Vertaling van de betekenissen Edele Qur'an - Bengaalse vertaling, vertaald door Abu Bakr Zakaria * - Index van vertaling


Vertaling van de betekenissen Vers: (173) Surah: Soerat Albaqarah (De Koe)
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيۡكُمُ ٱلۡمَيۡتَةَ وَٱلدَّمَ وَلَحۡمَ ٱلۡخِنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ بِهِۦ لِغَيۡرِ ٱللَّهِۖ فَمَنِ ٱضۡطُرَّ غَيۡرَ بَاغٖ وَلَا عَادٖ فَلَآ إِثۡمَ عَلَيۡهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٌ
তিনি আল্লাহ্‌ তো কেবল তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু [১], রক্ত [২], শূকরের গোশ্‌ত [৩] এবং যার উপর আল্লাহ্‌র নাম ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে [৪], কিন্তু যে নিরুপায় অথচ নাফরমান এবং সিমালঙ্ঘনকারী নয় তার কোনো পাপ হবে না [৫]। নিশচই আল্লাহ্‌ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
[১] অর্থাৎ যেসব প্রাণী হালাল করার জন্য শরীআতের বিধান অনুযায়ী যবেহ করা জরুরী, সেসব প্রাণী যদি যবেহ ব্যতীত অন্য কোনো উপায়ে যেমন, আঘাত প্রাপ্ত হয়ে, অসুস্থ হয়ে কিংবা দম বন্ধ হয়ে মারা যায়, তবে সেগুলোকে মৃত বলে গণ্য করা হবে এবং সেগুলোর গোশ্‌ত খাওয়া হারাম হবে। তবে অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তোমাদের জন্য সামুদ্রিক শিকার হালাল করা হল।” [সূরা আল-মায়িদাহ ৯৬]

এ আয়াতের মৰ্মানুযায়ী সামুদ্রিক জীব-জন্তুর বেলায় যবেহ করার শর্ত আরোপিত হয়নি। ফলে এগুলো যবেহ ছাড়াই খাওয়া হালাল। অনুরূপ এক হাদীসে মাছ এবং টিডিড নামক পতঙ্গকে মৃত প্রাণীর তালিকা থেকে বাদ দিয়ে এ দুটির মৃতকেও হালাল করা হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমাদের জন্য দুটি মৃত হালাল - মাছ এবং টিডি (এক জাতীয় ফড়িং)। [বাগভী, শরহুস-সুন্নাহ, ২৮০৩, সুনানে ইবনে মাজাহ ৩২১৮]

সুতরাং বোঝা গেল যে, জীব-জন্তুর মধ্যে মাছ এবং ফড়িং মৃতের পর্যায়ভুক্ত হবে না, এ দুটি যবেহ না করেও খাওয়া যাবে। অনুরূপ যেসব জীব-জন্তু ধরে যবেহ্ করা সম্ভব নয়, সেগুলোকে বিসমিল্লাহ বলে তীর কিংবা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে যদি মারা হয়, তবে সেগুলোও হালাল হবে, এমতাবস্থায়ও শুধু আঘাত দিয়ে মারলে চলবে না, কোনো ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে আঘাত করা শর্ত। আজকাল একরকম চোখা গুলী ব্যবহার হয়, এ ধরণের গুলী সম্পর্কে কেউ কেউ মনে করতে পারে যে, এসব ধারালো গুলীর আঘাতে মৃত জন্তুর হুকুম তীরের আঘাতে মৃতের পর্যায়ভুক্ত। কিন্তু আলেমগণের সম্মিলিত অভিমত অনুযায়ী বন্দুকের গুলী চোখা এবং ধারালো হলেও তা তীরের পর্যায়ভুক্ত হয় না। কেননা, তীরের আঘাত ছুরির আঘাতের ন্যায়, অপরদিকে বন্দুকের গুলী চোখা হলেও গায়ে বিদ্ধ হয়ে গায়ে বিস্ফোরণ ও দাহিকা শক্তির প্রভাবে জন্তুর মৃত্যু ঘটায়। সুতরাং এরূপ গুলী দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত জানোয়ার যবেহ্ করার আগে মারা গেলে তা খাওয়া হালাল হবে না। এক্ষেত্রে গুলী দ্বারা শিকার করা হলে তা আবার যবেহ্ করতে হবে।

এখানে আরও জানা আবশ্যক যে, আয়াতে ‘তোমাদের জন্য মৃত হারাম’ বলতে মৃত জানোয়ারের গোশত খাওয়া যেমন হারাম, তেমনি এগুলোর ক্রয়-বিক্রয়ও হারাম হিসেবে বিবেচিত হবে। যাবতীয় অপবিত্র বস্তু সম্পর্কে সেই একই বিধান প্রযোজ্য। অর্থাৎ মৃত জানোয়ারের গোশ্‌ত ব্যবহার যেমন হারাম, তেমনি এগুলো ক্রয়-বিক্রয় কিংবা অন্য কোনো উপায়ে এগুলো থেকে যেকোনভাবে লাভবান হওয়াও হারাম। এমনকি মৃত জীব-জন্তুর গোশ্‌ত নিজ হাতে কোনো গৃহপালিত জন্তুকে খাওয়ানোও জায়েয নয়।

তাছাড়া আয়াতে ‘মৃত' শব্দটির অন্য কোনো বিশেষণ ছাড়া সাধারণভাবে ব্যবহার করাতে প্রতীয়মান হয় যে, হারামের হুকুমও ব্যাপক এবং তন্মধ্যে মৃত জন্তুর সমুদয় অংশই শামিল। কিন্তু অন্য এক আয়াতে (عَلٰي طَاعِمٍ يَّطْعَمُهٗٓ)। [সূরা আল-আন’আম: ১৪৫]

শব্দ দ্বারা এ বিষয়টিও ব্যাখ্যা করে দেয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায় যে, মৃত জন্তুর শুধু সে অংশই হারাম যেটুকু খাওয়ার যোগ্য। সুতরাং মৃত জন্তুর হাড়, পশম প্রভৃতি যেসব অংশ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় না, সেগুলোর ব্যবহার করা হারাম নয়; সম্পূর্ণ জায়েয। কেননা, কুরআনের অন্য এক আয়াতে আছে,

(وَمِنْ اَصْوَافِهَا وَاَوْبَارِهَا وَاَشْعَارِهَآ اَثَاثًا وَّمَتَاعًا اِلٰى حِيْنٍ) [সূরা আন-নাহল: ৮০]

এতে হালাল জানোয়ারসমূহের পশম প্রভৃতির দ্বারা ফায়দা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু এখানে যবেহ্ করার শর্ত আরোপ করা হয়নি। চামড়ার মধ্যে যেহেতু রক্ত প্রভৃতি নাপাকীর সংমিশ্রণ থাকে, সেজন্য মৃত জানোয়ারের চামড়া শুকিয়ে পাকা না করা পর্যন্ত নাপাক এবং ব্যবহার হারাম। কিন্তু পাকা করে নেয়ার পর ব্যবহার করা সম্পূর্ণ জায়েয। সহীহ হাদীসে এ সম্পর্কিত আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে। অনুরূপভাবে মৃত জানোয়ারের চর্বি এবং তদ্বারা তৈরী যাবতীয় সামগ্রীই হারাম। এসবের ব্যবহার কোনো অবস্থাতেই জায়েয নয়। এমনকি এসবের ক্রয়-বিক্রয়ও হারাম। [মাআরিফুল কুরআন]

[২] আয়াতে যেসব বস্তু-সামগ্রীকে হারাম করা হয়েছে, তার দ্বিতীয়টি হচ্ছে রক্ত। এ আয়াতে শুধু রক্ত উল্লেখ হলেও অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, (اَوْ دَمًا مَّسْفُوْحًا) [সূরা আল-আন’আম: ১৪৫] অর্থাৎ ‘প্রবাহমান রক্ত' উল্লেখ রয়েছে। রক্তের সাথে ‘প্রবাহমান’ শব্দ সংযুক্ত করার ফলে শুধু সে রক্তকেই হারাম করা হয়েছে, যা যবেহ করলে বা কেটে গেলে প্রবাহিত হয়। এ কারণেই কলিজা এবং এরূপ জমাট বাঁধা রক্তে গঠিত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফেকাহবিদগণের সর্বসম্মত অভিমত অনুযায়ী পাক ও হালাল। আর যেহেতু শুধুমাত্র প্রবাহমান রক্তই হারাম ও নাপাক, কাজেই যবেহ্ করা জন্তুর গোশতের সাথে রক্তের যে অংশ জমাট বেঁধে থেকে যায়, সেটুকু হালাল ও পাক ৷ ফেকাহবিদ সাহাবী ও তাবেয়ীসহ সমগ্র আলেম সমাজ এ ব্যাপারে একমত। এখানে আরও একটি বিষয় জানা আবশ্যক যে, রক্ত খাওয়া যেমন হারাম, তেমনি অন্য কোনো উপায়ে তা ব্যবহার করাও হারাম। অন্যান্য নাপাক রক্তের ন্যায় রক্তের ক্রয়-বিক্রয় এবং তা দ্বারা অর্জিত লাভালাভও হারাম।

[৩] আলোচ্য আয়াতে তৃতীয় যে বস্তুটি হারাম করা হয়েছে, সেটি হলো শূকরের গোশ্‌ত। এখানে শূকরের সাথে ‘লাহ্‌ম’ বা গোশ্‌ত শব্দ সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে। ইমাম কুরতুবী বলেন, এর দ্বারা শুধু গোশ্‌ত হারাম এ কথা বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। বরং শূকরের সমগ্র অংশ অর্থাৎ হাড়, গোশ্‌ত, চামড়া, চর্বি, রগ, পশম প্রভৃতি সর্বসম্মতিক্রমেই হারাম। তবে লাহ্‌ম তথা গোশ্‌ত যোগ করে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, শূকর অন্যান্য হারাম জন্তুর ন্যায় নয়, তাই এটি যবেহ্ করলেও পাক হয় না। কেননা, গোশ্‌ত খাওয়া হারাম এমন অনেক জন্তু রয়েছে যাদের যবেহ করার পর সেগুলোর হাড়, চামড়া প্রভৃতি পাক হতে পারে। কিন্তু যবেহ্ করার পরও শূকরের গোশত হারাম তো বটেই, নাপাকও থেকে যায়। কেননা, এটি একাধারে যেমনি হারাম তেমনি ‘নাজাসে-আইন’ বা অপবিত্র বস্তু। [মাআরিফুল কুরআন, সংক্ষেপিত]

[৪] আয়াতে উল্লেখিত চতুর্থ হারাম বস্তু হচ্ছে সেসব জীব-জন্তু, যা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নামে যবেহ বা উৎসর্গ করা হয়। সাধারণত এর তিনটি উপায় প্রচলিত রয়েছে। প্রথমতঃ আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে যা উৎসর্গ করা হয় এবং যবেহ্ করার সময়ও সে নাম নিয়েই যবেহ করা হয়, যে নামে তা উৎসর্গিত হয়। এমতাবস্থায় যবেহকৃত জন্তু সমস্ত মত-পথের আলেম ও ফেকাহবিদগণের দৃষ্টিতেই হারাম ও নাপাক। এর কোনো অংশের দ্বারাই ফায়দা গ্রহণ জায়েয হবে না। (وَمَآ اُهِلَّ لِغَيْرِ اللّٰهِ بِهٖ) আয়াতে যে অবস্থার কথা বোঝানো হয়েছে এ অবস্থা এর সরাসরি নমুনা, যে ব্যাপারে কারো কোনো মতভেদ নেই। দ্বিতীয় অবস্থা হচ্ছে, আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কোনো কিছুর সন্তুষ্টি বা নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে যা যবেহ্ করা হয়, তবে যবেহ্ করার সময় তা আল্লাহ্‌র নাম নিয়েই যবেহ্ করা হয়। যেমন অনেক অজ্ঞ মুসলিম পীর, কবরবাসী বা জীনের সন্তুষ্টি অর্জনের মানসে গরু, ছাগল, মুরগী ইত্যাদি মানত করে তা যবেহ করে থাকে। কিন্তু যবেহ করার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়েই তা যবেহ করা হয়। এ সুরতটিও ফকীহগণের সর্বসম্মত অভিমত অনুযায়ী হারাম এবং যবেহকৃত জন্তু মৃতের শামিল। দুররে মুখতার কিতাবুয-যাবায়েহ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো আমীরের আগমন উপলক্ষে তারই সম্মানার্থে কোনো পশু যবেহ্ করা হয়, তবে যবেহকৃত সে পশুটি হারাম হয়ে যাবে। কেননা, এটাও তেমনি, আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কোনো কিছুর নামে যা যবেহ করা হয়।’ - এ আয়াতের নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত; যদিও যবেহ্ করার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়েই তা যবেহ্ করা হয়। আল্লামা শামীও এ অভিমত সমর্থন করেছেন। তৃতীয় সুরত হচ্ছে পশুর কান কেটে অথবা শরীরের অন্য কোথাও কোনো চিহ্ন অঙ্কিত করে কোনো দেব-দেবী বা পীর-ফকীরের নামে ছেড়ে দেয়া হয়। সেগুলো দ্বারা কোনো কাজ নেয়া হয় না, যবেহ করাও উদ্দেশ্য থাকে না। বরং যবেহ্ করাকে হারাম মনে করে। এ শ্রেণীর পশু আলোচ্য দু'আয়াতের কোনোটিরই আওতায় পড়ে না। এ শ্রেণীর পশুকে কুরআনের ভাষায় ‘বহীরা" বা ‘সায়েবা’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। এ ধরনের পশু সম্পর্কে হুকুম হচ্ছে যে, এ ধরনের কাজ অর্থাৎ কারো নামে কোনো পশু প্রভৃতি জীবন্ত উৎসর্গ করে ছেড়ে দেয়া কুরআনের সরাসরি নির্দেশ অনুযায়ী হারাম। যেমন বলা হয়েছে,

(مَا جَعَلَ اللّٰهُ مِنْۢ بَحِيْرَةٍ وَّلَا سَاىِٕبَةٍ)

“আল্লাহ্‌ তা'আলা ‘বহীরা’ ও ‘সায়েবা’ সম্পর্কে কোনো বিধান দেননি।" [সূরা আল-মায়িদাহ ১০৩]

তবে এ ধরনের হারাম আমল কিংবা সংশ্লিষ্ট পশুটিকে হারাম মনে করার ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারণেই সেটি হারাম হয়ে যাবে না। বরং হারাম মনে করাতেই তাদের একটা বাতিল মতবাদকে সমর্থন এবং শক্তি প্রদান করা হয়। তাই এরূপ উৎসর্গকৃত পশু অন্যান্য সাধারণ পশুর মতই হালাল। শরীআতের বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পশুর উপর তার মালিকের মালিকানা বিনষ্ট হয় না, যদিও সে ভ্রান্ত বিশ্বাসের ভিত্তিতে এরূপ মনে করে যে, এটি আমার মালিকানা থেকে বের হয়ে যে নামে উৎসর্গ করা হয়েছে তারই মালিকানায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু শরীআতের বিধানমতে যেহেতু তার সে উৎসর্গীকরণই বাতিল, সুতরাং সে পশুর উপর তারই পূর্ণ মালিকানা কায়েম থাকে। [মাআরিফুল কুরআন]

[৫] এ ক্ষেত্রে কুরআনুল কারীম মরণাপন্ন অবস্থায়ও হারাম বস্তু খাওয়াকে হালাল ও বৈধ বলেনি; বলেছে, “তাতে তার কোনো পাপ নেই।” এর মর্ম এই যে, এসব বস্তু তখনো যথারীতি হারামই রয়ে গেছে, কিন্তু যে লোক খাচ্ছে তার অনোন্যপায় অবস্থার প্রেক্ষিতে হারাম খাদ্য গ্রহণের পাপ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ আয়াতে অনোন্যপায় হওয়ার কারণ উল্লেখ করা হয়নি। অন্য আয়াতে তা বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে, “তবে কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে তখন আল্লাহ্‌ নিশ্চয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-মায়েদাহ:৩] অর্থাৎ ক্ষুধার কারণেই শুধু হারাম বস্তু গ্রহণ করা যেতে পারে।
Arabische uitleg van de Qur'an:
 
Vertaling van de betekenissen Vers: (173) Surah: Soerat Albaqarah (De Koe)
Surah's Index Pagina nummer
 
Vertaling van de betekenissen Edele Qur'an - Bengaalse vertaling, vertaald door Abu Bakr Zakaria - Index van vertaling

De betekenissen van de Heilige Koran zijn vertaald naar het Bengaals door Dr. Abu Bakr Mohammed Zakaria.

Sluit