Salin ng mga Kahulugan ng Marangal na Qur'an - Salin sa Wikang Benggali ni Abu Bakr Zakaria * - Indise ng mga Salin


Salin ng mga Kahulugan Surah: Fātir   Ayah:

সূরা ফাতির

ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ فَاطِرِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ جَاعِلِ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ رُسُلًا أُوْلِيٓ أَجۡنِحَةٖ مَّثۡنَىٰ وَثُلَٰثَ وَرُبَٰعَۚ يَزِيدُ فِي ٱلۡخَلۡقِ مَا يَشَآءُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ
সকল প্রশংসা আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহরই [১]--- যিনি রাসূল করেন ফিরিশতাদেরকে যারা দুই দুই, তিন তিন অথবা চার চার পক্ষবিশিষ্ট [২]। তিনি সৃষ্টিতে যা ইচ্ছে বৃদ্ধি করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
৩৫- সূরা ফাতির
৪৫ আয়াত, মক্কী

[১] আল্লাহ্ তা'আলা এখানে তাঁর নিজের প্রশংসা করছেন। কারণ, তিনি আসমান, যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। এ সৃষ্টিই প্রমাণ করছে যে, তিনি পূর্ণ ক্ষমতাবান। আর যিনি এত ক্ষমতার অধিকারী তাঁর প্রশংসা করাই যথাযথ। [সা’দী] এ আয়াত ছাড়াও কুরআনের অন্যান্য আয়াতে এ ধরণের প্রশংসা আল্লাহ নিজেই করেছেন। যেমন, সূরা আল-ফাতিহার প্রথমে, সূরা আল-আন’আমের শুরুতে, সূরা আস-সাফফাতের শেষে। [আদওয়াউল বায়ান]

[২] অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা ফেরেশতাগণকে পালকবিশিষ্ট ডানা দান করেছেন যা দ্বারা তারা উড়তে পারে। এ ফেরেশতাদের হাত, ডানার অবস্থা ও ধরন জানার কোনো মাধ্যম আমাদের কাছে নেই। কিন্তু এ অবস্থা ও ধরন বর্ণনা করার জন্য আল্লাহ যখন এমন শব্দ ব্যবহার করেছেন যা মানুষের ভাষায় পাখিদের হাত ও ডানার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে তখন অবশ্যই আমাদের ভাষায় এ শব্দকেই আসল অবস্থা ও ধরন বর্ণনার নিকটতর বলে ধারণা করা যেতে পারে। এর কারণ সুস্পষ্ট যে, তারা আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত দুরত্ব বার বার অতিক্রম করে। এটা দ্রুতগতি সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমেই সম্ভবপর। উড়ার মাধ্যমে দ্রুতগতি হয়ে থাকে। ফেরেশতাগণের পাখার সংখ্যা বিভিন্ন। কারও দুই দুই, কারও তিন তিন এবং কারও চার চার খানা পাখা রয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় যে, বিভিন্ন ফেরেশতাকে আল্লাহ বিভিন্ন পর্যায়ের শক্তি দান করেছেন এবং যাকে দিয়ে যেমন কাজ করতে চান তাকে ঠিক তেমনিই দ্রুতগতি ও কর্মশক্তিও দান করেছেন। এখানেই শেষ নয়, এক হাদীসে এসেছে, জিবরাঈল আলাইহিস সালামের ছয়শ' পাখা রয়েছে। [বুখারী ৩২৩২, মুসলিম ১৭৪] দৃষ্টান্ত স্বরূপ চার পর্যন্ত উল্লেখ হয়েছে।
Ang mga Tafsir na Arabe:
مَّا يَفۡتَحِ ٱللَّهُ لِلنَّاسِ مِن رَّحۡمَةٖ فَلَا مُمۡسِكَ لَهَاۖ وَمَا يُمۡسِكۡ فَلَا مُرۡسِلَ لَهُۥ مِنۢ بَعۡدِهِۦۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ
আল্লাহ্ মানুষের প্রতি কোনো অনুগ্রহ অবারিত করলে কেউ তা নিবারণকারী নেই এবং তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে পরে কেউ তার উন্মুক্তকারী নেই [১]। আর তিনি পরাক্রমশালী, হিকমতওয়ালা [২]।
[১] অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, “এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দান করবে, যদি তিনি তাঁর রিযিক বন্ধ করে দেন? বরং তারা অবাধ্যতা ও সত্য বিমুখতায় অবিচল রয়েছে।” [সূরা আল-মুলক ২১]

[২] এক হাদীসে এ বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে বলেন, হে বৎস! জেনে রাখ, যদি দুনিয়ার সমস্ত জাতি তোমার কোনো উপকার করতে চায় তবে সে আল্লাহ যা নির্ধারিত করে রেখেছেন এর বাইরে তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না, পক্ষান্তরে যদি দুনিয়ার সমস্ত জাতি তোমার ক্ষতি করতে চায় তবে ততটুকু ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার উপর লিখে রেখেছেন।” [তিরমিয়ী ২৫১৬]
Ang mga Tafsir na Arabe:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتَ ٱللَّهِ عَلَيۡكُمۡۚ هَلۡ مِنۡ خَٰلِقٍ غَيۡرُ ٱللَّهِ يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ فَأَنَّىٰ تُؤۡفَكُونَ
হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্বরণ কর। আল্লাহ্ ছাড়া কি কোনো স্রষ্টা আছে, যে তোমাদেরকে আসমানসমূহ ও যমীন থেকে রিযিক দান করে? আল্লাহ্ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। কাজেই তোমাদেরকে কোথায় ফিরানো হচ্ছে [১]?
[১] অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “বলুন, ‘কে আসমানসমূহ ও যমীনের রব?’ বলুন, ‘আল্লাহ।’ বলুন, ‘তবে কি তোমরা অভিভাবকরূপে গ্ৰহণ করেছ আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে যারা নিজেদের লাভ বা ক্ষতি সাধনে সক্ষম নয়?’ বলুন, ‘অন্ধ ও চক্ষুস্মান কি সমান হতে পারে? নাকি অন্ধকার ও আলো সমান হতে পারে?’ তবে কি তারা আল্লাহর এমন শরীক করেছে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করেছে, যে কারণে সৃষ্টি তাদের কাছে সদৃশ মনে হয়েছে? বলুন, ‘আল্লাহ সকল বস্তুর স্রষ্টা; আর তিনি এক, মহা প্রতাপশালী।” [সূরা আর-রাদ ১৬] [আদওয়াউল বায়ান]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدۡ كُذِّبَتۡ رُسُلٞ مِّن قَبۡلِكَۚ وَإِلَى ٱللَّهِ تُرۡجَعُ ٱلۡأُمُورُ
আর যদি এরা আপনার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তবে আপনার আগেও রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা হয়েছিল [১]। আর আল্লাহর দিকেই সকল বিষয় প্রত্যাবর্তিত হবে।
[১] কাতাদাহ বলেন, এ আয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সান্তনা প্ৰদান করা হচ্ছে, যেমনটি তোমরা শুনতে পাচ্ছ। [তাবারী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّ وَعۡدَ ٱللَّهِ حَقّٞۖ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ ٱلۡحَيَوٰةُ ٱلدُّنۡيَا وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِٱللَّهِ ٱلۡغَرُورُ
হে মানুষ! নিশ্চয় আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; কাজেই দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সে প্রবঞ্চক (শয়তান) যেন কিছুতেই তোমাদেরকে আল্লাহর ব্যাপারে প্রবঞ্চিত না করে [১]।
[১] الغرور শব্দটি আধিক্যবোধক। অৰ্থাৎ, “অতি প্ৰবঞ্চক” বা “বড় প্রতারক” এখানে হচ্ছে শয়তান যেমন সামনের বাক্য বলছে। তার কাজই মানুষকে প্রতারিত করে কুফার ও গোনাহে লিপ্ত করা। বলা হয়েছে, ‘শয়তান যেন তোমাদেরকে আল্লাহর ব্যাপারে ধোঁকা না দেয়। মূলতঃ শয়তানের ধোঁকা বিভিন্ন ধরনের। কখনো কখনো সে মন্দ কর্মকে শোভনীয় করে মানুষদেরকে তাতে লিপ্ত করে দেয়। তখন মানুষের অবস্থা হয় যে, তারা গোনাহ করার সাথে সাথে মনে করতে থাকে যে, তারা আল্লাহর প্রিয় এবং তাদের শাস্তি হবে না। আবার কখনো কখনো সন্দেহ সৃষ্টি করে তাদেরকে পথভ্ৰষ্ট করে দেয়। শয়তান লোকদেরকে একথা বুঝায় যে, আসলে আল্লাহ বলে কিছুই নেই এবং কিছু লোককে এ বিভ্রান্তির শিকার করে যে, আল্লাহ একবার দুনিয়াটা চালিয়ে দিয়ে তারপর বসে আরাম করছেন, এখন তাঁর সৃষ্ট এ বিশ্ব-জাহানের সাথে কার্যত তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। আবার কিছু লোককে সে এভাবে ধোঁকা দেয় যে, আল্লাহ অবশ্যই এ বিশ্ব-জাহানের ব্যবস্থাপনা করে যাচ্ছেন কিন্তু তিনি মানুষকে পথ দেখানোর কোনো দায়িত্ব নেননি। কাজেই এ অহী ও রিসালাত নিছক একটি ধোঁকাবাজী ছাড়া আর কিছুই নয়। সে কিছু লোককে এ মিথ্যা আশ্বাসও দিয়ে চলছে যে, আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও মেহেরবান, তোমরা যতই গোনাহ কর না কেন তিনি সব মাফ করে দেবেন এবং তাঁর এমন কিছু প্রিয় বান্দা আছে যাদেরকে আঁকড়ে ধরলেই তোমরা কামিয়াব হয়ে যাবে। [এ ব্যাপারে বিস্তারিত দেখুন, ইবনুল কাইয়্যেম, ইগাসাতুল লাহফান ফী মাসায়িদিস শায়তান]
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِنَّ ٱلشَّيۡطَٰنَ لَكُمۡ عَدُوّٞ فَٱتَّخِذُوهُ عَدُوًّاۚ إِنَّمَا يَدۡعُواْ حِزۡبَهُۥ لِيَكُونُواْ مِنۡ أَصۡحَٰبِ ٱلسَّعِيرِ
নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু; কাজেই তাকে শত্রু হিসাবেই গ্রহণ কর। সে তো তার দলবলকে ডাকে শুধু এজন্য যে, তারা যেন প্রজ্জলিত আগুনের অধিবাসী হয়।
Ang mga Tafsir na Arabe:
ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدٞۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ لَهُم مَّغۡفِرَةٞ وَأَجۡرٞ كَبِيرٌ
যারা কুফরী করে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। আর যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
Ang mga Tafsir na Arabe:
أَفَمَن زُيِّنَ لَهُۥ سُوٓءُ عَمَلِهِۦ فَرَءَاهُ حَسَنٗاۖ فَإِنَّ ٱللَّهَ يُضِلُّ مَن يَشَآءُ وَيَهۡدِي مَن يَشَآءُۖ فَلَا تَذۡهَبۡ نَفۡسُكَ عَلَيۡهِمۡ حَسَرَٰتٍۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمُۢ بِمَا يَصۡنَعُونَ
কাউকে যদি তার মন্দকাজ শোভন করে দেখানো হয় ফলে সে এটাকে উত্তম মনে করে, (সে ব্যক্তি কি তার সমান যে সৎকাজ করে?) তবে আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছে হিদায়াত করেন [১]। অতএব তাদের জন্য আক্ষেপ করে আপনার প্রাণ যেন ধ্বংস না হয়। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত।
[১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সৃষ্টিকে অন্ধকারে সৃষ্টি করেছেন। তারপর সেগুলোতে তার নূরের আলো ফেললেন। সুতরাং যার কাছে এ নূরের কিছু পৌঁছেছে সেই হেদায়েত প্রাপ্ত হবে। আর যার কাছে সে নূরের আলো পৌঁছেনি সে ভ্ৰষ্ট হবে। আর এজন্যই বলি, আল্লাহর জ্ঞান অনুসারে কলম শুকিয়ে গেছে। [তিরমিয়ী ২৬৪২; মুসনাদে আহমাদ ২/১৭৬]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَٱللَّهُ ٱلَّذِيٓ أَرۡسَلَ ٱلرِّيَٰحَ فَتُثِيرُ سَحَابٗا فَسُقۡنَٰهُ إِلَىٰ بَلَدٖ مَّيِّتٖ فَأَحۡيَيۡنَا بِهِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَاۚ كَذَٰلِكَ ٱلنُّشُورُ
আর আল্লাহ্, যিনি বায়ু পাঠিয়ে তা দ্বারা মেঘমালা সঞ্চারিত করেন। তারপর আমরা সেটাকে নির্জীব ভুখণ্ডের দিকে পরিচালিত করি, এরপর আমরা তা দ্বারা যমীনকে তার মৃত্যুর পর আবার জীবিত করি। এভাবেই হবে মৃত্যুর পর আবার জীবিত হয়ে উঠা [১]।
[১] মৃত্যুর পর জীবিত হয়ে উঠার জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে উদ্ভিদ উৎপন্ন করার উদাহরণ আল্লাহ্ তা'আলা কুরআনের অন্যত্রও পেশ করেছেন। [আদওয়াউল বায়ান]
Ang mga Tafsir na Arabe:
مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡعِزَّةَ فَلِلَّهِ ٱلۡعِزَّةُ جَمِيعًاۚ إِلَيۡهِ يَصۡعَدُ ٱلۡكَلِمُ ٱلطَّيِّبُ وَٱلۡعَمَلُ ٱلصَّٰلِحُ يَرۡفَعُهُۥۚ وَٱلَّذِينَ يَمۡكُرُونَ ٱلسَّيِّـَٔاتِ لَهُمۡ عَذَابٞ شَدِيدٞۖ وَمَكۡرُ أُوْلَٰٓئِكَ هُوَ يَبُورُ
যে কেউ সম্মান-প্রতিপত্তি চায়, তবে সকল সম্মান-প্রতিপত্তির মালিক তো আল্লাহ্ই [১]। তাঁরই দিকে পবিত্র বাণিসমূহ হয় সমুত্থিত এবং সৎকাজ, তিনি তা করেন উন্নীত [২]। আর যারা মন্দকাজের ফন্দি আঁটে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। আর তাদের ষড়যন্ত্র, তা ব্যর্থ হবেই।
[১] অর্থাৎ সম্মান চাইলে কেবলমাত্র তাঁর কাছেই চাওয়া উচিত। আর তা চাইতে হবে তাঁর আনুগত্য করেই। কারণ, তিনি সম্মান প্রতিপত্তির মালিক। [বাগভী, মুয়াসসার] আসল ও চিরস্থায়ী মর্যাদা, দুনিয়া থেকে নিয়ে আখেরাত পর্যন্ত যা কখনো হীনতা ও লাঞ্ছনার শিকার হতে পারে না, তা কেবল আল্লাহর বন্দেগীর মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। তুমি যদি তাঁর হয়ে যাও, তাহলে তাঁকে পেয়ে যাবে এবং যদি তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হবে। [দেখুন, কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]

[২] ইবন আব্বাস বলেন, ভাল কথা হচ্ছে, আল্লাহর যিকির। আর সৎকাজ হচ্ছে, আল্লাহর ফরয আদায় করা, সুতরাং যে কেউ আল্লাহর ফরয আদায়ে আল্লাহর যিকির করবে তারই সে আমল উপরের দিকে উঠবে। আর যে কেউ যিকির করবে, কিন্তু আল্লাহর ফরয আদায় করবে না তার কথা তার আমলের দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে, তখন সেটা তার ধ্বংসের কারণ হবে। [তাবারী] কাতাদাহ বলেন, আল্লাহ তা'আলা আমল ব্যতীত কোনো কথা কবুল করেন না। যে ভাল বলল এবং ভাল আমল করল সেটাই শুধু আল্লাহ কবুল করেন। [তাবারী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَٱللَّهُ خَلَقَكُم مِّن تُرَابٖ ثُمَّ مِن نُّطۡفَةٖ ثُمَّ جَعَلَكُمۡ أَزۡوَٰجٗاۚ وَمَا تَحۡمِلُ مِنۡ أُنثَىٰ وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلۡمِهِۦۚ وَمَا يُعَمَّرُ مِن مُّعَمَّرٖ وَلَا يُنقَصُ مِنۡ عُمُرِهِۦٓ إِلَّا فِي كِتَٰبٍۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ
আর আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে; তারপর শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর তোমাদেরকে করেছেন যুগল! আল্লাহর অজ্ঞাতে কোনো নারী গর্ভ ধারণ করে না এবং প্রসবও করে না। আর কোনো দীর্ঘায়ু ব্যক্তির আয়ু বৃদ্ধি করা হয় না এবং তার আয়ু হ্রাস করা হয় না, কিন্তু তা রয়েছে 'কিতাবে' [১]। এটা আল্লাহর জন্য সহজ [২]।
[১] কিতাবে বলে লাওহে মাহফুযে রয়েছে বুঝানো হয়েছে। [মুয়াসসার] অধিকাংশ তাফসীরবিদদের মতে এ আয়াতের মর্ম এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা যাকে দীর্ঘ জীবন দান করেন, তা পূর্বেই লওহে মাহফুযে লিখিত রয়েছে। অনুরূপভাবে স্বল্প জীবনও পূর্ব থেকে লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ থাকে। যার মর্ম দাঁড়াল, এখানে ব্যক্তিবিশেষের জীবনের দীর্ঘতা বা হ্রস্বতা বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। বরং গোটা মানবজাতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে যে, তাদের কাউকে দীর্ঘ জীবন দান করা হয় এবং কাউকে তার চেয়ে কম। কেউ কেউ বলেন, যদি আয়াতের অর্থ একই ব্যক্তির বয়সের হ্রাসবৃদ্ধি ধরে নেয়া যায়, তবে বয়স হ্রাস করার উদ্দেশ্য এই যে, প্রত্যেক ব্যক্তির বয়স আল্লাহ তা’আলা যা লিখে দিয়েছেন তা নিশ্চিত, কিন্তু এই নির্দিষ্ট বয়ঃক্রম থেকে একদিন অতিবাহিত হলে একদিন হ্রাস পায়, দুদিন অতিবাহিত হলে দুদিন হ্রাস পায়। এমনিভাবে প্রতিটি দিন ও প্রতিটি নিঃশ্বাস তার জীবনকে হ্রাস করতে থাকে। রাসূলুল্লাহ বলেন: “যে ব্যক্তি চায় তার রিযিক প্রশস্ত ও জীবন দীর্ঘ হোক, তার উচিত আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদ্ব্যবহার করা।” [বুখারী ২০৬৭, মুসলিম ২৫৫৭] এই হাদীস থেকে বাহ্যতঃ জানা যায় যে, আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহারের ফলে জীবন দীর্ঘ হয়। সারকথা, যেসব হাদীসে কোনো কোনো কর্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এগুলো সম্পাদন করলে বয়স বেড়ে যায়, সেগুলোর অর্থ, পূর্বেই তার তাকদীরে লিখা আছে অমুক আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, তাই তার আয়ু বর্ধিত আকারে দেয়া হলো। সুতরাং যে কেউ আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করার তাওফীক পাবে সে যেন এটা বুঝে নেয় যে, এ কারণেই হয়তঃ তার আয়ু বৃদ্ধি ঘটেছে।

[২] যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, “হে মানুষ! পুনরুত্থান সম্পর্কে যদি তোমরা সন্দেহে থাক তবে অনুধাবন কর—আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি হতে, তারপর শুক্র হতে, তারপর ‘আলাকাহ’ (রক্তপিণ্ড বা লেগে থাকে এরকম পিণ্ড) হতে, তারপর পূর্ণাকৃতি অথবা অপূৰ্ণাকৃতি গোশতপিণ্ড হতে -- যাতে আমরা বিষয়টি তোমাদের কাছে সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ করি। আর আমরা যা ইচ্ছে তা এক নির্দিষ্ট কালের জন্য মাতৃগর্ভে স্থিত রাখি, তারপর আমরা তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করি, পরে যাতে তোমরা পরিণত বয়সে উপনীত হও। তোমাদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যু ঘটান হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে হীনতম বয়সে প্রত্যাবর্তিত করা হয়, যার ফলে সে জানার পরেও যেন কিছুই (আর) জানে না। [সূরা আল-হাজ্জ ৫] আরও বলেন, “তিনি শুক্র হতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন; অথচ দেখুন, সে প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী!” [সূরা আন-নাহল ৪]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَمَا يَسۡتَوِي ٱلۡبَحۡرَانِ هَٰذَا عَذۡبٞ فُرَاتٞ سَآئِغٞ شَرَابُهُۥ وَهَٰذَا مِلۡحٌ أُجَاجٞۖ وَمِن كُلّٖ تَأۡكُلُونَ لَحۡمٗا طَرِيّٗا وَتَسۡتَخۡرِجُونَ حِلۡيَةٗ تَلۡبَسُونَهَاۖ وَتَرَى ٱلۡفُلۡكَ فِيهِ مَوَاخِرَ لِتَبۡتَغُواْ مِن فَضۡلِهِۦ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ
আর সাগর দুটি একরূপ নয়: একটির পানি সুমিষ্ট ও সুপেয়, অন্যটির পানি লোনা, খর। আর প্রত্যেকটি থেকে তোমরা তাজা গোশত খাও এবং আহরণ কর অলংকার, যা তোমরা পরিধান কর। আর তোমরা দেখ তার বুক চিরে নৌযান চলাচল করে, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
Ang mga Tafsir na Arabe:
يُولِجُ ٱلَّيۡلَ فِي ٱلنَّهَارِ وَيُولِجُ ٱلنَّهَارَ فِي ٱلَّيۡلِ وَسَخَّرَ ٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَۖ كُلّٞ يَجۡرِي لِأَجَلٖ مُّسَمّٗىۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمۡ لَهُ ٱلۡمُلۡكُۚ وَٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ مَا يَمۡلِكُونَ مِن قِطۡمِيرٍ
তিনি রাতকে দিনে প্রবেশ করান এবং দিনকে প্রবেশ করান রাতে, তিনি সূর্য ও চাঁদকে করেছেন নিয়মাধীন; প্রত্যেকে পরিভ্রমণ করে এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। তিনিই আল্লাহ্ তোমাদের রব। আধিপত্য তাঁরই। আর তোমরা তাঁর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারা তো খেজুর আঁটির আবরণেরও অধিকারী নয় [১]।
[১] মূলে “কিতমীর" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কিতমীর বলা হয় খেজুরের আঁটির গায়ে জড়ানো পাতলা ঝিল্লি বা আবরণকে। [মুয়াসসার] উদ্দেশ্য হচ্ছে একথা বলা যে, মুশরিকদের মাবুদ ও উপাস্যরা কোনো তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিসেরও মালিক নয়। [সা'দী] তারা যে সমস্ত মুর্তি, কতক নবী ও ফেরেশতার পূজা করে; বিপদ মুহুর্তে তাদেরকে আহবান করলে প্রথমতঃ তারা শুনতেই পারবে না। কেননা তাদের মধ্যে শ্রবনের যোগ্যতাই নেই। নবী ও ফেরেশতাগণের মধ্যে যোগ্যতা থাকলেও তারা তোমাদের আবেদন পূর্ণ করার ক্ষমতা রাখে না। আল্লাহ্ তা'আলার অনুমতি ব্যতিরেকে তারা তাঁর কাছে কারও জন্যে সুপারিশও করতে পারে না।
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِن تَدۡعُوهُمۡ لَا يَسۡمَعُواْ دُعَآءَكُمۡ وَلَوۡ سَمِعُواْ مَا ٱسۡتَجَابُواْ لَكُمۡۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يَكۡفُرُونَ بِشِرۡكِكُمۡۚ وَلَا يُنَبِّئُكَ مِثۡلُ خَبِيرٖ
তোমরা তাদেরকে ডাকলে তারা তোমাদের ডাক শুনবে না এবং শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেবে না। আর তোমরা তাদেরকে যে শরীক করেছ তা তারা কিয়ামতের দিন অস্বীকার করবে [১]। সর্বজ্ঞ আল্লাহর মত কেউই আপনাকে অবহিত করতে পারে না [২]।
[১] অর্থাৎ তারা পরিষ্কার বলে দেবে, আমরা কখনো এদেরকে বলিনি, আমরা আল্লাহর শরীক এবং তোমরা আমাদের ইবাদাত করো। বরং আমরা এও জানতাম না যে, এরা আমাদেরকে আল্লাহ রব্ববুল আলামীনের সাথে শরীক করছে এবং আমাদের কাছে প্রার্থনা করছে। এদের কোনো প্রার্থনা আমাদের কাছে আসেনি এবং এদের কোনো নজরানা ও উৎসর্গ আমাদের হস্তগত হয়নি। বরং তারা বলবে, “আপনিই তো কেবল আমাদের অভিভাবক, তারা নয়।” [সাবা ৪১]

[২] সর্বতোভাবে অবহিত বলে আল্লাহকেই বুঝানো হয়েছে। [সা'দী; মুয়াসসার; জালালাইন] অর্থাৎ অন্য কোনো ব্যক্তি তো বড় জোর বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তি-প্রমাণ পেশ করে শির্ক খণ্ডন ও মুশরিকদের মাবুদের শক্তিহীনতা বর্ণনা করবে। কিন্তু আমি সরাসরি প্রকৃত অবস্থা জানি। আমি নির্ভুল জ্ঞানের ভিত্তিতে তোমাদের জানাচ্ছি, লোকেরা যাদেরকেই আমার সার্বভৌম কর্তৃত্বের মধ্যে স্বাধীন ক্ষমতাসম্পন্ন করে রেখেছে তারা সবাই ক্ষমতাহীন। তাদের কাছে এমন কোনো শক্তি নেই যার মাধ্যমে তারা কারো কোনো কাজ সফল বা ব্যৰ্থ করে দিতে পারে। আমি সরাসরি জানি, কিয়ামতের দিন মুশরিকদের এসব মা’বুদরা নিজেরাই তাদের শির্কের প্রতিবাদ করবে।
Ang mga Tafsir na Arabe:
۞ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ أَنتُمُ ٱلۡفُقَرَآءُ إِلَى ٱللَّهِۖ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلۡغَنِيُّ ٱلۡحَمِيدُ
হে মানুষ! তোমরা আল্লাহর মুখাপেক্ষী; আর আল্লাহ্, তিনিই অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِن يَشَأۡ يُذۡهِبۡكُمۡ وَيَأۡتِ بِخَلۡقٖ جَدِيدٖ
তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসৃত করতে পারেন এবং এক নতুন সৃষ্টি নিয়ে আসতে পারেন।
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَمَا ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ بِعَزِيزٖ
আর এটা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয়।
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٞ وِزۡرَ أُخۡرَىٰۚ وَإِن تَدۡعُ مُثۡقَلَةٌ إِلَىٰ حِمۡلِهَا لَا يُحۡمَلۡ مِنۡهُ شَيۡءٞ وَلَوۡ كَانَ ذَا قُرۡبَىٰٓۗ إِنَّمَا تُنذِرُ ٱلَّذِينَ يَخۡشَوۡنَ رَبَّهُم بِٱلۡغَيۡبِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَۚ وَمَن تَزَكَّىٰ فَإِنَّمَا يَتَزَكَّىٰ لِنَفۡسِهِۦۚ وَإِلَى ٱللَّهِ ٱلۡمَصِيرُ
আর কোনো বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না [১] এবং কোনো ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যদি কাউকেও তা বহন করতে ডাকে তবে তার থেকে কিছুই বহন করা হবে না--- এমনকি নিকট আত্মীয় হলেও [২]। আপনি শুধু তাদেরকেই সতর্ক করতে পারেন যারা তাদের রবকে না দেখে ভয় করে এবং সালাত কায়েম করে। আর যে কেউ নিজেকে পরিশোধন করে, সে তো পরিশোধন করে নিজেরই কল্যাণের জন্য। আর আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তন।
[১] অর্থাৎ কেয়ামতের দিন কোনো মানুষ অন্য মানুষের পাপভার বহন করতে পারবে না। প্রত্যেককে নিজের বোঝা নিজেই বহন করতে হবে। “বোঝা” মানে কৃতকর্মের দায়-দায়িত্বের বোঝা। এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কাছে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেই তার কাজের জন্য দায়ী এবং প্রত্যেকের ওপর কেবল তার নিজের কাজের দায়-দায়িত্ব আরোপিত হয়। এক ব্যক্তির কাজের দায়-দায়িত্বের বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্য ব্যক্তির ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কোনো ব্যক্তি অন্যের দায়-দায়িত্বের বোঝা নিজের ওপর চাপিয়ে নেবে এবং তাকে বাঁচানোর জন্য তার অপরাধে নিজেকে পাকড়াও করাবে এরও কোনো সম্ভাবনা নেই। সূরা আল-আনকাবুতে বলা হয়েছে: “যারা পথভ্রষ্ট করে, তারা নিজেদের পথভ্রষ্টতার বোঝাও বহন করবে এবং তৎসহ তাদের বোঝাও বহন করবে, যাদেরকে পথভ্ৰষ্ট করেছিল।” [সূরা আল-আনকাবূত ১৩] এর অর্থ এমন নয় যে, যাদেরকে পথভ্ৰষ্ট করেছিল, তাদের বোঝা তারা কিছুটা হালকা করে দেবে। বরং তাদের বোঝা তাদের উপর পুরোপুরিই থাকবে, কিন্তু পথ-ভ্ৰষ্টকারীদের অপরাধ দ্বিগুণ হয়ে যাবে- একটি পথ ভ্ৰষ্ট হওয়ার ও অপরটি পথভ্ৰষ্ট করার। অতএব, উভয় আয়াতে কোনো বৈপরিত্য নেই।

[২] এ বাক্যে বলা হয়েছে, আজ যারা বলছে, তোমরা আমাদের দায়িত্বের কুফৱী ও গোনাহের কাজ করে যাও কিয়ামতের দিন তোমাদের গোনাহর বোঝা আমরা নিজেদের ঘাড়ে নিয়ে নেবো তারা আসলে নিছক একটি মিথ্যা ভরসা দিচ্ছে। যখন কিয়ামত আসবে এবং লোকেরা দেখে নেবে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য তারা কোনো ধরনের পরিণামের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে তখন প্রত্যেকে নিজেকে বাঁচানোর ফিকিরে লেগে যাবে। ভাই ভাইয়ের থেকে এবং পিতা পুত্রের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। কেউ কারো সামান্যতম বোঝা নিজের ওপর চাপিয়ে নিতে প্ৰস্তুত হবে না। ইকরিমা উল্লেখিত আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, সেদিন এক পিতা তার পুত্ৰকে বলবে, তুমি জান যে, আমি তোমার প্রতি কেমন স্নেহশীল ও সদয় পিতা ছিলাম। পুত্ৰ স্বীকার করে বলবে, নিশ্চয় আপনার ঋণ অসংখ্য। আমার জন্যে পৃথিবীতে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। অতঃপর পিতা বলবে, বৎস, আজ আমি তোমার মুখাপেক্ষী। তোমার পূণ্যসমূহ থেকে আমাকে যৎসামান্য দিয়ে দাও এতে আমার মুক্তি হয়ে যাবে। পুত্র বলবে, পিতা আপনি সামান্য বস্তুই চেয়েছেন, কিন্তু আমি কি করব, যদি আমি তা আপনাকে দিয়ে দেই, তবে আমারও যে সে অবস্থা হবে। অতএব, আমি অক্ষম। অতঃপর সে তার স্ত্রীকেও এই কথা বলবে যে, দুনিয়াতে আমি তোমার জন্যে সবকিছু বিসর্জন দিয়েছি। আজ তোমার সামান্য পূণ্য আমি চাই। তা দিয়ে দাও। স্ত্রীও পুত্রের অনুরূপ জওয়াব দেবে। [ইবন কাসীর]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَمَا يَسۡتَوِي ٱلۡأَعۡمَىٰ وَٱلۡبَصِيرُ
সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান,
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَلَا ٱلظُّلُمَٰتُ وَلَا ٱلنُّورُ
আর না অন্ধকার ও আলো,
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَلَا ٱلظِّلُّ وَلَا ٱلۡحَرُورُ
আর না ছায়া ও রোদ
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَمَا يَسۡتَوِي ٱلۡأَحۡيَآءُ وَلَا ٱلۡأَمۡوَٰتُۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُسۡمِعُ مَن يَشَآءُۖ وَمَآ أَنتَ بِمُسۡمِعٖ مَّن فِي ٱلۡقُبُورِ
এবং সমান নয় জীবিত ও মৃত। নিশ্চয় আল্লাহু যাকে ইচ্ছে শোনান; আর আপনি শোনাতে পারবেন না যারা কবরে রয়েছে তাদেরকে।
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِنۡ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ
আপনি তো একজন সতর্ককারী মাত্র।
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِنَّآ أَرۡسَلۡنَٰكَ بِٱلۡحَقِّ بَشِيرٗا وَنَذِيرٗاۚ وَإِن مِّنۡ أُمَّةٍ إِلَّا خَلَا فِيهَا نَذِيرٞ
নিশ্চয় আমরা আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে; আর এমন কোনো উম্মত নেই যার কাছে গত হয়নি সতর্ককারী [১]।
[১] একথাটি কুরআন মজীদের বিভিন্ন জায়গায় বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, দুনিয়ায় এমন কোনো জাতি ও সম্প্রদায় অতিক্রান্ত হয়নি যাকে সত্য-সঠিক পথের সন্ধান দেয়ার জন্য আল্লাহ কোনো নবী পাঠাননি। আরো বলা হয়েছে, “আর প্রত্যেক জাতির জন্য রয়েছে হেদায়াতকারী।” [সূরা আর-রাদ ৭] অন্যত্র বলা হয়েছে, “আর আপনার আগে আমরা আগেকার অনেক সম্প্রদায়ের কাছে রাসূল পাঠিয়েছিলাম।” [সূরা আল-হিজর ১০] অন্য সূরায় বলা হয়েছে, “আল্লাহর ইবাদাত করার ও তাগুতকে বর্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।” [সূরা আন-নাহল ৩৬] অন্যত্র বলা হয়েছে, “আর আমরা এমন কোনো জনপদ ধ্বংস করিনি যার জন্য সতর্ককারী ছিল না।” [সূরা আশ-শূ’আরা ২০৮]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَإِن يُكَذِّبُوكَ فَقَدۡ كَذَّبَ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ جَآءَتۡهُمۡ رُسُلُهُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِ وَبِٱلزُّبُرِ وَبِٱلۡكِتَٰبِ ٱلۡمُنِيرِ
আর তারা যদি আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে এদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যারোপ করেছিল---তাদের কাছে এসেছিল তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট প্রমাণাদি, গ্রন্থাদি ও দীপ্তিমান কিতাবসহ।
Ang mga Tafsir na Arabe:
ثُمَّ أَخَذۡتُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۖ فَكَيۡفَ كَانَ نَكِيرِ
তারপর যারা কুফরি করেছিল আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। সুতরাং (দেখে নিন) কেমন ছিল আমার প্রত্যাখ্যান (শাস্তি)!
Ang mga Tafsir na Arabe:
أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ أَنزَلَ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مَآءٗ فَأَخۡرَجۡنَا بِهِۦ ثَمَرَٰتٖ مُّخۡتَلِفًا أَلۡوَٰنُهَاۚ وَمِنَ ٱلۡجِبَالِ جُدَدُۢ بِيضٞ وَحُمۡرٞ مُّخۡتَلِفٌ أَلۡوَٰنُهَا وَغَرَابِيبُ سُودٞ
আপনি কি দেখেন না, আল্লাহ্ আকাশ হতে বৃষ্টিপাত করেন, তারপর আমরা তা দ্বারা বিচিত্র বর্ণের ফলমূল উদগত করি। আর পাহাড়ের মধ্যে আছে বিচিত্র বর্ণের পথ---শুভ্র, লাল ও নিকষ কালো [১]।
[১] পর্বতের ক্ষেত্রে جدد বলা হয়েছে। جدد শব্দটি جدة এর বহুবচন। এর প্রসিদ্ধ অর্থ ছোট গিরিপথ। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] কেউ কেউ جدد এর অর্থ নিয়েছেন অংশ বা খণ্ড। [ফাতহুল কাদীর] উভয় অবস্থায় এর উদ্দেশ্য, পাহাড়ের বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন বর্ণবিশিষ্ট হওয়া। এতে সর্বপ্রথম সাদা ও সর্বশেষে কালো রং উল্লেখ করা হয়েছে। মাঝখানে লাল উল্লেখ করে حمرٌ বলা হয়েছে। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَمِنَ ٱلنَّاسِ وَٱلدَّوَآبِّ وَٱلۡأَنۡعَٰمِ مُخۡتَلِفٌ أَلۡوَٰنُهُۥ كَذَٰلِكَۗ إِنَّمَا يَخۡشَى ٱللَّهَ مِنۡ عِبَادِهِ ٱلۡعُلَمَٰٓؤُاْۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ
আর মানুষের মাঝে, জন্তু ও গৃহপালিত জানোয়ারের মাঝেও বিচিত্র বর্ণ রয়েছে অনুরূপ। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই কেবল তাঁকে ভয় করে [১]; নিশ্চয় আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
[১] বলা হয়েছে যে, কেবল আলেম ও জ্ঞানীগণই আল্লাহকে ভয় করে। আল্লাহর শক্তিমত্তা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বিজ্ঞানময়তা, ক্ৰোধ, পরাক্রম, সার্বভৌম কর্তৃত্ব-ক্ষমতা ও অন্যান্য গুণাবলী সম্পর্কে যে ব্যক্তি যতবেশী জানবে সে ততবেশী তাঁর নাফরমানী করতে ভয় পাবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলীর ব্যাপারে যতবেশী অজ্ঞ হবে সে তাঁর ব্যাপারে তত বেশী নির্ভীক হবে। এ আয়াতে জ্ঞান অর্থ দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস, অংক ইত্যাদি স্কুল-কলেজে পঠিত বিষয়ের জ্ঞান নয়। বরং এখানে জ্ঞান বলতে আল্লাহর গুণাবলীর জ্ঞান বুঝানো হয়েছে। এ জন্য শিক্ষিত ও অশিক্ষিত হওয়ার প্রশ্ন নেই। তাই আয়াতে العلماء বা ‘উলামা’ বলে এমন লোকদের বোঝানো হয়েছে, যারা আল্লাহ তা'আলার সত্তা ও গুণাবলী সম্পর্কে সম্যক অবগত এবং পৃথিবীর সৃষ্টবস্তু সামগ্ৰী, তার পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও আল্লাহর দয়া-করুণা নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেন। কেবল আরবী ভাষা, ব্যাকরণ-অলংকারাদি সম্পর্কে জ্ঞানী ব্যক্তিকেই কুরআনের পরিভাষায় 'আলেম’ বলা হয় না। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে না সে যুগের শ্ৰেষ্ঠ পণ্ডিত হলেও এ জ্ঞানের দৃষ্টিতে সে নিছক একজন মুর্খ ছাড়া আর কিছুই নয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর গুণাবলী জানে এবং নিজের অন্তরে তাঁর ভীতি পোষণ করে সে অশিক্ষিত হলেও জ্ঞানী। তবে কারও ব্যাপারে তখনই এ আয়াতটির প্রয়োগ ক্ষেত্রে পরিণত হবে যখন তাদের মধ্যে আল্লাহভীতি থাকবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও এক হাদীসে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তবে হাসতে কম কাঁদতে বেশী।” [বুখারী ৬৪৮৬, মুসলিম ২৩৫৯] এর কারণ, রাসূল আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী জানেন, তার তাকওয়াও সবচেয়ে বেশী। আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একথাই বলেছেন, “বিপুল সংখ্যক হাদীস জানা জ্ঞানের পরিচায়ক নয় বরং বেশী পরিমাণ আল্লাহভীতিই জ্ঞানের পরিচয় বহন করে।” ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘তারাই হচ্ছে আলেম যারা নিশ্চিত বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান।' তিনি আরও বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তি রহমান সম্পর্কে আলেম যিনি তার সাথে কাউকে শরীক করেন নি, তাঁর হালালকে হালাল করেছেন, হারামকে হারাম করেছেন, তাঁর অসীয়ত বা নির্দেশাবলীর পূর্ণ হিফাযত করেছেন, আর বিশ্বাস করেছেন যে, একদিন তাকে তার সাথে সাক্ষাত করতে হবে এবং তার যাবতীয় কর্মকাণ্ডের হিসাব দিতে হবে।’ হাসান বাসরী রাহে মাহুল্লাহ বলেন, “আল্লাহকে না দেখে বা একান্তে ও জনসমক্ষে যে ভয় করে সেই হচ্ছে আলেম। আল্লাহ যা কিছু পছন্দ করেন সেদিকেই আকৃষ্ট হয় এবং যে বিষয়ে আল্লাহ নারাজ সে ব্যাপারে সে কোনো আগ্রহ পোষণ করে না।” সুফিয়ান সাওরী বর্ণনা করেন যে, জ্ঞানী তিন ধরনের হয়। এক. আল্লাহ সম্পর্কে সম্যক অবগত, তাঁর নির্দেশ সম্পর্কেও জ্ঞানী। দুই. আল্লাহ সম্পর্কে সম্যক অবগত, কিন্তু তাঁর নির্দেশ সম্পর্কে অজ্ঞ। তিন. আল্লাহর নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞানী, কিন্তু আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ। সুতরাং যে আল্লাহ সম্পর্কে সম্যক অবগত ও তার নির্দেশ সম্পর্কেও জ্ঞানী সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহর ফরয ওয়াজিবের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে। আর যে আল্লাহর নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞানী কিন্তু আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহকে ভয় করে কিন্তু তাঁর ফরয ওয়াজিবের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞান রাখেনা। আর যে আল্লাহর নির্দেশ সম্পর্কে জ্ঞানী অথচ তাঁর সম্পর্কে জ্ঞান রাখেনা সে এ ব্যক্তি যে, আল্লাহকে ভয় করে না কিন্তু আল্লাহর ফরয ওয়াজিবের সীমারেখা সম্পর্কে জ্ঞান রাখে। সারকথা, যার মধ্যে যে পরিমাণ আল্লাহ ভীতি হবে, সে সেই পরিমাণ আলেম হবে। আহমদ ইবন সালেহ মিসরী বলেন, অধিক বর্ণনা ও অধিক জ্ঞান দ্বারা আল্লাহভীতির পরিচয় পাওয়া যায় না; বরং কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ দ্বারা এর পরিচয় পাওয়া যায়। সুতরাং যার মধ্যে আল্লাহভীতি নেই, সে আলেম নয়। [দেখুন, তাবারী; বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর]
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَتۡلُونَ كِتَٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ سِرّٗا وَعَلَانِيَةٗ يَرۡجُونَ تِجَٰرَةٗ لَّن تَبُورَ
নিশ্চয় যারা আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে এবং সালাত কায়েম করে, আর আমরা তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করে এমন ব্যবসায়ের, যার ক্ষয় নেই।
Ang mga Tafsir na Arabe:
لِيُوَفِّيَهُمۡ أُجُورَهُمۡ وَيَزِيدَهُم مِّن فَضۡلِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ غَفُورٞ شَكُورٞ
যাতে আল্লাহ্ তাদের কাজের প্রতিফল পরিপূর্ণ দেন এবং তিনি নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশী দেন। নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল, অসীম গুণগ্রাহী।
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ هُوَ ٱلۡحَقُّ مُصَدِّقٗا لِّمَا بَيۡنَ يَدَيۡهِۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِعِبَادِهِۦ لَخَبِيرُۢ بَصِيرٞ
আর আমরা কিতাব হতে আপনার প্রতি যে ওহী করেছি তা সত্য, এর আগে যা রয়েছে তার প্রত্যয়নকারী। নিশ্চয় আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের সম্পরকে সম্যক অবহিত, সর্বদ্রষ্টা।
Ang mga Tafsir na Arabe:
ثُمَّ أَوۡرَثۡنَا ٱلۡكِتَٰبَ ٱلَّذِينَ ٱصۡطَفَيۡنَا مِنۡ عِبَادِنَاۖ فَمِنۡهُمۡ ظَالِمٞ لِّنَفۡسِهِۦ وَمِنۡهُم مُّقۡتَصِدٞ وَمِنۡهُمۡ سَابِقُۢ بِٱلۡخَيۡرَٰتِ بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ ذَٰلِكَ هُوَ ٱلۡفَضۡلُ ٱلۡكَبِيرُ
তারপর আমরা কিতাবের অধিকারী করলাম তাদেরকে, যাদেরকে আমাদের বান্দাদের মধ্য থেকে আমরা মনোনিত করেছি [১]; তবে তাদের কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী, কেউ মধ্যপন্থী এবং কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী [২]। এটাই তো মহাঅনুগ্রহ--- [৩]
[১] অর্থাৎ আমার বান্দাদের মধ্যে যাদেরকে আমি মনোনীত করেছি। অধিকাংশ তফসীরবিদ এর অর্থ নিয়েছেন উম্মতে মুহাম্মদী। [ইবন কাসীর] আলেমগণ প্রত্যক্ষভাবে এবং অন্যান্য মুসলিমগণ আলেমগণের মধ্যস্থতায় এর অন্তর্ভুক্ত।

[২] অর্থাৎ যাদেরকে মনোনীত করে কুরআনের অধিকারী করেছি, তারা তিন প্রকার। [ইবন কাসীর] এক. যুলুমকারী মুসলিম। এরা হচ্ছে এমনসব লোক যারা আন্তরিকতা সহকারে কুরআনকে আল্লাহর কিতাব এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ্‌র রাসূল বলে মানে কিন্তু কার্যত আল্লাহ্‌র কিতাব ও রাসূলের সুন্নাতের অনুসরণের হক আদায় করে না। এরা মুমিন কিন্তু গোনাহগার। অপরাধী কিন্তু বিদ্রোহী নয়। দূর্বল ঈমানদার, তবে মুনাফিক নয় এবং চিন্তা ও মননের দিক দিয়ে কাফেরও নয়। তাই এদেরকে আত্মনিপীড়ক হওয়া সত্ত্বেও কিতাবের ওয়ারিসদের অন্তর্ভুক্ত এবং আল্লাহর নির্বাচিত বান্দাদের মধ্যে শামিল করা হয়েছে। নয়তো একথা সুস্পষ্ট, বিদ্রোহী, মুনাফিক এবং চিন্তা ও মননের দিক দিয়ে কাফেরদের প্রতি এ গুণাবলী আরোপিত হতে পারে না। তিন শ্রেণীর মধ্য থেকে এ শ্রেনীর ঈমানদারদের কথা সবার আগে বলার কারণ হচ্ছে এই যে, উম্মাতের মধ্যে এদের সংখ্যাই বেশী।

দুই. মাঝামাঝি অবস্থানকারী। এরা হচ্ছে এমন লোক যারা এ উত্তরাধিকারের হক কমবেশী আদায় করে কিন্তু পুরোপুরি করে না। হুকুম পালন করে এবং অমান্যও করে। নিজেদের প্রবৃত্তিকে পুরোপুরি লাগামহীন করে ছেড়ে দেয়নি বরং তাকে আল্লাহর অনুগত করার জন্য নিজেদের যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালায় কিন্তু মাঝে মাঝে কোনো কোনো মোস্তাহাব কাজ ছেড়ে দেয় এবং কোনো কোনো মাকরূহ কাজে জড়িত হয়ে পড়ে। কখনো কখনো গোনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এভাবে এদের জীবনে ভালো ও মন্দ উভয় ধরনের কাজের সমাবেশ ঘটে। এরা সংখ্যায় প্রথম দলের চেয়ে কম এবং তৃতীয় দলের চেয়ে বেশী হয়। তাই এদেরকে দু’নম্বরে রাখা হয়েছে।

তিন. ভালো কাজে যারা অগ্রবতী। এরা যাবতীয় ফরয, ওয়াজিব ও মোস্তাহাব কর্ম সম্পাদন করে এবং যাবতীয় হারাম ও মাকরূহ কর্ম থেকে বেঁচে থাকে; কিন্তু কোনো কোনো মোবাহ বিষয়, ইবাদতে ব্যাপৃত থাকার কারণে অথবা হারাম সন্দেহে ছেড়ে দেয়। এরা কিতাবের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে প্রথম সারির লোক। এরাই আসলে এ উত্তরাধিকারের হক আদায়কারী। কুরআন ও সুন্নাতের অনুসরণের ক্ষেত্রেও এরা অগ্রগামী। [বিস্তারিত বর্ণনা দেখুন, কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর] আবুদ্দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অনুরূপ একটি তাফসীর বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, “তাদের কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী” অর্থাৎ অত্যাচারীকে হাশরের মাঠে চিন্তা ও পেরেশানীর মাধ্যমে পাকড়াও করা হবে। আর ‘কেউ মধ্যপন্থী’ যার হিসেব হবে সহজ এবং ‘কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী’ তারা বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে। [মুসনাদে আহমাদ ৫/১৯৪] সে হিসেবে আমাদের নিকট স্পষ্ট যে, এ তিন প্রকার লোকই উম্মতে মুহাম্মদীর অন্তর্ভুক্ত এবং اصطفى বা ‘মনোনয়ন’ গুণের বাইরে নয়। এটি হল উম্মতে মুহাম্মদীর মুমিন বান্দাদের একান্ত বৈশিষ্ট্য ও শ্রেষ্ঠত্ব। তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কার্যতঃ ক্ৰটিযুক্ত, সেও এই মর্যাদার অন্তর্ভুক্ত। উপরোক্ত তাফসীর ছাড়াও এ আয়াতের আরও একটি তাফসীর রয়েছে। কোনো কোনো মুফাসসির এ আয়াতের তিন শ্ৰেণীকে সূরা আল-ওয়াকি’আর তিন শ্রেণী অর্থাৎ মুকাররাবীন, আসহাবুল ইয়ামীন এবং আসহাবুশ শিমাল বলে মত প্ৰকাশ করেছেন। সে অনুসারে আয়াতে ‘তাদের কেউ নিজের প্রতি অত্যাচারী’ বলে কাফের, মুনাফিকদের বোঝানো হয়েছে। আর ‘কেউ মধ্যপন্থী’ বলে ডানপন্থী সাধারণ ঈমানদার এবং ‘কেউ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী’ বলে আল্লাহর নৈকট্যপ্ৰাপ্ত লোকদের বোঝানো হয়েছে। এ তাফসীরটিও সহীহ সনদে কাতাদা, হাসান ও মুজাহিদ থেকে বর্ণিত হয়েছে। [ইবন কাসীর] কিন্তু প্রথম তাফসীরটিই এখানে অগ্রগণ্য। কারণ তা সহীহ হাদীস দ্বারা সমর্থিত। তাছাড়া পরবর্তী আয়াতসমূহ থেকেও তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

[৩] “এটাই মহা অনুগ্রহ" বাক্যটির সম্পর্ক যদি নিকটতম বাক্যের সাথে ধরে নেয়া হয় তাহলে এর অর্থ হবে, ভালো কাজে অগ্রগামী হওয়াই হচ্ছে বড় অনুগ্রহ এবং যারা এমনটি করে মুসলিম উম্মাতের মধ্যে তারাই সবার সেরা। আর এ বাক্যটির সম্পর্ক পূর্ববর্তী বাক্যের সাথে করা হলে এর অর্থ হবে, আল্লাহর কিতাবের উত্তরাধিকারী হওয়া এবং এ উত্তরাধিকারের জন্য নির্বাচিত হওয়াই বড় অনুগ্রহ এবং আল্লাহর সকল বান্দাদের মধ্যে সেই বান্দাই সর্বশ্রেষ্ঠ যে কুরআন ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ঈমান এনে এ নির্বাচনে সফলকাম হয়েছে। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর]
Ang mga Tafsir na Arabe:
جَنَّٰتُ عَدۡنٖ يَدۡخُلُونَهَا يُحَلَّوۡنَ فِيهَا مِنۡ أَسَاوِرَ مِن ذَهَبٖ وَلُؤۡلُؤٗاۖ وَلِبَاسُهُمۡ فِيهَا حَرِيرٞ
স্থায়ী জান্নাত, যাতে তারা প্রবেশ করবে [১], সেখানে তাদেরকে স্বর্ণ নির্মিত কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং সেখানে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের।
[১] মুফাসসিরগণের একটি দলের মতে এ বাক্যের সম্পর্ক নিকটবর্তী দুটি বাক্যের সাথেই রয়েছে। অর্থাৎ সৎকাজে অগ্রগামীরাই বড় অনুগ্রহের অধিকারী এবং তারাই এ জান্নাতগুলোতে প্রবেশ করবে। অন্যদিকে প্রথম দুটি দলের ব্যাপারে নীরবতা অবলম্বন করা হয়েছে, যাতে তারা নিজেদের পরিণামের কথা চিন্তা করে এবং নিজেদের বর্তমান অবস্থা থেকে বের হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে পারে। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, ওপরের সমগ্র আলোচনার সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে। আর এর অর্থ হচ্ছে, এ তিনটি দলই শেষ পর্যন্ত জান্নাতে প্ৰবেশ করবে, কোনোপ্রকার হিসেব-নিকেশ ছাড়াই বা হিসেব নিকেশের পর এবং সব রকমের জবাবদিহি থেকে সংরক্ষিত থেকে অথবা কোনো শাস্তি পাওয়ার পর যে কোনো অবস্থাতেই হোক না কেন। কুরআনের পূর্বাপর আলোচনা এ ব্যাখ্যার প্রতি সমর্থন দিচ্ছে। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] কারণ, সামনের দিকে কিতাবের উত্তরাধিকারীদের মোকাবিলায় অন্যান্য দল সম্পর্কে বলা হচ্ছে, “আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন।” এ থেকে জানা যায়, যারা এ কিতাবকে মেনে নিয়েছে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত এবং যারা এর প্রতি ঈমান আনতে অস্বীকার করেছে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। আবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিন্মোক্ত হাদীসও এর প্রতি সমর্থন জানায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যারা সৎকাজে এগিয়ে গেছে তারা জান্নাতে প্ৰবেশ করবে কোনোরকম হিসেবা-নিকেশ ছাড়াই। আর যারা মাঝপথে থাকবে তাদের হিসেব-নিকেশ হবে, তবে তা হবে হাল্কা। অন্যদিকে যারা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছে তাদেরকে হাশরের দীর্ঘকালীন সময়ে আটকে রাখা হবে, তারপর তাদেরকে আল্লাহর রহমতের মধ্যে নিয়ে নেয়া হবে এবং এরাই হবে এমনসব লোক যারা বলবে, “সেই আল্লাহর শোকর যিনি আমাদের থেকে দুঃখ দূর করে দিয়েছেন।” [তাফসীর তাবারী ২২/১৩৭] এ বিষয়বস্তু সম্বলিত বিভিন্ন উক্তি মুহাদিসগণ বিভিন্ন সাহাবী যেমন, উমর, উসমান, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস, আয়েশা, আবু সাঈদ খুদরী, এবং বারা ইবন আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে উদ্ধৃত করেছেন। আর একথা বলা নিষ্পপ্রয়োজন যে, সাহাবীগণ এহেন ব্যাপারে কোনো কথা ততক্ষণ পর্যন্ত বলতে পারেন না, যতক্ষণ না তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখে শুনে থাকবেন। [বিস্তারিত বর্ণনা দেখুন, কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَقَالُواْ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ ٱلَّذِيٓ أَذۡهَبَ عَنَّا ٱلۡحَزَنَۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٞ شَكُورٌ
এবং তারা বলবে, 'প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদের দুঃখ-দুর্দশা দূরিভূত করেছেন; নিশ্চয় আমাদের রব তো পরম ক্ষমাশীল, অসীম গুণগ্রাহী;
Ang mga Tafsir na Arabe:
ٱلَّذِيٓ أَحَلَّنَا دَارَ ٱلۡمُقَامَةِ مِن فَضۡلِهِۦ لَا يَمَسُّنَا فِيهَا نَصَبٞ وَلَا يَمَسُّنَا فِيهَا لُغُوبٞ
'যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে স্থায়ী আবাসে প্রবেশ করিয়েছেন সেখানে কোনো ক্লেশ আমাদেরকে স্পর্শ করে না এবং কোনো ক্লান্তিও স্পর্শ করে না।'
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَهُمۡ نَارُ جَهَنَّمَ لَا يُقۡضَىٰ عَلَيۡهِمۡ فَيَمُوتُواْ وَلَا يُخَفَّفُ عَنۡهُم مِّنۡ عَذَابِهَاۚ كَذَٰلِكَ نَجۡزِي كُلَّ كَفُورٖ
আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য আছে জাহান্নামের আগুন। তাদের উপর ফায়সালা দেয়া হবে না যে, তারা মরবে এবং তাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তিও লাঘব করা হবে না। এভাবেই আমরা প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে শাস্তি দিয়ে থাকি।
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَهُمۡ يَصۡطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَآ أَخۡرِجۡنَا نَعۡمَلۡ صَٰلِحًا غَيۡرَ ٱلَّذِي كُنَّا نَعۡمَلُۚ أَوَلَمۡ نُعَمِّرۡكُم مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَآءَكُمُ ٱلنَّذِيرُۖ فَذُوقُواْ فَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِن نَّصِيرٍ
আর সেখানে তার আর্তনাদ করে বলবে, 'হে আমাদের রব! আমাদেরকে বের করুন, আমরা যা করতাম তার পরিবর্তে সৎকাজ করব।' আল্লাহ বলবেন, 'আমরা কি তোমাদেরকে এতো দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে চাইলে উপদেশ গ্রহণ করতে পারতো [১]? আর তোমাদের কাছে সতর্ককারীও এসেছিল [২]। কাজেই তোমরা শাস্তি আস্বাদন কর; আর যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।'
[১] অর্থাৎ জাহান্নামে যখন কাফেররা ফরিয়াদ করবে যে, হে আমাদের পালনকর্তা; আমাদেরকে এ আযাব থেকে মুক্ত করুন, আমরা সৎকর্ম করব এবং অতীত কুকর্ম ছেড়ে দেব, তখন জওয়াব দেয়া হবে যে, আমি কি তোমাদেরকে এমন বয়স দেইনি যাতে চিন্তাশীল ব্যক্তি চিন্তা করে বিশুদ্ধ পথে আসতে পারে? আলী ইবন হুসাইন যয়নুল আবেদীন রাহেমাহুল্লাহ বলেন, এর অর্থ সতের বছর বয়স। কাতাদাহ আঠার বছর বয়স বলেছেন। [ইবন কাসীর] এতে সতের বা আঠারোর পার্থক্য সম্ভবত এই যে, কেউ সতের বছরে এবং কেউ আঠারো বছরে সাবালক হতে পারে। শরীআতে এ বয়সটি প্রথম সীমা, যাতে প্রবেশ করার পর মানুষকে নিজের ভাল-মন্দ বোঝার জ্ঞান আল্লাহর পক্ষ থেকে দান করা হয়। এ বয়সে মানুষ সত্য ও মিথ্যা এবং ভালো ও মন্দের মধ্যে ফারাক করতে চাইলে করতে পারে এবং গোমরাহী ত্যাগ করে হিদায়াতের পথে পাড়ি দিতে চাইলেও দিতে পারে। যে ব্যক্তি সুদীর্ঘকাল বেঁচে থাকার পরও সতর্ক হয়নি এবং প্রকৃতির প্রমাণাদি দেখে ও নবী-রাসূলগণের কথাবার্তা শুনে সত্যের পরিচয় গ্রহণ করেনি সে অধিক ধিক্কারযোগ্য হবে। [দেখুন-ইবন কাসীর, বাগভী] একথাটিই একটি হাদীসে এসেছে এভাবে, “যে ব্যক্তি কম বয়স পাবে তার জন্য তো ওজরের সুযোগ থাকে কিন্তু ৬০ বছর এবং এর বেশী বয়সের অধিকারীদের জন্য কোনো ওযর নেই।' [বুখারী ৬৪১৯] আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আল্লাহ যে বয়সে গোনাহগার বান্দাদেরকে লজ্জা দেন, তা হচ্ছে ষাট বছর। ইবন আব্বাসও এক বর্ণনায় চল্লিশ, আর অন্য বর্ণনায় ষাট বছর বলেছেন। এ বয়সে মানুষের উপর আল্লাহর প্রমাণ পূর্ণ হয়ে যায় এবং মানুষের জন্যে কোনো ওযর আপত্তি পেশ করার অবকাশ থাকে না। কারণ, ষাট বছর এমন সুদীর্ঘ বয়স যে, এতেও কেউ সত্যের পরিচয় লাভ না করলে তার ওযর আপত্তি করার কোনো অবকাশ থাকে না। এ কারণেই উম্মতে মুহাম্মদীর বয়সের গড় ষাট থেকে সত্তর বছর পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। [দেখুন, ইবন মাজাহ ৪২৩৬]

[২] এ সতর্ককারী সম্পর্কে কয়েকটি মত আছে। কারও কারও মতে চুল শুভ্র হওয়া। বার্ধক্যের নিদর্শন প্রকাশ পাওয়া। আবার কারও কারও মতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। [ইবন কাসীর] আবার কারও নিকট কুরআনুল করীম। কেউ কেউ বলেছেন জ্বর-ব্যাধি। [ফাতহুল কাদীর]
Ang mga Tafsir na Arabe:
إِنَّ ٱللَّهَ عَٰلِمُ غَيۡبِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ
নিশ্চয় আল্লাহ্ আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েবী বিষয় অবগত। নিশ্চয় অন্তরে যা রয়েছে সে সম্বন্ধে তিনি সম্যক জ্ঞাত।
Ang mga Tafsir na Arabe:
هُوَ ٱلَّذِي جَعَلَكُمۡ خَلَٰٓئِفَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ فَمَن كَفَرَ فَعَلَيۡهِ كُفۡرُهُۥۖ وَلَا يَزِيدُ ٱلۡكَٰفِرِينَ كُفۡرُهُمۡ عِندَ رَبِّهِمۡ إِلَّا مَقۡتٗاۖ وَلَا يَزِيدُ ٱلۡكَٰفِرِينَ كُفۡرُهُمۡ إِلَّا خَسَارٗا
তিনিই তোমাদেরকে যমীনে স্থলাভিষিক্ত করেছেন [১]। কাজেই কেউ কুফরী করলে তার কুফরীর জন্য সে নিজেই দায়ী হবে। কাফিরদের কুফরী শুধু তাদের রবের ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফিরদের কুফরী শুধু তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।
[১] خَلَاىِٔف শব্দটি خَلِيْفَةٌ এর বহুবচন। এর অর্থ, স্থলাভিষিক্ত, প্রতিনিধি। উদ্দেশ্য এই যে, আমি মানুষকে একের পর এক ভূমি, বাসগৃহ ইত্যাদির মালিক করেছি। একজন চলে গেলে অন্যজন তার স্থলাভিষিক্ত হয়। এতে আল্লাহ্ তা'আলার দিকে রুজু করার জন্য শিক্ষা রয়েছে। তাছাড়া, আয়াতে উম্মাতে মুহাম্মদীকেও বলা হতে পারে যে, আমি বিগত জাতিসমূহের পরে তাদের স্থলাভিষিক্তরূপে তোমাদেরকে মালিক ও ক্ষমতাশালী করেছি। সুতরাং পূর্ববতীদের অবস্থা থেকে তোমাদের শিক্ষা গ্ৰহণ করা অবশ্য কর্তব্য। [বাগভী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
قُلۡ أَرَءَيۡتُمۡ شُرَكَآءَكُمُ ٱلَّذِينَ تَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَرُونِي مَاذَا خَلَقُواْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِ أَمۡ لَهُمۡ شِرۡكٞ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ أَمۡ ءَاتَيۡنَٰهُمۡ كِتَٰبٗا فَهُمۡ عَلَىٰ بَيِّنَتٖ مِّنۡهُۚ بَلۡ إِن يَعِدُ ٱلظَّٰلِمُونَ بَعۡضُهُم بَعۡضًا إِلَّا غُرُورًا
বলুন, 'তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে তোমাদের যেসব শরীকদের ডাক, তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি? তারা যমীনে কিছু সৃষ্টি করে থাকলে আমাকে দেখাও অথবা আসমানের সৃষ্টিতে তাদের কোনো অংশ আছে কি? না কি আমরা তাদেরকে এমন কোনো কিতাব দিয়েছি যার প্রমানের উপর তারা নির্ভর করে [১]?' বরং যালিমরা একে অন্যকে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুরই প্রতিশ্রুতি দেয় না।
[১] কাতাদাহ এ আয়াতের তাফসীরে বলেন, আল্লাহ বলেন, বলুন, ‘তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে তোমাদের যে সব শরীকদের ডাক, তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি? তারা যমীনে কিছু সৃষ্টি করে থাকলে আমাকে দেখাও’ তারা এর মধ্য থেকে কিছুই সৃষ্টি করে নি। ‘অথবা আসমানের সৃষ্টিতে তাদের কোনো অংশ আছে কি?’ না, তারা আসমান সৃষ্টিতেও শরীক নয়। এতে তাদের কোনো অংশীদারীত্ব নেই। ‘না কি আমরা তাদেরকে এমন কোনো কিতাব দিয়েছি যার প্রমানের উপর তারা নির্ভর করে।” অর্থাৎ নাকি তাদেরকে আমরা কোনো কিতাব দিয়েছি যা তাদেরকে শির্ক করতে নির্দেশ দেয়? [তাবারী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
۞ إِنَّ ٱللَّهَ يُمۡسِكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ أَن تَزُولَاۚ وَلَئِن زَالَتَآ إِنۡ أَمۡسَكَهُمَا مِنۡ أَحَدٖ مِّنۢ بَعۡدِهِۦٓۚ إِنَّهُۥ كَانَ حَلِيمًا غَفُورٗا
নিশ্চয় আল্লাহ্‌ আসমানসমূহ ও যমীনকে ধারণ করেন, যাতে তারা স্থানচ্যুত না হয়, আর যদি তারা স্থানচ্যুত হয়, তবে তিনি ছাড়া কেউ নেই যে, তাদেরকে ধরে রাখতে পারে [১]। নিশ্চয় তিনি অতি সহনশীল, অসীম ক্ষমাপরায়ণ।
[১] অন্য আয়াতে এসেছে, “আপনি কি দেখতে পান না যে, আল্লাহ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন পৃথিবীতে যা কিছু আছে সেসবকে এবং তাঁর নির্দেশে সাগরে বিচরণশীল নৌযানসমূহকে? আর তিনিই আসমানকে ধরে রাখেন যাতে তা পড়ে না যায়। যমীনের উপর তাঁর অনুমতি ছাড়া। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি স্নেহপ্রবণ, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-হাজ ৬৫] [আত-তাফসীরুস সহীহ]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَأَقۡسَمُواْ بِٱللَّهِ جَهۡدَ أَيۡمَٰنِهِمۡ لَئِن جَآءَهُمۡ نَذِيرٞ لَّيَكُونُنَّ أَهۡدَىٰ مِنۡ إِحۡدَى ٱلۡأُمَمِۖ فَلَمَّا جَآءَهُمۡ نَذِيرٞ مَّا زَادَهُمۡ إِلَّا نُفُورًا
আর তারা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর শপথ করে বলত যে, তাদের কাছে কোনো সতর্কাকারী আসলে এরা অন্য সকল জাতির চেয়ে সৎপথের অধিকতর অনুসারী হবে; অতঃপর যখন এদের কাছে সতর্ককারী আসল [১], তখন তা শুধু তাদের বিমুখতা ও দূরত্বই বৃদ্ধি করল---
[১] অর্থাৎ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। [তাবারী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
ٱسۡتِكۡبَارٗا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَكۡرَ ٱلسَّيِّيِٕۚ وَلَا يَحِيقُ ٱلۡمَكۡرُ ٱلسَّيِّئُ إِلَّا بِأَهۡلِهِۦۚ فَهَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّا سُنَّتَ ٱلۡأَوَّلِينَۚ فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَبۡدِيلٗاۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَحۡوِيلًا
যমীনে ঔদ্ধ্যত প্রকাশ এবং কুট ষড়যন্ত্রের কারণে [১]। আর কুট ষড়যন্ত্র তার উদ্যোক্তাদেরকেই পরিবেষ্টন করবে। তবে কি এরা প্রতিক্ষা করছে পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রযুক্ত পদ্ধতির [২]? কিন্তু আপনি আল্লাহর পদ্ধতিতে কখনো কোনো পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর পদ্ধতির কোনো ব্যতিক্রমও লক্ষ্য করবেন না।
[১] কাতাদাহ বলেন, এখানে কূট ষড়যন্ত্র বলে শির্ক বোঝানো হয়েছে। [তাবারী]

[২] কাতাদাহ বলেন, অর্থাৎ পূর্ববর্তীদের শাস্তি। [তাবারী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
أَوَلَمۡ يَسِيرُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَيَنظُرُواْ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِهِمۡ وَكَانُوٓاْ أَشَدَّ مِنۡهُمۡ قُوَّةٗۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعۡجِزَهُۥ مِن شَيۡءٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّهُۥ كَانَ عَلِيمٗا قَدِيرٗا
আর এরা কি যমীনে পরিভ্রমণ করেনি? তাহলে তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা তারা দেখতে পেত। আর তারা ছিল এদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী [১]। আর আল্লাহ্ এমন নন যে, তাঁকে অক্ষম করতে পারে কোনো কিছু আসমানসমূহে আর না যমীনে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাবান।
[১] কাতাদাহ বলেন, আল্লাহ অবহিত করছেন যে, তিনি সে সমস্ত জাতিকে এমন কিছু দিয়েছেন যা তোমাদেরকে দেন নি। [তাবারী]
Ang mga Tafsir na Arabe:
وَلَوۡ يُؤَاخِذُ ٱللَّهُ ٱلنَّاسَ بِمَا كَسَبُواْ مَا تَرَكَ عَلَىٰ ظَهۡرِهَا مِن دَآبَّةٖ وَلَٰكِن يُؤَخِّرُهُمۡ إِلَىٰٓ أَجَلٖ مُّسَمّٗىۖ فَإِذَا جَآءَ أَجَلُهُمۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِعِبَادِهِۦ بَصِيرَۢا
আর আল্লাহ্ মানুষদেরকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও করলে, ভূ-পৃষ্ঠে কোনো প্রাণীকেই তিনি রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের নির্দিষ্ট সময় এসে যাবে, তখন তো আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা [১]।
[১] যেমন অন্য আয়াতে বলেছেন, “আর আল্লাহ্‌ যদি মানুষকে তাদের সীমালংঘনের জন্য শাস্তি দিতেন তবে ভূপৃষ্ঠে কোনো জীব-জন্তুকেই রেহাই দিতেন না; কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের সময় আসে তখন তারা মুহুর্তকাল আগাতে বা পিছাতে পারে না।” [সূরা আন-নাহল ৬১]
Ang mga Tafsir na Arabe:
 
Salin ng mga Kahulugan Surah: Fātir
Indise ng mga Surah Numero ng Pahina
 
Salin ng mga Kahulugan ng Marangal na Qur'an - Salin sa Wikang Benggali ni Abu Bakr Zakaria - Indise ng mga Salin

Salin ng mga Kahulugan ng Marangal na Qur'an sa wikang Benggali. Isinalin ito ni Abu Bakr Muhammad Zakaria. Inilathala ito ng King Fahd Glorious Quran Printing Complex sa Madinah Munawwarah. Imprenta ng taong 1436 H.

Isara