Traduction des sens du Noble Coran - Traduction en bengali - Abû Bakr Zakariyâ * - Lexique des traductions


Traduction des sens Verset: (103) Sourate: AL-AN’ÂM
لَّا تُدۡرِكُهُ ٱلۡأَبۡصَٰرُ وَهُوَ يُدۡرِكُ ٱلۡأَبۡصَٰرَۖ وَهُوَ ٱللَّطِيفُ ٱلۡخَبِيرُ
দৃষ্টিসমূহ তাঁকে আয়ত্ব করতে পারে না [১], অথচ তিনি সকল দৃষ্টিকে আয়ত্ব করেন [২] এবং তিনি সূক্ষদর্শী , সম্যক অবহিত [৩]।
[১] আলোচ্য আয়াতে ابصار শব্দটি بصر এর বহুবচন। এর অর্থ দৃষ্টি এবং দৃষ্টিশক্তি। ادراك শব্দের অর্থ পাওয়া, ধরা, বেষ্টন করা। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা এস্থলে ادراك শব্দের অর্থ বেষ্টন করা বর্ণনা করেছেন। এতে আয়াতের অর্থ হয় এই যে, জিন, মানব, ফিরিশ্‌তা ও যাবতীয় জীব-জন্তুর দৃষ্টি একত্রিত হয়েও আল্লাহর সত্তাকে বেষ্টন করে দেখতে পারে না। পক্ষান্তরে আল্লাহ্ তা'আলা সমগ্র সৃষ্টজীবের দৃষ্টিকে পূর্ণরূপে দেখেন এবং সবাইকে বেষ্টন করে দেখেন। এ সংক্ষিপ্ত আয়াতে আল্লাহ তা'আলার দুটি বিশেষ গুণ বর্ণিত হয়েছে। (এক) সমগ্র সৃষ্ট জগতে কারও দৃষ্টি বরং সবার দৃষ্টি একত্রিত হয়েও তাঁর সত্তাকে বেষ্টন করতে পারে না। (দুই) তাঁর দৃষ্টি সমগ্র সৃষ্টিজগতকে পরিবেষ্টনকারী। জগতের অণু-কণা পরিমাণ বস্তুও তাঁর দৃষ্টির অন্তরালে নয়। সর্বাবস্থায় এ জ্ঞান এবং জ্ঞানগত পরিবেষ্টনও আল্লাহ্ তা'আলারই বৈশিষ্ট। তাঁকে ছাড়া কোনো সৃষ্ট বস্তুর পক্ষে সমগ্র সৃষ্টজগত ও তার অণু-পরমাণুর এরূপ জ্ঞান লাভ কখনো হয়নি এবং হতে পারেও না। কেননা, এটা আল্লাহ তা'আলার বিশেষ গুণ।

[২] মানুষ আল্লাহ তা'আলাকে দেখতে পাবে কিনা। এ মাস’আলার দুটি দিক আছে: দুনিয়াতে তাঁকে কেউ দেখা সম্ভব কিনা? এ মাস’আলারও দু'টি দিক রয়েছে, (এক) তাকে স্বপ্নে দেখা। এ ধরণের দেখা সম্ভব বলেই অনেকে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা তাদের মতের স্বপক্ষে দলীল হিসাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক আল্লাহকে দেখার উপর বর্ণিত বিভিন্ন হাদীস উল্লেখ করেন। দুই, দুনিয়াতে সরাসরি চোখ দ্বারা আল্লাহকে দেখা। দুনিয়াতে এ ধরণের দেখা কখনই সম্ভব নয়। এর দলীল হলো: মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহকে দেখতে চেয়ে বলেছিলেন: (رَبِّ اَرِنِيْ) “হে রব! আমাকে দেখা দিন", তখন উত্তরে বলা হয়েছিলঃ "(لَنْ تَرٰىنِيْ) "আপনি আমাকে দেখতে পাবেন না।” [সূরা আল-আরাফ ১৪৩] আল্লাহর নবী হয়েও যখন মূসা আলাইহিস সালাম এ উত্তর পেয়েছিলেন, তখন অন্য কোনো জিন ও মানুষের সাধ্য কি যে দুনিয়ার এ চোখ দিয়ে আল্লাহকে দেখবে! আখেরাতে ঈমানদারগণ আল্লাহ তা'আলাকে দেখতে পাবে। আখেরাতে বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তা'আলার সাক্ষাত ঘটবে- হাশরে অবস্থানকালেও এবং জান্নাতে পৌঁছার পরও। এটাই আহলে-সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা ও বিশ্বাস। এর স্বপক্ষে দলিল প্রমাণাদি অনেক, নীচে তার কিছু উল্লেখ করা হল:

কুরআন থেকে :

আল্লাহর বাণী: (وُجُوْهٌ يَّوْمَىِٕذٍ نَّاضِرَةٌ - اِلٰى رَبِّهَا نَاظِرَةٌ) “সেদিন কিছু চেহারা হবে সজীব ও প্রফুল্ল। তারা স্বীয় রবকে দেখতে থাকবে।” [সূরা আল-কিয়ামাহ ২২-২৩] আল্লাহর বাণী: (لَهُمْ مَّا يَشَاءُوْنَ فِيْهَا وَلَدَيْنَا مَزِيْدٌ) “তারা তাতে যা চাইবে তাই পাবে, আর আমাদের কাছে আছে আরো কিছু বাড়তি।” [সূরা কাফ ৩৫] এ আয়াতের তাফসীরে আলী ও আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, ‘বাড়তি বিষয় হলো, আল্লাহর চেহারার দিকে তাকানোর সৌভাগ্য।’ আল্লাহ তাআলা কুরআনের অন্যত্র বলেছেন: (كَلَّآ اِنَّهُمْ عَنْ رَّبِّهِمْ يَوْمَىِٕذٍ لَّمَحْجُوْبُوْنَ) “কাফিররা সেদিন স্বীয় রবের সাক্ষাত থেকে বঞ্চিত থাকবে।” [সূরা আল-মুতাফফিফীন ১৫] এর দ্বারা কাফির ও অবিশ্বাসীরা সেদিনও সাজা হিসেবে আল্লাহকে দেখার গৌরব থেকে বঞ্চিত থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ আয়াতের দ্বারা এটা স্পষ্ট হল যে, যারা ঈমানদার তাদের এ শাস্তি হবে না। অর্থাৎ তারা আল্লাহকে দেখতে পাবে। আল্লাহর বাণী: (لِلَّذِيْنَ اَحْسَـنُوا الْحُسْنٰى وَزِيَادَةٌ) “যারা সৎকাজ করেছে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, তদোপরি তার উপর রয়েছে কিছু বাড়তি।” [সূরা ইউসুফ ২৬] এ আয়াতের তাফসীরে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সরাসরি আল্লাহকে দেখা বলে সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে, যার আলোচনা পরবর্তী বর্ণনায় হাদীস থেকে আসছে।

সহীহ হাদীস থেকে :

বিভিন্ন সহীহ হাদীসে ঈমানদারদের জন্যে আল্লাহ তাআলাকে দেখার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে, সে সমস্ত হাদীস মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইমাম দারাকুতনি এ সংক্রান্ত বিশটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে ইমাম আবুল কাসিম লালাকাঈ ত্রিশটির মত হাদীস বর্ণনা করেছেন। নীচে এর কয়েকটি উল্লেখ করা হলো: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করার পর আল্লাহ বলবেন: তোমরা যেসব নিয়ামত প্রাপ্ত হয়েছ, এগুলোর চেয়ে বৃহৎ আরো কোনো নিআমতের প্রয়োজন হলে বল, আমি তাও দিব। জান্নাতীরা বলবে: ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন এবং জান্নাতে স্থান দিয়েছেন! এর বেশী আমরা আর কী চাইব। তখন মধ্যবর্তী পর্দা সরিয়ে নেয়া হবে এবং সবার সাথে আল্লাহর সাক্ষাত হবে। এটিই হবে জান্নাতের সর্বশ্রেষ্ঠ নিআমত।” [সহীহ মুসলিম ১৮১] জান্নাতীদের জন্য আল্লাহর সাক্ষাতই হবে সর্ববৃহৎ নিআমত। অন্য এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক চন্দ্রালোকিত রাতে সাহাবীগণের সমভিব্যাহারে উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি চাদের দিকে দৃষ্টি পাত করে বললেন, ‘তোমরা স্বীয় রবকে এ চাদের ন্যায় চাক্ষুষ দেখতে পাবে।’ [বুখারী ৫৫৪, ৭৪৩৫, ৭৪৩৭] বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন: [ইবন আবিল ইয আল-হানাফী, শারহুল আকীদাতিত তাহাভীয়্যা]

[৩] আরবী অভিধানে لطيف শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়: (এক) দয়ালু, (দুই) সূক্ষ্ম বস্তু যা ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অনুভব করা বা জানা যায় না। خبير শব্দের অর্থ খবর রাখে। এখানে অর্থ হবে- তিনি খবর রাখেন। সমগ্র সৃষ্টিজগতের কণা পরিমাণ বস্তুও তাঁর জ্ঞান ও খবরের বাইরে নয়। এখানে لطيف শব্দের অর্থ দয়ালু নেয়া হলে আলোচ্য বাক্যে এদিকে ইঙ্গিত হবে যে, তিনি যদিও আমাদের প্রত্যেক কথা ও কাজের খবর রাখেন এবং এজন্যে আমাদের গোনাহর কারণে আমাদেরকে পাকড়াও করতে পারেন, কিন্তু যেহেতু তিনি দয়ালুও, তাই সব গোনাহর কারণেই পাকড়াও করেন না। [সিফাতুল্লাহিল ওয়ারিদা ফিল কিতাবি ওয়াসসুন্নাতি]
Les exégèses en arabe:
 
Traduction des sens Verset: (103) Sourate: AL-AN’ÂM
Lexique des sourates Numéro de la page
 
Traduction des sens du Noble Coran - Traduction en bengali - Abû Bakr Zakariyâ - Lexique des traductions

ترجمة معاني القرآن الكريم إلى اللغة البنغالية ترجمها د. أبو بكر محمد زكريا.

Fermeture