Prijevod značenja časnog Kur'ana - Bengalski prijevod * - Sadržaj prijevodā


Prijevod značenja Ajet: (5) Sura: Sura el-Fatiha
إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ
আমরা শুধু আপনারই ‘ইবাদাত [১] করি [২], এবং শুধু আপনারই সাহায্য প্রার্থনা করি [৩],
[১] ‘ইবাদাত কথাটি শ্রবণের সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি কথা মনের পটে জাগ্রত হয়। প্রথম এই যে, যে বন্দেগী স্বীকার করছে সে বান্দাহ ছাড়া আর কিছুই নয়, বান্দাহ হওয়া ও বান্দাহ হয়ে থাকাই তার সঠিক মর্যাদা। দ্বিতীয় এই যে, এমন একজন আছেন যাঁর বন্দেগী করা হচ্ছে, যাঁর বান্দাহ হয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছে। তৃতীয়, যাঁর বন্দেগী করা হচ্ছে, তাঁর তরফ হতে নিয়ম ও বিধি-বিধান নাযিল হচ্ছে এবং যে বন্দেগী করছে, সে তাঁকে স্বীকার করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিধানকেও পরোপুরি মেনে নিচ্ছে। আর চতুর্থ এই যে, কাকেও মা‘বুদ বলে স্বীকার করা এবং তাঁর দেয়া বিধি-বিধান পালন করে চলার একটি অনিবার্য ফলাফল রয়েছে, যে ফলাফলের দিকে লক্ষ্য রেখেই এ বন্দেগীর কাজ করা হচ্ছে। ‘ইবাদাত-বন্দেগী করা; আনুগত্য করা; আদেশ নিষেধ মেনে চলা এবং বান্দাহ হয়ে থাকা, বান্দাহ্ হওয়ার লক্ষ্য-এ কথা কয়টি অবশ্যই স্পষ্ট হতে হয়।
মূলতঃ ‘ইবাদাত শব্দের অর্থে আরও গভীরভাবে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। ‘ইবাদাত ও উবুদিয়াত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, الذلة বা অবনতি স্বীকার, দলিত মথিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। পরিভাষায়, এ শব্দটি দ্বারা যদি فعل العابد ‘দাসের কাজ’ বা ‘কীভাবে দাস তার দাসত্ব বা ‘ইবাাদত করবে’ সেটা উদ্দেশ্য হয় তখন এর সংজ্ঞা হচ্ছে ما يجمع كمال المحبة والخضوع والخوف “এমন কোনোকিছুর নাম যাতে পরিপুর্ণ ভালোবাসা, বিনয় ও ভীতি এসব কয়টি ভাবধারা সমন্বিতভাবে পাওয়া যায়।” [ইবন কাসীর] পক্ষান্তরে যদি ‘ইবাদাত বলতে المتعبد به ‘কিসের শাধ্যমে ‘ইবাদাত করতে হবে’ সেটা উদ্দেশ্য হয়, তখন তার সংজ্ঞা হচ্ছে, اسم جامع لكل ما يحبه الله ويرضاه من الأقوال والأفعال الظاهرة والباطنة “আল্লাহ যা পছন্দ করেন ও ভালোবাসেন এমন প্রতিটি প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কথা-কাজের নাম হচ্ছে ‘ইবাদাত।” [মাজমু‘ ফাতাওয়া] সুতরং কোনো কিছু আল্লাহর দরবারে ‘ইবাদাত হিসেবে কবুল হওয়ার জন্য দু’টি শর্ত অবশ্যই থাকবে। প্রথমত: সেটা একমাত্র আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যেই হতে হবে। তাতে থাকবে পরিপর্ণ ভালোবাসা, বিনয় ও ভীতি। যাকে ‘ইখলাস’ বলা হয়। দ্বিতীয়ত: সেটা হতে হবে রাসূলের প্রদর্শিত পদ্ধতিতে। প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো কথা ও কাজ আল্লাহ্‌র কাছে প্রিয় ও কোনটি তিনি পছন্দ করেন সেটা একমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমেই আমরা লাভ করেছি। সুতরাং কোনো কাজ ‘ইবাদাত হিসেবে পরিগণিত হওয়ার জন্য দ্বিতীয় এ শর্তটি অবশ্যই পাওয়া যেতে হবে। মূলতঃ এ আয়াতটুকুতে ইসলামের মূল কথা কালেমা لاإله إلا الله-র তত্ত্বমূলক অর্থ প্রকাশ করা হয়েছে। এক কথায় আয়াতের অর্থ ‘ইবাদাত’ কেবল আল্লাহরই করব, মা‘বুদ কেবল তাঁকেই বানাব, তিনি ছাড়া আর কারও দাসত্ব কবুল করব না। [আদওয়াউল বায়ান]
[২] আল্লাহ তা‘আলার পূর্বোল্লিখিত গুণাবলীর প্রতি যাদের ঈমান স্থাপিত হয়, যারা আল্লাহকেই একমাত্র ইলাহ, সৃষ্টিজগতের একচ্ছত্র রব্ব্, আর-রহমান, আর-রাহীম ও বিচার দিনের অপ্রতিদ্বন্দ্বী অধিপতি বলে মেনে নেয়, তাদের পক্ষে সেই আল্লাহর পরিপূর্ণ দাসত্ব কবুল করা-কেবল তাঁরই ‘ইবাদাত, আনুগত্য ও আদেশ পালন করা ছাড়া যেমন কোনো উপায়ই থাকতে পারে না, তেমনি এটা ব্যতীত তাদের জীবনের আর কোনো কাজ বা উদ্দেশ্যেই থাকতে পারে না। মূলতঃ সে উদ্দেশ্যই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র ঘোষণা করেছেন, “মানুষ ও জিন জাতিকে এই উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছি যে তারা (স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে) কেবল আমারই দাসত্ব ও বন্দেগী করবে।” [সূরা আয-যারিয়াত: ৫৬] অর্থাৎ আল্লাহর দাসত্ব ও আনুগত্য করাই হচ্ছে মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য। মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য লক্ষ্য আল্লাহর দাসত্ব এবং আনুগত্য করা ছাড়া আর কিছুই নেই-হতে পারে না। একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব স্বীকার করার অর্থ, মানুষ নিজেকে একমাত্র আল্লাহর মালিকানাধীন সত্তা স্বীকার করবে ও নিজেকে তাঁর খাঁটি দাস বানিয়ে নিবে। অতএব, মানুষ নিজে মা‘বুদ বা পূজ্য-উপাস্য-আরাধ্য ও সার্বভৌম হতে পারে না, এ অধিকার একমাত্র আল্লাহর। মানুষ যদি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো সত্তার পূজা-উপাসনা করে, মূল সৃষ্টিকাকার্যে কিংবা বিশ্ব-পরিচালনা রিযিকদান ও সৃস্টির হিফাযতের ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া বা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো শক্তিকে স্বীকার করে, তবে তা আাকীদা ও বিশ্বাসের দিক দিয়ে সুস্পষ্টরূপে শির্ক হবে। পক্ষান্তরে এসব দিক দিয়ে একমাত্র আল্লাহকে স্বীকার করলেও মানুষের বাস্তব জীবন ক্ষেত্রে ও সার্বভৌম শক্তি প্রয়েগেরা ক্ষেত্রে যদি মেনে নেয়া হয় আল্লাহ ছাড়া অপর কোনো শক্তিকে-কোনো পীর-আলেম, কোনো নেতা, সমাজপতি, কোনো বিচারক ও রাষ্ট্র-প্রদানকে, তবে তাতেও অনুরূপভাবে শির্ক হবে, আল্লাহর ‘ইবাদাত কিছুমাত্র আদায় হবে না। কেননা মানুষকে যে ‘ইবাদাতের উদ্দেশ্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তা কেবল হৃদয়গত বিশ্বাস ও ‘ইবাদতা-বন্দেগীর অনুষ্ঠান দ্বারাই হাসিল হতে পারে না; কারণ কেবল এর নাম ‘ইবাদাত নয়।ইবাদাতের কাজে বিশ্বাস করা ও মেনে নেয়ার সাথে সাথে ‘ইবাদাত-বন্দেগীর পরও বাস্তব আনুগত্য ও অনুসরণ করার ব্যাপারটিও পুরোপুরি রয়েছে। কাজেই এর একাংশের কাজ আদায় করলে তাতে আল্লাহর উদ্দেশ্য হাসিল হতে পারে না। এরূপ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার সম্মুখে কঠিন প্রশ্নটি উপস্থাপিত হবে, “তোমরা কি আল্লাহর কিতাবের একাংশে ঈমান আনো আর অপর অংশে কর কুপরী? অতঃপর তোমাদের মধ্যে থেকে যারাই এরূপ করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি তো এই যে, দুনিয়ার জীবনে তাদের অপরিসীম লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা হবে এবং কিয়ামতের দিন তাদেরকে কঠিনতম আযাবের দিকে নিক্ষেপ করা হবে। আর আল্লাহ তোমাদরে কাজকর্ম সম্পর্কে বাস্তবিকই বে-খবর নন।”
[৩] মানুষ স্বভাবতই দুর্বল। তার ক্ষমতা বিভিন্ন দিকে যত বেশিই হোক না কেন, তা সীমাবদ্ধ। অসীম ক্ষমতা কোনো মাুষেরই নেই, মানুষ তার দাবিও করতে পারে না। সে জন্য প্রত্যেক মানুষই কোনো অসীম ক্ষমতা-সম্পন্ন সত্তার আশ্রয় নিতে, তাঁর মর্জির নিকট নিজেকে একান্তভাবে সোপর্দ করে দিতে বাধ্য হয়। এরূপ শক্তির আঁধার হিসেবে যারা আল্লাহকে স্বীকার করে, তারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার ও অন্য শক্তির অস্বীকারকারী; পক্ষান্তরে যারা আল্লাহকে স্বীকার করে না, স্বীকার করে কোনো দেব-দেবী, কোনো মৃত বা জীবিত পীর-বুজর্গ কিংবা কোনো রাষ্ট শক্তি বা কোনো বিভাগীয় প্রধানকে, তারা তাদের প্রিত ঈমানদার; আর আল্লাহর প্রতি কাফির। দুনিয়ার বিপদ-আপদ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য বৈষয়িক ক্ষেত্রে সঠিক উন্নতি লাভ করার উদ্দেশ্য উল্লিখিত প্রত্যেক ‘ঈমানদার’ ব্যক্তিরা তাদের ‘মা‘বুদের’ নিকট আশ্রয় ও সাহায্য প্রার্থনা করতে বাধ্য। তাদের মনস্তাত্বিক অবস্থার দিক দিয়ে এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য বাস্তব দিক দিয়েও। এরূপ সাহায্য ও আশ্রয় আল্লাহ ব্যতীত মানুষ বিপদ হতে উদ্ধার পেতে পারে না। মানুষ যখন নিজের অক্ষমতা ও অসহায়তা তীব্রভাবে অনুভব করে। মনের ঐকান্তিক তাগীদেই সে এক মবানুভব অসীম শক্তির সমীপে আত্মনিবেদিত হতে ও তাঁর প্রত্যক্ষ সাহায্য প্রার্থনা করতে একান্তভাবেই বাধ্য হয়।
তাই আল্লাহর বান্দাহ এখানে ঘোষণা করছে যে, যেহেতু আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ক মা‘বুদ কেউ নেই-থাকতে পারে না, সেজন্য আমি একমাত্র আল্লাহর বন্দেগী কবূল করেছি। অন্যভাবে বলা যায়, প্রকৃত সাহায্য করার ও বিপদ-আপদে আশ্যয় দান করারও কোনো অধিকার এবং ক্ষমতা এক আল্লাহর ছাড়া আর কারও নেই। সেজন্য এ সাহায্য ও আশ্রয়-হে
আল্লাহ তোমারই নিকট প্রার্থনা করছি এবং ঘোষণা করছি যে, এই দুনিয়ার যেখানে যেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনা সত্তা সাহায্যকারী ও ‘আশ্রয়দাতা’ সেজে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের সবাই মিথ্যাবাদী ও ধোঁকাবাজ এবং যেসব লোক আল্লাহকে ত্যাগ করে অপর কোনো সত্তার নিকট সাহায্য ও আশ্রয় পাওয়ার আশায় তাদেরই পদতলে মাথা লুটাচ্ছে, তারা সব ভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট। আপনার সাহায্য ব্যতীত আমি ‘ইবাদাতটুকও সঠিকভাবে করতে পারব না। আপনার সাহায্য পেলেই তবে আমি শয়তানের কবল থেকে মুক্ত থাকতে পারব। আপনার সাহায্যেই আমি আমার নফসের খারাপ আহ্বান থেকে মুক্ত থাকতে পারব। সুতরাং একমাত্র আপনার কাছেই সাাহয্য চাই আর কারও কাছে নয়।
আল্লাহর ‘ইবাদত ও তাঁর সাহায্য গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষ সাধারণতঃ চার দলে বিভক্ত : তাদের একদল একমাত্র আল্লাহর ‘ইবাদাত করে এবং তাঁর কাছেই সাহায্য চায়। তারা হচ্ছে প্রকৃত ঈমানদার। দ্বিতীয়ত দলটি একমাত্র ই‘বাদাত করে সত্য, কিন্তু আল্লাহর প্রদর্শিত পদ্ধতির সাহায্য গ্রহণের পাশাপাশি অন্য কিছুর সাহায্য গ্রহণ করে। তারা গোনাহগার উম্মাত। তৃতীয় দলটি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুরও ইবাদাত করে থাকে। কিন্তু তারা আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়। এরা আরবের মুশরিকদের মতো। যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যদের ‘ইবাদাত করে থাকে, কিন্তু তারা বিপদে পড়লে একমাত্র আল্লাহর সাাহয্য চায়। চতুর্থ দলটি এমন যারা আল্লাহর ‘ইবাদাতও করে না, তাঁর কাছে সাহায্যও চায় না। তারা হচ্ছে নাস্তিক, যিন্দীক। [মাদারিজুস সালেকীন]
Tefsiri na arapskom jeziku:
 
Prijevod značenja Ajet: (5) Sura: Sura el-Fatiha
Indeks sura Broj stranice
 
Prijevod značenja časnog Kur'ana - Bengalski prijevod - Sadržaj prijevodā

Prijevod značenja Plemenitog Kur'ana na bengalski jezik - Dr. Ebu Bekr Muhammed Zekerija. Štampao i distribuirao Kompeks kralja Fehda za štampanje Plemenitog Kur'ana u Medini, 1436. godine po Hidžri.

Zatvaranje