Check out the new design

কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। * - অনুবাদসমূহের সূচী


অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: আত-তাওবা   আয়াত:

আত-তাওবা

সূরার কতক উদ্দেশ্য:
البراءة من المشركين والمنافقين وجهادهم، وفتح باب التوبة للتائبين.
কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছিন্ন করা, মুনাফিকদের গোমর ফাঁক ও মু’মিনদেরকে স্বাতন্ত্র বৈশিষ্ট্য মÐিত করার মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অবস্থা জনসম্মুখে উন্মুক্ত করা।

بَرَآءَةٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦٓ إِلَى ٱلَّذِينَ عَٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ
১. হে মুসলিমরা! এটি মূলতঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে দায়মুক্তি ও আরব উপদ্বীপের যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছো তার পরিসমাপ্তির ঘোষণা মাত্র।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَسِيحُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ أَرۡبَعَةَ أَشۡهُرٖ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّكُمۡ غَيۡرُ مُعۡجِزِي ٱللَّهِ وَأَنَّ ٱللَّهَ مُخۡزِي ٱلۡكَٰفِرِينَ
২. হে মুশরিকরা! তোমরা চার মাস পর্যন্ত এ জমিনে নিরাপদে ঘুরতে পারো। এরপর তোমাদের সাথে কোন চুক্তি বা নিরাপত্তা বহাল থাকবে না। তোমরা এ কথার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখো যে, তোমরা কুফরির উপর অটল থাকলে নিশ্চয়ই আল্লাহর আযাব ও শাস্তি থেকে কখনো পালিয়ে যেতে পারবে না। তোমরা এ কথার প্রতিও দৃঢ় বিশ্বাস রাখো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা এ দুনিয়াতে বন্দী ও হত্যা এবং কিয়ামতের দিন জাহান্নামে প্রবেশের মাধ্যমে কাফিরদেরকে লাঞ্ছিত করবেন। উক্ত ঘোষণাটি ওদেরকে শামিল করবে যারা নিজেদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং ওদেরকেও যাদের সাথে অনির্ধারিত সময়ের চুক্তি হয়েছে। তবে যাদের সাথে নির্ধারিত সময়ের চুক্তি হয়েছে যদিও তা চার মাসের বেশি হোক না কেন তার চুক্তিটি সে সময় পর্যন্ত পূর্ণ করা হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَأَذَٰنٞ مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦٓ إِلَى ٱلنَّاسِ يَوۡمَ ٱلۡحَجِّ ٱلۡأَكۡبَرِ أَنَّ ٱللَّهَ بَرِيٓءٞ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ وَرَسُولُهُۥۚ فَإِن تُبۡتُمۡ فَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۖ وَإِن تَوَلَّيۡتُمۡ فَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّكُمۡ غَيۡرُ مُعۡجِزِي ٱللَّهِۗ وَبَشِّرِ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
৩. মহান হজ্জের দিন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে সকল মানুষের নিকট এ ঘোষণা যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল মুশরিকদের থেকে দায়মুক্ত। হে মুশরিকরা! তোমরা যদি শিরক থেকে তাওবা করে নাও তাহলে তোমাদের তাওবা তোমাদের জন্য অনেক উত্তম হবে। আর যদি তোমরা তাওবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তোমরা এ কথায় দৃঢ় বিশ্বাস রাখো যে, না তোমরা কখনো আল্লাহকে ফাঁকি দিতে পারবে, না তাঁর শাস্তিকে। হে রাসূল! আপনি কাফিরদেরকে এ দুঃখের সংবাদ দিন যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি অপেক্ষা করছে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
إِلَّا ٱلَّذِينَ عَٰهَدتُّم مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ثُمَّ لَمۡ يَنقُصُوكُمۡ شَيۡـٔٗا وَلَمۡ يُظَٰهِرُواْ عَلَيۡكُمۡ أَحَدٗا فَأَتِمُّوٓاْ إِلَيۡهِمۡ عَهۡدَهُمۡ إِلَىٰ مُدَّتِهِمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُتَّقِينَ
৪. তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছো এবং তারাও তোমাদের চুক্তিটি পুরা করছে উপরন্তু সে চুক্তির কোন ধারাই তারা ভঙ্গ করেনি তাহলে তারা উক্ত বিধানের বাইরেই থাকবে। তাই তোমরা চুক্তির সময় শেষ হওয়া পর্যন্ত তাদের চুক্তিটি পুরা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর আদেশ মানা তথা চুক্তি পুরা করা এবং তাঁর নিষেধ মানা তথা খিয়ানত না করা মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন।
আরবি তাফসীরসমূহ:
فَإِذَا ٱنسَلَخَ ٱلۡأَشۡهُرُ ٱلۡحُرُمُ فَٱقۡتُلُواْ ٱلۡمُشۡرِكِينَ حَيۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡ وَخُذُوهُمۡ وَٱحۡصُرُوهُمۡ وَٱقۡعُدُواْ لَهُمۡ كُلَّ مَرۡصَدٖۚ فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ فَخَلُّواْ سَبِيلَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ
৫. শত্রæদেরকে নিরাপত্তা দেয়ার সেই চার মাস শেষ হয়ে গেলে তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানে পাও হত্যা করো। তাদের কিল্লাগুলোতে তাদেরকে ঘেরাও করো এবং তাদের পথে পথে ওত পেতে বসে থাকো। তবে তারা যদি শিরক থেকে আল্লাহর নিকট তাওবা করে এবং সালাত কায়েম করে ও নিজেদের সম্পদের যাকাত দেয় তখন তারা তোমাদের মুসলিম ভাই। তখন তাদের সাথে যুদ্ধ করা ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি অতি ক্ষমাশীল ও অত্যন্ত দয়ালু।
আরবি তাফসীরসমূহ:
وَإِنۡ أَحَدٞ مِّنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ ٱسۡتَجَارَكَ فَأَجِرۡهُ حَتَّىٰ يَسۡمَعَ كَلَٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ أَبۡلِغۡهُ مَأۡمَنَهُۥۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَعۡلَمُونَ
৬. হে রাসূল! যদি মুশরিকদের কেউ আপনার আশ্রয় কামনা করে যার রক্ত ও সম্পদ হালাল তাহলে আপনি তার আবেদনে সাড়া দিন। যেন সে কুর‘আন শুনতে পায়। অতঃপর তাকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছিয়ে দিন। তা এ জন্য যে, কাফিররা মূলতঃ এমন এক জাতি যারা এ ধর্মের মূলতত্ত¡ বুঝে না। তাই যদি তারা কুর‘আন তিলাওয়াত শুনে কিছু বুঝতে পারে তাহলে তারা হয়তোবা হিদায়েতপ্রাপ্ত হবে।
আরবি তাফসীরসমূহ:
এই পৃষ্ঠার আয়াতগুলোর কতক ফায়দা:
• في الآيات دليل واضح على حرص الإسلام على تسوية العلاقات الخارجية مع الأعداء على أساس من السّلم والأمن والتّفاهم.
ক. উক্ত আয়াতগুলোতে এ প্রমাণ সুস্পষ্টভাবে মিলে যে, ইসলাম সর্বদা সন্ধি, নিরাপত্তা ও পরস্পর বুঝাপড়ার ভিত্তিতে শত্রæদের সাথে বহিরাগত সম্পর্ক রক্ষার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

• الإسلام يُقَدِّر العهود، ويوجب الوفاء بها، ويجعل حفظها نابعًا من الإيمان، وملازمًا لتقوى الله تعالى.
খ. ইসলাম পারস্পরিক চুক্তিকে সম্মান করে এবং সে তা পুরা করাকে বাধ্যতামূলক বলেও মনে করে উপরন্তু সে চুক্তি রক্ষাকে ঈমান থেকে উৎসারিত এবং আল্লাহভীরুতার সাথে কঠিনভাবে সম্পৃক্ত একটি ব্যাপার বলেও মনে করে।

• أَنَّ إقامة الصّلاة وإيتاء الزّكاة دليل على الإسلام، وأنهما يعصمان الدّم والمال، ويوجبان لمن يؤدّيهما حقوق المسلمين من حفظ دمه وماله إلا بحق الإسلام؛ كارتكاب ما يوجب القتل من قتل النفس البريئة، وزنى الزّاني المُحْصَن، والرّدّة إلى الكفر بعد الإيمان.
গ. সালাত কায়েম ও যাকাত আদায় করা ইসলামের প্রমাণাদির অন্যতম। উপরন্তু এ দু’টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির রক্ত ও সম্পদকে রক্ষা করে। এমনকি এ দু’টো তাদের আদায়কারীদের জন্য মুসলমানদের বিশেষ অধিকার তথা তাদের রক্ত ও সম্পদ রক্ষা করাকে বাধ্যতামূলক মনে করে। তবে ইসলামের অধিকারের দরুনই তা আবার ক্ষুণœ হতে পারে। যেমন: কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করা, কোন বিবাহিত ব্যক্তির সাথে ব্যভিচার করা এবং ঈমানের পর কুফরির দিকে ফিরে যাওয়ার মতো হত্যাযোগ্য অপরাধ করা।

• مشروعيّة الأمان؛ أي: جواز تأمين الحربي إذا طلبه من المسلمين؛ ليسمع ما يدلّ على صحّة الإسلام، وفي هذا سماحة وتكريم في معاملة الكفار، ودليل على إيثار السِّلم.
ঘ. নিরাপত্তার বিধান তথা মুসলমানদের জন্য যুদ্ধরত কোন কাফিরকে নিরাপত্তা দেয়াও জায়িয যদি সে তা কামনা করে। যেন সে এমন কিছু মুসলমানদের থেকে শুনতে পায় যা ইসলামের সত্যতাকে প্রমাণ করে। এতে কাফিরদের সাথে আচরণে উদারতা ও সম্মানের পরিচয় দেয়া হয়েছে যা সন্ধি চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রমাণও বটে।

 
অর্থসমূহের অনুবাদ সূরা: আত-তাওবা
সূরাসমূহের সূচী পৃষ্ঠার নাম্বার
 
কুরআনুল কারীমের অর্থসমূহের অনুবাদ - বাংলা ভাষায় আল-কুরআনুল কারীমের সংক্ষিপ্ত তাফসীরের অনুবাদ। - অনুবাদসমূহের সূচী

মারকাযু তাফসীর লিদ-দিরাসাতিল কুরআনিয়্যাহ থেকে প্রকাশিত।

বন্ধ