Vertaling van de betekenissen Edele Qur'an - Bengaalse vertaling, vertaald door Abu Bakr Zakaria * - Index van vertaling


Vertaling van de betekenissen Vers: (11) Surah: Soerat An-Noer (Het Licht)
إِنَّ ٱلَّذِينَ جَآءُو بِٱلۡإِفۡكِ عُصۡبَةٞ مِّنكُمۡۚ لَا تَحۡسَبُوهُ شَرّٗا لَّكُمۖ بَلۡ هُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۚ لِكُلِّ ٱمۡرِيٕٖ مِّنۡهُم مَّا ٱكۡتَسَبَ مِنَ ٱلۡإِثۡمِۚ وَٱلَّذِي تَوَلَّىٰ كِبۡرَهُۥ مِنۡهُمۡ لَهُۥ عَذَابٌ عَظِيمٞ
নিশ্চয় যারা এ অপবাদ [১] রচনা করেছে, তারা তো তোমাদেরই একটি দল [২]; এটাকে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করো না; বরং এটাতো তোমাদের জন্য কল্যাণকর; তাদের প্রত্যেকের জন্য আছে তাদের পাপকাজের ফল [৩] এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছে, তার জন্য আছে মহা শাস্তি [৪]।
[১] পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, সূরা আন-নূরের অধিকাংশ আয়াত চারিত্রিক নিষ্কলুষতা ও পবিত্ৰতা সংরক্ষণের জন্য প্রবর্তিত বিধানাবলীর সাথে সম্পর্কযুক্ত। এর বিপরীতে চারিত্রিক নিষ্কলুষতা ও পবিত্রতার উপর অবৈধ হস্তক্ষেপ ও এর বিরুদ্ধাচরণের জাগতিক শাস্তি ও আখেরাতের মহা বিপদের কথা আলোচনা করা হয়েছে। তাই পরম্পরায় প্রথমে ব্যভিচারের শাস্তি, তারপর অপবাদের শাস্তি ও পরে লি‘আনের কথা বর্ণিত হয়েছে। অপবাদের শাস্তি সম্পর্কে চার জন সাক্ষীর অবর্তমানে কোনো পবিত্ৰা নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করাকে মহাপাপ সাব্যস্ত করা হয়েছে। এরূপ অপবাদ আরোপকারীর শাস্তি আশিটি বেত্ৰাঘাত প্রবর্তন করা হয়েছে। এ বিষয়টি সাধারণ মুসলিম পবিত্ৰা নারীদের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। ষষ্ট হিজরীতে কতিপয় মুনাফেক উন্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার প্রতি এমনি ধরণের অপবাদ আরোপ করেছিল এবং তাদের অনুসরণ করে কয়েকজন মুসলিমও এ আলোচনায় জড়িত হয়ে পড়েছিলেন। ব্যাপারটি সাধারণ মুসলিম সচ্চরিত্রা নারীদের পক্ষে অত্যাধিক গুরুতর ছিল। তাই কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্‌ তা‘আলা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার পবিত্ৰতা বর্ণনা করে এ স্থলে উপরোক্ত দশটি আয়াত নাযিল করেছেন। [ইবন কাসীর] এসব আয়াতে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার পবিত্ৰতা ঘোষণা করতঃ তার ব্যাপারে যারা কুৎসা রটনা ও অপপ্রচারে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের সবাইকে হুশিয়ার করা হয়েছে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের বিপদ বর্ণনা করা হয়েছে। এই অপবাদ রটনার ঘটনাটি কুরআন ও হাদীসে ‘ইফকের ঘটনা’ নামে খ্যাত। ইফক শব্দের অর্থ জঘন্য মিথ্যা অপবাদ। [বাগভী] এসব আয়াতের তাফসীর বুঝার জন্য অপবাদের কাহিনীটি জেনে নেয়া অত্যন্ত জরুরী। তাই প্ৰথমে সংক্ষেপে কাহিনীটি বর্ণনা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থে এই ঘটনাটি অসাধারণ দীর্ঘ ও বিস্তারিত আকারে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এই যে, ষষ্ঠ হিজরীতে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী মুস্তালিক নামান্তরে মুরাইসী যুদ্ধে গমন করেন, তখন স্ত্রীদের মধ্য থেকে আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা সাথে ছিলেন। ইতিপূর্বে নারীদের পর্দার বিধান নাযিল হয়েছিল। তাই আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার উটের পিঠে পর্দাবিশিষ্ট আসনের ব্যবস্থা করা হয়। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা প্রথমে পর্দাবিশিষ্ট আসনে সওয়ার হয়ে যেতেন। এরপর লোকেরা আসনটিকে উটের পিঠে বসিয়ে দিত। এটাই ছিল নিত্যকার নিয়ম। যুদ্ধ সমাপ্তির পর মদীনায় ফেরার পথে একদিন একটি ঘটনা ঘটল। এক মনযিলে কাফেলা অবস্থান করার পর শেষ রাতে প্রস্থানের কিছু পূর্বে ঘোষণা করা হল যে, কাফেলা কিছুক্ষণের মধ্যেই এখান থেকে রওয়ানা হয়ে যাবে। তাই প্ৰত্যেকেই যেন নিজ নিজ প্রয়োজন সেরে প্রস্তুত হয়। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা প্রয়োজন সারতে জঙ্গলের দিকে চলে গেলেন। সেখানে ঘটনাক্রমে তার গলার হার ছিঁড়ে কোথাও হারিয়ে গেল। তিনি সেখানে হারটি খুঁজতে লাগলেন। এতে বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। অতঃপর স্বস্থানে ফিরে এসে দেখলেন যে, কাফেলা রওয়ানা হয়ে গেছে। রওয়ানা হওয়ার সময় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার আসনটি যথারীতি উটের পিঠে সওয়ার করিয়ে দেয়া হয়েছে এবং বাহকরা মনে করেছে যে, তিনি ভেতরেই আছেন। এমনকি উঠানোর সময়ও সন্দেহ হল না। কারণ, তিনি তখন অল্পবয়স্কা ক্ষীণাঙ্গিণী ছিলেন। ফলে আসনটি যে শূণ্য এরূপ ধারণাও কারো মনে উদয় হল না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা ফিরে এসে যখন কাফেলাকে পেলেন না, তখন অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা ও স্থিরচিত্ততার পরিচয় দিলেন এবং কাফেলার পশ্চাতে দৌড়াদৌড়ি করা কিংবা এদিক-ওদিক খুঁজে দেখার পরিবর্তে স্বস্থানে চাদর গায়ে জড়িয়ে বসে রইলেন। তিনি মনে করলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সঙ্গীগণ যখন জানতে পারবেন যে, আমি আসনে অনুপস্থিত তখন আমার খোঁজে তারা এখানে আসবেন। কাজেই আমি এদিক-সেদিক চলে গেলে তাদের জন্য আমাকে খুঁজে বের করা মুশকিল হয়ে যাবে। সময় ছিল শেষ রাত, তাই তিনি কিছুক্ষণের মধ্যেই নিদ্রার কোলে ঢলে পড়লেন।

অপরদিকে সফওয়ান ইবন মুয়াত্তাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কাজের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন যে, তিনি কাফেলার পশ্চাতে সফর করবেন এবং কাফেলা রওয়ানা হয়ে যাওয়ার পর কোনো কিছু পড়ে থাকলে তা কুড়িয়ে নেবেন। তিনি সকাল বেলায় এখানে পৌঁছলেন। তখন পর্যন্ত প্রভাত-রশ্মি ততটুকু উজ্জ্বল ছিল না। তিনি শুধু একজন মানুষকে নিদ্রামগ্ন দেখতে পেলেন। কাছে এসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে চিনে ফেললেন। কারণ, পর্দা সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হওয়ার পূর্বে তিনি তাকে দেখেছিলেন। চেনার পর অত্যন্ত বিচলিত কণ্ঠে তার মুখ থেকে ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাইহি রাজি‘উন’ উচ্চারিত হয়ে গেল। এই বাক্য আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার কানে পৌছার সাথে সাথে তিনি জাগ্রত হয়ে গেলেন এবং মুখমণ্ডল ঢেকে ফেললেন। সফওয়ান নিজের উট কাছে এনে বসিয়ে দিলেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাতে সওয়ার হয়ে গেলেন এবং সফওয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু নিজে উটের নাকের রশি ধরে পায়ে হেঁটে চলতে লাগলেন। অবশেষে তিনি কাফেলার সাথে মিলিত হয়ে গেলেন।

আব্দুল্লাহ ইবন উবাই ছিল দুশ্চরিত্র, মুনাফেক ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শত্রু। সে একটা সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গেল। এই হতভাগা আবোল-তাবোল বকতে শুরু করল। কিছুসংখ্যক সরল-প্রাণ মুসলিমও কানকথায় সাড়া দিয়ে এ আলোচনায় মেতে উঠল। পুরুষদের মধ্যে হাসসান ইবন সাবিত, মিস্তাহ ইবন আসাল এবং নারীদের মধ্যে হামনাহ বিনত জাহাশ ছিল এ শ্রেণীভুক্ত।

যখন এই মুনাফেক-রটিত অপবাদের চর্চা হতে লাগল, তখন স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এতে খুবই মর্মাহত হলেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার তো দুঃখের সীমাই ছিল না। সাধারণ মুসলিমগণও তীব্রভাবে বেদানাহত হলেন। একমাস পর্যন্ত এই আলোচনা চলতে লাগল। অবশেষে আল্লাহ্‌ তা‘আলা উন্মুল মু’মিনীন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার পবিত্রতা বর্ণনা এবং অপবাদ রটনাকারী ও এতে অংশগ্রহণকারীদের নিন্দা করে উপরোক্ত আয়াতসমূহ নাযিল করলেন। অপবাদের হদ-এ বর্ণিত কুরআনী-বিধান অনুযায়ী অপবাদ আরোপকারীদের কাছ থেকে সাক্ষ্য তলব করা হল। তারা এই ভিত্তিহীন খবরের সাক্ষ্য কোথা থেকে আনবে? ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরীয়তের নিয়মানুযায়ী তাদের প্রতি অপবাদের হদ প্রয়োগ করলেন। প্রত্যেককে আশিটি বেত্ৰাঘাত করা হল। [আবু দাউদের বর্ণনায়, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন জন মুসলিম মিসতাহ, হামানাহ ও হাসসানের প্রতি হদ প্রয়োগ করেন। আবু দাউদ ৪৪৭৪] অতঃপর মুসলিমরা তাওবাহ করে নেয় এবং মুনাফেকরা তাদের অবস্থানে কায়েম থাকে। তবে আব্দুল্লাহ ইবন উবাইকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাস্তি দিয়েছেন প্রমাণিত হয়নি। যদিও তাবরানী কয়েকজন সাহাবী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে শাস্তি দিয়েছেন। [দেখুন- মু‘জামুল কাবীর ২৩/১৪৬ (২১৪), ২৩/১৩৭ (১৮১), ২৩/১২৫ (১৬৪), ২৩/১২৪ (১৬৩)]

[২] عُصْبَةٌ শব্দের অর্থ দশ থেকে চল্লিশ জন পর্যন্ত লোকের দল। এর কমবেশীর জন্যও এই শব্দ ব্যবহৃত হয়। [দেখুন-ইবন কাসীর, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]

[৩] অর্থাৎ যারা এই অপবাদে যতটুকু অংশ নিয়েছে, তাদের জন্য সে পরিমাণ গোনাহ লেখা হয়েছে এবং সে অনুপাতেই তাদের শাস্তি হবে। [বাগভী]

[৪] উদ্দেশ্য এই যে, যে ব্যক্তি অপবাদে বড় ভূমিকা নিয়েছে অর্থাৎ একে রচনা করে চালু করেছে, তার জন্য গুরুতর আযাব রয়েছে। বলাবাহুল্য, এ ব্যক্তি হচ্ছে মুনাফেক আব্দুল্লাহ ইবন উবাই। [মুয়াসসার]
Arabische uitleg van de Qur'an:
 
Vertaling van de betekenissen Vers: (11) Surah: Soerat An-Noer (Het Licht)
Surah's Index Pagina nummer
 
Vertaling van de betekenissen Edele Qur'an - Bengaalse vertaling, vertaald door Abu Bakr Zakaria - Index van vertaling

De betekenissen van de Heilige Koran zijn vertaald naar het Bengaals door Dr. Abu Bakr Mohammed Zakaria.

Sluit