クルアーンの対訳 - ベンガル語対訳 - Abu Bakr Zakaria * - 対訳の目次


対訳 章: 識別章   節:

সূরা আল-ফোরকান

تَبَارَكَ ٱلَّذِي نَزَّلَ ٱلۡفُرۡقَانَ عَلَىٰ عَبۡدِهِۦ لِيَكُونَ لِلۡعَٰلَمِينَ نَذِيرًا
কত বরকতময় তিনি [১]! যিনি তাঁর বান্দার উপর ফুরকান নাযিল করেছেন, সৃষ্টিজগতের জন্য [২] সতর্ককারী হওয়ার জন্য।
[১] تَبَارَكَ শব্দটি بركة থেকে উদ্ভূত। এর পূর্ণ অর্থ এক শব্দে তো দূরের কথা এক বাক্যে বর্ণনা করাও কঠিন। এর শব্দমূল রয়েছে ب-ر-ك অক্ষরত্রয়। এ থেকে بر كة ও بروك দু’টি ধাতু নিষ্পন্ন হয়। তন্মধ্যে প্রথম শব্দ بركة শব্দের মধ্যে রয়েছে কল্যাণ, বৃদ্ধি, সমৃদ্ধি, বিপুলতা ও প্রাচুর্যের ধারণা। আর بروك এর মধ্যে স্থায়িত্ব, দৃঢ়তা, অটলতা ও অনিবার্যতার ধারণা রয়েছে। তারপর এ ধাতু থেকে যখন تبارك এর ক্রিয়াপদ তৈরী করা হয় তখন تفاعل এর বৈশিষ্ট্য হিসেবে এর মধ্যে বাড়াবাড়ি, অতিরঞ্জন ও পূর্ণতা প্রকাশের অর্থ শামিল হয়ে যায়। এ অবস্থায় এর অর্থ দাঁড়ায় চরম প্রাচুর্য, বর্ধমান প্রাচুর্য ও চূড়ান্ত পর্যায়ের স্থায়িত্ব। আল্লাহ্‌র জন্য تبارك শব্দটি এক অর্থে নয় বরং বহু অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন- এক. মহা অনুগ্রহকারী ও সর্বজ্ঞ, কল্যাণকারী। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, প্রত্যেক কল্যাণ ও বরকত আল্লাহ্‌ তা‘আলার পক্ষ থেকে। তিনি নিজের বান্দাকে ফুরকানের মহান নিয়ামত দান করে সারা দুনিয়াকে জানিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। দুই. বড়ই মর্যাদাশালী ও সম্মানীয়। কারণ, পৃথিবী ও আকাশে তাঁরই রাজত্ব চলছে। তিন. বড়ই পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন। কারণ, তাঁর সত্তা সকল প্রকার শির্কের গন্ধমুক্ত। তাঁর সমজাতীয় কেউ নেই। ফলে আল্লাহ্‌র সত্তার সার্বভৌমত্ত্বে তাঁর কোনো নজির ও সমকক্ষ নেই। তাঁর কোনো ধ্বংস ও পরিবর্তন নেই। কাজেই তাঁর স্থলাভিষিক্তের জন্য কোনো পুত্রের প্রয়োজন নেই। চার. বড়ই উন্নত ও শ্রেষ্ঠ। কারণ, সমগ্র রাজত্ব তাঁরই কর্তৃত্বাধীন। তাঁর ক্ষমতায় অংশীদার হওয়ার যোগ্যতা ও মর্যাদা কারো নেই। পাঁচ. শক্তির পূর্ণতার দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ। কারণ, তিনি বিশ্ব-জাহানের প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টিকারী ও তার ক্ষমতা নির্ধারণকারী। [দেখুন, তাবারী, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]

[২] সারা বিশ্ববাসীর জন্য সতর্ককারী হওয়ার যে কথা এখানে বলা হয়েছে এ থেকে জানা যায় যে, কুরআনের দাওয়াত ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাত কোনো একটি দেশের জন্য নয় বরং সারা দুনিয়ার জন্য এবং কেবলমাত্র নিজেরই যুগের জন্য নয় বরং ভবিষ্যতের সকল যুগের জন্য। এ বিষয়বস্তুটি কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বিবৃত হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে, “হে মানুষেরা! আমি তোমাদের সবার প্রতি আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে প্রেরিত।” [সূরা আল-আ‘রাফ ১৫৮] আরো এসেছে, “আমার কাছে এ কুরআন পাঠানো হয়েছে যাতে এর মাধ্যমে আমি তোমাদের এবং যাদের কাছে এটা পৌঁছে যায় তাদের সতর্ক করে দেই।” [সূরা আল-আন‘আম ৯] আরো বলা হয়েছে, “আমরা আপনাকে সমগ্ৰ মানব জাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী করে পাঠিয়েছি।” [সূরা আস-সাবা ২৮] অন্য আয়াতে এসেছে, “আর আমরা আপনাকে সারা দুনিয়াবাসীর জন্য রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি।” [সূরা আল-আম্বিয়া ১০৭] এ বিষয়বস্তুটিকে আরো সুস্পষ্টভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীসে বার বার বর্ণনা করেছেন: তিনি বলেছেন, “আমাকে লাল-কালো সবার কাছে পাঠানো হয়েছে।” [মুসনাদে আহমাদ ১/৩০১] আরো বলেছেন, “প্রথমে একজন নবীকে বিশেষ করে তার নিজেরই জাতির কাছে পাঠানো হতো এবং আমাকে সাধারণভাবে সমগ্র মানব জাতির কাছে পাঠানো হয়েছে।” [বুখারী ৩৩৫, ৪৩৮, মুসলিম ৫২১] তিনি আরো বলেন, “আমাকে সমস্ত সৃষ্টির কাছে পাঠানো হয়েছে এবং আমার আগমনে নবীদের আগমনের ধারাবাহিকতা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।” [মুসলিম ৫২৩]
アラビア語 クルアーン注釈:
ٱلَّذِي لَهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَلَمۡ يَتَّخِذۡ وَلَدٗا وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ شَرِيكٞ فِي ٱلۡمُلۡكِ وَخَلَقَ كُلَّ شَيۡءٖ فَقَدَّرَهُۥ تَقۡدِيرٗا
যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের সার্বভৌমত্বের অধিকারী; তিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি; সার্বভৌমত্বে তাঁর কোনো শরীক নেই। তিনি সবকিছু সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তা নির্ধারণ করেছেন যথাযথ অনুপাতে।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةٗ لَّا يَخۡلُقُونَ شَيۡـٔٗا وَهُمۡ يُخۡلَقُونَ وَلَا يَمۡلِكُونَ لِأَنفُسِهِمۡ ضَرّٗا وَلَا نَفۡعٗا وَلَا يَمۡلِكُونَ مَوۡتٗا وَلَا حَيَوٰةٗ وَلَا نُشُورٗا
আর তারা তাঁর পরিবর্তে ইলাহরূপে গ্রহণ করেছে অন্যদেরকে যারা কিছুই সৃষ্টি করে না, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং এবং তারা নিজেদের অপকার কিংবা উপকার করার ক্ষমতা রাখে না। আর মৃত্যু, জীবন ও উত্থানের উপরও কোনো ক্ষমতা রাখে না।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّآ إِفۡكٌ ٱفۡتَرَىٰهُ وَأَعَانَهُۥ عَلَيۡهِ قَوۡمٌ ءَاخَرُونَۖ فَقَدۡ جَآءُو ظُلۡمٗا وَزُورٗا
আর কাফেররা বলে, ‘এটা মিথ্যা ছাড়া কিছুই নয়, সে এটা রটনা করেছে এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক তাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে।’ সুতরাং অবশ্যই কাফেররা যুলুম ও মিথ্যা নিয়ে এসেছে।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَالُوٓاْ أَسَٰطِيرُ ٱلۡأَوَّلِينَ ٱكۡتَتَبَهَا فَهِيَ تُمۡلَىٰ عَلَيۡهِ بُكۡرَةٗ وَأَصِيلٗا
তারা আরও বলে, ‘এগুলো তো সে কালের উপকথা, যা সে লিখিয়ে নিয়েছে; তারপর এগুলো সকাল-সন্ধ্যা তার কাছে পাঠ করা হয়।’
アラビア語 クルアーン注釈:
قُلۡ أَنزَلَهُ ٱلَّذِي يَعۡلَمُ ٱلسِّرَّ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا
বলুন, ‘এটা তিনিই নাযিল করেছেন যিনি আসমানসমূহ ও যমীনের সমুদয় রহস্য জানেন; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَالُواْ مَالِ هَٰذَا ٱلرَّسُولِ يَأۡكُلُ ٱلطَّعَامَ وَيَمۡشِي فِي ٱلۡأَسۡوَاقِ لَوۡلَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مَلَكٞ فَيَكُونَ مَعَهُۥ نَذِيرًا
আরও তারা বলে, ‘এ কেমন রাসূল’ যে খাওয়া-দাওয়া করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে; তার কাছে কোনো ফিরিশতা কেন নাযিল করা হল না, যে তার সঙ্গে থাকত সতর্ককারীরূপে?’
アラビア語 クルアーン注釈:
أَوۡ يُلۡقَىٰٓ إِلَيۡهِ كَنزٌ أَوۡ تَكُونُ لَهُۥ جَنَّةٞ يَأۡكُلُ مِنۡهَاۚ وَقَالَ ٱلظَّٰلِمُونَ إِن تَتَّبِعُونَ إِلَّا رَجُلٗا مَّسۡحُورًا
‘অথবা তার কাছে কোনো ধনভাণ্ডার এসে পড়ল না কেন অথবা তার একটি বাগান নেই কেন যা থেকে সে খেতো?’ আর যালিমরা আরো বলে, ‘তোমরা তো এক জাদুগ্ৰস্ত ব্যাক্তিরই অনুসরণ করছ।’
アラビア語 クルアーン注釈:
ٱنظُرۡ كَيۡفَ ضَرَبُواْ لَكَ ٱلۡأَمۡثَٰلَ فَضَلُّواْ فَلَا يَسۡتَطِيعُونَ سَبِيلٗا
দেখুন, তারা আপনার কি উপমা দেয়! ফলে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, সুতরাং তারা পথ পেতে পারে না [১]।
[১] এ আয়াত সংক্রান্ত কিছু আলোচনা সূরা আল-ইসরায় করা হয়েছে।
アラビア語 クルアーン注釈:
تَبَارَكَ ٱلَّذِيٓ إِن شَآءَ جَعَلَ لَكَ خَيۡرٗا مِّن ذَٰلِكَ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ وَيَجۡعَل لَّكَ قُصُورَۢا
কত বরকতময় তিনি যিনি ইচ্ছে করলে আপনাকে দিতে পারেন এর চেয়ে উৎকৃষ্ট বস্তু---উদ্যানসমূহ যার পাদদেশে নদী-নালা প্রবাহিত এবং তিনি দিতে পারেন আপনাকে প্রাসাদসমূহ!
アラビア語 クルアーン注釈:
بَلۡ كَذَّبُواْ بِٱلسَّاعَةِۖ وَأَعۡتَدۡنَا لِمَن كَذَّبَ بِٱلسَّاعَةِ سَعِيرًا
বরং তারা কিয়ামতের উপর [১] মিথ্যারোপ করেছে। আর যে কিয়ামতে মিথ্যারোপ করে তার জন্য আমরা প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুন।
[১] الساعة শব্দ দ্বারা কিয়ামত বুঝানো হয়েছে। [কুরতুবী]
アラビア語 クルアーン注釈:
إِذَا رَأَتۡهُم مِّن مَّكَانِۭ بَعِيدٖ سَمِعُواْ لَهَا تَغَيُّظٗا وَزَفِيرٗا
দূর থেকে আগুন যখন তাদেরকে দেখবে তখন তারা শুনতে পাবে এর ক্রুদ্ধ গর্জন ও হুঙ্কার।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَإِذَآ أُلۡقُواْ مِنۡهَا مَكَانٗا ضَيِّقٗا مُّقَرَّنِينَ دَعَوۡاْ هُنَالِكَ ثُبُورٗا
আর যখন তাদেরকে গলায় হাত পেঁচিয়ে শৃংখলিত অবস্থায় সেটার কোনো সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা সেখানে ধ্বংস কামনা করবে।
アラビア語 クルアーン注釈:
لَّا تَدۡعُواْ ٱلۡيَوۡمَ ثُبُورٗا وَٰحِدٗا وَٱدۡعُواْ ثُبُورٗا كَثِيرٗا
বলা হবে, আজ তোমরা এক ধ্বংসকে ডেকো না, বরং বহু ধ্বংসকে ডাক।’
アラビア語 クルアーン注釈:
قُلۡ أَذَٰلِكَ خَيۡرٌ أَمۡ جَنَّةُ ٱلۡخُلۡدِ ٱلَّتِي وُعِدَ ٱلۡمُتَّقُونَۚ كَانَتۡ لَهُمۡ جَزَآءٗ وَمَصِيرٗا
বলুন, ‘এটাই শ্রেয়, না স্থায়ী জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে?’ তা হবে তাদের প্রতিদান ও প্রত্যাবর্তনস্থল।
アラビア語 クルアーン注釈:
لَّهُمۡ فِيهَا مَا يَشَآءُونَ خَٰلِدِينَۚ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ وَعۡدٗا مَّسۡـُٔولٗا
সেখানে তারা চিরকাল বসবাসরত অবস্থায় যা চাইবে তাদের জন্য তা-ই থাকবে; এ প্রতিশ্রুতি পূরণ আপনার রব-এরই দায়িত্ব।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَيَوۡمَ يَحۡشُرُهُمۡ وَمَا يَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ فَيَقُولُ ءَأَنتُمۡ أَضۡلَلۡتُمۡ عِبَادِي هَٰٓؤُلَآءِ أَمۡ هُمۡ ضَلُّواْ ٱلسَّبِيلَ
আর সেদিন তিনি একত্র করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহ্‌র পরিবর্তে যাদের ‘ইবাদাত করত তাদেরকে, তারপর তিনি জিজ্ঞেস করবেন, ‘তোমরাই কি আমার এ বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলে, না তারা নিজেরাই বিভ্ৰান্ত হয়েছিল?’
アラビア語 クルアーン注釈:
قَالُواْ سُبۡحَٰنَكَ مَا كَانَ يَنۢبَغِي لَنَآ أَن نَّتَّخِذَ مِن دُونِكَ مِنۡ أَوۡلِيَآءَ وَلَٰكِن مَّتَّعۡتَهُمۡ وَءَابَآءَهُمۡ حَتَّىٰ نَسُواْ ٱلذِّكۡرَ وَكَانُواْ قَوۡمَۢا بُورٗا
তারা বলবে, ‘পবিত্র ও মহান আপনি! আপনার পরিবর্তে আমরা অন্যকে অবিভাবকরূপে গ্রহণ করতে পারি না [১]; আপনিই তো তাদেরকে এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরকে ভোগ-সম্ভার দিয়েছিলেন; পরিণামে তারা যিকর তথা স্মরণ ভুলে গিয়েছিল এবং পরিণত হয়েছিল এক ধ্বংসপ্রাপ্ত সম্প্রদায়ে [২]।
[১] কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়বস্তুটি এসেছে। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে: ‘‘যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্র করবেন তারপর ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করবেন, এরা কি তোমাদেরই বন্দেগী করতো? তারা বলবে: পাক-পবিত্র আপনার সত্তা, আমাদের সম্পর্ক তো আপনার সাথে, এদের সাথে নয়। এরা তো জিনদের (অর্থাৎ শয়তান) ইবাদাত করতো। এদের অধিকাংশই তাদের প্রতিই ঈমান এনেছিল।” [সূরা সাবা ৪০-৪১] অনুরূপভাবে আরো বলা হয়েছে: “আর যখন আল্লাহ্‌ জিজ্ঞেস করবেন, হে মারইয়ামের ছেলে ঈসা! তুমি কি লোকদের বলেছিলে: তোমরা আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে আমাকে ও আমার মাকে উপাস্যে পরিণত করো? সে বলবে, পাক-পবিত্র আপনার সত্তা, যে কথা বলার অধিকার আমার নেই তা বলা আমার জন্য কবে শোভন ছিল? আমি তো এদেরকে এমন সব কথা বলেছিলাম যা বলার হুকুম আপনি আমাকে দিয়েছিলেন, তা হচ্ছে এই যে, আল্লাহ্‌র বন্দেগী করো, যিনি আমার রব এবং তোমাদেরও রব।” [সূরা আল-মায়েদাহ ১১৭]

[২] অর্থাৎ তারা ছিল সংকীর্ণমনা ও নীচ প্রকৃতির লোক। তিনি রিযিক দিয়েছিলেন যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। কিন্তু তারা সবকিছু খেয়ে-দেয়ে নিমকহারাম হয়ে গেছে এবং তাঁর প্রেরিত নবীগণ তাদেরকে যেসব উপদেশ দিয়েছিলেন তা ভুলে গেছে। [দেখুন-ফাতহুল কাদীর, বাগভী]
アラビア語 クルアーン注釈:
فَقَدۡ كَذَّبُوكُم بِمَا تَقُولُونَ فَمَا تَسۡتَطِيعُونَ صَرۡفٗا وَلَا نَصۡرٗاۚ وَمَن يَظۡلِم مِّنكُمۡ نُذِقۡهُ عَذَابٗا كَبِيرٗا
(আল্লাহ্‌ মুশরিকদেরকে বলবেন) ‘তোমরা যা বলতে তারা তো তা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। কাজেই তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না এবং সাহায্যও পাবে না। আর তোমাদের মধ্যে যে যুলম তথা শির্ক করবে আমরা তাকে মহাশাস্তি আস্বাদন করাব [১]।’
[১] এখানে জুলুম বলতে আল্লাহ্‌র সাথে শির্ক করাকে বুঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর, আদওয়াউল বায়ান]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَمَآ أَرۡسَلۡنَا قَبۡلَكَ مِنَ ٱلۡمُرۡسَلِينَ إِلَّآ إِنَّهُمۡ لَيَأۡكُلُونَ ٱلطَّعَامَ وَيَمۡشُونَ فِي ٱلۡأَسۡوَاقِۗ وَجَعَلۡنَا بَعۡضَكُمۡ لِبَعۡضٖ فِتۡنَةً أَتَصۡبِرُونَۗ وَكَانَ رَبُّكَ بَصِيرٗا
আর আপনার আগে আমরা যে সকল রাসূল পাঠিয়েছি তারা সকলেই তো খাওয়া-দাওয়া করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত [১] এবং (হে মানুষ!) আমরা তোমাদের এক-কে অন্যের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? আর আপনার রব তো সর্বদ্রষ্টা।
[১] কাফেরদের দ্বিতীয় কথা ছিল এই যে, তিনি নবী হলে সাধারণ মানুষের মতই পানাহার করতেন না এবং জীবিকা উপার্জনের জন্য হাট-বাজারে চলাফেরা করতেন না। এই আপত্তির ভিত্তি, অনেক কাফেরের এই ধারণা যে, আল্লাহ্‌র রাসূল মানব হতে পারেন না- ফিরিশতাই রাসূল হওয়ার যোগ্য। কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন স্থানে এর উত্তর দেয়া হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে এই উত্তর দেয়া হয়েছে যে, যেসব নবীকে তোমরা নবী ও রাসূল বলে স্বীকার কর, তারাও তো মানুষই ছিলেন; তারা মানুষের মত পানাহার করতেন এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করতেন। [কুরতুবী]
アラビア語 クルアーン注釈:
۞ وَقَالَ ٱلَّذِينَ لَا يَرۡجُونَ لِقَآءَنَا لَوۡلَآ أُنزِلَ عَلَيۡنَا ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ أَوۡ نَرَىٰ رَبَّنَاۗ لَقَدِ ٱسۡتَكۡبَرُواْ فِيٓ أَنفُسِهِمۡ وَعَتَوۡ عُتُوّٗا كَبِيرٗا
আর যারা আমাদের সাক্ষাতের আশা করে না তারা বলে, ‘আমাদের কাছে ফিরিশতা নাযিল করা হয় না কেন? অথবা আমরা আমাদের রবকে দেখি না কেন?’ তারা তো তাদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে [১] এবং তারা গুরুতর অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে।
[১] অর্থাৎ তারা নিজেদের মনে মনে নিজেদের নিয়ে বড়ই অহংকার করে। [দেখুন- ফাতহুল কাদীর, আয়সারুত-তাফাসির]
アラビア語 クルアーン注釈:
يَوۡمَ يَرَوۡنَ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةَ لَا بُشۡرَىٰ يَوۡمَئِذٖ لِّلۡمُجۡرِمِينَ وَيَقُولُونَ حِجۡرٗا مَّحۡجُورٗا
যেদিন তারা ফিরিশতাদেরকে দেখতে পাবে সেদিন অপরাধীদের জন্য কোনো সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবে, ‘রক্ষা কর, রক্ষা কর[১]।’
[১] এখানে

وَيَقُوْلُوْنَ حِجْرًامَّحْجُوْرًا

এ উক্তিটি কাদের তা নির্ধারণে দু’টি মত রয়েছে। যদি উক্তিটি ফেরেশতাদের হয় তবে এর অর্থ হবে, তারা বলবে যে, তোমাদের জন্য কোনো প্রকার সুসংবাদ হারাম করা হয়েছে অথবা বলবে, তোমাদের সাহায্য করা থেকে আমরা আল্লাহ্‌র দরবারে আশ্রয় নিচ্ছি। আর যদি উক্তিটি কাফেরদের হয় তখন অর্থ হবে, তারা ভয়ে আর্তচিৎকার দিতে দিতে বলবে, বাঁচাও বাঁচাও এবং তাদের কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করবে কিন্তু পালানোর কোনো পথ তারা পাবে না অথবা বলবে, কোনো বাধা যদি এ আযাবকে বা ফেরেশতাদেরকে আটকে রাখত! মূলত حجر শব্দের অর্থ সুরক্ষিত স্থান। محجور অর্থ এর তাকীদ। আরবী বাচনভঙ্গিতে শব্দটি তখন বলা হয়, যখন সামনে বিপদ থাকে এবং তা থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে বলা হয়: আশ্রয় চাই! আশ্রয় চাই! অর্থাৎ আমাকে এই বিপদ থেকে আশ্রয় দাও। কেয়ামতের দিন যখন কাফেররা ফিরিশতাদেরকে আযাবের সাজ-সরঞ্জাম আনতে দেখবে, তখন দুনিয়ার অভ্যাস অনুযায়ী এ কথা বলবে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে এর অর্থ حرامًامحرمًا বর্ণিত আছে। অর্থাৎ কেয়ামতের দিন যখন তারা ফিরিশতাদেরকে আযাবসহ দেখবে এবং তাদের কাছে ক্ষমা করার ও জান্নাতে যাওয়ার আবেদন করবে কিংবা অভিপ্ৰায় প্রকাশ করবে, তখন ফিরিশতারা জবাবে حِجْرًامَّحْجُوْرًا বলবে। অর্থাৎ কাফেরদের জন্য জান্নাত হারাম ও নিষিদ্ধ। [দেখুন-তাবারী, ইবন কাসীর, ফাতহুল কাদীর]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَدِمۡنَآ إِلَىٰ مَا عَمِلُواْ مِنۡ عَمَلٖ فَجَعَلۡنَٰهُ هَبَآءٗ مَّنثُورًا
আর আমরা তাদের কৃতকর্মের প্রতি অগ্রসর হয়ে সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব।
アラビア語 クルアーン注釈:
أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَنَّةِ يَوۡمَئِذٍ خَيۡرٞ مُّسۡتَقَرّٗا وَأَحۡسَنُ مَقِيلٗا
সেদিন জান্নাতবাসীদের বাসস্থান হবে উৎকৃষ্ট এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম [১]।
[১] مستقر শব্দের অর্থ হলো স্বতন্ত্র আবাসস্থল। مقيل শব্দটি قيلولة থেকে উদ্ভুত- এর অর্থ দুপুরে বিশ্রাম করার স্থান। অর্থাৎ হাশরের ময়দানে জান্নাতের হকদার লোকদের সাথে অপরাধীদের থেকে ভিন্নতর ব্যবহার করা হবে। তাদের সম্মানের সাথে বসানো হবে। হাশরের দিনের কঠিন দুপুর কাটানোর জন্য তাদের আরাম করার জায়গা দেয়া হবে। সেদিনের সব রকমের কষ্ট ও কঠোরতা হবে অপরাধীদের জন্য। সৎকর্মশীলদের জন্য নয়। [দেখুন-আদওয়াউল বায়ান, বাগভী]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَيَوۡمَ تَشَقَّقُ ٱلسَّمَآءُ بِٱلۡغَمَٰمِ وَنُزِّلَ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ تَنزِيلًا
আর সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে মেঘপুঞ্জ দ্বারা [১] এবং দলে দলে ফিরিশতাদেরকে নামিয়ে দেয়া হবে--
[১] এখানে بِالغَمَامِ এর অর্থ عَنِ الْغَمَامِ অর্থাৎ আকাশ বিদীর্ণ হয়ে তা হতে একটি হালকা মেঘমালা নীচে নামবে, যাতে ফিরিশতারা থাকবে। এই মেঘমালা চাঁদোয়ার আকারে আকাশ থেকে আসবে এবং আল্লাহ্‌ তা‘আলা বিচার-ফয়সালার জন্য হাশরের মাঠে নেমে আসবেন; আশপাশে থাকবে ফিরিশতাদের দল। এটা হবে হিসাব নিকাশ শুরু হওয়ার সময়; সূরা আল-বাকারার ২১০ নং আয়াতেও একথা বলা হয়েছে। তখন কেবল খোলার নিমিত্তই আকাশ বিদীর্ণ হবে। এটা সেই বিদারণ নয় যখন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার সময় আকাশ ও যমীনকে ধ্বংস করার জন্য হবে। কেননা আয়াতে যে মেঘমালা অবতরণের কথা বলা হয়েছে, তা দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়ার পর হবে। তখন নতুন ধরনের আসমান ও যমীন পুনরায় বহাল হয়ে যাবে। মোটকথা, আসমানসমূহ বিদীর্ণ হওয়ার পর সেগুলোর উপরস্থিত সাদা মেঘ দেখা যাবে। রাব্ববুল আলামীন যে মেঘসহ সৃষ্টিকুলের মধ্যে ফায়সালা করতে নাযিল হবেন। আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর প্রত্যেক আসমানের ফিরিশতাগণ কাতারে কাতারে দাঁড়াবে। তারপর তারা সৃষ্টিজগতকে ঘিরে রাখবে। তারা তাদের রবের নির্দেশ পালন করে যাবে। তাদের মধ্যে কেউই আল্লাহ্‌র অনুমতি ব্যতীত কোনো কথা বলবে না। যদি ফিরিশতাদেরই এ অবস্থা হবে তাহলে অন্যান্য সৃষ্টিকুলের কি অবস্থা হবে তা সহজেই অনুমেয়। [দেখুন- কুরতুবী, বাগভী, আদওয়াউল বায়ান]
アラビア語 クルアーン注釈:
ٱلۡمُلۡكُ يَوۡمَئِذٍ ٱلۡحَقُّ لِلرَّحۡمَٰنِۚ وَكَانَ يَوۡمًا عَلَى ٱلۡكَٰفِرِينَ عَسِيرٗا
সে দিন চুড়ান্ত কর্তৃত্ব হবে দয়াময়ের [১] এবং কাফেরদের জন্য সে দিন হবে অত্যন্ত কঠিন।
[১] অর্থাৎ সেখানে কেবলমাত্র একটি রাজত্বই বাকি থাকবে এবং তা হবে এ বিশ্ব-জাহানের যথার্থ শাসনকর্তা আল্লাহ্‌র রাজত্ব। [আদওয়াউল বায়ান] অন্যত্র বলা হয়েছে: “সেদিন যখন এরা সবাই প্রকাশ হয়ে যাবে, আল্লাহ্‌র কাছে এদের কোনো জিনিস গোপন থাকবে না, জিজ্ঞেস করা হবে আজ রাজত্ব কার? সবদিক থেকে জবাব আসবে, একমাত্র আল্লাহ্‌র যিনি সবার উপর বিজয়ী।” [সূরা গাফির ১৬] হাদীসে এ বিষয়বস্তুকে আরো বেশী স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ্‌ এক হাতে পৃথিবীগুলো ও অন্য হাতে আকাশসমূহ গুটিয়ে নিয়ে বলবেন, “আমিই বাদশাহ, আমিই শাসনকর্তা। এখন সেই পৃথিবীর বাদশাহরা কোথায়? কোথায় স্বৈরাচারী একনায়কের দল? অহংকারী ক্ষমতাদর্পীরা?’’ [বুখারী ৭৪১২, মুসলিম ২৭৮৮]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَيَوۡمَ يَعَضُّ ٱلظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيۡهِ يَقُولُ يَٰلَيۡتَنِي ٱتَّخَذۡتُ مَعَ ٱلرَّسُولِ سَبِيلٗا
যালিম [১] ব্যক্তি সেদিন নিজের দু‘হাত দংশন করতে করতে বলবে, ‘হায়, আমি যদি রাসূলের সাথে কোনো পথ অবলম্বন করতাম [২]!
[১] এখানে যালিম ব্যাক্তি বলতে মুশরিক, কাফের, মুনাফিক ও সীমালঙ্ঘনকারী অবাধ্যদের বুঝানো হয়েছে। [দেখুন-সা‘দী]

[২] অর্থাৎ যারাই রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদর্শিত পথে না চলে অন্য কারো পথে চলবে, তারাই হাশরের মাঠে আফসোস করতে থাকবে এবং নিজের আঙ্গুল কামড়াতে থাকবে। কিন্তু তখন তাদের সে আফসোস করা তাদের কোনো উপকারে আসবে না। আল্লাহ্‌ তা‘আলা পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে এ সত্যকে তুলে ধরেছেন। [যেমন, সূরা আল-আহযাব ৬৬-৬৮, সূরা আয-যুখরুফ ৬৭] এই আয়াতের ভাষা যেমন ব্যাপক, তার বিধানও তেমনি ব্যাপক। এই ব্যাপকতার দিকে ইঙ্গিত করার জন্য সম্ভবতঃ আয়াতে বন্ধুর নামের পরিবর্তে فلانا বা “অমুক" শব্দ অবলম্বন করা হয়েছে। আয়াতে বিধৃত হয়েছে যে, যে দুই বন্ধু পাপ কাজে সম্মিলিত হয় এবং শরীয়ত বিরোধী কার্যাবলীতে একে অপরের সাহায্য করে, তাদের সবারই বিধান এই যে, কেয়ামতের দিন তারা এই বন্ধুত্বের কারণে কান্নাকাটি করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “কোনো অমুসলিমকে সঙ্গী করো না এবং তোমার ধনসম্পদ (সঙ্গীদের দিক দিয়ে) যেন মুক্তাকী ব্যাক্তিই খায়।” [মুসনাদে আহমাদ ৩/৩৮, সহীহ ইবন হিব্বান ২/৩১৫, হাদীস নং ৫৫৫, তিরমিযী ২৩৯৫, আবু দাউদ ৪৮৩২] অর্থাৎ মুত্তাকী বা পরহেযগার নয় এমন কোনো ব্যাক্তির সাথে বন্ধুত্ব করো না। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “প্রত্যেক মানুষ (অভ্যাসগতভাবে) বন্ধুর ধর্ম ও চালচলন অবলম্বন করে। তাই কিরূপ লোককে বন্ধুরূপে গ্ৰহণ করা হচ্ছে, তা পূর্বেই ভেবে দেখা উচিত।” [আবু দাউদ ৪৮৩৩, তিরমিযী ২৩৭৮, মুসনাদে আহমাদ ২/৩৩৪]
アラビア語 クルアーン注釈:
يَٰوَيۡلَتَىٰ لَيۡتَنِي لَمۡ أَتَّخِذۡ فُلَانًا خَلِيلٗا
‘হায়, দুর্ভোগ আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধুরুপে গ্রহণ না করতাম!
アラビア語 クルアーン注釈:
لَّقَدۡ أَضَلَّنِي عَنِ ٱلذِّكۡرِ بَعۡدَ إِذۡ جَآءَنِيۗ وَكَانَ ٱلشَّيۡطَٰنُ لِلۡإِنسَٰنِ خَذُولٗا
‘আমাকে তো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার কাছে উপদেশ পৌঁছার পর।’ আর শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَالَ ٱلرَّسُولُ يَٰرَبِّ إِنَّ قَوۡمِي ٱتَّخَذُواْ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ مَهۡجُورٗا
আর রাসূল বললেন, ‘হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় তো এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য সাব্যস্ত করেছে।’
アラビア語 クルアーン注釈:
وَكَذَٰلِكَ جَعَلۡنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوّٗا مِّنَ ٱلۡمُجۡرِمِينَۗ وَكَفَىٰ بِرَبِّكَ هَادِيٗا وَنَصِيرٗا
আল্লাহ্‌ বলেন, ‘আর এভাবেই আমরা প্রত্যেক নবীর জন্য অপরাধীদের থেকে শত্রু বানিয়ে থাকি। আর আপনার রবই পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট।’
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَوۡلَا نُزِّلَ عَلَيۡهِ ٱلۡقُرۡءَانُ جُمۡلَةٗ وَٰحِدَةٗۚ كَذَٰلِكَ لِنُثَبِّتَ بِهِۦ فُؤَادَكَۖ وَرَتَّلۡنَٰهُ تَرۡتِيلٗا
আর কাফেররা বলে, ‘সমগ্র কুরআন তার কাছে একবারে নাযিল হলো না কেন?’ এভাবেই আমরা নাযিল করেছি আপনার হৃদয়কে তা দ্বারা মযবুত করার জন্য এবং তা ক্রমে ক্ৰমে স্পষ্টভাবে আবৃত্তি করেছি।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَلَا يَأۡتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئۡنَٰكَ بِٱلۡحَقِّ وَأَحۡسَنَ تَفۡسِيرًا
আর তারা আপনার কাছে যে বিষয়ই উপস্থিত করে না কেন, আমরা সেটার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আপনার কাছে নিয়ে আসি।
アラビア語 クルアーン注釈:
ٱلَّذِينَ يُحۡشَرُونَ عَلَىٰ وُجُوهِهِمۡ إِلَىٰ جَهَنَّمَ أُوْلَٰٓئِكَ شَرّٞ مَّكَانٗا وَأَضَلُّ سَبِيلٗا
যাদেরকে মুখের উপর ভর দিয়ে চলা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, তারা স্থানের দিক থেকে অতি নিকৃষ্ট এবং অধিক পথভ্রষ্ট।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَلَقَدۡ ءَاتَيۡنَا مُوسَى ٱلۡكِتَٰبَ وَجَعَلۡنَا مَعَهُۥٓ أَخَاهُ هَٰرُونَ وَزِيرٗا
আর আমরা তো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার সাথে তার ভাই হারূনকে সাহায্যকারী করেছিলাম,
アラビア語 クルアーン注釈:
فَقُلۡنَا ٱذۡهَبَآ إِلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلَّذِينَ كَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِنَا فَدَمَّرۡنَٰهُمۡ تَدۡمِيرٗا
অতঃপর আমরা বলেছিলাম, ‘তোমরা সে সম্প্রদায়ের কাছে যাও যারা আমার নিদর্শনাবলীতে মিথ্যারোপ করেছে [১]।’ তারপর আমরা তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত করেছিলাম;
[১] এতে ফির‘আউন সম্প্রদায় সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা অবিহিত করেছে। [মুয়াসসার]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَقَوۡمَ نُوحٖ لَّمَّا كَذَّبُواْ ٱلرُّسُلَ أَغۡرَقۡنَٰهُمۡ وَجَعَلۡنَٰهُمۡ لِلنَّاسِ ءَايَةٗۖ وَأَعۡتَدۡنَا لِلظَّٰلِمِينَ عَذَابًا أَلِيمٗا
আর নূহের সম্প্রদায়কেও, যখন তারা রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করল [১] তখন আমরা তাদেরকে ডুবিয়ে দিলাম এবং তাদেরকে মানুষের জন্য নিদর্শনস্বরূপ করে রাখলাম। আর যালিমদের জন্য আমরা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্ৰস্তুত করে রেখেছি।
[১] এর উদ্দেশ্য এই যে, তারা স্বয়ং নূহ ‘আলাইহিস সালামের প্রতি মিথ্যারোপ করেছে। দীনের মূলনীতি সকল নবীগণের বেলায়ই অভিন্ন, তাই একজনের প্রতি মিথ্যারোপ সবার প্রতি মিথ্যারোপ করার শামিল। [বাগভী, মুয়াসসার]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَعَادٗا وَثَمُودَاْ وَأَصۡحَٰبَ ٱلرَّسِّ وَقُرُونَۢا بَيۡنَ ذَٰلِكَ كَثِيرٗا
আর আমরা ধ্বংস করেছিলাম ‘আদ, সামূদ, ‘রাস্‌’ [১] -এর অধিবাসীকে এবং তাদের অন্তর্বর্তীকালের বহু প্ৰজন্মকেও৷
[১] وَاَصْحٰبَ الرَّسِّ অভিধানে رَسّ শব্দের অর্থ কাঁচা কুপ। তারা ছিল সামূদ গোত্রের অবশিষ্ট জনসমষ্টি এবং তারা কোনো একটি কুপের ধারে বাস করত। [দেখুন-আদওয়াউল বায়ান, বাগভী]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَكُلّٗا ضَرَبۡنَا لَهُ ٱلۡأَمۡثَٰلَۖ وَكُلّٗا تَبَّرۡنَا تَتۡبِيرٗا
আর আমরা তাদের প্রত্যেকের জন্য দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছিলাম এবং তাদের সকলকেই আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَلَقَدۡ أَتَوۡاْ عَلَى ٱلۡقَرۡيَةِ ٱلَّتِيٓ أُمۡطِرَتۡ مَطَرَ ٱلسَّوۡءِۚ أَفَلَمۡ يَكُونُواْ يَرَوۡنَهَاۚ بَلۡ كَانُواْ لَا يَرۡجُونَ نُشُورٗا
আর তারা তো সে জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে যার উপর বর্ষিত হয়েছিল অকল্যাণের বৃষ্টি, তবে কি তারা এসব দেখতে পায় না [১]? বস্তুত তারা পুনরুত্থানের আশাই করে না।
[১] অর্থাৎ লূত জাতির জনপদ। নিকৃষ্টতম বৃষ্টি মানে পাথর বৃষ্টি। কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় একথা বলা হয়েছে। হিজায বাসীদের বানিজ্য কাফেলা ফিলিস্তিন ও সিরিয়া যাওয়ার পথে এ এলাকা অতিক্রম করতো। সেখানে তারা কেবল ধ্বংসাবশেষ দেখতো না বরং আশপাশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মুখে লূত জাতির শিক্ষণীয় ধ্বংস কাহিনীও শুনতো। [দেখুন-কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَإِذَا رَأَوۡكَ إِن يَتَّخِذُونَكَ إِلَّا هُزُوًا أَهَٰذَا ٱلَّذِي بَعَثَ ٱللَّهُ رَسُولًا
আর তারা যখন আপনাকে দেখে, তখন তারা আপনাকে শুধু ঠাট্টা-বিদ্ররূপের পাত্ররূপে গণ্য করে, বলে, ‘এ-ই কি সে, যাকে আল্লাহ্‌ রাসূল করে পাঠিয়েছেন?
アラビア語 クルアーン注釈:
إِن كَادَ لَيُضِلُّنَا عَنۡ ءَالِهَتِنَا لَوۡلَآ أَن صَبَرۡنَا عَلَيۡهَاۚ وَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ حِينَ يَرَوۡنَ ٱلۡعَذَابَ مَنۡ أَضَلُّ سَبِيلًا
‘সে তো আমাদেরকে আমাদের উপাস্যগণ হতে দূরে সরিয়েই দিত, যদি না আমরা তাদের আনুগত্যের উপর অবিচল থাকতাম।’ আর যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে, তখন জানতে পারবে কে অধিক পথভ্ৰষ্ট।
アラビア語 クルアーン注釈:
أَرَءَيۡتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَٰهَهُۥ هَوَىٰهُ أَفَأَنتَ تَكُونُ عَلَيۡهِ وَكِيلًا
আপনি কি তাকে দেখেছেন, যে তার প্রবৃত্তিকে ইলাহরূপে গ্ৰহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন?
アラビア語 クルアーン注釈:
أَمۡ تَحۡسَبُ أَنَّ أَكۡثَرَهُمۡ يَسۡمَعُونَ أَوۡ يَعۡقِلُونَۚ إِنۡ هُمۡ إِلَّا كَٱلۡأَنۡعَٰمِ بَلۡ هُمۡ أَضَلُّ سَبِيلًا
নাকি আপনি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে? তারা তো পশুর মতই; বরং তারা আরও অধিক পথভ্ৰষ্ট।
アラビア語 クルアーン注釈:
أَلَمۡ تَرَ إِلَىٰ رَبِّكَ كَيۡفَ مَدَّ ٱلظِّلَّ وَلَوۡ شَآءَ لَجَعَلَهُۥ سَاكِنٗا ثُمَّ جَعَلۡنَا ٱلشَّمۡسَ عَلَيۡهِ دَلِيلٗا
আপনি কি আপনার রবের প্রতি লক্ষ্য করেন না [১] কিভাবে তিনি ছায়া সম্প্রসারিত করেন? তিনি ইচ্ছে করলে এটাকে তো স্থির রাখতে পারতেন; তারপর আমরা সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক।
[১] ৪৫ থেকে ৬০ -এ আয়াতসমূহে আল্লাহ্‌ তা‘আলার সর্বময় ক্ষমতা এবং বান্দার প্রতি তাঁর নেয়ামত ও অনুগ্রহ বর্ণিত হয়েছে, যার ফলে আল্লাহ্‌ তা‘আলার তাওহীদ প্রমাণিত হয় এবং এতে বান্দার করণীয় কি তাও বর্ণনা করা হয়েছে। [দেখুন-ফাতহুল কাদীর]
アラビア語 クルアーン注釈:
ثُمَّ قَبَضۡنَٰهُ إِلَيۡنَا قَبۡضٗا يَسِيرٗا
তারপর আমরা এটাকে আমাদের দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَهُوَ ٱلَّذِي جَعَلَ لَكُمُ ٱلَّيۡلَ لِبَاسٗا وَٱلنَّوۡمَ سُبَاتٗا وَجَعَلَ ٱلنَّهَارَ نُشُورٗا
আর তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণস্বরূপ, বিশ্রামের জন্য তোমাদের দিয়েছেন নিদ্ৰা [১] এবং ছড়িয়ে পড়ার জন্য করেছেন দিন [২]।
[১] এ আয়াতে রাত্রিকে ‘লেবাস’ শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করা হয়েছে। লেবাস যেমন মানবদেহকে আবৃত করে, রাত্ৰিও তেমনি একটি প্রাকৃতিক আবরণ যা সমগ্র সৃষ্টজগতের উপর ফেলে দেয়া হয়। سُبِاتًا শব্দটি سبت থেকে উদ্ভূত। এর আসল অর্থ ছিন্ন করা। سُبَاتٌ এমন বস্তু যদ্দারা অন্য বস্তুকে ছিন্ন করা হয়। নিদ্রাকে আল্লাহ্‌ তা‘আলা এমন করেছেন যে, এর ফলে সারাদিনের ক্লান্তি ও শ্রান্তি ছিন্ন তথা দূর হয়ে যায়। চিন্তা ও কল্পনা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে মস্তিষ্ক শান্ত হয়। তাই سُبَاتٌ এর অর্থ করা হয় আরাম, শান্তি। আয়াতের অর্থ এই যে, আমি রাত্রিকে আবৃতকারী করেছি, অতঃপর তাতে মানুষ ও প্রাণীদের উপর নিদ্রা চাপিয়ে দিয়েছি যা তাদের আরাম ও শান্তির উপকরণ। [দেখুন- কুরতুবী, আদওয়াউল বায়ান]

[২] এখানে দিনকে نشور অর্থাৎ ‘জীবন বা ছড়িয়ে পড়া’ বলা হয়েছে। কেননা এর বিপরীত অর্থাৎ নিদ্রা এক প্রকার মৃত্যু। [আদওয়াউল বায়ান]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَهُوَ ٱلَّذِيٓ أَرۡسَلَ ٱلرِّيَٰحَ بُشۡرَۢا بَيۡنَ يَدَيۡ رَحۡمَتِهِۦۚ وَأَنزَلۡنَا مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءٗ طَهُورٗا
আর তিনিই তাঁর রহমতের বৃষ্টির আগে সুসংবাদবাহীরূপে বায়ু প্রেরণ করেন এবং আমরা আকাশ হতে পবিত্ৰ পানি বর্ষণ করি [১]-
[১] طهور শব্দটি আরবী ভাষায় অতিশয়ার্থে ব্যবহৃত হয়। কাজেই এমন জিনিসকে طهور বলা হয় যা নিজেও পবিত্র এবং অপরকেও তদ্দারা পবিত্র করা যায়। [বাগভী]
アラビア語 クルアーン注釈:
لِّنُحۡـِۧيَ بِهِۦ بَلۡدَةٗ مَّيۡتٗا وَنُسۡقِيَهُۥ مِمَّا خَلَقۡنَآ أَنۡعَٰمٗا وَأَنَاسِيَّ كَثِيرٗا
যাতে তা দ্বারা আমরা মৃত ভূ-খণ্ডকে সঞ্জীবিত করি এবং আমরা যা সৃষ্টি করেছি তার মধ্য হতে বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করাই [১],
[১] আয়াতে বলা হয়েছে যে, আকাশ থেকে অবতীর্ণ পানি দ্বারা আল্লাহ্‌ তা‘আলা মাটিকে সিক্ত করেন এবং জীবজন্তু এবং অনেক মানুষেরও তৃষ্ণ নিবারণ করেন। [দেখুন-মুয়াসসার]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَلَقَدۡ صَرَّفۡنَٰهُ بَيۡنَهُمۡ لِيَذَّكَّرُواْ فَأَبَىٰٓ أَكۡثَرُ ٱلنَّاسِ إِلَّا كُفُورٗا
আর আমরা তো তা তাদের মধ্যে বিতরণ করি যাতে তারা স্মরণ করে। অতঃপর অধিকাংশ লোক শুধু অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে [১]।
[১] ইকরিমা রাহেমাহুল্লাহ এ আয়াতের তাফসীরে বলেন, অর্থাৎ তারা বলে আমরা অমুক নক্ষত্র এবং অমুক নক্ষত্রের কাছাকাছি হওয়ার কারণে বৃষ্টিপ্রাপ্ত হয়েছি। ইকরিমা রাহেমাহুল্লাহর এ তাফসীরের সপক্ষে আমরা হাদীস থেকে প্রমাণ দেখতে পাই। একবার রাত্রিকালে বৃষ্টি হওয়ার পর ভোরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে বললেন, তোমরা কি জান তোমাদের প্রভু কি বলেছেন? তারা বললেন, আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল সবচেয়ে ভাল জানেন। তিনি বললেন, “আল্লাহ্‌ বলেন, আমার বান্দাদের কতক লোক আমার উপর ঈমানদার এবং কতক লোক কাফেরে পরিণত হয়েছে। যারা বলে, আমরা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ ও দয়ায় বৃষ্টিপ্রাপ্ত হয়েছি তারা আমার উপর ঈমান এনেছে এবং নক্ষত্ররাজির উপর কুফরী করেছে। আর যারা বলে, আমরা অমুক অমুক নক্ষত্রের কাছাকাছি হওয়ার কারণে বৃষ্টি পেয়েছি তারা আমার সাথে কুফরী করেছে এবং নক্ষত্ররাজির উপর ঈমান এনেছে। [মুসলিম ১২৫]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَلَوۡ شِئۡنَا لَبَعَثۡنَا فِي كُلِّ قَرۡيَةٖ نَّذِيرٗا
আর আমরা ইচ্ছে করলে প্রতিটি জনপদে একজন সতর্ককারী পাঠাতে পারতাম।
アラビア語 クルアーン注釈:
فَلَا تُطِعِ ٱلۡكَٰفِرِينَ وَجَٰهِدۡهُم بِهِۦ جِهَادٗا كَبِيرٗا
কাজেই আপনি কাফেরদের আনুগত্য করবেন না এবং আপনি কুরআনের সাহায্যে তাদের সাথে বড় জিহাদ চালিয়ে যান।
アラビア語 クルアーン注釈:
۞ وَهُوَ ٱلَّذِي مَرَجَ ٱلۡبَحۡرَيۡنِ هَٰذَا عَذۡبٞ فُرَاتٞ وَهَٰذَا مِلۡحٌ أُجَاجٞ وَجَعَلَ بَيۡنَهُمَا بَرۡزَخٗا وَحِجۡرٗا مَّحۡجُورٗا
আর তিনিই দুই সাগরকে সমান্তরালে প্রবাহিত করেছেন, একটি মিষ্ট, সুপেয় এবং অন্যটি লোনা, খর; আর তিনি উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান [১]।
[১] مرج শব্দের অর্থ স্বাধীন ছেড়ে দেয়া। عذب মিঠা পানিকে বলা হয়। فُرَاتٌ -এর অর্থ সুপেয়, مِلْحٌ -এর অর্থ লোনা এবং أجاجٌ এর অর্থ তিক্ত বিস্বাদ। আল্লাহ্‌ তা‘আলা স্বীয় কৃপা ও অপার রহস্য দ্বারা পৃথিবীতে দুই প্রকার সাগর সৃষ্টি করেছেন। (এক) সর্ববৃহৎ যাকে মহাসাগর বলা হয়। গোটা পৃথিবী এর দ্বারা পরিবেষ্টিত। এর প্রায় এক-চতুর্থাংশ এ জলধির বাইরে উন্মুক্ত, যাতে সারা বিশ্বের মানব সমাজ বসবাস করে। এই সর্ববৃহৎ সাগরের পানি রহস্যবশতঃ তীব্ৰ লোনা ও বিস্বাদ। পৃথিবীর স্থলভাগে আকাশ থেকে বর্ষিত পানির ঝর্ণা, নদ-নদী, নহর ও বড় বড় সাগর আছে। এগুলোর পানি মিষ্ট ও সুপেয়। মানুষের নিজেদের তৃষ্ণা নিবারণে এবং দৈনন্দিন ব্যবহারে এরূপ পানিরই প্রয়োজন, যা আল্লাহ্‌ তা‘আলা স্থলভাগে বিভিন্ন প্রকারে সরবরাহ করেছেন। সমুদ্রে স্থলভাগের চেয়ে অনেক বেশী সামুদ্রিক জন্তুজানোয়ার বসবাস করে। এগুলো সেখানেই মরে, সেখানেই পচে এবং সেখানেই মাটি হয়ে যায়। সমগ্ৰ পৃথিবীর পানি ও আবর্জনা অবশেষে সমুদ্রে পতিত হয়। যদি সমুদ্রের পানি মিষ্ট হত, তবে মিষ্ট পানি দ্রুত পচনশীল বিধায় দু’চার দিনেই পচে যেত। এই পানি পচে গেলে তার দুর্গন্ধে ভূপৃষ্ঠের অধিবাসীদের জীবনধারন দুরূহ হয়ে যেত। তাই আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাকে এত তীব্ৰ লোনা, তিক্ত ও তেজস্ক্রিয় করে দিয়েছেন যেন সারা বিশ্বের আবর্জনা তাতে পতিত হয়ে বিলীন হয়ে যায় এবং সেখানে বসবাসকারী যে সকল সৃষ্টজীব সেখানে মরে, তাও পচতে পারে। [দেখুন-আদওয়াউল-বায়ান]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَهُوَ ٱلَّذِي خَلَقَ مِنَ ٱلۡمَآءِ بَشَرٗا فَجَعَلَهُۥ نَسَبٗا وَصِهۡرٗاۗ وَكَانَ رَبُّكَ قَدِيرٗا
আর তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি হতে; তারপর তিনি তাকে বংশগত ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন [১]। আর আপনার রব হলেন প্রভূত ক্ষমতাবান।
[১] পিতা-মাতার দিক থেকে যে সম্পর্ক ও আত্মীয়তা হয়, তাকে نسب বলা হয় এবং স্ত্রীর পক্ষ হতে যে আত্মীয়তা হয়, তাকে صهر বলা হয়। [আদওয়াউল বায়ান, বাগভী]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَيَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَنفَعُهُمۡ وَلَا يَضُرُّهُمۡۗ وَكَانَ ٱلۡكَافِرُ عَلَىٰ رَبِّهِۦ ظَهِيرٗا
আর তারা আল্লাহ্‌র পরিবর্তে এমন কিছুর ‘ইবাদাত করে যা তাদের উপকার করতে পারে না এবং তাদের অপকারও করতে পারে না। আর কাফের তো তার রবের বিরোধিতায় সহযোগিতাকারী।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَمَآ أَرۡسَلۡنَٰكَ إِلَّا مُبَشِّرٗا وَنَذِيرٗا
আর আমরা তো আপনাকে শুধু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি।
アラビア語 クルアーン注釈:
قُلۡ مَآ أَسۡـَٔلُكُمۡ عَلَيۡهِ مِنۡ أَجۡرٍ إِلَّا مَن شَآءَ أَن يَتَّخِذَ إِلَىٰ رَبِّهِۦ سَبِيلٗا
বলুন, ‘আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোনো বিনিময় চাই না, তবে যে তার রবের দিকের পথ অবলম্বন করার ইচ্ছে করে।’
アラビア語 クルアーン注釈:
وَتَوَكَّلۡ عَلَى ٱلۡحَيِّ ٱلَّذِي لَا يَمُوتُ وَسَبِّحۡ بِحَمۡدِهِۦۚ وَكَفَىٰ بِهِۦ بِذُنُوبِ عِبَادِهِۦ خَبِيرًا
আর আপনি নির্ভর করুন তাঁর উপর যিনি চিরঞ্জীব, যিনি মরবেন না এবং তাঁর সপ্ৰশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন, তিনি তাঁর বান্দাদের পাপ সম্পর্কে অবহিত হিসেবে যথেষ্ট।
アラビア語 クルアーン注釈:
ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ ٱلرَّحۡمَٰنُ فَسۡـَٔلۡ بِهِۦ خَبِيرٗا
তিনি আসমানসমূহ, যমীন ও এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠলেন। তিনিই ‘রাহমান’, সুতরাং তাঁর সম্বন্ধে যে অবহিত তাকে জিজ্ঞেস করে দেখুন।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ ٱسۡجُدُواْۤ لِلرَّحۡمَٰنِ قَالُواْ وَمَا ٱلرَّحۡمَٰنُ أَنَسۡجُدُ لِمَا تَأۡمُرُنَا وَزَادَهُمۡ نُفُورٗا۩
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘সাজদাবনত হও ‘রাহমান’ -এর প্রতি,’ তখন তারা বলে, ‘রাহমান আবার কী [১]? তুমি কাউকে সাজদা করতে বললেই কি আমরা তাকে সাজদা করব?’ আর এতে তাদের পলায়নপরতাই বৃদ্ধি পায়।
[১] মক্কার কাফেররা এ নামটি যে জানত না তা নয়। তারা এ নামটি জানত তবে আল্লাহ্‌র জন্য নির্দিষ্ট করতে দ্বিধা করত। তারা এ নামটিকে কোনো কোনো মানুষকেও প্রদান করত। অথচ এ নামটি এমন এক নাম যা শুধুমাত্র মহান রাব্ববুল আলামীনের জন্যই নির্দিষ্ট। কোনো ক্রমেই অন্য কারো জন্য এ নামটিকে নাম হিসেবে বা গুণ হিসেবে ব্যবহার করা জায়েয নেই। কিন্তু তারা হঠকারিতাবশতঃ প্রশ্ন করল যে, রহমান কে এবং কী? হুদায়বিয়ার সন্ধির দিনও তারা এমনটি অস্বীকার করে বলেছিল: “আমরা রহমান বা রহীম কী জিনিস তা জানিনা; বরং যেভাবে তুমি আগে লিখতে, সেভাবে ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ লিখা।” [মুসলিম ১৭৮৪] সূরা আল-ইসরার ১১০ নং আয়াতেও আল্লাহ্‌ তা‘আলা কাফেরদেরকে উদ্দেশ্য করে তাঁর এ নামের তাৎপর্য বর্ণনা করে বলেছেন যে, “আল্লাহ্‌কে ডাক বা রহমানকে ডাক, যেভাবেই ডাক এগুলো তাঁর সুন্দর নামসমূহের অন্তর্গত।’’
アラビア語 クルアーン注釈:
تَبَارَكَ ٱلَّذِي جَعَلَ فِي ٱلسَّمَآءِ بُرُوجٗا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَٰجٗا وَقَمَرٗا مُّنِيرٗا
কত বরকতময় তিনি যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করেছেন বিশাল তারকাপুঞ্জ এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্ৰদীপ [১] ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ।
[১] অর্থাৎ সূর্য। [বাগভী] যেমন সূরা নূহে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে: “আর সূর্যকে প্রদীপ বানিয়েছেন।” [১৬]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَهُوَ ٱلَّذِي جَعَلَ ٱلَّيۡلَ وَٱلنَّهَارَ خِلۡفَةٗ لِّمَنۡ أَرَادَ أَن يَذَّكَّرَ أَوۡ أَرَادَ شُكُورٗا
আর তিনিই করেছেন রাত ও দিনকে পরস্পরের অনুগামীরূপে তার জন্য--- যে উপদেশ গ্রহণ করতে বা কৃতজ্ঞ হতে চায়।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَعِبَادُ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلَّذِينَ يَمۡشُونَ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ هَوۡنٗا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ ٱلۡجَٰهِلُونَ قَالُواْ سَلَٰمٗا
আর ‘রাহমান’ -এর বান্দা তারাই, যারা যমীনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে [১] এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদেরকে (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, ‘সালাম’ [২];
[১] অর্থাৎ তারা পৃথিবীতে নম্রতা সহকারে চলাফেরা করে। هرن শব্দের অর্থ এখানে স্থিরতা, গাম্ভীর্য, বিনয় অর্থাৎ গর্বভরে না চলা, অহংকারীর ন্যায় পা না ফেলা। অহংকারের সাথে বুক ফুলিয়ে চলে না। গর্বিত স্বৈরাচারী ও বিপর্যয়কারীর মতো নিজের চলার মাধ্যমে নিজের শক্তি প্ৰকাশ করার চেষ্টা না করা। বরং তাদের চালচলন হয় একজন ভদ্র, মার্জিত ও সৎস্বভাব সম্পন্ন ব্যাক্তির মতো। খুব ধীরে চলা উদ্দেশ্য নয়। কেননা বিনা প্রয়োজনে ধীরে চলা সুন্নাত বিরোধী। হাদীস থেকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব ধীরে চলতেন না; বরং কিছুটা দ্রুত গতিতে চলতেন। হাদীসের ভাষা এরূপ, كَأَنَّمَا الأَرْضُ تُطْوَى لَهُ অর্থাৎ “চলার সময় পথ যেন তার জন্য সংকুচিত হত।’’ [ইবন হিব্বান ৬৩০৯] এ কারণেই পূর্ববর্তী মনীষীগণ ইচ্ছাকৃতভাবেই রোগীদের ন্যায় ধীরে চলাকে অহংকার ও কৃত্রিমতার আলামত হওয়ার কারণে মাকরূহ সাব্যস্ত করেছেন। উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জনৈক যুবককে খুব ধীরে চলতে দেখে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি অসুস্থ? সে বলল, না। তিনি তার প্রতি চাবুক উঠালেন এবং শক্তি সহকারে চলার আদেশ দিলেন। [দেখুন-ইবন কাসীর, কুরতুবী, বাদাইউত তাফসির]

হাসান বসরী রাহিমাহুল্লাহ يَمۡشُونَ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ هَوۡنٗا আয়াতের তাফসীরে বলেন, খাঁটি মুমিনদের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, চক্ষু, কৰ্ণ, হাত, পা, আল্লাহ্‌র সামনে হীন ও অক্ষম হয়ে থাকে। অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে দেখে অপারগ ও পঙ্গু মনে করে, অথচ তারা রুগ্নও নয় এবং পঙ্গুও নয়; বরং সুস্থ ও সবল। তবে তাদের উপর আল্লাহ্‌ভীতি প্রবল যা অন্যদের উপর নেই। তাদেরকে পার্থিব কাজকর্ম থেকে আখেরাতের চিন্তা নিবৃত্ত রাখে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে না এবং তার সমস্ত চিন্তা দুনিয়ার কাজেই ব্যাপৃত, সে সর্বদা দুঃখই ভোগ করে। কারণ, সে তো দুনিয়া পুরোপুরি পায় না এবং আখেরাতের কাজেও অংশগ্রহণ করে না। যে ব্যাক্তি পানাহারের বস্তুর মধ্যেই আল্লাহ্‌র নেয়ামত সীমিত মনে করে এবং উত্তম চরিত্রের প্রতি লক্ষ্য করে না, তার জ্ঞান খুবই অল্প এবং তার জন্য শাস্তি তৈরী রয়েছে। [ইবন কাসীর]

[২] অর্থাৎ যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদের সাথে কথা বলে, তখন তারা বলে- ‘সালাম’। এখানে جاهلون শব্দের অর্থ বিদ্যাহীন ব্যক্তি নয়; বরং যারা মূর্খতার কাজ ও মূর্খতাপ্রসূত কথাবার্তা বলে, যদিও বাস্তবে বিদ্বানও বটে। মূর্খ মানে অশিক্ষিত বা লেখাপড়া না জানা লোক নয় বরং এমন লোক যারা জাহেলী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে এবং কোনো ভদ্রলোকের সাথে অশালীন ব্যবহার করতে শুরু করেছে। রহমানের বান্দাদের পদ্ধতি হচ্ছে, তারা গালির জবাবে গালি এবং দোষারোপের জবাবে দোষারোপ করে না। [দেখুন-ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী, বাদাইউত তাফসির] যেমন কুরআনের অন্য জায়গায় বলা হয়েছে: “আর যখন তারা কোনো বেহুদা কথা শোনে, তা উপেক্ষা করে যায়। বলে, আমাদের কাজের ফল আমরা পাবো এবং তোমাদের কাজের ফল তোমরা পাবে। সালাম তোমাদের, আমরা জাহেলদের সাথে কথা বলি না।’’ [সূরা আল-কাসাস ৫৫]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ يَبِيتُونَ لِرَبِّهِمۡ سُجَّدٗا وَقِيَٰمٗا
এবং তারা রাত অতিবাহিত করে তাদের রবের উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে থেকে [১];
[১] অর্থাৎ তারা রাত্রি যাপন করে তাদের পালনকর্তার সামনে সাজদারত অবস্থায় ও দণ্ডায়মান অবস্থায়। ইবাদাতে রাত্রি জাগরণের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করার কারণ এই যে, এই সময়টি নিদ্রা ও আরামের। এতে সালাত ও ইবাদাতের জন্য দণ্ডায়মান হওয়া যেমন বিশেষ কষ্টকর, তেমনি এতে লোকদেখানো ও নাম-যশের আশংকাও নেই। উদ্দেশ্য এই যে, তারা দিবারাত্ৰি আল্লাহ্‌র ইবাদাতে মশগুল থাকে। কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে তাদের জীবনের এ দিকগুলো সুস্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন অন্য সূরায় বলা হয়েছে: “তাদের পিঠ বিছানা থেকে আলাদা থাকে, নিজেদের রবকে ডাকতে থাকে আশায় ও আশংকায়।” [সূরা আস-সাজদাহ ১৬] অন্যত্র আরো বলা হয়েছে: “এ সকল জান্নাতবাসী ছিল এমন সব লোক যারা রাতে সামান্যই ঘুমাতো এবং ভোর রাতে মাগফিরাতের দো‘আ করতো।’’ [সূরা আয-যারিয়াত ১৭-১৮]

আরো বলা হয়েছে: “যে ব্যক্তি হয় আল্লাহর হুকুম পালনকারী, রাতের বেলা সাজদা করে ও দাঁড়িয়ে থাকে, আখেরাতকে ভয় করে এবং নিজের রবের রহমতের প্রত্যাশা করে তার পরিনাম কি মুশরিকের মতো হতে পারে ?” [সূরা আয যুমার ৯] হাদীসে সালাতুত তাহাজ্জুদের অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় কর। কেননা এটা তোমাদের পূর্ববর্তী সকল নেককারদের অভ্যাস ছিলো। এটা তোমাদেরকে আল্লাহ্‌ তা’আলার নৈকট্য দানকারী, মন্দ কাজের কাফফারা এবং গোনাহ থেকে নিবৃত্তকারী।” [সহীহ ইবন খুযাইমাহ ১১৩৫] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, “যে ব্যক্তি এশার সালাত জামা’আতে আদায় করে, সে যেন অর্ধরাত্রি ইবাদাতে অতিবাহিত করে এবং যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামা’আতের সাথে আদায় করে, তাকে অবশিষ্ট অর্ধরাত্রিও ইবাদাতে অতিবাহিতকারী হিসেবে গণ্য করা হবে।” [মুসলিম ৬৫৬]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱصۡرِفۡ عَنَّا عَذَابَ جَهَنَّمَۖ إِنَّ عَذَابَهَا كَانَ غَرَامًا
এবং তারা বলে, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে দিন, তার শাস্তি তো অবিচ্ছিন্ন।
アラビア語 クルアーン注釈:
إِنَّهَا سَآءَتۡ مُسۡتَقَرّٗا وَمُقَامٗا
. নিশ্চয় সেটা বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে খুব নিকৃষ্ট।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ إِذَآ أَنفَقُواْ لَمۡ يُسۡرِفُواْ وَلَمۡ يَقۡتُرُواْ وَكَانَ بَيۡنَ ذَٰلِكَ قَوَامٗا
এবং যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কৃপনতাও করে না, আর তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী [১]।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্‌র প্রিয় বান্দারা অপব্যয় করে না এবং কৃপণতাও করে না; বরং উভয়ের মধ্যবর্তী সমতা বজায় রাখে। আয়াতে إسْرَافٌ এবং এর বিপরীতে إقْتَارٌ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। إسْرَافٌ এর অর্থ সীমা অতিক্রম করা। শরীয়তের পরিভাষায় ইবন আব্বাস, মুজাহিদ, কাতাদাহ, ইবন জুবায়েরের মতে আল্লাহ্‌র অবাধ্যতার কাজে ব্যয় করা إسْرَافٌ তথা অপব্যয়; যদিও তা এক পয়সাও হয়। কেউ কেউ বলেন, বৈধ এবং অনুমোদিত কাজে প্রয়োজনাতিরিক্ত ব্যয় করাও অপব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত। কেননা تَبْذيْرٌ তথা অনর্থক ব্যয় কুরআনের আয়াত দ্বারা হারাম ও গোনাহ। আল্লাহ্‌ বলেন,

إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ [সূরা আল-ইসরা ২৭]

إقتار শব্দের অর্থ ব্যয়ে ত্রুটি ও কৃপণতা করা। শরীয়তের পরিভাষায় এর অর্থ যেসব কাজে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল ব্যয় করার আদেশ দেন, তাতে ব্যয় না করা বা কম করা। এই তাফসীরও ইবন আব্বাস, কাতাদাহ প্রমুখ হতে বর্ণিত আছে। তখন আয়াতের অর্থ হবে, আল্লাহ্‌র প্রিয় বান্দাদের গুণ এই যে, তারা ব্যয় করার ক্ষেত্রে অপব্যয় ও ক্রটির মাঝখানে সততা ও মিতব্যয়ীতার পথ অনুসরণ করে। [দেখুন- ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ لَا يَدۡعُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ وَلَا يَقۡتُلُونَ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِي حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَلَا يَزۡنُونَۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ يَلۡقَ أَثَامٗا
এবং তারা আল্লাহ্‌র সাথে কোনো ইলাহকে ডাকে না [১]। আর আল্লাহ্‌ যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না [২]। আর তারা ব্যভিচার করে না [৩]; যে এগুলো করে, সে শাস্তি ভোগ করবে।
[১] পূর্ববর্তী ছয়টি গুণের মধ্যে আনুগত্যের মূলনীতি এসে গেছে। এখন গোনাহ ও অবাধ্যতার প্রধান প্রধান মূলনীতি বর্ণিত হচ্ছে। তন্মধ্যে প্রথম মূলনীতি বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত অর্থাৎ তারা ইবাদাতে আল্লাহ্‌র সাথে কাউকে শরীক করে না। [ফাতহুল কাদীর]

[২] এ আয়াতে বলা হচ্ছে যে, আল্লাহ্‌র প্রিয় বান্দারা কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে না। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘একজন মুমিন ঐ পর্যন্ত পরিত্রাণের আশা করতে পারে যতক্ষণ সে কোনো হারামকৃত রক্ত প্রবাহিত না করে’৷ [বুখারী ৬৮৬২]

[৩] রহমানের বান্দারা কোনো ব্যভিচার করে না। ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয় না। একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সবচেয়ে বড় গুণাহ কী? তিনি বললেন, “তুমি যদি কাউকে (প্ৰভুত্ব, নাম-গুণে এবং ইবাদতে) আল্লাহ্‌র সমকক্ষ দাঁড় করাও।” জিজ্ঞেস করা হলো, তারপর? তিনি বললেন, “তুমি যদি তোমার সন্তানকে হত্যা কর এই ভয়ে যে, সে তোমার সাথে আহারে অংশ নেবে।” জিজ্ঞেস করা হলো, তারপর? তিনি বললেন, “তুমি যদি তোমার পড়শীর স্ত্রীর সাথে যিনা কর।” [বুখারী ৬৮৬১, মুসলিম ৮৬]
アラビア語 クルアーン注釈:
يُضَٰعَفۡ لَهُ ٱلۡعَذَابُ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَيَخۡلُدۡ فِيهِۦ مُهَانًا
কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বর্ধিতভাবে প্ৰদান করা হবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায়;
アラビア語 クルアーン注釈:
إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ عَمَلٗا صَٰلِحٗا فَأُوْلَٰٓئِكَ يُبَدِّلُ ٱللَّهُ سَيِّـَٔاتِهِمۡ حَسَنَٰتٖۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا
তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, ফলে আল্লাহ্‌ তাদের গুণাহসমূহ নেক দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আর আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا فَإِنَّهُۥ يَتُوبُ إِلَى ٱللَّهِ مَتَابٗا
আর যে তাওবা করে ও সৎকাজ করে, সে তো সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্‌র অভিমুখী হয়।
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ لَا يَشۡهَدُونَ ٱلزُّورَ وَإِذَا مَرُّواْ بِٱللَّغۡوِ مَرُّواْ كِرَامٗا
আর যারা মিথ্যার সাক্ষ্য হয় না এবং অসার কার্যকলাপের সম্মুখীন হলে আপন মর্যাদা রক্ষার্থে তা পরিহার করে চলে [১]।
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্‌র সৎ বান্দাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা জেনে শুনে আজে-বাজে কথা ও কাজ দেখতে বা শুনতে অথবা তাতে অংশ গ্রহণ করে না। আর যদি কখনো তাদের পথে এমন কোনো জিনিস এসে যায়, তাহলে তার প্রতি একটা উড়ো নজর না দিয়েও তারা এভাবে সে জায়গা অতিক্রম করে, যেমন একজন অত্যন্ত সুরুচিসম্পন্ন ব্যক্তি কোনো ময়লার স্তুপ অতিক্রম করে চলে যায়। [দেখুন-ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُواْ بِـَٔايَٰتِ رَبِّهِمۡ لَمۡ يَخِرُّواْ عَلَيۡهَا صُمّٗا وَعُمۡيَانٗا
এবং যারা তাদের রবের আয়াতসমূহ স্মরণ করিয়ে দিলে তার উপর অন্ধ এবং বধিরের মত পড়ে থাকে না [১]।
[১] অর্থাৎ এই প্রিয় বান্দাগণকে যখন আল্লাহ্‌র আয়াত ও আখেরাতের কথা স্মরণ করানো হয়, তখন তারা এসব আয়াতের প্রতি অন্ধ ও বধিরদের ন্যায় মনোযোগ দেয় না; বরং শ্রবণশক্তি ও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের ন্যায় এগুলো সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে ও তদনুযায়ী আমল করে। [তাবারী]
アラビア語 クルアーン注釈:
وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا
এবং যারা প্রার্থনা করে বলে, ‘হে আমাদের রব! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা হবে আমাদের জন্য চোখজুড়ানো। আর আপনি আমাদেরকে করুন মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণযোগ্য।
アラビア語 クルアーン注釈:
أُوْلَٰٓئِكَ يُجۡزَوۡنَ ٱلۡغُرۡفَةَ بِمَا صَبَرُواْ وَيُلَقَّوۡنَ فِيهَا تَحِيَّةٗ وَسَلَٰمًا
তারাই, যাদেরকে প্রতিদান হিসেবে দেয়া হবে জান্নাতের সুউচ্চ কক্ষ [১] যেহেতু তারা ছিল ধৈর্যশীল। আর তারা প্রাপ্ত হবে সেখানে অভিবাদন ও সালাম।
[১] غرفة শব্দের আভিধানিক অর্থ উঁচু কক্ষ, উপরতলার কক্ষ। বিশেষ নৈকট্যপ্রাপ্তগণ এমন উঁচু কক্ষ পাবে, যা সাধারণ জান্নাতীদের কাছে তেমনি দৃষ্টিগোচর হবে, যেমন পৃথিবীর লোকদের নিকট তারকা-নক্ষত্র দৃষ্টিগোচর হয়৷ [বুখারী ৩০৮৩, মুসলিম ২৮৩১, মুসনাদে আহমাদ ৮৪৫২] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, “জান্নাতে এমন কক্ষ থাকবে যার ভেতরের অংশ বাইরে থেকে এবং বাইরের অংশ ভেতর থেকে দৃষ্টিগোচর হবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম), এসব কক্ষ কাদের জন্য? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি সৎ ও পবিত্ৰ কথাবার্তা বলে, প্রত্যেক মুসলিমকে সালাম করে, ক্ষুধার্তকে আহার করায় এবং রাত্রে যখন সবাই নিদ্রিত থাকে, তখন সে তাহাজ্জুতের সালাত আদায় করে।” [সিহীহ ইবন হিব্বান ৫০৯, সহীহ ইবন খুযাইমা ২১৩৭, মুস্তাদরাকে হাকেম ১/১৫৩, তিরমিযী ১৯৮৪, মুসনাদে আহমাদ ১৩৩৭]
アラビア語 クルアーン注釈:
خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ حَسُنَتۡ مُسۡتَقَرّٗا وَمُقَامٗا
সেখানে তারা স্থায়ী হবে। অবস্থানস্থল ও বাসস্থান হিসেবে তা কত উৎকৃষ্ট!
アラビア語 クルアーン注釈:
قُلۡ مَا يَعۡبَؤُاْ بِكُمۡ رَبِّي لَوۡلَا دُعَآؤُكُمۡۖ فَقَدۡ كَذَّبۡتُمۡ فَسَوۡفَ يَكُونُ لِزَامَۢا
বলুন, ‘আমার রব তোমাদের মোটেই ভ্ৰক্ষেপ করেন না, যদি না তোমরা তাকে ডাক [১]। অতঃপর তোমরা মিথ্যারোপ করেছ, সুতরাং অচিরেই অপরিহার্য হবে শাস্তি।’
[১] এই আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে অনেক উক্তি আছে। তবে স্পষ্ট কথা হলো, আল্লাহ্‌র কাছে তোমাদের কোনো গুরুত্ব থাকত না যদি তোমাদের পক্ষ থেকে তাঁকে ডাকা ও তাঁর ইবাদাত করা না হত। কেননা মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যই আল্লাহ্‌র ইবাদাত করা। [বাগভী] যেমন অন্য আয়াতে আছে

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ [সূরা আয-যারিয়াত ৫৬]

অর্থাৎ আমি মানব ও জিনকে আমার ইবাদাত ব্যতীত অন্য কোনো কাজের জন্য সৃষ্টি করিনি।
アラビア語 クルアーン注釈:
 
対訳 章: 識別章
章名の目次 ページ番号
 
クルアーンの対訳 - ベンガル語対訳 - Abu Bakr Zakaria - 対訳の目次

クルアーン・ベンガル語対訳 - Dr. Abu Bakr Muhammad Zakaria

閉じる