অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা আল-হাক্কাহ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - পৃষ্ঠার নাম্বার 567 - আল-কুরআনুল কারীম বিশ্বকোষ

আয়াত: 9

وَجَآءَ فِرۡعَوۡنُ وَمَن قَبۡلَهُۥ وَٱلۡمُؤۡتَفِكَٰتُ بِٱلۡخَاطِئَةِ

৯. ফিরাউন, তার পূর্বের জাতিরা এবং ওই সব গ্রামবাসী যাদেরকে যমীন উল্টে দিয়ে শাস্তি দেয়া হয় যারা হলো লুত সম্প্রদায় তারা শিরক ও পাপাচারের মাধ্যমে অপরাধ করে বসে।

আয়াত: 10

فَعَصَوۡاْ رَسُولَ رَبِّهِمۡ فَأَخَذَهُمۡ أَخۡذَةٗ رَّابِيَةً

১০. তাদের প্রত্যেকেই নিজেদের প্রতি প্রেরিত রাসূলের অবাধ্যতা ও তাঁকে অবিশ্বাস করলো। ফলে আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করতে যা প্রয়োজন তদাপেক্ষা কঠোর শাস্তি কর্তৃক পাকড়াও করলেন।

আয়াত: 11

إِنَّا لَمَّا طَغَا ٱلۡمَآءُ حَمَلۡنَٰكُمۡ فِي ٱلۡجَارِيَةِ

১১. যখন পানি উচ্চতায় তার সীমা অতিক্রম করলো তখন আমি নূহ (আলাইহিস-সালাম) কর্তৃক আমার নির্দেশে প্রস্তুতকৃত কিশতীতে তোমাদের পিতামহদেরকে আরোহণ করাই। যা তোমাদেরকে আরাহন করানোর নামান্তর।

আয়াত: 12

لِنَجۡعَلَهَا لَكُمۡ تَذۡكِرَةٗ وَتَعِيَهَآ أُذُنٞ وَٰعِيَةٞ

১২. যাতে করে আমি কিশতী ও তার কাহিনীকে এমন উপদেশে পরিণত করি যা কাফিরদেরকে ধ্বংস ও ঈমনদারদেরকে রক্ষার নিদর্শন হিসাবে রয়ে যায় এবং সেটিকে শ্রবণকারী কান স্মরণ রাখে।

আয়াত: 13

فَإِذَا نُفِخَ فِي ٱلصُّورِ نَفۡخَةٞ وَٰحِدَةٞ

১৩. যখন নিয়োজিত ফিরিশতা শিঙ্গায় প্রথম ফুৎকার দিবেন যা হবে দ্বিতীয় ফুৎকার।

আয়াত: 14

وَحُمِلَتِ ٱلۡأَرۡضُ وَٱلۡجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةٗ وَٰحِدَةٗ

১৪. আর যমীন ও পাহাড়গুলোকে উত্তোলন করা হবে তখন উভয়টি পরস্পর এক কঠিন ধাক্কা খেয়ে যমীন ও পাহাড়ের অংশগুলো একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

আয়াত: 15

فَيَوۡمَئِذٖ وَقَعَتِ ٱلۡوَاقِعَةُ

১৫. যে দিন এ সব কিছু সংঘটিত হবে সে দিন কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে।

আয়াত: 16

وَٱنشَقَّتِ ٱلسَّمَآءُ فَهِيَ يَوۡمَئِذٖ وَاهِيَةٞ

১৬. সে দিন আসমান থেকে ফিরিশতাগণের আগমনে তা ফেটে যাবে। ফলে তা ভারসাম্যপ‚র্ণ শক্তিশালী থাকার পরও আজ দুর্বল হয়ে পড়বে।

আয়াত: 17

وَٱلۡمَلَكُ عَلَىٰٓ أَرۡجَآئِهَاۚ وَيَحۡمِلُ عَرۡشَ رَبِّكَ فَوۡقَهُمۡ يَوۡمَئِذٖ ثَمَٰنِيَةٞ

১৭. ফিরিশতাগণ এর কিনারা ও পার্শ্বদেশে অবস্থান করবে। সে দিন আপনার রবের আরশ বহন করবে তাঁর নিকটে থাকা আটজন ফিরিশতা।

আয়াত: 18

يَوۡمَئِذٖ تُعۡرَضُونَ لَا تَخۡفَىٰ مِنكُمۡ خَافِيَةٞ

১৮. হে লোক সকল! সে দিন তোমাদেরকে আল্লাহর সামনে পেশ করা হবে। আল্লাহর নিকট তোমাদের কোন গোপন বিষয়ই গোপন থাকবে না। বরং আল্লাহ সে সব ব্যাপারে জ্ঞাত ও অবগত।

আয়াত: 19

فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقۡرَءُواْ كِتَٰبِيَهۡ

১৯. যার আমলনামা ডান হাতে প্রদান করা হবে সে আনন্দ ও খুশিতে বলবে: এই নাও আমার আমলনামা পড়ে দেখো।

আয়াত: 20

إِنِّي ظَنَنتُ أَنِّي مُلَٰقٍ حِسَابِيَهۡ

২০. আমি দুনিয়াতে জেনেছি ও এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করেছি যে, আমি অবশ্যই পুনরুত্থিত হবো এবং আমার প্রতিদান লাভ করবো।

আয়াত: 21

فَهُوَ فِي عِيشَةٖ رَّاضِيَةٖ

২১. ফলে সে স্থায়ী নিয়ামত প্রত্যক্ষ করার কারণে আনন্দময় জীবনে অবস্থান করবে।

আয়াত: 22

فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٖ

২২. উন্নত মর্যাদা ও অবস্থানসম্পন্ন জান্নাতে।

আয়াত: 23

قُطُوفُهَا دَانِيَةٞ

২৩. যার ফলমূল তা ভক্ষণকারীদের হাতের নাগালে থাকবে।

আয়াত: 24

كُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ هَنِيٓـَٔۢا بِمَآ أَسۡلَفۡتُمۡ فِي ٱلۡأَيَّامِ ٱلۡخَالِيَةِ

২৪. তাদেরকে সম্মান প্রদর্শনমূলকভাবে বলা হবে, তোমরা দুনিয়ার বিগত দিন গুলোতে যে সব নেক আমল করেছো তার বিনিময়ে কষ্টবিহীনভাবে খাও এবং পান করো।

আয়াত: 25

وَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِشِمَالِهِۦ فَيَقُولُ يَٰلَيۡتَنِي لَمۡ أُوتَ كِتَٰبِيَهۡ

২৫. আর যার আমলনামা বাম হাতে প্রদান করা হবে সে চরম অনুশোচনা করে বলবে, হায় আমার আক্ষেপ! আমাকে যদি আমলনামা না দেয়া হতো। কেননা, এতে রয়েছে আমার জন্য শাস্তি অবধারিত করার মতো পাপ কর্মসমূহ।

আয়াত: 26

وَلَمۡ أَدۡرِ مَا حِسَابِيَهۡ

২৬. হায় আমার আক্ষেপ! আমি যদি আমার হিসাব নামক কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত না হতাম।

আয়াত: 27

يَٰلَيۡتَهَا كَانَتِ ٱلۡقَاضِيَةَ

২৭. হায় আক্ষেপ! আমার মৃত্যুটি যদি এমন হতো যার পর আমাকে আর কখনো পুনরুত্থিত করা না হতো।

আয়াত: 28

مَآ أَغۡنَىٰ عَنِّي مَالِيَهۡۜ

২৮. আমার সম্পদ আমার শাস্তিকে এতটুকুও প্রতিহত করতে পারে নি।

আয়াত: 29

هَلَكَ عَنِّي سُلۡطَٰنِيَهۡ

২৯. আমার নিকট থেকে আমার সকল প্রমাণ এবং যে সব ক্ষমতা ও মর্যাদার উপর আমি প্রতিষ্ঠিত ছিলাম তা সবই হারিয়ে গেছে।

আয়াত: 30

خُذُوهُ فَغُلُّوهُ

৩০. তখন বলা হবে, হে ফিরিশতারা! তোমরা একে ধরো এবং এর হাতকে তার ঘাড়ে নিয়ে বেঁধে রাখো।

আয়াত: 31

ثُمَّ ٱلۡجَحِيمَ صَلُّوهُ

৩১. অতঃপর তাকে অগ্নিতে প্রবিষ্ট করো। যাতে সে এর তাপে কষ্ট পায়।

আয়াত: 32

ثُمَّ فِي سِلۡسِلَةٖ ذَرۡعُهَا سَبۡعُونَ ذِرَاعٗا فَٱسۡلُكُوهُ

৩২. অতঃপর তাকে সত্তর হাত লম্বা শিকলে প্রবিষ্ট করো।

আয়াত: 33

إِنَّهُۥ كَانَ لَا يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ ٱلۡعَظِيمِ

৩৩. সে মহান আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখতো না।

আয়াত: 34

وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلۡمِسۡكِينِ

৩৪. আর অন্যদেরকে মিসকীনদের খাবার খাওয়ানোর উৎসাহ দিতো না।

আয়াত: 35

فَلَيۡسَ لَهُ ٱلۡيَوۡمَ هَٰهُنَا حَمِيمٞ

৩৫. তাই কিয়ামত দিবসে তার শাস্তি প্রতিহত করার জন্য কোন নিকটাত্মীয় থাকবে না।

এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:

• المِنَّة التي على الوالد مِنَّة على الولد تستوجب الشكر.

ক. পিতার উপর কৃত অনুগ্রহ সন্তানের উপর অনুগ্রহের নামান্তর। যা শুকরিয়া আদায়কে অপরিহার্য করে তোলে।

• إطعام الفقير والحض عليه من أسباب الوقاية من عذاب النار.

খ. ফকীরদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং তাতে উৎসাহ প্রদান করা জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষার কারণ।

• شدة عذاب يوم القيامة تستوجب التوقي منه بالإيمان والعمل الصالح.

গ. কিয়ামত দিবসের কঠিন শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঈমান ও নেক আমলের উপায় অবলম্বন করা অপরিহার্য।