‘হে আমার সম্প্রদায়! এর পরিবর্তে আমি তোমাদের কাছে কোনো ধন-সম্পদ চাই না [১]। আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্রই কাছে। যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়াও আমার কাজ নয়; তারা নিশ্চিতভাবে তাদের রবের সাক্ষাত লাভ করবে [২]। কিন্তু আমি তো দেখছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়।’
[১] আমি একজন নিঃস্বার্থ উপদেশদাতা নিজের কোনো লাভের জন্য নয় বরং তোমাদেরই ভালোর জন্য এত কঠোর পরিশ্রম ও দুঃখ-কষ্ট সহ্য করছি। এ সত্যের দাওয়াত দেওয়ার, এর জন্য প্রাণান্ত পরিশ্রম করার ও বিপদ-মুসিবতের সম্মুখীন হওয়ার পেছনে আমার কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ সক্রিয় আছে এমন কথা তোমরা প্রমাণ করতে পারবে না।
[২] অর্থাৎ তাদের রবই তাদের মর্যাদা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। তাঁর সামনে যাওয়ার পরই তাদের সবকিছু প্রকাশিত হবে। তারা যদি সত্যিকার মহামূল্যবান রত্ন হয়ে থাকে তাহলে তোমাদের ছুড়ে ফেলার কারণে তারা তুচ্ছ মূল্যহীন পাথরে পরিণত হয়ে যাবে না। আর যদি তারা মূল্যহীন পাথরই হয়ে থাকে তাহলে তাদের মালিকের ইচ্ছা, তিনি তাদেরকে যেখানে চান ছুড়ে ফেলতে পারেন। মোটকথা, এ আয়াতে কওমের লোকদের মূর্খতা প্রসূত ধ্যান ধারণা খণ্ডন করার জন্য প্রথমতঃ বলা হয়েছে যে, কারো ধন-সম্পদের প্রতি নবী রাসূলগণ দৃষ্টিপাত করেন না। তারা নিজেদের খেদমত ও তালীমের বিনিময়ে কারো থেকে কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন না। তাদের প্রতিদান একমাত্র আল্লাহ তা'আলারই দায়িত্বে। কাজেই, তাদের দৃষ্টিতে ধনী-দরিদ্র এক সমান। তোমরা এমন অহেতুক আশংকা পোষণ করো না যে, আমরা ধন-সম্পদশালীরা যদি ঈমান আনয়ন করি তবে হয়ত আমাদের বিত্ত সম্পদে ভাগ বসানো হবে। দ্বিতীয়তঃ তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তোমরা ঈমান আনার পূর্বশর্ত হিসাবে চাপ সৃষ্টি করছ যেন আমি দরিদ্র ঈমানদারগণকে তাড়িয়ে দেই। কিন্তু আমার দ্বারা তা কখনো সম্ভবপর নয়। কারণ, আর্থিক দিক দিয়ে তারা দরিদ্র হলেও আল্লাহর দরবারে তাদের প্রবেশাধিকার ও উচ্চমর্যাদা রয়েছে। এমন লোকদেরকে তাড়িয়ে দেয়া অন্যায় ও অসঙ্গত। আল্লাহ তা'আলা তাঁর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও একই ধরনের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, আপনি অবশ্যই এ সমস্ত দরিদ্র মুমিনদের তাড়িয়ে দিবেন না। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করার চিন্তাও করবেন না। [দেখুন, সূরা আল-আনআম ৫২, আল-কাহাফ ২৮] আল্লাহ্ তা'আলা মূলতঃ দরিদ্র মুমিনদেরকে ঈমান আনার তাওফীক দেয়ার মাধ্যমে পরীক্ষা করতে চেয়েছেন যে, কারা তাদের আত্মম্ভরিতা ও অহংকার ত্যাগ করে হক্ক কবুল করতে পারে, আর কারা তা না পেরে বলতে থাকে যে, আল্লাহ কি তাদের মত লোকদের ছাড়া আর কাউকে দেখতে পেলেন না? মহান আল্লাহ বলেন, “আমি এভাবে তাদের একদলকে অন্যদল দ্বারা পরীক্ষা করেছি যেন তারা বলে, “আমাদের মধ্যে কি এদের প্রতিই আল্লাহ অনুগ্রহ করলেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞ লোকদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত নন?” [সূরা আল-আনআম ৫৩]
‘আর আমি তোমাদেরকে বলি না, ‘আমার কাছে আল্লাহ্র ধন-ভাণ্ডার আছে,’ আর না আমি গায়েব জানি [১] এবং আমি এটাও বলি না যে, আমি ফিরিশতা [২]। তোমাদের দৃষ্টিতে যারা হেয় তাদের সম্মন্ধে আমি বলি না যে, আল্লাহ্ তাদেরকে কখনই মঙ্গল দান করবেন না; তাদের অন্তরে যা আছে তা আল্লাহ্ অধিক অবগত। (যদি এরূপ উক্তি করি) তা হলে নিশ্চয় আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হব [৩]।‘
[১] আর আমি গায়েবও জানিনা যে, তোমাদের গোপন ও অব্যক্ত কথা ও কাজ বলে দেব। [সা’দী] আল্লাহ্ যা জানিয়েছেন সেটার বাইরে তো আমি তোমাদেরকে গায়েবের কোনো সংবাদ জানাতে পারবো না। [ইবন কাসীর] সম্ভবতঃ উক্ত জাহেলদের আরো বিশ্বাস ছিল যে, যারা সত্যিকার নবী, তারা নিশ্চয়ই গায়েবের খবর জানবেন। নূহ আলাইহিস সালামের উক্তি দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নবুওয়াত ও রেসালতের জন্য গায়েবের ইলম অপরিহার্য নয়। আর তা হবেই বা কি করে? গায়েবের ইলম তো একমাত্র আল্লাহ তা'আলার বিশেষ ছিফাত বা বৈশিষ্ট্য। কোনো নবী, অলী বা ফেরেশতা সেটার অংশীদার হতে পারে না। তাদেরকে এ গুণে গুনাম্বিত মনে করা স্পষ্ট শির্কী কাজ।
[২] বিরোধী পক্ষ তাঁর ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করে বলেছিল, তোমাকে তো আমরা আমাদেরই মত একজন মানুষ দেখছি। তাদের আপত্তির জবাবে একথা বলা হয়েছিল। এখানে নূহ আলাইহিসসালাম বলেন, যথার্থই আমি একজন মানুষ। একজন মানুষ হওয়া ছাড়া নিজের ব্যাপারে তো আমি আর কিছুই দাবী করিনি। আমি তো কখনো ফেরেশতা হওয়ার দাবী করিনি। আমার বৈশিষ্ট্য এই যে, আমাকে মু'জিযা দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। [ইবন কাসীর] আমি কখনও আমার নিজেকে আমার মর্যাদার উপরে অন্য কারো মর্যাদার বলে দাবী করিনি। আমাকে আল্লাহ্ যে মর্যাদা দিয়েছেন আমি তো সেটাই বলি। কারও উপর আমি মনগড়া কোনো কথাও বলি না। [সা'দী]
[৩] অর্থাৎ যাদেরকে তোমরা হেয় গণ্য করছ, তাদের সম্পর্কে আমি এটা বলি না যে, তাদের রবের কাছে তাদের ঈমানের কোনো সওয়াব নেই। কারণ, আল্লাহই জানেন তাদের ঈমানের অবস্থা। যদি তারা প্রকাশ্যে যেভাবে ঈমানদার তেমনি সত্যিকার অর্থেই ঈমানদার হয় তবে তাদের জন্য রয়েছে উত্তম প্রতিদান। যদি তারা ঈমানদার হওয়ার পরও কেউ তাদের সাথে খারাপ কথা বলে, তবে অবশ্যই সে যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং এমন কথা বলে যাতে তার কোনো জ্ঞান নেই। [ইবন কাসীর]
তার বলল, ‘হে নূহ! তুমি তো আমাদের সাথে বিতণ্ডা---তুমি বিতণ্ডা করেছ আমাদের সাথে অতি মাত্রায়; কাজেই তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যার ওয়াদা তুমি করছ তা আমাদের কাছে নিয়ে আস।’
‘আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে চান [১]। তিনিই তোমাদের রব এবং তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ যদি তোমাদের হঠকারিতা, দুর্মতি এবং সদাচারে অনাগ্রহ দেখে এ ফায়সালা করে থাকেন যে, তোমাদের সঠিক পথে চলার সুযোগ আর দেবেন না এবং যেসব পথে তোমরা উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়াতে চাও সেসব পথে তোমাদের ছেড়ে দেবেন, তাহলে এখন আর তোমাদের কল্যাণের জন্য আমার কোন প্রচেষ্টা সফলকাম হতে পারে না। আল্লাহ্ তা'আলা নুহ আলাইহিসসালামকে প্রায় এক হাজার বছরের দীর্ঘ জীবন দান করেছিলেন। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত প্রাণপন চেষ্টা করা সত্ত্বেও তারা যখন ঈমান আনল না তখন তিনি আল্লাহ রাববুল ইজ্জতের দরবারে তাদের সম্পর্কে ফরিয়াদ করলেন- “নিশ্চয় আমি আমার জাতিকে দিবা রাত্রি দাওয়াত দিয়েছি। কিন্তু আমার দাওয়াত তাদের শুধু সত্যপথ থেকে পলায়নের প্রবণতাই বৃদ্ধি করেছে।" [সূরা নূহ ৫-৬] সুদীর্ঘকাল যাবত অসহনীয় কষ্ট-ক্লেশ ভোগ করার পর তিনি দো’আ করলেন, “হে আল্লাহ আমাকে সাহায্য করুন, কারণ তারা আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে।" [সুরা আল মুমিনূন ৩৯]
নাকি তারা বলে যে, তিনি এটা রচনা করেছেন? বলুন, ‘আমি যদি এটা রচনা করে থাকি, তবে আমিই আমার অপরাধের জন্য দায়ী হব। তোমরা যে অপরাধ করছ তা থেকে আমি দায়মুক্ত [১]।‘
[১] কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, এটিও নূহ আলাইহিস সালামের সাথে তার কাওমের কথা, যার ধারাবাহিকতা আগে থেকে চলে আসছিল। [বাগভী; কুরতুবী] তবে অন্যান্য মুফাসসিরদের মতে, এ বাক্যটুকু আগের বক্তব্যের মাঝখানে এসেছে আগের কাহিনীকে তাগিদ দেয়ার জন্য। [ইবন কাসীর] মনে হচ্ছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ থেকে নূহ আলাইহিস্সালামের এ কাহিনী শুনে বিরোধীরা আপত্তি করে থাকবে যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উপর প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে নিজেই এ কাহিনী বানিয়ে পেশ করছে। যেসব আঘাত সে সরাসরি আমাদের ওপর করতে চায় না সেগুলোর জন্য সে একটি কাহিনী তৈরী করেছে। এ কারণে বক্তব্যের ধারাবাহিকতা ভেংগে এ বাক্যে তাদের আপত্তির জবাব দেয়া হয়েছে। [কুরতুবী]
বস্তুতঃ কোনো একটি বক্তব্য নিরেট সত্য অথবা স্রেফ একটি বানোয়াট কাহিনী উভয়ই হতে পারে। এ উভয় রকমের সম্ভাবনা যেখানে সমান সমান, সে ক্ষেত্রে বুদ্ধিমান ব্যক্তির কাজ হবে তাকে একটি যথার্থ সত্য কথা মনে করে তার শিক্ষণীয় দিক থেকে ফায়দা হাসিল করা। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোনো প্রকার সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই এ মর্মে দোষারোপ করে যে, বক্তা নিছক তার ওপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য এ মনগড়া কাহিনী রচনা করেছে তাহলে সে হবে নেহাতই একজন কু-ধারণা পোষক ও বক্র দৃষ্টির অধিকারী ব্যক্তি। এ কারণে বলা হয়েছে, যদি আমি এ কাহিনী তৈরী করে থাকি তাহলে আমার অপরাধের জন্য আমি দায়ী; কিন্তু তোমরা যে অপরাধ করছো তা তো যথাস্থানে অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। তার জন্য আমি নই, তোমরাই দায়ী হবে এবং তোমরাই পাকড়াও হবে। তোমরা যে অন্যায় করে গেলে তার কারণে তোমাদের পাকড়াও করা হবে, তাই তোমাদের অপরাধ থেকে নিজেকে বিমুক্ত ঘোষণা করছি। আমি কখনও বলব না যে, এটা বানোয়াট বা রটনা। কেননা যারা এর উপর মিথ্যারোপ করবে আল্লাহর কাছে তাদের জন্য কেমন শাস্তি নির্ধারিত আছে তা আমি জানি। [ইবন কাসীর]
আর নূহের প্রতি অহী করা হয়েছিল, ‘যারা ঈমান এনেছে তারা ছাড়া আপনার সম্প্রদায়ের অন্য কেউ কখনো ঈমান আনবে না। কাজেই তারা যা করে তার জন্য আপনি চিন্তিত হবেন না।’
‘আর আপনি আমাদের চাক্ষুষ তত্ত্বাবধানে ও আমাদের ওহী অনুযায়ী নৌকা নির্মাণ করুন [১] এবং যারা যুলুম করেছে তাদের সম্পর্কে আপনি আমাকে কোনো আবেদন করবেন না; তারা তো নিমজ্জিত হবে [২]।‘
[১] এ আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ্ তা'আলার চক্ষু রয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকীদাও তাই। [মাজমু ফাতাওয়া ৫/৯০] এ আয়াত থেকে অনেক মুফাসসিরই এটা বুঝেছেন যে, নূহ আলাইহিসসালামই সর্বপ্রথম নৌকা তৈরী করেছিলেন। [আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর] কেননা পরবর্তী আয়াতে ইরশাদ হয়েছে: “আর আপনি নৌকা তৈরী করুন আমার চাক্ষুষ তত্ত্বাবধানে ও অহী অনুসারে।” এতে করে বুঝা গেল যে, নৌকা তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণাদি ও নির্মাণ কৌশল আল্লাহ তাকে অহীর মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছিলেন।
[২] আয়াতে তাদের শোচনীয় পরিণতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাদের সবাইকে পানিতে ডুবিয়ে মারা হবে। সুতরাং আপনি আমার কাছে তাদের কারও জন্য ক্ষমা চাইবেন না। তাদের কাউকে ক্ষমা করতে বলবেন না। তারা তাদের অর্জিত কুফরির কারণে তুফানে ডুবে মরবে। [তাবারী] এরূপ অবস্থায়ই নূহ আলাইহিসসালামের মুখে তার কাওম সম্পর্কে উচ্চারিত হয়েছিল: “হে আমার রব! যমীনের কাফিরদের মধ্য থেকে কোনো গৃহবাসীকে অব্যাহতি দেবেন না, ‘আপনি তাদেরকে অব্যাহতি দিলে তারা আপনার বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করবে এবং জন্ম দিতে থাকবে শুধু দুস্কৃতিকারী ও কাফির। [সূরা নূহ ২৬-২৭] এই বদ-দো’আ আল্লাহর দরবারে কবুল হল। যার ফলে সমস্ত কওম ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।
Contents of the translations can be downloaded and re-published, with the following terms and conditions:
1. No modification, addition, or deletion of the content.
2. Clearly referring to the publisher and the source (QuranEnc.com).
3. Mentioning the version number when re-publishing the translation.
4. Keeping the transcript information inside the document.
5. Notifying the source (QuranEnc.com) of any note on the translation.
6. Updating the translation according to the latest version issued from the source (QuranEnc.com).
7. Inappropriate advertisements must not be included when displaying translations of the meanings of the Noble Quran.
検索結果:
API specs
Endpoints:
Sura translation
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/sura/{translation_key}/{sura_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified sura (by its number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114)
Returns:
json object containing array of objects, each object contains the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".
GET / https://quranenc.com/api/v1/translation/aya/{translation_key}/{sura_number}/{aya_number} description: get the specified translation (by its translation_key) for the speicified aya (by its number sura_number and aya_number)
Parameters: translation_key: (the key of the currently selected translation) sura_number: [1-114] (Sura number in the mosshaf which should be between 1 and 114) aya_number: [1-...] (Aya number in the sura)
Returns:
json object containing the "sura", "aya", "translation" and "footnotes".