কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। * - অনুবাদসমূহের সূচী


অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা ফাতির   আয়াত:

সূরা ফাতির

সূরার কতক উদ্দেশ্য:
بيان فقر العباد المطلق إلى فاطر السماوات والأرض، وكمال غناه عنهم.
আল্লাহর কুদরতের বাস্তব নমুনা উপস্থাপন ও সৃষ্টির অভিনব রূপের চিত্রাঙ্কন, তাঁর সম্মান, ভয় ও তাঁর উপর ঈমান আনয়ন এবং তাঁর নিয়ামত স্মরণের উপায় উপকরণের বর্ণনা।

ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ فَاطِرِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ جَاعِلِ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ رُسُلًا أُوْلِيٓ أَجۡنِحَةٖ مَّثۡنَىٰ وَثُلَٰثَ وَرُبَٰعَۚ يَزِيدُ فِي ٱلۡخَلۡقِ مَا يَشَآءُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
১.ওই আল্লাহর প্রশংসা যিনি কোনরূপ নমুনা ব্যতিরেকে আসমান-যমীন সৃষ্টিকারী। যিনি ফিরিশতাদের মধ্যে এমন কিছু বার্তাবাহক নির্ধারণ করেছেন যাঁরা তাঁর অমোঘ বিধানগুলো বাস্তবায়ন করেন। আবার তাঁদের মধ্যে কেউ নবীদের নিকট ওহী পৌঁছিয়ে থাকেন। তিনি তাদেরকে অর্পিত দায়িত্ব পালনের উপর ক্ষমতা প্রদান করেছেন। তাঁদের কেউ দু’ ডানা আবার কেউ তিন ডানা এবং কেউ চার ডানা বিশিষ্ট। এর দ্বারা তাঁকে নির্দেশিত দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে তিনি উড়ে বেড়ান। আল্লাহ তাঁর ইচ্ছানুযায়ী সৃষ্টির মধ্যে অঙ্গ, সৌন্দর্য ও স্বরে প্রবৃদ্ধি করেন। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। তাঁকে কোন জিনিস ব্যাহত করতে পারে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
مَّا يَفۡتَحِ ٱللَّهُ لِلنَّاسِ مِن رَّحۡمَةٖ فَلَا مُمۡسِكَ لَهَاۖ وَمَا يُمۡسِكۡ فَلَا مُرۡسِلَ لَهُۥ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ
২. সকল বস্তুর চাবিকাঠি আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যে রিযিক, হেদায়ত ও সুখের দ্বার উম্মুক্ত করেন তা বন্ধ কারার ক্ষমতা কেউ রাখেনা। আর তিনি এ থেকে যা বারণ করেন তা কেউ প্রদান করতে পারে না। তিনি সেই পরাক্রমশালী যাঁকে কেউ পরাভূত করতে পারে না। তিনি তাঁর নিরূপণ ও পরিচালনায় প্রজ্ঞাবান।
আরবি তাফসীরসমূহ:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡۚ هَلۡ مِنۡ خَٰلِقٍ غَيۡرُ ٱللَّهِ يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ فَأَنَّىٰ تُؤۡفَكُونَ
৩. হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের জিহŸা, অন্তর ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আমল দ্বারা তোমাদের উপর আল্লাহ প্রদত্ত নিআমতের শুকরিয়া আদায় করো। তোমাদের কি আল্লাহ ব্যতীত কোন ¯্রষ্টা রয়েছেন, যিনি আসমান থেকে বারি বর্ষানোর মাধ্যমে আর যমীন থেকে শস্য ও ফসলাদি উদ্গত করার মাধ্যমে রিযিক দিয়ে থাকেন? তিনি ব্যতীত প্রকৃতপক্ষে কোন মা‘বূদ নেই। তদুপরি তোমরা কীভাবে এই সত্য থেকে বিরত থাক। আর আল্লাহর উপর মিথ্যারোপ করো এবং ধারণা করো যে, আল্লাহর শরীক রয়েছে। অথচ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন ও জীবিকা প্রদান করেছেন?!
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• مشهد فزع الكفار يوم القيامة مشهد عظيم.
ক. ক্বিয়ামতের দিন কাফিরদের ভীত হওয়ার চিত্র এক কঠিন ভয়ানক দৃশ্য।

• محل نفع الإيمان في الدنيا؛ لأنها هي دار العمل.
খ. ঈমানের মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার স্থান দুনিয়া। কেননা, এটিই আমলের জগৎ।

• عظم خلق الملائكة يدل على عظمة خالقهم سبحانه.
গ. ফিরিশতাগণের সৃষ্টির বিশালত্ব তাঁদের ¯্রষ্টার বিশালত্বেরই পরিচায়ক।

وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدۡ كُذِّبَتۡ رُسُلٞ مِّن قَبۡلِكَۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ
৪. হে রাসূল! আপনাকে যদি আপনার সম্প্রদায় অস্বীকার করে তবে আপনি প্রথম রসূল নন। যাঁকে অবিশ্বাস করা হয়েছে। বরং আপনার পূর্বে বহু জাতি তাদের রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছে। যথা আদ, সামূদ ও লুত্ব সম্প্রদায়। বস্তুতঃ আল্লাহর প্রতিই এককভাবে সকল বিষয়াদি প্রত্যাবর্তিত হবে। ফলে তিনি অবিশ্বাসীদেরকে ধ্বংস করবেন এবং তাঁর রাসূল ও মুমিনদেরকে সাহায্য করবেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقّٞۖ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَا وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِٱللَّهِ ٱلۡغَرُورُ
৫. হে মানব সমাজ! আল্লাহ পরকালে পুনরুত্থান ও প্রতিদান সম্পর্কে যে অঙ্গীকার করেছেন তা চির সত্য; তাতে কোন সন্দেহ নেই। তাই তোমাদেরকে যেন আমলের মাধ্যমে সেদিনের প্রস্তুতি নেয়া থেকে দুনিয়ার চাকচিক্য ও মনোবৃত্তি বারণ করে না রাখে। আর না শয়তান বাতিলকে সুন্দরভাবে তুলে ধরা ও দুনিয়ার প্রতি মোহ সৃষ্টি করার মাধ্যমে তোমাদেরকে ধোঁকা দেয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ ٱلشَّيۡطَٰنَ لَكُمۡ عَدُوّٞ فَٱتَّخِذُوهُ عَدُوًّاۚ إِنَّمَا يَدۡعُواْ حِزۡبَهُۥ لِيَكُونُواْ مِنۡ أَصۡحَٰبِ ٱلسَّعِيرِ
৬. শয়তান তোমাদের চির শত্রæ। তাই তার বিরুদ্ধাচরণের মাধ্যমে তাকে শত্রæ হিসাবে গ্রহণ করো। শয়তান তার অনুুসারীদেরকে কুফরির প্রতি আহŸান জানায়। যাতে করে কিয়ামত দিবসে তাদের পরিণতি উত্তপ্ত আগুন বিশিষ্ট জাহান্নম হয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدٞۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَهُم مَّغۡفِرَةٞ وَأَجۡرٞ كَبِيرٌ
৭. যারা শয়তানের অনুসরণ করতে গিয়ে আল্লাহকে অবিশ্বাস করেছে তাদের জন্য শক্ত শাস্তি রয়েছে। পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে তাদের জন্য পাপের ক্ষমা রয়েছে। আরো রয়েছে তাঁর পক্ষ থেকে জান্নাত নামক মহা পুরস্কার।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَفَمَن زُيِّنَ لَهُۥ سُوٓءُ عَمَلِهِۦ فَرَءَاهُ حَسَنٗاۖ فَإِنَّ ٱللَّهَ يُضِلُّ مَن يَشَآءُ وَيَهۡدِي مَن يَشَآءُۖ فَلَا تَذۡهَبۡ نَفۡسُكَ عَلَيۡهِمۡ حَسَرَٰتٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمُۢ بِمَا يَصۡنَعُونَ
৮. যে ব্যক্তির জন্য শয়তান তার পাপকে সৌন্দর্য মÐিত করেছে ফলে সে তাকে সুন্দর বলে বিশ্বাস করেছে সে ওই ব্যক্তির মতো নয় যার জন্য আল্লাহ সত্যকে সৌন্দর্য মÐিত করেছে ফলে সে তাকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছে। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট আর যাকে ইচ্ছা সুপথগামী করেন। তাঁকে বাধ্যকারী কেউ নেই। অতএব, হে রাসূল! আপনি পথভ্রষ্টদের ভ্রষ্টতার উপর চিন্তা করে নিজকে শেষ করে দিবেন না। আল্লাহ তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। তাঁর নিকট তাদের আমলের কিছুই গোপন নয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَٱللَّهُ ٱلَّذِيٓ أَرۡسَلَ ٱلرِّيَٰحَ فَتُثِيرُ سَحَابٗا فَسُقۡنَٰهُ إِلَىٰ بَلَدٖ مَّيِّتٖ فَأَحۡيَيۡنَا بِهِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَاۚ كَذَٰلِكَ ٱلنُّشُورُ
৯. আল্লাহই বায়ু প্রবাহিত করেন, যা মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। অতঃপর আমি মেঘমালাকে উদ্ভিদবিহীন নগরীতে প্রেরণ করি। ফলে এর পানি দ্বারা খরার পর শস্যাদি উৎপাদনের মাধ্যমে যমীনকে জীবিত করি। যেমনিভাবে মৃত যমীনকে উদ্ভিদের মাধ্যমে জীবিত করি তেমনিভাবেই ক্বিয়ামতের পর পুনরুত্থান হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡعِزَّةَ فَلِلَّهِ ٱلۡعِزَّةُ جَمِيعًاۚ إِلَيۡهِ يَصۡعَدُ ٱلۡكَلِمُ ٱلطَّيِّبُ وَٱلۡعَمَلُ ٱلصَّٰلِحُ يَرۡفَعُهُۥۚ وَٱلَّذِينَ يَمۡكُرُونَ ٱلسَّيِّـَٔاتِ لَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدٞۖ وَمَكۡرُ أُوْلَٰٓئِكَ هُوَ يَبُورُ
১০. যে ব্যক্তি দুনিয়া কিংবা আখেরাতে সম্মান চায় সে যেন আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট তা না চায়। কেননা, এতদুভয়ের সম্মান তো কেবল তাঁরই। তাঁর প্রতি উত্তম যিকির উত্থিত হয়। আর তিনি নেক আমলকে তাঁর প্রতি উঠিয়ে নেন। যারা মন্দ ফাঁদ পাতে যেমন রসূলকে হত্যার চেষ্টা করা তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। এসব কাফিরদের দুরভিসন্ধি বাতিল ও নস্যাত হবে। যা তাদের কোন উদ্দেশ্য সফল করবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَٱللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٖ ثُمَّ مِن نُّطۡفَةٖ ثُمَّ جَعَلَكُمۡ أَزۡوَٰجٗاۚ وَمَا تَحۡمِلُ مِنۡ أُنثَىٰ وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلۡمِهِۦۚ وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرٖ وَلَا يُنقَصُ مِنۡ عُمُرِهِۦٓ إِلَّا فِي كِتَٰبٍۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ
১১. আল্লাহই তোমাদের পিতা আদমকে মাটি থেকে অতঃপর তোমাদেরকে বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন।এরপর তোমাদেরকে পুরুষ ও নারী বানিয়েছেন। যাদের উভয়ের মাঝে বিবাহ বন্ধন সংঘটিত হয়। কোন নারী কিছু গর্ভে ধারণ করুক কিংবা প্রসব করুক তিনি সে খবর জানেন। তাঁর নিকট কোন কিছু গোপন থাকে না। আর তাঁর সৃষ্টির কারো আয়ু বাড়–ক কিংবা কমুক তা লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ ছিল। তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি, সৃষ্টির বিভিন্ন ধাপ ও তোমাদের আয়ুকে লাওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ করা আল্লাহর জন্য অতি সহজ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• تسلية الرسول صلى الله عليه وسلم بذكر أخبار الرسل مع أقوامهم.
ক. রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে অন্যান্য রাসূলদের সাথে তাঁদের জাতিদের অবস্থা বর্ণনার মাধ্যমে সান্ত¦না প্রদান।

• الاغترار بالدنيا سبب الإعراض عن الحق.
খ. দুনিয়া নিয়ে ধোঁকায় পড়ে থাকা সত্য থেকে বিমুখ থাকার কারণ।

• اتخاذ الشيطان عدوًّا باتخاذ الأسباب المعينة على التحرز منه؛ من ذكر الله، وتلاوة القرآن، وفعل الطاعة، وترك المعاصي.
গ. শয়তানকে শত্রæ হিসাবে গ্রহণ করা তাথেকে বেঁচে থাকার উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে। যেমন, আল্লাহর স্মরণ, কুরআন তিলাওয়াত, আনুগত্যের কাজ করা ও পাপ পরিহার করা।

• ثبوت صفة العلو لله تعالى.
ঘ. মহান আল্লাহর জন্যে “সমুন্নত” বৈশিষ্ট্য সাব্যস্ত হওয়া।

وَمَا يَسۡتَوِي ٱلۡبَحۡرَانِ هَٰذَا عَذۡبٞ فُرَاتٞ سَآئِغٞ شَرَابُهُۥ وَهَٰذَا مِلۡحٌ أُجَاجٞۖ وَمِن كُلّٖ تَأۡكُلُونَ لَحۡمٗا طَرِيّٗا وَتَسۡتَخۡرِجُونَ حِلۡيَةٗ تَلۡبَسُونَهَاۖ وَتَرَى ٱلۡفُلۡكَ فِيهِ مَوَاخِرَ لِتَبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِهِۦ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
১২. দু‘টি সমুদ্র সমান হওয়ার নয়। যার একটি অধিক সুমিষ্ট হওয়ার ফলে সহজপেয় আর অপরটি অতিরিক্ত তিতা হওয়ার ফলে পান অযোগ্য। তোমরা উভয়টি থেকে টাটকা গোস্ত ভক্ষণ করো। যথা মাছ এবং এতদুভয় থেকে তোমরা পরিধেয় অলঙ্কার হিসাবে মণি মুক্তাআহরণ করো। আর হে দর্শক! তুমি নৌযানকে দেখ। তার গতি দ্বারা যাওয়া আসার সাহায্যে সে সমুদ্র অতিক্রম করে। যাতে তোমরা ব্যণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা অন্বেষণ করতে পার। আর যাতে তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহ প্রদত্ত পর্যাপ্ত নিআমতের শুকরিয়া আদায় করো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
يُولِجُ ٱلَّيۡلَ فِي ٱلنَّهَارِ وَيُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِي ٱلَّيۡلِ وَسَخَّرَ ٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَۖ كُلّٞ يَجۡرِي لِأَجَلٖ مُّسَمّٗىۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمۡ لَهُ ٱلۡمُلۡكُۚ وَٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ مَا يَمۡلِكُونَ مِن قِطۡمِيرٍ
১৩. আল্লাহ রাত্রিকে দিনের মধ্যে প্রবিষ্ট করার মাধ্যমে তাকে দীর্ঘায়িত করেন। আবার দিনকে রাত্রির মধ্যে প্রবিষ্ট করে তাকে দীর্ঘায়িত করেন। তিনি সূর্যকে পরিচালিত করেছেন; আরো পরিচালিত করেছেন চন্দ্রকে। এতদুভয়ের প্রত্যেকটির একেকটি আল্লাহর জ্ঞানে নির্ধারিত সময়ের প্রতি পরিচালিত হয় যা হচ্ছে কিয়ামত দিবস। এসবকে যিনি একাই নিরূপণ ও পরিচালনা করেন তিনি হচ্ছেন তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তাঁরই একা রাজত্ব। আর তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে যেসব দেবতার দাসত্ব করছ তারা খেজুরের আঁটির পাতলা আবরণ পরিমাণও কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। ফলে তোমরা কীভাবে আমার পরিবর্তে তাদের দাসত্ব করো?
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِن تَدۡعُوهُمۡ لَا يَسۡمَعُواْ دُعَآءَكُمۡ وَلَوۡ سَمِعُواْ مَا ٱسۡتَجَابُواْ لَكُمۡۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يَكۡفُرُونَ بِشِرۡكِكُمۡۚ وَلَا يُنَبِّئُكَ مِثۡلُ خَبِيرٖ
১৪. তোমরা যদি তোমাদের মা’বূদদেরকে ডাকো তবে তারা তোমাদের ডাক শুনবে না। কেননা, তারা জড়পদার্থ। তাতে না কোন জীবন রয়েছে, আর না শ্রবণ শক্তি। আর যদি ধরে নেয়া যায় যে, তারা তোমাদের প্রার্থনা শ্রবণ করে তবুও সাড়া দিতে পারবে না। আর কিয়ামত দিবসে তোমাদের শিরককে এবং তাদের জন্য তোমাদের দাসত্বকে তারা অস্বীকার করবে। বস্তুতঃ হে রাসূল! আপনাকে আল্লাহ অপেক্ষা সত্য সংবাদ আর কেউ দিবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
۞ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ أَنتُمُ ٱلۡفُقَرَآءُ إِلَى ٱللَّهِۖ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡغَنِيُّ ٱلۡحَمِيدُ
১৫. হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের সকল কাজে সর্বাবস্থায় আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষী। আল্লাহ সেই ধনাঢ্য যিনি তোমাদের প্রতি কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নন। তিনি ইহ ও পরকালে বান্দাদের উদ্দেশ্যে যা কিছু নির্ধারণ করেছেন তার উপর প্রশংসিত।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِن يَشَأۡ يُذۡهِبۡكُمۡ وَيَأۡتِ بِخَلۡقٖ جَدِيدٖ
১৬. তিনি চাইলে তোমাদেরকে কোন ধ্বংস লীলা দ্বারা ধ্বংস করতে পারেন এবং তোমাদের পরিবর্তে এমন জাতি নিয়ে আসবেন যারা তাঁর ইবাদাত করবে। তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَمَا ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ بِعَزِيزٖ
১৭. আর তোমাদেরকে অপসারিত করে এর স্থলে অপর জাতিকে আনয়ন করা তাঁর নিকট কোন কষ্টসাধ্য ব্যাপার নয়।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٞ وِزۡرَ أُخۡرَىٰۚ وَإِن تَدۡعُ مُثۡقَلَةٌ إِلَىٰ حِمۡلِهَا لَا يُحۡمَلۡ مِنۡهُ شَيۡءٞ وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰٓۗ إِنَّمَا تُنذِرُ ٱلَّذِينَ يَخۡشَوۡنَ رَبَّهُم بِٱلۡغَيۡبِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَۚ وَمَن تَزَكَّىٰ فَإِنَّمَا يَتَزَكَّىٰ لِنَفۡسِهِۦۚ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلۡمَصِيرُ
১৮. আর এক পাপিষ্ঠ আত্মা অপর পাপিষ্ঠ আত্মার পাপের বোঝা বহন করবে না। বরং প্রত্যেক পাপী আত্মা তার পাপের বোঝা বহন করবে। যদি কোন ভারী বোঝা বিশিষ্ট আত্মা তার পাপের বোঝা বহনের জন্য আহŸান করে তবে তা বহন করা হবে না। যদিও আহŸানকৃত ব্যক্তি তার নিকটতম হয়। আপনি কেবল তাদেরকেই ভয় দেখাতে পরেন যারা না দেখে আল্লাহকে ভয় করে এবং পূর্ণ মাত্রায় নামায আদায় করে। তারাই আপনার সতর্কীকরণে উপকৃত হবে। আর যে ব্যক্তি পাপাচার থেকে পবিত্র থাকল আর তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিরক তবে তার এই পবিত্রতার্জন হবে তার নিজের জন্য। কেননা, তার উপকারিতা তার প্রতিই প্রত্যাবর্তিত হবে। আর আল্লাহ তাঁর আনুগত্যের প্রতি অমুখাপেক্ষী। বস্তুতঃ কিয়ামত দিবসে হিসাব ও প্রতিদানের উদ্দেশ্যে আল্লাহর প্রতিই প্রত্যাবর্তন হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• تسخير البحر، وتعاقب الليل والنهار، وتسخير الشمس والقمر: من نعم الله على الناس، لكن الناس تعتاد هذه النعم فتغفل عنها.
ক. সমুদ্র প্রবাহিত করা, দিন-রজনীর পরম্পরা ও চন্দ্র-সূর্যের পরিক্রমা এসব মানুষের প্রতি আল্লাহর নি‘আমত। কিন্তু মানুষ দীর্ঘ দিন যাবত দেখে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার ফলে এক্ষেত্রে উদাসীন হয়ে পড়ে।

• سفه عقول المشركين حين يدعون أصنامًا لا تسمع ولا تعقل.
খ. মুশরিকদের বিবেকের ধিক, যেহেতু তারা এমন সবদেবতার দাসত্ব করে যেগুলো না শুনতে পায়, আর না বিবেক রাখে।

• الافتقار إلى الله صفة لازمة للبشر، والغنى صفة كمال لله.
গ. আল্লাহর প্রতি মুখাপেক্ষিতা মানুষের অবিচ্ছেদ্য বৈশিষ্ট্য। পক্ষান্তরে ধনাঢ্যতা আল্লাহর পূর্ণাতার বৈশিষ্ট্য।

• تزكية النفس عائدة إلى العبد؛ فهو يحفظها إن شاء أو يضيعها.
ঘ. অন্তরকে পরিচ্ছন্ন রাখা বান্দাহর দায়িত্ব। সে চাইলে তা পরিচ্ছন্ন রাখবে অথবা কলুষিত করবে।

وَمَا يَسۡتَوِي ٱلۡأَعۡمَىٰ وَٱلۡبَصِيرُ
১৯. অন্ধ ও চক্ষুষ্মান যেমন সমান হয় না ঠিক তদ্রƒপ কাফির আর মু’মিন আদৌ সমান হয় না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَا ٱلظُّلُمَٰتُ وَلَا ٱلنُّورُ
২০. অন্ধকার আর আলো যেমন সমান হয় না ঠিক তদ্রƒপ কুফরি এবং ঈমানও সমান হয় না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَلَا ٱلظِّلُّ وَلَا ٱلۡحَرُورُ
২১. ছায়া ও গরম বাতাস যেমন সমান হয় না ঠিক তদ্রƒপ জান্নাত এবং জাহান্নামের প্রভাবও এক হয় না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَمَا يَسۡتَوِي ٱلۡأَحۡيَآءُ وَلَا ٱلۡأَمۡوَٰتُۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُسۡمِعُ مَن يَشَآءُۖ وَمَآ أَنتَ بِمُسۡمِعٖ مَّن فِي ٱلۡقُبُورِ
২২. জীবিত আর মৃতরা যেমন সমান হয় না ঠিক তেমনি মু’মিন আর কাফিররাও সমান হয় না। আল্লাহ যার হেদায়ত চান তাকে শুনিয়ে থাকেন। আর হে নবী! আপনি কবরস্থ মৃতদের ন্যায় কাফিরদেরকেও শুনাতে পারবেন না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنۡ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ
২৩. আপনি তো কেবল তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে সতর্ককারী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَٰكَ بِٱلۡحَقِّ بَشِيرٗا وَنَذِيرٗاۚ وَإِن مِّنۡ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٞ
২৪. হে রাসূল! আমি আপনাকে মুমিনদের জন্য আল্লাহর প্রস্তুতকৃত সম্মানী প্রতিদানের সুসংবাদদাতা হিসাবে এমন সত্যসহ প্রেরণ করেছি যাতে কোন সন্দেহ নেই। আর কাফিরদের জন্য তাদের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত কঠিন শাস্তি থেকে ভীতি প্রদর্শনকারী হিসাবে প্রেরণ করেছি। বস্তুতঃ পূর্বে এমন কোন জাতি ছিলনা যাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন রাসূল ভীতি প্রদর্শনের জন্য আগমন করেন নি।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدۡ كَذَّبَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ جَآءَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِ وَبِٱلزُّبُرِ وَبِٱلۡكِتَٰبِ ٱلۡمُنِيرِ
২৫. আর যদি আপনাকে আপনার সম্প্রদায় অবিশ্বাস করে তবে আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। কেননা, ইতিপূর্বে অতিক্রান্ত জাতিরা তাদের রাসূলদের অবিশ্বাস করেছে। যেমন: আদ, সামূদ ও লুত্ব সম্প্রদায়। তাদের নিকট রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁদের সত্যতার সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণাদি নিয়ে এসেছেন। তাঁরা তাদের নিকট পুস্তকাদি এবং অনুধাবনকারী ও চিন্তাশীলদের জন্য সুস্পষ্ট কিতাব নিয়ে এসেছিলেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ثُمَّ أَخَذۡتُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۖ فَكَيۡفَ كَانَ نَكِيرِ
২৬. এতদসত্তে¡ও তারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলদেরকে অস্বীকার করল। আর তাঁরা আল্লাহর পক্ষ থেকে যা নিয়ে এসেছিল তাতে অবিশ্বাস করল। ফলে যারা কুফরি করেছে তাদেরকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। অতএব, হে রাসূল! আপনি ভেবে দেখুন, আমি যখন তাদেরকে ধ্বংস করলাম তখন কীভাবে আমার পাকড়াও ছিল।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ أَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءٗ فَأَخۡرَجۡنَا بِهِۦ ثَمَرَٰتٖ مُّخۡتَلِفًا أَلۡوَٰنُهَاۚ وَمِنَ ٱلۡجِبَالِ جُدَدُۢ بِيضٞ وَحُمۡرٞ مُّخۡتَلِفٌ أَلۡوَٰنُهَا وَغَرَابِيبُ سُودٞ
২৭. হে রাসূল! আপনি কি দেখেন না যে, আল্লাহ আসমান থেকে বৃষ্টির পানি বর্ষিয়েছেন? ফলে এই পানির সাহায্যে আমি বিভিন্নরূপী শস্যাদি উৎপন্ন করেছি। তন্মধ্যে কোনটা লাল আবার কোনটা সবুজ বর্ণের। কোনটা হলুদ আবার কোনটা অন্য বর্ণের। অথচ আমি বৃক্ষগুলোকে একই পানি দ্বারা পুষ্ট করে থাকি। আর পাহাড়ের মধ্যে কিছু রয়েছে সাদা বর্ণের। আবার কিছু লাল বর্ণের। আবার কিছু রয়েছে গাঢ় কাল বর্ণের।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَمِنَ ٱلنَّاسِ وَٱلدَّوَآبِّ وَٱلۡأَنۡعَٰمِ مُخۡتَلِفٌ أَلۡوَٰنُهُۥ كَذَٰلِكَۗ إِنَّمَا يَخۡشَى ٱللَّهَ مِنۡ عِبَادِهِ ٱلۡعُلَمَٰٓؤُاْۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
২৮. আর মানুষ, প্রাণী ও চতুস্পদ জন্তু তথা উট, গরু ও ছাগলের মধ্যে পূর্বোক্ত বিভিন্ন রং রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানীরাই কেবল আল্লাহকে সম্মান ও তাঁকে ভয় করে থাকে। কেননা, তারা আল্লাহর বৈশিষ্ট্য, তাঁর বিধান ও তাঁর ক্ষমতার প্রমাণ জানতে পেরেছে। বস্তুতঃ আল্লাহ পরাক্রমশালী। তাঁকে কেউ প্ররাস্ত করতে পারে না। তাঁর বন্দাদের মধ্যে যারা তাওবা করে তাদের জন্য তিনি ক্ষমাশীল।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَتۡلُونَ كِتَٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ سِرّٗا وَعَلَانِيَةٗ يَرۡجُونَ تِجَٰرَةٗ لَّن تَبُورَ
২৯. যারা আমার রাসূলের উপর নাযিলকৃত কিতাব তিলাওয়াত করে ও তার উপর আমল করে আর পূর্ণাঙ্গরূপে সুন্দরভাবে নামায আদায় করে এবং আমি যে জীবিকা দিয়েছি তা যাকাত ও অন্যান্য খাতে তথা আমার পথে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে ব্যয় করে তারা এসব আমলের মাধ্যমে এমন বাণিজ্যের আশা করে যা আদৗ ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
لِيُوَفِّيَهُمۡ أُجُورَهُمۡ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضۡلِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ غَفُورٞ شَكُورٞ
৩০. যাতে আল্লাহ তাদের আমলের প্রতিদান পূর্ণমাত্রায় প্রদান করেন। আর তাদের উদ্দেশ্যে তাঁর অনুগ্রহ বৃদ্ধি করেন। তিনিই তার জন্য উপযোগী। তিনি এসব গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমাশীল এবং তাদের উত্তম কাজগুলোর মূল্যায়নকারী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• نفي التساوي بين الحق وأهله من جهة، والباطل وأهله من جهة أخرى.
ক. এক দিক থেকে হক্ব ও তার অনুসারীদের মাঝে এবং অপর দিক থেকে বাত্বিল ও তার অনুসারীদের মধ্যকার সামঞ্জস্য অস্বীকার করা।

• كثرة عدد الرسل عليهم السلام قبل رسولنا صلى الله عليه وسلم دليل على رحمة الله وعناد الخلق.
খ. আমাদের রাসূলের পূর্বে বহু সংখ্যক রাসূলের আগমন আল্লাহর দয়া ও যতেœর প্রমাণ।

• إهلاك المكذبين سُنَّة إلهية.
গ. অবিশ্বাসীদেরকে ধ্বংস করা আল্লাহর চিরাচরিত নিয়ম।

• صفات الإيمان تجارة رابحة، وصفات الكفر تجارة خاسرة.
ঘ. ঈমানের গুণাবলী লাভজনক বাণিজ্য। পক্ষান্তরে কুফরির গুণাবলী ক্ষতিকর ব্যবসা।

وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ هُوَ ٱلۡحَقُّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِعِبَادِهِۦ لَخَبِيرُۢ بَصِيرٞ
৩১. আর হে নবী! আমি আপনার প্রতি যে কিতাব ওহী করেছি এটি এমন এক সত্য যাতে কোন সন্দেহ নেই। যাকে আল্লাহ পূর্বকালের কিতাবাদির সত্যায়নের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ করেছেন। অবশ্যই আল্লাহ বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক অবগত ও সর্বদ্রষ্টা। তিনি প্রত্যেক রাসূলের প্রতি তাঁর উম্মতের যুগোপযোগী প্রয়োজন মত ওহী নাযিল করেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ثُمَّ أَوۡرَثۡنَا ٱلۡكِتَٰبَ ٱلَّذِينَ ٱصۡطَفَيۡنَا مِنۡ عِبَادِنَاۖ فَمِنۡهُمۡ ظَالِمٞ لِّنَفۡسِهِۦ وَمِنۡهُم مُّقۡتَصِدٞ وَمِنۡهُمۡ سَابِقُۢ بِٱلۡخَيۡرَٰتِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِيرُ
৩২. অতঃপর আমি অন্যান্য উম্মতের উপর যাদেরকে প্রাধান্য দিয়েছি সেই উম্মতে মুহাম্মদীকে কুরআন উপহার দিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ হারাম কাজ করা ও ফরয থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তার নাফসের উপর জুলুমকারী। আবার তাদের মধ্যে ফরয কাজ করা ও হারাম থেকে বিরত থাকা, সেই সাথে কিছু মুস্তাহাব পরিহার করা ও মাকরূহ কাজে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে মধ্যমপন্থী। আবার তাদের মধ্যে কেউ নেক আমলে অগ্রণী। এই উম্মতের জন্য উপরোল্লেখিত এই প্রাধান্য ও কুরআন উপহার প্রদান এমন বড় এক অনুগ্রহ যার সাথে কোন অনুগ্রহের তুলনা হয় না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
جَنَّٰتُ عَدۡنٖ يَدۡخُلُونَهَا يُحَلَّوۡنَ فِيهَا مِنۡ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٖ وَلُؤۡلُؤٗاۖ وَلِبَاسُهُمۡ فِيهَا حَرِيرٞ
৩৩. অবস্থানের উদ্যানসমূহ যাতে নির্বাচিত ব্যক্তিরা প্রবেশ করবে, তারা তথায় মুক্তা দানা ও স্বর্ণের অলঙ্কার পরিধান করবে। আর তথায় তাদের পোষাক হবে রেশমী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَقَالُواْ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِيٓ أَذۡهَبَ عَنَّا ٱلۡحَزَنَۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٞ شَكُورٌ
৩৪. আর তারা জান্নাতে প্রবেশের পর বলবে: ওই আল্লাহর প্রশংসা যিনি আমাদের থেকে জাহান্নামে প্রবেশের দুশ্চিন্তা দূর করেছেন। অবশ্যই আমাদের প্রতিপালক তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের পাপ ক্ষমাকারী ও তাদের আনুগত্যের মূল্যায়নকারী।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱلَّذِيٓ أَحَلَّنَا دَارَ ٱلۡمُقَامَةِ مِن فَضۡلِهِۦ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٞ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٞ
৩৫. যিনি আমাদেরকে আমাদের সাধ্য ও ক্ষমতা ব্যতিরেকে তাঁর নিজ অনুগ্রহে আবাস-বাড়ীতে স্থান দিয়েছেন। সেখান থেকে আমাদের প্রস্থান করতে হবে না। আর যেখানে আমাদেরকে কোন ক্লান্তি ও ভোগান্তি স্পর্শ করবে না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَهُمۡ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقۡضَىٰ عَلَيۡهِمۡ فَيَمُوتُواْ وَلَا يُخَفَّفُ عَنۡهُم مِّنۡ عَذَابِهَاۚ كَذَٰلِكَ نَجۡزِي كُلَّ كَفُورٖ
৩৬. আর আল্লাহতে অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। তারা তথায় স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। তাদের জন্য মৃত্যুর ফয়সালা হবে না। যদ্বারা তারা শাস্তি থেকে রেহাই পেতে পারে। আর না তাদের উপর থেকে জাহান্নামের শাস্তিকে হালকা করা হবে। বস্তুতঃ এমন শাস্তিই আমি কিয়ামত দিবসে আমার স্বীয় প্রতিপালকের নি‘আমত অস্বীকারকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে প্রদান করবো।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَهُمۡ يَصۡطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَآ أَخۡرِجۡنَا نَعۡمَلۡ صَٰلِحًا غَيۡرَ ٱلَّذِي كُنَّا نَعۡمَلُۚ أَوَلَمۡ نُعَمِّرۡكُم مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَآءَكُمُ ٱلنَّذِيرُۖ فَذُوقُواْ فَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِن نَّصِيرٍ
৩৭. তারা তথায় উচ্চ স্বরে চিৎকার করে আর্তনাদ করতে থাকবে এই বলে যে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আগুন থেকে বের করুন। তাহলে আমরা আপনার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নেক আমল করবো। যা হবে দুনিয়াতে কৃত আমলের বিপরীত এবং যার মাধ্যমে আমরা শাস্তি থেকে রেহাই পাবো। তাদের জবাবে আল্লাহ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন আয়ু দান করি নি যাতে উপদেশ গ্রহণকারী উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। ফলে আল্লাহর প্রতি তাওবা করে নেক আমল করতে পারে। আর তোমাদের নিকট রাসূল এসেছেন তোমাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে ভীতি প্রদর্শন করার লক্ষ্যে। অতএব তোমাদের কোন প্রমাণ থাকলনা এবং এসব কিছুর পর তোমাদের আর কোন ওযর অবশিষ্ট রইল না। ফলে তোমরা জাহান্নামের শাস্তি পোহাতে থাকো। কুফরি ও পাপাচারের মাধ্যমে জুলুমকারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। যে তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করবে কিংবা তাদের উপর তা লাঘব করবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِنَّ ٱللَّهَ عَٰلِمُ غَيۡبِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
৩৮. অবশ্যই আল্লাহ আসমান ও যমীনের গায়েবজান্তা। তাঁর নিকট এর কোন কিছু গোপন থাকে না। তিনি অবশ্যই জানেন তাঁর বান্দারা ভাল-মন্দ যা কিছু তাদের বক্ষে গোপন রাখে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• فضل أمة محمد صلى الله عليه وسلم على سائر الأمم.
ক. অন্য সব উম্মতের উপর উম্মতে মুহাম্মদীর ফযীলত।

• تفاوت إيمان المؤمنين يعني تفاوت منزلتهم في الدنيا والآخرة.
খ. মুমিনদের ঈমানের ব্যবধান তথা ইহ ও পরকালে তাদের আসনের তারতম্য।

• الوقت أمانة يجب حفظها، فمن ضيعها ندم حين لا ينفع الندم.
গ. সময় একটি আমানত যা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। যে তা বিনষ্ট করল সে এমন সময় অনুতপ্ত হবে যখন অনুতাপ কোন উপকারে আসবে না।

• إحاطة علم الله بكل شيء.
ঘ. আল্লাহর জ্ঞান প্রত্যেক জিনিসকে পরিব্যাপ্তকারী।

هُوَ ٱلَّذِي جَعَلَكُمۡ خَلَٰٓئِفَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ فَمَن كَفَرَ فَعَلَيۡهِ كُفۡرُهُۥۖ وَلَا يَزِيدُ ٱلۡكَٰفِرِينَ كُفۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ إِلَّا مَقۡتٗاۖ وَلَا يَزِيدُ ٱلۡكَٰفِرِينَ كُفۡرُهُمۡ إِلَّا خَسَارٗا
৩৯. হে মানব সমাজ! তিনি তোমাদের একজনের পর অপরজনকে যমীনে প্রতিনিধি বানান। যাতে তিনি পরীক্ষা করতে পারেন তোমাদের আমল কেমন হয়। অতএব, যে আল্লাহ ও রাসূলগণের আনা বিষয়ে কুফরি করল তার কুফরির পাপ ও শাস্তি তাকেই পেতে হবে। তার কুফরি তার রবকে পাবে না। আর কাফিরদেরকে তাদের কুফরি তাদের মহান রবের নিকট কঠোর ক্ষোভ ব্যতীত অন্য কিছু বাড়ায় না। কাফিরদের কুফরি তাদের ক্ষতি ব্যতীত অন্য কিছু বাড়ায় না। যেহেতু তারা যদি ঈমান আনত তবে আল্লাহ কর্তৃক তাদের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত যে জান্নাত মিলতো তা তারা হারাবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
قُلۡ أَرَءَيۡتُمۡ شُرَكَآءَكُمُ ٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُواْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِ أَمۡ لَهُمۡ شِرۡكٞ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ أَمۡ ءَاتَيۡنَٰهُمۡ كِتَٰبٗا فَهُمۡ عَلَىٰ بَيِّنَتٖ مِّنۡهُۚ بَلۡ إِن يَعِدُ ٱلظَّٰلِمُونَ بَعۡضُهُم بَعۡضًا إِلَّا غُرُورًا
৪০. হে রাসূল! আপনি এসব মুশরিকদেরকে বলে দিন, তোমরা তোমাদের সে সব শরীকদের সংবাদ দাও আল্লাহর পরিবর্তে যাদের তোমরা ইবাদাত করো। তারা যমীনে কী সৃষ্টি করেছে? তারাকি তার পাহাড়গুলো সৃষ্টি করেছে? তারা কি তার নদী-নালাগুলো সৃষ্টি করেছে? তারা কি তার প্রাণীগুলো সৃষ্টি করেছে? না কি তারা আসমানসমূহ সৃষ্টির কাজে আল্লাহর অংশীদার? না কি আমি তাদেরকে এমন কিতাব প্রদান করেছি যাতে তাদের শরীকদের ইবাদাত সঠিক হওয়ার প্রমাণ রয়েছে? এমন কিছুই তো নেই। বরং জালিমরা তাদের নফসের উপর কুফরি ও পাপাচারের মাধ্যমে একে অপরের জন্য কেবল ধোঁকার অঙ্গীকার দিয়ে থাকে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
۞ إِنَّ ٱللَّهَ يُمۡسِكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ أَن تَزُولَاۚ وَلَئِن زَالَتَآ إِنۡ أَمۡسَكَهُمَا مِنۡ أَحَدٖ مِّنۢ بَعۡدِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ كَانَ حَلِيمًا غَفُورٗا
৪১. আল্লাহ আসমান ও যমীনকে পড়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন। একান্ত যদি উভয়টি পড়ে যেত তবে তিনি ব্যতীত তা ধরে রাখার কেউ থাকত না। তিনি সহনশীল; তাড়াতাড়ি শাস্তি দেন না। তিনি ক্ষমাশীল; তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের তাওবা কবুল করেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَقۡسَمُواْ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَيۡمَٰنِهِمۡ لَئِن جَآءَهُمۡ نَذِيرٞ لَّيَكُونُنَّ أَهۡدَىٰ مِنۡ إِحۡدَى ٱلۡأُمَمِۖ فَلَمَّا جَآءَهُمۡ نَذِيرٞ مَّا زَادَهُمۡ إِلَّا نُفُورًا
৪২. এসব অবিশ্বাসী কাফির শক্তভাবে শপথ করেছে যে, যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন রাসূল তাঁর শাস্তি থেকে ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আগমন করেন তবে তারা দৃঢ়পদ ও সত্য মানার ক্ষেত্রে ইহুদী-খ্রিষ্টান এবং অন্যান্যদের তুলনায় অগ্রণী হবে। তবে যখন তাদের নিকট মুহাম্মদ স্বীয় প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাঁর শাস্তি থেকে সতর্ক করতে প্রেরিত হলেন তখন তাঁর আগমন তাদের জন্য আরো দূরে সরে পড়া ও বাতিলের সাথে সম্পৃক্ত হওয়াকে বৃদ্ধি করল। ফলে তারা তাদের চেয়ে অগ্রণীদের তুলনায় অধিকতর হেদায়েত গ্রহণের শক্ত অঙ্গীকার বজায় রাখল না।
আরবি তাফসীরসমূহ:
ٱسۡتِكۡبَارٗا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَكۡرَ ٱلسَّيِّيِٕۚ وَلَا يَحِيقُ ٱلۡمَكۡرُ ٱلسَّيِّئُ إِلَّا بِأَهۡلِهِۦۚ فَهَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّا سُنَّتَ ٱلۡأَوَّلِينَۚ فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَبۡدِيلٗاۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَحۡوِيلًا
৪৩. আর আল্লাহর নামে তাদের শপথ সদিচ্ছা ও স্বচ্ছ নিয়ত নিয়ে ছিল না। বরং তা ছিল যমীনে অহঙ্কার ছড়ানো ও মানুষকে ধোঁকা দেয়ার উদ্দেশ্যে। বস্তুতঃ মন্দ দুরভিসন্ধি তার পরিচালকদেরকেই পায়। তবেকি এসব অহঙ্কারী প্রতারকরা আল্লাহর চিরাচরিত পরিণতির অপেক্ষা করছে? যা হচ্ছে তাদের ধ্বংস। যেমন ধ্বংস করেছেন তাদের পূর্বেকার তাদের অনুরূপ ব্যক্তিদেরকে।আপনি অহঙ্কারীদেরকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ধ্বংস না করা কিংবা তাদের পরিবর্তে অন্যদেরকে ধ্বংস করার মাধ্যমে চিরাচরিত নিয়মের ব্যতিক্রম কিছু পাবেন না। কেননা, এটিই হচ্ছে আল্লাহর চিরস্থায়ী নিয়ম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
أَوَلَمۡ يَسِيرُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَيَنظُرُواْ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَكَانُوٓاْ أَشَدَّ مِنۡهُمۡ قُوَّةٗۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعۡجِزَهُۥ مِن شَيۡءٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَلِيمٗا قَدِيرٗا
৪৪. তোমাকে অবিশ্বাসকারী মুশরিকরা কি যমীনে ভ্রমণ করে না? অতঃপর লক্ষ্য করে না যে, তাদের পূর্বেকার অবিশ্বাসীদের কী পরিণতি হয়েছিল? তাদের শেষ পরিণতি কি মন্দ ছিল না যে, আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করেন যারা কুরাইশ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী ছিল?! আর আল্লাহর কাছে আসমান ও যমীনের কোন কিছু অজানা নয়। তিনি এসব মিথ্যাবাদীদের আমল সম্পর্কে জ্ঞাত। তাদের কোন কাজ তাঁর জ্ঞানের বাহিরে কিংবা অজানা নয়। তিনি যখন ইচ্ছা তাদেরকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• الكفر سبب لمقت الله، وطريق للخسارة والشقاء.
ক. কুফরি আল্লাহর রাগের কারণ ও ক্ষতি এবং হতভাগ্যের পথ।

• المشركون لا دليل لهم على شركهم من عقل ولا نقل.
খ. মুশরিকদের শিরকী কাজের উপর বিবেকগত কিংবা ধর্মীয় কোন প্রমাণ নেই।

• تدمير الظالم في تدبيره عاجلًا أو آجلًا.
গ. জালিমের ধ্বংস তারই চিরাচরিতে রয়েছে। চাই তা তড়িত হোক কিংবা বিলম্বে হোক।

وَلَوۡ يُؤَاخِذُ ٱللَّهُ ٱلنَّاسَ بِمَا كَسَبُواْ مَا تَرَكَ عَلَىٰ ظَهۡرِهَا مِن دَآبَّةٖ وَلَٰكِن يُؤَخِّرُهُمۡ إِلَىٰٓ أَجَلٖ مُّسَمّٗىۖ فَإِذَا جَآءَ أَجَلُهُمۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِعِبَادِهِۦ بَصِيرَۢا
৪৫. আর আল্লাহ যদি মানুষের পাপেরও অপরাধের শাস্তি তরান্বিত করতেন তবে তাৎক্ষণিক প্রাণী ও সম্পদসহ যমীনের সকল বাসিন্দাকে ধ্বংস করে দিতেন। কিন্তু তিনি তাঁর জ্ঞানে বিদ্যমান মেয়াদ কিয়ামত পর্যন্ত বিলম্ব করেন। যেদিন কিয়ামত আসবে তখন তাদের সব কিছু তিনি দেখবেন। তাঁর নিকট তাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না। ফলে তাদের আমলের প্রতিদান দিবেন। ভালর বদলে ভাল আর মন্দের বদলে মন্দ।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• العناد مانع من الهداية إلى الحق.
ক. গোঁড়ামি হকের পথ লাভে বাধা।

• العمل بالقرآن وخشية الله من أسباب دخول الجنة.
খ. কোরআনের উপর আমল করা ও আল্লাহর ভয় জান্নাতে প্রবেশের উপায়।

• فضل الولد الصالح والصدقة الجارية وما شابههما على العبد المؤمن.
গ. মুমিন বান্দার ক্ষেত্রে নেক সন্তান ও চলমান দান ইত্যাদির ফযীলত।

 
অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: সূরা ফাতির
সূরাসমূহের সূচী পৃষ্ঠার নাম্বার
 
কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - অনুবাদসমূহের সূচী

বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। মারকাযু তাফসীর লিদ-দিরাসাতিল কুরআনিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত।

বন্ধ