সকল প্রশংসা আল্লাহ্রই [১] যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো [২]। এরপরও কাফেরগণ তাদের রবের সমকক্ষ দাঁড় করায় [৩]।
সূরা সংক্রান্ত আলোচনা:
আয়াত সংখ্যা: ১৬৫ ৷
নামকরণ: এ সূরারই ১৩৬, ১৩৯ ও ১৪২ নং আয়াতসমূহে উল্লেখিত “আল-আন’আম” শব্দ থেকে এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে। আল-আন’আম শব্দের অর্থ, গবাদি পশু।
সূরা নাযিলের প্রেক্ষাপট:
এ সূরা মক্কী সূরা বলেই প্রসিদ্ধ। কুরআনের ধারাবাহিকতা অনুসারে এটাই প্রথম মক্কী সূরা। এ সূরার মৌলিক আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, তাওহীদ, রিসালাত ও আখেরাত। মুফাসসিরগণের মধ্যে মুজাহিদ, কালবী, কাতাদাহ প্রমূখও প্রায় এ কথাই বলেন। আবু ইসহাক ইসফিরায়িনী বলেন, এ সূরাটিতে তাওহীদের সমস্ত মূলনীতি ও পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। [কুরতুবী, আত-তাফসীরুল মুনীর]
সূরার ফযিলত:
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, সূরা আল-আন’আমের একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, কয়েকখানি আয়াত বাদে গোটা সূরাটিই একযোগে মক্কায় নাযিল হয়েছে। জাবের, ইবন আব্বাস, আনাস ও ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুম বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর সূরা আল-আন’আম নাযিল হচ্ছিল, তখন এত ফিরিশ্তা তার সাথে অবতরণ করেছিলেন যে, তাতে আকাশের প্রান্তদেশ ছেয়ে যায়। [ মুস্তাদরাকে হাকিম ২/২৭০, ২৪৩১]
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সূরা আল-আন’আম কুরআনের উৎকৃষ্ট অংশের অন্তর্গত। [সুনান দারমী ২/৫৪৫, ৩৪০১]
-------------------
[১] এ সূরাটিকে (اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ) বাক্য দ্বারা আরম্ভ করা হয়েছে। এতে খবর দেয়া হয়েছে যে, সর্ববিধ প্রশংসা আল্লাহর জন্য। এ খবরের উদ্দেশ্য মানুষকে প্রশংসা শিক্ষা দেয়া। যেন বলা হচ্ছে, হে মানুষ! তোমরা তাঁর জন্যই যাবতীয় হামদ ও শোকর নির্দিষ্ট কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আরও সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন। তাঁর সাথে কাউকেও সামান্যতম অংশীদারও করবে না। এ বিশেষ পদ্ধতি শিক্ষাদানের মধ্যে এদিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, পরিপূর্ণ হামদ বা প্রশংসা একমাত্র তাঁরই, যার কোনো শরীক নেই। তাকে ব্যতীত আর যে সমস্ত উপাস্যের ইবাদাত করা হয়, তারা এ হামদ প্রাপ্য নয়। [তাবারী] সুতরাং কেউ প্রশংসা করুক বা না করুক, তিনি স্বীয় ওজুদ বা সত্তার পরাকাষ্ঠার দিক দিয়ে নিজেই প্রশংসনীয়। এ বাক্যের পর আসমান ও যমীন এবং অন্ধকার ও আলো সৃষ্টি করার কথা উল্লেখ করে তার প্রশংসনীয় হওয়ার প্রমাণও ব্যক্ত করা হয়েছে, যে সত্তা এহেন মহান শক্তি-সামর্থ্য ও বিজ্ঞবান, তিনিই হামদ বা প্রশংসার যোগ্য হতে পারেন। কাতাদা বলেন, এ আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ তা'আলা আসমানকে যমীনের পূর্বে, অন্ধকারকে আলোর পূর্বে এবং জান্নাতকে জাহান্নামের পূর্বে সৃষ্টি করেছেন। [তাবারী]
[২] এ আয়াতে سماوات শব্দটিকে বহুবচনে এবং ارض শব্দটিকে একবচনে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও অন্য এক আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসমানের ন্যায় যমীনও সাতটি। [যেমন, সূরা আত-তালাক ১২] এমনিভাবে ظلمات শব্দটিকে বহুবচনে এবং نور শব্দটিকে একবচনে উল্লেখ করার মাঝে ইঙ্গিত রয়েছে যে, نور বলে বিশুদ্ধ সরল পথ ব্যক্ত করা হয়েছে এবং তা মাত্র একটিই। আর ظلمات বলে ভ্রান্ত পথ ব্যক্ত করা হয়েছে, যা অসংখ্য। তাছাড়া نور বা আলো ظلمات বা অন্ধকার থেকে উত্তম [বাহরে মুহীত, ইবন কাসীর]
[৩] আলোচ্য আয়াতের উদ্দেশ্য একত্ববাদের স্বরূপ ও সুস্পষ্ট প্রমাণ বর্ণনা করে জগতের ঐসব জাতিকে হুশিয়ার করা যারা মূলতঃ একত্ববাদে বিশ্বাসী নয় কিংবা বিশ্বাসী হওয়া সত্বেও একত্ববাদের তাৎপর্যকে পরিত্যাগ করে বসেছে। অগ্নি উপাসকদের মতে জগতের স্রষ্টা দু’জন - ইয়াযদান ও আহরামান। তারা ইয়াযদানকে মঙ্গলের স্রষ্টা এবং আহরামানকে অমঙ্গলের স্রষ্টা বলে বিশ্বাস করে। এ দুটিকেই তারা অন্ধকার ও আলো বলে ব্যক্ত করে। এমনিভাবে নাসারারা একত্ববাদে বিশ্বাসী হওয়ার সাথে সাথে ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর মাতা মারইয়াম আলাইহাস সালামকে আল্লাহ তা'আলার অংশীদার সাব্যস্ত করেছে। এরপর একত্ববাদের বিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখার জন্য তারা ‘একে তিন’ এবং ‘তিনে এক’ এর অযৌক্তিক মতবাদের আশ্রয় নিয়েছে। আরবের মুশরিকরা প্রতিটি পাহাড়ের প্রতিটি বড় পাথরকেও তাদের উপাস্য বানিয়েছে। [আল-মানার] মোটকথা, যে মানবকে আল্লাহ্ তা'আলা আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা করেছিলেন, তারা যখন পথভ্রষ্ট হল তখন চন্দ্র, সূর্য, তারকারাজি, আকাশ, পানি, বৃক্ষলতা এমনকি পোকা-মাকড়কেও সিজদার যোগ্য উপাস্য, রুযীদাতা ও বিপদ বিদূরণকারী সাব্যস্ত করে নিল। কুরআনুল কারীমের আলোচ্য আয়াত আল্লাহ তা'আলাকে যমীন ও আসমানের স্রষ্টা এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভাবক বলে উপরোক্ত সব ভ্রান্ত বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করেছে। কেননা অন্ধকার ও আলো, আসমান ও যমীন এবং এতে উৎপন্ন যাবতীয় বস্তু আল্লাহ্ তা'আলার সৃষ্ট। অতএব, এগুলোকে কেমন করে আল্লাহ্ তা'আলার অংশীদার করা যায়? যিনি সৃষ্টি করেন তিনি কি যারা সৃষ্টি করতে পারে না তাদের মত? সুতরাং কীভাবে ইবাদাতে ও সম্মানে তাঁর সমকক্ষ কাউকে দাঁড় করানো যায়? [ ইবন কাসীর, ফাতহুল কাদীর]।
Prijevod značenja Plemenitog Kur'ana na bengalski jezik - Dr. Ebu Bekr Muhammed Zekerija. Štampao i distribuirao Kompeks kralja Fehda za štampanje Plemenitog Kur'ana u Medini, 1436. godine po Hidžri.
Contents of the translations can be downloaded and re-published, with the following terms and conditions:
1. No modification, addition, or deletion of the content.
2. Clearly referring to the publisher and the source (QuranEnc.com).
3. Mentioning the version number when re-publishing the translation.
4. Keeping the transcript information inside the document.
5. Notifying the source (QuranEnc.com) of any note on the translation.
6. Updating the translation according to the latest version issued from the source (QuranEnc.com).
7. Inappropriate advertisements must not be included when displaying translations of the meanings of the Noble Quran.
Rezultati pretraživanja:
API specs
Endpoints:
Sura translation
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/sura/{translation_key}/{sura_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified sura (by its number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114)
Returns:
json object containing array of objects, each object contains the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/aya/{translation_key}/{sura_number}/{aya_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified aya (by its number sura_number and aya_number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114) aya_number: [1-...] (Aya number in the sura)
Returns:
json object containing the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".