Traduction des sens du Noble Coran - Traduction en bengali - Abû Bakr Zakariyâ * - Lexique des traductions


Traduction des sens Verset: (27) Sourate: AN-NOUR
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَدۡخُلُواْ بُيُوتًا غَيۡرَ بُيُوتِكُمۡ حَتَّىٰ تَسۡتَأۡنِسُواْ وَتُسَلِّمُواْ عَلَىٰٓ أَهۡلِهَاۚ ذَٰلِكُمۡ خَيۡرٞ لَّكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَذَكَّرُونَ
হে মুমিনগণ [১]! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে তার অধিবাসীদের সম্প্রীতিসম্পন্ন অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না করে [২] প্রবেশ করো না [৩]। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
[১] এ আয়াতে অন্য কারো গৃহে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নেয়ার বিধান আলোকপাত করা হয়েছে। অন্য কারো গৃহে প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নেয়ার বিধানে প্রতিটি ইমানদার নারী, পুরুষ, মাহরাম ও গায়র-মাহরাম সবাই শামিল রয়েছে। আতা ইবন আবী রাবাহ বৰ্ণনা করেন যে, আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, অনুমতি নেয়া মানুষ অস্বীকার করছে, বর্ণনাকারী বলল, আমি বললাম: আমার কিছু ইয়াতীম বোন রয়েছে, তারা আমার কাছে আমার ঘরেই প্রতিপালিত হয়, আমি কি তাদের কাছে যাবার সময় অনুমতি নেব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি কয়েকবার তার কাছে সেটা উত্থাপন করে এ ব্যাপারে ব্যতিক্রম করার অনুরোধ করলাম। কিন্তু তিনি অস্বীকার করলেন এবং বললেন, তুমি কি তাদেরকে উলঙ্গ দেখতে চাও? [বুখারী, আদাবুল মুফরাদ- ১০৬৩] ইমাম মালেক মুয়াত্তা গ্রন্থে আতা ইবন ইয়াসার থেকে বর্ণনা করেন যে, জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল: আমি আমার মায়ের কাছে যাওয়ার সময়ও অনুমতি চাইব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, অনুমতি চাও। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল, আমি তো আমার মায়ের ঘরেই বসবাস করি। তিনি বললেন, তবুও অনুমতি না নিয়ে ঘরে যাবে না। লোকটি আবার বলল: হে আল্লাহ্‌র রাসূল, আমি তো সর্বদা তার কাছেই থাকি। তিনি বললেন, তবুও অনুমতি না নিয়ে ঘরে যাবে না। তুমি কি তোমার মাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখা পছন্দ কর? সে বলল, না। তিনি বললেন, তাই অনুমতি চাওয়া আবশ্যক। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক ১৭২৯]

[২] আয়াতে

حَتَّىٰ تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَىٰ أَهْلِهَا

বলা হয়েছে; অর্থাৎ দু’টি কাজ না করা পর্যন্ত কারো গৃহে প্রবেশ করো না।

প্রথম বলা হয়েছে, تَسْتَأنِسُوا বিশিষ্ট তাফসীরকারগণের মতে এর অর্থ, تَسْتَأْذِنُوا বা অনুমতি হাসিল করা। কিন্তু আসলে উভয় ক্ষেত্রে শাব্দিক অর্থের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। تَسْتَأْذِنُوا বললে আয়াতের অর্থ হতো: “কারোর বাড়িতে প্ৰবেশ করো না যতক্ষণ না অনুমতি নিয়ে নাও।” এ প্রকাশ ভংগী পরিহার করে আল্লাহ্‌ تَسْتَأنِسُوا শব্দ ব্যবহার করেছেন। যার অর্থ হয়, পরিচিতি, অন্তরংগতা, সম্মতি ও প্রীতি সৃষ্টি করা। আর এটা যখনই বলা হবে তখনই এর মানে হবে, সম্মতি আছে কি না জানা অথবা নিজের সাথে অন্তরংগ করা, সম্প্রীতি তৈরী করা। কাজেই আয়াতের সঠিক অর্থ হবে: ‘‘লোকদের গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না তাদেরকে অন্তরংগ করে নেবে অথবা তাদের সম্মতি জেনে নেবে।” অর্থাৎ একথা না জেনে নেবে যে, গৃহমালিক তোমার আসাকে অপ্রীতিকর বা বিরক্তিকর মনে করছে না এবং তার গৃহে তোমার প্রবেশকে সে পছন্দ করছে। এখানে استِيناٰسْ শব্দ উল্লেখ করার মধ্যে ইঙ্গিত আছে যে, প্রবেশের পূর্বে অনুমতি লাভ করার দ্বারা প্রতিপক্ষ পরিচিত ও আপন হয়, ফলে সে আতঙ্কিত হয় না। [দেখুন-বাগভী, সা‘দী, আইসারুত তাফসির]

দ্বিতীয় কাজ এই যে, গৃহের লোকদেরকে সালাম কর। কোনো কোনো মুফাসসির এর অর্থ নিয়েছেন যে, প্রথমে অনুমতি লাভ কর এবং গৃহে প্রবেশের সময় সালাম কর। কুরতুবী এই অর্থই পছন্দ করেছেন। এই অর্থের দিক দিয়ে আয়াতে অগ্র-পশ্চাত নেই। কোনো কোনো আলেম বলেন, যদি অনুমতি নেয়ার পূর্বে গৃহের কোনো ব্যক্তির উপর দৃষ্টি পড়ে, তবে প্রথমে সালাম করবে, এরপর অনুমতি চাইবে; নতুবা প্রথমে অনুমতি নেবে এবং গৃহে প্রবেশ করার সময় সালাম করবে। [দেখুন- বাগভী] কিন্তু অধিকাংশ হাদীস থেকে সুন্নত তরীকা এটাই জানা যায় যে, প্রথমে বাইরে থেকে সালাম করবে, এরপর নিজের নাম নিয়ে বলবে যে, অমুক ব্যক্তি সাক্ষাত করতে চায়। বিভিন্ন হাদীসগুলো থেকে প্রথমে সালাম ও পরে প্রবেশের অনুমতি গ্রহণের বিষয় প্রমাণিত হয়েছে। এতে নিজের নাম উল্লেখ করে অনুমতি চাওয়াই উত্তম। হাদীসে আছে, আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে গেলেন এবং অনুমতি চাওয়ার জন্য বললেন,

السَّلامُ عَليْكُم هٰذا عَبْدُ اللّٰه بن قَيْس، السَّلامُ عَليْكُم هَذاأَبو مُو سَى، السَّلامُ عَليْكُم هَذاالأَشْعري

[মুসলিম ২১৫৪] এতেও তিনি প্রথমে নিজের নাম আবু মূসা বলেছেন, এরপর আরো নির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য আল-আশ‘আরী বলেছেন।

[৩] এ হুকুমটি নাযিল হওয়ার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব নিয়ম ও রীতি-নীতির প্রচলন করেন নীচে সেগুলোর কিছু বর্ণনা করা হলো:

এক. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যক্তিগত গোপনীয়তার এ অধিকারটিকে কেবলমাত্র গৃহের চৌহদ্দীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি। বরং একে একটি সাধারণ অধিকার গণ্য করেন। এ প্রেক্ষিতে অন্যের গৃহে উঁকি ঝুঁকি মারা, বাহির থেকে চেয়ে দেখা নিষিদ্ধ। এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এলেন এবং ঠিক তার দরজার উপর দাঁড়িয়ে অনুমতি চাইলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, “পিছনে সরে গিয়ে দাঁড়াও, যাতে দৃষ্টি না পড়ে সে জন্যই তো অনুমতি চাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।” [আবু দাউদ ৫১৭৪] নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিজের নিয়ম ছিল এই যে, যখন কারোর বাড়িতে যেতেন, দরজার ঠিক সামনে কখনো দাঁড়াতেন না। তিনি দরজার ডান পাশে বা বাম পাশে দাঁড়িয়ে অনুমতি চাইতেন। [আবু দাউদ ৫১৮৬] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাদেম আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, এক ব্যক্তি বাইরে থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কামরার মধ্যে উঁকি দিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে সে সময় একটি তীর ছিল। তিনি তার দিকে এভাবে এগিয়ে এলেন যেন তীরটি তার পেটে ঢুকিয়ে দেবেন। [আবু দাউদ ৫১৭১] অপর বর্ণনায় এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যদি কোনো ব্যক্তি তোমার গৃহে উঁকি মারে এবং তুমি একটি কাঁকর মেরে তার চোখ কানা করে দাও, তাহলে তাতে কোনো গোনাহ হবে না।” [মুসলিম ২১৫৮, মুসনাদে আহমাদ ২/২২৩, ২/৪২৮] অন্য হাদীসে বলা হয়েছে: “যে ব্যক্তি কারোর ঘরে উঁকি মারে এবং ঘরের লোকেরা তার চোখ ছেঁদা করে দেয়, তবে তাদের কোনো জবাবদিহি করতে হবে না।’’ [আবু দাউদ ৫১৭২]

দুই. কেবলমাত্র অন্যের গৃহে প্রবেশ করার অনুমতি নেয়ার হুকুম দেয়া হয়নি বরং নিজের মা-বোনদের কাছে যাওয়ার সময়ও অনুমতি নিতে হবে। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, “নিজের মা-বোনদের কাছে যাওয়ার সময়ও অনুমতি নিয়ে যাও।’’ [ইবন কাসীর]

তিন. প্রথম যখন অনুমতি চাওয়ার বিধান জারি হয় তখন লোকেরা তার নিয়ম-কানুন জানতো না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত শিক্ষা দেন। যেমন, তাদেরকে ঘরে ঢুকার অনুমতির জন্য সঠিক শব্দ নির্বাচন করা শিখিয়ে দেন: একবার এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসে এবং দরজা থেকে চিৎকার করে বলতে থাকে “আমি কি ভেতরে ঢুকে যাবো?” নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার খাদেমকে বললেন, এ ব্যক্তি অনুমতি চাওয়ার নিয়ম জানে না। একটু উঠে গিয়ে তাকে বলে এসো, “আসসালামু আলাইকুম, আমি কি ভিতরে আসতে পারি?” বলতে হবে। [আবু দাউদ ৫১৭৭]।

তাদেরকে নিজের পরিচয় স্পষ্টভাবে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন: জাবের ইবন আবদুল্লাহ বলেন, আমি আমার বাবার ঋণের ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলাম এবং দরজায় করাঘাত করলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কে? আমি বললাম, আমি। তিনি দু-তিনবার বললেন, “আমি? আমি?” অর্থাৎ এখানে আমি বললে কে কি বুঝবে যে, তুমি কে? [বুখারী ৬২৫০, মুসলিম ২১৫৫, আবু দাউদ ৫১৮৭] এতে বুঝা গেল যে, অনুমতি চাওয়ার সঠিক পদ্ধতি ছিল, মানুষ নিজের নাম বলে অনুমতি চাইবে। উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অনুমতি নেয়ার ক্ষেত্রে বলতেন, “আসসালামু আলাইকুম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! উমর কি ভেতরে যাবে?” [আবু দাউদ ৫২০১]

সালাম ব্যতীত কেউ ঢুকে গেলে তাকে ফেরত দিয়ে সালামের মাধ্যমে ঢুকা শিখিয়ে দিলেন: এক ব্যক্তি কোনো কাজে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলেন। সালাম ছাড়াই এমনিই সেখানে গিয়ে বসলেন। তিনি বললেন, বাইরে যাও এবং আসসালামু আলাইকুম বলে ভেতরে এসো। [আবু দাউদ ৫১৭৬]

অনুমতি লাভের জন্য সালাম দেয়া: অনুমতি নেয়ার জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় জোর তিনবার ডাক দেয়ার সীমা নির্দেশ করেছেন এবং বলেছেন যদি তিনবার ডাক দেয়ার পরও জবাব না পাওয়া যায়, তাহলে ফিরে যাও। আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে আসলেন এবং তিনবার সালাম দিলেন। কিন্তু উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কোনো উত্তর না করায় তিনি ফিরে চললেন। তখন লোকেরা বলল: আবু মূসা ফিরে যাচ্ছে। উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, তাকে ফিরিয়ে আন, তাকে ফিরিয়ে আন। ফিরে আসার পর উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাকে জিজ্ঞেস করলেন: তুমি ফিরে যাচ্ছিলে কেন? আমরা কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আবু মূসা বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, ‘অনুমতি তিন বার, যদি তাতে অনুমতি দেয় ভাল, নতুবা ফিরে যাও।’ [বুখারী ৬২৪৫, মুসলিম ২১৫৪] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এ পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। একবার তিনি সা‘দ ইবন উবাদার বাড়ীতে গেলেন এবং আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলে দু’বার অনুমতি চাইলেন। কিন্তু ভেতর থেকে জবাব এলো না। তৃতীয় বার জবাব না পেয়ে ফিরে গেলেন। সা‘দ ভেতর থেকে দৌড়ে এলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি আপনার আওয়াজ শুনছিলাম। কিন্তু আমার মন চাচ্ছিল আপনার মুবারক কণ্ঠ থেকে আমার জন্য যতবার সালাম ও রহমতের দো‘আ বের হয় ততই ভালো, তাই আমি খুব নীচু স্বরে জবাব দিচ্ছিলাম। [আবু দাউদ ৫১৮৫ ও আহমাদ ৩/১৩৮]

চার. অনুরূপভাবে কেউ যদি সফর হতে ফিরে আসে তবে আপন স্ত্রীর কাছে যাওয়ার আগেও অনুমতি নিয়ে যাওয়া সুন্নত। যাতে তাকে অপ্ৰস্তুত অবস্থায় না পায়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন হাদীস এসেছে। [দেখুন- বুখারী ৫০৭৯, মুসলিম ৭১৫]
Les exégèses en arabe:
 
Traduction des sens Verset: (27) Sourate: AN-NOUR
Lexique des sourates Numéro de la page
 
Traduction des sens du Noble Coran - Traduction en bengali - Abû Bakr Zakariyâ - Lexique des traductions

ترجمة معاني القرآن الكريم إلى اللغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا.

Fermeture