায় না। তিনি তাঁর বিরোধীদের জন্য কঠিন শাস্তিদাতা।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• البَطَر مرض خطير ينْخَرُ في تكوين شخصية الإنسان، ويُعَجِّل في تدمير كيان صاحبه.
ক. সত্যকে অগ্রাহ্য করা এমন একটি মহা ব্যাধি যা মানুষের ব্যক্তিত্ব গঠনে বিরাট বাধা হয় এমনকি তার নিজের অস্তিত্বকে দ্রæত ধ্বংস করে দেয়।

• الصبر يعين على تحمل الشدائد والمصاعب، وللصبر منفعة إلهية، وهي إعانة الله لمن صبر امتثالًا لأمره، وهذا مشاهد في تصرفات الحياة.
খ. ধৈর্য মূলতঃ সকল কঠিন বিপদ ও দুরূহ ব্যাপার সহনীয় করার ক্ষেত্রে বিশেষ সহযোগী। ধৈর্যের এক ধরনের ঐশী লাভও রয়েছে। সেটি হলো সর্বাবস্থায় আল্লাহর সহযোগিতা লাভ করা। জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে পরিলক্ষিত।

• التنازع والاختلاف من أسباب انقسام الأمة، وإنذار بالهزيمة والتراجع، وذهاب القوة والنصر والدولة.
গ. অন্তর্দ্ব›দ্ব ও কলহ-বিবাদ উম্মতের বিচ্ছিন্নতার একটি বিশেষ কারণ। এমনকি সেটি উম্মতের পরাজয় ও পশ্চাৎপদতার প্রতি একটি বিশেষ সঙ্কেতও বটে। উপরন্তু এরই কারণে সমূহ শক্তি, বিজয় এমনকি রাষ্ট্রও ধূলিসাৎ হয়ে যায়।

• الإيمان يوجب لصاحبه الإقدام على الأمور الهائلة التي لا يُقْدِم عليها الجيوش العظام.
ঘ. প্রকৃত ঈমান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ভয়ানক পদক্ষেপ নিতেও সাহস যোগায় যে ব্যাপারে বৃহৎ সেনাবাহিনীও অগ্রসর হতে সাহস পায় না।

ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ لَمۡ يَكُ مُغَيِّرٗا نِّعۡمَةً أَنۡعَمَهَا عَلَىٰ قَوۡمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُواْ مَا بِأَنفُسِهِمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٞ
৫৩. এ কঠিন শাস্তি এ জন্য যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা কোন জাতিকে নিজ পক্ষ থেকে কোন নিয়ামত দিলে তিনি তা কখনো ছিনিয়ে নেন না যতক্ষণ না তারা নিজেদের ভালো অবস্থাকে তথা ঈমান, আমলে দৃঢ়তা ও নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতাকে আল্লাহর সাথে কুফরি, তাঁর বিরুদ্ধাচরণ ও তাঁর নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রদর্শন কর্তৃক পরিবর্তন করে দেয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের কথাগুলো শুনেন ও তাদের কর্মকাÐ সম্পর্কে জানেন। সেগুলোর কোনটিই তাঁর নিকট গোপন নয়।
التفاسير العربية:
كَدَأۡبِ ءَالِ فِرۡعَوۡنَ وَٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡۚ كَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِ رَبِّهِمۡ فَأَهۡلَكۡنَٰهُم بِذُنُوبِهِمۡ وَأَغۡرَقۡنَآ ءَالَ فِرۡعَوۡنَۚ وَكُلّٞ كَانُواْ ظَٰلِمِينَ
৫৪. এ কাফিরদের অবস্থা অন্যান্য কাফিরদের মতোই। যেমন: ফিরআউনের বংশ ও তাদের পূর্বেকার মিথ্যারোপকারী উম্মতগুলো যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে তাদের কৃত গুনাহের দরুন ধ্বংস করে দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা ফিরআউনের বংশকে সাগরে ডুবিয়ে মারলেন। বস্তুতঃ ফিরআউনের বংশ ও তাদের পূর্বেকার জাতিসমূহ আল্লাহর সাথে কুফরি ও শিরক করার দরুন বড় যালিম ছিলো। তারা এর মাধ্যমে তাঁর শাস্তিকে অবধারিত করে নিয়েছে। তাই তিনি তাদেরকে প্রাপ্য শাস্তি প্রদান করেন।
التفاسير العربية:
إِنَّ شَرَّ ٱلدَّوَآبِّ عِندَ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ فَهُمۡ لَا يُؤۡمِنُونَ
৫৫. তারাই জমিনে বিচরণকারী সর্বনিকৃষ্ট প্রাণী যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের সাথে কুফরি করেছে। কুফরির উপর অবিচলতার দরুন তাদের নিকট সকল নিদর্শন আসার পরও তারা ঈমান আনে নি। কারণ, তাদের হিদায়েত লাভের উপকরণগুলো তথা তাদের বিবেক, শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসমূহ নষ্ট হয়ে গেছে।
التفاسير العربية:
ٱلَّذِينَ عَٰهَدتَّ مِنۡهُمۡ ثُمَّ يَنقُضُونَ عَهۡدَهُمۡ فِي كُلِّ مَرَّةٖ وَهُمۡ لَا يَتَّقُونَ
৫৬. যাদের সাথে আপনি চুক্তি ও অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছেন যেমন: বনূ কুরাইযাহ। তারা সর্বদা নিজেদের অঙ্গীকারসমূহ ভঙ্গ করে। উপরন্তু তারা না আল্লাহকে ভয় করে, না তারা নিজেদের ওয়াদাগুলো পূরা করে, না তারা তাদের থেকে নেয়া অঙ্গীকারসমূহ রক্ষা করে।
التفاسير العربية:
فَإِمَّا تَثۡقَفَنَّهُمۡ فِي ٱلۡحَرۡبِ فَشَرِّدۡ بِهِم مَّنۡ خَلۡفَهُمۡ لَعَلَّهُمۡ يَذَّكَّرُونَ
৫৭. হে রাসূল! আপনি যদি এ চুক্তি ভঙ্গকারীদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে পেয়ে যান তাহলে তাদেরকে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন করুন। যেন অন্যরা তা শুনে ও তাদের অবস্থা দেখে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। তখন তারা আপনার সাথে যুদ্ধ করতে ও আপনার বিরুদ্ধে আপনার শত্রæকে সহযোগিতা করতে ভয় পাবে।
التفاسير العربية:
وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوۡمٍ خِيَانَةٗ فَٱنۢبِذۡ إِلَيۡهِمۡ عَلَىٰ سَوَآءٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡخَآئِنِينَ
৫৮. হে রাসূল! আপনি যদি কোন আলামত দেখে আপনার সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন সম্প্রদায় থেকে ধোঁকা কিংবা চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা করেন তাহলে আপনি তাদেরকে আপনার পক্ষ থেকে চুক্তি প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারটি জানিয়ে দেন। যাতে তারাও ব্যাপারটি অবহিত হতে পারে। তবে আপনি তাদেরকে কোন কিছু না জানিয়ে হঠাৎ তাদের উপর আক্রমণ করতে যাবেন না। কারণ, তাদেরকে এ ব্যাপারে কোন কিছু না জানিয়ে হঠাৎ তাদের উপর আক্রমণ করা আমানতের খিয়ানতই বটে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা খিয়ানতকারীদেরকে ভালোবাসেন না। বরং তিনি তাদেরকে ঘৃণা করেন। তাই আপনিও খিয়ানতের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
التفاسير العربية:
وَلَا يَحۡسَبَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ سَبَقُوٓاْۚ إِنَّهُمۡ لَا يُعۡجِزُونَ
৫৯. কাফিররা যেন এমন ধারণা না করে যে, তারা সত্যিই আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা ও মুক্তি পেয়েছে। বস্তুতঃ তারা না আল্লাহর আযাব থেকে রক্ষা পাবে, না তা থেকে পালিয়ে যেতে পারবে। বরং তা তাদেরকে অবশ্যই পাবে এবং কখনো তা তাদের পিছু ছাড়বে না।
التفاسير العربية:
وَأَعِدُّواْ لَهُم مَّا ٱسۡتَطَعۡتُم مِّن قُوَّةٖ وَمِن رِّبَاطِ ٱلۡخَيۡلِ تُرۡهِبُونَ بِهِۦ عَدُوَّ ٱللَّهِ وَعَدُوَّكُمۡ وَءَاخَرِينَ مِن دُونِهِمۡ لَا تَعۡلَمُونَهُمُ ٱللَّهُ يَعۡلَمُهُمۡۚ وَمَا تُنفِقُواْ مِن شَيۡءٖ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ يُوَفَّ إِلَيۡكُمۡ وَأَنتُمۡ لَا تُظۡلَمُونَ
৬০. হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের সাধ্যমতো শক্তি তথা জনসংখ্যা ও সরঞ্জামাদি - যেমন শক্তিশালী যুদ্ধাস্ত্র জোগাড় করো। তেমনিভাবে তোমরা যুদ্ধের জন্য তোমাদের সংগ্রহে থাকা ঘোড়াগুলোকেও প্রস্তুত করো। যেগুলোর মাধ্যমে তোমরা আল্লাহ ও তোমাদের শত্রæ কাফিরদেরকে ভয়-ভীতি দেখাবে যারা সর্বদা তোমাদের অকল্যাণের জন্য অপেক্ষা করে। উপরন্তু এগুলোর মাধ্যমে ওদেরকেও ভয় দেখাবে যাদের ব্যাপারে তোমরা এখনো জানো না এবং তারা নিজেদের অন্তরে তোমাদের জন্য যে শত্রæতা লুকিয়ে রেখেছে তাও তোমরা জানো না। বরং একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই তাদেরকে ও তাদের অন্তরের লুক্কায়িত শত্রæতাকে জানেন। তোমরা কম-বেশি যা এ পথে খরচ করবে আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে দুনিয়াতে এর বিকল্প দিবেন এবং পরকালে কোন ধরনের ঘাটিতে ছাড়া পরিপূর্ণভাবে এর প্রতিদান দিবেন। তাই তোমরা তাঁর পথে দ্রæত ব্যয় করো।
التفاسير العربية:
۞ وَإِن جَنَحُواْ لِلسَّلۡمِ فَٱجۡنَحۡ لَهَا وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱللَّهِۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ
৬১. আর যদি তারা যুদ্ধ ছাড়তে ও আপনার সাথে সন্ধি করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে আপনিও হে রাসূল! সেদিকে ধাবিত হোন এবং তাদের সাথে চুক্তি করুন। উপরন্তু আল্লাহর উপর ভরসা ও আস্থা রাখুন। তিনি কখনোই আপনার অসহযোগিতা করবেন না। নিশ্চয়ই তিনি তাদের কথাগুলো শুনেন এবং তাদের নিয়ত ও কর্মকাÐ সম্পর্কে জানেন।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• من فوائد العقوبات والحدود المرتبة على المعاصي أنها سبب لازدجار من لم يعمل المعاصي، كما أنها زجر لمن عملها ألا يعاودها.
ক. গুনাহের দÐ ও শাস্তি প্রদানের বিশেষ একটি ফায়েদা হলো এই যে, যারা এখনো এ পাপ করেনি তারা তা থেকে দূরে থাকবে। তেমনিভাবে যারা তা করেছে তারাও একাজ দ্বিতীয়বার করতে আর সাহস পাবে না।

• من أخلاق المؤمنين الوفاء بالعهد مع المعاهدين، إلا إن وُجِدت منهم الخيانة المحققة.
খ. মু’মিনদের চরিত্র হলো চুক্তিবদ্ধদের সাথে কৃত চুক্তি রক্ষা করা যতক্ষণ না তাদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত খিয়ানতের কোন আলামত পাওয়া যায়।

• يجب على المسلمين الاستعداد بكل ما يحقق الإرهاب للعدو من أصناف الأسلحة والرأي والسياسة.
গ. শত্রæরা যা দেখে ভয় পাবে এমন রকমারি অস্ত্র, চিন্তা ও কৌশল গ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য আবশ্যক।

• جواز السلم مع العدو إذا كان فيه مصلحة للمسلمين.
ঘ. শত্রæর সাথেও চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া জায়িয যদি তাতে মুসলমানদের কোন ফায়েদা থাকে।

وَإِن يُرِيدُوٓاْ أَن يَخۡدَعُوكَ فَإِنَّ حَسۡبَكَ ٱللَّهُۚ هُوَ ٱلَّذِيٓ أَيَّدَكَ بِنَصۡرِهِۦ وَبِٱلۡمُؤۡمِنِينَ
৬২. হে রাসূল! যদি তারা যুদ্ধ ছেড়ে ও সন্ধির আগ্রহ দেখিয়ে আপনাকে ধোঁকা দিতে চায় যেন তারা আপনার সাথে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে পারে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাদের ধোঁকা ও ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে আপনার জন্য যথেষ্ট। তিনিই তাঁর সাহায্য এবং মুহাজির ও আনসার মু’মিনদের সাহায্য দিয়ে আপনাকে শক্তিশালী করেছেন।
التفاسير العربية:
وَأَلَّفَ بَيۡنَ قُلُوبِهِمۡۚ لَوۡ أَنفَقۡتَ مَا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا مَّآ أَلَّفۡتَ بَيۡنَ قُلُوبِهِمۡ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ أَلَّفَ بَيۡنَهُمۡۚ إِنَّهُۥ عَزِيزٌ حَكِيمٞ
৬৩. তেমনিভাবে তিনি এমন সব মু’মিনদেরকে দিয়ে আপনাকে সাহায্য করলেন যাদের অন্তরগুলোকে তিনিই একত্রিত ও পরস্পর সহযোগী করেছেন। অথচ তা একদা পরস্পর বিচ্ছিন্ন ও বিরোধী ছিলো। আপনি যদি দুনিয়ার সকল সম্পদও এদের বিচ্ছিন্ন অন্তরগুলোকে জোড়া লাগানোর জন্য ব্যয় করতেন তাহলেও আপনি তা করতে পারতেন না। কিন্তু একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই তা করেছেন। নিশ্চয়ই তিনি তাঁর ক্ষমতায় পরাক্রমশালী। কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারবে না। তেমনিভাবে তিনি তাঁর নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা ও বিধান রচনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ حَسۡبُكَ ٱللَّهُ وَمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ
৬৪. হে নবী! নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আপনার শত্রæদের অনিষ্টের ব্যাপারে আপনার জন্য ও মু’মিনদের জন্য যথেষ্ট। তাই আপনি তাঁর উপর ভরসা ও আস্থা রাখুন।
التفاسير العربية:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ حَرِّضِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ عَلَى ٱلۡقِتَالِۚ إِن يَكُن مِّنكُمۡ عِشۡرُونَ صَٰبِرُونَ يَغۡلِبُواْ مِاْئَتَيۡنِۚ وَإِن يَكُن مِّنكُم مِّاْئَةٞ يَغۡلِبُوٓاْ أَلۡفٗا مِّنَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَفۡقَهُونَ
৬৫. হে নবী! আপনি মু’মিনদেরকে যুদ্ধের ব্যাপারে উৎসাহিত করুন এবং এমনভাবে তাদেরকে জাগিয়ে তুলুন যা তাদের হিম্মত ও মনোবলকে চঞ্চল ও শক্তিশালী করবে। হে মু’মিনরা! যদি তোমাদের মধ্য থেকে কাফিরদের সাথে যুদ্ধের জন্য ধৈর্যশীল বিশজনও থাকে তাহলে তারা দু’শ কাফিরের উপর জয়ী হবে। আর যদি তোমাদের মাঝে ধৈর্যশীল একশ’ থাকে তাহলে তারা এক হাজার কাফিরের উপর জয়ী হবে। তা এ জন্য যে, কাফিররা আল্লাহর বন্ধুদেরকে তাঁর সহযোগিতা প্রদান এবং তাঁর শত্রæদেরকে তাঁর প্রতিহত করার চিরায়ত নিয়ম সম্পর্কে কিছুই জানে না। এমনকি তারা এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও কিছুই জানে না। কারণ, তারা কেবল দুনিয়ার কর্তৃত্বের জন্যই যুদ্ধ করে।
التفاسير العربية:
ٱلۡـَٰٔنَ خَفَّفَ ٱللَّهُ عَنكُمۡ وَعَلِمَ أَنَّ فِيكُمۡ ضَعۡفٗاۚ فَإِن يَكُن مِّنكُم مِّاْئَةٞ صَابِرَةٞ يَغۡلِبُواْ مِاْئَتَيۡنِۚ وَإِن يَكُن مِّنكُمۡ أَلۡفٞ يَغۡلِبُوٓاْ أَلۡفَيۡنِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ مَعَ ٱلصَّٰبِرِينَ
৬৬. হে মু’মিনরা! যখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের দুর্বলতার ব্যাপারটি দেখেছেন তখন তিনি তোমাদের উপর তা হাল্কা করে দিয়েছেন। তিনি দয়া করে যুদ্ধের ব্যাপারটি তোমাদের জন্য সহজ করে দেন। তাই তিনি তোমাদের প্রত্যেকের উপর দশ জনের বদলে মাত্র দু’জন কাফিরের সামনে অটল থাকাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। অতএব, তোমাদের মাঝে কাফিরদের সাথে যুদ্ধে ধৈর্যশীল একশ’ জন থাকলে তারা দু’শ’ এর উপর জয়ী হবে। আর এক হাজার ধৈর্যশীল হলে আল্লাহর ইচ্ছায় দু’ হাজার কাফিরের উপর জয়ী হবে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে ধৈর্যশীল মু’মিনদের সাথেই রয়েছেন।
التفاسير العربية:
مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَن يَكُونَ لَهُۥٓ أَسۡرَىٰ حَتَّىٰ يُثۡخِنَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ تُرِيدُونَ عَرَضَ ٱلدُّنۡيَا وَٱللَّهُ يُرِيدُ ٱلۡأٓخِرَةَۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ
৬৭. কোন নবীর সাথে যুদ্ধরত কাফিরদের মাঝে প্রচুর হত্যাকাÐ ঘটিয়ে তাদেরকে ভালোভাবে পর্যুদস্ত না করা পর্যন্ত নিজের কাছে বন্দী রাখা তাঁর জন্য উচিৎ হবে না। যেন তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চারিত হয় এবং তারা তাঁর সাথে দ্বিতীয়বার যুদ্ধ করতে না আসে। হে মু’মিনরা! তোমরা মূলতঃ বদরের কাফিরদেরকে বন্দী করে তাদের থেকে মুক্তিপণ নিতে চাও। অথচ আল্লাহ তা‘আলা আখিরাত চাচ্ছেন যা ধর্মের বিজয় ও তার পরাক্রমশীলতার মাধ্যমে হাসিল করা সম্ভব। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সত্তা, গুণাবলী ও ক্ষমতায় অপ্রতিদ্ব›দ্বী। তাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। তেমনিভাবে তিনি তাঁর শরীয়ত প্রণয়নে ও তাক্বদীর নির্ধারণে অতি প্রজ্ঞাময়।
التفاسير العربية:
لَّوۡلَا كِتَٰبٞ مِّنَ ٱللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمۡ فِيمَآ أَخَذۡتُمۡ عَذَابٌ عَظِيمٞ
৬৮. যদি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে এ তাক্বদীর ও ফায়সালা নির্ধারিত হয়ে না থাকতো যে, তিনি তোমাদের জন্য যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হালাল করেছেন এবং তোমাদের জন্য বন্দীদের মুক্তিপণ জায়িয করেছেন তাহলে এগুলো জায়িয করার ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নাযিল হওয়ার পূর্বে বন্দীদের থেকে মুক্তিপণ গ্রহণ করা ও যুদ্ধলব্ধ সম্পদ নেয়ার দরুন তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট কঠিন শাস্তি নেমে আসতো।
التفاسير العربية:
فَكُلُواْ مِمَّا غَنِمۡتُمۡ حَلَٰلٗا طَيِّبٗاۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৬৯. হে মু’মিনরা! তোমরা কাফিরদের থেকে যে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ গ্রহণ করেছো তা থেকে তোমরা খাও। কারণ, তা তোমাদের জন্য হালাল। আর আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মু’মিন বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• في الآيات وَعْدٌ من الله لعباده المؤمنين بالكفاية والنصرة على الأعداء.
ক. উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে মু’মিন বান্দাদের জন্য তাঁর একাই যথেষ্ট হওয়া এবং শত্রæর বিরুদ্ধে বিজয়ের ওয়াদা করা হয়েছে।

• الثبات أمام العدو فرض على المسلمين لا اختيار لهم فيه، ما لم يحدث ما يُرَخِّص لهم بخلافه.
খ. শত্রæর সামনে অবিচল থাকা মুসলমানদের উপর ফরয। ইচ্ছাধীন নয়। যতক্ষণ না তার বিপরীতটির অনুমতি সংক্রান্ত কোন কিছু ঘটে।

• الله يحب لعباده معالي الأمور، ويكره منهم سَفْسَافَها، ولذلك حثهم على طلب ثواب الآخرة الباقي والدائم.
গ. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের জন্য উন্নত ও মহান বস্তুসমূহকে ভালোবাসেন ও নিচু মানের বস্তুসমূহকে অপছন্দ করেন। তাই তিনি তাদেরকে পরকালের স্থায়ী ও অবিনশ্বর সাওয়াব হাসিলের প্রতি উৎসাহিত করেন।

• مفاداة الأسرى أو المنّ عليهم بإطلاق سراحهم لا يكون إلا بعد توافر الغلبة والسلطان على الأعداء، وإظهار هيبة الدولة في وجه الآخرين.
ঘ. বন্দীদের মুক্তিপণ নেয়া এবং তাদেরকে এমনিতেই ছেড়ে দিয়ে তাদের প্রতি দয়া করা তখনই সঠিক যখন শত্রæদের উপর মুসলমানদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব পরিপূর্ণতা লাভ করবে এবং অন্যদের সামনে ইসলামী রাষ্ট্রের ভয়-ভীতি প্রকাশ পাবে।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّمَن فِيٓ أَيۡدِيكُم مِّنَ ٱلۡأَسۡرَىٰٓ إِن يَعۡلَمِ ٱللَّهُ فِي قُلُوبِكُمۡ خَيۡرٗا يُؤۡتِكُمۡ خَيۡرٗا مِّمَّآ أُخِذَ مِنكُمۡ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৭০. হে নবী! যে মুশরিকরা বদর যুদ্ধে আপনাদের হাতে বন্দী হয়েছে আপনি তাদেরকে বলুন: যদি আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের অন্তরের কল্যাণকামিতা ও নিয়তের পরিশুদ্ধতা দেখতে পান তাহলে তিনি তোমাদেরকে এমন কিছু দিবেন যা উক্ত আদায়কৃত মুক্তিপণের চেয়ে অধিক উত্তম। অতএব, তোমরা তোমাদের থেকে যা কিছু ইতিপূর্বে নেয়া হয়েছে তার উপর চিন্তিত হয়ো না। উপরন্তু তিনি তোমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অতি ক্ষমাশীল ও পরম করুণাময়। আল্লাহ তা‘আলার এ ওয়াদা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চাচা আব্বাস ও অন্যান্য মুসলিমের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।
التفاسير العربية:
وَإِن يُرِيدُواْ خِيَانَتَكَ فَقَدۡ خَانُواْ ٱللَّهَ مِن قَبۡلُ فَأَمۡكَنَ مِنۡهُمۡۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
৭১. হে মুহাম্মাদ! তারা সুন্দর সুন্দর কথা বলে আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে চাচ্ছে। তারা তো ইতিপূর্বেও আল্লাহর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তখন আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে তাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন। ফলে তাদের মধ্যকার কিছু সংখ্যককে হত্যা করা হয় আর কিছু সংখ্যককে বন্দী করা হয়। তাই তারা পুনরায় এমন করলে তেমন শাস্তিরই অপেক্ষা করুক। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টি ও তাদের জন্য যা কল্যাণকর তা ভালোই জানেন। তিনি তাঁর পরিচালনায় সত্যিই প্রজ্ঞাময়।
التفاسير العربية:
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَهَاجَرُواْ وَجَٰهَدُواْ بِأَمۡوَٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِينَ ءَاوَواْ وَّنَصَرُوٓاْ أُوْلَٰٓئِكَ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٖۚ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَمۡ يُهَاجِرُواْ مَا لَكُم مِّن وَلَٰيَتِهِم مِّن شَيۡءٍ حَتَّىٰ يُهَاجِرُواْۚ وَإِنِ ٱسۡتَنصَرُوكُمۡ فِي ٱلدِّينِ فَعَلَيۡكُمُ ٱلنَّصۡرُ إِلَّا عَلَىٰ قَوۡمِۭ بَيۡنَكُمۡ وَبَيۡنَهُم مِّيثَٰقٞۗ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٞ
৭২. যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর রাসূলকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তাঁর শরীয়তের উপর আমল করেছে, কুফরির এলাকা থেকে ইসলামের এলাকা অথবা এমন এলাকার দিকে হিজরত করেছে যাতে তারা নিরাপদভাবে ইবাদাত করতে পারে এবং আল্লাহর বাণীকে বিজয়ী করার জন্য নিজেদের সম্পদ ও জীবন অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে তাঁর পথে জিহাদ করেছে তারা আর যারা তাদেরকে নিজেদের ঘরে আশ্রয় দিয়ে তাদেরকে সাহায্য করেছে তথা মুহাজিররা এবং আনসারীরা তারা সবাই সাহায্য-সহযোগিতায় একে অপরের বন্ধু। আর যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে তবে তারা কুফরির এলাকা থেকে ইসলামের এলাকার দিকে হিজরত করেনি হে মু’মিনরা! তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা ও রক্ষা করা তোমাদের উপর বাধ্যতামূলক নয় যতক্ষণ না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে। আর যদি কাফিররা তাদের উপর যুলুম করে এবং তারা তোমাদের কাছ থেকে সাহায্য কামনা করে তখন তোমরা তাদেরকে তাদের শত্রæর বিরুদ্ধে সাহায্য করো। তবে যদি তোমাদের মাঝে ও তাদের শত্রæর মাঝে এমন কোন চুক্তি থাকে যা তারা এখনো লঙ্ঘন করেনি তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদেরকে সাহায্য করা যাবে না। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের সমূহ কর্মকাÐ দেখছেন। তাঁর নিকট তোমাদের কোন কাজই গোপন নয়। তিনি অচিরেই তোমাদেরকে সেগুলোর প্রতিদান দিবেন।
التفاسير العربية:
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلِيَآءُ بَعۡضٍۚ إِلَّا تَفۡعَلُوهُ تَكُن فِتۡنَةٞ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَفَسَادٞ كَبِيرٞ
৭৩. আর যারা কুফরি করে এবং কুফরিই তাদেরকে পরস্পর সংগঠিত করেছে তারা এই ভিত্তিতেই একে অপরের সহযোগিতা করে। তাই কোন মু’মিন তাদের বন্ধু হতে পারে না। যদি তোমরা মু’মিনদেরকে বন্ধু ও কাফিরদেরকে শত্রæ মনে না করো তাহলে তা বস্তুতঃ মু’মিনদের জন্যই বিপদ হয়ে যাবে। কারণ, তারা তখন এমন কাউকে পাবে না যারা ধর্মীয় ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে তাদের সহযোগিতা করবে। তেমনিভাবে আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেয়ার দরুন পৃথিবীতে কঠিন সঙ্কট সৃষ্টি হবে।
التفاسير العربية:
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَهَاجَرُواْ وَجَٰهَدُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱلَّذِينَ ءَاوَواْ وَّنَصَرُوٓاْ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ حَقّٗاۚ لَّهُم مَّغۡفِرَةٞ وَرِزۡقٞ كَرِيمٞ
৭৪. আর যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে এবং তাঁর পথে হিজরত করেছে উপরন্তু আল্লাহর পথের মুহাজিরদেরকে আশ্রয় দিয়েছে ও সহযোগিতা করেছে তারাই সত্যিকারার্থে ঈমানদার। তাদের প্রতিদান হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের গুনাহের ক্ষমা এবং সম্মানিত রিযিক তথা জান্নাত।
التفاسير العربية:
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنۢ بَعۡدُ وَهَاجَرُواْ وَجَٰهَدُواْ مَعَكُمۡ فَأُوْلَٰٓئِكَ مِنكُمۡۚ وَأُوْلُواْ ٱلۡأَرۡحَامِ بَعۡضُهُمۡ أَوۡلَىٰ بِبَعۡضٖ فِي كِتَٰبِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمُۢ
৭৫. আর যারা ইসলাম গ্রহণে অগ্রবর্তী মুহাজির ও আনসারীদের পর ঈমান গ্রহণ করেছে এবং কুফরির এলাকা থেকে ইসলামের এলাকার দিকে হিজরত করেছে উপরন্তু আল্লাহর বাণীকে বিজয়ী এবং কাফিরদের দাবিকে পরাজিত করার জন্য আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, হে মু’মিনরা! তারা তোমাদের দলেরই অন্তর্ভুক্ত। তারাও সেই অধিকার পাবে যা তোমাদের জন্য রয়েছে এবং তাদের উপর সেই দায়িত্বও বর্তাবে যা তোমাদের উপর রয়েছে। আর নিকটাত্মীয়রা আল্লাহর বিধানানুযায়ী মিরাসের ক্ষেত্রে একে অপরের বেশি নিকটবর্তী ওদের চেয়ে যারা ইতিপূর্বে ঈমান ও হিজরতের কারণে মিরাস পেতো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সব কিছু জানেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন নয়। তিনি জানেন কোন্ জিনিস তাঁর বান্দাদের জন্য উপযুক্ত। তাই তিনি সে জিনিসটিই তাদের জন্য শরীয়ত হিসেবে পছন্দ করেন।
التفاسير العربية:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• يجب على المؤمنين ترغيب الأسرى في الإيمان.
ক. মু’মিনদের কর্তব্য বন্দীদেরকে ঈমানের ব্যাপারে উৎসাহিত করা।

• تضمنت الآيات بشارة للمؤمنين باستمرار النصر على المشركين ما داموا آخذين بأسباب النصر المادية والمعنوية.
খ. উক্ত আয়াতগুলোতে মুশরিকদের উপর মু’মিনদের ধারাবাহিক বিজয়ের সুসংবাদ রয়েছে যদি তারা বিজয়ের বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ উপকরণগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারে।

• إن المسلمين إذا لم يكونوا يدًا واحدة على أهل الكفر لم تظهر شوكتهم، وحدث بذلك فساد كبير.
গ. যদি মুসলমানরা কাফিরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ না হতে পারে তাহলে তাদের ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারবে না বরং এর দরুন মহা বিপর্যয় দেখা দিবে।

• فضيلة الوفاء بالعهود والمواثيق في شرعة الإسلام، وإن عارض ذلك مصلحة بعض المسلمين.
ঘ. ইসলামী শরীয়তে চুক্তি ও অঙ্গীকার পূরণের বিশেষ গুরুত্ব ও ফযীলত রয়েছে। যদি তা কিছু সংখ্যক মুসলমানের স্বার্থ বিরোধীও হয়।

 
ترجمة معاني سورة: الأنفال
فهرس السور رقم الصفحة
 
ترجمة معاني القرآن الكريم - الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم - فهرس التراجم

الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم، صادر عن مركز تفسير للدراسات القرآنية.

إغلاق