আর আমরা প্রত্যেক রাসূলকে তাঁর স্বজাতির ভাষাভাষী [১] করে পাঠিয়েছি [২] তাদের কাছে পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য [৩], অতঃপর আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছে সৎপথে পরিচালিত করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [৪]।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্ যে সম্প্রদায়ের মধ্যে যে নবী পাঠিয়েছেন তার উপর তার ভাষায়ই নিজের বাণী নাযিল করেছেন। এর উদ্দেশ্য ছিল, সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায় যেন নবীর কথা বুঝতে পারে এবং যা নাযিল হয়েছে তাও জানতে পারে। [ইবন কাসীর] যাতে করে পরবর্তী পর্যায়ে তারা এ ধরনের কোনো ওজর পেশ করতে না পারে যে, আপনার পাঠানো শিক্ষা তো আমরা বুঝতে পারিনি কাজেই কেমন করে তার প্রতি ঈমান আনতে পারতাম। এ উদ্দেশ্যে কোনো জাতিকে তার নিজের ভাষায়, যে ভাষা সে বোঝে, পয়গাম পৌঁছানো প্রয়োজন।
[২] আদম ‘আলাইহিস্ সালাম জগতে প্রথম মানুষ। তিনি তাকেই মানুষের জন্য সর্বপ্রথম নবী মনোনীত করেন। এরপর পৃথিবীর জনসংখ্যা যতই বৃদ্ধি পেয়েছে, আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ থেকে বিভিন্ন নবীর মাধ্যমে হেদায়াত ও পথ-প্রদর্শনের ব্যবস্থা ততই সম্প্রসারিত হয়েছে। প্রত্যেক যুগ ও জাতির অবস্থার উপযোগী বিধি-বিধান ও শরী’আত নাযিল হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মানব জগতের ক্রমঃবিকাশ যখন পূর্ণত্বের স্তরে উপনীত হয়েছে, তখন সাইয়্যেদুল আউয়ালীন ওয়াল আখেরীন, ইমামুল আম্বিয়া মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রাসূলরূপে প্রেরণ করা হয়েছে। তাকে যে গ্রন্থ ও শরী’আত দান করা হয়েছে, তাতে তাকে সমগ্র বিশ্ব এবং কেয়ামত পর্যন্ত সর্বকালের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, এ আয়াতে যদিও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা’আলা প্রত্যেক নবীকে তার জাতির কাছে পাঠিয়েছেন কিন্তু অন্য আয়াতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আল্লাহ্ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত মানুষের জন্যই রাসূল করে পাঠিয়েছেন। কোনো জাতির সাথে সুনির্দিষ্ট করে নয়। যেমন, আল্লাহ্ বলেন, “বলুন, ‘হে মানুষ! নিশ্চয় আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহর রাসূল।” [সূরা আল-আ’রাফ ১৫৮]
আরও বলেন, “কত বরকতময় তিনি! যিনি তাঁর বান্দার উপর ফুরকান নাযিল করেছেন, সৃষ্টিজগতের জন্য সতর্ককারী হতে।” [সূরা আল-ফুরকান ১]
আরও বলেন, “আর আমরা তো আপনাকে সমগ্র মানুষের জন্যই সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।” [সূরা সাবা ২৮] ইত্যাদি আয়াতসমূহ।
যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাত সমস্ত সৃষ্টিকুলের জন্য, প্রতিটি ভাষাভাষির জন্য। প্রতি ভাষাভাষির কাছে এ বাণী পৌঁছে দেয়া মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের কর্তব্য। [আদওয়াউল বায়ান]
[৩] এ আয়াত এ প্রমাণ বহন করে যে, যা দিয়ে আল্লাহ্র কালাম ও তাঁর রাসূলের সুন্নাত স্পষ্টভাবে বুঝা যাবে, ততটুকু আরবী ভাষাজ্ঞান প্রয়োজন এবং আল্লাহ্র কাছেও প্রিয় বিষয়। কেননা এটা ব্যতীত আল্লাহ্র কাছে যা নাযিল হয়েছে তা জানা অসম্ভব। তবে যদি কেউ এমন হয় যে, তার সেটা শিক্ষা গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে না যেমন ছোটকাল থেকে এটার উপর বড় হয়েছে এবং সেটা তার প্রকৃতিতে পরিণত হয়েছে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কারণ, তখন সে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের বাণী থেকে দীন ও শরী’আত গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। যেমন, সাহাবায়ে কিরাম গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। [সা’দী]
[৪] অর্থাৎ আমি মানুষের সুবিধার জন্য নবীগণকে তাদের ভাষায় প্রেরণ করেছি- যাতে নবীগণ আমার বিধি-বিধান উত্তমরূপে বুঝিয়ে দেন। কিন্তু হেদায়াত ও পথভ্রষ্টতা এরপরও মানুষের সাধ্যাধীন নয়। আল্লাহ্ তা’আলাই স্বীয় শক্তিবলে যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্টতায় রাখেন এবং যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দেন। সমগ্র জাতি যে ভাষা বোঝে নবী সে ভাষায় তার সমগ্র প্রচার কার্য পরিচালনা ও উপদেশ দান করা সত্ত্বেও সবাই হেদায়াত লাভ করে না। কারণ, কোনো বাণী কেবল সহজবোধ্য হলেই যে, সকল শ্রোতা তা মেনে নেবে এমন কোনো কথা নেই। সঠিক পথের সন্ধান লাভ ও পথভ্রষ্ট হওয়ার মূল সূত্র রয়েছে আল্লাহ্র হাতে। তিনি যাকে চান নিজের বাণীর সাহায্যে সঠিক পথে পরিচালিত করেন এবং যার জন্য চান না সে হিদায়াত পায় না।
আয়াতের শেষে আল্লাহ্র দু’টি মহান গুণের উল্লেখ করা হয়েছে, বলা হয়েছে, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাবান। এ দু’টি গুণবাচক নাম এখানে উল্লেখ করার পিছনে বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। যার অর্থ, লোকেরা নিজে নিজেই সৎপথ লাভ করবে বা পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে, এটা সম্ভব নয়। কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই তিনি যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দান করবেন এবং যাকে ইচ্ছা অযথা পথভ্রষ্ট করবেন এটা তাঁর রীতি নয়। কর্তৃত্বশীল ও বিজয়ী হওয়ার সাথে সাথে তিনি জ্ঞানী এবং প্রজ্ঞও। তাঁর কাছ থেকে কোনো ব্যক্তি যুক্তিসংগত কারণেই হেদায়াত লাভ করে। আর যে ব্যক্তিকে সঠিক পথ থেকে বঞ্চিত করে ভ্রষ্টতার মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয় সে নিজেই নিজের ভ্রষ্টতাপ্রীতির কারণে এহেন আচরণ লাভের অধিকারী হয়। [দেখুন, সা’দী]
Contents of the translations can be downloaded and re-published, with the following terms and conditions:
1. No modification, addition, or deletion of the content.
2. Clearly referring to the publisher and the source (QuranEnc.com).
3. Mentioning the version number when re-publishing the translation.
4. Keeping the transcript information inside the document.
5. Notifying the source (QuranEnc.com) of any note on the translation.
6. Updating the translation according to the latest version issued from the source (QuranEnc.com).
7. Inappropriate advertisements must not be included when displaying translations of the meanings of the Noble Quran.
অনুসন্ধানের ফলসমূহ:
API specs
Endpoints:
Sura translation
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/sura/{translation_key}/{sura_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified sura (by its number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114)
Returns:
json object containing array of objects, each object contains the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/aya/{translation_key}/{sura_number}/{aya_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified aya (by its number sura_number and aya_number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114) aya_number: [1-...] (Aya number in the sura)
Returns:
json object containing the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".