কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। * - অনুবাদসমূহের সূচী


অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা আল-ফাতেহা   আয়াত:

সূরা আল-ফাতেহা

সূরার কতক উদ্দেশ্য:
تحقيق العبودية الخالصة لله تعالى.
একমাত্র আল্লাহর পরিপূর্ণ দাসত্ব করার মাধ্যমে যথাযথভাবে তাঁর অভিমুখী হওয়া ও নৈকট্য লাভ করা।

بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
১. আল্লাহর নামে কুরআন পাঠ শুরু করছি। তাঁরই সাহায্য কামনা করে ও তাঁরই নামের বরকত নিয়ে। বিসমিল্লাহর মধ্যে আল্লাহর তিনটি সুন্দরতম নাম রয়েছে: ক. “আল্লাহ” তথা সত্য মা’বূদ। এটি হলো আল্লাহ তা‘আলার সবিশেষ নাম। যা দিয়ে আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো নাম রাখা যায় না। খ. “আর-রাহমান” অর্থাৎ মহান দাতা, বিশাল দয়ার মালিক। তাঁর মূল সত্তাই তো দয়ালু। গ. “আর-রাহীম” অর্থাৎ পরম করুণাময়। তিনি সৃষ্টির যাকে চান দয়া করেন। এদের মধ্যে তাঁর মু’মিন বান্দারাও রয়েছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ
২. সকল প্রকারের প্রশংসা তথা সকল মহান ও পরিপূর্ণ গুণাবলী শুধুমাত্র তাঁরই; অন্য কারো নয়। কারণ, তিনিই প্রত্যেক জিনিসের প্রভু, ¯্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক বা পরিকল্পনাকারী। “আ-লামীন” শব্দটি আ-লাম শব্দের বহু বচন। তা হলো আল্লাহ ছাড়া সব কিছু।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
৩. পূর্বের আয়াতে আল্লাহর প্রশংসার পর এখানে তাঁর কিছু স্তুতি বর্ণনা করা হচ্ছে। তিনি রহমান তথা অসীম দয়ালু এবং তিনি রহীম তথা পরম করুণাময় ও অতিশয় মেহেরবান।
আরবি তাফসীরসমূহ:
مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ
৪. এখানে আল্লাহর মহত্ত¡ বর্ণনা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তিনিই হলেন কিয়ামত দিবসের সব কিছুর মালিক। সেদিন কেউ কারো সামান্য উপকার বা অপকার করতে পারবে না। يَوْمُ الدِّيْنِ “ইয়াওমিদ্দীন” মানে হিসাব-নিকাশ ও প্রতিদান দিবস।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ
৫. হে আল্লাহ! আমরা কেবল আপনার জন্যই যাবতীয় ইবাদত ও আনুগত্য করি। আপনার সাথে আর কাউকে শরীক করি না। আমাদের সকল ব্যাপারে কেবল আপনারই সাহায্য কামনা করি। আপনার হাতেই সকল কল্যাণ। আপনি ছাড়া আমাদের আর কোন সাহায্যকারী নেই।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱهۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ
৬. আপনি আমাদেরকে সরল পথ দেখান। এর উপর পরিচালিত করুন। অটল রাখুন। আরো হিদায়েত বাড়িয়ে দিন। الصِّرَاطُ الْـمُسْتَقِيْمُ “আস-সিরাতুল-মুস্তাকীম” মানে এমন সুস্পষ্ট পথ যাতে কোন ধরনের বক্রতা নেই। সেটি হলো সেই ইসলাম যা দিয়ে আল্লাহ তা‘আলা আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ
৭. আপনার সে বান্দাদের পথ যাদেরকে আপনি হিদায়েতের মাধ্যমে অনুগ্রহ প্রদান করেছেন। যেমন: নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও নেককারগণ। কতোই না ধন্য ও পুণ্যবান সাথী তাঁরা। ওদের পথ নয়; যাদের উপর আপনি গোসসা হয়েছেন। যারা সত্য জেনেও তা অনুসরণ করেনি। যেমন: ইহূদিরা। ওদের পথও নয়; যারা সত্যভ্রষ্ট হয়েছে। যারা সঠিক পথের সন্ধান পায়নি। কারণ, তারা সঠিক পথ অনুসন্ধান ও তা পাওয়ার ব্যাপারে প্রচুর ত্রæটি করেছে। যেমন: খ্রিস্টানরা।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• افتتح الله تعالى كتابه بالبسملة؛ ليرشد عباده أن يبدؤوا أعمالهم وأقوالهم بها طلبًا لعونه وتوفيقه.
ক. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কুরআনকে “বিসমিল্লাহ” দিয়ে শুরু করেছেন। যাতে বান্দারাও নিজ নিজ কাজ ও কথা “বিসমিল্লাহ” দিয়ে শুরু করে। তাতে আল্লাহর তাওফীক ও সাহায্য পাওয়া যাবে।

• من هدي عباد الله الصالحين في الدعاء البدء بتمجيد الله والثناء عليه سبحانه، ثم الشروع في الطلب.
খ. নেককার বান্দাদের দু‘আর নিয়ম হলো আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর স্তুতি বর্ণনার পর নিজেদের আবেদন শুরু করা।

• تحذير المسلمين من التقصير في طلب الحق كالنصارى الضالين، أو عدم العمل بالحق الذي عرفوه كاليهود المغضوب عليهم.
গ. সত্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ত্রæটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে মুসলমানদেরকে সতর্ক করা। যা ভ্রষ্ট খ্রিস্টানদের অভ্যাস। তেমনিভাবে সত্য জেনে তা আমল না করার ব্যাপারে সতর্ক করা। যা আল্লাহর রোষানলে পতিত ইহূদীদের স্বভাব।

• دلَّت السورة على أن كمال الإيمان يكون بإخلاص العبادة لله تعالى وطلب العون منه وحده دون سواه.
ঘ. সূরাটি এ কথাও প্রমাণ করে যে, ঈমানের পরিপূর্ণতা আল্লাহর একনিষ্ঠ ইবাদাত এবং তাঁর একান্ত সাহায্য কামনার মাধ্যমেই লাভ হয়; অন্য কিছুর মাধ্যমে নয়।

 
অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা আল-ফাতেহা
সূরাসমূহের সূচী পৃষ্ঠার নাম্বার
 
কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - অনুবাদসমূহের সূচী

বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। মারকাযু তাফসীর লিদ-দিরাসাতিল কুরআনিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত।

বন্ধ