অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা সূরা আল-গাশিয়াহ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - আল-কুরআনুল কারীম বিশ্বকোষ

সূরা আল-গাশিয়াহ

সূরার কতক উদ্দেশ্য:

التذكير بالآخرة وما فيها من الثواب والعقاب، والنظر في براهين قدرة الله.

মানুষদেরকে শাস্তি ও পুরস্কারের ক্ষেত্রে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা প্রত্যক্ষ করানো এবং চাক্ষুষ নিদর্শনাবলীতে এর প্রমাণাদির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া। যাতে অন্তরগুলো ভয় ও আশায় ভরপুর হয়ে উঠে।

---

আয়াত: 1

هَلۡ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ٱلۡغَٰشِيَةِ

১. হে রাসূল! আপনার নিকট কি কিয়ামতের সেই বর্ণনার কথা এসেছে যা মানুষকে নিজ ভয়াবহতা দিয়ে আচ্ছন্ন করে ফেলবে?!

আয়াত: 2

وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٍ خَٰشِعَةٌ

২. কিয়ামত দিবসে মানুষ কিংবা সৌভাগ্যবান হবে। নচেৎ দুর্ভাগ্যবান হবে। ফলে হতভাগাদের মুখমÐল হবে অপমানিত।

আয়াত: 3

عَامِلَةٞ نَّاصِبَةٞ

৩. শিকল ও লাগাম দিয়ে টেনে আনার ফলে সেগুলো হবে ক্লান্ত-ক্লিষ্ট।

আয়াত: 4

تَصۡلَىٰ نَارًا حَامِيَةٗ

৪. তারা জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করবে। তথায় তারা এর উত্তাপ আস্বাদন করবে।

আয়াত: 5

تُسۡقَىٰ مِنۡ عَيۡنٍ ءَانِيَةٖ

৫. তাদেরকে ফুটন্ত পানির ঝর্না থেকে পান করোনো হবে।

আয়াত: 6

لَّيۡسَ لَهُمۡ طَعَامٌ إِلَّا مِن ضَرِيعٖ

৬. তাদেরকে খাদ্য হিসাবে শিবরিক নামীয় নোংরা ও দুর্গন্ধময় তৃণলতা যা শুকিয়ে গেলে বিষাক্ত হয়ে যায় তা ব্যতীত অন্য কোন খাবার দেয়া হবে না।

আয়াত: 7

لَّا يُسۡمِنُ وَلَا يُغۡنِي مِن جُوعٖ

৭. তা ভক্ষণকারীকে পুষ্ট করবে না। না তার ক্ষুধা নিবারণ করবে।

আয়াত: 8

وُجُوهٞ يَوۡمَئِذٖ نَّاعِمَةٞ

৮. সে দিন ভোগসামগ্রী উপভোগের ফলে সৌভাগ্যবানদের মুখমÐল হবে আনন্দোজ্জ্বল।

আয়াত: 9

لِّسَعۡيِهَا رَاضِيَةٞ

৯. তারা দুনিয়াতে কৃত নিজেদের সৎকর্মের প্রতি থাকবে সন্তুষ্টচিত্ত। কেননা, তারা নিজেদের আমলের প্রতিদান বর্ধিত আকারে সংরক্ষিত পাবে।

আয়াত: 10

فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٖ

১০. এমন জান্নাতে যা মান ও অবস্থানের দিক থেকে খুবই উন্নত।

আয়াত: 11

لَّا تَسۡمَعُ فِيهَا لَٰغِيَةٗ

১১. জান্নাতে হারাম তো দূরের কথা আপনি সেখানে কোন অমূলক কিংবা অসার বাক্যও শ্রবণ করবেন না।

আয়াত: 12

فِيهَا عَيۡنٞ جَارِيَةٞ

১২. এ জান্নাতে রয়েছে প্রবাহমান অনেকগুলো প্র¯্রবণ। তারা সেগুলোকে যেভাবে ইচ্ছা উদ্বেলিত করবে ও ঘুরিয়ে দিবে।

আয়াত: 13

فِيهَا سُرُرٞ مَّرۡفُوعَةٞ

১৩. তথায় রয়েছে সুউচ্চ খাট-পালঙ্ক।

আয়াত: 14

وَأَكۡوَابٞ مَّوۡضُوعَةٞ

১৪. আরো রয়েছে সদা প্রস্তুত পানপাত্র।

আয়াত: 15

وَنَمَارِقُ مَصۡفُوفَةٞ

১৫. উপর্যুপরি সারি সারি বালিশসমূহ।

আয়াত: 16

وَزَرَابِيُّ مَبۡثُوثَةٌ

১৬. আরো তথায় রয়েছে যত্রতত্র বিছানো গালিচাসমূহ।

আয়াত: 17

أَفَلَا يَنظُرُونَ إِلَى ٱلۡإِبِلِ كَيۡفَ خُلِقَتۡ

১৭. তারা কি চিন্তাশীল দৃষ্টিতে উটের প্রতি দেখে না যে, আল্লাহ ওকে কীভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং আদম সন্তানের জন্য বাধ্য বানিয়েছেন?!

আয়াত: 18

وَإِلَى ٱلسَّمَآءِ كَيۡفَ رُفِعَتۡ

১৮. তারা কি আসমানের দিকে তাকায় না যে, কীভাবে আল্লাহ সেটিকে উন্নীত করেছেন। ফলে সেটি তাদের জন্য নিরাপদ ছাদে পরিণত হলো। যা তাদের উপর ভেঙ্গে পড়ে না।

আয়াত: 19

وَإِلَى ٱلۡجِبَالِ كَيۡفَ نُصِبَتۡ

১৯. তারা কি পর্বতমালার দিকে দৃষ্টি দেয় না যে, কীভাবে আল্লাহ সেটিকে স্থাপন করেেেছন এবং তার মাধ্যমে যমীনকে স্থির করেছেন। যাতে তা মানুষদেরকে নিয়ে নড়াচড়া না করে?!

আয়াত: 20

وَإِلَى ٱلۡأَرۡضِ كَيۡفَ سُطِحَتۡ

২০. তারা কি যমীনের দিকে দৃষ্টি দেয় না যে, কীভাবে আল্লাহ সেটিকে বিছিয়েছেন এবং তাকে মানুষের জন্য বসবাস উপযোগী করেছেন?!

আয়াত: 21

فَذَكِّرۡ إِنَّمَآ أَنتَ مُذَكِّرٞ

২১. হে রাসূল! আপনি তাদেরকে উপদেশ দিন এবং আল্লাহর শাস্তি থেকে সতর্ক করুন। কেননা, আপনি কেবল একজন সতর্ককারী মাত্র। আপনার নিকট তাদেরকে সতর্ক করা ব্যতীত অন্য কিছু কামনা করা হয় নি। পক্ষান্তরে তাদেরকে হিদায়েতের তাওফীক দানের শক্তি কেবল এককভাবে আল্লাহর হাতেই ন্যস্ত।

আয়াত: 22

لَّسۡتَ عَلَيۡهِم بِمُصَيۡطِرٍ

২২. আপনি তাদের কর্মনিয়ন্ত্রক নন যে, তাদেরকে ঈমান আনতে বাধ্য করবেন।

এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:

• أهمية تطهير النفس من الخبائث الظاهرة والباطنة.

ক. অন্তরকে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য নোংরামি থেকে পবিত্র করার গুরুত্ব।

• الاستدلال بالمخلوقات على وجود الخالق وعظمته.

খ. সৃষ্টি কর্তৃক ¯্রষ্টার অস্তিত্ব ও তাঁর মাহাত্ম্যের প্রমাণ গ্রহণ।

• مهمة الداعية الدعوة، لا حمل الناس على الهداية؛ لأن الهداية بيد الله.

গ. দা‘ঈ ব্যক্তির দায়িত্ব হলো কেবল আহŸান করা। কাউকে হিদায়েত গ্রহণ করতে বাধ্য করা নয়। কেননা, হিদায়েত করা আল্লাহর দায়িত্ব।

আয়াত: 23

إِلَّا مَن تَوَلَّىٰ وَكَفَرَ

২৩. তবে তাদের মধ্যকার যে ব্যক্তি ঈমান থেকে বিমুখ হয়ে গিয়েছে এবং আল্লাহ ও তদীয় রাসূলকে অবিশ্বাস করেছে।

আয়াত: 24

فَيُعَذِّبُهُ ٱللَّهُ ٱلۡعَذَابَ ٱلۡأَكۡبَرَ

২৪. তাকে আল্লাহ কিয়ামত দিবসে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে প্রবিষ্ট করে মহা শাস্তিতে নিপতিত করবেন।

আয়াত: 25

إِنَّ إِلَيۡنَآ إِيَابَهُمۡ

২৫. নিশ্চয়ই তাদের মুত্যুর পর তাদের প্রত্যাবর্তন এককভাবে কেবল আমার দিকেই হবে।

আয়াত: 26

ثُمَّ إِنَّ عَلَيۡنَا حِسَابَهُم

২৬. অতঃপর এককভাবে আমার উপরই তাদের আমলসমূহের হিসাব-নিকাশের দায়িত্ব। এটি আপনার কিংবা অন্য কারো ব্যাপার নয়।

এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:

• فضل عشر ذي الحجة على أيام السنة.

ক. বৎসরের অন্য সব দিনের উপর যুলহজ্জের দশ দিনের ফযীলত।

• ثبوت المجيء لله تعالى يوم القيامة وفق ما يليق به؛ من غير تشبيه ولا تمثيل ولا تعطيل.

খ. কিয়ামত দিবসে আল্লাহর সাথে মানানসই পদ্ধতিতে তাঁর আগমনের বিষয়টি সাব্যস্ত। তবে তা হবে কোনরূপ তুলনা, উপমা ও বিলুপ্তি ব্যতিরেকে।

• المؤمن إذا ابتلي صبر وإن أعطي شكر.

গ. মুমিন ব্যক্তিকে যখন বঞ্চিত করা হয় তখন সে ধৈর্যধারণ করে। আর যখন দান করা হয় তখন সে শুকরিয়া আদায় করে।